#নাম: এলাকার বড় আপু,পার্ট:৬
#লেখক: Osman
👉আমি চলে আসলাম।ঘরে ঢুকলে মা অনেক বকা দিলো। এসাইনমেন্টের কথা বলে আমি বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। আধঘন্টা পর বের হলাম। এসে বিছানায় শুয়ার সাথে ঘুমাই যাই। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে গেলাম ভার্সিটিতে।
আশার সময় নিলার বাসার সামনে দিয়ে আসছি।
মুরাদ বলে উপর থেকে ডাক দিলো। উপরে তাকিয়ে দেখি নিলা। আমি দেখে বললাম।
আমি: কি হয়েছে কিছু বলবেন?
নিলা: তুই দাড়া আমি আসছি।
আমি: ওকে।
👉একটু পর নিলা আসলো সেজে গুজে বলল।
নিলা: চল।
আমি: কোথায়?
নিলা: ঘুরতে।
আমি: মাফ চাই। গতকাল রাতে দেরি করে যাওয়ার জন্য আম্মু যেই বকা দিছে এক সপ্তাহ না খেলেও চলবে। আজকে দেরি করে গেলে বাড়ি থেকে বের করে দিবে।
নিলা: বের করে দিলে আমার এখানে চলে আসিস।
আমি: ধুর। আমি দুরে কোথাও যেতে পারবোনা।
নিলা: ওকে তর সময় আছে কতটুকু।
আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম।
আমি: ১ ঘন্টা।
নিলা: এক ঘন্টা অনেক সময়। চল ।এই রিকশা।
আমি: একটা রিকশা দিয়ে কি হবে দুইটা রিকশা নেন?
নিলা: না । আমি আর তুই একসাথে এক রিকশায় বসবো।
আমি: না! না! সম্ভব না!। আব্বা দেখলে আমাকে সেখানেই মেরে ফেলবে।
নিলা: কি আজব মানুষ ? তুই কি এখনো ছোট আছস নাকি? তর আব্বা সামনে পড়লে ভালই হবে। গতকাল রাতে আমার সাথে কি করেছিস? সেটা আমি ভালো করেই বলতে পারবো।
আমি: না! তোমার সাথে বসতে পারবোনা। পরে কোনো ভুল হয়ে গেলে । শুধু মাইর খেতে হবে।
নিলা: মারবো না । এখন ওঠ।
আমি: তুমি আগে ওঠো?
নিলা উঠলে আমি উঠলাম।এক রিকশায় দুজন বুঝতেই পারছেন। নিলার শরীরের সাথে আমার শরীর একেবারে ঘেঁষে আছে। যাক আমার ভালই লাগছে। নিলা আমার হাতে হাত রাখলো। বলল।
নিলা: গতকাল রাতের কথা মনে আছেতো?
আমি: হুম আছে।
নিলা: আমাকে তর কেমন লাগে?
আমি: কেমন যেনো ? তোমাকে অনেক ভয় করে।
নিলা: ভয় করার কি আছে?
আমি: কি জানি?
👉নিলা এক রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়ালো । পরে আমাকে রিকশা করে দিলো। যেনো আমি কোনো ?বাচ্চা ছেলে। বাসায় এসে অনেক রাত পর্যন্ত পড়ালেখা করি কারণ সামনে পরিক্ষা। তারপর ঘুমিয়ে যাই। কতক্ষণ ঘুমালাম জানিনা। কে জানি কান ধরে টানছে। আমি চোখ খুলে যা দেখলাম তা বিশ্বাস করার মতো না। দেখি বড় আপু মানে নিলা আমার কান ধরে টানছে। আমি আপুকে দেখেই আবার কম্বলের নিচে চলে গেলাম। আমি বললাম।
আমি: তুমি এখানে সকাল সকাল। মা দেখে ফেলবে।
নিলা হাসতে লাগলো বলল।
নিলা: আরে পাগল । আমি তর মার অনুমতি নিয়েই এখানে এসেছি।
আমি: ওহহ।
নিলা: এখন ওঠ । ওঠে ওয়াশ রুমে যা।
আমি: তুমি এখান থেকে চলে গেলে আমি যাবো।
নিলা: ওকে যাচ্ছি।
👉এই বলে চলে গেলো। আমি ওঠে এক দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম। বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখি। আমার রুম সুন্দর করে গুছানো। আমি বুঝতে পারলাম এটা একমাত্র নিলার কাজ। কারন আগামী পাঁচ বছর ধরে আমার আমি নিজেই আমার রুম গুছাই। আমি গেলাম নাস্তা খেতে। মা বলল ।
মা: তুই আজকে ভার্সিটিতে মাস নাই কেনো?
