You are my property,Part 49,Part 50 last part
M Sonali
Part-49
হোটেলের পাঁচ তলার উপরে একটি গোপন কক্ষ থেকে ভেসে আসছে কারো চিৎকারের আওয়াজ। চিৎকারটা আর কারোর নয় ড্রাইভার রাজুর। হ্যাঁ ওকে এলোপাতাড়ি মারধর করছে রাজ। কারণ রাজুই সেই ব্যাক্তি যে কিনা বাথটাবে কারেন্ট লাগিয়ে রেখেছিলো। হোটেলের সিসি ক্যামেরায় চেক করার পর একজন হুডিওয়ালা জ্যাকেট পরা লোককে দেখা গিয়েছিল। যে লোকটি ওদের রুমে প্রবেশ করে। লোকটার গায়ে হুডিওয়ালা জ্যাকেট থাকার কারণে লোকটাকে চিনতে না পারলেও লোকটির হাতের বেসলেট দেখে রাজের আর চিনতে অসুবিধা হয়না যে এটা রাজু ড্রাইভার। তাই সেই মুহুর্তেই ড্রাইভার রাজুকে হোলেটের একটি গোপন কক্ষে তুলে নিয়ে এসে মারধর করছে রাজ। ওর মুখ থেকে সব সত্যিটা জানার জন্য।
— তোকে আমি বিশ্বাস করে এক কথায় তোকে আমার ড্রাইভার বানিয়ে চাকরি দিয়েছিলাম। আর তুই আমার সাথেই বিশ্বাসঘাতকতা করলি? আমার স্ত্রীকে মারার জন্য আমারই রুমের বাথটাবে কারেন্ট সিস্টেম করে রেখেছিলি। তোর এত বড় সাহস আমি ভেবে পাচ্ছি না তুই এতটা সাহস কোথা থেকে পেলি? সত্যি করে বল তুই কে আর কার কথা মত এইসব করে বেড়াচ্ছিস? সত্যি করে বল রাজু, না হলে আজকেই পৃথিবীতে তোর শেষ দিন হবে।
কথাগুলো বলে আবারো হাতে থাকা লাঠিটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে লাগল রাজুকে। অনেক মার খাওয়ার পর এবার রাজু আর সহ্য করতে না পেরে দুহাত তুলে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে বলতে শুরু করল,
— দয়া কইরা আমারে মাফ করে দেন স্যার। টাকার লোভে আমি ভুল করছি। আর জীবনে এমন ভুল করুম না। আমি অনেক টাকা পাইছিলাম আপনাদের কে মারার জন্য। তাই একাজগুলো করছি। কিন্তু এইভাবে ধরা খাইয়া যামু একটুও জানতাম না।
ড্রাইভার এর কথা শুনে রাজ একটু শান্ত হল। তারপর ওর গাল চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
— তাহলে বল কে দিয়েছিল তোকে টাকা আমাদের কে মারার জন্য? কে সেই ব্যক্তি তার সব কিছু বল আমাকে?
ওর কথা শুনে লোকটি কিছুক্ষণ চুপ করে একটু দম নিয়ে বলতে শুরু করল,
———————-
হানিমুনের জন্য আর দেরি না করে সন্ধ্যার ফ্লাইটে করে আমাকে নিয়ে রাজ বেরিয়ে পরলো ঢাকার উদ্দেশ্যে। আমাদের এবার আসল কালপিট কে ধরতে হবে। যে আমাদের পিছনে এমন ভাবে লেগে আছে আমাদেরকে মারার জন্য। এখানে আসার সময় গাড়িতে করে আসার কারণ ছিল আমাকে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখাতে দেখাতে নিয়ে আসা। কিন্তু যাওয়ার সময় যাওয়ার প্ল্যান ছিল ফ্লাইটে। আমরা ফ্লাইটে ওঠার আগে রাজুকে নিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে রাজ। আর ওকে যতটা সম্ভব শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করে এসেছে। আর এখানে ঘটে যাওয়া সব ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার ট্রাই করেছে রাজ। যেন আসল কালপ্রিট কোনভাবেই পালাতে না পারে। তাই আমরা দ্রুত বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছি। তবে বাড়িতে কাউকে ফোন করে কিছু বলা হয়নি, যে আমরা বাড়িতে ফিরছি। ফ্লাইটে থাকাকালীন পুরোটা সময় আমি খেয়াল করেছি রাজ কতটা রেগে আছে। রাগে যেন হাত-পা থরথর করে কাঁপছে ওর। যেন পারলে এখনি আসল কালপ্রিট কে ধরে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে ও। যদিও আমি জানিনা এখনও আসল কালপিটটা কে। তবে যতটুকু বুঝতে পেরেছি রাজ অলরেডি জেনে গিয়েছে কে সেই ব্যক্তি যে আমাদের পিছনে এভাবে লেগে আছে আমাদের মারার জন্য।
অনেকটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পর আমরা এসে পৌছালাম ঢাকা এয়ারপোর্টে। ফ্লাইট থেকে নেমেই রাজ আর এক মুহূর্ত দেরি না করে আমার হাত ধরে নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে লাগল সামনের দিকে। তারপর একটা ট্যাক্সিতে উঠে আমাকে নিয়ে রওনা হল বাসার উদ্দেশ্যে। ওকে কোনো কিছু প্রশ্ন করব সে সাহস টুকু আমার নেই। এতটা রাগী অবস্থায় ওকে কখনো দেখিনি। এ রাগটা নিশ্চয়ই আমার কারণেই হয়েছে ওর। আমাকে হারানোর ভয়ে হয়তো এতটা রেগে আছে। কারন কাল যদি বিড়ালটার জায়গায় আমি থাকতাম তাহলে তো আজকে বিড়ালটার করুণ পরিণতি আমার সাথে হতো। এটা হয়তো রাজ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। যতই হোক আমি তো ওর ভালোবাসার মানুষ। যাকে ও নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসে।
গাড়ি থেকে নেমে বাসার মধ্যে ঢুকে আমার হাত ধরে নিয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে লাগল বাসার ভিতরে। বাসার কলিং বেল চাপতেই আরিশা এসে দরজা খুলে দিল। আর রাজের চোখের দিকে তাকিয়ে যেন আঁতকে উঠল সে। কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে ওকে জিজ্ঞেস করল,
— ক কি কি ব্যাপার আরিয়ান তোমরা এখন কিভাবে? তোমরা না হানিমুনে গিয়েছিলে তাহলে এখন কিভাবে এলে?
ওর কথার কোন উত্তর না দিয়ে রাগে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে আমার হাত ছেড়ে দিয়ে দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো। তারপর এদিক ওদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজতে লাগলো। ওর এমন আচরণে আরিশার সাথে আমিও বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। বুঝতে পারছিনা রাজ ঠিক কি করতে চাইছে। আরিশা আবারও দু’কদম এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,
— কি ব্যাপার আরিয়ান কিছু তো একটা বলো? তোমরা হঠাৎ এভাবে চলে এলে কেন? কি হয়েছে বলোতো? আচ্ছা রাহি তুমি আমাকে বল কি হয়েছে? তোমরা হঠাৎ এভাবে চলে এলে কেন? আর ও এত রেগেই বা আছে কেন? কেন কিছু বলছে না বলতো?
ওর কথার উত্তরে আমি কিছু বলার আগেই রাজ চিৎকার করে বলতে লাগল,
— ফারিয়া ঐ ফারিয়া কোথায় তুই? আর তোর নাটক চলবে না যদি নিজের ভাল চাস তাহলে বাইরে আয়! না হলে তুই ভাবতেও পারবি না তোকে আমি কিভাবে মারবো।
রাজের কথা শুনে আমি এবং আরিশা দুজনেই বেশ অবাক হয়ে গেলাম। ফারিয়া বলে তো এ বাড়িতে কেউ থাকে না! তাহলে এভাবে কাকে ডাকছে ও? তখনই হঠাৎ আমি খেয়াল করলাম আমাদের পিছনের সোফার আড়াল দিয়ে কাজের মেয়ে রহিমা লুকিয়ে লুকিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে ডেকে বললাম,
— কি ব্যাপার রহিমা তুমি এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে কোথায় যাচ্ছ?
আমার কথাটা শেষ হবার সাথে সাথে রহিমা উঠে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে দৌড় লাগালো। আমি কোন কিছুই বুঝতে পারলাম না হঠাৎ কেন এমন করলো ও? আর তখনি খেয়াল করলাম রাজও ওর পিছু পিছু দৌড়ে যাচ্ছে। আর দৌড়ে গিয়ে এক লাফে ওর চুলের মুঠি ধরে ওকে ফেলে দিলো মাটিতে। রহিমা পড়ে গিয়ে পিছাতে পিছাতে একদম শুদ্ধ ভাষায় বলতে লাগলো,
— দেখ আরিয়ান নিজেদের ভালো চাস তো আমাকে ছেড়ে দে। আমি তাহলে তোদের কোন ক্ষতি করব না। প্লিজ আমাকে কিছু করিসনা। আমি বুঝতে পেরেছি তুই সবকিছু জেনে গেছিস। আমাকে ছেড়ে দে, দেখ আমি তো তোর বোন হই তাই না। আমাকে ছেড়ে দে প্লিজ আমি আর কখনো তোদের ক্ষতি করার চেষ্টা করব না!
