#ইচ্ছেপূরন
#পর্ব-৩
Farhana_Yesmin
বেশ অনেকক্ষণ যাবত বিভার কোনো সারা না পেয়ে বিছানা থেকে উঠে এলো আতিক। পাশের ঘরে উকি দিয়ে দেখলো বিভা নেই। কোথায় গেলো মেয়েটা, অফিসে? ভ্রু কুঁচকে ভাবতে ভাবতেই চোখ পড়লো ডাইনিং এর কোনায়। বিভা পরে আছে নিস্তেজ হয়ে। ইয়া,আল্লাহ! না চাইতেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো শব্দটা। মরে গেলো নাকি মেয়েটা? তাহলে তো পুলিশ কেস হয়ে যাবে? ভাবনাটা মাথায় আসতেই দৌড়ে এসে বিভাকে টেনে নিলো কোলের মধ্যে। দেখলো কপাল কেটে একপাশ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পরছে। তারাতাড়ি করে বিভাকে কোলে তুলে বেডরুমে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো। হাতে ধরে বিভার পালস চেক করলো। নাহ, চলছে এখনো। হাত ছেড়ে দিয়ে পাশের ড্রেসিল টেবিলে রাখা স্যাভলন আর তুলো দিয়ে বিভার কপালের কাটা যায়গাটা মুছে দিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে দিলো। টেবিল থেকে গ্লাসে করে পানি এনে বিভার মুখে পানির ছিটা দিলো। কিছুক্ষণের মধ্যে বিভার জ্ঞান আসলো। ও নড়তে শুরু করলো। আতিক বিভার মুখে হালকা চাপড় মারলো-
“বিভু,এই বিভু, চোখ খুলো। এই যে দেখো,আমি এখানে। বিভু…”
বিভা আস্তে আস্তে চোখ খুললো। সামনে আতিকের মুখ ঝুলছে। বিভা আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো। এই মুহুর্তে আতিক কে দেখতে ইচ্ছে করছে না ওর। আতিক ডেকে যাচ্ছে অনবরত-
“এই বিভু, ওঠো না। তাকাও না। আমি সরি বিভু, খুব সরি। তুমি জানো না, তুমি কথা না বললে আমার রাগ ওঠে? আমি যে রাগি এইটা তো তুমি জানো। তাও আমার সাথে এমন করো কেন? বিভু প্লিজ, মাফ করো আমাকে! আমি আর এমন করবো না, প্লিজ বিভু! এই দেখো তোমার পায়ে ধরতেছি, তাও মাফ দেও আমাকে। ”
আতিক সত্যি সত্যি বিভার পা জড়িয়ে ধরলো। না পারতে বিভা উঠে বসলো এবার, দূর্বল গলায় বললো-
“দেখি পা ছাড়ো তো? এতো নাটক কইরো না আর।”
“আমি নাটক করতেছি না, বিভু। সত্যি সত্যি সরি আমি। তোমাকে একদম মারতে চাই নাই। রাগ উঠে গেলো হঠাৎ। কালকের থেকে তুমি আমার সাথে কথা বলছো না! আমার শরীর এতো খারাপ ছিলো তবুও তুমি একটা বার আমাকে দেখলা না! সকালেও তো কথা বলতেছিলা না! আমি কি করতাম?”
অসহায় ভাব ফুটালো আতিক। আতিকের কথা আর কাজ দেখে বিভার গা জ্বলে গেলো। দাঁতে দাঁত চেপে জিজ্ঞেস করলো-
“আর কালকের ঘটনা? ওটার জন্য কি বলবে? এতোদিন ধরে আমার নাকের ডগার নিচ দিয়ে এসব চলছিলো আর আমি বোকা কিছুই বুঝলাম না?”
