জ্বীনের_প্রেম #পর্ব_০৬

#জ্বীনের_প্রেম
#পর্ব_০৬
লেখিকাঃ #সাবরিন_খান

চায়ের কাপ দুটো দেখে মেঘলার মায়ের মনে প্রশ্ন জাগে রাতে কি কেউ এসেছিল নাকি।
সে মেঘলাকে ডেকে উঠায়।

– রাতে কি কেউ এসেছিল?
(মেঘলা ঘুমের চোখে বলে )

-হ্যা এসেছিল সে।

– সে আবার কে? একটা চায়ের কাপে এখনো চা রয়ে গেছে।দুই কাপ চা কেন বানিয়েছিস?আর তুই তো রাতে কখনো চা খাসনা।

এই কথা শুনে মেঘলার ঘুমের ঘোর কেটে যায়।লাফ দিয়ে উঠে বসে তাকিয়ে দেখে একটি চায়ের কাপ এখনো পরিপুর্ন।
মেঘলা যেন আকাশ থেকে পড়লো তার পরিস্কার মনে আছে ছেলেটা পুরো চা খেয়েছিল।সে খালি কাপদুটো টেবিলের উপর রেখেছিল।

তাহলে এখন কিভাবে কাপে চা আসলো। মেঘলা একটু চিন্তিতভাবে তার মায়ের দিকে তাকায়।মেঘলার মার মনে কেমন একটা ভয় কাজ করে মেয়ের চেহারা দেখে।

মেঘলাকে জিজ্ঞেস করে হয়েছে বল তো?
মেঘলা মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে “আম্মু আমার পাশে এসে একটু বসবে?”মেয়ের এমন মিনতি শুনে পাশে গিয়ে বসে মা।” আম্মু আমার কাছে একটি ছেলে প্রতি রাতে আসে।

ছেলেটাকে আমি আগে কখনো দেখিনি কিন্তু আম্মু ছেলেটা না মানুষ নয়,ওর অলৌকিক ক্ষমতা আছে।”এগুলা শুনে মেঘলার মা যেন আকাশ থেকে পড়লো।

সে আৎকে উঠে বলে….
“কি বলছিস এসব তুই? তোর কি মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে?
আর তোর কাছে কেন আসবে?”মেঘলা মাকে বলে “আম্মু তুমি আগে আমার কথা শুনো তুমি কখনো আমাকে বুঝতে চাওনা।”মেঘলার মা যেন একটু রেগে যায় ভাবে মেয়ে মনে হয় পাগল হয়ে গিয়েছে।

” আমি আর কিছু শুনতে চাইনা। তোর মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তোকে আমি আগেই বলেছি তুই আমার সাথে ঘুমাবি এই ঘরে তুই আসবিনা।

তুই আমার কোন কথাই শুনতে চাসনা।”মেঘলা এবার মাকে আর কিছু বুঝাতে না চেয়ে বল “চলে যাও তুমি এই ঘর থেকে।আমার কোন কথা তোমার শুনতে হবেনা।
আমাকে একা থাকতে দাও…প্লিজ।
“মেঘলার মা ঘর থেকে বের হয়ে যায়। মেঘলা একটু চিন্তিত মনে কি যেন একটা ভাবতে শুরু করে। সারাদিনেও আর কেউ খবর নিতে আসেনি মেঘলার।

এমনকি তার মাও জিজ্ঞেস করেনি এসে মেঘলাকে এসে সে খাচ্ছেনা কেন।মেঘলা এসবে অভস্ত্য তার রাগ জেদই হয়তো তার থেকে সবাইকে দূরে ঠেলে দাওয়ার জন্য দায়ী।
তবে মেঘলার তো একজন আছে যে রাতে ঠিক এসে জানতে চাবে সে খায়নি কেন আর কিছু বলে ঠিকি মেঘলার সব অভিমান ক্ষনিকেই মুছে দিবে।মেঘলা অপেক্ষা করছে বারান্দায় দাঁড়িয়ে।

ছেলেটা সময় হলেই এসে পড়বে।মেঘলা যখন অপেক্ষায় মগ্ন আড়াল থেকে মেঘলার মা দাঁড়িয়ে দেখছে মেঘলাকে।
সে সারাদিন মেঘলাকে চোখে চোখে রেখেছে।মেঘলার মা হটাত লক্ষ্য করলো মেঘলা যেন হেসে হেসে কথা বলছে।মেয়ের মুখে এমন হাসির শব্দ অনেকদিন পর শুনছে।
তবে মেঘলা কি একা একা কথা বলছে? মেঘলার মা আর কারও গলার শব্দ শুনতে পায়না শুধু মেঘলার গলার আওয়াজ আর হাসি ছাড়া।

মেঘলার মা দৌড়ে বারান্দায় যায়।গিয়ে দেখে শুধুমাত্র মেঘলাই দাঁড়িয়ে আর কেউ নেই।মেঘলা মাকে দেখে একটু থতমত খায়।

জিজ্ঞেস করে আম্মু তুমি?মেয়ের হাশিখুশি চেহারা দেখে মায়ের খুশি হওয়ার বদলে মায়ের মন জুড়ে ছেয়ে যায় এক অজানা ভয়।

সকালে মেঘলার মা ফোন দেয় অমিতকে যেহেতু অমিত একজন সাইকোলজিস্ট হয়তো তার কাছে কোন ইনফরমেশন পাওয়া যেতে পারে সেই আশায়।

অমিত ফোন ধরার পর মেঘলার মা বলে ” বাবা তুমি কি একটু আমাদের বাসায় আসতে পারবে?” তোমার সাথে জরুরি কিছু কথা ছিল.।

অমিত কিছুক্ষণ পরেই আসে।
মেঘলার বিষয়টা অমিতকে খুলে বলে তার মা।সবটুকু শুনে অমিতকে একটু চিন্তিত মনে হয়।
অমিতকে মেঘলার মাকে বলে মেঘলা হয়তো এক ধরনের রোগে আক্রান্ত। তবে আমি এখনও নিশ্চিত নই।আমার ওর সাথে কথা বলার দরকার।

মেঘলার মা অমিতকে জিজ্ঞেস করে কি ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বলে তোমার মনে হয়? অমিত বলে “এটা মানষিক যেখানে কল্পনা আর বাস্তবতাকে মানুষ আলাদা করতে পারেনা।

হয়তো মেঘলা তার কল্পনায় বাস করতে শুরু করেছে।”কিন্তু……

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here