Accounting_Teacher,Part 19,20
Written_by_Ritu_Rosni
Part 19
.
ডক্টর আংকেল এসে বলে গেলেন ঋতুর জ্ঞান ফিরেছে
বেডে শিফট করা হয়েছে।
আপনারা চাইলে দেখা করে আসতে পারেন তবে রোগীর কাছে কোনো রকম কান্নাকাটি বা উত্তেজিত করতে পারবেন না।
–ঠিক আছে আংকেল আপনি কোনো টেনশন করবেন না।
,,
আস্তে আস্তে সবাই ঋতুর সাথে দেখা করে এলো।শুধু মাত্র আমিই যাইনি।
আমি পারবো না সহ্য করতে।😰ঋতুকে আমি এই অবস্থায় দেখতে পারবো না😭😭(অভি)
,
কিরে তুই এখানে দাড়িয়ে আছিস কেনো??যা ভেতরে যা,,
ঋতুর সাথে দেখা করবি না?(ছোট আম্মু)
–হু,,যাচ্ছি।
যতোই আগাচ্ছি সামনে,পা যেনো আমার ভারী হয়ে আসছে।
উঠছেই না।
দেখলাম পাগলি টা জানালার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে কি যেনো দেখছে।
এই একদিনে শুকিয়ে যেনো কঙ্কাল হয়ে গেছে।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।😭😭
মনে হচ্ছে কতদিনের কাহিল।
চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে মনে হয় এখনি চোখ বেয়ে বৃষ্টি নেমে যাবে।খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।না জানি পাগলি টার কত্ত কষ্ট হয়েছিল।
আল্লাহর দরবারে লাখো লাখো শুকরিয়া জানাই।
আমার পাগলি টাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য।সময় মতো না নিয়ে আসলে আর ব্লাড না পাওয়া গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যেত।
ভাগ্যিস ডক্টর আংকেল ছিলেন,,না নাাা সাথে উপরওয়ালা ছিলেন বলেই সব সম্ভব হয়েছেন।
একটু দেরি হলেই😰😰
ভাবতেই বুঁকটা কেপে উঠে।
,,
জানালা দিয়ে বাইরের আকাশ দেখছিলাম।
কয়েকদিন ধরে কেমন বৃষ্টি হচ্ছে।শীতের মৌসুমে বৃষ্টি,,
এই শীতে একদম বুড়ি করে ছাড়বে তো দেখছি।😊
কুয়াশার কারণে সব কিছু কেমন আবছা আবছা দেখাচ্ছে।
হাসপাতাল যেহেতু মেইন রোডের পাশে তাই এখান থেকে সব দেখা যায়।এই শীতের রাতে তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না।দু এক টা গাড়ি মাঝে মাঝে শো শো করে চলে যাচ্ছে।
ধুরররর!!এভাবে কি এই বন্দি কারাগারে থাকে কেউ??
হঠাৎ পেছনে তাকিয়ে দেখলাম অভি ভাইয়া।
ভাইয়া কখন এলে??আর এসেই এমন চোরের মতো বসে আছো যে।(আমি)
———–(অভি)
–ভাইয়া,ও অভি ভাইয়া!!কি এত ভাবছো শুনি??(গায়ে ধাক্কা দিয়ে)
—হু,,,ডাকলি??(অভি)
—সেই কখন থেকে ডাকছি তোমায়??তুমি কিসের ধ্যানে মগ্ন হ্যাঁ??(কিছুটা ধমক দিয়ে)
—কই!!কিছু না তো,বল কিছু লাগবে তোর??(অভি)
নাাা!!তবে তুমি এমন গম্ভীর কেনো??কি হয়েছে সত্যি করে বলো তো??(আমি)
–কি হবে??কিছু না
–তাইলে মুখটাকে এমন বাংলার পাচের মতো করে রাখছো ক্যা??একটু হাসো,হাসোোোোো(আমি)
অভি জোর করে হাসার চেষ্টা করলো,,মুখে হাসি আসবে কোথেকে??একটু হলেই তো জানটা বেরিয়ে যেতো।
,
কি ব্যাপার!!😱😱ভাইয়ার চোখ দুটি এত ফোলা ফোলা লাগছে কেনো??কান্না করছে নাকি??কিন্তু কার জন্য??😱
ঐ মিয়া সারাদিন কান্না করছো নাকি??তোমার বউ মরছে নি??
