“একটি মৃত্যু এবং একটি বিয়ে”
৫
প্রমা আর হিমুর বিয়ের আর বেশিদিন বাকি নেই। একমাসেরও কম সময় হাতে। দুপক্ষের সবাই বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে মহা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিয়ের শপিং থেকে শুরু করে কেটারিং, হল ভাড়া করা, ভিডিও-ফটোগ্রাফার, বিয়ের কার্ড অর্ডার, বিয়ের স্টেজ, ফুলের গয়না, বিউটি পার্লারে এ্যাপয়েন্টমেন্ট …..হাজারো কাজের লিস্ট আর শেষ হতে চায় না।
হিমু তার খালার সাথে কোলকাতায় যাওয়ার প্ল্যান করছে বিয়ের শপিংএর জন্য। তারা প্রমাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল সাথে করে কিন্তু প্রমার মা রাজি হন নি।
বিয়ের আগে এতো বাড়তি মেলামেশা তিনি পছন্দ করেন না। তাদের মধ্যবিত্ত রক্ষণশীল পরিবারে বিয়ের আগে মেয়ের শশুরবাড়ির সাথে এতো ঘনঘন দেখা সাক্ষাতের ব্যাপারটা খুব একটা ভালো চোখে দেখা হয় না।
অবশ্য আজকাল হিমু যে প্রায়ই প্রমাকে ফোনে/টেক্সটে যোগাযোগ করছে তা তিনি ঠিকই বুঝতে পারেন। তার মেয়েটা ভীষণরকম লাজুক স্বভাবের। তাই হয়তো সে মায়ের সাথে এসব বিষয়ে কথা শেয়ার করতে পারে না। মিসেস সায়রা বানুও না দেখার ভান করে থাকেন।
মনে মনে অবশ্য তিনি খুশিই হন।
থাকুক না, ওরা সুন্দর মতো সময় নিয়ে একে অন্যকে চিনুক, জানুক।
বিয়ের আগের এই সময়টা সবচেয়ে মধুর!
তার খুব জানতে ইচ্ছে হয়, ওরা কি নিয়ে এতো কথা বলে?
আজ প্রমার বড়ো খালা আর বড় মামী সহ পরিবারের বিশিষ্ট মুরুব্বিরা আর কাজিনদের নিয়ে সবাই মিলে বিয়ের শপিংএ যাওয়ার প্ল্যান।
প্রমার খালা ঢাকার দোকানপাট যেমন চিনেন, ঠিক তেমন সেখানে দরদস্তুর করার ব্যাপারেও তিনি অত্যন্ত অভিজ্ঞ।
শাড়ি কাপড় আর গয়নার বিষয়ে পিএইটডি লেভেলের দক্ষতা রাখেন তিনি। বেশিরভাগ দোকানের বিক্রেতা তাকে চিনেন আর সমীহ করেন।
সবাই মিলে ওরা প্রথমে গেল মিরপুর বেনারসী পল্লীতে।সেখানে বাজেট ফ্রেন্ডলি কিছু শাড়ি কেনা হলো।
—প্রমা বিয়েতে কি পরবি? শাড়ি না লেহেঙ্গা?
খালা জিগেস করলো।
—শাড়িই পরতে ইচ্ছে হচ্ছে খালামনি। কিন্তু শশুরবাড়ির মানুষ যা দেয় সেটাই হয়তো পরতে হবে , তাই না?
—না না আপুমনি, আমি তোমার ফ্যাশন ডিজাইনার। তুমি একটা লাইট কালারের লেহেঙ্গা পরবে…. একদম আলিয়া ভাটের মতো!
—আমি লেহেঙ্গা পরতে পারবো না রে তনু। আমাকে একটুকুও মানাবে না। তার উপর লাইট কালার? আমি কি বলিউডের নায়িকা ?
