নিরব সে,২৪শ পর্ব

নিরব সে,২৪শ পর্ব
সাদিয়া_সৃষ্টি

–আপনি কি করছেন বলবেন?

–দেখছ না, খুঁজছি।

–সেটা তো দেখতেই পারছি, নতুন বাড়িতে আসার পর থেকে শুধু কি একটা খুজেই চলেছেন আমাকে বসিয়ে রেখে।

–তাহলে চুপচাপ বসে থাকো এবার আর আমাকে খুঁজতে দাও।

–আমাকে বললে আমি সাহায্য করতাম।

–সেটা লাগবে না সম্মানীয় পত্নী। আমি আছি না? শাহ রুখ খানের মতো করে বললে, ‘মে হু না’ ।

–অতো নকল করা লাগবে না। অন্তত এখন সেটা পেয়ে গেলে ছাম্মাক ছালো গান গাওয়া শুরু করবেন না খুশিতে।

–ওয়াও, গ্রেট আইডিয়া। গাওয়াই যায়। তুমি তো নাচতে পারবা না, নাহলে তোমাকে দিয়ে নাচাতাম।

–ধ্যাত। আপনিও না…

–আমি কি?

–আপনি ডাক্তার। হুহ।

–তোমার প্রেগন্যান্সির মধ্যে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে জিনিয়া, কন্ট্রোল ইওরসেলফ। নাহলে বাবুও মায়ের মতো রাগী হবে। অবশ্য আমার মতো সুইট হলেও আমি মাইন্ড করব না। তবে যাই বল, আমার বাবুর যখন নাতি নাতনি হবে তখন আমরা দুজন মিলে আমেরিকা ট্রিপে যাব, ওকে?

–বাবুর নাতি- নাতনী?

বলেই কাশা শুরু করল জিনিয়া। ওয়াফিফ পানি এনে তার সামনে ধরল। পানি পুরোটা পান করে জিনিয়া জবাব দিল,

–আপনি খুঁজতে থাকুন, আমি বসে আছি, আর কথা বলছি না।

ওয়াফিফ আর কোন কথা না বলে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। কিছুক্ষণ পর না খুঁজে পেয়ে জিনিয়ার কাছে এসে বলল,

–দেখ, বাড়ি ঘুরে দেখতে পারো, আমি বাইরে যাচ্ছি এখন, তোমার পরার জন্য কোন জামা খুঁজে পেলাম না, তাই কিনতে যেতে হবে, তুমি এখন সাবধানে থাকবে আর কিছু লাগলেই আমাকে ফোন করবে। এক সেকেন্ডও দেরি না করে, মনে থাকে যেন। যদি আগের মতো ১ ঘণ্টা ভাবার পর ফোন দেও তাহলে তোমার ১ দিন তো আমার যতদিন লাগে। আর কিছু লাগলে এখনই বলে দেও। আর না লাগলে আমি এখন গেলাম।

