অরোনী, তোমার জন্য-৪,০৫

অরোনী, তোমার জন্য-৪,০৫
লিখা-Sidratul Muntaz
০৪

রাফাত নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে এসেছে। কিন্তু এখনও অরোনীর ঘুম ভাঙেনি। শীলা চাচী আর উর্মি অরোনীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছিলেন। রাফাত বলেছে উপরে গিয়ে অরোনীকে পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু রুমে এসে দেখল অরোনী এখনও ঘুমে। ডাকতে আর ইচ্ছে হলো না। রাফাত কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল অরোনীর মুখের দিকে। এই কোমল চেহারা দেখলে যে কারো মনে হবে মেয়েটা খুব মিষ্টি। কিন্তু সত্যি হলো অরোনী লাল মরিচের থেকেও বেশি ঝাল। রাফাত আলতো করে অরোনীর কপালে, গালে, নাকে, চুমু দিল। ঠোঁটেও দিতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু পাছে আবার অরোনীর ঘুম ভেঙে যায়, তাহলে রাফাতের খবর আছে। তাই ঠোঁট স্পর্শ করার সাহস হলো না৷ রাফাত উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল। সে যাওয়ার সাথে সাথেই অরোনী চোখ খুলে হেসে উঠল। রাফাত প্রতিদিন এই কাজ করে। সে ভাবে অরোনী টের পায় না। কিন্তু অরোনী রোজ টের পায়।
ঘড়িতে দশটা বাজছে। অরোনী আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসল। রেডি হতে হবে। আশা করা যাচ্ছে অন্তত আজকের দিনটা সুন্দর কাটবে। আজকে সে ব্রেকফাস্ট করতে নিচেও যাবে না। এই সুন্দর দিনে শাশুড়ী আর ননদদের মুখ দেখতে ইচ্ছে করছে না। অরোনী তার ননদদের প্রথম প্রথম খুব পছন্দ করতো। ভেবেছিল শাশুড়ী খারাপ তো কি হয়েছে? ননদরা নিশ্চয়ই সাপোর্ট দিবে। কিন্তু সেখানেও বাঁশ খেতে হলো। কোনো বিষয়ে এক্সপেক্টেশন রাখাই উচিৎ না। ননদিরা সুযোগ পেলেই অরোনীকে খোচা মেরে কথা বলে। পদে পদে অপমান করে। সবচেয়ে বড় অপমান হলো, শাশুড়ী যখন অরোনীকে ধমক দেয় তখন সকলে মুখ টিপে হাসে। তাদের চেহারায় তৃপ্তি আর আনন্দের ঝিলিক থাকে। শাকচুন্নি একেকটা!
দরজায় খটখট শব্দ হলো। কে এসেছে? উর্মি নাকি? অরোনী একবার ভাবল যদি আজ উর্মির স্কুল না থাকে তাহলে উর্মিকেও ঘুরতে নিয়ে যাবে। মেয়েটা বড় ভালো। তাছাড়া উর্মির স্কুলও বারোটায় শুরু হয়। অরোনী দরজা খোলার পর খুব চমকে যাওয়ার মতো একটা দৃশ্য দেখল। রাবেয়া এসেছেন, হাতে ব্রেকফাস্ট। অরোনীর এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো তার ঘুমটা এখনও ভাঙেনি। সে বুঝি স্বপ্নই দেখছে। ঘুম থেকে উঠতে আধঘণ্টা লেইট হলেও রাবেয়া তাকে নাস্তা খাওয়ার সময় কথা শোনান। আর আজকে নিজেই সিঁড়ি ভেঙে অরোনীর জন্য নাস্তা নিয়ে এসেছেন! হঠাৎ এতো আদর! রাবেয়া বেশ মিষ্টি করে হাসলেন। দজ্জাল মহিলার হাসি সুন্দর। কিন্তু এমন সুন্দর করে তিনি খুব কমই হাসেন।
” শরীর খারাপ নাকি অরোনী? আজ নিচে এলে না যে?”
এতো মধুর ভঙ্গিতে এই প্রথম রাবেয়া কথা বলছেন। তাই অরোনী স্বভাবতই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল।
” তেমন কিছু না৷ ঘুমটা ভাঙতে দেরি হয়ে গেছে।”
” আচ্ছা সমস্যা নেই। এই নাও তোমার খাবার। আর কিছু প্রয়োজন হলো বোলো।”
অরোনী খাবারের ডিশ নিতে নিতে বলল,” থ্যাংকিউ মা।”
রাবেয়া চলে যাচ্ছিলেন। অরোনী দরজা লাগাতে নিবে তখন রাবেয়া আবার ফিরে এসে বললেন,” অরোনী এক মিনিট, তোমাকে একটা জরুরী কথা বলার ছিল।”
” জ্বী মা বলেন?”
