#নাম: এলাকার বড় আপু_2
#পার্ট:৭
#লেখক: Osman
👉সারাক্ষন নিলার মুখটা সামনে ভাসে। অফিসের ম্যানেজার সবাইকে ডাক দিলো। আমি ও গেলাম। আমি গিয়ে পিছনে এক কোনায় দাঁড়িয়ে রইলাম। একেক জনকে একেক কাজ দিয়ে বিদায় করছে ম্যাডাম। সবার পরে আমার সিরিয়াল আসলো। মেয়েটা আমার থেকে মনে হয় তিন বছরের ছোট। ছোট হলে কি হবে বসতো বসই। আমাকে আমার কাজ দিলে আমিও চলে আসি । অফিসে কতো মেয়ে । সারাক্ষণ নিলার কথা মনে পড়ে। নিলা এখন কি করছে মনে হয় কাঁদছে আবার মনে হয় সেতো এখন খুশিতে নাচছে কারণ তাকে বাঁধা দেওয়ায় আর কেউ নেই। ধুর যেটা চলে গেছে সেটা গেছেয় ।
এখন কাজে মনোযোগ দেই। অফিস শেষ করে রুমে এসে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর পাশের একজন বলল ।তার নাম সাজ্জাদ।
সাজ্জাদ: ভাই আপনি এরকম সব সময় নিরব আর মুখ গোমড়া করে রাখেন কেনো? কোনো সমস্যা আমাদের বলেন দেখি হেল্প করতে পারি কিনা।
আমি: ভাই আপনার কি বউ আছে?
সাজ্জাদ: হ্যাঁ ভাই।
আমি: তার কথা আপনার মনে পড়ে না?
সাজ্জাদ: হ্যাঁ মনে পড়ে প্রতিদিন কথা বলি। আজকে তো কয়েক বার কথা বললাম।
আমি: ভাই আমি আমার বউকে সারা জীবনের ছেড়ে চলে এসেছি। তাই ভাই তার কথা চিন্তা করি।
সাজ্জাদ: কেনো ভাই? আপনি আপনার বউকে ছেড়ে চলে এসেছেন।
আমি: ভাই শখের বশে এক সিনিয়র আপুকে বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের পর তার কথা আমি শুনতাম কিন্তু সে আমার কথা শুনতো না। তাই ছেড়ে চলে এসেছি।
সাজ্জাদ: ভেরি ইন্টেসট্রিং। আমরা দেখি যত কম বয়সী মেয়ে আর তুমি কিনা সিনিয়র আপুকে বিয়ে করো। থাক ভাই যা হওয়ার হয়ে গেছে এখন সামনে ফোকাস করেন। দেখবেন আরো ভালো মেয়ে কপালে আসবে।
আমি: হুম।
👉 আমি পড়াত বসলাম। কারন আমাকে ভার্সিটি শেষ করতে হবে। এটা বেসরকারি যেকোনো সময় চাকরি চলে যেতে পারে। পরদিন অফিসে গেলাম। সারাদিন অফিস করলাম। কারো সাথে কথা বলিনি। সবাই টিফিন করে আর আমি নিলার কথা চিন্তা করি। সেকি এখনো ঠিক আছে নাকি আমি নেই বলে কারো সাথে কামে লিপ্ত হয়েছে। নাহ! নাহ!
নিলা এরকম মেয়েই নাই। ভাবলাম নিলাকে একটা নজর দেখে আসবো। আগামীকালই যাবো। অফিস শেষ করে চলে আসবো । এক লোক এসে খবর দিলো মেনেজার ডাকছে । আমি অফিসে গেলাম। ম্যাডামকে দেখেই আমার মেজাজ গরম হয়ে যায়। ম্যাডাম এটা কোনো কাপড় পড়লো। একটা টাইট জিন্স আর টাইট শার্ট ঠোঁটে লিপস্টিকে ভড়া। চুল গুলো মাথায় পাহাড় করে রেখেছে। আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। নিলাকে আমি জিন্স অবস্থায় দুদিন দেখেছি তারপরেও প্রথম প্রথম। আর সবসময় নরমাল পোশাক পড়তো। যার কারণে নিলাকে আমার অনেক ভালো লাগতো । আর শাড়ি পড়া অবস্থায় দেখলে মনে হতো রিয়ান ভাইয়ের কথাটা “কোন গ্রহ থেকে এসেছো তুমি। যেখানে শুধু রুপের চর্চা করা হয়”। এখন নিলার শাড়ি পরা মুখটা মনে হলে শরীর কাঁপুনি দিয়ে ওঠে ।
ম্যাডাম: বসেন।
👉আমি মাথা নিচু করে চেয়ারে বসলাম। আবার বলল
ম্যাডাম: মুরাদ ভাই এখানে কি আপনার কোনো কাজ করতে অসুবিধা?