–আচ্ছা।

ওয়াফিফ নিজে দরজা খুলে চলে গেল জিনিয়ার জন্য জামাকাপড় কিনতে। জিনিয়াও দরজা লাগিয়ে দিয়ে ঘরটা ঘুরে ঘুরে দেখা শুরু করল। শুনেছে এখান থেকে ওয়াফিফের হাসপাতাল কাছে। আগে যখন ওয়াফিফের নাইট ডিউটি থাকত কিংবা বাসায় যেতে পারতো না কোন কারণে তখন এখানে থাকত। আগে যাই হোক, অনেক দিন ধরেই এই ফ্ল্যাট তালা দেওয়া ছিল। তাই ধুলোবালির অস্তিত্বও রয়েছে তাই। জিনিয়া ভাবল ঘরটা পরিষ্কার করবে। কিন্তু জিনিয়ার পা তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দিল না। বেশির ভাগ সময় বিশ্রাম নেওয়ার ফলে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে তার। তাই সে বসে পড়ল একটা জায়গায়। নিজের পায়ের দিকে তাকাল। আজ হাঁটা একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে। আফিয়া রহমান জিনিয়ার সব খেয়াল রাখত। জিনিয়াকে হাঁটার ক্ষেত্রে তার কড়া নিয়ম ছিল। জিনিয়া রোজ কত টুকু হাঁটবে সেটা উনি নিজে খেয়াল রাখতেন। তার কথা মনে পড়তেই জিনিয়ার চোখে পানি চলে এলো। এই ভয়টাই সে পেয়েছিল এতদিন ধরে। আর আজ সেটা সত্যিও হয়ে গেল। সে জানতো এমন কিছু হবে কিন্তু ওয়াফিফ যে আফিয়া রহমানকে ঠাণ্ডা করতে সোজা বাড়ি ছেড়ে চলে আসবে, এটা বুঝতে গিয়ে বা মানতে গিয়ে বেশ সময় লেগেছে। জিনিয়া তো বিশ্বাস করতে পারে নি ওয়াফিফ এমন কাজ করবে। তার বিশ্বাস তখন হল যখন সে এই ফ্ল্যাটে পা রাখল। ফ্ল্যাটটা বেশ সুন্দর। বেশি ছোট না, আবার বেশি বড়ও না। দুই বেডরুম আর সাথে এক ডাইনিং আর ড্রয়িং রুম। রান্নাঘর ডাইনিং রুম এর সাথেই। ৩-৪ সদস্যের পরিবার অনাসায়ে সেখানে থাকতে পারবে। জিনিয়া সেখানে বসেই ওয়াফিফের আসার অপেক্ষা করতে থাকল। এর মধ্যে আফিয়া রহমানকে ফোন করার কোথাও ভেবেছে, কিন্তু সাহস পায় নি।

অন্যদিকে আফিয়া রহমান সেখানেই ছিলেন। কিছু সময়ের মধ্যে ফারহান রহমান ও চলে আসেন। বাড়ির সবাই এসে যখন অনেকটা সময় ধরে ওয়াফিফ আর জিনিয়াকে দেখে না তখন তারা আফিয়া রহমানকে জিজ্ঞেস করে। আফিয়া রহমান তাদেরকে সবটা খুলে বললে সবাই একই কথা বলে, এটা করা ঠিক হয় নি। এই ক্ষেত্রে কেউ জিনিয়াকের বা ওয়াফিফকে দোষ দেয় নি। বরং জিনিয়াকে পরিস্থিতির শিকার হিসেবে মেনে নিয়েছে আর ওয়াফিফের কাজকে সঠিক বলেছে। মিনা মিলা আর আরিফ পরিবারের ছোট সদস্য বলে কিছু বলতে পারে নি বড়দের মুখের উপর। কিন্তু তারাও ওয়াফিফকে সাপোর্ট করেছে। মিনা তো প্রায় কান্না করার পথে। আরিফ তাকে সামলাচ্ছে, এদিকে মিনার কান্না কান্না ভাব দেখে আসফি কান্না করা শুরু করে দিয়েছে। সুফিয়া ভাবি তাকে নিয়ে অন্য রুমে চলে গেল আর যাওয়ার আগে ইশারায় আফরান কে সব সামলাতে বলে গেল।

ফারহান রহমান শুরু থেকেই আফিয়া রহমানকে একই কথা বোঝাচ্ছেন। বাচ্চাদের সামনে কথা বলতে চান না বলে তিনি আগেই আফিয়া রহমানকে নিয়ে নিজের রুমে গিয়েছেন। বাকিদের বলেছেন তিনি সবটা সামলে নেবেন। আফিয়া রহমান ঠিকই আছেন। সবটা ঠিক মনে করলেও মানতে নারাজ। তিনি ৫০% – ৫০% অবস্থায় আটকে আছেন যেন। নিজেই বুঝতে পারছেন না কি করা উচিত আর কি না। ওয়াফিফের কথায় তিনি সায় দিলেও মন মানতে চাইছে না। তাই নিজেকে কিছুটা সময় দিতে চান বলেই বিছানায় শুয়ে পড়লেন। ফারহান রহমান ও আর কথা বাড়ালেন না।