–কইই কান্না করছি??
ধুররর!! মিয়া চিন্তা কইরো না একটা গেলে আর একটা নিউ আইবো।বলেই খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো ঋতু,
সেই হাসির প্রতিধবনি যেনো সারা রুম জুড়ে আছড়ে পড়ছে।
ঋতুর হাসি দেখে অভিও হেসে ফেললো।
এই অবস্থাও যে কেউ দুস্টুমি করে তা ঋতু কে না দেখলে বোঝা যেতো না।
কি নিষ্পাপ হাসি!!দেখলেই মন প্রাণ জুরিয়ে যায়।
বুকের ভেতর যেনো এক আলাদা শিহরণ বেজে ওঠে।
কে বলবে এই মেয়েটাই মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলো।
দুস্টুমি যেনো আর বেড়েছে।😃😆😃
ভেবেছে কোন কারণে আমার মন খারাপ তাই একের পর এক হাসির কথা বলে আমার মন ভালো করার চেষ্টা করে যাচ্ছে পাগলি টা।
পাগলি টা কি বুঝবে না কখনোই যে ওকে হারানোর ভয় টা আমায়,কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।😰(অভি)
,,
নে অনেক হয়েছে এবার এই স্যুপ টুকো খেয়ে নে তো দেখি,,তোকে আবার মেডিসিন নিতে হবে।(ঋতুর আম্মু)
.
ছোট আম্মু ঋতুর জন্য গরম স্যুপ করে নিয়ে এসেছে বাসা থেকে।আমিই জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিলাম এখানে থাকলে আবার অসুস্থ হয়ে পড়বে।তার থেকে বরং বাসায় গিয়ে গোসল করে রেস্ট নিয়ে তারপরে আসুক(অভি)
,
ও অভি ভাইয়া!!আম্মুকে বলো না প্লিজজ!!আমার এখানে থাকতে একদম ভালো লাগছে না।
আমাকে বাসায় নিয়ে চলো না।😒😒
—বাসায় তো নিয়ে যাবোই।ডক্টর বলেছে আরো কয়েকদিন থাকতে।এখন এই স্যুপ টুকো খেয়ে নে তো লক্ষি মেয়ের মতো।
—নাহহহ,আমি খাবো না।যতক্ষণ না আমাকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছো।তার আগে আমি পানি ও মুখে দিবো না,, মেডিসিন ও না।(আমি)
,,
আমার জেদের কাছে হার মেনে নিয়ে😊
ওকে ওকে বাবা,আমি ডক্টর আংকেলের সাথে কথা বলে দেখছি কি করা যায়।তবে তার আগে আপনাকে ও এই স্যুপ টুকো খেয়ে মেডিসিন নিতে হবে।(অভি)
–আরে দেরি করছো কেনো??তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও,স্যুপ টা তো ঠান্ডা হয়ে গেলো।(বাসায় যাবো এই বন্দি গোয়াল ঘর থেকে ভাবতেই খুশি লাগছে)😆😃😃
—😲😲😲
–একি!!!তুমি এমন হা করে আছো কেনো??দেখো আমার কিন্তু পেট খারাপ হবে চোখ দিওনা।😊😊
—ওর কথা শুনে হো হো করে হেসে দিলাম।কত্ত বড় বদ হলে এসব বলে,,
,,
অভি ভাইয়া আমাকে খাইয়ে দিচ্ছিল আর আমি আরামে বসে খাচ্ছি আর গল্প করছি।
বেশ ভালোই লাগছে এভাবে হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকতে।
সবাই কত্ত সেবা যত্ন করছে আমার।আবার দেখতেও আসছে।
মাঝে মাঝে এভাবে অসুস্থের ভান করে শুয়ে থাকলেও মন্দ হয় না।😆😃😆
