My_Mafia_Husband❤,পর্ব:৬
লেখিকা: মিহু
মেঘ: মিহু!
।
“মিহু কোনো জবাব দিল না। ও এখনো সেভাবেই হাঁটুর মধ্যে মুখ গুঁজে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে। মেঘ যেয়ে মিহুর পাশে বসলো। মিহুর মাথায় হাত রাখলো। মিহু সাথে সাথেই মেঘের হাত ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিলো”
।
।
মিহু: প্রবলেম কি আপনার? আমাকে আপনি কি পেয়েছেন কি? আমাকে আপনি ভালোবাসেন,,,,কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আপনার যখন যা মন চেয়েছে আপনি আমার সাথে তাই করেছেন। প্রথমে আমাকে ভালো লেগেছে বলে আমার ভাইকে মারার হুমকি দিয়ে আমাকে বিয়ে করলেন। তারপর জোর করে কিস করলেন। আর এরপর আপনার বোনকে আমার বেস্টফ্রেন্ড বানিয়ে আমাকে ঠকালেন। আমার ফ্যামিলিকে মারার হুমকি দিয়ে আমাকে এখানে নিয়ে এলেন। আমার ফুল লাইফটা হেল করে দিয়েছেন। তাহলে আর কি চাই আপনার? এর থেকে ভালো হতো যদি আপনি আমাকে মেরে ফেলতেন। এত কিছু আমি আর নিতে পারছি না জাস্ট নিতে পারছি না বুঝেছেন আপনি? অবশ্য আপনাকে বুঝিয়ে লাভ নেই। আপনার মত একজন মাফিয়া এর থেকে ভালো আর কিই বা করতে পারে? শুধু তফাৎ হচ্ছে একটাই সেটা হলো অন্য সব মাফিয়ারা বিয়ে না করে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে মেয়েদের ভোগ করে। আর আপনি আমাকে বিয়ে করে ভোগ করার চেষ্টা করছেন। আমার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আপনিও আমাকে ছেড়ে দিবেন। আনি সব বুঝি [জোরে চিল্লিয়ে]
।
“মেঘ এতক্ষণ মিহুর কথা শুনছিল। রাগে ওর দু’চোখ লাল হয়ে গিয়েছে। মেঘ এত পরিমাণ রেগে আছে যে ও ফর্সা হওয়াতে ওর ফুল ফেস লাল হয়ে গিয়েছে। মেঘ আর সহ্য করতে না পেরে মিহুর দুইবাহু অনেক জোরে চেপে ধরে দেওয়ালের সাথে অনেক জোরে লাগিয়ে ধরে। মিহু ব্যাথা পেয়ে ‘আহ্’ বলে উঠলো। মিহু মেঘের চোখের দিকে ভয়ে তাকাতে পারছে না। মেঘের চোখেও পানি চলে এসেছে মিহুর কথা শুনে”
।
।
মেঘ: তুমি কি একটু আমাকে বুঝার চেষ্টা করতে পার না। আমি যে তোমাকে এত ভালোবাসি তুমি কি একটু বুঝো না। আমি শুধু মাত্র তোমাকে পাওয়ার জন্য এত কিছু করেছি। আর তুমি কি বললে আমি তোমাকে ভোগ করার জন্য বিয়ে করেছি? আমার যদি তোমাকে ভোগ করার ইচ্ছেই থাকত তাহলে আমি সেটা তোমাকে বিয়ে না করে জোর করে তোমাকে তুলে নিয়ে গিয়েই করতে পারতাম। আর হ্যা আমি মাফিয়া। মাফিয়া মানেই যে খারাপ লোক তা তো না। আমি যদি মাফিয়া হই তাহলে তুমিও এই মাফিয়ারই ওয়াইফ। তুমি আমার ভালোবাসাকে এত ছোট চোখে দেখবে আমি ভাবতেও পারি নি। এখন সত্যি আমার মনে হচ্ছে যে আমি তোমাকে ভালোবেসে আমার লাইফের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি। তোমাকে দেখার পর মনে হয়েছিল আমিও হয়তো কারও ভালোবাসা পেতে পারি। কিন্তু না আমি মাফিয়া বলে আমি কারও ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না এমনকি তোমারও না। আর নীলা ওর কোনো দোষই নেই কারন তোমার সাথে ও যখন ফ্রেন্ডশিপ করেছে তখন তো ও জানতোই না ব্যাপারে। একদিন কলেজে কিসের ফাংশন যেন ছিল। ওই দিন তোমরা অনেকগুলো পিক তুলেছিলে আর ও সেই পিকগুলো আমাকে পাঠিয়ে বলেছিল যে তুমি ওর নিউ ফ্রেন্ড। তখনি আমি তোমাকে দেখি আর নীলাকে সব জানাই তারপর থেকে নীলা তোমার সব খোঁজ খবর আমাকে দিতো। আই লাভ ইউ মিহু বাট ইউ ডোন্ট লাভ মি। ইনফ্যাক্ট ইউ ডোন্ট ডিজার্ভ মি। আমারই ভুল যে তোমাকে ভালোবাসেছি। আর তুমি আমাকে বরাবরই দূরে সরিয়ে দিয়েছো
।
“মেঘ কথাগুলো বলে আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করল না। মিহুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে ও গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। আজ কোনো গার্ডসও নেয় নি সাথে। মিহু মেঘের বলা কথাগুলো ভাবতে ভাবতে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেল আর শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে তার নিচে বসে কাঁদতে লাগলো। শাওয়ারের পানিতে মিহুর চোখের পানি মিলে যাচ্ছে। মিহু সত্যি চায় নি মেঘ এতটা কষ্ট পাক। মেঘ যে মিহুকে এতটা ভালোবাসে সেটা মিহুর জানা ছিল না। জানা থাকলে হয়তো মিহু মেঘকে এতটা কষ্ট কখনোই দিত না। মেঘ যে মিহুকে ভালোবেসে ভুল করছে এটা ভাবতেই মিহুর বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠছে। মিহু মেঘকে ডিজার্ভ করে না এটা ভাবতেই মিহুর চোখের পানিগুলো আরও বেশি করে ঝড়ছে। মিহু এখন অনুভব করতে পারছে যে ওর মেঘের প্রতি একটু হলেও ফিলিংস আছে মনের মধ্যে। সেটা কখন কিভাবে তৈরি হয়েছে তা বলা মুশকিল। এভাবে মিহু প্রায় ২ ঘন্টার মত শাওয়ারের পানিতে ভিজেছে। রাতে মিহু চুপচাপ বেলকনিতে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আর ভাবছে মেঘ কেন এখনো ফিরছে না। মিহু ওখানেই বসে ঘুমিয়ে পড়লো। মেঘ প্রায় রাত ২:৩০ টার দিকে বাসায় আসলো। রুমে এসে দেখে মিহু রুমে নেই। হঠাৎ মেঘের চোখ দু’টো বেলকনিতে আটকে গেল। মিহু বেলকনিতে বসে ঘুমোচ্ছে আর ওর চুলগুলো বাতাসে উড়ে এসে ওর মুখে পড়েছে। হালকা চাঁদের আলোয় মিহুকে দেখতে অনেক মায়াবী লাগছে। ভাবতেই মেঘের ঠোঁটের কোনে ছোট্ট একটা হাসির রেখা ফুটে ওঠে। মেঘ মিহুর সামনে যেয়ে আলতো করে ওর চুলগুলো সরিয়ে কানের পেছনে গুজে দেয়। মেঘের ছোঁয়া পেয়ে মিহু ঘুমের মধ্যে একটু শিউরে উঠলো। মেঘ খেয়াল করলো মিহুর চোখমুখ লাল হয়ে ফুলে আছে। মিহুর এই অবস্থা দেখে মেঘের বুকের ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো। মেঘ বুঝতে পারছে যে ও মিহুকে সকালে যা বলেছিল তার জন্য মিহু কান্না করেছে। মেঘ মিহুকে নিয়ে বেড এ শুইয়ে দিল। আর মেঘ নিজে যেয়ে বেলকনিতে বসলো। সারাটা রাত এভাবেই কাটল,,,,মেঘ সারা রাত বেলকনিতে বসে মিহুর দিকে তাকিয়ে ছিল। সকালে কখন যে ওর চোখটা লেগে গিয়েছে ও জানেই না। মিহু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে ও বেডে। বেলকনিতে তাকিয়ে দেখে মেঘ বেলকনিতে ঘুমিয়ে আছে। মিহুর আর বুঝতে বাকি রইল না যে মেঘই ওকে বেড এ এনে শুইয়ে দিয়েছে। মিহু উঠে গুটিগুটি পায়ে মেঘের কাছে গেল। মেঘের দিকে কিছুক্ষণ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মিহু। তারপর হাত দিয়ে মেঘের চুলগুলো একটু এলোমেলো করে দেয়। তাতে মেঘ একটু বিরক্তবোধ করে ঘুমের মধ্যে। মিহু একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেঘের কপালে আলতো করে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়। তারপর মিহু শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে নিচে চলে যায় মেঘের জন্য কফি বানাতে। মিহু এসব কেন করছে তা সে নিজেও জানে না শুধু এইটুকু জানে যে মেঘের জন্য তার মনের কোনে একটু হলেও ফিলিংস আছে। হয়তো তা থেকেই ও এই কাজ গুলো করছে। মিহু নিচে গিয়ে কফি বানিয়ে নিয়ে উপরে গেল যেয়ে দেখে মেঘ এখনো ঘুমোচ্ছে। মিহু কিছুটা অবাক হলো কারন মেঘ এতক্ষণ কখনো ঘুমায় না। মিহু যেয়ে মেঘের হাতটা আলতো করে ধরার সাথে সাথেই মিহু একটা বড় সর শকড্ খেল। তাহলো মেঘের পুরো শরীর গরম হয়ে আছে জ্বরের কারনে। মিহু তাড়াতাড়ি কোনোভাবে মেঘ ধরে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিয়ে ওর গায়ে কম্বল টেনে দিল। মেঘের শরীর প্রচন্ড রকমের গরম হয়ে আছে। মিহু কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। ও তাড়াতাড়ি নিচে নেমে গেল,,,,নিচে গিয়ে ড্যানিকে খুজতে লাগল। মিহু দেখলো ড্যানি বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে। তাড়াতাড়ি ড্যানির কাছে গেল”
।
।
মিহু: ড্যানি তুমি তাড়াতাড়ি একটু ডক্টরকে ফোন করে এখানে আসতে বলো
।
ড্যানি: কিন্তু কেন ম্যাম
।
মিহু: ড্যানি তোমার স্যারের প্রচন্ড জ্বর এসেছে। তাই প্লিজ তাড়াতাড়ি ডক্টরকে খবর দাও
।
ড্যানি: ওকে ম্যাম আমি এখনি জানাচ্ছি,,,,আপনি স্যারের কাছে যান
।
মিহু: হুম (বলে আবার দৌড়ে মেঘের কাছে চলে আসলাম। ডক্টর না আসা পর্যন্ত আমার চুপচাপ বসে থাকলে চলবে না। কিছু তো একটা করতে হবে। হ্যা ডক্টর না পর্যন্ত আমি বরং ওনার মাথায় জলপট্টি দেই। তাড়াতাড়ি করে যেয়ে একটা বাটিতে করে ঠান্ডা পানি আর একটা কাপড় নিয়ে আসলাম। আর ওনার পাশে বসে জলপট্টি দিতে লাগলাম। তখন উনি কি যেন বিরবির করে বলতে লাগলেন)
।
মেঘ: মি..মিহু…. আই লা..লাভ ইউ…. প্লিজ…প্লিজ… ডোন্ট লি..লিভ… মি…. আই এ..এম…. স..সরি মিহু…… আ..আই রিয়ে..রিয়েলি লাভ ইউ
।
মিহু: (মেঘ সেই তখন থেকে কি যেন সব বলছে,,,সব অস্পষ্ট শোনাচ্ছে। তখনি গেটের বাহির থেকে ড্যানি গেট এ নক করলো)
।
চলবে,,,,,,,,,
😊