অগত্যা_তুলকালাম,পর্ব ৪১

#অগত্যা_তুলকালাম,পর্ব ৪১
নাফীছাহ ইফফাত

আওয়াল ওয়াক্তে ফজরের নামাজ পড়ে খানিক সময় ঘুমিয়ে নিলাম। সূর্যোদয়ের কিছু আগে উঠে নদীর পাড়ে চলে গেলাম। বড্ড আলসেমি লাগছে, চোখজোড়া বন্ধ হয়ে আসছে ঘুমে। সেসব পাত্তা না দিয়ে নদীর পাড়ে চলে এলাম একাকী৷ সূর্যোদয় দেখার পর আবার ঘুমানো যাবে। নদীর পাড় ধরে খালিপায়ে অনেকক্ষণ হাঁটলাম। মানুষজন এখনও জাগেনি খুব একটা। দীর্ঘসময় হাঁটাহাটির পর সিঁড়িতে এসে বসলাম। একাকী বসে আছি। মনে হলো সিঁড়িতে বসে ডায়েরিটা পড়লে মন্দ হয় না। যেই ভাবা সেই কাজ। একছুটে গিয়ে ডায়েরিটা নিয়ে এলাম। শুরু করলাম পড়া।

“অন্য আমি”

“ওকে ভেতরে যেতে বলার পর একমুহুর্ত ওখানে দাঁড়াইনি। সোজা বাসায় চলে এসেছি। বাসায় এসে প্রেয়সীকে টেক্সট করলাম। সিন করলো না। ভয়েস রেকর্ড পাঠালাম। জানি এবার সিন না করে পারবে না। সিন করলো যথারীতি। পরপর আরও একটা ভয়েস পাঠিয়ে বললাম, পিক আপ দ্যা ফোন। সে সাথে সাথে লিখে পাঠালো, “নো নিড!”
এত অসহায় লাগছে আমার। আবার সীমাহীন রাগও হচ্ছে। এবার লিখে পাঠালাম। ”আই ওয়ান্ট টু মিট ইউ টমরো! ইট’স ইমার্জেন্সি।” সে আবার লিখলো, “নো নিড!”
ধুরর! মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। আর টেক্সট না করে অফলাইনে চলে গেলাম। কিচ্ছু ভালো লাগছে না। রাতে কোনো খাবার নামেনি গলা দিয়ে। সকাল হতেই কাশবনে ছুটে গেলাম। বর্ষায় আকাশ ছেয়ে আছে মেঘে। আমি জানি সে আসবে। ঘাসের ওপর শুয়ে পড়লাম। আজ আমার মন খারাপের স্বাক্ষী হোক আকাশ। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি অনেকক্ষণ। সে এলো, বসলো পাশে। আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আজকাল আকাশটা সময়ে অসময়ে অভিমানী হয়ে ওঠে। যখন তখন ঢেকে যায় অভিমানের কালো মেঘের আড়ালে। আর হুটহাট ঝরে পড়ে বৃষ্টি। ঠিক আমার মনের মতো অবস্থা।”

আমি উঠে বসলাম। হাতের ধুলো ঝাঁড়তে ঝাঁড়তে ওর দিকে তাকালাম। ও তাকালো না আমার দিকে। দৃষ্টি আকাশে নিবদ্ধ রেখেই বললো
“আচ্ছা আকাশ, তােমারও কি কষ্ট দেওয়ার মানুষ আছে? মানুষ না হোক প্রিয়জন হলেই হয়৷ কে তোমার প্রিয়জন, এত কাঁদায়? কিসের এত অভিমান? হারিয়ে যাচ্ছে বুঝি কেউ?”
“আকাশের না, রাফিনের কেউ হারিয়ে যাচ্ছে।”
আমার কন্ঠে ওর কি হলো কে জানে। ঝট করে তাকালো আমার দিকে। তাকিয়েই থাকলো। ওর তাকানোকে উপেক্ষা করে আমি খানিকক্ষণ পায়চারি করলাম। এরপর ও এসে কি হয়েছে জানতে চাওয়ায় আমি ঝরঝর করে ভেঙ্গে পড়লাম। জীবনে প্রথমবার ওর সামনে ওর হাত ধরে কেঁদে ফেললাম।
‘আমার কিচ্ছু ভালো লাগছে না আরোহী। সবকিছু বিষন্ন লাগছে। তুমি বলোনা তোমার মন খারাপ হলে তুমি কি করো? আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন?’

