ভ্যাম্পায়ার_ওয়াইফ #পর্ব_১,২

#ভ্যাম্পায়ার_ওয়াইফ
#পর্ব_১,২
(রোমান্টিক হরর স্টোরি)
#লেখক_সাব্বির আহমেদ
পর্ব_১

ঘরে শুয়ে শুয়ে ইউটিউবে
একটা ফানি ভিডিও
দেখতেছি।
এমন সময় রুশা ডাক দিলো।
~এই খাবার দিয়েছি।
তাড়াতাড়ি খেতে আসো।
_এইতো আসছি (আমি)
ভিডিও দেখতে দেখতেই
খাবার টেবিলে আসলাম।
হঠাৎই মুডটা গরম হয়ে গেলো।
_এই তোমারে না বলছি যখন
রাধবা
তখন ফোন দেখবা না
(মোবাইলের দিক থেকে
চোখ না সরিয়েই বললাম)
~কেন কি হয়েছে (রুশা)
_এটা কি কোনো ডাল
হয়েছে।
না লবন না ঝাল (আমি)
~আর তোমারে না বলছি
খেতে খেতে ফোন দেখবা
না।
তুমি ভাতে ডাল নেও নি
পানি ঢেলেছো (রুশা)
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে
পেল্টের দিকে তাকিয়ে
দেখি
আসলেই সত্যি।
ফোনে ভিডিও দেখতে
দেখতে ভুল করে
ভাতে ডাল না নিয়ে পানি
নিয়েছি।
এখন চুপচাপ এখান থেকে
কেটে পড়া উচিত।
কারন রুশার যদি একবার মুড
খারাপ হয়।
তবে আর রক্ষা নেই।
ব্যাগ গুছিয়ে সোজা বাপের
বাড়ি চলে যাবে।
আর আমাকেও হোটেলে
খেয়ে খেয়ে পেট খারাপ
করতে হবে।
তাই কোনো কথা না বলে
চুপচাপ ওখান থেকে কেটে
পড়লাম।
তবে আমি জানি মহারানি
ঠিকই রাগ করেছেন।
আর এটা হলো কৃত্রিম রাগ।
তবে এই রাগ ভাঙানোর
ওষুধও আমার আছে।
তাই রুমে এসে মানিব্যাগটা
প্যাকেটে নিয়ে
রাস্তায় বেড়িয়ে পড়লাম।
কারন এখন রুশার জন্য ঝাল
চানাচুর
আর তেতুলের চাটনি না
আনলে
কপালে দুর্ভ্যোগ আছে।
তবে আমার বউয়ের আবদার
গুলো খুবই নগন্য।
খুব অল্পতেই রুশা অনেক খুশি
হয়।
অন্য মেয়েদের মতো
একাধিক আবদাও নেই ওর।
এমনকি ওর দামি বস্তুও
প্রয়োজন নেই।
অল্প দামি জিনিসেই ওর মন
জয় করা সম্ভব।
তাই তো হাজার রাগ করলেও
পাগলিটাকে আমি ভীষন
ভালবাসি।
আর পাগলিটাও কম যায় না
ওও আমাকে প্রচন্ড
ভালবাসে।
এইতো কিছুদিন আগে অফিস
থেকে ফেরার পথে
বৃষ্টিতে ভিজে আমার জ্বর
হয়েছিল।
তখন পাগলিটার সে কি
কান্না।
সাড়াটা রাত না ঘুমিয়ে
আমার মাথায় জলপট্টি
দিয়েছিল।
আর খনে খনে চোখের পানি
মুচ্ছিল।
হাটতে হাটতে পার্কের
মাঠে চলে এলাম।
হঠাৎ আমার সামনে দিয়ে
দুজন ছেলে মেয়ে হেটে
গেলো।
তাদের দিকে নজর পড়তেই
আমার পায়ের নিচ থেকে
মাটি সড়ে গেলো।
.
.