—কেন আজকাল সবাই কি সুন্দর ডিজাইনের লেহেঙ্গা পরে, দ্যাখো না? তোমাকে অবশ্যই মানাবে। তোমার মতো সুন্দর চেহারা আর ছিপছিপে লম্বা ফিগারের ক’টা মেয়ে আছে এই দেশে, বলো তো? নিজেকে কেন এতো আন্ডারএস্টিমেট করছো?
—থাক আমরা মেয়েপক্ষ প্রমাকে শাড়িই দিবো, বউভাতের অনুষ্ঠানে পরবে। শাড়িতে ওকে অনেক বেশি গর্জিয়াস লাগবে। আমরা বাংলাদেশিরা কেন যে এতো কথায় কথায় লেহেঙ্গা পরি?
প্রমার মাও লেহেঙ্গা আইডিয়া পছন্দ করেন না।
—ঠিক আছে আপু, তাহলে একটা লাইট কালারের কাতান বেনারসি নাও তাহলে। একদম ভিনটেজ স্টাইলের। তোমার শাশুড়ির আংটিটার মতো।
—হ্যাঁ হ্যাঁ সেটাই দ্যাখ।
অনেক দোকান ঘুরে শেষ পর্যন্ত একটা হাল্কা গোলাপী রঙের মিরপুর কাতান বেনারসি শাড়ি পছন্দ হলো সবার। এই শাড়িটা প্রমার নিজেরও খুব ভালো লেগেছে। তার গায়ের রঙটা একটু ময়লা বলে হাল্কা রঙ পরতে চায় না। কিন্তু গায়ে ধরার পর মনে হলো শাড়িটা তাকে অসম্ভব মানাবে।
—আপুমনি, এই শাড়ি পরনে তোমাকে একদম দীপিকার মতো লাগবে!
তনিমা আনন্দে উচ্ছসিত হয়ে বললো।
শাড়ির দাম দেখে তো সবার মন খারাপ হয়ে গেল। এই শাড়ি তাদের বাজেটের বাইরে।
বড়োখালা দোকানের ম্যানেজারের সাথে গোপনে ফিসফিস করে কি যে বললেন, আর কিছুক্ষণ পর ম্যাজিকের মতো দোকানদার শাড়িটা সুন্দরমতো প্যাক করে দিলো অর্ধেকেরও কম দামে। বড়োখালার চোখেমুখে একটা দিগ্বিজয়ের পরিতৃপ্ত হাসি !
—খালামনি, তুমি কি করে পারো বলো তো?
প্রমা দোকান থেকে বের হয়ে জিগেস করলো।
—আরে, বার্গেইন করাটাও কিন্তু একটা আর্ট।
—আমার যে কি লজ্জা করছিল!
—এতে লজ্জার কি আছে রে বোকা? এরা ইচ্ছোমতো দু-তিন ডবল দাম চাইবে আর বলবে ফিক্সড প্রাইস! আমরা কি আর শাড়ি চিনি না?
—ঠিক বলেছো আপা,এজন্যই তো তোমার সাথে শপিংএ যাই।আমি তো আবার এই আর্টে পুরোপুরি ফেল।
প্রমার মা হাসতে হাসতে বললেন।
—তুই আর তোর মেয়ে… তোদের লজ্জা আর বিনয় তোরা নিয়ে বসে থাক।
এরপর দুই গাড়িতে চাপাচাপি করে সবাই ঢাকার হকার্স মার্কেটের দিকে রওয়ানা হলো। সেখানে গিয়ে তারা কয়েকটি গাদোয়াল আর সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক শাড়ি কিনলো প্রমার শশুড়বাড়ির মানুষের জন্য।
গাউছিয়া মার্কেট থেকে প্রমার জন্য কয়েকটা গর্জিয়াস থ্রি-পিস কিনে সেলাই করতে দেয়া হলো। এরপর সবাই মিলে রাস্তার উল্টো দিকে নিউ মার্কেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো।
সবাই মিলে হৈ হুল্লোড় করে বেড়াতে খুব ভালো লাগছিল প্রমার। কেমন যেন একটা ঈদ ঈদ আনন্দ আছে এতে ! অনেকদিন পর পরিবারের সবাই একত্রে এরকম বের হওয়া হলো।
আর মাত্র একমাস পর সে অন্য বাড়িতে চলে যাবে। বিষাদের ছায়া নেমে এসে মনটা কেমন ভার করে দিলো হঠাৎ করে।
~~~##~~~
—গুড মর্নিং! কেমন আছো আমার বিউটিফুল ফিয়ান্সে ?
