অরুর সংসার,পর্ব-১০

অরুর সংসার,পর্ব-১০
লেখিকা-নিশিকথা

নির্জন রাত…… আর একটু পরেই ভোর হবে….

খাটের পাশের মেঝেতে বসে চোখের জল ফেলছে অরু…………
। কেন এমনটা হল তার সাথে……

সে তো অয়নকে ভালবাসে ফেলেছে ” খুব বেশি ভালবেসে ফেলেছে……. ♥

আচ্ছা অরুর অয়নকে ভালবাসা টা কি ভুল???

না তো!

অয়ন যে তার স্বামি…………♥

ইসলামী শরীয়াত মোতাবেক ৩বার কবুর বলে অয়ন আর অরু বিবাহের এই পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল।…….

অরু তো কখনো কাউকে ভালবাসে নি…. সে তার ভালবাসা মনের মাঝে সুপ্তভাবে রেখেছিল তার
স্বামির জন্য…

..সে চেয়েছিল নিজের সর্বস্ব দিয়ে নিজের স্বামিকে ভালবাসতে…… আর তাই ই তো সে অয়নকে ভালবাসতে চাচ্ছে…

♦কিন্তু অয়ন?????

সে যে অরুকে ভালবাসে না।ভালবাসতে চায় ও না।
অরু তাকে ভালবাসুক সেটাও তার কাম্য নয়।

সে শুধু অরুর শরীর চায়।

সে চায় অরুও তাকে শুধু শরীর দিক। ভালবাসা না দিলে অয়নের বিন্দুমাত্র যায় আসে না……♦

না না এটা অরুর মনের কথা না…….

এটা অয়নের তাকে বলা কথা………..

এইতো কিছুক্ষন আগের কথা………..

★★ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে
অরু বারান্দায় উকি দিয়ে দেখেছিল অয়ন দাড়িয়ে সিগারেট টানছে…..
অরু : বুঝলাম না ওই ধোঁয়ার কি খায় উনি। আমার একটুও ভাল লাগে না!!
অয়ন: শোনা যাচ্ছে তোমার কথা
(অরুর চোখজোড়া অয়নের কথা শুনে বড়বড় হয়ে গেল)
অয়ন : মিনমিন করে কথা বলো তা ঠিক ই স্পিষ্ট শোনা যায়!! আর কোন প্রশ্ন করলে উত্তর এতই আস্তে বল যে কানে শুনি না
(অরু এবার জিহ্বায় কামড় দিয়ে যেই না দৌড়াতে যাবে অয়ন ওমনি অরুর হাত ধরে ফেলল…. হাত ধরে একটানে অরুকে নিজের কাছে নিয়ে এলো অয়ন
।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।

অরুকে পিছনে ফিরিয়ে পিছে থেকে জরিয়ে ধরলো অয়ন….

পূর্ণিমা রাত…

দুজনের চোখ আকাশের উজ্জ্বল চাঁদের দিকে…….

কিছুক্ষন বাদে অয়ন বলল….

[অয়ন: অরু তোমার কাছে স্বামী স্ত্রি এর সম্পর্ক মানে কি?
অরু অনেক সহজেই বলে দিলে……
অরি: স্বামী স্ত্রি এর সম্পর্ক মানে…..
ভালবাসার সম্পর্ক।
সম্মানের সম্পর্ক।
একে অপরের সুখ দুঃখে সঙ্গী হবার সম্পর্ক।

স্বামী স্ত্রি এর সম্পর্ক মানে …………………..

স্বামী স্ত্রির কাছে আর
স্ত্রি স্বামীর কাছে সেই এক নিশ্চয়তা এবং ভরসার স্থান যেখানে
জীবনে যত বড় ঝড়ই আসুক না কেন স্বামী ও স্ত্রি একে অপরের প্রতি সেই আস্থা রাখে যে কঠিন থেকে কঠিনতর সময় ঐ একটা মানুষ আছে যে তার সঙ্গ কখনো ছাড়বে না।

(অয়ন অরুর কথাগুলো তখন খুব মন দিয়ে শুনেছিল আর সাথে সাথে
অরুর কাঁধে নিজের ঠোঁটজোড়া বুলাচ্ছিল! আর অরু চোখ বন্ধ করেই বলছিলো কথা গুলো।।। অয়নের স্পর্শগুলো অরুর মনের ভিতরে যেন ঝড় তুলছে ওই মূহুর্তে……

অরুর কথা শেষে অয়ন অরুকে নিজের দিকে ফিরিয়ে কোলে তুলে নিল)

♥♥
♥♥♥
♥♥

দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক মিলনের পর অয়ন তাকে বলল………………..