রুশা একটা ছেলের হাত ধরে
হেটে যাচ্ছে।
আমি হতবাক হয়ে গেলাম।
অনিচ্ছা সত্তেও আমার চোখ
থেকে পানি ঝরে পড়লো।
তারা দুজন আমার থেকে
১শ গজ দুরে দাড়িয়ে ফুচকা
খাচ্ছে।
আচমকা ফোনটা বেজে
উঠলো।
স্কীনের নাম্বারটা রুশার
তারমানে রুশাই ফোন
করেছে।
কিন্তু রুশাতো আমার
সামনেই দাড়িয়ে আছে।
তবে ফোন করলো কে????
একবার ফোনের দিকে
আরেকবার সামনের দিকে
তাকাতে লাগলাম।
এরমধ্যেই কলটা কেটে গেলো।
আমি এখনো ঘোরের ভিতরে
আছি।
এসব কি হচ্ছে।
রুশাতো আমার সামনেই
দাড়িয়ে আছে।
তবে ফোন করলোটা কে।
আবার রুশাই যদি ফোন দিয়ে
থাকে
তবে সামনের মেয়েটা কে।
ভাবতে ভাবতে আবার ফোন
বেজে উঠল।
কাপা হাতে ফোনটা
রিসিভ করলাম।
আর অপর প্রান্ত থেকে সেই
চিরচেনা আওয়াজটা ভেসে
এলো।
~কি গো কোথায় তুমি
এত রাত হয়ে গেলো।
আমার বুঝি ভয় করে না।
তাড়াতাড়ি বাড়ি এসো
(রুশা)
[আমি কি বলবো তা ভেবেই
পাচ্ছি না]
_আচ্ছা রুশা তোমার কোনো
জময বোন আছে (আমি)
অপর প্রান্ত থেকে কিছুক্ষন
রুশার কোনো আওয়াজ
পেলাম না।
তাই আবারো বললাম
_রুশা তোমার কোনো জময
বোন আছে।
যে তোমার মতো দেখতে
বা এমন কোনো মেয়েকে
তুমি চেনো।
যাকে হুবহু ঠিক তোমার
মতো দেখতে (আমি)
~সাব্বির তুমি বাড়ি আসো
তোমার সাথে কিছু ইনপর্টেন
কথা আছে (রুশা)
_ওকে আসছি (আমি)
~হুম তাড়াতাড়ি আসো
আর তুমি যাকে দেখতে
পাচ্ছো
ভুলেও তার পিছু নিও না
তাহলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে
যাবে (রুশা)
কথাটা বলেই রুশা ফোন
কেটে দিলো
রুশার শেষ কথাটা বার বার
আমার কানে বাজতে
লাগলো
“তুমি যাকে দেখতে পাচ্ছো
ভুলেও তার পিছু নিও না”
তার মানে কি এমন কোনো
গোপন বিষয় আছে
যেটা রুশা আমার থেকে
লুকিয়ে রেখেছে।
নাহ বুঝতে পারছি না
বিষয়টা…
তারচেয়ে বরং বাড়ি
ফিরে যাই..
তাহলেই এই বিষয়টার
সমাধান মিলবে।
পিছনে ফিরে হাটা শুরু
করবো
এমন সময় খেয়াল করলাম
আমার সামনে থাকা
মেয়েটা (মানে রুশা)
আমাকে দেখে কেমন চমকে
গেলো।
আর তার সাথে থাকা
ছেলেটির কাছ থেকে
বিদায় নিয়ে উল্টো দিকে
ফিরেই
খুব জোড়ে হাটা শুরু করলো।
তার এমন আচরনে
আমি বেশ কৌতুহলে পড়ে
গেলাম।
আমার মনে হলো ,,,যে আমি
তার

“চলবে….

রোমান্টিক হরর স্টোরি
#ভ্যাম্পায়ার_ওয়াইফ
#পর্ব_২
#লেখকঃ সাব্বির আহমেদ
(আগের পর্বের পর থেকে)
.
.
.