হিমু সাত সকালে টেক্সট পাঠিয়েছে।আজকাল প্রায় প্রতিদিনই সকালবেলা সে টেক্সট করে প্রমার ঘুম ভাঙায়।
তার আর তর সইছে না। কবে প্রমাকে তাদের বাড়িতে বউ সাজিয়ে নিয়ে আসবে সেদিনের প্রতীক্ষায় দিন গুনছে সে।
—গুড মর্নিং ডক্টর ! ভালো ঘুমিয়েছিলেন তো আপনি?
প্রমাও মজা করে টেক্সটের উত্তর দেয়।
—নাহ। কি করে আর ভালো ঘুমাই ? তুমি তো পাশে নেই আমার। সকাল সকাল হিমুর টেক্সট পড়ে লজ্জায় প্রমার গাল আরক্ত হয়ে উঠলো।
—প্রমা, তুমি কি আমাকে মিস করো?
—সেটা জানি না এখনও। হয়তো ভবিষ্যতে মিস করবো।
—এ কথার মানে কি ?
—এর মানে আমি ধীরে ধীরে আপনাকে চেনার চেষ্টা করছি।
—হুম। তাহলে বলো এখন পর্যন্ত আমার ব্যাপারে তোমার কি
ধারণা ? প্লিজ বি অনেস্ট !
—আমার ধারণা আপনি খুব সাদা মনের একজন মানুষ। কোনরকম প্যাঁচ নেই আপনার মনে। আর….
—-আর কি ?
—আর… আপনি খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন। আমার শুনতে ভীষণ ভালো লাগে।
—সত্যি ? তুমি চাইলে আমি কিন্তু এক্ষুনি চলে আসতে পারি।সামনাসামনি কথা বলি ?
—না না। এখন তো আমি স্কুলে যাবো। আজ আমি ভীষণ ব্যস্ত থাকবো। আমাদের স্কুলের বাচ্চাদের ফাইনাল পরীক্ষার রেজাল্ট বের হবে।
—ইস্! তুমি কেন যে এতো আনরোমান্টিক প্রমা ? আচ্ছা ঠিক আছে, চলো তাহলে কাল অথবা পরশু ডিনারে যাই !
—আচ্ছা ! আমি পরে কনফার্ম করে আবার টেক্সট করবো। এখন রেডি হয়ে খুব দ্রুত বের হয়ে যেতে হবে আমার।
—নো প্রবলেম! তুমি কাজে যাও তাহলে! আমারও হাসপাতালে সকালের রাউন্ড যেতে হবে। বাই মাই সুইট ফিয়ান্সে!
—বাই।
টেক্সট পাঠানোর পরও প্রমার মুখে স্মিত হাসির ছোঁয়া লেগে রইলো।
আজ দিনটা ভালো কাটবে।
মর্নিং শো’জ দ্য ডে !
