অসম পর্ব ১৩,১৪,১৫

অসম
পর্ব ১৩,১৪,১৫
কলমে লিপিকা
১৩

তুহিন বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল, প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে বলল- হাত ধরতে দিতে চায় না বুঝলাম কিন্তু তুমি যে কেমন সুবোধ বালক তাও জানি।

সেতারা লিভিং রুম থেকে চেচিয়ে বলল আসবি তোরা নাকি আমি চলে যাব

গাড়ি ড্রাইভ করছে অনুপম পাশের সিটে তুহিন আর পিছনে সেতারা। বাইরে বৃষ্টি নামছে, টুপটুপ শব্দে ভেদ করে অনুপম বলল মা! নিতু মেয়ে হিসেবে কেমন
সেতারা বলল আমারতো ওকে খুব ভাল লাগে, সাদাত মারা যাবার পর থেকে ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কি যে কিউট কাপল ছিল, সাদাততো ওকে চোখে হারা–
এই সাদাত লোকটাকে কোন কালেই অনুপম সহ্য করতে পারতো না, মাকে থামিয়ে দিয়ে বলল নিতু আমার ক্লাসমেট
তুহিন বিস্ময়কর চোখে অনুপমের দিকে তাকালো, ফিসফিস করে বলল আট ঘাট বেঁধে নেমেছিস মনে হচ্ছে
অনুপম হাসল
তুহিন বলল আমাকে এখানে নামিয়ে দে, কাজ আছে

অনুপম আর সেতারা যখন পৌছাল তখন সবাই মিটিং রুমে ওদের জন্য অপেক্ষা করছে
সেতারা ঘরে ঢুকে নিতুকে দেখে ভীষণ খুশি হল, নিতু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল, মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল ডঃ সেতারা টেক ইউর সিট
সবার উদ্দেশ্যে নিতু আবার বলল ইনি হচ্ছেন ডক্টর অনুপম চৌধুরী যার কথা ইতিমধ্যে আপনারা শুনেছেন
-হ্যালো,অনুপম বলল
নিতু অনুপমের দিকে তাকিয়ে বলল প্লিজ! টেক ইউর সিট
নিতু দুহাত টেবিলের উপর রেখে বলল- আমরা চাচ্ছি ডক্টর অনুপম চৌধুরী যতদিন বাংলাদেশে আছেন আমাদের হসপিটালে কাজ করুক, আমরা হয়তো তার প্রাপ্য সম্মান দিতে পারব না কিন্তু কিছু দুস্ত মানুষ উপকার পাবে, ডক্টর অনুপম আপনি কি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী?
অনুপম বলল সিওর
নিতু বলল মিঃ মুহিত আপনি ডক্টর অনুপমের সঙ্গে কথা বলে সিডিউল এডজাস্ট করে নিবেন।
মুহিত বলল ওকে ম্যাম
নিতু বলল ওকে আপনারা তাহলে যার যার কাজে চলে যান

সবাই চলে যাবার পর নেশাল অনুপমের দিকে হাত বারিয়ে হ্যান্ডশেক করে বলল কনগ্রাচুলেশন
অনুপম বলল থ্যাংক্স
নেশাল বলল- আশা করি এখানে কাজ করতে আপনার ভালো লাগবে
অনুপম বলল ওহ্ সিওর
নেশাল বলল- সেদিন আপনার সঙ্গে দেখা হয়নি, সরি
অনুপম বলল ইটস ওকে
নিতু সেতারাকে বলল আন্টি কেমন আছেন
সেতারা বলল ভাল, তোমাকে দেখে আরও ভালো লাগছে
নেশাল বলল- মাম্মাকেতো রীতিমত জোর করে নিয়ে এসেছি
সেতারা বলল খুব ভাল করেছ নিতুর দিকে তাকিয়ে বলল এই মিষ্টি মেয়েটা না থাকলে হয় নাকি
অনুপম বারবার আর চোখে নিতুকে দেখছিল, নুড কালার শাড়ীতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে
সেতারা বলল নিতু তুমি বলনি কেন অনু তোমার ক্লাসমেট
নিতু অনুপমের দিকে তাকালো তারপর হেসে বলল কখনোতো এভাবে প্রসঙ্গ আসেনি
নেশাল বলল- মাম্মা আমি যাচ্ছি, নিতুর গালের সাথে গাল মিলিয়ে বলল লুকিং সো গরজিয়াছ
নিতু নেশালের চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলল পাগল ছেলে
সেতারা বলল আমরাও যাব
অনুপম বলল তুমি চলে যাও আমি হসপিটাল ভিজিট করে আসছি
নেশাল বলল- সেতারাজি চলুন আমি আপনাকে পৌঁছে দি

