ভ্যাম্পায়ার ওয়াইফ সিজন ২ পর্ব__৩,৪

ভ্যাম্পায়ার ওয়াইফ সিজন ২
পর্ব__৩,৪
লেখা :সাব্বির
পর্ব__৩

আর চোখ মেলতেই আমি
হতবাক হয়ে গেলাম।
কারন আমি দুচোখে কিছুই
দেখতে পাচ্ছি না।
একদম ঘুটঘুটে অন্ধকারে
চারপাশ ঢেকে আছে।
নিজের হাতটা পর্যন্ত দেখা
যাচ্ছে না।
এ আবার কোন বিপদে
পড়লাম।
ছিলাম এক স্থানে আর চলে
এলাম আরেক স্থানে।
.
.
হাতটা এদিক ওদিক করতেই
হাতে পিছলা কোনো কিছুর
অস্তিত্ব টের পেলাম।
তার মানে এই খানে আমি
ছাড়া অন্য কেউ আছে।
ভাবতেই খুশি হলাম।
কারন এই অন্ধকারের থেকে
বের হওয়ার কোনো উপায়
হয়তো তার জানা থাকতে
পারে।
.
.
মাটিতে হাতড়ে হাতড়ে
কোনো মতে এই ঘুটঘুটে
অন্ধকারে উঠে দাড়ালাম।
তারপরে যেদিক ফিরে
দাড়িয়ে ছিলাম অনুমান
করে তার উল্টো দিকে ঘুরে
দাড়ালাম।
তবে এদিকে না ফেরাটাই
বোধ হয় ভালো ছিলো।
কারন এদিকে ফিরে যা
দেখেছি তাতে আমার হাত
পা সব ঠান্ডা হয়ে যেতে
লাগলো।
আর সাথে সাথেই আমার
পাশে থাকা সেই
স্যাতস্যাতে প্রানিটা নড়ে
চড়ে উঠলো।
তারমানে প্রাণীটা
জীবন্ত।
ওহ হ্যা আসলে আমি যা
দেখছি
“সেটা হয়ত কোনো জীবন্ত
প্রানীই হবে”।
.
কারন……
…..
প্রাণীটার চোখটা প্রায়
আনুমানিক ৩০ ইঞ্চি বড়।
আর সে তার ওই বড় বড় চোখ
দিয়ে এক দৃষ্টিতে আমার
দিকে তাকিয়ে আছে।
ভয়ে আমার হৃদপিন্ড শুকিয়ে
যাওয়ার মতো অবস্থা।
একটার পরে একটা বিপদ
কিছুতেই আমার পিছন
ছাড়ছে না।
কি করবো ভেবে উঠতে
পারছি না।
একে তো এত অন্ধকার …
তার উপর আবার এই ভয়ানক
অদ্ভুত প্রানী।
ওদিকে ঘুমটাও ভাঙছে না।
এবারই শেষ।
একবার যদি কোনো মতে ঘুম
ভাঙে তবে আর কখনোই
ঘুমাবো না।
.
.
কিছুক্ষন পরে খেয়াল
করলাম…
.
সেই অদ্ভুত বড় চোখ ওয়ালা
প্রাণীটা আমার দিকে
এগিয়ে আসছে।
এটা বুঝতে পারলাম এজন্য
যে…
চোখ দুটো আসতে আসতে
আমার দিকে এগিয়ে আসছে।
আমার হাটু কাপাকাপি শুরু
হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।
এটা কি প্রানী সেটাই
এখনো জানতে পারলাম না।
আর যে বড় চোখ
না জানি এর দেহটা কত বড়
হবে।
এসব ভাবতে ভাবতেই
দেখি সেই প্রাণীটা আমার
একদম কাছে চলে এসেছে।
আমি দিক বিদিক জ্ঞান
হারিয়ে দৌড় লাগালাম।
তবে এই অন্ধকারে দৌড়ানো
আদৌ সম্ভব না।
তাই হোচট খেয়ে মাটিতে
পরে গেলাম।
আর পিছনে তাকিয়ে দেখি
প্রাণীটা ক্ষিপ্র গতিতে
তার মাথা আমার দিকে
এগিয়ে আনছে।
কারন চোখ দুটোর এগিয়ে
আসার গতি ভয়ানক রকম
বেশি।
আমি ভয়ে দুহাত
দিয়ে নিজের মাথা চেপে
ধরে একটা চিৎকার দিলাম।
.