মেয়েটার হাব ভাব দেখে
মনে হচ্ছে যেন
আমি মেয়েটার পরিচিত।
আর আমি বাহিরে তাকে অন্য
ছেলের সাথে
ঘুরে বেড়াতে দেখে
ফেলেছি বলে
সে ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
আমার কৌতুহলটা এবার
সন্দেহে পরিনত হল।
তাহলে কি এই মেয়েটা
আসলেই রুশা।
না না তা কি করে হবে।
আমি তো কেবলই রুশার
সাথে ফোনে কথা বললাম।
..
..
নাহ মাথা কাজ করছে না।
এখানে আসলে কি ঘটছে
সেটা আমাকে খুজে বের
করতেই হবে।
ইত্যমধ্যে সেই মেয়েটা বেশ
খানিকটা পথ
অতিক্রম করে চলে গেছে।
আমি চুপচাপ তার পিছু
নিলাম।
কারন আমাকে এর শেষ
প্রান্ত পর্যন্ত যেতেই হবে।
আর এর পেছনের রহস্য
উধঘাটনও করতে হবে।
কিছুদুর যেতেই আবারও
ফোনটা ভাইব্রেট করে
উঠলো।
ফোন বের করে হাতে
নিতেই দেখি
রুশা কল দিয়েছে।
কিছুটা সময় বিলম্ব করে
কলটা রিসিভ করলাম।
_হ্যালো রুশা কি হয়েছে
(আমি)
~তোমাকে না নিষেধ
করেছি।
ওর পিছু না নিতে (রুশা)
..
আমি রিতীমতো অবাক।
কারন রুশা কিভাবে
জানলো যে….
আমি ওই মেয়েটার পিছু
নিয়েছি।
_হোয়াট কি বলছো তুমি।
আমি আবার কখন ওর পিছু
নিলাম (আমি)
~দেখো আমি তোমার
ভালোর জন্যই বলছি
ওর পিছু নিও না।
ও ভাল না।
ও তোমার ক্ষতি করতে
পারে (রুশা)
_ক্ষতি করতে পারে।
বাট করবে তো না (আমি)
~সাব্বির প্লীজ বোঝার
চেষ্টা করো।
ও কোনো মানুষ না।
ও একটা ডাইনি (রুশা)
_হোয়াট।
কি বললে (আমি পুরো হতবাক
হয়ে)
~হ্যা আমি ঠিকই বলছি।
তোমাকে ওই ডাইনিটা
বাগে পেলে সহজে ছাড়বে
না (রুশা)
_আচ্ছা রুশা তোমার কি
মাথায় সমস্যা আছে (আমি)
~কেন (রুশা)
_তাহলে এই আধুনিকতা আর
বিজ্ঞানের যুগেও
তুমি এসব ভুত প্রেতে
বিশ্বাস করো (আমি)
~ওহ সাব্বির প্লীজ একটু
বোঝার আর বিশ্বাস করার
চেষ্টা করো আমার কথাটা।
আমি তোমার সাথে ঠাট্টা
করছি না।
সত্যিই বলছি।
প্লীজ তুমি ওর পিছু নিও না।
এটা আমার ওয়াদা (রুশা
কথাগুলো বলতে বলতেই
কান্না শুরু করে দিলো)
_এই এই কাদবে না।
আমি এক্ষুনি আসছি ok।
মোটেও কাদবে (আমি)
~ঠিক আছে।তবে
তাড়াতাড়ি এসো ।
আমার খুব ভয় করছে (রুশা)
_ok ok আসছি।
এখন রাখলাম (আমি)
~ok (রুশা)
ফোনটা কেটে দিলাম।
..

..কি মেয়েরে বাবা।
কথায় কথায় কান্না শুরু করে
দেয়।
যত্তসব বোগাস।
শান্তি মতো কোনো কাজই
করতে দেবে না।
ঠিক আছে বাড়ি তো আগে
যাই।
তারপর রুশার কাছ থেকেই সব
জানতে হবে।
কারন আমার পুরো বিশ্বাস
যে
এই ঘটনা সম্পর্কে রুশার সব
কিছু জানা আছে।
তাই ওর কাছ থেকেই সব কিছু
জানতে হবে।
আর এরপর কি করা যায়
সেটাও ভাবতে হবে।
..
..
