my unexpected love part_3

my unexpected love
part_3
Arohi Ayat

– নিবির ভাইয়া তুমি রিলেশনে ছিলে?? কবে? কার সাথে?

– আজব তো কি সমস্যা তোর? কালকের থেকে বার বার একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিস!

– একটু বলো না! আমি তো তোমাদের এইসব বিষয়ে কিছুই জানি না কারণ আমি তোমাদের থেকে দূরে থাকি! কালকে রাতে গেমটা খেলার পর বুঝলাম তোমাদের কত কিছু আছে যেটা আমি জানিই না! আমি ত জাস্ট অবাক হচ্ছিলাম! আর নিশান ভাইয়ার সেইটা শুনে ত আমি একেবারেই হা,,,,!

কালকে রাতে,, আমরা সবাই মিলে একটা গেম খেলতে বসেছিলাম৷ গেমের নাম “never have i ever”৷ একজন একটা প্রশ্ন করবে আর আমাদের মধ্যে যে ওই কাজটা করেছে সে বলবে i have আর যে করে নি সে বলবে never৷ গেমটা রিদিয়ানা আপুর কথায় খেলা শুরু করলাম৷ তো ফার্স্টে রিদিয়ানা আপুই জিজ্ঞেস করলো “এইখানে কখনো কেউ কোনো বড় মিথ্যা কথা বলেছো?” প্রথমেই নিশান ভাইয়া বলল
Never তারপরে আমিও বললাম৷ আমরা সবাই বললাম never শুধু রিদিয়ানা আপু বাদে৷ বেচারি নিজের প্রশ্নে নিজেই ধরা খেয়েছে৷ রিদিয়ানা আপু চোখ বন্ধ করে নিচে তাকিয়ে আছে৷ আমি বললাম
– এইবার বলো কি মিথ্যা বলেছো তুমি?

নিবির ভাইয়া আপুর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে৷ আপু নিবির ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলল
– সরি ভাইয়া! তোমাকেই মিথ্যা বলেছিলাম একবার! আসলে একবার কলেজ থেকে ফিরার সময় যখন তুমি কল করেছিলে আমি তোমাকে বলেছিলাম আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে শপিং এ যাচ্ছি কিন্তু আসলে আমি নাদিরের সাথে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম৷! কিন্তু সত্যি আর কোন মিথ্যা বলি নি আমি!

আমি হেসে দিলাম৷ নিবির ভাইয়া কতক্ষন রিদিয়ানা আপুর দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বলল
– অকে নেক্সট কে?

তানিশা জিজ্ঞেস করলো নেক্সট “এখানে কে কে আগে রিলেশনে ছিলে আর কত বার?” এইবার প্রথমে রিদিয়ানা আপু বলল
– i have! সবাই তো জানোই আমার নাদিরের সাথে লাভ ম্যারেজ হয়েছে! কিন্তু আমার এই একবারই ছিল!

নিবির ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে বলল
– তুই বল!

আমি বললাম
– never!

তানিশা বলল
– লিসেন এইখানে কিন্তু মিথ্যা বলা যাবে না!

– না সত্যিই আমি কখনোই আজ পর্যন্ত রিলেশনে যেতে পারি নি! আমার এত সাহস নেই! তাছাড়া আমি চাইও না!

আমার পরে নিশান ভাইয়াও বলল
– never!

এরপর নিবির ভাইয়া বলল
– i have!

আমি অবাক হয়ে নিবির ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম
– তুমি সত্যিই রিলেশনে ছিলে? কার সাথে? আমি ত কখনোই শুনলাম না!

নিবির ভাইয়া বলল
– তুই এমন রিয়েক্ট করছিস যেন আমার রিলেশনে যাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার!

– তুমি এখনো কোন রিলেশনে আছো?

– না! অনেক আগেই ব্রেকাপ হয়ে গেছে!

আমি এখনো অবাক হয়ে ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি৷ জানি না কেন যেন অবাক লাগছে৷ নিবির ভাইয়া বলল
– নেক্সট!