সেতারা আর নেশাল চলে যাবার পর অনুপম নিতুর কাছাকাছি এসে বসলো, গভীর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে বলল পাগলতো করেই ফেলেছো এবার উন্মাদ হওয়া বাকি
নিতু বলল মানে?
-অসম্ভব সুন্দর লাগছে, চোখ সরাতে পারছি না
-এটা অফিস, আশা করছি অফিস ডেকোরাম মেইনটেইন করবে,তারপর বলল নেশালের মাথায় এই বুদ্ধি কে দিল?
– কোন বুদ্ধি
– আমার এখানে তোমার জয়নিং
– আমি কি জানি, তোমার হসপিটাল, তোমার কমিটি কাকে কি জয়নিং দেয় সেটা আমি কিভাবে বলব
-আচ্ছা তো এটা বল আমি কবে থেকে তোমার ক্লাসমেট হলাম
অনুপম মাথা চুলকে বলল সরি! ভুল হয়ে গিয়েছে বউ বলা উচিৎ ছিল।

চলবে

অসম
পর্ব ১৪
কলমে লিপিকা

পশ্চিম আকাশে সূর্যটা লাল আভা ছড়াচ্ছে,ডুবে যাওয়া সূর্যের একটা অংশের ছায়া পড়েছে ঝিলের কোনে আর আলোটা এসে জমেছে নিতুর মুখে। লাল হলুদের মিশেল আলোতে কি যে সুন্দর লাগছে সেই মুখ।

ঝিলের ধারের বেঞ্চটায় বসেছে নিতু আর অনুপম।
অনুপম ওর একটা হাত পিছন দিক দিয়ে এনে নিতুর কাধেঁ রাখল।আর ডান হাতের মুঠোয় পুরে নিল নিতুর বাহাত। চোখ বন্ধ করে অনুপম দিনের শেষে রাতের শুরুর মিলনকে গভীর ভাবে অনুভব করতে চাইছে।
বাতাসে নিতুর অবাধ্য চুল বারবার স্পর্শ করে যাচ্ছে অনুপমের গাল।
হাত ধরাধরি ব্যাপারগুলিতে নিতু আজকাল আর বাঁধা দেয় না।
জীবনতো এমনই সুর কেটে আবার নতুন তালে ফিরে আসে। নিতু আর অনুপমের জীবনেও হারানো সুর নতুন তালে ফিরেছে।
অনুপম বা হাত দিয়ে নিতুর মাথাটা নিজের কাঁধে হেলিয়ে দিল।
আঙুলগুলো নিতুর চুলে গলিয়ে দিয়ে বলল -বিয়ে করবে আমায়
-না–
– সোশাল হ্যারাজমেন্টের কথা ভাবছো
নিতু চুপ করে রইল
– তুমি শুধু একবার রাজি হয়ে যাও আমি তোমাকে নিয়ে সুইডেন চলে যাব,কোন কিছুর আঁচ লাগতে দিব না
– সম্ভব না
-নেশালের কথা ভেবে রাজি হচ্ছ না? আমি নিজে ওর সঙ্গে কথা বলব,তোমার ভাল থাকাটাই ওর কাছে মুখ্য।
– সানজানাকে বিয়ে কর অনুপম
অনুপম সোজা হয়ে বসে নিতুর দিকে তাকিয়ে বলল – সানজানার কথা তোমাকে কে বলল?
-খুব মিষ্টি দেখতে, দারুণ মানাবে তোমাদের
-সেটা আমি ভালো বুঝবো
-রেগে যাচ্ছ কেন, আমার মতো বুড়ী তোমার সঙ্গে যায় নাকি
-বুড়ী নাকি ছুড়ী সেটাতো ঐ রাতেই টের পেয়েছি
অনুপমের পিঠে আস্তে করে কিল দিয়ে নিতু বলল অসভ্য
অনুপম হেসে বলল বাজে কথা আর বলবে,দ্বিগুণ বাজে কথা কিন্তু আমি জানি, সো মনে থাকে জেনো