.
.
ধড়ফড়িয়ে বিছানা থেকে
লাফ দিয়ে উঠলাম।
উফ বাবা কি ভয়ংকর
স্বপ্নটাই না দেখলাম।
টেবিল থেকে পানির গ্লাস
তুলে এক নিশ্বাসে গ্লাসটা
খালি
করে ফেললাম।
তারপর গ্লাস টেবিলে রেখে
হাপাতে লাগলাম।
আচমকা নিজের শরীরের
দিকে চোখ যেতেই দেখি
আমার শরীরে অসংখ্য নখের
আচড়ের দাগ। হতবাক হয়ে
বিছানা ছেড়ে
উঠে আয়নার সামনে গিয়ে
দাড়াতেই দেখি মুখ বাদে
হাত পা আর বুকে অনেক গুলো
নখের আচড়ের দাগে লাল
হয়ে আছে।
.
.
জানালা দিয়ে ঠান্ডা
বাতাস এসে জানালার
পর্দাটা নড়িয়ে দিয়ে
গেলো।
আমি জানালার দিকে
তাকাতেই দেখি কে যেনো
ওখানে
দাড়িয়ে আছে।
তবে এখন আর এটা দেখে
ওতটা ভয় লাগছে না। কারন
এইমাত্র যে স্বপ্ন দেখলাম
তারপরেও ভয়টা
কমে যাওয়াই স্বাভাবিক।
আমি আস্তে আস্তে পা
টিপে জানালার দিকে
এগুতে লাগলাম।
বাহিরে রাতের শেষ ছোয়া
এখনো লেগে আছে।
ঘড়িতে এখন হয়ত
৩টা অথবা ৪টা বাজে।
আমি জানালার
কাছাকাছি চলে যাওয়ার
পরেও সেই ছায়ামূর্তির
কোনো
নড়াচড়ার লক্ষন দেখতে
পেলাম না।
কে হতে পারে
এটা।
হয়তবা চোর হবে।
এজন্য সে আমার তার দিকে
এগিয়ে যাওয়ার গতি লক্ষ
করে নি।
.
জানালার কাছাকাছি
গিয়ে দ্রুত গতিতে পর্দা
ধরে টান
মারতেই দেখি …
.
.
জানালার বাহিরে একটা
লোক আমার ঘরের দিকে
পিঠ করে
বাহিরের দিকে তাকিয়ে
আছে।
আর চট করে পর্দা
সড়ানোতে যে শব্দ হয়েছে
তাতে লোকটার কোনো
নড়চড় খেয়াল করলাম না।
.
ওদিকে লোকটা শীতের
কাপড় পরে আছে আর মাথায়
জ্যাকেটের টুপি পড়ে আছে
বলে তার মুখ বা দেহ
কোনটাই দেখা যাচ্ছে না।
আমি সাহস করে জানালা
দিয়ে হাত বাড়িয়ে
লোকটার গায়ে হাত দিতে
গেলাম।
.
.
ওমনিই লোকটা পিছনে
ফিরে আমার হাত চেপে
ধরলো।
আমি তার দ্রুত গতিতে এমন
কাজ দেখে ভয় পেয়ে
গেলাম। তারপর লোকটা
মাথা থেকে টুপি নামাতেই
দেখি
.
..
.
এটা
“ভ্যাম্পায়ার রুশা”।
….
_রুশা তু.তুমি (আমি)
-হা হা হা বলেছিলাম না
আমি ফিরে আসবো।
তোর ওপর প্রতিশোধ নিতে
আমি ফিরে আসবো।
হা হা হা
দেখ আমি আবার ফিরে
এসেছি।
এবার তোকে পরপারে
পাঠিয়ে দিয়ে তবেই আমি
ফিরে যাবো (রুশা)
_কি.কিসের প্রতিশোধ।
আমি তো তোমার কোনো
ক্ষতি করি নি।
বা তোমাদের অস্তিত্বের
কথা কাউকে বলেও দেই নি।
তাহলে তুমি কেনো আমাকে
মারতে চাইছো (আমি) –
রক্ত..আমার রক্তের নেশা
উঠেছে।
রক্ত চাই রক্ত চাই (রুশা)
.