~~~##~~~
হঠাৎ একটা দুঃস্বপ্ন দেখে গভীর রাতে প্রমার ঘুম ভেঙে গেল।
পুরোটা স্বপ্ন এতোই প্রাঞ্জল যে তা চোখের সামনে বড় পর্দার সিনেমার মতোই ভাসছে। একেই মনে হয় ইংরেজীতে বলে ভিভিড ড্রীম।
স্বপ্নে সে আর হিমু বিয়ের পর হানিমুনে মালদ্বীপে বেড়াতে গিয়েছে। সমুদ্রের উপর ছোট ছোট কুঁড়েঘরের মতো আলাদা হোটেল রুম আর বারান্দা। বিভিন্ন শেডের নীল রঙের স্বচ্ছ সমুদ্রের পানি আর মাইলের পর মাইল সাদা বালুর সৈকত।
এই অপার্থিব স্বর্গরাজ্যে তারা দুজন যেন হঠাৎ করেই মর্ত্যলোক থেকে ছিটকে এসে পড়েছে।
সমুদ্রের ধার ঘেসে হাটবার সময় হঠাৎ হিমু একটা পাথরে পা পিছলে পড়ে গেল।আর ঠিক তখনি একটা বড় ঢেউ এসে হিমুকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল একেবারে সমুদ্রের মধ্যিখানে।
প্রমা সাঁতার জানে না। সে চিৎকার করে কাঁদছে আর সাহায্য চাইছে। কিন্তু নির্জন দ্বীপে আশপাশে কাউকে পাওয়া গেল না।
ঘুমের মাঝেই প্রমা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিল। ঘুম ভেঙে দেখে তার দুচোখ বেয়ে অঝোর ধারায় পানি ঝরছে।
স্বপ্ন কখনও এতোটা বাস্তবের মতো রূপ নিতে পারে প্রমা আগে কখনও বুঝতে পারে নি। উত্তেজনায় এখনও তার বুক বুক ধড়ফড় করছে !
এ কয়েকদিনে হিমুর জন্য সূক্ষ একটা মায়া জন্মে গেছে তার হৃদয়ের গভীরে।
দুঃস্বপ্ন দেখার পর থেকে হিমুকে পুরোপুরিভাবে পাওয়ার আগেই তাকে হারানোর ভয় ঢুকে গেল প্রমার মনে।
প্রতিদিন রাতেই প্রমা কিছু না কিছু অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাচ্ছে।
যেদিন প্রথম হিমু তার পরিবারের সাথে ওকে দেখতে এলো, সেই রাত থেকেই একে একে অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
এগুলো কি আসলেও বাস্তবে হচ্ছে ?
না কি সবই তার মনের বিভ্রম?
আর এই ঘটনাগুলো কি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ? না কি একে অপরের সাথে বিশেষ যোগসূত্র আছে?
এসব রহস্যের কোন কুল কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না প্রমা।
সে একবার ভাবছে হয়তো বিয়ে জড়িত সকল আনুষ্ঠানিকতায় তার মস্তিষ্ক অতিরিক্তরকম উত্তেজিত হয়ে আছে যার কারণে মনের আয়নায় কিছু বিচিত্র ছায়া পড়েছে।
কিন্তু ঘটনাগুলো যদি সত্যিকার অর্থে বাস্তবে ঘটে থাকে তাহলে তার তো ভীত সন্ত্রস্ত হওয়ার কথা!
কিন্তু সেরকম কোন ভয়ের অনুভূতি হচ্ছে না কেন প্রমার ?
পুরো বিষয়টার মাঝে রয়েছে প্রচন্ড অস্বাভাবিকতা।
কেউ আবার তাকে গোপনে ফলো করছে না তো?
এতোসব ভেবে ভেবে ইদানীং প্রমার ব্রেইনে বেশ চাপ পড়ছে। প্রতিরাতে প্রায় একই সময় তার ঘুম ভেঙে যাচ্ছে!
সেটাও কি কাকতালীয়?
নাহ্। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
প্রমার হঠাৎ মনে হলো হিমু নিজেও তো একজন ডাক্তার।
তাকে কি প্রমার এসব অদ্ভুত ঘটনাগুলো জানানো উচিত ?