“তুমি ভুল বুঝছো বিভু! ওরা মিথ্যে বলছে তোমায়। আমি ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছিলাম। ঐ মহিলা যে এমন আমি মোটেও বুঝিনি? সত্যি বলছি! ঐ মহিলা মাঝে মাঝে আমাদের অফিসিয়াল কিছু ডিজাইনের কাজ করে। সেই হিসেবে ওর সাথে আমার পরিচয়। কালকে ঐ মহিলা আমাকে তার বাসায় ডাকলো ডিজাইন নেওয়ার জন্য। আমি সেই জন্যই কালকে ওনার বাসায় গেছিলাম। তুমি বিশ্বাস করো,বিভু? তুমি তো জানো, আমি তোমায় ভালোবাসি কতো?”
“জানি বলেই তো বিশ্বাস করতে পারছি না, আতিক! তুমি ভালোবাসার নাম করে আমার উপর অত্যাচার ছাড়া করেছো টা কি? বলো? কথায় কথায় গায়ে হাত, গালি দেওয়া? আর কাল তো সব লিমিট ছাড়িয়ে গেলো। যত যাই হোক, অন্তত এমনটা আশা করিনি তোমার কাছ থেকে? এতোটা নিচে কেন নামলে?”
“বিভু, বিশ্বাস করো আমাকে? আমি সত্যি এরকম কিছু করিনি? ওরা টাকা খাওয়ার জন্য সবাই মিলে মিথ্যে বলছিলো। দরকার হলো তুমি আমার অফিসে খোঁজ নাও? দেখো আমি মিথ্যে বলছি না সত্যি বলছি?”
“আবার মিথ্যা আতিক? ওরা বললো মহিলা স্কুল টিচার আর তুমি বলছো তোমাদের অফিসে ডিজাইনের কাজ করে। এতো মিথ্যা বলার কি দরকার?”
“একটুও মিথ্যে বলিনি। হ্যা মানলাম মহিলা টিচার কিন্তু বিশ্বাস করো সে আমাদের অফিসেও পার্টটাইম কাজ করে। তোমার বিশ্বাস না হয় তো রিয়াদকে জিজ্ঞেস করো? ও তো আমাদের অফিসে চাকরি করে?”
বিভা এবার একটু বিভ্রান্ত হয়ে গেলো। আতিক এতো কনফিডেন্টলি মিথ্যে বলবে নাকি? বিভা দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে গেলো। আতিকের কথাও ফেলতে পারছে না আবার কালকে নিজের চোখে দেখা আর কানে শোনাকে কিভাবে অস্বীকার করে? এটা ঠিক, আতিক ওর সাথে খারাপ ব্যবহার করে কিন্তু এরকম কোনো কিছু কখনো আতিকের মধ্যে দেখেনি। কি করবে বিভা? আতিক কে বিশ্বাস করবে? নাকি কালকের লোকগুলোর কথা বিশ্বাস করবে? বিভা কেবল দূর্বল শরীরে আরো একবার আতিককে বললো-
“পা ছাড়ো প্লিজ! এসব কেন করছো?”
“ছারবো না। সত্যি বলছি, আমি কালকে ফেঁসে গেছিলাম! আর আজকে না চাইতে তোমার গায়ে হাত তুললাম। তুমিও মারো আমাকে? মারো তো? কেন আমি আমার রাগ কন্ট্রোল করতে পারি না? কেন রাগ উঠলে তোমার গায়ে হাত তুলি? তোমাকে মারার পর আমার একটুও ভালো লাগে না, জানো? তবুও কিভাবে কিভাবে প্রত্যেকবারই তোমাকে মারি। ”
বিভা চুপচাপ বসে আতিকের র্কীর্তি দেখে। ওর একবার মনেহয় আতিক ওর সাথে অভিনয় করছে। আর একবার মনেহয় নাহ,সত্যি কথাই মনেহয় মন থেকে বলছে।
“বিভু,কিছু বলো না! তুমি কি এখনো আমাকে বিশ্বাস করছো না? আর কি করলে বিশ্বাস করবে বলোতো?”
“তোমার কথা যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে কালকে কিছু বললে না কেন? কাল কেন চুপ করে থাকলে? চাচ্চু যখন তোমাকে আনতে গেলো তখনও কিছু বললে না। চাচ্চু তো পুলিশ, সে নিশ্চয়ই তোমাকে হেল্প করতো?”
