Mr_innocent,Part_17,18
You_are_my_love_addiction
Written_by_Dark_princess
Part_17
সবার কড়তালিতে সকলের ধ্যান ভাঙলো
পার্টি শেষ হতে এক এক করে সবাই বাড়ি চলে গেলো ইশিতা,,আরুশি আর ধ্রুব একসাথে বাড়িতে চলে গেলো।আয়াশ মিশমিকে বাড়ি পৌছে দিয়ে নিজের ফ্লাটে চলে গেলো,,কুহু ওর শশুর বাড়ি চলে গেলো,,এআর ওর ফ্লাটে চলো গেলো।
সকাল বেলা
-” আরু উঠ তোর জন্য আমার লেট হয়ে যাচ্ছে উঠ নারে।”
-“আর একটু ঘুমাতে দে না। ”
-“অফিসে লেট করে গেলে আযান ভাইয়া তোকে শাস্তি দিবে এটা মনে আছে তো?”
-“নননননননননা।”
-“তাহলে উঠ।”
-” উঠছি। তোর মতো বেস্টু থাকার চেয়ে দশটা শত্রু থাকা ভালো।
-” কি বললি?”
-“ককই ককককিছু বলি নাই তো।”
-“না বললেই ভালো। যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয়। ”
-“হুমম যাচ্ছি তুই যা।”
ইশিতা চলে যেতেই আরুশি ফ্রেশ হতে চলে গেলো।ফ্রেশ হয়ে এসে আরুশি কালো আর সাদা রঙের ড্রেস পরলো গলায় স্কার্ফ পেছিয়ে চুল উঁচু করে ঝুটি করে নিচে চলে গেলো।নিচে এসে ব্রেকফাস্ট করে আরুশি আর ইশিতা যার যার অফিসে চলে গেলো
_________
In the Office
আরুশি অফিসে এসেই আদ্রিয়ানের কেবিনে গেলো কিন্তু আদ্রিয়ানকে পেলো না।তাই আরুশি কেবিনে আদ্রিয়ানের জন্য কিছু গোলাপ ফুল রাখলো আর কফি বানাতে চলে গেলো।আরুশি কফি নিয়ে আদ্রিয়ানের কেবিনে গিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান এখনো আসে নি।তাই কফি আদ্রিয়ানের টেবিলে রেখে কিছু ফাইল দেখতে লাগলো।তখনি কেবিনে আদ্রিয়ান ডুকলো আর সাথে এআর ডুকলো।কেবিনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আরুশি সামনে তাকালো আর দেখলো আদ্রিয়ান আর এআর দাঁড়িয়ে আছে। তাদের দেখে আরুশি দাঁড়িয়ে গেলো আর বললো,
-“গুড মর্নিং স্যার গুড মর্নিং মি.এআর।”
-“গুড মর্নিং মিস.আরুশি।”(এআর)
-“গুড মর্নিং কা…. আরুশি।”(আদ্রিয়ান)
আদ্রিয়ানের মূখে নিজের নাম শুনে আরুশি কিছুটা অবাক হলো কারণ আদ্রিয়ান কখনো ওর সামনে ওকে ওর নাম ধরে ডাকেনি সবসময় কাপকেক বলে ডেকেছে।
-“ওয়াও রেড রোজ মাই ফেবারিট।এগুলো কি আমার জন্য?”(এআর)
-“না আসলে এগুলো।”(আরুশি
-“সাথে ব্লেক কফিও আছে ধন্যবাদ মিস.আরুশি।”(এআর)
বলেই কফিতে চুমুক দিলো
-“মি.এআর কফিটা আযান স্যারের ছিলো।”(আরুশি)
-“আরুশি আপনাকে আমি কিছু কাজ দিচ্ছি ওগুলো আজকের মধ্যেই শেষ করে দিবেন আমাকে।”(আদ্রিয়ান)
-“ওকে স্যার।”(আরুশি)
আরুশি আর কিছু না বলে চেয়ারে গিয়ে বসলো আর কাজ করতে লাগলো।
এরকম করে পাঁচদিন চলে গেলো আর এই পাঁচদিন আদ্রিয়ান আরুশির সাথে ভালোভাবে কথা বলে নি। আরুশি অনেকবার আদ্রিয়ানকে এআর এর ব্যাপারে বলতে চেয়েছে কি আদ্রিয়ান সবসময় ওকে এড়িয়ে চলেছে।এতে আরুশি অভিমানের পাহার গড়ে উঠেছে।
________
পাঁচদিন পর
আজ শুক্রবার আদ্রিয়ান কাজের চাপে আরুশির সাথে ভালোভাবে কথা বলতে পারে নি যার জন্য আরুশি অনেক অভিমান করেছে তাই আদ্রিয়ান প্লেন করেছে সবাই মিলে বাইক রাইডে যাবে
রাতে ১১ টায়
সবাই মিলে বাইক রাইডে বের হলো।আরুশি যেতে চাইনি ইশিতা মিশমি আর আজমিরার জোরাজোরিতে আরুশি রাজি হয়। কিন্তু শর্ত রাখে যে ও নিজে বাইক চালাবে। আদ্রিয়ান বাধ্য হয়ে আরুশির শর্তে রাজি হয়ে যায়।
আরুশি খুব জোড়ে বাইক চালাচ্ছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে আরুশি খুব রেগে আছে তাই এতো জোড়ে বাইক চালাচ্ছে।
-” কাপকেক প্লিজ আস্তে চালাও এক্সিডেন্ট হবে গো।”
আদ্রিয়ানের কথা শুনে আরুশি বাইকের স্প্রিড আরো বাড়িয়ে দিলো।তখনি হঠাৎ একটা বাইক এসে আরুশির বাইক আটকালো।হঠাৎ এমন হওয়ায় আরুশি খুব জোড়ে ব্রেক কশলো।
বাইক থেকে লোকটি নামলো আর সাথে আদ্রিয়ানরা সবাইও বাইক থেকে নামলো। আরুশি এমনিতেই রেগেছিলো তার উপর এভাবে বাইক আটকানোতে সে আরো রেগে যায় আর লোকটিকে ইচ্ছা মতো ঝারতে লাগলো,
-“ওই উগান্ডার হাতি,,, হলুদ তেলাপোকা,,, জিব কাটা ব্যাঙ, সাত রঙা গিরগিটি,,,লেজ ছাড়া কুমির,,, কানকাটা ইঁদুর বাইক আটকালি কেন হ্যাঁ বাইক আটকালি কেন?
লোকটি আরুশির কথা শুনে নিজের মাথা থেকে হেলমেট খুললো।লোকটিকে দেখে আদ্রিয়ান বললো,
-” মি.এআর আপনি এখানে এতো রাতে। ”
-“আমি তো প্রতি রাতেই বাইক রাইড করি কিন্তু আপনারা এখানে একসাথে।”
-“আসলো আজ হোলিডে তাই সবাই ভাবলাম একটু বাইক রাইডে যাই সাজেক থেকে ফেরার পর তো সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে পরেছি তাই এই প্লেনটা করলাম।”
-“তা না হয় বুঝলাম কিন্তু মিস.আরুশি এভাবে এতো জোড়ে বাইক চালাচ্ছে কেন
-“আমার ইচ্ছা করেছে তাই। ”
ভ্যাংচি কেটে মুখ ফিরিয়ে নিলো আরুশি।
-” ওহহ।আমি কি আপনাদের সাথে জয়েন্ট করতে পারি।”(এআর)
-” হুমম অবশ্যই।”(আদ্রিয়ান)
-” মিস্টার এআর আপনি সব সময় মাস্ক পরে থাকেন কেন?”(ইশিতা)
-“আমার ধুলোবালিতে এলার্জি তাই।”(এআর)
-“যাওয়া যাক তাহলে।”(ধ্রুব)
-“ওকে কিন্তু এখন আমি বাইক চালাবো। “(আদ্রিয়ান)
-“না।” (আরুশি)
-” হ্যাঁ।”(আদ্রিয়ান)
-” না”(আরুশি)
-” হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ। “(আদ্রিয়ান)
-” আব্বে থাম ইয়ার। বারবিডল ছেড়ে দাও এই ঘাড়ত্যারার সাথে কথা বাড়িয়ো না।”(আয়াশ)
-” কিহহহ তুই কি বললি?”( আদ্রিয়ান)
-” কককি আমি তো কিছু বলি নি।”
তোতলিয়ে বলল আয়াশ
-” আচ্ছা তোরা থাম এবার।”(রিসাদ)
সবাই থেমে গেলো আর বাইকে উঠে যার যার মতো সামনে এগোতে লাগলো।
সবাইকে সামনে এগোতে দিয়ে আদ্রিয়ান একটা নির্জন মাঠে বাইক থামালো মাঠটির মাঝে একটা আইসক্রিম স্টল। তাদের দেখাদেখি এআরও তাদের পেছন গেলো।তার বাইক এমন জায়গায় দাড় করালো যাতে তাকে কেউ দেখতে না পারে।
-” এখানে কেন দাঁড়ালেন? ”
-” আমার ইচ্ছা করেছে তাই। ”
-” আমি বাসায় যাব।”
-” খুব অভিমান হয়েছে আমার উপর তাই না।”
-” আপনাকে বলব কেন আর আমি আপনার কে আমার অভিমান হলে আপনার কি?”