ওয়াফিফ নিজের ফ্ল্যাট থেকে হাসপাতালে যাওয়া আসা করে। এদিকে ঘর বদলে একটা সুবিধা পাচ্ছে সে। যখন তখন বাড়িতে এসে জিনিয়া চমকে দেয় সে। ওরা আফিয়া রহমানের সাথেও কথা বলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এবার আফিয়া রহমান নিরবতা পালন করেন। হ্যাঁ ও বলেন না, না ও বলেন না। তাই ওয়াফিফ রা নিজের বাড়িতে ফিরে আসতে পারছে না আফিয়া রহমানের অনুমতি না পেয়ে। সবাই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু তিনি কিছুই বলেন না। ওয়াফিফ আফিয়া রহমানের সাথে দেখা করলেও জিনিয়া তারপর থেকে আর দেখা করে নি। তবে ওয়াফিফকে ছবি তুলে আনতে বলত। সামনে যাওয়ার সাহস নেই, তবে ছবি তো দেখতেই পারে। মাঝে মাঝে পরিবারের অন্যরা এসে দেখা করে যায়।

ভাবনার মাঝেই দরজার বেল বেজে ওঠে। জিনিয়া গিয়ে দরজা খুলে দেয়। ওয়াফিফ কে দেখা মাত্রই সে হেসে ফেলে। ওয়াফিফের দুই হাতে বাজারের ব্যাগ। নিজের মুখ দিয়েও একটা ছোট ব্যাগ ধরে রেখেছে। এটা দেখে যত বেশি হাসি তার পেয়েছে, তার থেকেও বেশি হাসি লাগছে এই দেখে যে ওয়াফিফ লুঙ্গি পরে বাজারে গিয়েছে। আজ পর্যন্ত সে ওয়াফিফকে লুঙ্গি পরতে দেখে নি। একবার শুধু বলেছি,

”আচ্ছা, আপনি ধরেন একদিন লুঙ্গি পরে বাজারে গেলেন।”

এই কথাটাও সত্য করে দিল ওয়াফিফ। বেচারা লঙ্গি ভালোই পরেছে। তখনও যে খুলে পড়ে যায় নি এটাই অনেক। ওয়াফিফ দ্রুত বাজারের ব্যাগ নিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ল। তারপর আবার দরজার বাইরে গেল। জিনিয়া অবাক হয়ে তাকাল তার দিকে। বাইরে আবার কি? সে দেখল ওয়াফিফ দরজার কাছে আরও ব্যাগ রেখেছে। সেটা বাড়ির ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। তারপর ফ্যানের স্পিড বাড়িয়ে দিয়ে সোফায় হাত পা ছড়িয়ে বসে পড়ল। জিনিয়া হেসে তার সামনে এসে দাঁড়াল। ওয়াফিফ জিনিয়ার অনবরত হাসি দেখে ইশারায় জানতে চাইল কি হয়েছে। জিনিয়া বলল,

–নিজের মুখে ধরে থাকা ব্যাগটা তো নামান।

বলতে বলতে নিজেই সেটা সরিয়ে দিল।

–ওহ এটা? এটা কিছু না । আমি তো মুখে করে ৫০ কেজির বস্তাও ধরে রাখতে পারব।

এটা শুনে জিনিয়া এমন ভাবে তাকাল যেন সে বলতে চাইছে,

”আগে করে দেখান তো?”

ওয়াফিফ কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে বলল,

–আরে, আমি তো মজা করছিলাম, সিরিয়াসলি নিচ্ছ কেন?

ওয়াফিফের বলার ধরণ দেখে জিনিয়া আবার হেসে ফেলল।

ওয়াফিফ জিনিয়াকে ধরে নিজের পাশে বসালো তারপর তার সাথে নানান কথায় মেতে উঠল।

কথোপকথনের এক পর্যায়ে জিনিয়া নিজেও বলে উঠল,

–আচ্ছা, ডাক্তার সাহেব, আমি আপনার কে হই?

