সারপ্রাইজ-১
লিখা:ফারজানা রহমান তৃনা
প্রতিদিনই একটা ছেলের মেসেজ পেতাম আমি। কিন্তু তার একাউন্ট লক করা ছিলো বিধায় জানতেই পারিনি তখন যে আসলে সে কে বা কী তার আসল পরিচয়। আমি খুব সাহিত্যপ্রেমী। গল্প,উপন্যাসের পোকা বলা চলে। আমার জীবনের একুশ বছর পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো আমার জীবনে কেউ আসতে সক্ষম হয়নি এই গল্প,উপন্যাস ছাড়া। এসব ছাড়া বলতে গেলে আমি অচল। তাই নিজেও মাঝেমধ্যে গল্প লিখে ফেলি। এক্ষেত্রে খানিক নাম-ডাক থাকলেও অতোটা বিখ্যাত হয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি আদৌ। গল্পগুলো বানাতাম নিজের জন্য, কিন্তু হুট করে একদিন দেখলাম এই অগোছালো গল্পগুলোই অনেকে আপন করে নিচ্ছে। তাই লিখতাম,লিখি।
ফলপ্রসূ ভাবতাম এই ছেলেও হয়তো আমারই কোনো না কোনো পাঠক। এজন্য সে যখন জানতে চাইতো, মন ভালো আছে কিনা তখন উত্তর দিতাম, “জ্বী ভাই। আলহামদুলিল্লাহ। আপনি?”
কিন্তু আশ্চর্য হলেও একটা অদ্ভুতুড়ে সত্য হচ্ছে,
সে ঠিক তখনই মেসেজ দিতো যখন আমার মন কোনো কারণে বিষন্ন থাকতো।
এজন্যই মূলত আমি তার মেসেজ আসা মাত্রই তার প্রতি মনোযোগ দিতাম। তাকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতাম। যদিও জানতাম বিষয়টা মিরাকেল হতে পারে। কিন্তু মিরাকেল একাধারে কতদিন হয়?
তার মেসেজগুলো দেখলেও শান্তি লাগতো।
একটা ভালো লাগা কাজ করতো।
ছিলো এক অদ্ভুত অনুভূতি।
তার মেসেজ লেখার স্টাইল, দাঁড়ি-কমা হতে সবকিছুই ছিলো অবিকল আমার মত।
তাই আমি ধরেই নিয়েছিলাম,সে আমারই একজন নআ না জানা পাঠক।
সময়ের সাথে সাথে সে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে পড়ে। ইনবক্সে অসংখ্য মেসেজ আনসিন হয়ে পড়ে থাকলে ও তার মেসেজ সবসময় অধিক ইম্পর্টেন্স পেত। এবং থাকতো ও প্রথম কাতারেই।
আমি এমনিতে অনেকটা ইন্ট্রোভার্ট।
হুটহাট কারো সাথে জমিয়ে কথা বলা বা মিশে যাওয়া আমার রীতি-অভ্যাসের বাইরে।
কিন্তু এই আগুন্তক সেটা নিজ গুণে কিভাবে যেন কাটিয়ে তুলে প্রিয় মানুষের তালিকায় নিজের নাম লিপিবদ্ধ করে নিয়েছে, বেশ পাকাপোক্তভাবেই।
তাকে যখন জিজ্ঞেস করতাম,
“আপনি কে আসলে? ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দিচ্ছেন না,দিলেও গ্রহণ করছেন না। কেন এত লুকোচুরি? ”
সে উত্তর দিতো,
” একদিন সামনে এসে নিজের সব গোপন তথ্য ফাঁস করে দিবো। অপেক্ষা করেন, অপেক্ষার ফল মিষ্ট হয়। ”
এই কথা শুনে সেদিন প্রথমবারের মত আমি অবাক হওয়ার পাশাপাশি সন্দেহাতীত ও হয়ে পড়েছিলাম তার প্রতি।
