My_Mafia_Husband❤,পর্ব:৭
লেখিকা: মিহু
মিহু: (মেঘ সেই তখন থেকে কি যেন সব বলছে,,,সন অস্পষ্ট শোনাচ্ছে। তখনি গেটের বাহির থেকে ড্যানি গেট এ নক করলো। আমি তাড়াতাড়ি যেয়ে গেট খুলে দিলাম) ডক্টর ওনাকে একটু দেখুন প্লিজ
।
ডক্টর: ম্যাম আপনি হাইপার হবেন না আমি দেখছি
।
“ডক্টর মেঘকে দেখলো,,,তারপর বলল”
।
।
ডক্টর: সারাদিন অতিরিক্ত টেনশন করেছে হয়তো যার কারনে ওনার মাথায় ব্যাথা ছিল। আর ঠান্ডায় বসে থাকার কারনে জ্বর এসেছে। টেনশন করবেন না,,,আমি মেডিসিন লিখে দিচ্ছি ওনাকে সমায় মত খাইয়ে দিবেন। আর এখন ওনাকে হালকা কিছু খাইয়ে দিন
।
মিহু: ওকে ডক্টর,,,ড্যানি তুমি একটু মেডিসিনগুলো নিয়ে এসো এখনি,,,আর ডক্টরকে একটু এগিয়ে দাও
।
ড্যানি: ওকে ম্যাম
।
মিহু: (ড্যানি চলে গেল। আমি নিচে যেয়ে ওনার জন্য হালকা গরম সুপ্ নিয়ে উপরে গেলাম। তারপর ওনাকে অনেক কষ্টে খাইয়ে দিলাম। ড্যানি এসে মেডিসিন দিয়ে গেল। আমি ওনাকে মেডিসিনগুলো খাইয়ে দিলাম। নিজেকে কেন জানি না খুব অপরাধী লাগছে,,,গতকাল ওনাকে ওভাবে কথাগুলো বলা উচিত হয় নি আমার। কিন্তু আমিই বা কি করব? মাথায় এত পরিমাণ রাগ উঠে গিয়েছিল যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি নি। হঠাৎ নিচ থেকে কারও চেচামেচির আওয়াজ পেলাম,,,তাই দেখার জন্য আমি নিচে নেমে গেলাম। দেখি ভাইয়া এসেছে)
।
নীল: (গতকাল নীলা আমাকে এই এড্রেসটা দিয়ে বলেছিল যে মিহু এখানে আছে। কিন্তু আমি যখন ওকে জিজ্ঞেস করলাম যে ও কি করে জানলো,,,তখন ও কোনো কথা না বলে শুধু একটু মুচকি হাসি দিয়ে চলে গিয়েছিল। আমিও আর কিছু জিজ্ঞেস করি নি ওকে। মিহুকে দেখা মাত্রই ওকে যেয়ে জরিয়ে ধরলাম) মিহু তুই ঠিক আছিস তো? দেখ তোর কিছু হবে না। আমি তো চলে এসেছি এখন ওই মাফিয়া আর তোকে আটকে রাখতে পারবে না। চল আমি এখনি তোকে নিয়ে যাব
।
মিহু: দাড়া ভাইয়া,,,আমি যাব না
।
নীল: মিহু তুই কি বলছিস এসব? তুই কেন যাবি না?
।
মিহু: আমি ঠিকই বলছি ভাইয়া,,,আমি যাব না
।
নীল: আমি জানি মিহু ওই মাফিয়া তোকে নিশ্চই কোনো থ্রেট দিয়ে আটকে রেখেছে তাই না? তুই চিন্তা করিস না,,,উনি তোকে কিছুই করতে পারবে না,,,তুই চল
।
মিহু: ভাইয়া একটু শান্ত হয়ে বোস। আর আমাকে কেউ আটকে রাখে নি,,,আমি নিজ ইচ্ছায় আছি এখানে। আর উনাকে এই অবস্থায় একা ফেলে আমি কোথাও যাব না
।
নীল: এই অবস্থা মানে? কি হয়েছে মেঘের?
।
মিহু: উনার অনেক জ্বর,,,একটু ডক্টর এসে দেখে গিয়েছে
।
নীল: কিন্তু মিহু তুই কেন এত কেয়ার করছিস?
।
মিহু: ভাই হি ইজ মাই হাসবেন্ড। তাই উনার কেয়ার করাটা আমার রেসপন্সিবিলিটি আর ডিউটিও
।
নীল: মিহু একটা কথা বলি?
।
মিহু: বল এতে অনুমতি নেওয়ার কি আছে?
।
নীল: না তাও,,,,বাই এনি চান্স তুই কি মেঘকে ভালোবেসে ফেলেছিস?
।
মিহু: জানি না,,,শুধু এইটুকু জানি যে ওনার জন্য আমার মনে একটু হলেও জায়গা আছে,,,একটু হলেও ফিলিংস আছে। কিন্তু এটার নাম ভালোবাসা দেওয়া যায় কি না ত আমি জানিনা সত্যিই জানি না
।
নীল: কিন্তু উনি যদি তোর কোনো ক্ষতি করে?