দরজার দিকে চোখ গেলো।শুভ্র স্যারের মা-বাবা আর শোভা(স্যারের ছোট বোন)আসছে।
স্যারকে দেখলাম না।হয়তো আসেনি।😡😡
ঐ লুইচ্চা ব্যাটার জন্যই তো আজ আমার এই অবস্থা।আমাকে সবার কাছে চরিত্রদোষ হিসেবে উপাধি পেতে হলো।আমার আজকের এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী ঐ নাইজেরিয়ান এনাগন্ডা টা।
এতক্ষণ সব ভুলেই গেছিলাম কিন্তু এদের দেখে আবার মনে পড়ে গেলো।
,
শুভ্র:নিজেকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছিলাম না ঐ ঘটনার পর থেকে।আমার জন্যই তো আজ এত কিছু হলো।কিছুতেই মনকে শান্ত করতে পারছিলাম না ওকে না দেখে।
ওর সামনে দাড়াবার মুখ আমার নেই।ও ঘৃণায় আমার থেকে মুখ সরিয়ে নেয় যদি আমার থেকে??😰😰
ও কি আমায় ক্ষমা করবে না কখনোই??
হয়তো বা না।ওর জায়গায় আমি থাকলে কি করতাম।
বাসা থেকে আব্বু আম্মু শোভা রা ঋতুকে দেখার জন্য হাসপাতালে এসেছে।
আমাকেও বলেছিল আসতে ওদের সাথে কিন্তু আমি না করে দিয়েছিলাম তখন।
পরে আবার ওদের পিছ পিছ এসেছি।
ওরা ঋতুর কেবিনের ভেতরে গেছে ঢুকে।আর আমি বাইরে দাড়িয়ে পায়চারি করছি।
ওর সামনে যাবো কি যাবো না এই দ্বিধায় ভুগছি।
আচ্ছা, আমাকে দেখলে ও কেমন রিয়েক্ট করবে??😒😒
,
যা করে করবে।মেরে ফেললে ফেলুক তারপরেও আমাকে ওর থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
পায়চারি করে হাটছিলাম ঠিক তখনি,,
–কিরে ভাইয়া??😱😱
তুই কখন এলি??তখন না বললি যে আসবি না??
–এই তো মাত্র এসেছি (মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
ও এখন কেমন আছে??(শুভ্র)
—ও টা কে আবার শুনি??😜
—😡😡
— ও ঋতু আপুর কথা বলছিস তো??
হুমমম তা তোমার ও এখন ভালো আছে।বাইরে দাড়িয়ে না থেকে তোমার ও টাকে দেখে আসো।(বলেই হার্মি টা চলে গেলো)
,,
কত্ত বড় বেয়াদব 😡আমার সাথে মসকারা করে।একবার বাসায় যাই আগে তারপরে তোকে দেখবো।(শুভ্র)
,,
আংকেল আন্টিরা দেখে চলে গেলো।একটু পরে দেখলাম জল্লাদের বংশ টাকে😱
উনি কখন এলো??😡উনাকে দেখে আমার রাগে শরীর টা একদম জ্বলে যাচ্ছে।
–তুই চুপটি করে বস,আমি ডক্টর আংকেলের সাথে দেখা করে এখনি আসছি।(অভি)
–কিছু না বলে মাথা ঝাকাঁলাম।(আমি)
,,
ওর বেডের পাশের টুল টাতে বসলাম।(শুভ্র)
,,
ডক্টর আংকেলের সাথে কথা বলে আসলাম।বিকেলে চেকআপ করে নিয়ে তারপরে যেতে বলছে।বাসায় গিয়ে ঠিক মতো ঔষুধ খাওয়াতে বলছে।
ঋতুর কেবিনের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি(অভি)
ঋতু আপির সাথে দেখা করে কেবিনের বাইরে বসেছিলাম ঠিক তখনি একজন কে দেখলাম😲😲
উনি এখানে😱কিনু??