ওর কথা শুনে কোন উত্তর না দিয়ে দাঁত দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ওর কাছে এগিয়ে গিয়ে আবারও ওর চুলের মুঠি ধরে ওকে দাড় করিয়ে রাজ বলল,
–তুই কিভাবে ভাবলি তোকে আমি বোন বলে মেনে নেব? পৃথিবীতে আমার কোনো ভাই বোন নেই। তোর এত বড় সাহস তুই আমাকে আর আমার স্ত্রীকে মারার চেষ্টা করেছিস? তুই ভাবলি কি করে তোকে আমি ক্ষমা করে দেবো। ছেড়ে দেবো? আজকে আমার হাতে তোর মৃত্যু আছে ফারিয়া।
কথাগুলো বলেই সজোরে একটি থাপ্পর বসিয়ে দিলো রাজ ওর গালে।আমি আর আরিশা পাশে দাঁড়িয়ে থেকে বোকার মত তাকিয়ে ওদের কথা শুনছি আর সিন দেখছি। বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে এসব? আর রাজ কেনইবা ওকে রহিমা না বলে ফারিহা বলে ডাকছে? আর ওই বা কেন রাজের নাম ধরে তুইতোকারি করে কথা বলছে? কি হচ্ছে কি এসব?
— দেখ ভাই আমি তোদের জীবন থেকে চলে যাব। আর কখনোই তাদের জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়াবো না। তোদের ক্ষতি করার চেষ্টা করব না। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দে আমাকে যেতে দে।
কথাগুলো বলে আকুতি-মিনতি করতে লাগল রহিমা রাজের কাছে। কিন্তু সে যেন থেমে যাওয়ার পাত্র নয়। সে একের পর এক গালের উপর চড় বসাতে লাগলো রহিমার। আমি যে গিয়ে ওকে আটকাবো, সে ক্ষমতা আমার নেই।এদিকে কি হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছি না। তখনই আমাদের মাঝে এসে হাজির হলো গাড়িতে করে বেশ কয়েকজন পুলিশ। তারা গাড়ি থেকে নেমে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। তারপর তাদের মাঝ থেকে দুজন মহিলা কনস্টেবল রহিমাকে ধরে হাতে হ্যান্ডকাপ পড়ালো। পুলিশের মধ্যে থেকে অফিসার রাজের কাছে এগিয়ে এসে বললো,
— মিস্টার আরিয়ান আমরা চিটাগাং এর পুলিশের থেকে সবকিছু জানতে পেরেছি। তাই আপনাকে আর নতুন করে কিছু বলতে হবে না। আর আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করবো ওকে ওর প্রাপ্য শাস্তি দেওয়ার জন্য। আপনি টেনশন করবেন না।
কথাটা বলে রাজের সাথে হ্যান্ডশেক করে রহিমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে গেল তারা। আমি আর আরিশা এখনো চুপ করে আগের মতোই দাঁড়িয়ে থেকে সবকিছু দেখছি। কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিশ চলে যেতেই রাজ আমার দিকে একবার তাকিয়ে সোজা বাসার ভেতর ঢুকে গেল। তারপর সোফার ওপর গিয়ে কপালে হাত দিয়ে বসে পরলো।
আমি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম ওর কাছে। তারপর ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ওর হাত ধরে মৃদু গলায় বললাম,
— কি হয়েছে রাজ আপনি এভাবে এখানে এসে বসলেন কেন? আর রহিমা কেই বা পুলিশ ধরে নিয়ে গেল কেনো? আপনি ওকে রহিমা না ডেকে ফারিহা বলেই বা কেন ডাকছিলেন? আমি তো কোন কিছুই বুঝতে পারছি না! প্লিজ আমাকে সব কিছু খুলে বলুন?
