my_unexpected_love
part_18
Arohi_Ayat
.
ঘুমের মধ্যে কারো স্পর্শের টের পেয়ে চোখ খুললাম৷ চোখ খুলতেই প্রথমে একটু ঘোলা ঘোলা চোখে দেখলাম কে যেন বসে আছে আমার পাশেই৷ আরেকবার চোখ বন্ধ করে হাত দিয়ে চোখ ডলার পর ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম নিশান ভাইয়া বসে আছে৷ আমি তারাতাড়ি করে উঠে বসলাম৷ ভাইয়া মুচকি হেসে বলল
– গুড মর্নিং!
আমি একটু হেসে বললাম
– গুড মর্নিং! তুমি এখানে কেন?
ভাইয়া বলল
– স্লিপিং বিউটিকে একটা কিস দিয়ে ঘুম থেকে উঠাতে এসেছিলাম!
আমি বড় বড় চোখ করে বললাম
– তুমি আমাকে আবার কিস করেছো?
– কেন কিস করলে কি কোন সমস্যা আছে? আমার গার্লফ্রেন্ড কে আমি কিস করেছি এতে তোমার কোন সমস্যা?
আমি আরেকটু অবাক হয়ে বললাম
– তুমি আমাকে ‘তুমি’ করে বলছো? মানে এখনই? এই প্রথমবার তুই থেকে তুমি বলতে একটু আজব লাগছে না?
ভাইয়া বলল
– হুম একটু আজব ত লাগছে কিন্তু আমি যত দ্রুত সম্ভব এটা অভ্যাস করতে চাই!
আমি ভাইয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললাম
– হুম কিন্তু আমার একটু মনে হয় সময় লাগবে শুধু তোমার নাম ধরে ডাকতে,,কারণ এর আগে আমি কখনো সাহসও পাই নি তোমার নাম ধরে ডাকতে!
ভাইয়া কিছু না বলে মুচকি হেসে আমার কপালে গভীর ভাবে নিজের ঠোট ছোয়ালো৷ তারপর ভাইয়া আমার গালে হাত দিয়ে বলল
– ঠিকাছে এখন তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে! অনেক লেট হয়ে গেছে!
আমি ভাইয়াকে বললাম
– তুমি আজকে অফিসে যাবে না?
ভাইয়া বারান্দার দিকে তাকিয়ে বলল
– দেখেছিস বাহিরে কত বৃষ্টি! আর আজকে সারাদিনই বৃষ্টি হবে,, আর তাছাড়া এইভাবেও আমি আজকে অফিসে যাবো না!
এটা বলে ভাইয়া চলে গেলো৷ আমি উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম৷
ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে নিচে গেলাম৷ নিচে গিয়ে দেখলাম ভাইয়া সোফায় বসে আছে৷ আমি ভ্রু কুচকে ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম
– সবাই কোথায়? মাকে দেখছি না যে!
ভাইয়া বলল
– আন্টি আবার তার বোনকে দেখতে গেছে,, আজকে নাকি বেশি অসুস্থ হয়ে পরেছে!
আমি বললাম
– ওহ এই বৃষ্টির মধ্যে গেছে!
আমি টেবিলে গিয়ে নিজের ব্রেকফাস্ট নিয়ে বসলাম৷ ভাইয়ার দিকে ঘুরে ব্রেড নিয়ে মুখে দিলাম৷ ভাইয়া কাকে যেন কল দিল৷ আমি ভাইয়ার দিকেই তাকিয়ে আছি৷ ভাইয়া ফোনে কথা বলতে বলতে আমার দিকে তাকালো৷ আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভাইয়া একটু মুচকি হেসে সেখান থেকে উঠে চলে গেলো৷ আমি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছি৷ ভাইয়া উঠে চলে গেলো কেন? আমি তাকিয়ে আছি তাই? থাক হয়তো কোন ইম্পর্ট্যান্ট কল! আমি ব্রেকফাস্ট শেষ করে উঠে ভাইয়াকে খুজতে লাগলাম৷ বাগানের দিকে গিয়ে দেখলাম ভাইয়া এখনো ফোনে কথা বলছে৷ দেখে একটু টেনশনে মনে হচ্ছে কিন্তু তবুও আমি সামনে গেলাম না৷ মনে হয় বিজনেস নিয়েই কোন কথা এখন আমার সামনে গিয়ে ডিস্টার্ব না করাটাই ভালো৷ আমি সেখান থেকে ভিতরে চলে গেলাম৷ অনেক্ষন ধরে সোফায় বসে আছি টিভি দেখছি৷ কিন্তু ভাইয়া এখনো এলো না এত কার সাথে কথা বলছে বুঝলাম না! যাই হোক আমি কিছু বললাম না৷ একটু পরে ভাইয়া এলো৷ আমি একটু রাগ করার ভাব করে বললাম
– এত কার সাথে কথা বলছিলে?
