My Mafia Husband❤,পর্ব:১
লেখিকা: মিহু
“সকালে পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো মিহুর। হালকা সোনালী রোদ জানালার পর্দা ভেদ করে এসে মুখে পড়ছে ওর। ও চোখ বন্ধ করে মিষ্টি হাসি দিয়ে ওর পাশে শুয়ে থাকা ওর চেয়েও বড় একটা ট্যাডিকে জড়িয়ে ধরলো। কিছু সময় পর আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো ও। তখনি ওর রুমে ওর ড্যাড ঢুকলো”
।
।
ড্যাড: গুড মর্নিং প্রিন্সেস😊
।
মিহু: গুড মর্নিং ড্যাড😊 [হাই তুলতে তুলতে]
।
ড্যাড: তুই না আজকে সকালে তোর ফ্রেন্ডদের সাথে বের হবি বলেছিলি?
।
মিহু: হুম বের হব তো😊 আচ্ছা ভাইয়া কোথায়?
।
ড্যাড: ও তো একটু আগেই বেরিয়ে গেল
।
মিহু: ওউউউ ওকে
।
ড্যাড: কখন বের হবি?
।
মিহু: এইতো ফ্রেশ হব,,,শাওয়ার নিব,,,রেডি হব দ্যান বের হব😊
।
ড্যাড: উঁহু তার আগে আরও একটা কাজ করতে হবে তোকে
।
মিহু: প্লিজ ড্যাড এখন আবার ব্রেকফাস্ট করার কথা বলো না,,,তুমি জানো আমি ব্রেকফাস্ট করতে পারি না,,,আমার কেমন যেন বমি বমি পায় ব্রেকফাস্ট করতে গেলে😰
।
ড্যাড: কিন্তু তারপরও একেবারে খালি পেটে তো যাওয়া যাবে না প্রিন্সেস😏
।
মিহু: ড্যাড প্লিজ😭
।
ড্যাড: আচ্ছা জাস্ট একটা স্যান্ডউইচ খেয়ে যাবে,,,জাস্ট একটা
।
মিহু: (একটা স্যান্ডউইচ খাওয়া আমার পক্ষে কোনো কালেই পসিবল না) আচ্ছা😞
।
ড্যাড: দ্যাট’স লাইক এ গুড গার্ল😊
।
মিহু: হুম😞
।
ড্যাড: আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো
।
মিহু: ওকে ড্যাড
।
“মিহুর ড্যাড চলে গেল। আর মিহু যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো। হুয়াইট লং স্কার্ট,,,বেবি পিংক কালারের শার্ট,,,গলায় একটা স্কার্ফ নিয়ে রেডি হয়ে নিচে নেমে গেল। তারপর এক বাইট স্যান্ডউইচ খেয়ে দৌড় দিলো। মিহু কখনো ওর মম-ড্যাডের অবাধ্য হয় নি। তাই আজও ও ওর ড্যাডের কথা রাখার জন্য এক বাইট স্যান্ডউইচ খেয়ে দৌড় দিলো। তারপর ও ওর ফ্রেন্ডদের কাছে চলে গেল। মিহু পার্কে গিয়ে দেখে নীল-নীলা,,,আরিফ-রাইসা,,,মানিক-অনু আর ওর জন্য বসে আছে। ও ওদিকে যেতেই মানিক এসে ওর মাথায় হালকা করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলল_______
।
।
মানিক: তুই আজকেও লেট😒
।
মিহু: হুম তো? আমি কি তোর মত নাকি? যে দাঁত ব্রাশ না করে,,,শাওয়ার না নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার জন্য দৌড় দিব? তোর শরীর থেকে পচা ডিমের গন্ধ আসছে ছিঃইইইই সর🤢
।
মানিক: কিইইইইই😠
।
মিহু: কি না জ্বি সর তো সর🤢
।
মানিক: শোন আমি রেগুলার ৩০ মিনিট ধরে ফ্রেশ হই আর ১ ঘন্টা শাওয়ার নেই বুচ্ছিস😤
।
নীলা: ঢংগি আসতে না আসতেই ঢং শুরু করে দিয়েছে😒
।
মিহু: তোর মত নাকি ড্রামা কুইন😒
।
নীলা: হুম ভালো তো জীবনে পারবি আমার মত হতে😏
।
মিহু: 😒😒😒
।
নীল: হয়েছে থাম তোরা
।
মিহু: নীল তোর গার্লফ্রেন্ডকে বল ননদকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে,,,নয়তো আমি আজকেই যেয়ে ড্যাডকে বলবো তোর জন্য মেয়ে দেখতে😒
।
নীল: তুই আমার আপন বোন হয়ে এই কথা বলছিস? তুই ভুলে যাস না তুই আমার ছোট😤
।
মিহু: হুহ্,,,মাত্র ৭ মিনিটের ছোট,,,আর আমরা টুইন ওকে???😒
।
নীল: ফুহ্ তারপরও😏
।
মিহু: ছুহ্
।
নীলা: থুহ্😁
।
মিহু: ইউউউউ,,,,,ছিঃইইইই,,,,,ওয়াককককক🤮। নে আমি বমি করে দিছি😆
।
নীলা: ছিঃইইইই মিহু কি বলিস এগুলো
।
সবাই: 😂😂😂😂
।
মিহু: গাইস্ ফুসকা খাবি?