আমার কথার উত্তরে ও আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকাল। তারপরে কোন কথা না বলেই আমাকে শক্ত করে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরল। আরিশা পাশেই দাঁড়িয়ে থেকে আমাদের সিন দেখছে। বুকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে ছোট বাচ্চাদের মতো কাঁদতে লাগল রাজ।
তাকে এভাবে কাঁদতে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। বুঝতে পারছি না ওনাকে কি বলে সান্তনা দেওয়া উচিত। বা এখন আমার কি করা উচিত। তাই ওনার বুকের মাঝে চুপ করে রইলাম। কোন কথা বললাম না। উনি বেশ কিছুক্ষন এভাবে কান্না করার পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে চোখের জল মুছে কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে নিলো। তারপর মৃদু গলায় বলতে লাগল,
— তুমি জানো রাহি ওই রহিমা রূপি ছদ্দবেশী মেয়েটি আসলে কে ছিল?
উনার কথায় আমি কোন উত্তর না দিয়ে শুধু মাথা নাড়িয়ে ইশারায় বললাম, “না আমি জানি না”। তখনই রাজ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলতে শুরু করল,
— ওই মেয়েটি আর কেউ নয় আমার গর্ভধারিনী মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া অন্য পক্ষের মেয়ে ছিল। যে কিনা এতদিন ধরে ষড়যন্ত্র আটছিল তোমাকে আর আমাকে মেরে ফেলে, আমার এই সব সম্পত্তির মালিক হওয়ার। আর এই কারনেই অনেকবারই মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে আমাকে। এর আগে যখন একদিন আমি অজ্ঞান অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলাম তখন ওই আমাকে মারার প্লান করেছিল। কিন্তু তখন আমাকে মারতে সফল হয়নি কারণ তুমি আমায় বাঁচিয়েছিলে। তারপরে ও অনেক ট্রাই করেছে আমাদেরকে মারার জন্য। কিন্তু কখনো সফল হতে পারেনি। তাই আমাদের বাসায় কাজের মেয়ে সেজে এসেছে সে। আমাদের ব্যপারে সবকিছু জেনে প্ল্যান করে আমাদের মারার চেষ্টা করেছে। আমরা যেটা ধরতেও পারে নি।
এতটুকু বলে থামল রাজ। ওকে থামতে দেখে আরিশা এবার এগিয়ে এসে আমাদের পাশের সোফায় বসে বলে উঠলো,
— তাই যদি হবে তাহলে তো ও অনেক ভাবেই তোমাদেরকে মারতে পারত! খাবারে বিষ মিশিয়েও তো মেরে ফেলতে পারতো। কারণ তখন তো আর তোমাদের বাঁচানোর মত কেউ থাকতো না। তাহলে এতদিন কেন মারে নি ও তোমাদের?
ওর কথায় আবার একটি ছোট করে নিশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করল রাজ,
— কারণ আমরা যদি বিষ খেয়ে বা কোন রকম অস্বাভাবিক ভাবে আমাদের মৃত্যু হতো, তাহলে সম্পত্তি ও পেত না। পুরো সম্পত্তিটাই চলে যেত সরকারের হাতে। এমন সিস্টেম করেই আমার নামে আব্বু সম্পত্তির দলিল করেছিলেন। কারন সে জানতেন এই সম্পত্তির কারনে আমার বিপদ হতে পারে। আর কক্সবাজারে রাহি কারেন্টে আটকে মারা গেলে ওর শোকে আমিও হয়তো ধুকে ধুকে মরতাম। তখন ওর রাস্তা টাও ক্লিয়ার হয়ে যেতো। তাই ও এমন একটি প্লান করেছিলো। আর ওর আসল নাম আসলে ফারিয়া। রহিমা নয়।
এতটুকু বলে থেমে গেলো রাজ। ওকে থামতে দেখে আরিশা বললো,
— যা হওয়ার হয়ে গেছে আরিয়ান এখন নিজেকে শান্ত করো। পুলিশ তো ওদের ধরে ফেলেছে এখন যা শাস্তি পাওয়ার ওরা সেখানে পাবে। প্লিজ তুমি এতটা ভেঙে পড়ো না। নিজেকে শান্ত করো।
ওর কথা শুনে রাজ কাঁদোকাঁদো গলায় বলে উঠলো,
— আমি কিভাবে নিজেকে শান্ত করব বলতে পারো আরিশা? আজ আমার জন্য আমার রাহির এত বড় বিপদে পরে ছিলো। একবার ভাবতে পারো ওই বিড়ালটার জায়গায় যদি আজকে আমার রাহি থাকতো তাহলে আমি কিভাবে বেঁচে থাকতাম? আমি জীবনেও নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না। আমার জন্য যদি আমার রাহির কোন কিছু হয়ে যেত?