” তোমার খালা শাশুড়ী মানে আমার বড়বোন হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমরা দুইদিনের জন্য টাঙ্গাইল যাচ্ছি।”
অরোনীর মনে মনে কি যে খুশি লাগলো। দুইদিন খুব শান্তিতে থাকা যাবে। অরোনী বলল,” ও আচ্ছা। কখন রওনা হবেন?”
” এইতো কিছুক্ষণের মধ্যেই। রাফাত আমাদের গাড়ি করে দিয়ে আসবে। তুমি জলদি নাস্তা খেয়ে তৈরী হয়ে যাও।”
অরোনীর চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে গেল। দূর্বোধ্য হেসে বলল,” আমি তৈরী হবো মানে?”
” কারণ তুমিও আমার সাথে যাবে। ”
” মানে?”
” কেন? কোনো সমস্যা? তুমি আমার একমাত্র পুত্রবধূ৷ তোমাকে রেখে আমি যেতে পারি? তাছাড়া তোমার খালা শাশুড়ীও তো তোমাকে দেখেনি। এবার তোমাকে নিয়ে গেলে খুব খুশি হবেন।”
অরোনী কঠিন মুখে কিছু বলতে নিচ্ছিল অমনি রাবেয়া তার হাত চেপে ধরে অনুনয়ের স্বরে বলল,” প্লিজ মা, নিষেধ করো না। আমার বোনটা ভীষণ অসুস্থ। হঠাৎ যদি ভালো-মন্দ কিছু ঘটে যায়? আমি শেষ দেখাটুকুও দেখতে পারবো না। প্লিজ অরোনী তুমি নিষেধ করো না৷ তোমার পায়ে পড়ছি আমি।”
” ছি মা, এসব কি বলছেন? আমার পায়ে কেন পড়বেন?”
” তাহলে তুমি রাজি?”
অরোনী জবাব দিল না। রাবেয়া হেসে বললেন,” আমি তাহলে ঝটপট গিয়ে তৈরী হয়ে যাই। তুমিও দ্রুত করো।”
রাবেয়া ছাদের দিকে গেলেন। সেখানে তার কিছু শাড়ি দড়িতে ঝোলানো আছে। অরোনী রুমে ঢুকে ঠাস করে দরজা আটকালো। খাবারের ডিশ টেবিলে রেখে ফুঁসতে লাগল। রাফাত গোসল সেরে ওয়াশরুম থেকে বের হয়েই অরোনীকে দেখে বলল,” গুড মর্নিং।”
অরোনী রাগী কণ্ঠে বলল,” তুমি তোমার মাকে আমাদের ঘুরতে যাওয়ার সংবাদ জানিয়ে দিয়েছো তাই না?”
রাফাত অবাক হয়ে বলল,” তুমি কিভাবে জানলে?”
অরোনী হাসল। দুঃখের হাসি।
” জানার দরকার নেই। ঘটে বুদ্ধি থাকলে এমনিই বোঝা যায়।”
” মানে?”
” তোমার মা এসেছিলেন। আমাকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে গেছেন।”
” বাহ, ভালোই তো। তাহলে খেয়ে রেডি হয়ে যাও।”
” রেডি হবো। কিন্তু ঘুরতে যাওয়ার জন্য না। অসুস্থ রোগীর সেবা করার জন্য।”
” অসুস্থ রোগী আবার কে?”
” ওহ, তুমি জানোই না? তুমিই তো আমাদের গাড়ি করে পৌঁছে দিবে। তোমার কোন খালা নাকি অসুস্থ। মা এখন তাকে দেখতে টাঙ্গাইল যাবেন। আমাকেও সাথে নিবেন। রোগীর সেবা করার জন্য আয়া-বুয়া লাগবে না?”
” আশ্চর্য! মা তো এই ব্যাপারে আমাকে কিছুই বলেননি।”
” তোমাকে বলার কোনো প্রয়োজন আছে? তুমি মায়ের ছেলে, মা যা বলবে তাই তো করবে। মা যদি বলে আরেকটা বিয়ে করতে তাহলে সেটাও কোরো।”
অরোনী একটু থেমে বলল,” আমরা যে আজ ঘুরতে যাবো এটা জেনেই তিনি এসেছেন৷ এর মানে সব প্ল্যান করা। এখনও কি বুঝতে পারছো না?”