—না থাক।এতে আবার হিমু যদি তাকে পাগল ভাবে। তাকে এসব ব্যাপার আগ বাড়িয়ে না জানানোই ভালো এখন।
এখন যা করা উচিত একজন নিউট্রাল অচেনা ডাক্তারের খোঁজ বের করতে হবে।
প্রমা ঠিক করলো সে তার স্কুলের বন্ধু রুমানার কাছে আগামীকাল জিগেস করে রেফারেন্স নিবে। রুমানা এখন গাইনীতে ট্রেনিং নিচ্ছে।সে নিশ্চয়ই অনেক মনোরোগ বিশেষজ্ঞকে চেনে। তাদের মাঝে একজনের সাথে প্রমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেই হবে।
~~~#~~~
—রুমানা, দোস্ত সময় পেলে একটা ফোন করিস। একটু বিশেষ দরকার ছিল রে।
প্রমা টেক্সট করে জানালো। সংগে সংগেই রুমানার টেক্সট রিপ্লাই এলো।
—ওকে দোস্ত, আমি আজ রাতেই ফোন দিচ্ছি।এখন একটু ব্যস্ত,পেশেন্ট রাউন্ডে আছি।
—নো প্রবলেম রে।পরেই ফোন দিস।
প্রমা কাজে ভীষণরকম ব্যস্ত হয়ে পড়লো। বাকিদিনটা কি করে যে কেটে গেল!
ঘরে ফিরে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে রইলো কিছুক্ষণ।
মাগরিবের আজান দিচ্ছে।
প্রমার মা মেয়েকে নামাজের জন্য ডাকতে এসে দেখেন সে সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আহারে মেয়েটাকে দেখে তার ভীষণ মায়া হলো।
কয়েকদিন পর তার বিয়ে। দেখতে দেখতে চোখের সামনে মেয়েটা কখন বড় হয়ে গেল?
মিসেস সায়রা বানুর চোখের কোণে দু ফোঁটা পানি ছলকে পড়লো।
~~~##~~~
অনেকক্ষণ ধরে ফোনের রিং বাজছে। মনে হচ্ছে খুব দূর থেকে রেলগাড়ির শব্দ ধীরে ধীরে কাছে ঘনিয়ে আসছে।
চোখ খুলে প্রমা দেখে ঘরে ঘন অন্ধকার। সে একা একা বিছানায় শুয়ে।
ক’টা বাজে এখন?
সে কতক্ষণ ঘুমিয়েছে?
আবারও মোবাইলের রিঙ বাজছে। প্রমা হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো রুমানা কল করছে। সে তাড়াহুড়া করে ফোন ধরলো।
—হ্যালো।
—হ্যালো প্রমা! তুই কি এই অসময়ে ঘুমাচ্ছিস না কি?
—হুম অনেক টায়ার্ড ছিলাম রে। কাজ থেকে এসে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।
—তুই বলেছিলি কল করতে। বল, আর্জেন্ট কিছু ছিল না কি?
—হুম। আজকাল আমার ভালো ঘুম হচ্ছে না, প্রতিরাতেই ঘুম ভেঙে যাচ্ছে।
—কেন, কাজে বেশি প্রেশার ?
—না নতুন কিছু না। কাজে তো সব সময়ই প্রেশার।
—তাহলে ?
—ওহ্! একটা খবর বলা হয়নি তোদের। আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
—ওয়াও তাই না কি ? কনগ্র্যাটস দোস্ত !
—থ্যাংক ইউ! ছেলে আবার তোর মতোই ডাক্তার।
—সত্যি ? কোন মেডিকেলের, কত ব্যাচ ? কোথায় কাজ করে?
—আরে একটু নিশ্বাস নে! কোন ব্যাচ আমি নিজেও জানি না। তার নাম হেমায়েত হোসেন হিমু। বারডেমে কাজ করে। চিনিস ?
—হিমু ভাই ? চিনি তো তাকে। ও মাই গড, সাচ আ স্মল ওয়ার্ল্ড !
—সত্যিই চিনিস? বল না, কেমন সে?
—হিমু ভাই খুবই সহজ সরল ভালো একজন মানুষ। তবে তার একটা খুব কষ্টের পাস্ট আছে।
—কি পাস্ট ? আগে কোন গার্লফ্রেন্ড ছিল?
—আরে না। যতোদূর জানি তার মা সুইসাইড করে মারা গিয়েছিলেন যখন হিমু ভাই অনেক ছোট।
—সুইসাইড ? কেন করলো ?
—সেটা তো জানি না।
(চলবে)
–বিপাশা বাশার