কথাটা বলেই আবারও কান্না করতে লাগল রাজা ওকে এভাবে কান্না করতে দেখে আমি মুচকি হেসে ওর ঘাড়ের উপর নিজের মাথাটা রেখে আদুরে গলায় বললাম,
–আমার তো হয়নি তাই না? এই দেখুন আমি আপনার কাছেই আছি একদম সুস্থ ভাবে। প্লিজ আপনি শান্ত হন রাজ। আপনার চোখে পানি মানায় না।
চলবে,,,,,,
You are my nbproperty
Part 50 last part
M Sonali
নতুন দুজন কাজের লোক রেখেছেন রাজ। যারা বাসার সবকিছু দেখা শোনা করেন। আর রান্নার জন্যে মধ্যম বয়সের একজন মহিলা আর একজন লোককে রেখেছেন। তারাই বাসার যাবতীয় কাজ কর্মগুলো করেন। এবার আর কাজে রাখার আগে ভুল করেনি রাজ। সব কিছু ভালো করে জেনে শুনে তারপর তাদের সিলেক্ট করেছেন কাজের জন্যে। ওদিকে ফারিয়া সহ ওর সাথে জরিত থাকা সবাইকে জেলে পাঠানো হয়েছে। আর তাদের কঠিন শাস্তিরও ব্যাবস্থা করা হয়েছে। ফারিয়ার সাথে জরিত ছিলো রাজের মা সহ তার বর্তমান স্বামী মানে ফারিয়ার বাবা। আরো অনেকেই। যাদের একে একে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করিয়েছে রাজ।
ইদানিং বিজনেসের কাজ বেড়ে যাওয়ায় রাজকে বেশিরভাগ সময় অফিসে থাকতে হয়। আর আমি বাসায় সারাক্ষণ আরিশার সাথে সময় কাটাই।মেয়েটা বড্ড মিশুক এবং ভালো। সত্যিই ওর মতো একজন বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমি জানি ও রাজকে ভালোবাসে তবুও একটু অভিযোগ নেই ওর আমার প্রতি বা কোন হিংসা। সবসময় নিজের ছোট বোনের মত খেয়াল রাখে আমার। সারা দিন ওর সাথে ভীষণ ভালো সময় কেটে যায় আমার। একটুও যেনো একাকীত্ব অনুভব হয় না ওর সাথে সময় কাটিয়ে। তবে ইদানিং আরিশা সারাদিনের মাঝে বেশিরভাগ সময়ই ফোনে কার সাথে যেন কথা বলে। ওর হাব ভাব দেখে যতটা বুঝতে পারি নিশ্চয় ওর পছন্দের কারো সাথে হয়তো কথা বলে। হয়তো কারো প্রেমে পড়েছে। কিন্তু কখনো ডাইরেক্ট জিজ্ঞেস করিনি আমি। ভেবে রেখেছি যখন ও নিজে থেকে বলবে তখনই না হয় জানবো। আমিও চাই ও একটি সুন্দর জীবন সঙ্গী পাক এবং অনেক সুখি ও হাসি খুশি থাকুক।
দুপুরে ডাইনিং টেবিলে বসে আমি আর আরিশা একসাথে লাঞ্চ করছি। কাজের চাপ থাকার কারণে আজকে রাজ আসতে পারেনি। বলেছে অফিসেই লাঞ্চ করে নেবে। যদিও প্রথমে আমার মন একটু খারাপ হয়েছিল! কিন্তু পরে আরিশা অনেক দুষ্টামি করায় এখন মনটা অনেক ভালো। তাই দুজন মিলে একসাথে বসে হাসাহাসি করছি আর লাঞ্চ করছি। সত্যি সময় গুলো অনেক ভাল ভাবে কেটে যাচ্ছে আমার। আরিশার সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ নাকে মুরগির মাংসের গন্ধ আসতেই যেন পেট উল্টে বমি আসতে লাগলো আমার। আমি চেয়ার ছেড়ে উঠে দূরে গিয়ে নাক চেপে ধরে বললাম,
— ছিঃ ছিঃ এটা কি এনেছ টেবিলের উপর? এমন গন্ধ কেন, আমার বমি চলে আসছে?
আমার কথা শুনে আরিশা ভ্রু কুঁচকে তাকালো। তারপর চেয়ার ছেড়ে আমার পাশে উঠে এসে বলল,
— কি হয়েছে রাহি? তুমি হঠাৎ এভাবে চেয়ার ছেড়ে উঠে আসলে কেন? আর কিসের গন্ধ পাচ্ছো তুমি?