সে মোলায়েম কন্ঠে বললো, “কেন কষ্ট হচ্ছে সেটা তো বলো।”
“তোমাকে ঐ মুহুর্তে ওখানে দেখে আমার নিঃশ্বাস কয়েক সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, ট্রাস্ট মি! ভাগ্যিস বিয়েটা ভেঙে গেছে।”

সে আমাকে বাতলে দিলো মন খারাপ ভালো করার অনন্য এক সমাধান। হাতের মুঠোয় বালু নিয়ে শক্ত করে চেপে ধরতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে বালু হাত গলে পড়ে যেতে থাকে সাথে রাগও। ফর্মূলা খুব কাজে দিয়েছে। সত্যি আমার মন ভালো হয়ে গেল। সেদিন আমরা অনেকদিন পর অনেক কথা বললাম। একসাথে হেঁটে বাসায় ফিরলাম। এবং সেটাই ছিল আমাদের শেষ সাক্ষাৎ, শেষ হাঁটা, সরাসরি শেষ কথোপকথন।

মন ভালো হওয়ায় আমি পরদিন বিকেলে আমাদের মাটির ঘরটায় চলে যাই। কাশবনের উল্টোদিকে আমাদের অন্য একটা বাড়ি আছে। বাড়িটা মায়ের। মাটির ঘর। সেই ঘরটা আমারও খুব পছন্দের। মন ভালো কিংবা খারাপ হলেই আমি বাড়িটায় চলে আসি৷ মন ভালো থাকলে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে মেতে থাকি আর খারাপ থাকলে একাকী দাওয়ায় বসে থাকি। আজও বাচ্চাদের নিয়ে গেইমস খেলতে বসছিলাম। তখনই তার ফোন এলো অনেকদিন পর। রিসিভ করে বুঝলাম শুধু শুধুই কল করেছে। কিসব হাবিজাবি কথা বলে ফোন রেখে দিলো। এবং সেটাই ছিল আমাদের শেষবারের মতে হাবিজাবি কারণে ফোন দেওয়া। আগে জানলে হয়তো রাগ না দেখিয়ে আরও খানিকক্ষণ কথা বলতাম।”

পরের অধ্যায় “শেষ কথোপকথন”।

“প্রায় সপ্তাহ দুয়েক পর তার জোরাজুরিতে অবশেষে রাত বারোটার দিকে তাকে কল করলাম। জানিয়ে দিলাম দীর্ঘদিন ধরে লুকানো সত্যিটা। আমাকে ফিরতে হবে মাদরাসায়৷ আমাকে অবাক করে দিয়ে সে খুশি হয়ে গেল। খুশি হয়ে বললো, আল্লাহকে ভালোবেসে সে এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। আমিও তাতে সম্মতি দিলাম। সে আমাকে বারবার করে মানা করলো যেন আর পাবজি না খেলি। পাবজি তো মূলত তাকে দেখানের জন্য খেলতাম। সেটা কখনোই আমার নেশা ছিল না৷ সেদিনের পর থেকে আর কখনো পাবজি খেলিনি। ওর সাথে কথা শেষ করামাত্রই ডিলিট করে দিয়েছিলাম ফোন থেকে। সে রাতে আমাদের অনেক অনেক কথা হয়৷ সবগুলোই প্রয়োজনীয় কথা। সেদিন একটাও অপ্রয়োজনীয় কথা আমরা বলিনি। সেই কথাগুলো লেখার মতো শক্তি বা ইচ্ছে কোনোটাই আমার নেই। লেখাগুলো লিখতে গেলে নিজেকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলতে ইচ্ছে হয়৷ আমার সেই শক্তি নেই। থাক না কথাগুলো ডায়েরিটারই অজানা। যার জানার সে তো জেনেছে বাকীরা না জানলেও চলবে। ব্যস! আমাদের আলাপ শেষ হলো। ফোন রেখে দিলাম। তারপর… তারপর শুরু হলো আমার অন্যরকম গল্প। এরপর গল্পের কোথাও সে নেই, আছে তার স্মৃতিরা। স্মৃতিদের অবাধ বিচরণ।