.
কথা গুলো বলেই রুশা আমার
হাত ছেড়ে দিয়ে অদৃশ্য হয়ে
গেলো।
আমি অবাক হয়ে গেলাম।
আচমকা রুশা কোথায় চলে
গেলো।
চটপট জানালা দিয়ে
হাতটা ঘরে এনে পিছনে
ফিরতেই দেখি রুশা আমার
পিছনেই দাড়িয়ে আছে।
আমি ভয়ে পিছলে পড়ে
গেলাম।
আর রুশা সেটা
দেখে হা হা করে হেসে
উঠলো।
-কিরে এইটুকুতেই ভয় পেয়ে
গেলি।
উহু এত দ্রুত ভয় পেলে তো
চলবে না।
এখনো তো অনেক
খেলাই বাকি (রুশা)
.
এসব কথা বলে রুশা আমার
দিকে এগিয়ে আসতে
লাগলো।
আর আমি কনুইতে ভর দিয়ে
পিছনে সড়তে লাগলাম।
তখন হাতের কাছে রুমে
থাকা বড় একটা ফুলদানি
পেলাম। কোনোমতে হাতে
ভর দিয়ে
উঠেই সেটা দিয়ে
রুশার মাথা বরাবর একটা
বাড়ি দিলাম।
তবে তাতে কোনো কাজ
হলো না। কারন ফুলদানিটা
রুশার মাথার মাঝ দিয়েই
চলে গেলো।
যেন রুশার দেহটা ছায়া
দিয়ে তৈরি করা।
আমি রুশাকে আক্রমন করাতে
সে আরো রেগে গেলো।
রুশা হাত দিয়ে আমার গলা
ধরে উপরে উচু করে দুরে ছুড়ে
মারলো।
আমি দেওয়ালের
সাথে গিয়ে বারি খেলাম।
দেওয়ালে বারি খেয়ে
আমার মাথায় আঘাত লেগে
মাথা ফেটে গেলো।
আর সেখান থেকে রক্ত বের
হতে লাগলো।
রুশা আবার আমার
কাছে এগিয়ে যেই আমাকে
ধরতে গেলো ওমনি মনে
হলো….
….
কোনো কিছু যেন রুশাকে
ধাক্কা দিয়ে ফেলে
দিলো।
তখন রুশা অবাক
চোখে আমার দিকে
তাকিয়ে বললো
_না এটা হতে পারে না।
এটা কখনোই সম্ভব না।(রুশা) –
মানে কী বলতে চাও তুমি
(আমি) _তুই ওই লকেটটা
কোথায় পেয়েছিস ((আমার
গলার দিকে আঙুল
দিয়ে দেখালো রুশা))
আমি নিজের গলার দিকে
তাকাতেই দেখি সত্যই
আমার গলাম একটা সবুজ লকেট
ঝুলে আছে।
কিন্তু আমি কখনোই লকেট
পড়ি না। তবে এই লকেটটা
কোথা থেকে এলো ভাবতেই
মনে পড়লো
এটা মেয়ে দেখতে যাওয়ার
সময় পাত্রীপক্ষ আমাকে
উপহার দিয়েছিলো।
আর আমি পড়তে না চাইলেও
মা আমাকে জোড় করে
পড়িয়ে দিয়েছিলো।
_বল এই লকেট
তোকে কে দিয়েছে (রুশা)
– কেনো (আমি)
_ওটা আমার কাছে ফেরত দে
(রুশা) – না না
এই লকেট দেওয়া যাবে না
(আমি)
_ দে বলছি।
ওটা আমাকে দিলে আমি
তোকে ছেড়ে দেবো।
দে ওটা আমাকে
ফেরত দে (রুশা)
.
.