সাথে যোগ হয়েছিলো কিছু অজানা ভয়। ফেইসবুকে নানান ক্রাইম,অশালীন কার্যকলাপ চলে। এসব নিয়ে আমি যথেষ্ট সতর্ক এবং অবগত। তাই সেদিনের পর আর রিপ্লাই দেইনি।
সিন করে ইগ্নোর করে রাখলাম।
অনেকদিন যাবত এভাবেই ইগ্নোর করে রাখলাম। আর ভুলেও তার মেসেজ চেক করিনি। একদিন দেখলাম নিউজফিডে একজন অতিশয় সুদর্শন বালকের একটি মোটিভেশনাল ভিডিও এসে রয়েছে।
খুব মনোযোগ সহকারে তার ভিডিও দেখলাম। আসলে ভিডিও দেখেছি বললে ভুল হবে, আমি শুধুমাত্র তার হাসির স্টাইলগুলোই বার বার পরখ করে দেখছিলাম। তার হাতে বেশ বড়সড় আকারেরই একটি খুব দামী কালো ঘড়ি দেখা যাচ্ছে। তার শার্টের কালার ছিলো মেঘের রঙ,আকাশী। চুলগুলো সিল্কিই তবে কোনো বাহারি বা আকর্ষণীয় কিছুই দেখতে পাইনি।
অর্থাৎ তার চুলে জেল দিয়ে দাঁড় করানোর কোনো অপচেষ্টা চালানো হয়নি। বেশ সাদাসিধে ভাবই। কিন্তু এতেই তাকে গর্জিয়াস লাগছে।
মনে হয় যেন একবার দেখলে প্রাণ জুড়াবে না।
বার বার করে দেখি। আরেকটু ভালো করে দেখি।
কোনো ত্রুটি আছে কি?
কিন্তু ঐ মুহূর্তে আমার পক্ষে তার কোনো ত্রুটি খুঁজে বের করা সম্ভবই হয়নি।
আমি তখন ছিলাম আমার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে নেটওয়ার্কের দারুন সমস্যা।
তখন ছিলো রাত বারোটার বেশি।
ভিডিও শেষ হওয়ার পর ভাবলাম,
যাই তার একাউন্ট/পেইজটা চেক করে আসি।
নিজে থেকে নক করে কিছু বলার সাধ্যি নেই, আগেই বলেছি আমি ইন্ট্রোভার্ট।
পেইজে গিয়ে দেখলাম, উনি বেজায় জনপ্রিয় একজন মোটিভেশনাল ভিডিও মেকার।
পাশাপাশি একজন স্বনামধন্য লেখক ও।
তার লিখাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে গিয়ে বেশ ভালোভাবেই চমকে গেলাম।
একদম আমার মত। মনেই হচ্ছে না আমি অন্য কারো লেখা পড়ছি। মনে হচ্ছে চিরচেনা কেউ একজন। যাই হোক, ঐ পোস্টে আমি একটা লাভ রিয়েক্ট দিয়ে এসে কেটে পড়ি। তারপর হুট করে লোডিং দেখানো শুরু করে। অমন সময়েই আমার নেটওয়ার্ক নাই হয়ে যায়।
হায়,তার পেইজের নাম ও দেখলাম না ভালো করে আর না দিয়েছি লাইক!
আর যে রিয়েক্টটা দিয়েছিলাম সেটা কি আদৌ দেওয়া হয়েছিলো? দেওয়ার পর পরই নেট নাই হয়ে গেছে!
এরপর রাট দেড়টা পর্যন্ত নেট আসার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু 2G নেটওয়ার্কের তাড়নায় ঢোকা আর সম্ভবই হলো না।
দিলাম বান্ধবীকে ফোন।
সে ফোন রিসিভ করেই বেশ কড়া গলাতেই একটা ধমকি দিলো,
– কী হইছে তোর? এত রাতে ফোন দিলি ক্যান?
– ইশি, নেটওয়ার্ক আছে তোদের এইদিকে? আমি ফেসবুকে ঢুকতে পারছি না কেন?