— দেখনা আরিশা টেবিলের উপর মুরগির মাংস টা কেমন বিশ্রী একটা গন্ধ বেরোচ্ছে! আমার নাড়িভুঁড়ি উল্টে যেন বমি আসতে চাইছে।
কথাটা বলে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে উটকি করতে লাগলাম আমি। আমাকে এমন করতে দেখে আরিশা আমার হাত ধরে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসিয়ে দিল। তারপর আমার ডান হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলল,
— কি হয়েছে আমাকে ঠিক করে বলতো রাহি? তোমার কি ইদানিং শরীর খারাপ যাচ্ছে? বেশ কিছুদিন হলো লক্ষ্য করছি তুমি খুব কম কথা বলছো! আগের মত তেমন চনচলা নেই তুমি! কি হয়েছে আমাকে সব কিছু খুলে বলো তো?
— জানিনা আরিশা আমার ঠিক কী হয়েছে! তবে কিছুদিন হল সত্যিই আমার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না! সব সময় কেমন একটা বমি বমি লাগে। আর বেশ কিছু খাবারের গন্ধ নাকে লাগতেই শুধু উটকি আসে বমি করতে ইচ্ছে করে। সাথে মাঝে মাঝে মাথাও ঘুরায়। কালকে তো মাথা ঘুরে পড়ে যেতে নিয়েছিলাম। কিন্তু ঐ মুহূর্তে রাজ আমায় ধরে ছিল বলে পড়ে যাইনি। ও অবশ্য বারবার জিজ্ঞেস করছিল কি হয়েছে! কিন্তু আমি কথা কাটিয়ে গেছি। বুঝতে পারছি না কি হয়েছে। হয়তো শরীরটা খুব দুর্বল আমার তাই এমন হচ্ছে?
আমার কথাগুলো চুপ করে বসে থেকে মনোযোগ দিয়ে শুনল আরিশা। তারপর কিছু একটা ভেবে নিজের ফোনটা হাতে নিয়ে কাকে যেন ফোন করল। একটু পর ফোনটা রিসিভ হতেই বলে উঠলো,
— হ্যালো আরিয়ান! তুমি কি এখন একটু বাসায় আসতে পারবে?
–…….
— না তেমন কিছু না, আসলে রাহিকে নিয়ে একটু ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল!
কথাটা বলতেই ওপাশ থেকে ফোন কেটে দিল রাজ। বুঝলাম না কি হলো আরিশা হঠাৎ কেন ওকে ফোন করতে গেল।
— তুমি হঠাৎ রাজকে ফোন কোরলে কেনো আরিশা? আমি তো এমনি ঠিকই আছি এখন দেখো! বেশ ভালো লাগছে আমার এখন। তেমন কিছুই হয় নি শুধু শুধু ওকে ফোন করে টেনশন দেওয়ার কি দরকার ছিল বল?
— দরকার আছে রাহি, দরকার আছে মানে খুব বেশি দরকার আছে। আমি যেটা সন্দেহ করছি যদি সেটা হয়ে থাকে তাহলে তো অনেক বেশি দরকার আছে। এখন তুমি চুপ করে এখানে লক্ষী মেয়ের মত বসে থাকো আমি তোমার জন্য জুস বানিয়ে আনছি কেমন?
কথাটি বলেই আরিসা আমার পাশ থেকে উঠে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল। আমিও লক্ষী মেয়ের মত সেখানেই বসে রইলাম আর ভাবতে লাগলাম কি হল হঠাৎ আলিশার? বেশ কিছুক্ষণের মাঝেই হুরমুর করে বাসার মধ্যে প্রবেশ করল রাজ। আমাকে সোফায় বসে থাকতে দেখে ছুটে এলো আমার কাছে। তারপর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে একবার আমার গালে একবার হাতে একবার মুখে হাত দিয়ে স্পর্শ করতে করতে বলল,
— কি হয়েছে তোমার জান? কি হয়েছে তোমার? তোমার কি শরীর খুব খারাপ লাগছে? কি হয়েছে তোমার তুমি অসুস্থ হলে কি করে? চোখ-মুখ এমন কালচে লাগছে কেন? তুমি এত শুকিয়ে গেলে কি করে একদিনের মধ্যে? হঠাৎ কি হয়েছে তোমার? আরিশা ফোন করে কেন বলল তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে? তুমি জানো আমি একটুর জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু ইচ্ছে করছিল যেন উড়ে চলে আসতে পারি তোমার কাছে। জান কি তোমার হয়েছে বলো আমায়?
