I_Love_U,part_1

#I_Love_U,part_1
#sarika_Islam

রাত 2টার দিকে চুপি চুপি বিছানা থেকে উঠে বাহিরে গেলাম,, উদ্দেশ্য নিহান ভাইয়াকে এক দৃষ্টি দেখা,,আস্তে আস্তে করে নিহান ভাইয়ার রুমের সামনে দারালাম,,আস্তে করে দরজাটা খুললাম ভাগ্যিস আজ খোলা পেয়েছি না হয় দুইদিন ধরে আসি শুধু বন্ধই পাই,,দরজাটা খুলে ধীরে ধীরে পা ফেলে এগুচ্ছি,,রুমে ডিম লাইটের আলোতে সবিই বুঝা যাচ্ছে,,নিহান ভাইয়ার সামনে গিয়ে দারালাম,,

ধ্যাত শালা ঘুম,,হঠাৎ মনে পরলো এতরাতে তো মানুষ ঘুমাবেই,, আমার মতো তো আর যেগে থাকবে না?নিহান ভাইয়া উলটো হয়ে শুয়ে আছে বেটার এই একটা বাজে স্বভাব উলটো হয়ে শুয়া আন্টি কত করে বলেছে এভাবে ঘুমাস না কিন্তু কে শুনে কার কথা,,আমি ভাইয়ার সাইডে বসলাম,,ঘুমন্ত অবস্থায় কতই না মায়াবী লাগছে,,কিন্তু কে বলবে আসলে সে এক নাম্বারের জল্লাদ,,রাগ থাকে তার নাকের ডগায়,,কালো কুচকুচে চুলগুলো কপালের উপর পরে আছে মন চাইছে ফু দিতে কিন্তু যদি উঠে যায়?তাহলে কপালে শনি আছে তাই আইডিয়া কেন্সাল করে দিলাম,,হাল্কা লাল সেডের বাতিতে ভাইয়ার মুখটাও লাল লাল দেখাচ্ছে কত্ত কিউট লাগছে পুরোই স্টোবেরি,,মন চায় কুটুস করে খেয়ে ফেলি,,যেই না ভাইয়ার মুখের দিকে হাতটা বাড়াতে যাবো অমনি ভাইয়া নড়েচড়ে উঠলো,,

আমার হাত ঠিক ভাইয়ার মুখের উপরেই ফ্রিজড হয়ে গেল,,ভাইয়ার নড়া বন্ধ হলে আস্তে করে হাতটা সরিয়ে নিয়ে দিলাম দৌড় হায় হায় আমি দৌড় দিতে পারছিনা কেন?ভাইয়া কি ধরে ফেলল আমাকে?চোখ খিচে বন্ধ করে ভয়ে ভয়ে পিছে ফিরলাম কোন সারাশব্দ না পেয়ে এক চোখ খুললাম,,সেকি ভাইয়া দেখি ঘুম,,,ভাইয়ার হাতের মুঠোয় আমার ওড়না,,আমি ছারাতে চাইছি কিন্তু ছারছে না,,দিলাম এক টান,,ওড়না হাতে নিয়েই আস্তে আস্তে পা ফেলে নিজের রুমে আসলাম,,নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে শুয়ে পরলাম,,আল্লাহ কতবড় বাচা বেচেছি,,

কড়াভাবে দরজা ধাক্কানোতে ঘুম ভেংগে গেল,,বিরক্তমাখা মুখ নিয়ে চোখ খুললাম,,আবার দরজা পেটাচ্ছে উফফ কে মরলো?উঠে দরজা খুললাম দেখলাম আপু রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,আমি হাই তুলতে তুলতে বললাম,,

‘কিরে কে মরেছে?এমনভাবে দরজা পেটাচ্ছিস কেন?’

আপু আমার হাতে একটা চড় মেরে বলল,,

‘আমি কতদিন পরে এসেছি আর তুই ঘুমাচ্ছিস?’

‘তাহলে তুই এত সকাল সকাল এলি কেন?বিকেলে আসতি?'(ইয়ারকি মেরে বললাম)

আপু আমার মুখ ফুলিয়ে নিচে চলে গেল,,যাক বাবা আপু নারাজ হয়ে গেল?আমি তারাতারি করে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম,,দেখলাম আপু নিহান ভাইয়া আম্মু আব্বু সবাই বসে বসে নাস্তা করছে,,আমাকে দেখে আম্মু বলল,,

‘কিরে রাহা তুই রিমাকে এইসব কি বলেছিস?’

এইরে কাম সেরেছে আপু আম্মুর কাছে বলে দিল?আমি আম্মুর গলা ধরে বললাম,,

‘আরে আম্মু আপুকে তো মজা করে বলেছি,,এই আপু তুই এত সিরিয়াস থাকিস কেন?’