রাফাত অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। অরোনী বলল,” আমার কথা বিশ্বাস না হলে মা ছাদেই আছেন। গিয়ে জিজ্ঞেস করো যাও।”
রাফাত সত্যি সত্যি ছাদের দিকে গেল। অরোনী অবাক! রাফাত যে আসলেই যাবে এটা সে বুঝতে পারেনি। কি মনে করে যেন অরোনীও রাফাতের পেছন পেছন গেল। এমনভাবে গেল যাতে রাফাত বুঝতে না পারে।

রাবেয়া দড়ি থেকে শাড়ি খুলছেন। রাফাত পেছনে দাঁড়িয়ে বলল,” মা, টাঙ্গাইলের রুকু খালা কি অসুস্থ?”
রাবেয়া পেছনে ঘুরে সরল মুখে বললেন,” হ্যাঁ রে বাবা। খুব অসুস্থ!”
” আমাকে জানাওনি কেন?”
” আগে আমি নিজেও জানতাম না। একটু আগেই খবর পেয়েছি। তোর খালার সাথে কথা হলো।”
” কি এমন হয়েছে খালার যে আজকেই যেতে হবে? আর অরোনীকে নিয়ে কি করবে? তার কি ওখানে কোনো কাজ আছে?”
” তোর খালা অরোনীকে খুব দেখতে চেয়েছিলেন। বয়স্ক মানুষ, যদি ভালো-মন্দ কিছু ঘটে যায়?আর আমি তো একা যেতে পারবো না৷ অরোনী সাথে থাকলে ভালো হবে।”
” রুমা, নিলি অথবা তানজু ওদেরকে নিয়ে যাও। অরোনী তো কোনো কাজের না। তুমিই সারাক্ষণ বলো। তাহলে এখন কাজের সময় এই অকাজের মেয়েটিকে কেন নিতে চাইছো?”
অরোনী বিস্মিত হয়ে গেল। তার নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না। রাফাত এইভাবে কথা বলছে? তাও নিজের মায়ের সাথে? সূর্য আজ কোনদিকে উঠল!
রাবেয়া কঠিন মুখে বললেন,
” অরোনী কাজ না করলেও আমার কথা শোনে৷ তোর বোনেরা কি আমার কথা শুনবে? ওদের নিয়ে লাভ কি? তাছাড়া সেবা-যত্নের একটা ব্যাপার আছে না? অরোনী না গেলে এসব কে করবে? তোর বোনরা তো করবে না। ”
” অরোনীও করবে না। তুমি বরং নার্স ভাড়া করে নিয়ে যাও। তোমাকে সঙ্গও দিবে আর সেবা-যত্নও করবে। আমি টাকা দিয়ে দিচ্ছি।”
নার্সের কথা শুনে অরোনীর বেশ জোরে হাসি পেল। এতো উচিৎ জবাব সে নিজেও দিতে পারতো না। রাবেয়া বললেন,” তোর বউ আমার সাথে গেলে কি সমস্যা? তোদের ঘুরতে যাওয়াটা কি এতোই গুরুত্বপূর্ণ? ”
” ঘুরতে যাচ্ছি না মা। অরোনী অসুস্থ। তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি।”
” কই? অরোনী দেখি বলল সে সুস্থই আছে।”
” তোমাকে বলেনি আর কি। সব অসুস্থতার কথা কি বলা যায়?”
” ঠিকাছে। তাহলে যা৷ তোরা ফিরে এলেই যাবো। আমি অপেক্ষায় থাকবো। ”
” অপেক্ষায় থেকে লাভ নেই। আমাদের ফিরতে রাত হবে।”
” রাত কেন হবে? ডাক্তার দেখাতে তো এতো সময় লাগার কথা না।”
” সিরিয়াল অনেক থাকে। আর দুইবার টেস্ট করাতে হবে। বিকালে একটা, সন্ধ্যায় আরেকটা। রাত হবেই।”
অরোনী মুখে হাত দিয়ে বিস্ময় সামলাচ্ছে। রাফাত যে এতো চমৎকারভাবে মিথ্যে বলতে পারে তা সে ভাবতেও পারেনি। মনে হচ্ছে নিজের স্বামীকে অরোনী আজ নতুনভাবে আবিষ্কার করল। বাব্বাহ! অরোনী বাকি কথা আর শুনল না। মনে হচ্ছে শাশুড়ী যথেষ্ট জব্দ হয়েছে। সে খুশিমনে রুমে চলে এলো। আলমারি খুলে জামা সিলেক্ট করতে লাগল। আজ কোনটা পরবে?
রাফাত চলে যাওয়ার সময় আবার পেছন ফিরে বলল,” আরেকটা কথা মা, বাড়িতে কাজের মানুষের অভাব নেই। পুষ্পর মা আছে, রিতু আছে, প্রয়োজনে আরেকজন রাখো। তবুও অরোনীকে মশলা বাটতে দিও না।”
” মশলা বাটার কথাও তোর বউ বলে দিয়েছে?”