“তখন আমার মাথা কাজ করছিলো না বিভু! এতো মার খেয়েছি যে সব ভুলে গেছিলাম। এই দেখো কি অবস্থা করেছে আমার মেরে। অথচ তুমি আমায় ভুল বুঝে শুধু রাগ দেখালে, আমার রাগ উঠবে না বলো?”
আতিক নিজের শরীরটা এগিয়ে দিলো। পুরো পিঠে কালসিটে পরে গেছে, মুখ ঠোঁট ফুলে আছে। নিজের অজান্তেই বিভার হাত চলে গেলো আতিকের আঘাতের জায়গা গুলোতে। হাত বুলিয়ে দিলো আলতো করে। মেয়ে মানুষ বলে কথা! মনটা আর্দ্র হয়ে উঠলো মমতায়। হাজার হোক লোকটাকে ভালোবাসে বিভা! পৃথিবীর সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এই লোকটার কারনে, তুচ্ছ করেছে নিজের সম্মানটুকুও। কিভাবে এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে বিভা? ও পারেনা! কিছুতেই পারেনা! আর পারেনা বলেই বারেবারে আতিক সুযোগ নেয়, ওর ভালোবাসার, ওর দূর্বলতার। আতিক যেন বুঝে যায় বিভার মনের অবস্থা! তাই সে সুযোগ মতো আরেকবার বিভাকে পটানোর চেষ্টা করলো-
“বিভু, আমি সত্যি মন থেকে সরি। আমাকে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিয়ো না বিভু। মাফ করে দাও আমাকে। আর একটাবার সুযোগ দাও আমাকে?”
বিভা এবার একটু জোর করে আতিকের থেকে নিজের পা টা ছাড়িয়ে নেয়। বিছানা থেকে নামতে চায়-
“এসো খেয়ে নেই। আমার খুব খিদে পেয়েছে।”
এবার আতিকের মুখে হাসি ফোঁটে। বিভার খেতে ডাকা মানে ওর রাগ পড়ে গেছে।
“থ্যাংকু বিভু। আমাকে আরেকবার সুযোগ দেওয়া জন্য। দেখবে তোমাকে অভিযোগ জানানোর সুযোগ দিবো না আর।”
বিভা থামিয়ে দিলো আতিককে।
“আমি তোমাকে বিশ্বাসও করছি না অবিশ্বাস ও করছি না! তোমাকে সুযোগও দিচ্ছি না, সুযোগ কেড়েও নিচ্ছি না! আমি শুধু কিছুদিন আমার মতো থাকতে চাই। তুমি কি করেছো কি করোনি এসব নিয়ে যত কথা বলবো তত ঝামেলা বাড়বে। তবে হ্যা, তোমাকে আমি মাফ করতে পারবো না এতো সহজে। গতকালের ঘটনাটা তুমি যা বলছো সেরকম নয় অবশ্যই। যদি তা হতো তুমি তখন অবশ্যই কথা বলতে। সে যাই হোক, তোমার উপর আমার বিশ্বাসটা নড়বড়ে হয়ে গেছে এটাই সত্য। এখন বিশ্বাসটা তুমি কিভাবে ফেরত আনবে সেটা তোমার ব্যাপার! এখন দয়া করে খেতে এসো।”
আতিক আর কিছু বললো না। আপাতত বিভাকে ঠান্ডা করা গেছে এটাই অনেক। পরেরটা পরে দেখা যাবে। খেয়ে উঠে আতিক বিভাকে বললো-
“তোমার ফোনটা একটু দেবে? মার সাথে একটু কথা বলতাম?”