রাজকে এমন পাগলামো করতে দেখে আমি ওর প্রশ্নের কী উত্তর দেবো কিছুই বুঝতে পারছি না। শুধু হাঁ করে তাকিয়ে থেকে ওর পাগলামি মাখা কথাগুলো শুনছি। এমন করছে যেন ওর কলিজাতে কেউ হাত দিয়েছে। এ লোকটা সত্যিই একটা পাগল শুধুমাত্র আমার জন্যে। আমি ওর প্রশ্নের কোন উত্তর দেওয়ার আগেই পিছন থেকে আরিশা জুস নিয়ে আসতে আসতে বলল,
— তোমার বউয়ের কিছুই হয়নি আরিয়ান। তবে ওকে একটু ডাক্তারের কাছে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। এমনি শুধু শরীর দুর্বলতা তো তাই!
আরিশার কথা শুনে আর এক মুহূর্ত দেরি না করে রাজ আমাকে কোলে তুলে নিল। তারপর সোজা হাঁটা দিল বাইরের দিকে। ওর এমন কান্ডে আরিশা অবাক হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর পাগলের মত হাসতে শুরু করল। আর আমি লজ্জায় মরে যেতে লাগলাম। সত্যিই এই লোকটা আসলেই একটি পাগল।
—————–
আমরা এখন বসে আছি ডাক্তারের চেম্বারে। কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার ফেরদৌস আরা, আমাকে সাথে নিয়ে গিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন। এখন সেটার রিপোর্ট দেখা বাকি। রাজের দিকে তাকিয়ে বেশ ভালই বুঝতে পারছি ও অনেক টেনশনে আছে। কিছুক্ষণের মাঝেই ডাক্তার ফেরদৌস একটি রিপোর্ট হাতে এসে চেম্বারে বসলেন। তারপর রাজের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললেন,
— আপনাদের বিয়ে হয়েছে কতদিন?
রাজ ওনার গম্ভীর গলার কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গিয়ে বলল,
— এই তো হবে দেড় বছরের বেশি! কেনো কি হয়েছে আমার রাহির?
— আপনাকে আমি কথাটা কিভাবে বলবো ঠিক বুঝতে পারছিনা মিস্টার আরিয়ান। আপনি আসলে কথাটা কিভাবে নিবেন আর সহ্য করতে পারবেন কিনা সেই টেনসনে আছি আমি।
ডাক্তার ফেরদৌসের এমন কথা শুনে যেন আরো বেশি ঘাবড়ে গেল রাজ। ওর সাথে সাথে এবার আমিও বেশ ভয় পেয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম নিশ্চয়ই আমার বড় কোন রোগ হয়েছে। তা না হলে ডাক্তার এভাবে বলবেন কেন? আমি মন খারাপ করে চুপ করে বসে রইলাম। তবে আমার মন খারাপটা নিজের জন্য নয়! আমি চিন্তা করছি রাজের জন্য। আমার কিছু হয়ে গেলে ও পাগল হয়ে যাবে এটা আমি নিশ্চিত। ওর দিকে তাকিয়ে দেখি ও দরদর করে ঘামছে। আর মুখ একদম ছোট হয়ে গেছে ওর। হয়তো অনেক বেশি টেনশনে আছে। রাজ কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল,
— ক কি হয়েছে আমার রাহির? আপনি প্লিজ বলেন ডাক্তার ফেরদৌস। ওর কিছু হবেনা তো?
ওকে এমন ভয় পেতে দেখে এবার ডাক্তার ফেরদৌস মুচকি হেসে দিয়ে বলে উঠল,
— আপনি বাবা হতে চলেছেন মিস্টার আরিয়ান চৌধুরী। আর আপনার স্ত্রী মা হতে চলেছে। সে তেরো সাপ্তাহর প্রেগন্যান্ট।
ওনার কথায় মুহূর্তেই রাজ একদম নিরব নিস্তব্ধ হয়ে গেল। ওর মুখে কোন কথা নেই। হা করে তাকিয়ে রইল ডাক্তার ফেরদৌসের দিকে। যেন শক লেগেছে ওর। আর এদিকে আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে চুপ করে রইলাম। আরিশাও অনেক খুশি। আমার পাশে বসে মুচকি মুচকি হাসছে সে। যদিও রিপোর্টের ব্যাপারটা আগে থেকেই জানতো আরিশা। কারন আমরা যে ডাক্তারের কাছে এসেছি সে সম্পর্কে আরিশার খালা হন। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর রাজ খুশিতে কান্না করে ফেলল। ওর দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো দুই ফোঁটা জল। ওকে কান্না করতে দেখে এবার আরিশা হাসি থামিয়ে ওর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। তারপর ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
–কি হলো আরিয়ান তুমি এভাবে কান্না করছ কেন? তোমার বেবি হবে জেনে তুমি খুশি হও নি?