এই লকেটটা
কি এমন লকেট যে এটা ফেরত
দিলে ও আমাকে ছেড়ে
দেবে।
যা হয় হোক।
এটা ফেরত দিলে যদি প্রাণটা
রক্ষা পায় তবে এটা দিয়ে
দেওয়াই ভালো।
কারন লকেটের চেয়ে তো আর
জীবনের দাম বেশি না।
তাই লকেটটা খুলে ওর হাতে
দিলাম।
লকেট টা পেয়ে রুশা কিছুক্ষন ওটার দিকে চেয়ে রইলো।
তারপর আকাশ কাপিয়ে রুশা হো হো করে
হেসে উঠলো।
.
.
চলবে…

ভ্যাম্পায়ার ওয়াইফ সিজন ২
পর্ব__৪
লেখা : Sabbir Ahmed
.
.
লকেট টা পেয়ে রুশা
কিছুক্ষন ওটার দিকে চেয়ে
রইলো।
তারপর রুশা আকাশ কাপিয়ে
হো হো করে হেসে উঠলো।
ওর এই ভয়ানক হাসির কোনো
মানেই আমি খুজে পেলাম
না।
হাসি থামিয়ে রুশা আমার
শার্টের কলার ধরে উচু করে
আবার দুরে ছুড়ে মারলো।
দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে
ব্যাথার যন্ত্রনায় আমি
জ্ঞান হারালাম।
.
.
যখন জ্ঞান ফিরলো তখন
বিছানার উপর আবিষ্কার
করলাম
আর মাথার কাছে আমার হবু
স্ত্রী রুশাকে দেখতে
পেলাম।
রুশাকে দেখেই আমার ভয়ে
হৃদপিণ্ড শুকিয়ে গেলো।
আমি লাফ দিয়ে বিছানা
থেকে উঠতে যেতেই রুশা
আমার মাথায় হাত রাখলো।
যার মানে হলো “বিছানা
ছেড়ে উঠো না”।
আমি পুনরায় ভয়ে ভয়ে
বিছানায় শুয়ে পড়লাম।
কারন নাহলে হয়ত আবার
আমাকে অত্যাচার সহ্য
করতে হবে।
আর চোখে রুশার দিকে
তাকাতেই দেখি ওর চোখ
মুখের অনেক স্থানে বড় বড়
নখের আচড়।
যেন কারো সাথে যুদ্ধ করে
বিধস্ত হয়ে এসেছে।
.
.
রুশা আমার চোখের সামনে
সেই লকেটটা ধরলো
.
যেই লকেটটা গতকাল ও নিজ
হাতে আমার নিকট
দিয়েছিলো।
_লকেটটা কার কাছে
দিয়েছিলে (রুশা)
-ইয়ে মানে আসলে (আমি)
_থাক আমি সব জানি বলতে
হবে না (রুশা)
-কিন্তু এই লকেটটা আপনি
আবার কোথায় পেলেন
(আমি)
.
মুচকি একটা হাসি দিয়ে
রুশা বললো….
_সেটা একটা রহস্য।
ওটা তোমার জেনে কাজ
নেই।
তুমি বরং ঘুমাও।
ভোর হতে এখনো বেশ সময়
বাকি আছে (রুশা) -কিন্তু…..
(আমি)
.
.
রুশা আমার দিকে চোখ
পাকিয়ে তাকাতেই ভয়ে
আমি চুপসে গেলাম।
তারপর আমি চুপচাপ চোখ বন্ধ
করে শুয়ে পড়লাম।
.
.
তবে জানি এখন আর ঘুম আসবে
না।
কারন আমার মাথায় এখন
একটা চিন্তাই চলছে।
আর সেটা হলো…
ভ্যাম্পায়ার রুশা আমাকে
যে মার দিয়েছে সেই
দাগগুলো কোথায় গেলো।
আর রুশা এই লকেটটাই বা
আবার কোথায় পেলো??
.
.
এই বিষয় নিয়ে ভাবতে
ভাবতে একটা বিষয় আমার
মাথায় এলো যে…
.
