#গল্পঃ Journey by Relation
#পর্বঃ ১
#লেখাঃ কামরুল ইসলাম ইথান
ট্রেন ছাড়ার অনেক আগেই নিজের সিটে গিয়ে বসে আছি। কিছুই ভালো লাগছে না। ফোনটা বের করে নিজের লেখা পুরেনো গল্পগুলো পড়ছিলাম,
– এই গল্পটা আমিও পড়েছি অনেক সুন্দর।
কথাটা শুনে তাকিয়ে দেখলাম পাশের সিটে বসা একটা মেয়ে কথা বলছে। আমি এতটায় ডিপ্রেশনের মধ্যে ছিলাম যে, মেয়েটা কখন আমার পাশের সিটে এসে বসেছে আর ট্রেন চলতে শুরু করেছে সেটাই খেয়াল করিনি। মেয়েটার কথার জবাবে শুধু মুচকি হাসলাম। আসলে আমার কোনো কথা বলতে ইচ্ছা করছিলো না।
– ভাইয়া এই গল্পটাও আমি পড়েছি। এটাও অনেক ভালো।
হায় আল্লাহ! আমাকে একটু ধোর্য দাও। আবার কিছুক্ষণ পর আরেকটা গল্প দেখে বলল, ভাইয়া এটাও… তখনি হাতের ইশারা দিয়ে থামিয়ে বললাম, পড়েছেন? তাইতো! মেয়েটা মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল, হুম আপনি বুঝতে পেরেছেন।
– হুম বুঝতে পেরেছি বাট এই গল্পগুলো আমিই লিখেছি।
একটু বিরক্ত হয়েই কথাটা বলে ফেললাম। মেয়েটি আমার কথা শুনে বলল,
– ও তাহলে আপনিই ইথান?
আমি ভেবেছিলাম কথা আর বলবে না কিন্তু এখন আরো পেচাল পাড়তে শুরু করেছে। কি আর করার দোষটাতো আমারই।
– জ্বি, আমিই ইথান।
মেয়েটি অবাক কন্ঠে বলল,
– আমি আপনার সব গল্পই পড়ি। ভেবেছিলাম আপনি অনেক স্মার্ট হবেন। এখন তো দেখছি আপনি পুরাই ক্ষ্যাত।
– আমি কি আপনার কাছে জানতে চেয়েছি আমি ক্ষ্যাত নাকি স্মার্ট?
– আরে রেগে যাচ্ছেন কেন? এমনিতেই কত্ত গরম তার উপর যদি আপনি রেগে যান, তাহলে তো আরো গরম লাগবে।
আমি বিরক্ত কন্ঠে বললাম,
– আপনি কথা না বলে চুপচাপ থাকেন। তাহলেই আমি খুশি হবো।
মেয়েটা আমার কথা শুনে একদম চুপ হয়ে গেল। যাক এযাত্রাই বেচে গেলাম। অনেকক্ষণ হয়ে গেল মেয়েটা কোনো কথা বলছে না। এদিকে গলা শুকিয়ে পানির জন্য পুরো কাঠ হয়ে আসছে। মেয়েটার কাছে বোতল ভরা পানি রয়েছে কিন্তু চাইতেও পারছি না।
হঠাৎ মেয়েটি পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বলল, নেন পানি খান। আমি কিছু না ভেবেই বোতলটা এক থাবাই হাতে নিয়ে অর্ধেক খালি করে ফেললাম। মেয়েটা অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। একটু লজ্জা পেয়ে গেলাম। পানির বোতলটা ফেরত দিয়ে দিলাম আর ভাবলাম, লজ্জা নারীর ভূষণ আমার না। হঠাৎ মেয়েটা বলল,
– ভাইয়া একটা কথা বলি?
– জ্বি বলুন।
– ভাইয়া আপনার গল্প গুলো অনেক সুন্দর। আমি কিন্তু আপনার সব গল্পই পড়ি।
– হুম হয়তো।
– ভাইয়া আপনার কি মন খারাপ?
– না, কেনো? আচ্ছা যাই হোক,নাম কি আপনার?
– সুইটি।
– বাহ চমৎকার নাম। আসলে নামটা খুবই সুন্দর, যেমনটা আপনি। তা কোথায় যাবেন?
মেয়েটি আস্তে করে উত্তর দিল,
– খুলনা যাব। আপনি কোথায় যাবেন?
– আমিও খুলনা যাব।
বলেই দুজনে চুপটি মেরে গেলাম। ট্রেন তার আপন গতিতে গন্তব্য স্থানের লক্ষে ছুটে চলেছে। উদাসীন নয়নে বাহিরের গ্রাম বাংলার ছুটে চলা প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। হঠাৎ মেয়েটি বলে উঠল,
– আপনার কি মন খারাপ?
– নাহ, কেন বলুনতো?
– আপনি কেমন উদাসীন হয়ে আছেন তাই বললাম।
– সত্যি বলতে আজকে আমার মনটা খুবই খারাপ। কিছুই ভালো লাগছে না।
– মন খারাপের কারণটা জানতে পারি?
– সে অনেক লম্বা কাহিনী।
– আপনি বলুন, আমি শোনার জন্য প্রস্তুত আছি। জার্নি পথে আপনার মন খারাপের কারণটা জানতে পারলে খুশি হতাম।
– ওকে বরিং ফিল হলে বলবেন?
– আগে শুরু তো করেন।
আজ থেকে তিন বছর আগের কথা। আমি তখন খুলনা থেকেই পড়াশুনো করতাম। আমার সাথেই তায়্যিবা নামের একটা মেয়ে পড়ত। দেখতে যেমন সুন্দরী ব্যবহারও তেমনি অমায়িক। প্রথমে ভালোলাগা পরে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। আসলে আমি এইসব রিলেশনে বিশ্বাসী ছিলাম না। তাই ওর রেসপন্স পাওয়ার সাথে সাথেই তায়্যিবার কথা আমার ফ্যামিলিতে জানিয়ে দিই। তায়্যিবা কেউ জানাতে বলেছিলাম কিন্তু মেয়ে তো তাই একটু ভয় পাচ্ছিল। একদিন আমি গিয়ে ওর বাবা-মা কে সরাসরি বলি,
– দেখুন আঙ্কেল, আপনার মেয়েকে আমার ভালো লেগেছে। মনে হয় আমাকেও আপনার মেয়ে পছন্দ করে। আপনাদের কথা ভেবে ওর ভালোবাসার কথা এখনো আমাকে বলেওনি ভালো করে। আপনার মেয়ে যথষ্ট বুদ্ধিমতী এবং বুঝসমপন্ন। অন্য মেয়েদের থেকে একদম আলাদা। যদি আলাদা না হতো তাহলে আমার সাথে রিলেশনশিপে জড়িয়ে পড়ত। কিন্তু ও সেটা করেনি। ও আপনাদের কথা চিন্তা করেছে। আমি তায়্যিবার কথা আমার মা বাবা কে জানিয়ে দিয়েছি। তারা তায়্যিবাকে দেখতে চেয়েছে এবং আপনাদের সাথে কথা বলতে চেয়েছে।
#চলবে
বিঃদ্রঃ গল্পের মাঝে অনেক শব্দগত ভুল থাকতে পারে, কিছু ভুল টাইপিংগত আর কিছু ভুল শিক্ষাগত তাই সবাই ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
__________ “Journey by Relation” গল্পের প্রথম পর্বটি কেমন হয়েছে অবশ্যই কমেন্ট করে আপনার মতামত জানিয়ে দিবেন নিচের কমেন্ট বক্সে আর ভালো লাগলে লাইক দিতে ভুলবেন না।