#জ্বীনের_প্রেম
#পর্ব_০৫
লেখিকাঃ #সাবরিন_খান
মেঘলা ড্রয়িং রুমে বসে আছে তার মায়ের পাশে।মেঘলার বরাবরই বসে আছে অমিত আরেকটি সোফায়। আজ মেঘলার মনটা খুব ভালো সকাল থেকেই তাই মায়ের কথাকে আর না
ফিরিয়ে দিয়ে সে মায়ের মনের ইচ্ছা পুরণ করছে।আজ মেঘলার গায়ে ধুসর রংয়ের একটি শাড়ি যে শাড়িটা আগের বার তার জন্মদিনে তুলি তাকে উপহার দিয়েছিল। মেঘলার ধুসর রং খুব পছন্দ ।
অমিত চা খেতে খেতে মেঘলাকে প্রশ্ন করলো “চা টা কি আপনি বানিয়েছেনে?”
মেঘলার মা মেঘলাকে কিছু বলতে না দিয়ে আগ বারিয়ে বললো “হ্যা মেঘলাই বানিয়েছে।” অমিত একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো “চা টা দারুণ হয়েছে।”
মেঘলার মা বললো “তোমরা কথা বলো আমি আসছি “।মা চলে যাওয়ায় মেঘলা একটু ইতস্তত বোধ করছে।অমিত বললো মেঘলার দিকে তাকিয়ে “শুনেছি আপনাদের ছাদটা নাকি অনেক সুন্দর।
আমাকে কি নিয়ে যাওয়া যায়? “মেঘলা একটু সংকোচ বোধ করে উত্তর দিলো” জ্বী, আসুন আমার সাথে।”ছাদে জমে আছে কালকের বৃষ্টির পানি।
মেঘলা সেই পানিতে খালি পায়ে ছাদে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
পানিটা মেঘলার পা স্পর্শ করার সাথে সাথে মেঘলার মনে পড়লো কাল রাতে তার কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত। মেঘলা যখন আনমনে, পাশে থেকে অমিত মেঘলাকে বললো –
– আজকের দিনটা অনেক সুন্দর।তাইনা?
– জ্বী।
-আমি জানি চা টা আপনি বানাননি।
(মেঘলা একটু অবাক ভাবে তাকিয়ে বললেন)
-কিভাবে জানেন?
-কারণ উত্তরটা আপনি দেননি।আন্টি দিয়েছেন।আরেকটা কথা,আপনার হাসিটা অনেক সুন্দর।
-এটা কেন মনে হলো? আমিতো আপনার সামনে একবারও হাসিনি।
-হ্যা। আপনার হাসি সুন্দর বলেই আপনি হাসেন না।কারণ মানুষ তার প্রিয় জিনিসগুলো হয়তো লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে।
(মেঘলা লক্ষ্য করলো অমিত খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারে।)
-আপনি কি করেন?
-আমি প্রোফেশনের দিক থেকে একজন সাইকোলজিস্ট।মানুষের মন পড়ি।
-ওহ্ আচ্ছা।চলুন নিচে যাই।অনেকক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে আছেন আপনি।
(অমিত বুঝতে পারলো মেঘলা একটু এরিয়ে যাচ্ছে তাকে।)
-ঠিক আছে চলুন।
মেঘলা নিজের রুমে এসে শুয়ে আছে বিছানায়।
শাড়িটা এখনো খুলেনি।মেঘলার মা রুমে ঢুকেই জিজ্ঞেস করে “কিরে কেমন লাগলো?” মেঘলা সোজা সাপটা উত্তর দেয় ভালোনা।
তুমি এখন চলে যাও আমাকে একা থাকতে দাও। আরেকটা কথা তুমি তখন মিথ্যে কেন বললে?”মেঘলার মা কোন উত্তর খুজে না পেয়ে চলে গেল।
মেঘলা রাতের খাবার না খেয়ে হাতে গল্পের বই নিয়ে বসে আছে।আজ বইয়ের পাতায় তার মন নেই।
ভাবছে অন্য সবকথা।রাত গভীর হতে শুরু করেছে মেঘলাও অপেক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করলো। মেঘলা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালো।
সময় হয়েছে ছেলেটার আসার।”মন খারাপ?”মেঘলা তাকিয়ে দেখে সে এসে পড়েছে। খুব ছোট করে উত্তর দিল মেঘলা “হুমম”।”শাড়িতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।”মেঘলা তাকিয়ে দেখে ছেলেটা তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মেঘলা বলে “আপনি তো মানুষ না।আমি তাহলে কি চান আমার কাছে?”ছেলেটা বলে” খুব বেশি কিছুনা তোমার সাথে কিছুটা সময় কাটাতে।” আর কিছু না জিজ্ঞেস করে মেঘলা এবার বলে “চা খাবেন?”ছেলেটা হেসে দিয়ে বলে ” যদি তুমি ভালোবেসে বানাও তাহলেই।
” মেঘলা চুপচাপ রান্নাঘরে গিয়ে ২ কাপ চা বানিয়ে নিয়ে আসে।
চা টা ছেলেটার হাতে দাওয়ার সময় ছেলেটার হাতের সাথে মেঘলার হাতের একটু ছোয়া লাগে।মেঘলা অনুভব করে ছেলেটার হাতটি বরফের মতো ঠান্ডা।ছেলেটা চায়ে চুমুক দিয়ে বলে” বাহ তোমার মন খারাপ থাকলে তুমি তো খুব দারুণ চা বানাও।” শুনে মেঘলা হেসে দেয়।
দুজনের চা খাওয়া শেষ হলে মেঘলা টেবিলের উপর চায়ের কাপ দুটো রেখে দেয়।তাদের কথোপকথন শেষ হওয়ার পর মেঘলা গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে মেঘলার মা মেঘলার রুমে এসে দেখে মেঘলার টেবিলের উপর দুটো চায়ের কাপ রাখা।একটি কাপে চা নেই আরেকটি কাপে চা ভরা।
চলবে……….