এরপর আমার পালা৷ আমার মাথায় ত কিছু আসছে না৷ আমি হুট করে জিজ্ঞেস করলাম
– এখানে কে কে কিস করেছো?

সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷ আমি সবার দিকে তাকিয়ে তারপর আবার বললাম
– আচ্ছা থাক এটার এন্সার না দিতে চাইলে অন্যটা জিজ্ঞেস করি!

আমাকে অন্যটা জিজ্ঞেস করতে না দিয়ে প্রথমেই নিবির ভাইয়া বলল
– never!

এরপর তানভির বলল
– never!

এরপর নিশান ভাইয়া বলল
–i have!

নিশান ভাইয়ার এন্সার শুনে আমরা সবাই অবাক হয়ে নিশান ভাইয়ার দিকে তাকালাম৷ নিবির ভাইয়াও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে৷ আমি ত হা করে নিশান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি৷ নিশান ভাইয়ার মত এমন চুপি স্বভাবের মানুষ তলে তলে যে কাউকে কিস করে ফেলেছে এটা শুনে অনেক অবাক লাগছে৷ তাও আবার কোনো রিলেশনে না গিয়ে সোজা কিস! আমি বললাম
– মানে বুঝলাম না তুমি রিলেশনে ছিলে না কিন্তু কিস করেছো? মানে কি?

নিবির ভাইয়া বলল
– নিশান লাইক সিরিয়াসলি! আমি জানি না এই ব্যাপারে! আমি রিলেশনে ছিলাম আমি কিস করি নাই আর তুই! কোন মেয়ে আবার তোকে জোর করে কিস করে ফেলেছে নাকি! তুই যে ইচ্ছে করে জীবনেও করবি না এটা আমি জানি!

ব্যাস নিশান ভাইয়া ত আর কিছু বলবে না৷ আমি এমন অবাক হয়েছি যে বলার বাহিরে৷ আজকে এই গেম না খেললে জানতেই পারতাম কিছু৷ সবার এন্সার শুনেই আমি অবাক হয়েছি৷ এর পর থেকে নিবির ভাইয়া আর নিশান ভাইয়াকে দেখলেই খালি মনে পরে যায় এইকথা!


হলুদের পরের দিন সন্ধ্যা বেলা,,, বসে বসে বোরিং লাগছিলো তাই আমি বললাম আমারা সবাই আইস্ক্রিম খেতে যাই! ব্যাস ভাই বোনেরা মিলে বের হলাম আইস্ক্রিম খেতে ৷ রেডি হয়ে সবাই বের হলাম৷ একটু ঠান্ডা ঠান্ডা পরিবেশ৷ রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটটে সবাই যাচ্ছি৷ অনেক ভালো লাগছে রাতের বেলা এইভাবে হাটতে৷ রাস্তার পাশ দিয়ে ওইপাশে কবর স্তান আছে একটা৷ এমনেই আমি ভিতু তার উপরে আবার তানভির আমাকে একটু ওইপাশে ধাক্কা দিয়ে বলল
– নিশা আত্না আছে ওইখানে!

এটা বলে আমাকে ধাক্কা দেওয়াও আমি রাস্তায় চিল্লানি দিয়ে উঠলাম৷ নিবির ভাইয়া আমার হাত ধরে বলল
– নিশা চুপ! কি করছিস?

নিশান ভাইয়া তানভিরকে রেগে বলল
– তানভির স্টপ ইট!

নিবির ভাইয়া আমাকে নিয়ে ওইপাশে দাড় করিয়ে বলল
– রাস্তার মাঝখানে এত জোরে চিৎকার দিবি তুই?

– ও আমাকে ধাক্কা দিলো কেন?

– এত ভয় পাস কেন তুই? বুঝলাম না! এই ভুতের ফিল্ম দেখতে দেখতে এখন শুধু চার পাশে ভুতই চোখে পরে তোর!