– আরে না। আজকে প্রব্লেম হইছে। আগুন লাগছে মেইন টাওয়ারে। তাই নেট স্লো হয়ে গেছে। তুই গ্রামে আছিস,তুই নেট পাবিইনা। প্যারা নিস না, ঘুমাই পড় দোস্ত।
আমি আশা ছেড়ে দিয়ে আস্তে করে বললাম, আচ্ছা রাখি।
সে আর কথা বাড়ালো না।
গ্রামের বাড়িতে আসার পর থেকে মনটা এখন অনেকটাই ভালো। একদম ভোরে মুরগীর বেদম ডাকে ঘুম ভাঙলো। নামাজ পড়ে এসে দেখলাম নানু বসে বসে চিড়া, মুড়ি, চিনি পানিতে ভিজিয়ে খাচ্ছে। এতে নাকি পেট ঠান্ডা হয়ে যায়।
নিজেও খাচ্ছে নানুভাইকেও খাওয়াচ্ছে।
আমাকে যেতে দেখে নানু ডেকে এনে তার পাশে বসালো।
বসার পর নানুর মুখে কিছু অসমাপ্ত কাহিনী,কিচ্ছা শোনার পর ওখানেই ঘুমিয়ে যাই। সেই ঘুম ভাঙলো একদম বেলা দশটায়। উঠে দেখি আমার বিছানায় এক বিশাল বড় আড্ডার আসর জমেছে। তারই একপাশে আমি গুটিশুটি হয়ে শুয়ে ছিলাম এতক্ষন।
সেখানের বিষয়বস্তু ও আমি কেন্দ্রিক।
বুঝতে আর বেগ পেতে হলো না।
আমারই বিয়ের কথাবার্তা হচ্ছে।
আমি সজাগ হতেই সব ঠান্ডা হয়ে গেলো।
কারণ আম্মু জানে আমি এসব একেবারেই অপছন্দ করি। আর একদিন কড়া গলায় বলেও দিয়েছিলাম,
“ম্যাজিস্ট্রেট অথবা প্রফেসর যেকোনো একটা হওয়ার পরই বিয়ে করবো। তখন যদি পাত্র একান্তই না পাওয়া যায় তাহলে না হয় চিরকুমারীই থাকবো। ”
আমি এক কথার মানুষ।
তাই তারা আর কথা বাড়ায় নি।
আম্মু শুধু রাগ দেখিয়ে একবার বলেছিলো,
– বুড়ি হইয়া গেলে কে বিয়ে করবে তোরে?
শেষমেশ রিক্সাওয়ালা ছাড়া তো গতি নাই তোর।
আমার আম্মু না শুধু, জগতের প্রতিটি মা_ই তাদের স্নেহের কন্যা সন্তানকে একবারের জন্য হলেও রিক্সাওয়ালার সাথে বিয়ে দেন।
তাই আমি আর মাথা ঘামাই নি। কারণ আমিও এই জগতেরই মানুষ।
বুঝিনা, এত এত প্রফেশন থাকতে মায়েরা কেন রিক্সাওয়ালাকেও মেয়ে জামাই হিসেবে চয়েস করে ফেলে। আরো বেটার কিছুও হতে পারে। পান-সুপারি বিক্রেতা বা ঝালমুড়ি বিক্রেতা টাইপ এই আংকেলেরা কি এইক্ষেত্রে প্রাধান্য পেতে পারতো না?
আমি চোখ কচলাতে কচলাতে দাঁত ব্রাশ করতে গেলাম। হাত মুখ ধুঁয়ে আসার পর দেখলাম আম্মু খাবার হাতে নিয়ে বসে আছে আমার রুমে।
আমি চোখ বড় বড় করে বললাম,
– আজকে কোন দিক দিয়ে সূর্য উঠছে আম্মু!
আম্মু বিস্তর হাসলেন। বললেন,
– তাড়াতাড়ি খেয়ে নে।
আমি রুটির এক টুকরো আলুভাজি সমেত মুখে পুরে নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জিজ্ঞেস করলাম,
– কেন? আজকে বেড়াতে যাবা?
নানু পিছন থেকে এসে বললেন,
– না গো আপুজান। তোমারে দেখতে আসবে আইজক্যা।
আমি শুনে হতবিহ্বল হয়ে গেলাম।
তার মানে এটাই নানু-বাড়িতে হুট করে ধরে নিয়ে আসার একমাত্র কারণ?