ভ্রু কুঁচকে তাকালো বিভা।
“আমারটা কাল ওরা রেখে দিয়েছে। ভাবছি আগামী দিন একটা নতুন ফোন কিনে নেবো। আজ তোমারটা থেকে কথা বলি।”
বিভা নিজের ফোনটা এনে আতিকের হাতে দিলো।
“চাচ্চু কালকে বিশ হাজার টাকা খরচ করেছে। কাল আগে তার টাকাটা ফেরত দেবে তারপর যা খুশি তাই করবে।”
“আচ্ছা, ঠিক আছে। কালকে চাচার টাকা দিয়ে দেবো।”
একটু তেলানো গলায় বলে আতিক।
বিভা টেবিলের সব খাবার দাবার গুছিয়ে তুললো। আতিক তখন মায়ের সাথে কথা বলছিলো। কথা শেষে বিভা ফোনটা নিয়ে ফেরত নিয়ে আসতে আতিক ওকে আটকালো-
“অফিস যাবে না?”
নিজের মাথার দিকে ইশারা করলো বিভা-
“এভাবে যাবো? সবাই তো প্রশ্ন করবে?”
“আচ্ছা, আজ রেস্ট নাও তাহলে! আগামীকাল যেয়ো। ”
বিভা জবাব না দিয়ে চলে আসতে নেয়-
“এখানেই শোও না। একা একা ভালো লাগে না।”
আতিকের কথার জবাব না দিয়ে পাশের রুমে চলে এলো বিভা। দরজা আটকে বিছানায় শুয়ে ওর বসকে ফোন লাগালো। জানালো আজ আর অফিস যাবে না।
শুয়ে শুয়ে ভাবছিলো বিভা, আতিকের এই ব্যাপারটা কিভাবে খোঁজ নেবে? আচ্ছা খোঁজ নিয়ে যদি জানতে পারে যে আতিক সব মিথ্যে বলেছে তখন কি করবে বিভা? ছেড়ে দেবে আতিককে? তিনটা বছর ধরে তিল তিল করে সাজানো সংসার ভেঙে ফেলবে? কত কষ্ট করে একটা একটা জিনিস কিনে দুজনে মিলে এই সংসারটা সাজিয়েছে ওরা! এই সবকিছু ছেড়ে দিতে পারবে কি এতো সহজে? যখন কেউ ছিলো না ওদের পাশে তখনও এতোটা অসহায় লাগেনি বিভার? তখন একটা মনোবল ছিলো লড়াই করার। কিন্তু এখন! এখন কেন জানি জোর পাচ্ছে কোন? আতিকের মার দেওয়াটা সহ্য করা গেলেও আপন পুরুষ এর পরনারী আসক্তি টা মানতে পারছে না কিছুতেই! নিজের বাবা মা বোন তো থেকেও নেই। কার কাছে মনের কথাগুলো বলবে? কার কাছে একটু সাহায্য চাইবে? চাচা তো সব দেখার পরেও মুখ ফিরিয়ে নিলো। এখন বাকি থাকলো ওর ননদরা। ননদরা তো ভালোই বাসে ওকে? কিন্তু ভাইয়ের এই ব্যাপারটা কি বিশ্বাস করবে? আর কেউ করুক না করুক মেঝো ননদ কনাপা নিশ্চয়ই করবে? ভাবলো কাল অফিস এর ফাঁকে একসময় কনাপার সাথে দেখা করতে যাবে। ওর বাসা যেহেতু অফিসের পাশে তাই ওখানে গেলে আতিক কিছু টের পাবে না। আতিকের ব্যাপারটা ওর বাড়ির কাউকে না কাউকে তো জানাতে হবে?
*******
দুপুরের লাঞ্চ ব্রেকে বিভা চলে আসলো ওর মেঝো ননদ কনার বাসায়। বোনদের মধ্যে এই কনা মেয়েটাই সবচেয়ে ভালো বোঝে বিভাকে। যথেষ্ট আদরও করে বিভাকে। তবুও আজ কনার বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে বুক কাঁপছে বিভার। দরজা খুলে বিভাকে দেখেই বুকে জড়িয়ে নিলো কনা। বিভা ফোনে আগেই জানিয়েছে কনাকে ওর আসার কথা-
“এসো বিভা, ভেতরে এসো। দুপুরে খেয়ে এসেছো? ”
“নাহ আপু। সময় নষ্ট করিনি, আবার অফিসে ফেরত যেতে হবে তো!”