ওর কথা শুনে আচমকাই ওকে জড়িয়ে ধরলো রাজ। তারপর জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কান্না করতে করতে বলে উঠলো,
— বিশ্বাস করো আমি এতটা খুশি যে, খুশিতে চোখে জল চলে এসেছে আমার। আজকে আমি এতটাই খুশি মনে হচ্ছে সারা পৃথিবীতে মিষ্টি বিতরণ করে সবাইকে বলি আমি বাবা হবো। আমার রাহি আমার সন্তানের মা হবে।
কথাগুলো বলে আরিশাকে ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো রাজ। তারপর আমার পাশে এসে হাটু গেড়ে বসে আমার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বলল,
— তুমি আজকে আমাকে যা দিয়েছো রাহি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার এটা। তুমি জানো না আমি কতটা খুশি কতটা আনন্দিত। আমাদের বেবি হবে, আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া যে তিনি আমাদের সংসারটা পরিপুর্ন করে দিলেন। খুশিতে পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছা করছে আমার।
———————–
কেটে গেছে তিনটি বছর,
এই তিন বছরে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। আরিশার বিয়ে হয়ে গেছে ওর পছন্দ করা একটি ছেলের সাথে। বিয়ের পর ওকে নিয়ে সে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। ওর মত সেই ছেলেটিও একজন ডাক্তার। আরিশা বিদেশে গিয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা করছে। ওরা খুব সুখে আছে। তবে বিয়ের আগে আমি যতদিন অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম আরিশা আমার পাশে থেকে বড় বোনের মত আমাকে দেখাশোনা করেছে। সব দিকে খেয়াল রেখেছে। কোন দিকে কোন কমতি রাখেনি সে। সত্যি আমি অনেক ভাগ্যবতী যে ওর মত একজন বন্ধু পেয়েছি। যে আমাকে নিজের ছোট বোনের মত করে দেখাশোনা করেছে ভালো বেসেছে ভালো রেখেছে। আর রাজের কথা তো বলার কোন প্রশ্নই আসে না। ও তো অফিসের সব কাজ সবকিছু বাদ দিয়ে সারাক্ষণ পড়ে থেকেছে আমার কাছে। আমার কখন কি লাগবে কখন কি লাগবেনা সব কিছু খেয়াল রেখেছে সে। সবসময় খাইয়ে খাইয়ে আমাকে মোটা বানিয়ে ফেলেছে। এই তিন বছরে বেবি হওয়ার পর আমি সত্যিই একটু মোটা হয়ে গিয়েছে। রাজের ভাষ্য মতে মোটা হওয়ার পর আমাকে নাকি তার আরো বেশি কিউট লাগে। আমাদের ঘর আলো করে একটি ছেলে হয়েছে। রাজ ওর নাম রেখেছে আরাফ। আরাফের এখন আড়াই বছর বয়স। ওকে দেখতে একদম আরিয়ানের মতো হয়েছে। যেমন গুলুমুলু তেমনই কিউট। আমার সংসারটা আজ সুখ শান্তিতে পরিপুর্ন।
রাকিব ভাইয়া আর রাই এর কোলজুড়েও এসেছে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান। তাকে দেখতে যেমন মিষ্টি তার কথা ও তেমনি মিষ্টি। রাকিব ভাইয়ের মেয়ের বয়স 3 বছর। ও এত মিষ্টি বলে আমি ওর নাম রেখেছি মিষ্টি পাখি। ওকে সবাই মিষ্টি বলেই ডাকে। ওদের সংসারটাও এখন সুখে-শান্তিতে পরিপূর্ণ। আমরা সবাই অনেক সুখে আছি আলহামদুলিল্লাহ।
সবাই দোয়া করবেন আমাদের জন্য, আমরা সবাই যেন এভাবেই চিরকাল সুখে শান্তিতে থাকতে পারি। আমাদের মাঝে যেনো আর কোনো বাঁধা বিপদ না আসে। আল্লাহ হাফেজ
💞💞💞💞💞সমাপ্ত💞💞💞💞💞
Sotti, writer khub valo likhecho. Amon valobasa sobar jibone sob somoy thakuk, asa kori. R thank you so much for the story.