অয়ন: কি যেন বলছিলে তুমি?
হ্যা ! প্রথমত…..
স্বামী স্ত্রি এর সম্পর্ক মানে ভালবাসার সম্পর্ক। কিন্তু অরু আমি তোমাকে ভালবাসি না।আর না কখনও ভালবাসবো!
এর মানে কিন্তু এই না যে টিভি সিরিয়াল এর মত আমি অন্য কাউকে ভালবাসি বা কখনো ভালবেসেছি কিংবা ভাকবেসে ঠোকেছি! এমন কিছুই না।
কি করবো বলো আমি মানুষ বেশি একটা ভাল না।তুমি চাইলে ডাইরেক্ট খারাপ ই বলতে পারো কারন আমার কাছে মেয়েরা কোন ভালবাসার বস্তু নয়…
আর যেখানে তোমার আমাকে ভালবাসার কথা…তুমি আমাকে ভালবাসো না বাসো বিলিভ মি একটুও যায় আসে না আমার! সাজেস্ট করবো আমাকে ভালবেসো না…ভাল থাকবে….. আমাকে ভালবাসলে কষ্ট ছাড়া কিছুই প্রতিদানে পাবে না।

অরু: ……………

দ্বিতীয়ত… স্বামী স্ত্রি এর সম্পর্ক মানে সন্মানের সম্পর্ক….

কিন্তু তোমাকে দেখলে আমার কামনা জাগে… তোমাকে নিজের করে পাওয়ার প্রবনতা জেকে বসে আমাকে। তোমার শরীর চাই আমি।তোমার বিবস্ত্র শরীর আমার কামনার প্রখরতাকে ঠান্ডা করে।
আমরাও কিন্তু স্বামী স্ত্রি! তাহলে? এখানে সম্মান টা কোথায় তোমার প্রতি আমার ????
আর যে মানুষটা তোমাকে এমন নজরে দেখে তার প্রতি তো তোমার ও সম্মান থাকা উচিৎ না।

অরু: …………..

তৃতীয়ত বলেছিলে এলে অপরের আস্থা, ভরসার স্থানের কথা……..

সেটা আমার কাছে একদম ই অসম্বব একটা কথা লাগলো! কারন আমি জানি যে স্বামী স্ত্রি একে অপরের নিশ্চয়তার স্থান হতে পারে না । আজ আমার এবিলিটি আছে, তোমাকে ফিজিকালি, মেন্টানি, ফাইনান্সিয়ালি সব দিতে পারছি তার তুমি আমার সাথে আছো
কিন্তু আজ আমার কিছু একটা হয়ে যাক!সাপোজ আমি কোন ভাবে তোমাকে এসব দিতে অক্ষম হলাম তখন ভালবাসা, সাপোর্ট জানালা দিয়ে পালাবে তোমার।
আমার ক্ষেত্রও কিন্তু সেম! আজ তুমি আমাকে ফিজিকালি সেটিস্ফাইড করতে পারছো বলে আমার প্রতি রাতে শুধু তোমায় চাই কিন্তু আল্লাব না করুক তোমার সাথে খারাপ কিছু হোক ”
তখন কিন্তু আমিও তোমাকে দেখতে পারবো না।

অরুর অয়নের বলা কথা শুনে নিস্তব্ধ!! চোখ দিয়ে শুধু টপটপ করে পানি পড়ছে তার!

এমন কেন লোক টা??
মেয়েদের এত খারাপ ভাবেন কেন তিনি??
অরুর বাবা তো বলতেন যে মেয়েরা এই দুনিয়ায় পিতা মাতার কাছে মহান আল্লাহ এর দেওয়া সব থেকে বড় নিয়ামত!
তাহলে? উনি এমন কেন করেন!!!

ফজরের আযান শুনে ঘোর কাটলো অরুর।

নামায পড়তে হবে!! নুজেকে গুছিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল অরু।
ফরজ গোছল করে ওজু করে নামাযে দাঁড়াতে হবে তার।


♥♥

এদিকে আযান আরোহী আর অনিক ও একে অপরের দিকে তাকালো…পাশে রুশা ঘুম! মেয়েটা আজ খুব খুশি। আজ ১মাস পড় সে তার বাবাইকে আগের মত করে পেয়েছে! অনেক খেলেছে আজ বাপ মেয়ে মিলে! তারপর রুশা অনিকের কাছে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছে!

তারপর শুরু হয়েছিল অনিক আরোহীর গল্প!
।।এর মানে দুজনে সারা রাত গল্প করেই কাটিয়েছে! আসলে গল্প না!! অনিক আরোহীকে সব সত্যি কথা জানিয়াছে এতক্ষনে”! আরোহীর কাছে মাফ ও চেয়েছে সে খুব করে!!!
আরোহীর চোখে ছিল পানি, অনিকেরর ও।।।
দুজন যে দুজনকে বড্ড বেশি ভালবাসে।
আরোহী : তুমি চিন্তা কর না! আল্লাহ বিপদ দিয়েছেন উনি ই আমাদের বিপদ দুর করবেন। আমরা দুজন একসাথে এই বিপদ থেকে বের হব ♥ চল একসাথে নামায আদায় করি।

অনিক :ইনশাআল্লাহ্‌। চল।
অনিক : আরোহী ???
আরোহী : জি???
অনিক : ভালবাসি ♥
আরোহী : আমিও! অনেক ভালবাসি তোমায় ♥♥♥

অরু ওজু করে বের হয়ে ভাবছে…
অরু : ডাকবো উনাকে??
না থাক যদি বকে
না ডাকা আমার দায়িত্ব
কিন্তু!!ডাকাত অধিকার? সেটা কি আছে???

চলবে…………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here