আমি_তোমার_গল্প_হবো,পর্ব:০৬,০৭
জাহান আরা
পর্ব:০৬
সন্ধ্যায় শবনম অশ্রু বিন্দুর রুমে গেলো।ওদেরকে পড়াবে এখন।
শবনমের কিছুটা ভয় লাগছে।আগে কখনো কাউকে পড়ায় নি,কোনো অভিজ্ঞতা নেই শবনমের।তার উপর যেই একটা মহাপ্রলয় বাসায় এসে হাজির,কে জানে কোনো ভুল দেখতে পেলে কি করে।
লেখাপড়ার ব্যাপারে শবনমের ভীষণ আগ্রহ।তাই শ্রাবণের কথা শুনে কোনো চিন্তাভাবনা না করেই রাজী হয়ে গেছে।
অশ্রু বিন্দু তখন পুতুল পুতুল খেলছিলো।শবনমকে রুম ঢুকতে দেখে দুই বোন ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
শবনম ওদের সামনে গিয়ে বললো,”চলো পড়তে বসবে,পড়া শেষ করে আবার খেলা।”
শবনমের কথা শেষ হবার আগেই দুই বোন দৌড়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে।পিছন পিছন শবনম ও গেলো ওদের ধরতে।
প্রলয় কাঁথা মুড়ি দিয়ে বসে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
হঠাৎ করে অশ্রু বিন্দুকে দেখে জিজ্ঞেস করলো,”কি হয়েছে?”
“আমরা আজকে পড়বো না মামা,আজকে তুমি এসেছো,আজকে আমাদের আনন্দের দিন।আজকে কোনো পড়ালেখা হবে না।”
পিছন পিছন শবনম ও এসে হাজির হলো প্রলয়ের রুমে।শবনম কে দেখে প্রলয় ভ্রু কুঁচকালো।তারপর বললো,”এখন তোদের ম্যাডাম আছে,আমি আর কি বলবো বল।ম্যাডাম কে বল যা বলার।”
দুই বোন অসহায়ের মতো তাকালো শবনমের দিকে।শবনমের খুব মায়া হলো।কিন্তু লেখাপড়া সবার আগে,এটা নিয়ে শবনম ছাড় দিতে রাজী নয়।তাই বললো,”আজ তোমরা স্কুলেও যাও নি,এখন পড়তে ও যদি না বসো তবে বিষয় টা কেমন হবে বলো? চলো,পড়তে চলো।”
মুখ ভার করে দুইবোন শবনমের পিছন পিছন চললো।
“এখন যদি পড়া শেষ করো তাহলে তোমাদের আমি একটা গল্প শোনাবো পড়ার পর।”
গল্পের কথা শুনে দুই বোন আগ্রহী হলো।
পড়ার টেবিলে বসে শবনম প্রথমে বাংলা বই হাতে তুলে নিলো।
.
রাহেলা বানু ছেলের রুমের দরজার সামনে এসে দেখেন প্রলয় এক মনে ল্যাপটপে কিছু করছে।রাহেলা বানু দরজার সামনে থেকে জিজ্ঞেস অওরলেন,”আসবো?”
মাথা না তুলে প্রলয় বললো,”এসো মা।”
বিছানার উপর বসে রাহেলা বানু ছেলের দিকে তাকালেন।এক মুখ দাড়ি-গোঁফ নিয়ে ছেলে বসে আছে।মাথার চুল কাঁধ ছাড়িয়ে গেছে।
তার দেবদূতের মতো ছেলের কেমন কেমন ছন্নছাড়ার মতো হয়ে গেছে।
ছেলের দিকে তাকিয়ে কোমল স্বরে বললেন,”তুই চুলদাড়ি কাটছিস না কেনো?
কেমন সন্নাসী সন্নাসী লাগে তোকে।”
প্রলয় মিষ্টি করে হেসে বললো,”তুমি বললে কাটবো মা।”
রাহেলা বানুর বুক কেঁপে উঠলো ছেলের হাসি দেখে।এতো বেশি সুন্দর কেনো ওর হাসি?