–বউ। কেন?

–নাহ, কিছু না।

জিনিয়ার চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। দেখে মনে হচ্ছে সে এই উত্তরে খুশি হয় নি, সে অন্য কিছু জানতে চেয়েছিল। জিনিয়ার হতাশ চেহারা দেখে ওয়াফিফ বলে উঠল,

–জিনিয়া , তুমি কি আমাদের মধ্যে কি সম্পর্ক, সেটা জানতে চাচ্ছো?

এই কথা শুনে জিনিয়া চোখ তুলে ওয়াফিফের দিকে তাকাল। তার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠল, যেন সে এটাই চাইছিল। ওয়াফিফ সেটা বুঝতে পেরে জবাব দিল,

–তাহলে আমি বলব, তোমার আমার মধ্যে কি সম্পর্ক সেটা আমি নিজেও জানি না। এটা যদি ভালোবাসা দিয়ে প্রকাশ করতে বল তাহলে আমি বলব যে না, এটা ভালোবাসা কি না আমি জানি না। তবে ভালোবাসা ছাড়াও পৃথিবীতে আরও অনেক অনুভূতি আছে। ভালোবাসা ছাড়াও কিন্তু মানুষ বেঁচে থাকে। ভালোবাসা মানে আমার কাছে বিশ্বাস, ভরসা, কেয়ার, রাগ অভিমান, সব অনুভূতির সংমিশ্রণ। সেখানে তোমার প্রতি আমার সব অনুভূতি আছে, আর শুধু তাই না, পরিমাণে অনেক বেশি করেই আছে। তাই এটাকে আমি কোন নাম আজ পর্যন্ত দেই নি কিংবা না দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তবুও তুমি যদি নাম দিতেই চাও, তবে আমি বলব, ভালোবাসার চেয়েও বেশি কিছু।

ওয়াফিফের কথাগুলো শুনতেই জিনিয়ার মুখে এক প্রশস্ত হাসি খেলে গেল। ওয়াফিফ আবার বলে উঠল,

–ম্যাডাম, শুধু অনুভব করলেই হয় না, প্রকাশ ও করতে হয়। আপনি যতক্ষণ নিজের মুখে না বলবেন, ততক্ষণ অপর পক্ষ দোটানায় থাকবে। তাই নিজের কথাগুলো নিজের মধ্যে দাবিয়ে না রেখে আমার উপর অধিকার খাটাবেন। বলবেন, ওয়াফিফ এটা করো, ওটা করো, কিংবা হঠাৎ করে বলবেন, আপনি আমাকে নিয়ে কি ফিল করেন। নাহলে আমি কি কি ভাবতে পারি সেটা আশা করি বলা লাগবে না। আগেও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে তাই আমি নিজেকে ঠিক রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু আপনি যদি সব সময় নিরব থাকেন তাহলে আমি ও মৌনব্রত পালন করব, বুঝলেন?

জিনিয়া এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ওয়াফিফের হাতে মারল। ওয়াফিফ হেসে বলে উঠল,

–হ্যাঁ, এভাবে মারতেও পারো, আমি কিছু মনে করব না। তবে ধীরে মেরো, জোরে না।


ওয়াফিফ নিজের হাসপাতালের কাজে বাইরে যাচ্ছে, সেখানে কয়েকদিন থাকতেও পারে। বলা যায় না। ওয়াফিফ জিনিয়াকে শুধু এটুকুই বলেছে। জিনিয়া মন খারাপ করে বসে আছে। ওয়াফিফ জিনিয়াকে দেখে ভাবছে কি করে জিনিয়াকে খুশি করা যায়। জিনিয়ার ডেলিভারি হতে আর ১ সপ্তাহ বাকি। আর এখন সে অন্য শহরে নিজেও যেতে চাচ্ছে না। কিন্তু যাওয়ার আর কেউ নেই। তাকেই যেতে হবে। সেখানে কোন এক রোগীর চিকিৎসার জন্য। তাই ওয়াফিফ কিছু না ভেবেই গান গাওয়া ধরল।

”জানাম দেখ লো, মিট গায়ি , দুরিয়া।

মে ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা

কেইসি সারহাদে, কেইসি মাজবুরিয়া

মে ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা

জানাম দেখ লো, মিট গায়ি , দুরিয়া।

মে ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা হু, ইয়াহা ”

জিনিয়া অবাক হয়ে গেল, এমন সময় ওয়াফিফের এই গান কেন মনে হল? সে বলল,

–এসব আপনি কি গাচ্ছেন?