-” তাই চল আইসক্রিম খাবো।”
-“আমি খাবো না।”
-” তাই আচ্ছা খেয়ো না আমি একলা খাবো।”
বলেই আদ্রিয়ান দোকান থেকে আইসক্রিম এনে একা একা খেতে লাগলো।
-” আপনি খুব পঁচা। ”
-” কেন কেন? ”
-” আমাকে না দিয়ে একা একা আইসক্রিম খাচ্ছেন।”
-” তোমাকে তো বলেছিলাম তুমিই তো না করলে।”
-” আমি এখন খাবো।”
-” তোমার যত ইচ্ছে ততো খেতে পারো কাপকেক সব তোমার সব।”
অজান্তা মুচকি হেসে আইসক্রিম নিলো আর খেতে লাগলো
-“একটা গান শোনাবেন।”
-” না এখন গান গাওয়ার মুড নেই।”
-” হুহহহহ কথা বলব না আপনার সাথে।”
♪♪♪Music♪♪♪
হঠাৎ কোথা থেকে যেনো গিটারের সুর ভেসে আসতে লাগলো।আরুশি পাশে তাকিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান নেই। তাই আদ্রিয়ানকে চারপাশে খুজতে লাগলো আর সামনে তাকিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান গিটার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আদ্রিয়ানঃ
আজ এক নাম না জানা কোনো পাখি
ডাক দিলো ঠোঁটে নিয়ে খড় কুটো
আজ এলো কোন অজানা বিকেল
গান দিলো গোধুলি এক মুঠো
তুমি যাবে কি বলো যাবে কি
দেখো ডাকছে ডাকলো কেউ
তুমি পাবে কি বলো পা পাবে কি
সামনে বেপরোয়া ঢেউ
আরুশিঃ
ছুয়ে দিলে সোনাকাঠি খুঁজে পাই
যদি যাই ভেসে এমনি ভেসে যাই
{{আরুশি আদ্রিয়ানের চারিদিকে ঘুরে গাইলো}}
♪♪music♪♪
আজ এক নাম না জানা কোনো হাওয়া
চোখ বুজে ভাবছি বেয়াদপ ধুয়ো
টুপ টাপ বৃষ্টি ফোঁটা গেলো থেমে
ভেজা ভেজা খিরকি দরজা তুমি খোলো
তুমি যাবে কি বলো যাবে কি
দেখো ডাকছে ডাকলো কেউ
তুমি পাবে কি পা..পাবে কি
সামনে বেপরোয়া ঢেউ
-” নাও নাও যত ইচ্ছে গান গেয়ে নাও কিন্তু তোমাদের আমি কিছুতেই সুখে থাকতে দেবো না মাই কুইন। আদ্রিয়ান তুই তোর পুরো পরিবার মিলে আমার কাছ থেকে আমার সব কেড়ে নিয়েছে কিন্তু তুই আমার থেকে আমার কুইনকে কেড়ে নিতে পারবি না।”
গাছে ঘুষি মেরে বললো এআর।
গাছের আড়ালে লুকিয়ে কথাগুলো বললো এআর
আদ্রিয়ানঃ
ছুয়ে দিলে সোনাকাঠি খুঁজে পাই
যদি যাই ভেসে এমনি ভেসে যাই
♪♪music♪♪
আজ যদি গল্প হয় চুপচাপ রূপকথার
লাল নীল কমলা রোদ ক্যানভাসে
আরুশিঃ
হো…….আজ যদি বৃষ্টি হয়
যেনো প্রাণ পনে ভিজবো খুব
রামধনু উঠবে ঠিক ফ্যানটাসি….