” অরোনী কিছু বলেনি। তোমার নামে ও আমাকে কখনোই কিছু বলে না।”
” তাহলে তুই জেনেছিস কিভাবে?”
” কিভাবে জেনেছি সেটা বড় কথা না। কিন্তু অরোনী যেই কাজ পারে না সেই কাজ ওকে তুমি করতে দাও কেন?”
” কাল বাড়িতে অনেক কাজ ছিল। সবাই-ই কাজ করেছে।”
” কিন্তু মশলা বাটা অরোনীর কাজ না। যেই কাজ তুমি নিজে কখনও করোনি সেই কাজ বাচ্চা মেয়েটাকে কিভাবে করতে দিলে?”
” অরোনী বাচ্চা মেয়ে?”
” নিলি যদি বাচ্চা হয় তাহলে অরোনীও বাচ্চা।”
রাবেয়া শাড়ি হাতে গুজে নিতে নিতে বললেন,” ঠিকাছে। আমার অনেক বড় অপরাধ হয়েছে। এখন কি মাফ চাইতে তোর বউয়ের পা ধরে?”
” তোমার যদি নিজের মেয়ের পায়ে ধরে মাফ চাইতে লজ্জা না লাগে তাহলে চাইতে পারো। আমার কিছু বলার নেই।”
রাবেয়া জবাব দেওয়ার ভাষা পেলেন না। ঘটঘট করে ছাদ থেকে বের হয়ে গেলেন। রাফাত দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। মায়ের সাথে রাফাত প্রথম এইভাবে কথা বলছে না। সবসময়ই বলে। কিন্তু অরোনীর আড়ালে। অরোনীকে এসব কখনও জানতে দেয় না। আবার মাঝে মাঝে মায়ের কথা শুনে সে অরোনীকেও বকে। সেটাও মায়ের আড়ালে। রাফাত জানে দু’জনেরই দোষ আছে। কার দোষ কোথায় সেটাও রাফাত বোঝে। কিন্তু সামনাসামনি কাউকেই কিছু বলে না। যদি অরোনীর সামনে মাকে একদিন কড়া কথা বলে তাহলে অরোনী তার অন্যায়ের প্রশ্রয় পেয়ে যাবে। আবার মায়ের সামনে অরোনীকে কড়া কথা বললে মা প্রশ্রয় পাবেন। তাই দু’জনকেই আলাদা বোঝাতে হয়।
রাফাত রুমে ঢুকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল,” মা ম্যানেজ হয়ে গেছে।”
অরোনী হেসে জবাব দিল,” তুমি যে মাকে ম্যানেজ করতেই গেছো এটা আমি জানি!”
” কিভাবে জানলে?”
” ব্লেকমেইল! ভিডিও যদি ফেসবুকে আপ্লোড করে দেই এই ভয় তো তোমার এখনও আছে। সেজন্যই মাকে ম্যানেজ করেছো। ঠিক বললাম না?”
রাফাত হেসে ফেলল। অরোনী মোটেও ঠিক বলেনি। ভিডিওর কথা রাফাতের মনেই ছিল না। অরোনী উঠে দাঁড়িয়ে বলল,” বাই দ্যা ওয়ে থ্যাংকস। টাঙ্গাইল যাওয়ার কথা শুনে আমি ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম।”
” তোমাকে টাঙ্গাইলও যেতে হবে না।”
” ডাবল থ্যাংকস! ”
রাফাত অরোনীর হাত ধরে বলল,” শুধু থ্যাংকস?”
অরোনী জানে রাফাত কি চায়। সে আজ খুব খুশি। ইচ্ছে করছে চুমু-টুমু দিয়ে রাফাতকে চমকে দিতে। কিন্তু গতকালকের বাগানের ঘটনা মনে পড়তেই মেজাজ আবার বিগড়ে গেল৷ ঝটকা মেরে হাত ছাড়িয়ে তীক্ষ্ণ গলায় বলল,” তোমার তো মাধুরী দিক্ষিত আছে। যাও তার কাছেই যাও।”
রাফাত হতাশ! এই মাধুরী দিক্ষিত নিয়ে যে আরও কয়দিন খোঁটা শুনতে হবে! এখন রাফাতের মনে মনে শুধু আফসোস হচ্ছে,” কেনো যে ঢংটা করতে গিয়েছিলাম!”