..দ্রুত হাটা শুরু করলাম।
যাতে তাড়াতাড়ি বাসায়
পৌছানো যায়।
ফোনটা বের করে সময় দেখে
নিলাম।
১১টার কিছু বেশি বাজে।
একটু বেশিই দেরি হয়ে
গেছে।
তাই আরো একটু দ্রুত পা
চালালাম।
হঠাৎ পায়ে কোনো কিছুর
সাথে হোচট লাগলো।
আরেকটু হলেই পড়ে
যাচ্ছিলাম।
কোন রকমে নিজেকে সেভ
করে
পিছনে তাকালাম।
এটা দেখতে যে..
কিসের সাথে হোচটটা
লাগলো।
আধো অন্ধকারে কিছুই দেখা
যাচ্ছিল না।
তাই বাধ্য হয়েই মোবাইলের
ফ্লাশটা অন করলাম।
আর পিছন দিকে ঘুরে
দাড়ালাম।
তারপর ওই দিকে তাকিয়ে
দেখি যে
একটা গাছের শিকড়ের
সাথে হোচটটা লেগেছে।
আর পায়ে যেখানে হোচট
লেগেছে…
সেখানে কেমন যেন টনটন
করছে।
মনে হয়ে কেটে গেছে
শিকড়ের সাথে হোচট লেগে।
কিন্তু সেটা দেখার
প্রয়োজন বোধ করলাম না।
কারন আমার কাছে এখন
এটার চেয়ে গুরুতবপূর্ন হলো
আগে বাড়ি ফিরে যাওয়া।
আর রুশার কাছ থেকে পুরো
বিষয়টা জানা।
আরো কিছুটা পথ হাটার পরই
বাড়ি চলে আসলাম।
..
..
ক্রিং ক্রিং।
ক্রিং।
ক্রিং ক্রিং।
..
বেশ কয়েকবার কলিংবেল
বাজানোর পরেও
রুশা দরজা খুলছে না।
আচ্ছা মেয়েটার সমস্যাটা
কি।
রাস্তায় যখন ছিলাম তখন
ফোন দিয়ে বললো যে
তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে।
আর এখন এতো দ্রুত হেটে
আসলাম
যে পায়েই ব্যাথা করছে।
অথচ মেয়েটার কোনো
সাড়াই নেই।
..
ক্রিং ..
ক্রিং।
..
আরো কয়েকবার বেল
বাজানোর পরেও
রুশার কোনো সাড়া পেলাম
না।
…..
হঠাৎকরে কেমন যেনো ভয়
করতে লাগলো।
আচ্ছা মেয়েটা আবার অসুস্থ
হয়ে পরলো না তো।
তাহলে তো আরো বিপদ।
কি করা যায়।….কি করা যায়।
..
..
হ্যা বুদ্ধি পেয়েছি।
দরজাটা ভেঙে ফেলতে হবে।
আশে পাশে তাকাতেই একটা লোহার
পুরোন চেয়ার দেখতে
পেলাম।

এটা দিয়েই কাজ হবে।
শুধুমাত্র দরজার লকটা
ভাঙলেই দরজাটা খোলা
যাবে।
তাই চেয়ারের হাতলটা
দিয়ে জোড়ে জোড়ে
দরজার লকে বারি মারলাম।
কয়েকটা বারি দিতেই
লকটা ভেঙে নিচে পড়ে
গেলো।
দরজাতে ধাক্কা দিতেই
দরজাটা খুলে গেলো।
আমি ঘরের ভিতরে ঢুকলাম।
কিন্তু একি অবস্থা সাড়া
ঘরের।
জিনিসপত্র এদিক ওদিক পড়ে
রয়েছে।
_রুশা….রুশা….
_রুশা….
নাহ মেয়েটাই বা কোথায়
গেলো।
উপরের রুমে এসে দরজাতে
ধাক্কা দিতেই
ক্যাচ করে দরজাটা ভেঙে
পড়লো।
আর আমি বিস্ময়ে হতবাক
হয়ে গেলাম।
.
.
কারন মেঝেতে রুশার রক্ত
মাখা
দেহটা পড়ে রয়েছে।
.
.
.
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here