চারপাশটা অনেক আগেই অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, দূরে চটপটিওয়ালা আর কিছু বাদামওয়ালা দেখা যাচ্ছে, নিতু বলল
চল যাই, জায়গাটা সেফ না
অনুপম নিতুর কোলে টানটান হয়ে শুয়ে পরে বলল ঘুম পাচ্ছে
-এই একদম না,উঠ বলছি
দুহাত দিয়ে কোমর জরিয়ে ধরে অনুপম বলল- আমাদের এই ভালবাসার পবিত্র নাম দিতে চাই, প্লিজ! রাজি হয়ে যাও, খুব ইচ্ছে করে বাকী জীবনটা তোমার হাত ধরে কাটিয়ে দিতে।
– আন্টি সানজানাকে–
নিতুর কথা শেষ করতে দিল না অনুপম, রেগে গিয়ে বলল- চল যাই

বাসায় ফিরে অনুপম সরাসরি মায়ের রুমে চলে এল,সেতারা রকিং চেয়ারে বসে বই পড়ছিল, অনুপমকে দেখে বলল কিছু বলবি
– নিতুকে সানজানার কথা তুমি বলেছ
-হ্যাঁ বলেছি,এতে রাগ হচ্ছিস কেন
-আমি তোমাকে বিষয়টা নিয়ে এগুতে মানা করেছিলাম
অনুপমকে হাত ধরে সেতারা পাশে বসালেন, চোখে চোখ রেখে বলল- সানজানা খুব ভাল মেয়ে, তোকে সুখী করবে
-চাই না আমার ওমন সুখ, প্রচন্ড রেগে বেফাঁসে বলে উঠলো আমি নিতুকে চাই
-কি বলছিস এসব, পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি
-তুমি বারবার জানতে চাইতে না মেয়েটা কে,ভাল করে শুনে রাখ আমি বলছি ঐ মেয়েটাই হচ্ছে নিতু
বাকহারা হয়ে কিছু সময় বসে রইলেন সেতারা, তারপর আস্তে আস্তে বললেন সমাজ সংসার বলে একটা কথা আছে, ছিঃ,আর ঐ মেয়েই বা কেমন
-ওর নামে একটাও বাজে কথা বলবে না, আমি ওর জন্য পাগল ও নয়
সপাটে দরজা বন্ধ করে অনুপম বেরিয়ে গেল।

সেতারা ছেলের এই উদ্যত আচরণের সাথে পরিচিত নন,মনে মনে ভাবলেন কালই তুহিনের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আরও ভয়ংকর কিছু ঘটার আগে সবকিছু উপরে দিতে হবে।

চলবে

অসম
পর্ব ১৫
কলমে লিপিকা

ধানমন্ডির ১৪ নাম্বার বাড়ির আটতলায় গেট টুগেদার পার্টি চলছে। সেতারা কাছের কিছু মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছে। এ নিমন্ত্রণ তালিকায় নিতুও আছে। যদিও নিতুকে ইনভাইট করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে তার ছিল না।বাধ্য হয়েছে, এ কমাসে সেতারা ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছে নিতু না থাকলে অনুপমকে এ পার্টিতে ধরে রাখা যাবে না। ঘুড়ি উড়িয়ে লাটাই ধরে রাখার মত অবস্থা এখন সেতারার।শক্ত হাতে হ্যান্ডেল করতে না পারলে যেকোনো সময় কেটে যেতে পারে লাটাই থেকে সুতো।