ওর সাথে ফোনালাপ যখন শেষের দিকে তখন দম আটকে আসছিলো বারবার। কোনোরকমে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। ভাবতেই পারছিলাম না এটাই আমাদের শেষালাপ। আর কখনো ওর কন্ঠ শোনা হবে না। অথচ আমি চাইলেই পারতাম মিনিটে মিনিটে, প্রতি সেকেন্ডে ওর কথা শুনতে, ওকে নিজের একদম কাছে রাখতে। কিন্তু এই ফেৎনাময় সমাজে কিছুতেই ওকে বৈধভাবে নিজের করে নিতে পারলাম না। এই অবৈধ সমাজের প্রতি আমার খুব ঘৃণা জন্মালো। ঘৃণা জন্মালো বাবার প্রতিও। বাবা চাইলেই পারতেন আমার বিয়ে দিতে। সেই বয়স আমার হয়েছে। আমার বয়স ছাব্বিশ। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো পঁচিশ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। সেই হিসেবে আমার বয়স আরও একবছর পেরিয়ে গেছে। তিনি ইচ্ছে করেই করাননি। বাবার সাথে আমার খারাপ সম্পর্কের শুরু তখন থেকেই।

ফোন রাখার পর কারো সাথে কোনো কথাই বলতে পারিনি। রাতের নিস্তব্ধতায়, আঁধারকে স্বাক্ষী রেখে অঝোরে অশ্রু ঝরিয়েছি শুধু। এত অশ্রু বোধহয় আর কখনোই কারো জন্য ঝরেনি। এমনকি বাবা-মায়ের জন্যও না। আমার যে কিছুই করার ছিলো না সেটা আরোহী কখনোই জানবে না। কখনোই না।

আমি ওকে বাবার সাথে মনোমালিন্যের কথা, আমার অপারগতার কথা কখনো জানতে দিইনি। আর এসব জানতে দিইনি বলেই ওর কাছে এত কঠোর আমি হতে পেরেছি। ওর কাছে একজন নিষ্ঠুর মানুষে পরিণত হয়েছি। আর এজন্যই ও আমাকে এত সহজে ছাড়তে পেরেছে। মেয়েটা তো একটু বোকাই। একটু না অনেকখানি বোকা, তাই তো আমার সত্যিকারের ভালোবাসাটা ধরতে পারেনি। ও ভেবেছে ও আমাকে একতরফা ভালোবাসে৷ কিন্তু ওর ভাবনার আড়ালে যে ও আমার কাছে কি সেটা সে কখনোই জানবে না। সে আমার কাছে সম্পূর্ণ আলাদা একটা জগত। তাকে যদি কখনো পাই তাকে নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা একটা রাজ্যে আমি হারিয়ে যাবো৷ যেখানে কেউ থাকবে না, শুধু আমরা দুজন।”

এতটুকুতে অধ্যায় শেষ। ডায়েরির অপর পৃষ্ঠার মাঝখানে লেখা,
“এরপর থেকে শুরু হলো আমার বদল। আমি বদলে যেতে থাকলাম অন্য এক রংয়ে, অন্য ঢংয়ে। প্রথমে ডিপ্রেশন, তারপর এক্সিডেন্ট তারপর সোজা হোস্টেল। মাঝখানে ঘটে গেল বহু ঘটনা। এই ডায়েরিতে এরপরের পৃষ্ঠাগুলোয় প্রেয়সী নেই। আছে তার অমলিন স্মৃতিরা। আর আছে তাকে ঘিরে আমার দুঃখ কষ্টরা।”