কিন্তু শহরে দেখানোর ব্যবস্থা না করে এখানে কেন,কিভাবে…
এই অংক মিলাতে পারছিলাম না।
গম্ভীর গলায় আম্মুকে বললাম,
– মানা করছিলাম তোমাকে। এরপরেও এটা না করলেও পারতা।
নানু বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতেই জানালেন,
– আপুজান, ছেলে কিন্তু মস্ত বড় চাকরীজীবি। লন্ডনে বাড়ি কিনছে। দু দিন পর আমেরিকায় যাবে। সেখানেও বাড়ি কিনবে। তোমারে নিয়া যাইবো। তুমি সুখে থাকবা আপু।
আমি চোখ বড় বড় করে আম্মুর দিকে তাকালাম। আম্মু বিষয়টা বুঝতে পেরে বললেন,
– মেয়ে হয়েছিস যখন তখন এই বিষয় এড়িয়ে যাবার কোনো রাস্তা নাই মা। তোর মামা, চাচারাই এই প্রস্তাব আনছে। আমরা কিছুই জানতাম না। আর তুই চিন্তা করিস না। ছেলে ভালোই হবে মনে হচ্ছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। এখন লন্ডনে থাকে। সামনের বছর আমেরিকায় শিফট করে ওখানেই স্থায়ী হবে। বিয়ের পর তোকেও নিয়ে যাবে।
– আমি ম্যাজিস্ট্রেট হবো না? প্রফেসর হবো না?বিদেশ গিয়ে আমি কী করবো?
নানু নাক কুঁচকে বললো,
– ধুর। মাইয়্যা মানুষ কিসের ম্যাজিস্ট্রেট হবি! এত কষ্ট করা লাগবেনা! তোর জামাইয়ের টাকার অভাব পড়বে নাকি!
কথাটা শুনে খুব বাজেভাবে আহত হলাম।
জামাইয়ের টাকা আছে তাই বলে স্ত্রীর চাকরী করা বারণ হবে কেন?
মনে মনে খুব করে আল্লাহকে বললাম,
বিয়েটা যেন এখনি না হয়ে যায়।
জীবনে আমি বহুবার ব্যর্থ হয়েছি বিভিন্নভাবে,বিভিন্ন জায়গায়।
একটাই কারণ, দুর্ভাগ্য।
তবু থেমে যাইনি। শেষ চেষ্টাতে নেমে পড়েছি।
ব্যর্থ হই আর সফল। শেষ সময়টাতে অন্তত দেখার ইচ্ছা আছে যে আসলেই আমি অভাগী কিনা।
অত:পর আমাকে জোর করে একটি হালকা বেগুণী রঙের জামদানী পরানো হলো।
আমার চাচাতো বোন ইজমা, তার গোলাপী রঙের ম্যাট লিপস্টিকখানাও আমার ঠোঁটে ঘষে দিলো। আর বেশি কিছু করতে দিলাম না।
আম্মু নিজের কিছু গয়না এনে দিলো।
তাও পড়লাম না। একদম সাদাসিধেভাবেই উপস্থাপন করতে চাই নিজেকে।
পছন্দ হলে তো হলোই, না হলে আরো ভালো।
না হলেই বরং আমি খুশি।
এই মধ্যে আমার আর কোনো কাজ নেই। তাদের আসার কথা ছিলো দুপুরের মধ্যেই। সেখানে এখন বাজে প্রায় দুটোর বেশি।
এভাবে শাড়ি পরে বসে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছে।
বিদ্যুৎ নেই। আকাশে মেঘেদের লুকুচুরি খেলআ চলছে।
একাকিত্ব আর অস্বস্তিকর অবস্থা কাটাতে তাই মোবাইলটা হাতে নিলাম।
নেটওয়ার্ক এসেছে কিনা চেক করার জন্য ডাটা অন করতেই দেখলাম এখন 3G+.