।
নীলা: ফুচকা কে কখনোই না করতে নেই,,,,না করলে পাপ হবে পাপ
।
মিহু: ওকে দ্যান দেখি কে আগে যেতে পারে
।
“সবাই একে অপরের দিকে একবার তাকিয়ে উঠে দৌড় দিলো,,,,কিন্তু মিহু ওদের আগে দৌড় দিলো। মিহু রাস্তার সামনে যেয়ে দেখলো কোনো গাড়ির ভির নেই তাই রাস্তা পাড় হতে গেল,,,,ঠিক সেই মুহূর্তে ও পাশে থেকে একটি বিকট শব্দ শুনতে পেল। রাস্তার ওই পাশে একটি খালি মাঠ ছিল,,,,শব্দটা ওখান থেকে এসেছে। মিহু দেখার জন্য এক পা দু পা করে সামনে এগিয়ে গেল। মাঠের সামনে লুকিয়ে উঁকি দিয়ে যা দেখলো তা দেখার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিল না। সামনে ১০-১২ জন কালো পোশাক পড়া লোক দাড়িয়ে আছে,,,,আর ৬ জন লোকের হাত বেঁধে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রেখেছে,,,,পাশে একজন হাত বাঁধা লোক মাটিতে শুয়ে আছে আর তার চারপাশে রক্তে ভরা। ওদের সামনে একজন লোক দাড়িয়ে ওই হাত বাঁধা লোকগুলোর মধ্যে একজনের দিকে পিস্তল ধরে আছে। লোকটার পড়নে ব্ল্যাক লং কোর্ট, ব্ল্যাক প্যান্ট, ব্ল্যাক সু,,,,লোকটার হাইট দেখে মনে হচ্ছে ৬.২ বা ৬.৩ এর মত হবে,,,,লোকটা উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য মিহু ওই লোকটার চেহারা দেখতে পাচ্ছিলো না। তখনি ওই লোকটি আরও একজন লোককে সুট করে দিলো,,,,মিহু ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো,,,,আর একটু সামনে এসে দাঁড়ালো। এবার হাতে গান নিয়ে থাকা লোকটি সামনে ঘুরলো,,,,মিহু ওই লোকটিকে দেখে ভয়ে এক ঢোক গিললো,,,,তারপর ওখান থেকে দৌড়ে চলে আসতে যেয়ে নীলের সাথে ধাক্কা লাগলো। মিহু অনেক আগে চলে গিয়েছিল বলে ওরা সবাই পার্কে ফিরে যায়,,,শুধু নীল মিহুর পেছনে আসে,,,,নীলও এই পুরো বিষয়টা দেখেছে,,,,তাই ও মিহুর হাত ধরে টেনে ওখান থেকে পালিয়ে আবার সেই পার্কটাতে আসলো। ওই লোকটার কিছু লোক ওদের ফলো করে পার্কের সামনে এসে আবার ঘুরে চলে গেল। এদিকে মিহু তো সমানে কান্না করে যাচ্ছে”
।
।
নীলা: কি হলো মিহু কান্না করছে কেন নীল?
।
আরিফ: মিহু কি হয়েছে বল?