খাড়ান আপনাদের ক্লিয়ার করে বুঝিয়ে দেই আগে(ইনি হলেন আমার ক্রাশ অভি চৌধুরি।যার একজন পাগলা ফ্যান আমি।
মানে হলো উনি একজন রাইটার।ফেসবুকে গল্প লেখালেখি করে।একজন সেলিব্রেটি ম্যান।
কত্ত ফ্যান উনার।
অভি চৌধুরির গল্প পড়তে পড়তে কবেই যে উনার প্রেমে পড়ে গেছি নিজেও জানিনা।
উনার প্রোফাইলে পিক দেওয়ায় চিনতে আমার একটুও কষ্ট হলো না।যিনি এত্তো সুন্দদ করে গল্প লেখেন,মনের গভীর থেকে কল্পনা জল্পনা দিয়ে অনুভূতি দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাকে ভালো না বেসে থাকা যায়??
পিকের থেকে বাস্তবে উনি আরো বেশিই কিউট।
চোখ ধাধানো এক সুদর্শন পুরুষ উনি।
উচ্চতায় আনুমানিক ৫.৮” হবে।শ্যাম বর্ন,হাসলে মেয়েদের মতো গালে টোল পড়ে😲
মুখে খোচা খোচা দাড়ি।
একটা মেয়েকে ঘায়েল করার মতো রুপ দিয়ে দিয়েছেন উনার মধ্যে উপরওয়ালা।
আর আজ ব্লাক শার্টে একদম👌👌
বাস্তবে যে কখনো উনাকে দেখতে পারবো কখনো কল্পনাও করিনি আমি।
দৌড়ে উনার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।(শোভা)
,
একটা মেয়ে দৌড়ে আমার সামনে এসে পথ আগলে দাড়ালো।😲
কেগো তুমি বালিকা এভাবে আমার পথ আগলে দাড়ালে কেনো??(মনে মনে বলছে অভি আর বুঁকে ফু দিচ্ছে)
.
.
(চলবে)
Accounting_Teacher
20
Written_by_Ritu_Rosni
.
.
একটা মেয়ে দৌড়ে আমার সামনে এসে পথ আগলে দাড়ালো।😲
কেগো তুমি বালিকা এভাবে আমার পথ আগলে দাড়ালে কেনো??(মনে মনে বলছে অভি আর বুঁকে ফু দিচ্ছে)
প্রয়োজন ব্যতীত কোনো মেয়ের সাথে(ঋতু ছাড়া) অভি কথা বলেনি।কে এই মেয়ে??আর সামনে এসেই বা পথ আগলে দাড়ালো কেনো??সব প্রশ্ন মাথায় একটা জট পাকিয়ে দিচ্ছে।
,
–আরে অভি ভাইয়া!!কেমন আছেন?? (শোভা)
–অভি ভ্রু কুঁচকে(আমাকে ভাইয়া বলে ডাকছে অথচ আমিই চিনিনা😒)
জ্বী!ভালো আছি।কিন্তু আপনি কে বলুন তো??আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না আমি।(অভি)
—আপনি আমাকে চিনবেন না,আমি আপনাকে চিনি।(শোভা)
–আজিব তোহহ!!আমি আপনাকে চিনি না অথচ আপনি আমায় চিনেন।ব্যপারটার কেমন হয়ে গেলো না??