দুঃখ, কষ্টের কথা আর পড়তে ইচ্ছে করছে না। তাছাড়া মানুষের আনাগোনাও বাড়ছে। ডায়েরি বন্ধ করে নদীর ওপারে, শেষ প্রান্তে চোখ রাখলাম। একটা মাছরাঙ্গা স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে গভীর জলের দিকে। কিছুক্ষণ পর সাঁই করে উড়ে গিয়ে ঝুপ করে পানি থেকে তুলে নিল জীবন্ত মাছ। মাছরাঙার দু’ঠোঁটের ফাঁকে আটকা পড়ে ধরফড় করছিলো মাছটা। সেদিকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে মাছটি নিয়ে উর্ধ্বাকাশে ছুটলো মাছরাঙ্গাটি।

নাকীব এসে ধুম করে বসলো আমার পাশে। চমকে ওর দিকে তাকাতেই বললো,
“কি করছো আপু?”
“কিছু না। নদী দেখছি।”
“নদী দেখার কি আছে? নদী নিয়ে কোনো স্মৃতি আছে তোমার?”
“নদী নিয়ে? উঁহু! তেমন কিছু তো মনে পড়ে না।”
“আমারও কোনো স্মৃতি নেই। আসলে আমাদের গ্রামে কোনো নদীই নেই৷ তাই নদী নিয়ে আমাদের কোনো স্মৃতিও নেই।”
“হয়তো।”
“তুমি এত উদাস হয়ে গেলে কেন?”
“আসলে আমরা মানুষের ভেতরটা না দেখে সবসময় বাহিরেরটা দেখি তাই না? কখনো চেষ্টাও করি না ভেতরটা পড়তে। বাইরে থেকে ধারণা করেই তাকে ভুল বুঝে যাই তাই না?”
“হু! বাট…”
“গোটা একটা মানুষকে আজীবন ভুল বুঝে গিয়েছি। কখনো চেষ্টাও করিনি ভেতরটা বোঝার। চেষ্টা করিনি তার ভেতর কত ক্রাইসিস চলছে তা বোঝার।”
“কিসব বলছো আপু? তুমি আবার কাকে ভুল বুঝলে?”
“প্রায়ই বুঝি। আসলে আমি বোকা তো।”
“যাক এতদিনে স্বীকার করলে যে তুমি বোকা। আচ্ছা চলো গ্রামটা ঘুরে আসি।”
“গ্রাম না, নদীর ওপার থেকে ঘুরে আসি বরং।”
“আইডিয়া! আজকে তোমায় আমি পুরো নদীটা ঘুরে দেখাবো। নদীর ঐ পারে একটা সুন্দর বন আছে। এত্ত সুন্দর, না দেখলে বিশ্বাস করবে না। নদীটা পার হয়ে মাঝে জঙ্গল তারপর আবার আরেকটা নৌকায় চড়ে গহীনে ঢুকতে থাকবে। গহীনের গাছগুলো সব ভয়ংকর লম্বা আর শেকড়গুলো ইয়া মোটা মোটা। একদম পানির মাঝখানে শেকড় এসে পড়েছে। তুমি চাইলে নৌকা থেকে নেমে শেকড়ে চড়ে বসতে পারবে। মাঝখানে দ্বীপের মতো কিছু কিছু জায়গা খালি আছে৷ ওখানে আবার নৌকা থামিয়ে উঠতে পারবে।”
“কি বলিস? এত সুন্দর জায়গা আছে তুই জানলি কি করে?”
“আরে সেদিন গেলাম না তানভীর ভাইয়ার সাথে!”
“ওহ। আজকে আবার যাবি?”
“হু আজকে শুধু তোমাকে নিয়ে যাবো। সারাদিনের জন্য নৌকা ভাড়া করতে হবে।”
“কত খরচ লাগবে?”
“সারাদিনের জন্য ভাড়া করলে বারো হাজার টাকা।”
“অত টাকা দিয়ে দু’বার গিয়ে লাভ কি?”
“সেদিন খেয়াল করিনি। হঠাৎ তানভীর ভাইয়া বললো আর চলে গেলাম। তোমায় নিয়ে গেলে ভালো হতো। ধরো, আমরা একটা নৌকা ভাড়া করলাম বারো হাজার টাকা দিয়ে৷ নৌকায় একজন উঠলো না দশজন উঠলো দ্যাট ডাজ’ন্ট ম্যাটার৷ সে বারো হাজার টাকাই নিবে। সেদিন মাত্র দুজন গিয়ে বারো হাজার টাকা খরচ করে এলাম। অথচ তুমিসহ গেলেও সেইম ভাড়া নিতো। ফুল ফ্যামিলি গেলেও সেম ভাড়া নিতো।”
“তাহলে আর গিয়ে কাজ নেই। আমরা বরং শুধু নদীটাতেই একটা চক্কর মেরে আসবো।”
“হুম সেটাও করা যায়। নদীর ওপাশেও জঙ্গল আছে, পাহাড় আছে। তোমার ভালো লাগবে।”
“আচ্ছা, ব্রেকফাস্ট করেই বেরুবো তাহলে।”
“ইন শা আল্লাহ!”