চলবে

অরোনী, তোমার জন্য~৫
লিখা- Sidratul Muntaz

সারাদিন ঘুরাঘুরির পর রাত নয়টায় চাইনিজ রেস্টরন্ট থেকে ডিনার করে বাড়ি ফিরে এসেছিল অরোনী আর রাফাত। বাড়ির মূল ফটকেই তাদের জানালা দিয়ে দেখে ছুটে আসে নীলিমা, উর্মি আর রিতু। রিতু এই বাড়ির গৃহকর্মী। উর্মির সাড়ে তিনবছরের ভাইকে দেখাশুনার জন্য আর টুকটাক কাজ করার জন্য তাকে রাখা হয়েছে। একমাত্র নিলীমাই রাফাতের আপন বোন৷ রুমা আর তানজু রাফাতের চাচাতো বোন। নীলিমা অরোনীর সাথে খুব একটা রেষারেষি করে না। তবে রুমা আর তানজু অরোনীকে দেখলেই আড়ালে মুখে একটা ভেংচি কাটে। মনে মনে হয়তো বলে,” আসলেন মহারাণী।”
উর্মি অরোনীদের হাতে শপিং ব্যাগ দেখে আনন্দে উদ্বিগ্ন হয়ে জিজ্ঞেস করে,” ভাবী, কি এনেছো? কি এনেছো?”
রাফাত হাসিমুখে বলল,” সবাইকে ডেকে আমাদের রুমে আসতে বল। সারপ্রাইজ আছে।”
নীলিমা, উর্মি আর রিতু সারপ্রাইজের কথা শুনে আনন্দে চিৎকার করে উঠল। একে-অন্যকে হাই ফাইভ দিল। তারপর হৈহৈ করে সবাইকে ডেকে আনতে গেল। অরোনী রুমে এসেই নিজের জিনিসগুলো আলমারীতে ঢুকিয়ে ফেলল। আর বাড়ির সবার জন্য যেগুলো আনা হয়েছে সব বিছানায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখল। একটু পরেই তাদের ছোট্টঘরে সবাই এসে ভীড় জমালো। রাফাত একে একে সবার হাতে উপহার তুলে দিতে লাগল। রাবেয়া মুখ ভার করে বললেন,” গিয়েছিলি ডাক্তার দেখাতে। এখন দেখি চৌদ্দগুষ্ঠির জন্য শপিং করে এনেছিস। ব্যাপারটা কি?”
রাফাত হেসে জবাব দিল,” কোনো ব্যাপার না। হঠাৎ ইচ্ছে করল সবাইকে কিছু গিফট দেই। ইচ্ছের জন্য কি উপলক্ষ্য লাগে?”
রাফাতের হাসি দেখে অরোনী দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। তার হাসব্যান্ডটা যে কেন এমন! এর কাছে কিছু আবদার করতেও ভয় লাগে। বিয়ের পর নিজের জন্য তেমন কিছু কেনাই হয়নি অরোনীর। ভালো কোনো জামা-কাপড়ও ছিল না। তাই আজ ভেবেছিল নিজের জন্য ইচ্ছেমতো শপিং করবে। কিন্তু রাফাত হলো পরিবার অন্তপ্রাণ। অরোনীকে একা শপিং করতে দিবে সে? জীবনেও না! বাড়ির সবার জন্য সে শপিং করে ফেলেছে। অরোনী যেটাই কিনতে চায় রাফাত তার বোনদের জন্যেও সেটাই কিনে ফেলে। কি বিরক্তিকর ব্যাপার! গাঁধা এইটা বোঝে না যে বোনদের দেওয়ার জন্য তার বাপ-চাচারা আছে।রাফাতের বড়ভাই রাহাতও আছে। কিন্তু অরোনীর তো রাফাত ছাড়া কেউ নেই। সে আর কার কাছে চাইবে? এর উত্তরে রাফাত বলেছে,” অন্যদেরটা অন্যরা দিবে। আমারটা আমি দিচ্ছি। তাদের সাথে আমার হিসাব কেন?”
এলেন আমার দয়ার সাগর। আজকে যে পরিমাণ টাকা খরচ হলো তাতে অরোনী আগামী একবছর শপিং এর নাম মুখেও আনবে না।
উর্মি খুশি খুশি গলায় বলল,” একদম ঠিক। আমার জন্য কি এনেছো ছোটভাইয়া?”
” পাকনি, তোর জন্য এনেছি এইটা।”
রাফাত একটা বড় ব্যাগ উর্মির হাতে দিল। উর্মি খুলে দেখল ভীষণ সুন্দর একটা ড্রেস। সে অবাক হয়ে গেল। অরোনী ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল,” কেমন?”
উর্মি আবেগে আপ্লুত হয়ে বলল,” ফ্যান্টাস্টিক হয়েছে ড্রেসটা।”
রাফাত খুব ভাব নিয়ে বলল,” তোর ভাবীর চয়েজ। সুন্দর তো হবেই। আমাকে দেখে বুঝিস না? চয়েজ সুন্দর না হলে কি বিয়ে করতো?”