আপু খেতে খেতে একটা ভেংচি কাটলো,,আমি নিহান ভাইয়ার সাথের চেয়ারে বসলাম,,নিহান ভাইয়া খাবারে ধ্যায়ান দিয়ে এক ধ্যানে খাচ্ছে,,ছেলেটা যে এত্ত সিরিয়াস থাকে কিভাবে সব সময় আল্লাহই জানে,,আমিও খাওয়া শুরু করলাম,,হঠাৎ নিহান ভাইয়া বলে উঠলো,,

‘আন্টি কাল কি আমার ঘরে কেউ গিয়েছিলে?সকালে উঠার সময় হাতে মুতি পেলাম,,সম্ভবত কারো ওড়নার,,’

কথাটা শেষ হতেই আমার কাশি শুরু হয়ে গেল,,বুকে হাত দিয়ে কাশতে লাগলাম,,আপু তারাতারি আমাকে পানি দিল,,আমি কোনমতে পানি খেয়ে নিলাম,,

‘এখন ঠিক আছিস?'(আপু)
‘হুম,,’

আম্মু কিছু বলতে যাবে ওমনি নিহান ভাইয়ার ফোনে ফোন আসলো,,নিহান ভাইয়া টেবিল থেকে উঠে পরলো,,যাক বাবা বেচেছি না হলে আম্মু কি না কি বলতো আল্লাহই জানে,,কতক্ষন পর ভাইয়া এসে বলল,,

‘আচ্ছা আংকেল আন্টি আমি তাহলে চলি,,আম্মু আব্বু এসে গেছে,,’

আম্মু বলল,,

‘আরে বাবা দুপুরে খেয়ে যেও,,’

‘না আন্টি আপনার আর কষ্ট করতে হবে না,,’

বলেই হাল্কা হাসলো,,যাক সিরিয়াস লোকটা মাঝে মাঝে হাসেও,,আব্বু ভাইয়ার উদ্দেশ্য বলল,,

‘চলো নিহান একসাথেই যাওয়া যাক,,নিলয়কেও দেখে নিব অফিসে কতদিন ধরে বন্ধুটাকে দেখি না,,’

‘জি আংকেল চলুন,,’

বলেই তারা বেরিয়ে পরলো,,আব্বু আর নিলয় আংকেল ছোট বেলার ফ্রেন্ড বলতে গেলে বেস্টফ্রেন্ড,,একিই অফিসে তারা পার্টনারস,,আংকেল কিছুদিনের জন্য আন্টিকে আর নিয়াকে নিয়ে আন্টির মার বাড়ি গিয়েছিল,,নিহান ভাইয়ারা এক ভাই এক বোন,,তাকে রেখে গিয়েছিল সে কোথাও যাওয়া বেশি পছন্দ করে না,, আজ তারা এসে পরেছে তাই আমাদের বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছে,,আবার জানিনা কবে দেখতে পাবো ভাইয়াকে,,এইকয়দিনে ভাইয়াকে দেখা যেন আমার অভ্যাসে পরিনত হয়েছে,,গালে হাত দিয়ে মন খারাপ করে টেবিলে বসে আছি,,হঠাৎ কোথাথেকে রুহি এসে আমার গাল থেকে হাত সরিয়ে দিল হাত তালি দিয়ে খিলখিল করে হাসছে,,

হাত সরানোতে মেজাজ গরম হয়ে গিয়েছিল,,পরেই পিচ্চিটার হাসি দেখে সব রাগ চলে গেল,,রুহিকে কোলে নিলাম গাল দুটো টেনে বললাম,,

‘এমন করলে কেন তুমি?’

পিচ্চিটা কানে হাত দিয়ে বলল,,

‘সরি মাম্মাম,,আর এমন হবে না,,’

আমি গালে একটা চুমু দিয়ে বললাম,,

‘আরে আমার বাচ্চাটা কত পেকেছে সরিও বলতে পারে,,’

পিচ্চিটা মাথা ঝাকিয়ে বলল,,

‘হুম,,’

আমি রুহিকে কোলে নিয়ে উঠলাম,,রান্নাঘরে আম্মুর কাছে গেলাম,,আপু আর আম্মু কথা বলছে আর রান্না করছে,,আমি মাঝদিয়ে গিয়ে বললাম,,

‘আপু তোর মেয়ে এত পাকুনি কেন রে?কত পাকা পাকা কথা বলে,,’

‘হুম আন্টি যেমন ভাগ্নি তো তেমন হবেই,,’

আমি আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম,,

‘আমি পাকুনি না আপু হুহ,,এই পিচ্চি তুমি এত পাকনি কেন?’