আমি: আরে আজকে সব সহজ ক্লাস।
মা: তাহলে হাজিরা কে দিবে?
আমি: আরে এক বন্ধু দিয়ে দিবে।
এই ফাঁকে তাসফিয়া এসে বলল।
তাসফিয়া: মা অনেক ফাঁকি বাজি করে। আমি দেখছি হেয় একদিনও ক্লাস করে না।
আমি: দেখ তাসফিয়া মিথ্যা কথা বলবি না। মা আপু মিথ্যা বলছে।
মা: খালি ফাঁকি বাজি। আজকে তর বাবাকে বলবো।
আমি: মা তাহলে আপু দেখছে আমি ক্লাস করি না। তাহলে আপুও চাকরিও করে না।
মা: কিরে তাসফিয়া।
তাসফিয়া: না মা না মা ওই আমি তার ভার্সিটির সামনে দিয়ে যাচ্ছি তখন দেখছি আড্ডা দিচ্ছে।
মা: আগামীকাল থেকে ভার্সিটি যাবি। এখন খাঁ।
আমাদের এমন ঝগড়া দেখে নিলা মিটিমিটি হাসছে।
মা আবার বলল।
মা: নিলা মা তুমি খেয়েছো?
নিলা: হ্যাঁ আন্টি আমি খেয়েছি।
👉আমি অবাক হচ্ছি নিলা এতো তাড়াতাড়ি মাকে কিভাবে মেনেজ করলো। আমি খাওয়া দাওয়া করে রুমে শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছি। নিলা আপু আসলো চা নিয়ে বলল।
নিলা: প্রথম বার চা বানাইলাম দেখতো কেমন হয়েছে ?
আমি তার হাত থেকে নিয়ে খেলাম। বললাম
আমি: ভালো হয়েছে।
নিলা: থ্যাংকস।
আমি: ওয়েল কাম।
আমি আবার মোবাইল টিপায় মনোযোগ দিলাম। বলল।
নিলা: চা টা খেয়ে দে।
আমি: ওহহ।
👉আমি কিছুক্ষণের ভিতর চা খেয়ে দিয়ে দিলাম কাপ। চলে গেলো। আবার এক ঘন্টা পরে আমি উঁকি দিলাম তারা কি করে? দেখি নিলা মার মাথা আচরিয়ে দিচ্ছে। মনে মনে এটা কি হলো এতো তাড়াতাড়ি মার কাছে চলে গেলো নিলা। আমি কিছু বুঝতে পারলাম না। আমি রুমে এসে আবার শুয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ পর নিলা আবার এসে বলল।
নিলা: শুন আমি চলে যাও।
আমি: কেনো আজকে থেকে যাও?
নিলা: কিছুদিনের ভিতর একেবারেই চলে আসবো।
(বলল আস্তে আস্তে।)
আমি: এতো সোজা না। মাকে এনে রাজি করিয়েছো। বাবাকে রাজি করাইবা কি করে?