নিতু যখন লিভিং রুমে ঢুকলো তখন সবগুলো অতিথির চোখ নিতুর দিকে, বেবি পিংক কালারের শাড়ীর সঙ্গে পার্লের জুয়েলারি নিতুকে করে তুলছে গর্জিয়াছ, অনুপমের মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছে করে এত সুন্দর করে কিভাবে কস্টিউমস সিলেক্ট করে।
সেতারা নিতুর দিকে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল এত দেরি করলে যে?
– সরি! আন্টি
-এস সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দি

কোনের সোফায় বসে ছিল তুহিন আর তোড়া,নিতুকে দেখে তুহিনকে তোড়া বলল এটাই কি নিতু
– হুঁ
-এখন বুঝলাম কেন অনুপম ভাইয়া এত পাগল
তোড়ার পাশে ছিল সানজানা,তোড়া সানজানার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিচু স্বরে বলল ইনিই সেই নিতু যার কথা বলেছিলাম
সানজানা খুব সুক্ষ্ন ভাবে খেয়াল করলো অনুপমের অস্থিরতা উবে গিয়ে চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দিয়ে যাচ্ছে।

অনুপম নিতুর কানের কাছে মুখ নিয়ে কি জেন বলল আর নিতু একরাশ হাসি ছড়িয়ে দিল,
সানজানার খুব জানতে ইচ্ছে করলো কি এমন কথা যা অনুপম নিতুকে বলল।

সেতারা নিতুকে সানজানার কাছে নিয়ে এসে বলল- ও হচ্ছে সানজানা
নিতু মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল কি সুইট দেখতে
তুহিন বলল নিতু বোস
তুহিনের পাশে বসতে বসতে নিতু বলল এ্যাই তোমার বউ কই
-লেজ নিয়ে কেন টানাটানি করছো ভায়া! সোজা হয়ে বসে বলল তোড়া, তোমার চেহারাটা দেখিয়ে দাওতো
তোড়া হেসে দিল, নিতু পাশ ফিরে অবাক হবার ভান করে বলল এই সুন্দর মেয়েটা তোমার বউ
তুহিন বলল ইয়েস ম্যাম

অনুপম এক গ্লাস জুস এনে নিতুর হাতে দিয়ে নিতুর মুখমুখি বসল
তুহিন বলল শুধু বসের সেবাই করে যাবা মাঝে মাঝে আমাদের দিকেও তাকিয়ো
অনুপম বলল সরি! ওয়েট কর্ নিয়ে আসছি
-আরে না, বোস, তুই এত সাইন করছিস কেন সেটা বল
তোড়া বলল করবে না আজতো সানজানা আর ভাইয়ার বিয়ের এনাউন্স করবে আন্টি
রাগ আর বিস্ময় মিশ্রিত কন্ঠে অনুপম বলল হুয়াট,নিতুর দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখ মলিন, “আমি আসছি ” বলে অনুপম উঠে গেল সেতারর খোঁজে

ডাইনিং-এ সেতারার সঙ্গে অনুপমের দেখা হলো, অনপম বলল- মা এদিকে আসবে কথা ছিল
-কি বলবি এখানে বল্ না
-আমার রুমে এস
সেতারা অনুপমের রুমে এসে বলল- তারাতাড়ি বল
কোন রকম ভনিতা না করে অনুপম সরাসরি বলল-আমার আর সানজানার বিয়ের এনাউন্স করতে চাইছ
সেতারা চুপ করে রইল
অনুপম আবার বলল যত ইচ্ছে এনাউন্স কর কিন্তু আমার ডিসিশন একটাই, তোমার উল্টো পাল্টা কাজের দ্বায় তোমাকেই নিতে হবে, সো যা করবে ভেবেচিন্তে কোর। তুমি বোধহয় ভুলে গেছ আই এম নাও ফরটিসেভন, ধরে বেঁধে বিয়ে দেবার বয়স এখন আর আমার নেই