আমি: না।
ম্যাডাম: তাহলে সব সময় এমন মন মড়া হয়ে থাকেন কেনো?দুইদিন একেবারে বেশি। আমার মতে এই অফিসে আসার পর একমাত্র আমার সাথে আপনি কথা বলেছেন। কেনো? কারন জানতে পারি।
আমি: না। আমি শুধু আমার কাজ করবো।
ম্যাডাম: এমন কোনো মানুষ হয়। আপনার
বাইয়োতে দেখলাম আপনি বিবাহিত। আপনার ওয়াইফ এর সাথে কোনো সমস্যা হয়েছে।
আমি: সেরকমই ধরতে পারেন।
ম্যাডাম: এটা কোনো সমস্যা হলো । সেজন্য আপনি যাওয়ার সময় তার সবচেয়ে বেশি পছন্দের জিনিসটি নিয়ে যাবেন। দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি: হুম।
👉আমি চলে আসলাম। হিসেবে করে দেখলাম। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। পরদিন অফিস বন্ধ। তাই সময় করে রাতে এলাকায় আসলাম যাতে কেউ না চিনতে পারে শীতের রাত মুখে মাফলার জেকেট বেঁধে সাথে মাথায় কেপ দিয়ে। রাস্তায় হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে বাসার সামনে গেলাম বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আড় চোখে বেলকনিতে তাকাচ্ছি দেখি বাতি জ্বালানো। তার মানে নিলা এখানেয় আছে। সে কি কাঁদছে। নাকি হাসছে । সেটা যদি দেখে যেতে পারতাম। অপেক্ষা করি যদি বেলকনিতে আসে। বেশি অপেক্ষা করতে হলো না। না চাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়ে গেলাম যেটা দেখে
নিলার আসল মুখশ উন্মোচন হয়ে গেলো। দেখি তিনজন ছেলে আর চারজন মেয়ের সাথে নিলা হাসতে হাসতে বের হচ্ছে। যেটা দেখার জন্য আমি মুটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি ভাবলাম আমার ধারণা সব ভুল আমি ভাবছিলাম নিলা বোধহয় মন খারাপ করে বসে আছে। কিন্তু না নিলা নিলার মতো নির্বাচনের কাজ করছে। থাকুক সে তার নির্বাচন নিয়ে আমি থাকি আমার মতো আর নিলার চিন্তা মাথায় আনবো না। এলাকার নাম মুখে নিবো না।
আমি মন খারাপ করে বাসায় চলে আসলাম। সারারাত ঘুম নাই । কি করবো ? আমি নিলা কে ছেড়ে চলে আসলাম । অথচ আমি বেশি কষ্ট পাচ্ছি। আর এদিকে নিলা খুশিতে শেষ। শখের বশে গিয়েছিলাম সিনিয়র মেয়েকে বিয়ে করতে আবার সে বলে এলাকার ডন।। এমন ফালতু মেয়ে আমার কপালে জুটলো। সে বলে আমার বউ। ধুর ঘুমাই।
এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে যাই।
👉এদিকে নিলা কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। কারন মুরাদ কে ছাড়া নিলার এক মুহূর্তও ভালো লাগেনা। সারাদিন ঘরে নিলা একা। কিছু ভালো লাগে না। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করে না।
এখন নিলা মুরাদের অভাব হারে হারে টের পাচ্ছে। দুদিন ধরে নিলা নির্বাচনের কোনো কাজে যাচ্ছে না।
কারন তার মন ভালো না। কি বলবে গিয়ে নিলা?
ঐদিন রাতে নিলাকে তার সাথের লোকেরা দাওয়াত দিলো। নিলা বলে দিয়েছে আসতে পারবে না। কিন্তু হলো কি রাতে কয়েক জন বাসায় এসে হাজির। তাদের জোড়া জোড়িতে নিলা তাদের সাথে গেলো। সেখান থেকে এসে জোৎস্নাকে কল দিলো। জোৎস্না আসলো রাতে জোৎস্না সাথে ঘুমাই। দুজন শুয়ার পর জোৎস্না বলল।
জোৎস্না: এসব তুই ছাড়বি? এসব ছাড়লে দেখ মুরাদ তর কাছে ফিরেও আসতে পারে।
নিলা: সত্যি মুরাদ আবার আমার কাছে ফিরে আসবে।
জোৎস্না: যখন শুনবে তুই আর নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছিস না। তখন বুঝতে পারবে তুই মুরাদের কথা শুনছত।
নিলা: কি করে বুঝবো? সে কি এই দেশে আছে নাকি। নাকি নতুন বিয়া করে ফেলেছে।
এই বলে নিলা কেঁদে দিলো।
জোৎস্না: নিলা কাদিস না। তার জন্য দোয়া করবেন সে যেনো ভালো থাকে। দেখবি একদিন ঠিকি আল্লাহ তদের দুজনকে মিলিয়ে দিবে।
👉নিলা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে আর মোবাইল থেকে ছবি বের করে মুরাদ কে দেখছে। এসব দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে যায়। সকালে ওঠে নিলা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে অনেক কান্নাকাটি করে মুরাদকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
👉আমি পরদিন অফিসে যাই। গতকাল থেকে আজকে আমার মন বেশি খারাপ। অফিস শেষ করে চলে আসবো । একজন এসে বলে গেলো ম্যাডাম ডাকছে।
Waiting for next……..🥰