।
মিহু: ভাই আমি এত দিনে এইটুকু বুঝেছি যে উনি আমাকে পাগলের মত ভালোবাসে। তাই উনি আর যাই করুক না কেন আমার কোনো ক্ষতি উনি করবে না। আমি কিন্তু এ বাড়িতে ওনার সাথে একা থাকি তাও উনি এখন পর্যন্ত আমার সাথে কোনো খারাপ বিহেভ করে নি। উনি আমাকে সব সময় বোঝার ট্রাই করে বাট আমি কখনো ওনাকে বোঝার ট্রাই করি নি। তাই ভাবছি এখন থেকে বোঝার ট্রাই করব (মুচকি হাসি দিয়ে)
।
নীল: বাহ্ আমার বোনটা তো দেখছি অনেক বড় হয়ে গিয়েছে
।
মিহু: আমি বরাবরই বড় ওকে?😒
।
নীল: আমি হাইটে বড় হওয়ার কথা বলি নি😒
।
মিহু: তুই বলিস নি বলেই তো আমি বললাম😁
।
নীল: এত হাইট হয়েও কি লাভ হয়েছে? তুই তো আমার আর মেঘের বুকের নিচেই পরে থাকিস😁
।
মিহু: 😒আমি ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি ওকে? আর মেয়েদের জন্য এইটা পারফেক্ট😤
।
নীল: 😁আমি আর মেঘ সমান সমান তার মানে ৬ ফুট ২ ইঞ্চি😁
।
মিহু: ওই তুই কি এখানে হাইট নিয়ে গবেষণা করতে আসছিস?😒
।
নীল: নাহ্
।
মিহু: তাহলে?
।
নীল: তোকে মিস্ করছিলাম তাই আসছি
।
মিহু: আমিও তোকে অনেক মিস করেছি। বাই দা ওয়ে মম-ড্যাড……
।
নীল: ওনারা এখনো কিছু জানে না,,,ওনারা এখনো রাজশাহীতে আছে
।
মিহু: ওহ্ কিন্তু কি বলবি ওনাদের?
।
নীল: ডোন্ট ওয়ারি মে হু না
।
মিহু: নীলা যদি শুনে যে তুই শাহরুখ খানের ডায়লগ দিছিস,,,তাহলে তোর মাথার সব চুল ছিড়ে ফেলবে
।
নীল: 😂😂😂
।
মিহু: ভায়ইয়া তোকে একটা কথা বলার ছিল
।
নীল: তো বল
।
মিহু: নী..নীলা মেঘের ছোট বোন
।
নীল: (মিহুর কথা শুনে আমি মনে হয় আকাশ থেকে পরলাম) ক..কি বললি?
।
মিহু: হুম ঠিকই বলেছি,,,আমি গতকাল সকালে জানতে পেরেছি। ভাইয়া ওর কোনো দোষ নেই তাই ওকে কিছু বলিস না
।
নীল: হুম তাহলে আজ আসি,,,আর আমাকে ফোন দিস
।
মিহু: ওকে
।
নীল: (আমি হনহন করে বেরিয়ে গেলাম। নীলা তুমি আমার কাছ থেকে এত বড় একটা সত্যি কি করে লুকোতে পারলে)
।
মিহু: (আমি উপরে চলে আসলাম। বিকালের দিকে উনি কিছুটা সুস্থ হলেন। তাই আমি নিচে গিয়ে ওনার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম) উঠুন খেয়ে নিন
।
মেঘ: ইচ্ছে নেই
।
মিহু: আপনার কাছে জিজ্ঞেস করি নি যে আপনার ইচ্ছে আছে কি নেই। আমি উঠতে বলেছি উঠে বসুন [চোখ রাঙিয়ে]
।
মেঘ: (ওর দিকে কিছুক্ষণ অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম। তারপর উঠে বসার চেষ্টা করছি কিন্তু শরীর অতিরিক্ত দূর্বল হওয়ার কারনে উঠতে পারছি না) আমি খাব না
।
মিহু: (ওনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি উঠার ট্রাই করছে বাট পারছে না। বুঝলাম যে শরীর দূর্বল তাই। কিন্তু উনি যখন না করলেন যে পারবেন না তখন মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে) প্রবলেম কি আপনার? একা একা উঠতে পারছেন না তো আমার কাছে হেল্প চাইলে কি আমি আপনাকে হেল্প করব না নাকি? আজিব মানুষ একটা খালি রাগ দেখাতে শিখেছেন কখনো কারও হেল্প চাইতে শিখেন নি যত্তসব (বলে ওনার কাছে যেয়ে ওনাকে ধরে উঠে বালিশের সাথে হেলান দিয়ে বসালাম। আর খাবার নিয়ে ওনার সামনে বসলাম) নিন খেয়ে নিন
।
মেঘ: (এত বকা দেওয়ার কি আছে? মুখ গোমড়া করে ওর দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছি। একটু খাইয়ে দিলে কি এমন হবে?)