“পাঞ্জাবি পরেছিস যে আবার হঠাৎ করে?জুম্মাবার ছাড়া তো পাঞ্জাবি পরিস না কখনো। ”
“ঠিক করেছি এবার থেকে পাঞ্জাবি গায়ে দিবো মা।আজকে পাঞ্জাবি পরে আরাম পেয়েছি।”
“মা আমি একটু বাহিরে থেকে ঘুরে আসছি।”
রাহেলা বানুকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে প্রলয় বের হয়ে গেলো ল্যাপটপ অন রেখেই।।
ল্যাপটপের ওয়ালপেপারের দিকে তাকালেন রাহেলা বানু।মুহুর্তেই তার কলিজা মোচড় দিয়ে উঠেলো।বন্যার একটা ছবি ওয়ালপেপার দেওয়া।একেবারে জীবন্ত একটা ছবি।যেনো ওখানেই বসে আছে বন্যা। তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে।
বন্যার কি চোখ দুটো জলে টলমল করছে নাকি?
মেয়েটা কাঁদছে কেনো?
ব্যাকুল রাহেলা বানু উঠে গেলেন মেয়ের চোখ মুছে দেয়ার জন্য।
যতোই মোছার চেষ্টা করেন চোখের জল মোছা যায় না।বুকের ভিতর অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব করেন রাহেলা বানু।
কোথায় গেলো বন্যা!
কেনো এভাবে চলে গেলো?
.
পড়ালেখার পর্ব শেষ করে শবনম সোফায় এসে বসেছে।
অশ্রু বিন্দু দুই বোন শবনমের পায়ের কাছে বসে আছে মোড়ায়।রাহেলা বানু টেবিলে খাবার সাজাচ্ছেন।
“এক দেশে ছিলো এক রাজকুমারী। রাজকুমারীর নাম ছিলো স্নো হোয়াইট।রাজকুমারী ছিলো খুবই সুন্দর। বরফের মতো সুন্দর হওয়ায় তার নাম রাখা হয় স্নো হোয়াইট। ”
“আন্টি,স্নো হোয়াইট কি তোমার মতো সুন্দর ছিলো?”
“না মা,আমার চেয়ে বেশি সুন্দর ছিলো।”
অশ্রু বললো,”না না,আন্টি হবে না,তুমি বেশি সুন্দর। ”
শবনম হেসে ফেলে ওদের এরকম কথা শুনে।কলিং বেলের শব্দ শুনে রাহেলা বানু শবনম কে ডেকে বলে দরজা খুলে দিতে।
শবনম উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।শবনমের সামনে দারুণ আছে সাদা পাঞ্জাবি পরা এক যুবক। চাপ দাড়ি,সাদা পাঞ্জাবি,মাথায় ঘন চুল,শবনমের বুক কেঁপে উঠলো।
শবনম কে হা করে থাকতে দেখে প্রলয় বললো,”এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো বুয়া?
চিনতে পারো নি নাকি?
আমি প্রলয়,চুল কেটে এসেছি,গোফ দাড়ি ছোট করে এসেছি তাই চিনতে পারছো না মনে হয়। ”
প্রলয়ের মুখে বুয়া ডাক শুনে একটু আগে প্রলয়ের জন্য জন্মানো ভালোলাগা কিছুটা ফিকে হয়ে গেলো। বিরক্তিতে “চ” শব্দ করে শবনম সরে গেলো।
শবনম বুঝতে পারছে না এতো সুন্দর একজন মানুষের ব্যবহার এতো খারাপ কেনো?