রুম থেকে বেরিয়ে অনুপম দেখল নিতু সেতারার বান্ধবী জেসমিনের সঙ্গে কথা বলছে।
তুহিন অনুপমের পাশে এসে বলল- ঝামেলাতো শেষ, মন খারাপ করে আছিস কেন
-নিতুকে দেখ্ কেমন মুড অফ করে আছে
-স্বাভাবিক, ডেকে এনে অপমান করছিস
-শালা!এরকম ঝামেলা হবে জানলে ওকে ইনভাইটই করতাম না, আর আমিও থাকতাম না
-তোড়ার পাশে গিয়ে বস্, আমি ওকে পাঠাচ্ছি

তুহিন জেসমিনের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল- কেমন আছেন আন্টি
-ভালো, তুমি কেমন আছ
-ভালো, আন্টি কি আমার ওয়াইফের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন
-নাতো,তোমার বউ কই
তুহিন নিতুকে বলল নিতু যাওতো তোড়াকে পাঠিয়ে দাও
তুহিনের কথার ভাজ নিতু বুঝতে পারলো
তোড়ার কাছে এসে বলল- তোড়া তুহিন তোমাকে ডাকছে
তোড়া চলে যাবার পর নিতু একবার অনুপমের দিকে আর একবার সানজানার দিকে তাকিয়ে বলল ব্রাইড এন্ড ব্রাইডগ্রুম
দুজনেই এত চুপচাপ কেন
অনুপম বিস্ফোরিত চোখে নিতুর দিকে তাকালো, চোখে চোখ রেখে দাঁতে দাঁত চেপে বলল তোমাকেতো আমি পরে দেখে নিচ্ছি

বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছিল অনুপম,তুহিন এসে গ্রীলে ঠেস দিয়ে দাঁড়াল, অনুপম সিগারেটের প্যাকেটটা তুহিনের দিকে এগিয়ে দিল। দক্ষতার সঙ্গে ধোঁয়া উড়িয়ে তুহিন বলল আবার কি হলো
-চব্বিশ ঘন্টা বউকে কাছে পাচ্ছিস তুই কি বুঝবি,থেমে আবার বলল ওর সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত কতটা মূল্য দিয়ে কিনতে হয় তা কেবল আমিই জানি, সুইডেন চলে যাবার সময় হয়ে যাচ্ছে, এদিকে নিতু রাজি হচ্ছে না, সবকিছু মিলে পাগল পাগল লাগছে, আজকের রাতটা নিয়ে কতকিছু ভেবে রেখেছিলাম অথচ দেখ্
-আমারতো মনে হচ্ছে নিতুর অবস্থা তোর চেয়ে খারাপ
-কি রকম
-ভালবাসে অথচ বলতে পারছে না, ছেলে, ছেলের বউ, সোশালহ্যারাজমেন্ট একবার ভেবে দেখেছিস তোর জন্য সবকিছু যতটা সহজ ওর জন্য ততটাই কঠিন
-আমিতো বলেছি সুইডেন নিয়ে যাব
-বাই দ্যা ওয়ে সুইডেন যাবি মানে থাইল্যান্ড পার্ট শেষ
-হুঁ,ঐ বিভীষিকায় আর ফিরছি না
এ্যাশট্রেতে সিগারেট গুঁজে দিয়ে তুহিন বলল আয় দেখি কি করা যায়

নিতু তোড়া আর সানজানা বসে গল্প করছিল, তুহিন এসে ওদের সাথে জয়েন করলো, অনুপম নিতুর পাশে বসে বলল কি নিয়ে কথা হচ্ছে
তোড়া বলল শাড়ী, চুড়ি টাইপ কথা ভাইয়া
-ও–,তাহলেতো জয়েন হতে পারছি না
তুহিন বলল তোড়া আন্টি মনে হয় সবকিছু সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যাওতো হেল্প কর, সানজানার দিকে তাকিয়ে বলল বউ হতে যাচ্ছ অথচ কোনায় বসে আছ, এই তোড়া ওকেও নিয়ে যাও
তোড়া আর সানজানা চলে যাবার পর তুহিন উঠে এসে অনুপমের পিঠে চাপর মেরে বলল চালিয়ে যাও বন্ধু কিন্তু ট্রিট দিতে ভুল না

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here