ফেইসবুকে ঢুকলাম। নিজের গল্পের কমেন্টগুলো দেখতে লাগলাম। তখনই খেয়াল করলাম, একটা মেসেজ রিকুয়েস্ট এসে রয়েছে।
নাম, প্রিতম আহসান।
তাড়াতাড়ি চেক করলাম।
প্রোফাইল দেখে বুঝতে পারলাম এটা আসল একাউন্ট_ই। সুন্দর একখান ছবি টাঙানো।
তার মেসেজটা ছিলো এরকম,
– ” কল্যানীয়েষু,
তোমার মেসেজের অপেক্ষায় এখনো অপেক্ষমাণ। এতটা নেগেটিভ না হয়ে একটু সাধারণ,সহজ চিন্তা করতে শেখো। দেখবে জগত চমৎকার। ম্লান হৃদয়ে আর কত গ্লানির চাপ বসাবে? এবার এসো, একটু রঙ মিশাই জীবনে। ”
মেসেজটা দেখে আমি থ হয়ে গেলাম।
আসলেই? এটা কে হতে পারে!
তার প্রোফাইল চেক করতে গিয়ে আবার বাধাগ্রস্ত হলাম। প্রোফাইল লক করা।
এসবের মানেটা কি!
সবাই এভাবে গণহারে প্রোফাইল লক রেখে কিসের জানান দেয়?
কি? কোনো মান্ধাতা আমলের গুপ্তধন রেখে দিয়েছে একাউন্টে? এজন্যই এত সিকিয়্যুরিটি?
ধুর! মেজাজ খারাপ করে ফোন হাত থেকে ফেলে দিলাম। তাছাড়া তার এই মেসেজের কোনো অর্থ ও আমার বোঝার মত অবস্থায় নেই। কোনোদিন তো কথাও হয়নি। এরপরেও এসব কি ছাঁইপাঁশ লিখে বসে আছে লোকটা? পাগল নাকি!
মোবাইল হাত থেকে ফেলে দেওয়ার সময় আঙুলের স্পর্শে স্প্যাম মেসেজ অপশনে চলে যাওয়ায় আবার সেই আগুন্তকের মেসেজ দেখতে পেলাম।
ভাবলাম অনেকদিন তো হলো,
এবার দেখি সে কি কি মেসেজ দিয়েছে এতদিনে।
আর এতদিনে সে চেক করতেও আসবে না যে আমি তার মেসেজটা আদৌ সিন করেছি কি করিনি। তাই নির্দ্বিধায় মেসেজটা চেক করার জন্য অপশনে ক্লিক করলাম।
দেখলাম,সেখানে তার অসংখ্য কবিতা জমা হয়ে পড়ে আছে। দেখেই খুব মায়া হলো।
ভীষণ মন খারাপ ও হলো!
ইশ! এই রকমক প্রতিভাবান মানুষদের তো সেলিব্রেটি হয়ে যাওয়া উচিত। এরা তো মধুসূদন, জীবনানন্দের মত কবি, সাহিত্যিক হওয়ার ও যোগ্যতা রাখে।
অথচ এই লোকটা এসব অমায়িক,নান্দনিক কবিতাগুলো কিনা আমার ইনবক্সে এনেই জমা করছে!
কি হবে যদি চুরি করি?
কিন্তু শেষ মেসেজটাতে যে আমার জন্য একটি চমক হিসেবে অপেক্ষা করে আছে,তা আমার বোধগম্য ছিলো না।
শেষ মেসেজ গতকাল রাতের দিকেই এসেছিলো।
মেসেজটা ছিলো,
” কল্যাণীয়েষু,
তোমার থেকে ভালোবাসা পাওয়া মানে আমার জীবনের ষোল-কলা পূর্ণ। তুমি কি একবারের জন্যও আমার কাছে আর ধরা দিবে না? দু:খিত হওয়ার জন্য কি আমার এই ছন্নছাড়া কবিতাগুলোও যথেষ্ট নয়?”
কি অদ্ভুত!
আমিতো তার মেসেজই সিন করলাম না।
তাছাড়া তার একাউন্ট ও লক করা।
কথাই তো হলো না।
তাহলে ভালোবাসা দিলাম কবে,কখন?
কি বলতে চাচ্ছে এই রহস্যময় লোকটা?
(চলবে)