ভাইয়া এসে আমার পাশে বসে বলল
– নিশা! আমার প্যারিস যেতে হবে!
আমি হঠাৎ এইটা শুনে অবাক হলাম৷ আমি বললাম
– কি?? কেন? কবে যাবে?
ভাইয়া বলল
– উহ! যেতে হবে আমার! একটা কাজ আছে সেখানে!
আমার মনটা একেবারেই খারাপ হয়ে গেলো আমি রেগে ভাইয়াকে বললাম
– যাও তাহলে আমাকে দিয়ে কি করবে! চলে যাও,, আমি সবসময়ের মত এখানে একাই পরে থাকি!!
এটা বলে দাঁড়িয়ে গেলাম৷ ভাইয়াও দাঁড়িয়ে বলল
– কি হয়েছে তুই এমন রেগে যাচ্ছিস কেন?
– তাহলে কি করবো যাও তুমি প্যারিসে তোমার মাইশার কাছেই যাও!
আমি আবার রাগ উঠলে মাথায় আগের কথা যা আসবে বলে ফেলি আবার একটু বেশিই বলে ফেলি৷ এই কথাটা আমার বলা উচিৎ ছিল না৷ এইটা এখন আমি নিজেই বুঝতে পারছি তবুও নিজের রাগি ভাবটা এখনো দূর করি নি৷ ভাইয়া বলল
– নিশা প্লিজ! অন্তত এই কথা আর উঠাবি না! আমি তোকে আগেও ক্লিয়ার করে বলে দিয়েছিলাম যে মাইশার সাথে আমার কিছুই নেই আর আমি ওকেও বলেছি যে আমি তোকে ভালবাসি!!
আমি বললাম
– তুমি ওর কাছে বলেছো এই কথা! এখনো আমাকে একবারও বলেছো? আমিই ত তোমাকে আগে বলেছি!!সব কিছু কি এখন আমাকেই করতে হবে? তুমি এখন আবার প্যারিস চলে যাবে এখন আবার আমারই অপেক্ষা করতে হবে তোমার জন্য!!!
– তুই কোন কথা থেকে কোন কথায় যাচ্ছিস তুই নিজেও কি জানিস? কি উল্টা পাল্টা বলে যাচ্ছিস! আমার কথা না শুনেই!! ওয়াও লাইফে ফার্স্ট তোর সাথে ঝগড়া করলাম!! আগে ত এক্সপিরিয়েন্সই ছিল না!
আমি ভ্রু কুচকে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম
– তুমি,,,,,,,,,,,,ধুর!!
এটা বলে উপরে চলে গেলাম৷ আর ভাইয়া সেখানে ভ্রু কুচকে দাঁড়িয়ে রইলো৷আমি রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে মন খারাপ করে বেডে বসে পরলাম৷ এইবার কি সত্যিই ভাইয়া চলে যাবে! চলে গেলেও আবার কবে আসবে? ভেবেই কান্না আসছে৷ সবসময় এমনই হয় আমার সাথে৷ আমার নিশানের উপরই বেশি রাগ লাগছে! সব কি আমারই করতে হবে? ওকে মনের কথাটাও আমিই বললাম! এখন আবার আমিই ওর জন্য অপেক্ষা করবো? না এত ধ্যর্য আমার নাই!! উফফ কিছুই ভাল লাগে না আমার!!
চলবে,,,
(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)