নিলা: আমার বাবা আছে না। এই জেলার মিজেস্ট্রেট। বাবা মা বলবে তাই হবে।
আমি: ওকে পরে দেখা যাবে। শুন আগামী শুক্রবার আপুর বিয়ে থাকবা কিন্তু।
নিলা: ওকে থাকবো। এখন যাই । বাসা থেকে কল আসছে।
👉এই বলে নিলা বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। প্রতিদিন সকালে এসে নিলা আমার ঘুম ভাঙ্গায় । শান্তিমতো ঘুমাতে পারিনা। এভাবে এক সপ্তাহ চলে যায়। প্রতিদিন নিলা আমাদের বাসায় আসে। আগামীকাল আপুর বিয়ে। গ্রাম থেকে মানুষ আসলো। তো আমার এক চাচাতো বোন সে আমার থেকে বয়সে ছোট এক বছরের। গ্রামের বাড়ি গেলে তার সাথে সময় কাটাতাম বেশি। আমাদের সম্পর্ক অনেক গভিরে চলে যায়। এখন তার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে । সে এই বিয়েতে আসছে ভাবতাছি কি যেনো হয়ে যায়। একটু ভুলের কারণে নিলাকে হারাবো। গায়ে হলুদের দিন তারা সবাই আসে। নিলা আপুর সাথে সারাদিন থাকে। যার সাথে আমার সম্পর্ক হয়েছিল তার নাম তানহা। সে আসলেই আমার সাথে দেখা করে বলল।
তানহা: মুরাদ তোমার কি হয়ে গেলো? তুমি আমার কোনো খুঁজ খবর নাও না।
আমি: আসলে সামনে পরিক্ষাতো তাই এতো অবসর থাকি না। তো কেমন আছো?
তানহা: ভালো তুমি।
আমি: এইতো আছি।
তানহা: আচ্ছা তুমি কেমন যেনো হয়ে গেছো? আগে আমার সাথে সব সেয়ার করতা😞
আমি: এখনতো করি।
তানহা: কই?
আমি: এইযে বললাম আমি ভালো আছি।
তানহা: ধুর তুমি আগের মতোই আছো। তোমাদের সাদরা আমাকে দেখাবা।
আমি: সিউর। এই চাঁদনি আপু …..এই চাঁদনি আপু ….দেখে যান। (চাঁদনি আপু আমার আপুর বান্ধবী)
তানহা: কাকে ডাকছো?
আমি: চাঁদনি আপু আপুর ফ্রেন্ড। সে তোমাকে সাদ ঘুরিয়ে দেখাবে।
তানহা: না আমি কারো সাথে যাবো না। শুধু তোমার সাথে যাবো। কাঁদো কাঁদো ভাব মনে হচ্ছে এখনই কেঁদে দিবে। আমি বললাম
আমি: ওকে ওকে আমিই নিয়ে যাবো।
এই দিকে চাঁদনি আপু এসে বলল
চাঁদনি: এই তুই ডাক দিলি কেনো?
আমি: আপু কিছুনা জিজ্ঞেস করতাম আর কি?ঐদিকে কতটুকু হয়েছে।
চাঁদনি: তর সাহস তো কম না। তুই আমাকে ডাক দিস তর বড় না আমি। নিজে গিয়ে দেখে আসতে পারস না। যত্তসব ফালতু । আরেকবার ডাক দিবি দাঁত ভেঙে ফেলবো। এই মেয়ে তুমি কাঁদছো কেনো? জাননা এটা বিয়ে বাড়ি। কাঁদলে বাথরুমের ভিতর গিয়ে কাঁদো।
👉এই বলে চাঁদনি আপু চলে গেলো। আমি আগেই জানতাম চাঁদনি আপু রাগী টাইপের মেয়ে। তানহা অবাক এমন কথা শুনে। আমি হাসি দিয়ে বললাম
আমি: আরে ঢাকার মেয়েরা বেয়াদবই হয়। তুমি রাগ করোনা। চলো সাদে?
👉 আমি তানহাকে সাদ দেখালাম। পুরো এলাকা দেখালাম। সন্ধ্যা হলে আমারা চলে আসি। রুমে ঢুকবো। কে জানি কানে ধরে আমাকে টানতে টানতে সবার আড়ালে নিয়ে গেলো।
চলবে……