শুনুন মিস আমি কোনো সেলিব্রেটি নই যে আমাকে সবাই চিনবে।(বলেই অভি চলে আসতে লাগলো)
–😱😱
আপনি #অভি_চৌধুরী না???ভার্চুয়ালে লেখালেখি করেন।
–হু,কিন্তু আপনি জানলেন কি করে???(অভি)
–আমি আপনার একজন Biggest fan.
আপনার প্রায় সব গল্পই আমি কয়েকবার করে পড়েছি তবুও বার বার পড়তে মন চায়।আপনি এত সুন্দর করে গল্প লিখেন কিভাবে???আপনার গল্প গুলো পড়লে একদম মন ছুয়ে যায়।ভালো লাগা কাজ করে এক প্রকার।
—আমার লেখা কেউ পড়ে নাকি😒 আগে জানতাম না তোহহ😆😃😃
–আপনার কত্ত ফ্যান আছে যে আপনি ভাবতেও পারবেন না।আপনি কি এমন জাদু দিয়ে লেখেন বলেন তো??আপনার গল্প না পড়তে পারলে কেমন যেনো শুন্যতা কাজ করে।বিরহ লাগে।😰(শোভা)
—😱😱
–তো আপনি এখানে কি করছেন??আপনার কেউ এখানে এডমিট আছে নাকি??
–হু,আমার কাজিন।
–ওহহ!!তা আপনার কাজিনের নাম কি শুনি??
–ঋতু
—😱😱ঋতু,,ঐ রুমে থাকে নাকি??(ঋতুর রুম দেখিয়ে)
—হ্যাঁ,কিন্তু আপনি জানলেন কি করে??
–আমরাও তো ঋতুপু কেই দেখতে এসেছি।আমার আব্বুর বন্ধুর মেয়ে আপু।।
আসুন আমার আব্বু আম্মুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেই।(কথা বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে টেনে হন হন করে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছে।কি বেহায়া রে মেয়েটা।অচেনা, অপরিচিত একটা ছেলেকে এভাবে।)
ওয়েটিং রুমে ছোট আম্মু, আংকেল বসে তার পাশে দুজন ভদ্র মহিলা আর পুরুষ বসে আছেন দেখলাম।হয়তো এটাই এই তারছিড়া পাগলির মা বাবা।তারছিড়া বলবো না??
লজ্জাশরম থাকলে কি আর বাপ মার সামনে ঢ্যাঙ ঢ্যাঙাতে অচেনা ছেলের হাত ধরে নিয়ে আসে??
পুরাই লেডি গুন্ডি😂😂
–কিরে শোভা!তুই কাকে নিয়ে এলি এটা??(মনে হয় তারছিড়ার মা হবে)
–মা উনি হচ্ছে #অভি_চৌধুরী।
একজন সেলিব্রেটি ম্যান,,ফেসবুকে লেখালেখি করে।আমি উনার গল্প পড়ার জন্যই তো সারাক্ষণ ফোনের স্ক্রিনের দিকে চেয়ে থাকি আর তোমার এত্ত এত্ত বকা খাই।
—কিরে অভি??কি শুনছি এসব??তুই নাকি গল্প লিখিস??(ছোট আম্মু,একটু রাগী ভাবে বললো কথা টা)
–হ্যাঁ,নাা মাআাানে মাঝেমাঝে টুকটাক লিখি আর কি😰
–তো আমাকে পড়তে দিবি না??😃😃
অনেকক্ষণ গল্প করলাম ওদের সাথে।কথা শুনে বুঝলাম এই তাড়ছিড়ার ভাই ঋতুর #Accounting_Teacher
😱😱😱আমার তো খেয়ালই নেই,,এখানে এসে গল্পে মেতেছি আর ওখানে পাগলি টা একা রয়েছে।আবার রাগারাগি করবে যে আমায় একা রেখে সবাই কোন লন্ডনে গেছে।