এই কথা শুনে সবাই হেসে দিল। শুধু হাসল না অরোনী। রাফাত রিতুর জন্যেও উপহার এনেছে। উপহার পেয়ে সবচেয়ে বেশি রিতুই খুশি হয়েছে। কারণ নিজের জন্য এতো দামী উপহার সে আশা করেনি। রিতুর খুশি দেখে অরোনীর ভালো লাগল। মেয়েটা তাকে কাজে খুব সাহায্য করে। অরোনীর ইচ্ছে করে মাঝে মাঝে রিতুকে গোপনে অনেক উপহার দিতে। তানজু আর রুমার জন্য শাড়ি আনা হয়েছে। তারা শাড়ি দেখেই মুখে পেচকী কেটে বলল, একদম পছন্দ হয়নি। হয়তো তারা ভেবেছিল উর্মির জামার মতো তাদের শাড়িও অরোনী পছন্দ করেছে। কিন্তু তাদের জন্য শাড়ি পছন্দ করেছে রাফাত। অরোনী ভুলেও ওদের শাড়ি পছন্দ করবে না। সে উর্মিকে পছন্দ করে বলেই উর্মির জন্য জামা পছন্দ করেছে। শীলা মেয়ের অভিযোগ শুনে বললেন,” ভাই কিছু শখ করে আনলে পছন্দ হয়নি বলতে হয়? যেমনই হোক এনেছে তো!”
রাফাত বলল,” থাক চাচী। পছন্দ না হলে চেঞ্জ করে আনবো। তোরা কাল আমার সাথে মার্কেটে চলিস। যেটা পছন্দ হবে সেটা এক্সচেঞ্জ করে আনবো। আমি তো আসলে শাড়ি সম্পর্কে এতো ভালো জানি না।”
তানজু বলল,” এই শাড়ি তুমি পছন্দ করেছো?”
” হ্যাঁ। আমিই করেছি।”
এবার রুমা হাসিমুখে বলল,” অনেক সুন্দর হয়েছে ছোটভাইয়া। আমরা তো মজা করছিলাম।”
তখন নীলিমা বলল,” আচ্ছা ভাবী, তোমার হাতে না আরও ব্যাগ দেখেছিলাম? ওগুলো কোথায়?”
অরোনী মুখ গম্ভীর করে রাফাতের দিকে তাকাল। রাফাত অপ্রস্তুতভাবে বলল,” ওগুলোতে তোর ভাবীর জিনিস ছিল।”
রুমা বলল,” তাই? ভাবী কি কিনেছো দেখি?”
এই কথা বলে রুমা নিজেই আলমারীর দিকে ছুটে গেল। নিলীমা দ্বিগুণ উৎসাহে বলল,” আমিও দেখবো ভাবীর শপিং।”
অরোনীর মেরুদন্ড দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল।তাদের থামাতে অরোনী দ্রুত বলল,” আমি দেখাচ্ছি। তোমরা এলোমেলো কোরো না।”
কে শোনে কার কথা? ততক্ষণে সব প্যাকেট বের করা হয়ে গেছে। রুমা, তানজু, নিলীমা তিনজনই হামলে পড়েছে দেখার জন্য। একে একে সবকিছু বের করা হলো। এর মধ্যে সবার নজর আটকে গেল একটা সুন্দর ডার্ক রোজ কালার জামদানি শাড়ির উপর। রুমা শাড়িটা নিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখতে লাগল। তানজু অভিভূত কণ্ঠে বলল,” ওয়াও!”