প্রলয় সোজা নিজের রুমে চলে গেলো। তারপর একটা ট্রাভেল ব্যাগ এনে সবাইকে ডাকলো।
ব্যাগ থেকে দুটো ড্রেস,দু জোড়া জুতো বের করে অশ্রু বিন্দুর দিকে বাড়িয়ে দিলো।
সিনড্রেলার মতো জামা চাই বলে অনেক দিন আগে আবদার করেছে,আজ মামা তেমন জামা এনেছে দেখে দুই বোন খুশিতে লাফাতে লাগলো।
একটা কমলা রঙের শাড়ি আর ব্যাগ বের করে মর্জিনার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,”মর্জিনা বু,এবার খুশি তো।এবার কিন্তু কমলা রঙের শাড়ি এনেছি।”
মর্জিনা খুশিতে রাহেলা বানুকে টুপ করে সালাম করে ফেললো পায়ে হাত দিয়ে।
প্রলয় মর্জিনার দিকে তাকিয়ে বললো,”এটা কিন্তু ঠিক করো নাই বুবু,পায়ে হাত দিয়ে সালাম দেওয়ার কোনো বিধান নেই ইসলামে।এটা পুরোপুরি বিধান বহির্ভূত কাজ।মুসলমান মাথা নত করবে একমাত্র আল্লাহর কাছে।কাউকে খুশি করার জন্য আর কখনো এভাবে সালাম দিবে না।”
শবনমের ভীষণ ভালো লাগলো প্রলয়ের এরকম সোজাসাপটা কথা।
রাহেলা বানুর জন্য আনলো একটা ডায়মন্ডের একটা নেকলেস,সেই সাথে ম্যাচিং করে একটা সাদা আর সিলভার শাড়ি।
সবাইকে সব কিছু দিয়ে প্রলয় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। শবনমের জন্য কিছু আনা হয় নি।
শবনম বুঝতে পারলো প্রলয় বিব্রতবোধ করছে।
রাহেলা বানুকে বললো প্রলয়,”মা নতুন বুয়া নিয়েছো তা তো জানি না আমি,তাই কিছু আনা হয় নি।আমি কাল ওকে নিয়ে শপিং এ যাবো ভাবছি।”
“সমস্যা কি,যাস।আর বুয়া বুয়া করছিস কেনো,এটা কেমন অসভ্যতা প্রলয়?”
“দূর মা,ওই একই কথা।”
শবনমের কান লাল হয়ে গেলো প্রলয়ের এরকম কথা শুনে।এই লোক এতো বাজে কেনো?
কিছুতেই শবনম যাবে না এর সাথে।
চলবে?
#আমি_তোমার_গল্প_হবো
পর্ব:০৭
জাহান আরা
শ্রাবণী অধীর হয়ে অপেক্ষা করছে এতোক্ষণ ভাইয়ের জন্য।কখন শ্রাবণ আসবে বাসায় আর শ্রাবণী প্রলয় ভাইয়ের কথা জানতে পারবে।
শ্রাবণ বাসায় ফিরলো মিষ্টি নিয়ে।
শফিক সাহেব একটা ম্যাগাজিন পড়ছেন বসে বসে,রাবেয়া বানু আর বাসার হেল্পিং হ্যান্ড রেশমা বসে বসে সিরিয়াল দেখছে।
ইতোমধ্যে সিরিয়ালে বউ শাশুড়ির ঝগড়া শুরু হয়ে গেছে।শাশুড়ি অযথাই বউটাকে নিয়ে বাজে কথা বলছে।বউয়ের কান্না দেখে রাবেয়া বানু নিজেও কেঁদে উঠলেন।
শফিক সাহেব শীতল দৃষ্টিতে নিজের স্ত্রীর দিকে তাকালেন।তার তাকানোর মানেটা ছিলো রাবেয়া বানুকে বুঝনো
“হাউ ষ্টুপিড ইউ আর ওল্ড লেডি”
আশ্চর্য!
রাবেয়া বানু বুঝে গেলেন স্বামীর মনোভাব। সাথে সাথে মুখ ঝামটা দিয়ে বললেন,”খবরদার তোমার ওসব ইংরেজি গালি আমাকে দিবে না।একেবারে ইংরেজি জেনে এমন ভাব নিচ্ছো যেনো তুমি ইংলিশ ম্যান।”
শফিক সাহেব অত্যন্ত আশ্চর্য হলেন স্ত্রী তার মনের কথা বুঝে গেছে ভেবে।
কলিং বেলের শব্দ শুনে রেশমা উঠে দরজা খুলে দিলো।শ্রাবণ দাঁড়িয়ে আছে মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে।
ছেলেকে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে আসতে দেখে রাবেয়া বানু কিছুটা অবাক হলেন।
শ্রাবণ প্যাকেট খুলে একটা মিষ্টি নিয়ে আগে বাবাকে খাওয়ালো,তারপর মা’কে।
রাবেয়া বানু ছেলের দিকে তাকিয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলেন।তারপর বললেন,”হঠাৎ মিষ্টি কেনো?