নাকীব উঠে বাড়ির দিকে গেল। আমি দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে বাঁশের কঞ্চিতে হেলান দিয়ে বসলাম। মনটা কেমন খারাপ লাগছে। বুকের ভেতর হু হু করা দীর্ঘশ্বাস। গলাটা ভেঙ্গে আসছে। এত বোকা আমি? এভাবেও মানুষকে ভুল বোঝানো যায়? আমার মতো বোকাদেরকেই বোঝানো যায়। মন খারাপ হতেই আমি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা স্মরণ করলাম। যদি এই মুহুর্তে তিনি আমার সামনে এসে দাঁড়ান আর দেখেন যে আমি একজন পরপুরুষের কথা ভেবে মন খারাপ করছি তাহলে তিনি কতটা কষ্ট পাবেন? তাঁর এত কষ্ট করে প্রতিষ্ঠিত করা দ্বীনকে না মেনে আমি অবহেলা করছি জানলে ঠিক কতটা আঘাত পাবেন তিনি ভাবতেই চোখ বেয়ে টুপ করে একফোটা জল গড়িয়ে পড়লো। আল্লাহ তো দেখছেন-ই আমাকে। আমি আল্লাহর সামনে কিভাবে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করছি? আল্লাহ আমাকে দেখছেন ভাবতেই ভয়ে বুক কেঁপে উঠলো আমার। আসলে এসব আমাদেরকে শয়তান ভাবায়৷ বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড এসব তো শয়তান স্বরুপ। পুরোনো কথা মনে করিয়ে মনে হতাশা জাগিয়ে দিয়ে শয়তান নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করে। কিন্তু আমি তো তা মোটেও হতে দিবো না। দরূদ পড়লাম প্রিয় নবীজির উপর। আল্লাহুমা সাল্লি ওয়াসাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহাম্মদ। আসতাগফিরুল্লাহ পড়লাম দশবার।

এরপর মৃদু কন্ঠে গাইতে থাকলাম আর চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। প্রিয় নবীজির কথা খুব মনে পড়ছে। ইস! যদি দেখতে পারতাম একটাবার।

“আয় না তোরা কে কে যাবি?
চল না তোরা কে কে যাবি সোনার মদীনায়,
কদমে কদমে দরূদ পড়বো শাহে মদীনায়।
মদীনাতে আছেন শুয়ে আমার পেয়ারা নবী
তাঁরই প্রেমে পাগল আমি পাগল এ বিশ্বের সবই।
তাঁকে পেতে সারাক্ষণ, ভীষণ দিওয়ানা মন
কোনো বাঁধা মানে না, কোনো বাঁধা মানে না।”

#Be_Continued_In_Sha_Allah 🥀

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here