অরোনী ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিল। এই শাড়িটা কেনার পেছনে একটা ঘটনা আছে। আড়ং-এ শাড়িটা দেখেই মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিল অরোনী। কিন্তু দাম দেখে রাফাতের কাছে চাওয়ার সাহস করতে পারল না। পুরো পঁচিশ হাজার টাকার শাড়ি। ততক্ষণে বাড়ির সবার জন্য শপিং করা শেষ। অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। যেখানে সবার জন্য মাত্র চার-পাঁচহাজার টাকা ধরে জিনিস কেনা হয়েছে সেখানে অরোনী তার একার জন্য পঁচিশ হাজার টাকা চাইতে পারে না। সে নিজের আগ্রহকে দমিয়ে ফেলেছিল। তারপর যখন তারা রেস্টরন্টে খেতে যায় তখন হঠাৎ রাফাত ওয়াশরুমের বাহানা দিয়ে অরোনীকে রেখে উঠে চলে যায়। আর এই শাড়িটা কিনে আনে। এই হলো ইতিহাস। তবে রাফাত অনুরোধ করেছিল শাড়িটা যাতে অরোনী কাউকে না দেখায়। এতে বোনরা ভাবতে পারে ভাই পর হয়ে গেছে। বউয়ের জন্য দামী শাড়ি কিনছে। আর বোনদের জন্য কমদামী। একটা রেষারেষি শুরু হবে। অরোনী তাই রুমে ঢুকেই শাড়িটা আলমারীতে রেখে দিয়েছিল।
রুমা শাড়িটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে বলল,” অসম্ভব সুন্দর। ”
তানজুও বলল,” হ্যাঁ। আমারও এটা খুব পছন্দ হয়েছে। কি সুন্দর কালার, ইউনিক ডিজাইন। দেখতে ভালো লাগছে।”
রাবেয়া বললেন,” বাব্বাহ! তোরা কি আসলেই ডাক্তার দেখাতে গেছিলি নাকি শপিং করতে? অরোনী, তোমার টেস্টের রিপোর্ট দেখি তো।”
অরোনী ভ্যাবাচেকা খেল। এবার কি উত্তর দিবে খুঁজেই পেল না। রাফাত বুদ্ধি করে বলল,” টেস্ট রিপোর্ট কি যেদিন করায় সেদিনই দিয়ে দেয়? সাতদিন পর যেতে বলেছে।”
“ও আচ্ছা। রিপোর্ট আনার পর আমাকে দেখিও কিন্তু।”
অরোনী মৃদু হেসে বলল,” জ্বী মা। দেখাবো।”
রুমা অভিযোগের স্বরে বলল,” ছোটভাইয়া, আমাদের জন্য তুমি এমন একটা শাড়ি আনতে পারলে না?”
রাফাত বলল,” এটা তো আর ছিল না। ঠিকাছে এমন পেলে তোদের জন্য নিয়ে আসবো আবার।”
নিলীমা বলল,” আমার জন্যেও আনবে।”
” তুই শাড়ি পরিস কবে থেকে?”
” এখন থেকে পরবো। আপু, ভাবীদের সাথে ম্যাচিং করে।”
” ঠিকাছে আনবো।”
তানজু বলল,” আনবো বললে তো হবে না। বাকির নাম ফাঁকি।”
” তাহলে তোরা কি চাইছিস? এখনি শাড়ি কিনতে চলে যাবো?”
রুমা বলল,” উহুম। এখন কেন যাবে? এটাই আমাদের দিয়ে দাও। ভাবীকে এমন আরেকটা কিনে দিও।”
শীলা মেয়েকে ধমক দিলেন।
” এটা আবার কেমন অভ্যাস রুমা? অন্যের জিনিস তুই কেন নিবি?”
তানজু যুক্তিবাদীর মতো বলল,” অন্যের জিনিস কেন হবে মা? ভাবীর জিনিস মানেই তো আমাদের জিনিস। ভাই যেমন আমাদের ভাবীও তো আমাদের।”
রাফাত মীমাংসা করার জন্য বলল,” তাহলে তো হয়েই গেল। শাড়িটা তোদের ভাবীর কাছেই থাক। যেহেতু ওর জিনিসই তোদের জিনিস! তোদের ইচ্ছে হলে ভাবীর থেকে নিয়ে পরবি। সমস্যা কি?”
অরোনী সাথে সাথে বলল,” না। আমি কাউকে আমার জিনিস পরতে দেই না। তোমাদের যদি শাড়িটা এতোই ভালো লাগে তাহলে তোমরা এটা নিয়ে যেতে পারো। কোনো সমস্যা নেই। ”
রাফাত অরোনীর উত্তর শুনে বিস্মিত হয়ে তাকাল। রুমা, তানজু আর নিলী হৈহৈ করে শাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। বাকিরাও তাদের উপহার নিয়ে চলে গেল। অরোনী মুখ ভার করে সবকিছু গোছাতে লাগল। রাফাত মুচকি হেসে বলল,” থ্যাংকস অরোনী। তোমার মনটা খুব বড়।”
অরোনী চট করে বলল,” আমার না, তোমার মন বড়। একেবারে আটলান্টিক মহাসাগরের চেয়েও বিস্তৃত। ”
” তুমি কি রাগ করেছো?”
” না। রাগ কেন করবো? খুশিতে আমার নাচতে ইচ্ছে করছে!”
” আচ্ছা, কালকেই আমি তোমার জন্য এর চেয়েও সুন্দর শাড়ি কিনে আনবো।”
” কোনো দরকার নেই। আমি ঠিক করেছি শাড়ি পরাই ভুলে যাবো।”
” অরোনী প্লিজ, সিম্পল একটা বিষয় নিয়ে এতো মাইন্ড করলে চলে? ওরা ছোটমানুষ।”
” তুমিও দেখছি তোমার মায়ের মতো কথা বলছো। ছোটমানুষ মানে কি? রুমা আমার চেয়ে কয়বছরের বড় হিসাব করোতো।”
” বয়স দিয়ে কি আসে যায়? ও আমার ছোটবোন। তাই সম্পর্কে ও তোমারও ছোট।”
অরোনী অবশিষ্ট প্যাকেটগুলো আলমারীতে ঢুকিয়ে রাখল। রাফাত বলল,” কালই আমরা শপিংয়ে যাবো। ওকে?”