বিয়েসাদী কি সেরে ফেললি না-কি?
খবরদার,আমাকে না জানিয়ে যদি বিয়ে করে বসে থাকিস তবে খুব খারাপ হবে।
আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছেলের বিয়েতে পার্লারে যাবো।ইচ্ছেমতো সাজবো।”
লজুক নয়নে মায়ের দিকে তাকিয়ে শ্রাবণ বললো,”মা যে কি বলো না,তোমাকে না জানিয়ে কেনো বিয়ে করবো।এমনিই আজকে হাতে কিছু টাকা এলো,ভাবলাম তোমাদের জন্য মিষ্টি নিয়ে আসি।আব্বার তো আবার ক্ষীরভোগ মিষ্টি ভীষণ প্রিয়।”
শ্রাবণী মুখ ভেংচি দিয়ে বললো,”আমার টাকা দিয়ে আসছে বিলাসিতা দেখাতে,ফকিন্নি একটা। ”
শ্রাবণ মিষ্টি নিয়ে বোনের সামনে গেলো।তারপর ফিসফিস করে বললো,”শ্রাবণী রে তোর ভাবী তো পেয়ে গেছি,এটা সেই খুশির মিষ্টি।”
ভাইয়ের কথা শুনে শ্রাবণী মুখ ঝামটা মেরে উঠে। তারপর বলে,”হু, চাপা আরকি!
তোর মতো বস্তির সাথে কে রে প্রেম করবে?”
“একবার শুধু সেটিং করে নিই,তারপর তোকে দেখাবো।”
খাওয়া দাওয়ার পর শ্রাবণী ভাইয়ের রুমে গেলো।শ্রাবণ তখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে গ্রুপ মেসেজে।
শ্রাবণী গেলো শ্রাবণের জন্য এক কাপ চা নিয়ে।লজ্জায় প্রলয়ের কথা জিজ্ঞেস করতে পারলো না।
কিছুক্ষণ উসখুস করতে করতে এদিক ওদিক তাকালো।শ্রাবণের একটা পা কোলে নিয়ে টিপে দিতে লাগলো।এক চুমুকে সবটা চা খেয়ে খেঁকিয়ে উঠে শ্রাবণ বললো,”যা ভাগ এখান থেকে,খাই না তোর চা,আমার এতো সেবা করতে হবে না।আমার পা ব্যথা নেই।”
কি করবে বুঝতে না পেরে উঠে গিয়ে আলতো হাতে ভাইয়ের চুল টেনে দিতে লাগলো। লজ্জায় কিছু বলতে পারছে না ভাইকে।
কিছুক্ষণ চুল টানার পর আরামে শ্রাবণের চোখ লেগে এলো।ফোন হাত থেকে রেখে শুয়ে পড়লো শ্রাবণ।
শ্রাবণী কিছু জিজ্ঞেস করতে পারলো না।দুরু দুরু বুক কাঁপছে শ্রাবণীর।
শ্রাবণ ঘুমিয়ে যেতেই শ্রাবণী ভাইয়ের পাশে বসে তাকিয়ে রইলো।তারপর ভাইয়ের কপালে হাত রেখে বিড়বিড় করে বললো ,”আমার এই রাজকুমারের মতো ভাইটার কপালে একটা রাজকুমারী জুটিয়ে দিও আল্লাহ।সে যেই মেয়েকে
ভালোবাসবে,সেই মেয়ের জীবন ধন্য হয়ে যাবে আমি জানি।
এই পাগলটা যেনো একটা সত্যিকারের ভালো মানুষ পায়।খারাপ কেউ হলে যে আমার ভাই সহ্য করতে পারবে না।ওর মনটা ভীষণ নরম,অল্পতেই ও ভেঙে পড়বে।”
শ্রাবণী উঠে চলে যেতেই শ্রাবণের মুখে মুচকি হাসি ফুটে উটলো।ভাইবোনের সম্পর্কের মতো নিষ্পাপ আর মধুর সম্পর্ক পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই।
রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিতেই শ্রাবণী অবাক হয়ে গেলো। শ্রাবণ মেসেজ দিয়েছে কিছুক্ষণ আগে।
“চা একেবারে বাজে হয়েছে,এরচেয়ে ভালো চা বানাতে পারে তোর ভাবী।শুধু চা পাতা,দুধ,চিনি মেশালেই চা হয় না।ও আসলে তোকে বলবো টানা তিন মাস চা বানানো শিখাতে।অবশ্য চা বানানোর মতো একটা আর্ট তোর মতো গাঁধি রপ্ত করতে পারবে কিনা কে জানে!