–তাহলে কি অন্য গান গাইব? যেমন

‘রুপ তেরা মাস্তানা, প্যায়ার মেরা দিওয়ানা, ভুল কায়ি হামসে না হও জায়ে।’

–হুর।

–বিবি সাহেবার পছন হয় নি? আমি অন্য কিছু গাইব?

‘এত কাছে দু’জনে/ প্রেম ভরা যৌবনে

হঠাৎ ভুলে ভুল না হয়ে যায়’

–দিন দিন বুড়ো হচ্ছে, কিন্তু শখ কত? কি সব গাইছেন? তার ছিঁড়ে গেল নাকি মাথার?

–হেই, বুড়ো কাকে বলছ? এখন আমার উপর কত মেয়ে ক্রাশ খায় জানো? আমি শুধু হাসপাতালে হেঁটে যাই আর কর ডাক্তার আর নার্স এমনকি পেশেন্টও পড়ে যায়।

–জানি তো, ওদের সাথে প্রেম করতে যাচ্ছেন।

–ওকে ওকে, এখন রাগ করো না।

–আগে আপনি দূরে যান তো, এতো কাছে দারিয়েছেন কেন?

–সেই জন্যই তো গাচ্ছিলাম- এতো কাছে…

–চুপ চুপ, হাহ। আপনি কথা মানুষের হাড়ের হিসাব করবেন কি না কত কাছে দারিয়েছেন এটা হিসাব করছেন? যান তো, এখন দেরি হচ্ছে না আপনার?

–ওকে বাবা, আমি রেডি, আমি এখন আসছি, দ্রুতই চলে আসব, এই কয়দিনে রাহেলা খালা এসে থাকবে তোমার সাথে, বুঝছ? নিজের খেয়াল রাখবা সাথে বাবুরও। বাবু আর বাবুর আম্মু যেন ঠিক থাকে।

–আচ্ছা।

জিনিয়া তখনও লজ্জায় লাল নীল হওয়ার অবস্থা। ওয়াফিফ হেসে জিনিয়া জড়িয়ে ধরে ব্যাগ নিয়ে চলে গেল।

জিনিয়া কিছক্ষন ওদিকে তাকিয়ে থেকে দরজা লাগিয়ে দিল। তারপর নিজের ফোন হাতে নিল। রোজ এই সময় সে আফিয়া রহমানকে কল দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু সাহস পায় না। ফোনের দিকে তাকিয়েই হাঁটছিল সে। নিজের ফোনে কিছু কথা রেকর্ড করে সেটা রেখে দিল ফোনে। তারপর সে আবার কল লগে গিয়ে আফিয়া রহমানের নাম্বার বের করে হাঁটতে গিয়ে অসাবধানতায় টেবিলে পায়ে বেঁধে পড়ে গেল।

তার কাছ থেকে ফোনটাও একটু দূরে গিয়ে পড়ল। সে কি করবে বুঝতে পারল না। ব্যথায় কাতরাতে থাকল সে। পরে ফোনের দিকে চোখে পড়তেই নিজেকে কোনোমতে টেনে ফোনের দিকে নিয়ে গেল। সেটা তুলে আফিয়া রহমানকে কল করে ফেল। তখনও সে ব্যথার চিৎকার করে উঠছে। আফিয়া রহমান ফোনের দিকে না তাকিয়ে সেটা রিসিভ করলেন আর জিনিয়ার চিৎকার শুনতে পেলেন। জিনিয়া কিছু বলতে পারল না, তার আগেই তার হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেল।

চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here