।
মিহু: দেখি এদিকে ঘুরে বসুন খাইয়ে দিচ্ছি
।
মেঘ: (কিছুটা চমকে ওর দিকে তাকালাম)
।
মিহু: কি হলো বিষম খাচ্ছেন কেন?
।
মেঘ: ন..না কিছু না
।
মিহু: আর গতকাল রাতে আপনাকে বেলকনিতে কে ঘুমোতে বলেছিল?
।
মেঘ: ভেবেছিলাম তোমার পাশে ঘুমোলে তুমি আবার ভাববে যে আমি তোমার সুযোগ নেওয়ার ট্রাই করেছি তাই……
।
মিহু: তাই আপনি বেলকনিতে গিয়ে ঘুমিয়েছিলেন তাই তো?
।
মেঘ: হুম
।
মিহু: এত বেশি বুঝেন কেন? আজকে থেকে আপনি আমার সাথে এই বেডেই ঘুমোবেন বুঝেছেন?
।
মেঘ: হুম (আমি ইন্টারন্যাশনাল মাফিয়া গ্রুপ রয়েল গোল্ডেন গ্যান্গ এর লিডার হয়েও নিজের বউকে ভয় পাচ্ছি? হায়রে কপাল….. কি দিনকাল আসলো আমার😖)
।
মিহু: (তারপর ওনাকে খাইয়ে দিয়ে সবকিছু গুছিয়ে ওনাকে মেডিসিন খাইয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম)
।
সকালে________________
.
মিহু: (সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি মেঘের বুকের উপরে শুয়ে আছি) আমি এখানে কি করে এলাম? অবশ্য আমার ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করার অভ্যাস আছে বাট তাই বলে এখানে? থাক আর ভেবে কাজ নেই। আর ওনার বুকের উপরে মাথা দিয়ে ঘুমিয়েছি তো কি হয়েছে? উনি আমার হাসবেন্ড আমি ঘুমোতেই পারি ওনার বুকে মাথা দিয়ে। হাসবেন্ড? তার মানে আমি ওনাকে আস্তে আস্তে মেনে নিচ্ছি। হ্যা উনি আমার হাসবেন্ড। #My_Mafia_Husband❤ (মুচকি হেসে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম)
।
মেঘ: (গতকাল রাতে মিহু ঘুমিয়ে যাওয়ার পর পরই আমি ওকে আমার বুকে টেনে নেই আর ওকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়ি। সকালে আমার ঘুম আগে ভেঙে যায়,,,তাকিয়ে দেখি মিহু আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে ধরে ঘুমোচ্ছে। আমি মুচকি হেসে ওর গালে একটা কিস করে ওর মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম। তখনি খেয়াল করলাম মিহু একটু নড়ে উঠলো তাই আমি আবার শুয়ে ঘুমের অভিনয় করলাম। ওর কথা শুনে আমার হাসি পাচ্ছিলো তাও হাসি নি। তারপর ও ফ্রেশ হতে চলে গেল। আর আমি চোখ খুলে হাসতে লাগলাম)
।
“এভাবেই দেখতে দেখতে কেটে গেল অনেকদিন। মেঘ মাফিয়া বাট সেটা ঘরের বাইরে সবার কাছে। কিন্তু ঘরের ভিতরে মিহু মাফিয়া মেঘের কাছে। মেঘ মাঝে মাঝে ভাবে,,,সব ছেলেরাই অন্যসবার সামনে বাঘ বাট ঘরে বউয়ের কাছে ভেজা বিড়াল।মেঘেরও সেম অবস্থা ভাবলেই ওর হাসি পায়। মেঘ আর মিহুর বন্ডিংটা দিন দিন স্ট্রং হচ্ছে আর সাথে ওদের ভালোবাসা আর ঝগড়াও স্ট্রং হচ্ছে😂 মিহু এখনো মেঘকে বলে নি যে ও মেঘকে ভালোবাসে”
।
।
মেঘ: মিহু!
।
মিহু: কিতা
।
মেঘ: কিতা আবার কি?
।
মিহু: আপনিই তো বলে দিলেন
।
মেঘ: কি বললাম?
।
মিহু: এই যে কিতা মানে কি
।
মেঘ: হ্যা কিতা মানে কি?
।
মিহু: উফফফ….কিতা মানেই হলো কি
।
মেঘ: ওহ্
।
মিহু: জ্বি
।
মেঘ: আচ্ছা শোনো কাল থেকে তুমি ভার্সিটি যাবে অনেক দিন তে হলে ভার্সিটি যাও না। আর সামনে তো তোমার এক্সাম তাই
।
মিহু: 😰😰😰
।
মেঘ: কি হলো?
।
মিহু: অনেকদিন তো ভার্সিটি যাই নি তাই কেমন যেন লাগছে😰
।
মেঘ: ডোন্ট ওয়ারি আমি প্রিন্সিপলের সাথে কথা বলে নিব
।
মিহু: ওক্কে
।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,