রাগ করছিস মনে হয়?
তাহলে একটা খুশির খবর শোনাই এবার।
প্রলয় বাসায় এসেছে।”
অন্য সময় হলে শ্রাবণী ভীষণ রেগে যেতো।কিন্তু আজকে রাগলো না।কেমন আনন্দ লাগছে শ্রাবণীর হঠাৎ করে। নিজেকে মনে হচ্ছে মুক্ত বিহঙ্গের মতো।
প্রলয় ভাই এসেছে!
কালই শ্রাবণী খালার বাসায় হাজির হবে গিয়ে।
ইশশ,ভাবতেই লজ্জা লাগছে শ্রাবণীর।প্রলয় ভাইকে কাল দেখবে,কতো দিন দেখে নি।কাল মনে ভরে দেখে নিবে।
বাকী রাত শ্রাবণী আর ঘুমাতে পারলো না।উত্তেজনায় ঘুম আসছে না শ্রাবণীর।
ঘুম এলো শেষ রাতের দিকে।তখনই শ্রাবণী স্বপ্নটা দেখলো।
দেখলো সে হেটে যাচ্ছে প্রলয়ের পিছন পিছন। হঠাৎ করে একটা কালো ছায়া এসে প্রলয় কে গ্রাস করে ফেলছে,শ্রাবণী বুঝতে পারছে এই ছায়া পুরোপুরি প্রলয় কে ডেকে ফেললে প্রলয় মারা যাবে,কিন্তু শ্রাবণী কিছু করতে পারছে না।
পাশ থেকে কে যেনো ভীষণ চেষ্টা করছে প্রলয় কে মুক্ত করতে,কিন্ত পারছে না।মেয়েটার গলার স্বর শুনতে পাচ্ছে শ্রাবণী। কিন্তু দেখছে তাকে।শুধু অনুভব করতে পারছে একটা মেয়ে আছে সেখানে।আর শ্রাবণীর হাত পা সব কিছুতে জড়তা এসে গেছে।শ্রাবণী কিছুতেই হাত পা নাড়াতে পারছে না,প্রলয়কে বাঁচানোর চেষ্টা করবে তো পরের কথা সেটা।
অচেনা সেই মেয়েটার আহাজারি শোনা যাচ্ছে,কি ভীষণ অস্থির হয়ে কাঁদছে মেয়েটা।
অথচ শ্রাবণী কাঁদতে ও পারছে না।
শুধু বুঝতে পারছে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে তার।ভীষণ,ভীষণ,ভীষণ কষ্ট!
ঘুম ভাঙতেই শ্রাবণী দেখতে পেলো ঘামে পুরো শরীর ভিজে আছে ওর।
এই শীতে ও শ্রাবণী ভিজে জবজবে। কি ভয়ংকর একটা স্বপ্ন দেখেছে সে এটা!
কি মানে এই স্বপ্নের!
দ্রুত গিয়ে ডাইনিং টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি খেলো শ্রাবণী। তারপর বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।অন্ধকার কেটে আলো হতে শুরু করেছে আস্তে আস্তে।
বিষন্ন মন নিয়ে শ্রাবণী দেখতে লাগলো সকাল হওয়া।
তার জীবনে এরকম আলোমাখা সকাল কবে আসবে?
চলবে….?