যাই তাড়াতাড়ি,, সব দোষ ঐ মাথা মোটা তাড়ছিড়া পাগলির,কে বলছে তোকে আমার গল্প পড়তে শুনি??😡
,,
জল্লাদের বংশ টা টুল পেতে আমার পাশে বসে আছে।আমার তো মনে হচ্ছে ওরে ধরেই মশলা ছাড়াই লবণ দিয়ে কেটে কুচি কুচি করে গিলে খাই।
কি করতে এখানে আসছে??লুচুর হাড্ডি,লজ্জা করেনা হাটুর বয়সি মেয়ের সাথে এমন ইটিস পিটিস করতে ছিঃ
পাশে রুমে সবাই আছে তাই চুপ চাপ আছি নইলে তো ওরে এতক্ষণে😡(আমি)
—ওর পাশে এসে বসেছি অনেকক্ষণ হলো।আমায় দেখে মুখ ফিরিয়ে নিলো।সেটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু ওর এই নিরাবতা যে আমায় খুব পীড়া দেয় সেটা কি ও বুঝতে পারে না??😰
এই দুদিনে অনেক কষ্ট দিয়েছি নিজেকে,বুঁকের ভেতর টা যদি কাউকে দেখাতে পারতাম তাহলে বুঝতো কি কষ্ট,যন্ত্রণার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে এ বুঁকে।
আসলে নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করতে পারি না।রাগ হলে আমি মানুষ থাকি না,বন মানুষ হয়ে যাই।কি যে করে ফেলি নিজেও জানিনা।
রাগ কমে গেলে পরে নিজেই আফসোস করি।
কি দিয়ে শুরু করবো বুঝতেছি না।😒
এখন কেমন ফিল করছো??
–হু,ভালো!!
–শুনলাম বাসায় যাচ্ছো আজকেই,
ঔষুধ পত্র ঠিক মতো খাবে, আর পড়াশুনায় ফাঁকি দিলে চলবে না কিন্তু।রেস্ট নাও পরশু থেকে নিয়মিত ক্লাসে এটেন্ড করো।বলেই হন হনিয়ে বেড়িয়ে এলো হাসপাতাল থেকে শুভ্র।
–😱😱😱
কপাল আমার কপাল😰
একেবারে সোনায় বাঁধা কপাল।
জীবনেও এমন জল্লাদ টিচার যেনো কারো কপালে না জুটে।
ভাই তুই দেখলি আমার উপ্রে দিয়া কত্ত ঝড় চলে গেলো,তুই কি দেখলি না??
আমারে এহন কোন জ্ঞানে কস পড়াশুনা, কলেজ যাওয়ার কথা??
উষ্টা মারি তোর লেখা পড়ার।জীবন না চললে কি তোর লেখাপড়া দিয়ে আমি পান পুরি খাবো???
(একা একাই বক বক করছিল)
—কি রে একা একা কি বক বক করিস বলতো??আর তোর টিচার আসছিল দেখলাম,কি বলে গেলো??(অভি)
–(সব বললাম কি কি বলেছে)
—😂😂😂😂😂
খাড়া হাইসা লই😂😂😂
—ঐ হাসবা কইলাম,,ঘুসি মাইরা নাক ফাটাই দিমু কলেম।😡
—আচ্ছা চরি!!আর হাসুম না,,তাও তুই আমার নাক ফাটাস না।😊
ওহ তোকে তো বলাই এখানে এক তাড়ছিড়া(সব খুলে বললাম ঋতুকে)
—😱😱
তুমি গল্প লিখো??কই আগে তো আমায় কখনো বলো নি??
–তুই কখনো জিজ্ঞেস করেছিস নাকি যে বলবো??
–তা ঠিক!!তোমার ফোন টা কই??দাও তো এদিকে,,
–কেনো??আমার ফোন দিয়ে তুই কি করবি??(অভি)
–কেনো??গল্প পড়বো!!
কথা না বলে এই দিকে এগিয়ে দাও,,কি হলোোোোো দিচ্ছো না কেনো??