“ওহ। তবে চট করে হাত ধুয়ে আসো। আমিও খাই তোমার সাথে। তারপর বাবুকে আনতে যাবো স্কুল থেকে।”
বিভা কথা না বাড়িয়ে টেবিলে বসলো। খেতে খেতেই কনা বললো-
“তুমি কি যেন বলবে বলেছিলে?”
“জ্বী আপু। খুব জরুরী বিষয়, আতিকের ব্যাপারে।”
“আতিক! ও আবার কি করলো নতুন করে?”
বিভা খাওয়া থামিয়ে ফটাফট গত দুদিনের ঘটনাগুলো বলে গেলো। কনা চুপচাপ শুনে গেলো শুধু। মাঝে মাঝে কিছু চাপা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। যেন সে জানতো এরকম কিছু একটা হবে। বলা শেষ করে বিভা প্রশ্ন ছুড়ে দেয় কনার দিকে-
“এখন আমি কি করবো,আপু? বলুন তো?”
“কি বলবো বলো তো? নিজের ভাই এরকম করছে শুনলে কি ভালো লাগে? এগুলো সব মায়ের কারনে বুঝলে? মা কখনো ওকে প্রপার শাসন করেনি। সব সময় অন্যায় আবদার মেনে নিয়ে নিয়ে ওকে এরকম বানিয়েছে। কি আর বলবো তোমাকে? তবে ঐ ব্যাপারটা কি তুমি সিওর হয়েছো? আতিক খারাপ জানি,তাই বলে এতো খারাপ? আতিক এতোটা নিচে নেমেছে এটা কেন জানিনা বিশ্বাস হয় না!”
“কিভাবে শিওর হবো আপু? ঐ মহিলাকে তো দেখতে পাইনি? মহিলা আগেই চলে গেছে। আতিক বলছে এলাকার লোকজন নাকি ওকে ফাঁসাচ্ছে? ”
“হতেও পারে! তবে তুমি রিয়াদের সাথে কথা বলে দেখতে পারো। আচ্ছা থাক তোমার ফোন দিতে হবে না, তুমি ফোন দিয়েছো জানলে আবার আতিক রাগ করবে। বরং আমি দেবো ফোন রিয়াদকে। আপাতত তুমি আর আতিককে কিছু বলো না। তবে ওকে চোখে চোখে রাখবে। ওর ফোনটা পারলে মাঝে মাঝে চেক করো। নেক্সট টাইম এরকম কিছু পেলে তখন না হয় আমরা ওকে নিয়ে বসবো? আর ও যেহেতু তোমার কাছে একবার সুযোগ চেয়েছে, তুমি ওকে একবার সুযোগ দাও। দেখো ওর কি এ্যাটিটুড? ”
বিভা আর কিছু বললো না। এছাড়া আর কি বা করতে পারে ও? সুযোগ দেয়া ছাড়া? আশেপাশে এতো দেখছে, একটা সম্পর্ক থেকে বেড়িয়ে আসবো বললেই কি বেড়িয়ে আসা যায়? কি করবে বেড়িয়ে এসে? কোথায় থাকবে? একা মেয়ে মানুষ সারভাইভ করা তো আরেকটা যুদ্ধ যেন! বাবা মা যদি সাথ দিতো তবুও না হয় কথা ছিলো? বাবার কাছে তো আবার মানসম্মান প্রিয়! মেয়ে স্বামীকে ছাড়বে এতে নাকি গ্রামে বাবার সম্মান নষ্ট হবে। তাই স্বামী যেমনই হোক তার সাথেই সংসার করো মুখ বুজে! আর তাছাড়া আতিক কখনো ওকে এতো সহজে ছেড়ে দেবে না, এটা ভালোই জানে বিভা। নিজের অহমে আঘাত লাগে এমন কিছু বরদাস্ত করবে না আতিক। বরং ওর জীবনটা ত্যানা ত্যানা বানিয়ে দেবে, বেঁচে থাকা অসম্ভব করে দেবে। এতোদিনে আতিককে এইটুকু অন্তত বুঝে গেছে বিভা!
চলবে—–