।
নীল: গাইস্ পরে বলব,,,এখন ওকে একটু শান্ত হতে দে
।
মিহু: ভা..ভাইয়া😭
।
নীল: তোকে কিছু বলতে হবে না আমি সব দেখেছি
।
মিহু: (সাথে সাথে ভাইয়াকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম,,,,আর কান্না করতে লাগলাম)
।
নীল: (আমিও ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম,,,,ও প্রচন্ড ভয় পেয়ে গেছে,,,,তাই কান্না করতে করতে ওর হেচকি উঠে গেছে,,,,একটু পর দেখলাম মিহু একদম শান্ত হয়ে গিয়েছে,,,,মিহুকে হালকা নড়া দিলাম দেখলাম ও চোখ খুলছে না) মিহু!
।
রাইসা: সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে
।
“নীল তাড়াতাড়ি মিহুকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসালো,,,,নীল ড্রাইভিং সিটে বসলো,,,,পেছনে মিহুকে নিয়ে নীলা আর রাইসা বসলো,,,,আর নীলের পাশে আরিফ বসলো। মানিক আর অনু মানিকের গাড়িতে বসলো। নীল তাড়াতাড়ি মিহুকে বাসায় নিয়ে এসে ডক্টরকে ফোন করে তাড়াতাড়ি আসতে বললো। নীলের বাবা-মা খুব অস্থির হয়ে উঠেছেন তাদের মেয়ের এই অবস্থা দেখে”
।
।
বাবা: নীল ওর কি হয়েছে?
।
মানিক: এবার বলবি প্লিজ ও কান্না কেন করছিলো?
।
“তারপর নীল ওদের সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলল। সবাই তো নীলের কথা শুনে থ মেরে বসে আছে,,,,আর নীলার হঠাৎ কি যেন হলো ও কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে যে ওই লোকগুলো কে ছিল,,,,কিন্তু তারপরও কাউকে কিছু বলল না। এর মধ্যে ডক্টর এসে মিহুকে চেক করে গেছে,,,,বলেছে কোনো কিছু দেখে ভিষন শক্ পেয়েছে যার কারনে ও বিষয়টাকে সহজভাবে নিতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। ডক্টর চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মিহু হঠাৎ চিৎকার দিয়ে উঠে বসলো। নীল তাড়াতাড়ি যেয়ে মিহুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। নীল মিহুর সাথে যত ঝগড়াঝাটিই করুক না কেন,,,নীল মিহুকে খুব ভালোবাসে। ছোট থেকেই কখনো মিহুর চোখে একফোঁটা পানি আসতে দেয় নি। সেই মেয়েকে এভাবে কান্না করতে দেখে নীলের খুব খারাপ লাগছে,,,,অনেক বুঝিয়ে নীল মিহুকে ঠান্ডা করিয়ে,,,,একটু সুপ খাইয়ে দিল”
।
।
এদিকে____________
.
“গোল্ডেন মাফিয়া গ্যান্গের লিডার পায়ের উপর পা তুলে সোফায় বসে আছে,,,তার সামনে পুলিশ কমিশনার আফজাল রহমান বসে আছে”
।
।
কমিশনার: স্যার ওই মেয়টি মানে আপনি যার কথা বললেন,,,,ওর নাম মিহু মানে মিহিকা চৌধুরী। ও এই শহরের নাম করা শিল্পপতি জাহিদ চৌধুরীর মেয়ে
।
স্যার: আমি আজকে ব্ল্যাক শ্যাডো গ্যান্গের ৭ জনকে সুট করে দিয়েছি,,,,ওই মেয়েটি সেটা দেখে নিয়েছে
।
কমিশনার: স্যার তাহলে কি ওকে চিরতরে সরিয়ে ফেলব?
।
স্যার: না যা করার আমি করব,,,,আর হ্যা আরেকবার যদি ওকে সরিয়ে ফেলার কথা বলেছেন তো আমি আপনাকে চিরকালের জন্য সরিয়ে ফেলব,,,,কথাটা মাথায় রাখবেন
।
“এই কথা বলে গোল্ডেন মাফিয়া গ্যান্গের লিডার সোফা ছেড়ে উঠে চলে গেলেন,,,,তখনি কমিশনার বলে উঠলো_______
।
।
কমিশনার: কিন্তু কেন স্যার?
।
স্যার: তার উওর কি আমি আপনাকে দিতে বাধ্য? [চোখ রাঙিয়ে কমিশনারের দিকে তাকিয়ে বলল]
।
কমিশনার: ন..না স্যার [ভয়ে ভয়ে]
।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
বি.দ্র.: কেমন হলো জানাবেন😊