মনে হচ্ছে তোমার জান চেয়েছি যেমন ভাব করছো,,😉
—তুই চাইলে তো তোকে আমার জানটা দিতেও রাজি!কিন্তু ফোন দিলে তো কেস খেয়ে যাবো আমি।(গল্প গুলো ঋতুকে নিয়েই লেখা,,আবার ঋতুকে না জানিয়ে অনেক পিক তুলেছিলাম বিভিন্ন সময়ে সেগুলো গ্যালারি তে আছে😰)
কি আর করার!!😰পড়েছি মোল্লার হাতে এক সাথে তো খানা খেতেই হবে।
নাছোড়বান্দা,একবার যখন চেয়েছে তো দিতেই হবে।নইলে আমার আম ও যাবে সাথে ছালাও😰
নে বইন তাড়াতাড়ি পইড়া ফোন টা দিস!!
আমি বরং ছোট আম্মুকে সাহায্য করি গিয়ে,,একা একা অসুস্থ শরীর নিয়ে সব গোছগাছ করতে পারবে না।
,
ছোট আম্মুরর কাছে থেকে এসে দেখি ম্যাডাম গাল ফুলিয়ে বসে আছে।
ব্যাপার কি??😒কিছু বুঝে ফেলেনি তো??😒
কিরে তোর পড়া শেষ??? (অভি)
—😰😰নাহহ!!একটা গল্পের মাত্র ২ টা পার্ট পড়ছি ওমনি ব্যাটারি শাট ডাউন😰
—আল্লাহ তুমি আমারে জোড় বাচাইছো,,
বুঁকের উপর থেকে মনে হলো একটা পাথর নেমে গেলো।যাক তার মানে আমি যে ভয় পাচ্ছিলাম এখনো কিচ্ছু বুঝতে পারেনি।😃😃
ওলে বাবুলে কাঁদেনা,,এখন আমরা বাসায় যাই পড়ে গল্প পড়া যাবে,,ঠিক আছে???
–হু
,
ঋতুকে বাসায় পৌছে দিয়ে সব কিছু ঋতুর আম্মুকে বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় চলে গেলো অভি।
এই দুদিন যা ধখল গেছে ওর ওপর দিয়ে।নাওয়া খাওয়া,ঘুম সব বাদ দিয়ে ঋতুর কাছে পড়েছিল।
সকালে আবার অফিস আছে।ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়লো অভি।
,,
দুদিন পরে…
এখন মোটামুটি ঋতু সুস্থ,,এই দুদিন অভি মাঝে মাঝে এসে দেখে গেছে।
অফিসে এখন প্রচুর কাজের চাপ,দম ফেলাবার জো নেই।
শুভ্র মাঝে মাঝে কল দিয়েছে কিন্তু ঋতু রাগে ক্ষোভে কল কেটে কেটে দিয়েছে।
আজকে ঋতু ভার্সিটিতে যাবে,তাই রেডি হচ্ছে।
ফোনটা সেই কখন থেকে বেজেই চলছে কিন্তু ঋতু ফোন তুলছেই না।অপর পাশের ব্যক্তি ও মনে হয় পণ করেছে ফোন পিক না করা অব্দি দিয়েই যাবে।লোকটার ধৈর্য আছে বলতে হবে।
এক প্রকার বিরক্ত হয়েই ফোনটা রিসিভ করলো ঋতু,,
রিসিভ করে কানের কাছে ধরে রেখেছে কথা বলছে না।
–আমি নিচে গাড়িতে অপেক্ষা করছি,তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো।বলেই উত্তরের অপেক্ষা না করেই লাইন টা কেটে দিল।
আর কেউ নয়,কলটা শুভ্রই দিয়েছিল।
,,
বেলকনি দিয়ে উকি মেরে দেখলাম লুচু,শয়তান টা গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে আমার রুমের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমাকে দেখতে পেয়ে উনার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠল।
(চলব)