আমার হবু স্ত্রী রুশা ওই
ভ্যাম্পায়ার রুশার কাছ
থেকে যে কোনো উপায়ে
লকেটটা ছিনিয়ে এনেছে।
আর সেই সময় ভ্যাম্পায়ার
রুশার সাথে ধস্তাধস্তিতে
রুশার চোখ মুখের অনেক
স্থান কেটে গিয়েছে।
.
.
এসব ভাবতে ভাবতে আর
বিছানার এপাশ ওপাশ করতে
করতে সকাল ৭টা বেজে
গেলো।
বিছানা ছেড়ে উঠে
টয়লেটে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে
বের হতেই
.
.
মা কাদতে কাদতে রুমে এসে
হাজির হলো।
আমি মা কে কাদতে দেখে
ঘাবড়ে গেলাম।
.
_মা কি হয়েছে কাদছো
কেনো (আমি হতবাক হয়ে)
_বাবা সব শেষ হয়ে গেছে
(মা)
-মানে কি হয়েছে সেটা
তো আগে বলবা (আমি)
_বাবা রুশা কাল রাতে ছাদ
থেকে লাফ দিয়ে
“আত্মহত্যা” করেছে (মা)
-হোয়াট কি বলছো এসব।
রুশা তো আজকে সকালেও
আমার কাছে এসেছিলো
(আমি)
_বাবা পাগলামি করিস না।
রুশা কাল রাত ১টার সময় ছাদ
থেকে লাফ দিয়েছে (মা)
-কি বলছো তুমি এসব।
তাহলে রাতে আমার কাছে
কে এসেছিলো (আমি)
-বাবা তুই মনে হয় স্বপ্ন
দেখেছিস।
আজ সকালে রুশার বাবা
ফোন দিয়ে বলল যে….
সকালে নামায পড়তে উঠে
তিনি দেখেন যে “রুশার
লাশ বাড়ির গেটের কাছে
পড়ে আছে”।
আর মাথা ফেটে রক্ত বের
হচ্ছে (মা)
_মা আমি ওকে দেখতে
যাবো।
তুমি তাড়াতাড়ি বাবাকে
গাড়ি বের করতে বলো
(আমি)
-ঠিকাছে।
তুই বের হ (মা)

কথাটা বলে মুখে কাপড়
দিয়ে কাদতে কাদতে চলে
গেলো।
.
.
.
এসব কি হয়ে গেলো।
রুশা যদি আত্মহত্যা করে
তাহলে আজ ভোর রাতে
আমার কাছে কে এসেছিল।
আর লকেটটাই বা কে দিয়ে
গিয়েছিলো।
.
.
লকেটের কথা মনে পড়তেই
আমি দ্রুত বিছানার পাশে
চলে গেলাম।
আর রুশার দিয়ে যাওয়া
লকেটটা হাতে তুলতেই
দেখি সেটার অনেকটা
জায়গা জুড়ে “লালচে” হয়ে
গেছে।
লকেটটা হাতে নিয়ে
নাড়াচাড়া করতে লাগলাম
যে…” কিছু পাওয়া যায়
কিনা”।
কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম
না।
.
.
তবে রুশার দেওয়া লকেটটা
এভাবে লাল হয়ে গেলো
কেনো।
একটু পরেই মা এসে
বলল বের হতে।
আমি দ্রুত গাড়ি নিয়ে
রুশাদের বাসায় চলে
গেলাম।
না…..
আমি রুশার প্রেমে পড়ি নি।
তবে আমার মনে হচ্ছে যে
আত্মহত্যা করে নি।
ওকে পরিকল্পিতভাবে খুন
করা হয়েছে।
আর আমার মনে
হচ্ছে এই খুনের জন্য আমি
দায়ী।
.
.