পিচ্চিটা হাল্কা চিল্লিয়ে বলল,,

‘মাম্মাম আমাকে পিচ্চি বলবে না,, তুমি পিচ্চি,,’

বলেই আমার কোল থেকে নেমে দৌড় দিল,,আমি আম্মু আর আপু হেসে দিলাম পিচ্চিটার কথায়,,আমি আপুর সাথে টুকটাক কথা বলে উপরে গেলাম,,এই কয়দিন নিহান ভাইয়া যেই রুমে ছিল সেই রুমে গেলাম ভাইয়াকে খুব মিস করছি এখন,,এই রুমে এখনও তার ঘ্রান লেগে আছে,,,বারান্দায় গেলাম খোলা বারান্দায় আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি,,,

রাতে,,আব্বু অফিস থেকে আসলো আমরা সবাই খাবার খেয়ে শুয়ে পরলাম,,

সকালে,,

কেউ আমার পা ধরে টানতে লাগলো,,ঘুমের ঘোরে প্রথমে ঠিকভাবে টের না পেলেও যখন পা টানাটা ক্রমশই বেরেই যাচ্ছে “ভুত” বলে লাফ দিয়ে উঠলাম,,উঠে বসে যেই চিল্লান দিব অমনি নিয়াকে দেখে থেকে গেলাম,,নিয়া পেটে হাত দিয়ে হেসেই চলছে,,কি বেয়াদপ মেয়েরে বাবা এভাবেই কেউ ভয় দেখায়,,আমি উঠে নিয়ার সামনে গিয়ে কোমরে হাত দিয়ে দারালাম,,

‘বেয়াদপ মেয়ে এরকম কেউ করে?যদি এখনি হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতাম তাহলে কি হতো?’

‘তাহলে আর কি হতো পৃথিবী থেকে একটা শয়তান কমতো,,’

বলে আরো জোরে জোরে হাস্তে লাগলো,,ওর হাসির কিছুক্ষন রাগীভাবে তাকিয়ে থেকে আমিও হেসে দিলাম,,মেয়েটা এমনি সবাইকে হাসায়,,আমি ওকে জরিয়ে ধরলাম,,

‘কিরে কখন এলি?’

‘এইতো এখনি,আর শুনি তুই নাকি ঘুম,,’

‘হুম,, আন্টি এসেছে?’

‘হুম আম্মু এসেছে চল নিচে,,’

‘তুই যা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি,,’

নিয়া নিচে চলে গেল আমি ফ্রেশ হতে গেলাম,,ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে গেলাম,,আন্টিকে দেখে সালাম করলাম,,আন্টি আমাকে খুব আদর করে আমাকে তার মেয়ের মতোই দেখে,,আন্টি আমার গাল দুটো টেনে দিয়ে বলল,,

‘বাচ্চাটাকে কত্ত মিস করেছি যে আমি!!!’

আমি বললাম,,

‘আন্টি আমি বাচ্চানা,, বাচ্চা তো রুহি,,’

রুহিকে দেখিয়ে,,আন্টি আবার বলল,,

‘নিয়া আমার জন্য যেমন তুই ও তেমন,,আমি তোকে বাচ্চাই বলল,,’

‘আচ্ছা!!’

এখন কি আর করার আন্টি যখন বলবে না তো আর করা যায় না,,

সারাদিন অনেক মজা করে কাটলো আন্টি আর নিয়ার সাথে,,,নিয়া আর আমি একিই ক্লাসে পরি,,ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে,,কয়দিন পর আমাদের ফাইনাল এক্সাম,,

রাত 10টা,,

আমরা সবাই সোফায় বসে গল্প করছিলাম,,তখন দরজায় কেউ এলো,,আপু গিয়ে দরজা খুলল,,নিহান ভাইয়া এসেছে,,নিহান ভাইয়া সোফার সামনে এসে দারালো আন্টির সাথে কথা বলছে,,আমি তো নিহান ভাইয়াকে দেখে এক পলকে তাকিয়েই আছি,,,কালো শার্ট হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো,,বুকের সামনে দুইটা বোতাম খোলা,,কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে,,খুব টায়ার্ড দেখাচ্ছে,,খুব আবেদনময়ী দেখাচ্ছে,,আমি ঘার কাত করে পলকহীন ভাবে তার দিকে তাকিয়েই আছি,,

নিয়ার ধাক্কায় আমার হুশ ফিরে,,

‘আমার ভাইকে এভাবে দেখিস না নজর লাগবে,,’

আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম,,হায় আল্লাহ কি বেশরমভাবে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম,,ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে যা বলল আমি একদম লজ্জায় লাল হয়ে গেছি,,,লজ্জা সরম নাই এই ছেলে নাকি?আলাহই জানে,,

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here