আমি কিছু বললাম না আর বুকে ফু দিয়ে হাটা শুরু করলাম৷ আমারা গেলাম একটা আইস্ক্রিম পার্লারে ৷ যে যে যার মত পছন্দের আইস্ক্রিম নিলাম৷ আমি চকলেট ফ্লেভার নিয়েছি আমার সবসময়ের ফেভারিট! সবাই আইস্ক্রিম নিয়ে আবার বাসার দিকে হাটা দিলাম ৷ কি বলবো আইস্ক্রিমে একটু এখনো আমার জিব্বাহও লাগাইনি কিভাবে যেন তানিশার সাথে ধাক্কা লেগে আমার হাত থেকে পুরো আইস্ক্রিমটাই পরে গেলো৷ আমি আবালদের মত দাঁড়িয়ে আছি আর সবাই ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷ আমি বললাম
– ধুর! পরে গেলো!

নিশান ভাইয়া নিজের হাতের আইস্ক্রিম আমার হাতে দিয়ে দিল৷ আমি বললাম
– না না,, থাক লাগবে না!

নিশান ভাইয়া বলল
– আমি এখনো খাই নি!

আমি একবার আইস্ক্রিম এর দিকে আবার ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে তারপর আমরা সবাই আবার হাটা দিলাম৷

পরেরদিন সকালে,,,আজকে বিয়ের দিন৷ সবাই সকাল সকাল উঠে নাস্তা করে রেডি হওয়াও শুরু করে দিয়েছে আর আমি এক রাতে দেরি করে ঘুমিয়েছি তাই দেরি করে উঠেছি৷ এইভাবেই ঘর ভরা গেস্ট৷ রিদিয়ানা আপু আমি আর তানিশা এক রুমে থাকি৷ এখন ঝামেলায় পরেছি তানিশা শাওয়ার নিতে গেছে আর রিদিয়ানা আপু শাওয়ার শেষ করে এখন রেডি হতে ব্যাস্ত আর এইদিকে আমি দেরি করে উঠেছি তাই নাস্তাও করতে পারি নি এখনো আর রেডি হতে হবে তারাতাড়ি৷ সবসময় আমার সাথেই এমন হয়৷ আমি রেগে চিল্লিয়ে তানিশাকে বললাম
– এই তারাতাড়ি কর!

রিদিয়ানা আপু আমাকে বলল
– তুই দেরি করে কেন উঠেছিস? আচ্ছা এক কাজ কর তুই গিয়ে ভাইয়াদের রুমের ওয়াশরুম ইউস কর!

আমি বললাম
– নাহ! ভাইয়াদের রুমে কেন যাব?

– যা কি সমস্যা? আর আমি একটু আগে গিয়েছিলাম ওদের সবার শাওয়ার শেষ ওরা রেডিও হয়ে গেছে! ভাইয়াদের ওয়াশরুম খালি আছে! গেলে যা তারাতাড়ি রেডি হতে পারবি!

– আচ্ছা তাহলে!

আমি ভাইয়াদের রুমে গেলাম৷ রুমের সামনে দাঁড়িয়ে উকি দিয়ে দেখলাম রুমে কেউ নেই৷ নিশ্চিন্তে ঢুকে ওড়নাটা খুলে বেডের উপরে রেখে ওয়াশরুমে ঢুকলাম৷ কিছুক্ষন পর শাওয়ার শেষ করে মাথায় টাওয়েল পেচিয়ে জামা পরে ওয়াশরুম থেকে বের হলাম৷ বের হতেই দেখলাম নিশান ভাইয়া আমার ওড়না হাতে নিয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে৷ আমাকে দেখে বলল
–তুই এখানে?!

আমি আমতা আমতা করে বললাম
– না মানে,,আমাদের ওয়াশরুমে তানিশা গেছে আর আমার লেট হয়ে যাচ্ছে তাই রিদিয়ানা আপু বলল এই ওয়াশরুম ইউস করতে!

চলবে,,,,,

(ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here