গাড়ি থেকে বের হতেই
রুশার লাশের কাছে গিয়ে
দাড়ালাম।
আমাকে দেখতেই রুশার
বাবা কাদতে কাদতে এসে
বুকে
জড়িয়ে ধরে বিলাপ করতে
শুরু করে দিলো।
তারপর রুশার মুখ থেকে
কাফনের কাপড় সড়িয়ে
দিলো।
আমি মাটিতে বসে রুশার
মুখের দিকে তাকালাম।
রুশার মুখ দেখে মনে হচ্ছে
রুশার মুখে বিজয়ের এক
টুকরো হাসি
ফুটে রয়েছে।
যেন নিজের জীবন দিয়েও
সে তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে
পৌছাতে পেরেছে।
আমার চোখ থেকে দরদর করে
পানি ঝরে পড়ছে। আমি হাত
দিয়ে চোখের
পানি মুছে ফেললাম।
ছেলেদের মুখে কান্না
মানায় না।
চোখের পানি মুছে রুশার
মুখের দিকে আবার ভালমতো
তাকালাম।
আর এবার আমি যেটা
খুজছিলাম সেটার অস্তিত্বও
দেখতে পেলাম।
হ্যা আমার ধারনা সঠিক
রুশাকে খুন করা হয়েছে।
কারন আমি তার প্রমাণও
পেয়ে গিয়েছি।
রুশাকে যখন ভোর
রাত্রে জ্ঞান ফেরার পর
আমার মাথার কাছে দেখতে
পেয়েছিলাম।
তখন দেখেছি….
রুশার মুখে বেশ কিছু বড় বড়
ক্ষতের দাগ।
আর ক্ষত গুলো
বেশ গভীর।
.
আর এখন ঠিক সেই দাগগুলোই
দেখতে পাচ্ছি।
তার মানে রুশাকে খুন করা
হয়েছে এটা আমি শিওর।
তবে যেই ওকে খুন করুক না
কেনো তাকে আমি ছাড়বো
না।
রুশার লাশের পাশ থেকে
উঠে দাড়ালাম।
পিছন থেকে রুশার বড় ভাই
রোহান এসে আমাকে
জড়িয়ে ধরলো।
.
.
-ভাই রে আমরা ভাবতেও
পারি নি যে রুশা আমাদের
এমন একটা সারপ্রাইজ দেবে।
ও এভাবে ফাকি দিয়ে
আমাদের চলে যাবে তা
আমরা কল্পনাও করতে পারি
নি (রোহান)
_ভাইয়া তোমাকে আমার
অনেক কিছু বলার আছে।
আর তুমি রুশার দেহের দুটি
ছবি তুলে নাও (আমি শক্ত
হয়ে বললাম)
.
.
রোহান শুধু আমার দিকে
তাকিয়েই থাকলো।
তারপর মাথা নেড়ে সম্মতি
জানালো।
.
.
.
রুশাদের বাসা থেকে ফিরে
এসে আমি নিজের রুমে
ঢুকেছি সেই সকাল ১১টায়।
এখন রাত ৮টা বাজে।
সারাদিন মা বাবা দুজনেই
পাচ_ছয়বার এসে ডেকে
ডেকে হয়রান হয়ে ফিরে
গেছে।
তাই আর ডাকতে আসে নি।
.
.
আমি সেই সকাল থেকেই
রুশার দিয়ে যাওয়া লকেটটা
হাতে নিয়ে বসে আছি।
.
.
এই লকেট থেকে আমি এর
মধ্যে অনেক প্রশ্নের উত্তর
পেয়েছি।
যার মধ্যে সবচেয়ে অবাক
করা বিষয় হলো ……
….
“এই লকেটের জন্যই রুশার খুন
হয়েছে”।
আর এই লকেটের মধ্যে কিছু
“অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতা”ও
রয়েছে বলে আমি মনে করি।
কারন এই লকেটটা সাধারন
লকেট থেকে ভিন্ন।
.
.
আর লকেটটার নিজস্ব যে
ক্ষমতা আছে সেটা সময় হলেই
জানতে পারবো।
((আর আপনারাও পারবেন))
.
.
ঘড়িতে এখন ১১টা ছুই ছুই।
হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো।
কল রিসিভ করতেই ওপাশ
থেকে নরম গলায় আওয়াজ
আসলো..
.
.
-কেমন আছো (অচেনা
ব্যাক্তি)
_এই তো মোটামুটি ভালই
আছি।
তবে না থাকার মতোই।
তোমার খবর কি
রোহান ভাই (আমি)
.