” আমি আর জীবনে তোমার সাথে শপিংয়ে যাবো না। তওবা করলাম।”
” সাতদিন পর রিপোর্ট আনার কথা বলেছি না? তখনও যাওয়া যায়।”
” ও, ভালো কথা। এখন টেস্টের রিপোর্ট কোথায় পাবে বলো? তোমার মা যে দেখতে চাইলেন!”
” আরে ধূর, মায়ের কি সাতদিন পর মনে থাকবে?”
” শোনো, তোমার মাকে তোমার চেয়েও ভালো আমি চিনি। তিনি যে কি পরিমাণ হিপোক্রিট…”
রাফাত কঠিন মুখে বলল,” এবার কিন্তু বেশি হচ্ছে অরোনী। হিপোক্রিট মানে কি?”
” যা সত্যি তাই। আমার মা আমার ভাবীর সাথে কখনও এমন করেনি। আমাকেও মা এতোটা স্নেহ করে না যতটা ভাবীকে করে। মা কি বলে জানো? অরো, তুই তো আমার সাথে সারাজীবন থাকবি না। কিন্তু আমার এই মেয়ে আমার সাথে সারাজীবন থাকবে। মৃত্যুর আগে সেই আমার মুখে পানি দিবে।তাই তোর থেকে ওর মূল্য আমার কাছে অনেক বেশি। তুই নিজের মেয়ে হয়ে যা পারবি না ও পরের মেয়ে হয়ে সেটা করবে। তোমার মা এসব কিছু বোঝেন? এইভাবে কখনও চিন্তা করেন?”
” সবার চিন্তার ধরণ তো এক না। পৃথিবীর সব মানুষকে এক দাড়ি পাল্লায় মাপলে হবে বলো? আচ্ছা তুমি নিজে কি তোমার ভাবীর মতো? একবার ভেবে দেখো, তুমি তোমার ভাবীর থেকে কত জিনিস নিয়েছো। তোমার ভাবী কখনও রাগ করেছে? উল্টো তুমি কলেজে যাওয়ার সময় তোমাকে ভাত মেয়ে খাওয়িয়েছে। তুমি কখনও ননদদের জন্য এরকম করতে পারবে?”
” এখন কি তুমি চাইছো আমি তোমার বুড়ি বুড়ি বোনদের ভাত মেখে খাইয়ে দেই?”
” ভাত মেখে খাওয়ানোর কথা তো বলিনি। এটলিস্ট ওদের সাথে ফ্রেন্ডলি তো হতে পারো।”
” ওরা তো আমার সাথে ফ্রেন্ডলি না। তাহলে আমি কেন হবো? পারবো না।”
এই কথা বলে অরোনী বালিশে মাথা রাখল। রাফাত ওর পাশে শুতে নিলেই অরোনী বলল,”খবরদার তুমি এখানে শোবে না। হয় মেঝেতে যাও না হয় সোফায় যাও। নাহলে কিন্তু আমিই ঘর থেকে বের হয়ে যাবো।”
” ওকে ওকে, কাম ডাউন। আমি শুচ্ছি না, বালিশ নিতে এসেছি।”
রাফাত নিজের বালিশটা নিয়ে একটা চাদর বিছিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ল। মেঝেতে কার্পেট থাকায় শুতে অসুবিধা হয় না। অরোনী পুনরায় শোয়ার সময় বিড়বিড় করে বলল,” মিথ্যুক। আমার সাথে কথাও বলবে না তুমি।”
এরপর কেউই কারো সাথে কথা বলল না। অথচ দু’জনই সারারাত জেগে রইল।
সকালে বাড়িতে তুলকালাম কান্ড ঘটল সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা বিষয় নিয়ে। পাত্রপক্ষ বিয়েতে নিষেধ করে দিয়েছে। এখন সেই দোষটাও অরোনীর ঘাড়ে এসে পড়েছে। কারণ সে পাত্রপক্ষের সামনে গিয়েছিল। পাত্রপক্ষ নাকি অরোনীকে দেখেই রুমাকে রিজেক্ট করেছে। এই নিয়ে বাড়িতে শুরু হলো ঝগড়াঝাঁটি, তর্কাতর্কি। রুমা অরোনীকে দেখেই কাঁদতে কাঁদতে মুখের উপর দরজা আটকে দিল। কি আশ্চর্য! অরোনী জানেই না তার দোষ কোথায়?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here