ওপাশে কিছুক্ষন
নিরাবতা। …..
-আমি রোহান সেটা তুমি
কিভাবে জানলে।
আমার নাম্বার কি তোমার
কাছে আগে থেকেই ছিলো
(রোহান)
_না তোমার নাম্বার আমার
কাছে নেই।
তবে আমার মনে হলো তুমি
রোহান। তাই বলে ফেললাম
(আমি)
-আচ্ছা ঠিকাছে….
এখন বলো
“তুমি আমাকে কি বলতে
চাইছিলে আর রুশার মৃত
দেহের দুটো ফটো আমি
সংগ্রহ করেছি” (রোহান)
_সব কিছু তো আর ফোনে বলা
যায় না।
তুমি কাল সকালে আমার
বাড়িতে চলে এসো। তখনই সব
জানতে পারবে।
আর আশা করি সব কিছু শুনে
তুমিও আমার সাথে রুশার
খুনিকে ধরতে সাহায্য করবে
(আমি)
-হোয়াট রুশার খুনি মানে…..
কি বলতে চাইছো তুমি…..
রুশাকে খুন করা হয়েছে।
কে খুন করেছে আমার বোন
বলো?? কে খুন করেছে ???
((রোহান বিস্ময়ে চিৎকার
করে
উঠলো))
_আস্তে কথা বলো।
না হলে তোমার বাবা মা
এসব জানতে পারলে আরো
কষ্ট
পাবে (আমি)
….
রোহান নিজেকে সামলিয়ে
নিয়ে বললো…
-বলো কে আমার বোনকে খুন
করেছে।
তাকে আমি একদম
জাণে মেরে ফেলবো
(রোহান) _এখনই এতো উতলা
হয়ো না।
কাজ এখনো অনেক বাকি।
আর আমি পুরোপুরি শিওরও
না যে রুশাকে খুন করা
হয়েছে।
এটা আমার ধারনা মাত্র।
তুমি কাল ১০টা নাগাদ
আমার বাড়িতে চলে আসো।
তখনই এই ব্যাপারটা নিয়ে
খোলাখুলি আলোচনা করা
যাবে (আমি)
-হুম ঠিকাছে।এখন রাখছি।
বায় (রোহান)
_ওকে আল্লাহ হাফেজ (আমি)
..
..
রোহানের সাথে কথা বলা
শেষ করা কন্ট্যাক্ট লিস্টে
তলিয়ে পড়ার একটা
নাম্বারে ডায়াল করলাম।
দু বার রিং হতেই কল রিসিভ
হলো।
…..
-কি রে এত দিন পরে আমার
কথা মনে পড়লো তোর।
আবার বিয়ে করলি তা তো
ইনভাইটও করলি না।
কেমন বন্ধুরে তুই (ওপাশ
থেকে)
_হুম তুই তো ঠিক কথাই
বলছিস।
তবে ইনভাইট না করলেও তো
তুই ঠিক চলে আসতি।
তবে আজকে এলি না কেনো
(আমি)
-আর বলিস না কাল রাতে
গাড়ি নিয়ে আসার সময়
রাস্তায় একটা ছেলেকে ভুল
করে মেরে দিতে
যাচ্ছিলাম।
তাই কোনো মতে অনেক
কষ্টে গাড়ি ঘুড়িয়ে দিতে
গিয়ে সাইডে থাকা গাছের
সাথে লাগিয়ে
দিয়েছিলাম। তাতে
মাথার অনেকটা
জায়গায় কেটে গেছে।
তাই আর আজ আসতে পারি
নি।
তা ভাবির চেহারা কেমন
রে দোস্ত (ওপাশ থেকে)
_দেখবি (আমি)
-হ্যা (ওপাশ থেকে)
_দেখ…..
অলরেডি একটা মেইল গেছে
(আমি)
-ওয়েট কর (ওপাশ
থেকে)
_কিছুক্ষন পর দোস্ত
এটা কার ছবি দিলি।
রক্ত মাখা চেহারার এটা
কে (ওপাশ থেকে).
.
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here