আদ্রিয়ানঃ
তুমি যাবে কি বলো যাবে কি
দেখো ডাকছে ডাকলো কেউ
তুমি পাবে কি পা পাবে কি
সামনে বেপরোয়া ঢেউ
আরুশি&আদ্রিয়ানঃ
ছুয়ে দিলে সোনাকাঠি খুঁজে পাই
যদি যাই ভেসে এমনি ভেসে যাই
-” ওয়াও বিউটিফুল ভয়েস,,,,,,,,”
কারো আওয়াজ পেয়ে আরুশি আর আদ্রিয়ান পেছনে তাকিয়ে দেখলো এআর দাঁড়িয়ে আছে।
-” আপনি কখন এলেন?”(আদ্রিয়ান)
-“এসেছি অনেক আগে তোমরা গান গাইছিলে তাই আর বিরক্ত করি নি।তোমরা তো খুব ভালো গান গাইতে পারেো।”(এআর)
-” ধন্যবাদ।”(আদ্রিয়ান)
-“এই লোকটাকে আমার মোটেও ভালো লাগে না,,,, আদ্রিয়ানকে কি বলবো ওইদিন রাতের কথা{মনে মনে}”(আরুশি)
-“আরুশি”
জোড়ে ডাক দিলো আদ্রিয়ান।
-” কিহ কিহহ এতো জোড়ে চেচাচ্ছেন কেন আমি কি কালা নাকি?”
নাক ফুলিয়ে বললো আরুশি।
-” আমার তো তাই মনে হচ্ছে কখন থেকে ডাকছি সারাই দিচ্ছো না কি ভাবছিলে।”
-” ককই কিছু না। ”
-“বাড়ি যাবে না। ”
-” হুমম চলুন।”
-” মি.এআর ওরা সবাই কি চলে গেছে?”
-“না ওরা মোড়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ”
-“ওহহহ তাহলে চলুন অনেক রাত হয়ে গেছে।”
আদ্রিয়ান আর আরুশি গিয়ে বাইক স্টার্ট দিলো
-” তোমাদের সুখের দিন আর বেশি দিন নেই আদ্রিয়ান। যে করেই হোক তোমাকে আমার কুইন এর কাছ থেকে দূরে যেতেই হবে। তুমি নিজে ওর থেকে দূরে না গেলে আমাকেই কোনো ব্যবস্থা নিতে হবে।”
মনে মনে ভেবে বাঁকা হাসলো এআর।
To be continue
#Mr_innocent
#You_are_my_love_addiction
#Written_by_ #আশফিয়া_নুর_আরুশি
#Part_18
-” মি.এআর আপনি যাবেন নাহ?”(আদ্রিয়ান)
-” হুম আসছি।”(এআর)
আদ্রিয়ান,,আরুশি আর এআর ওই জায়গা ত্যাগ করলো আর ইশিতাদের কাছে গেলো।
-” কোথায় ছিলি তোরা?”(ইশিতা)
-” আরে ওরা প্রেম করছিল বুঝো না কেন।”(আয়াশ)
-” এই তুমি এসব কি বলছ।”
আয়াশের কান মোলে দিয়ে বললো মিশমি।
-” আহহ মিশ বেবি লাগছে তো।”( আয়াশ)
-“লাগুক।”(মিশমি)
-“সবাই থাম আর চল অনেক রাত হয়েছে বাসায় যেতে হবে। আদ্রিয়ান ব্লাকরোজ কোথাও গেলে জানিয়ে যাস টেনশন হয় আমাদের।”
আদ্রিয়ান আর আরুশিকে উদ্দেশ্য করে বললো ধ্রুব।
ধ্রুবর কথা শুনে আদ্রিয়ান আর আরিশি দুজনই বুঝলো যে ধ্রুব অনেক রেগে আছে।তাই আর কোনো কথা না বলে বাইক স্টার্ট দিলো।
______
পরের দিন,,,,
আরুশি সকাল সকাল অফিসে চলে এলো আদ্রিয়ান কেউ আসতে বলেছে।আজ সে আদ্রিয়ানকে সব বলে দিবে ভেবেছে।
আরুশি আদ্রিয়ানের কেবিনে ডুকে দেখে কেউ উল্টো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আরুশি লোকটিকে আদ্রিয়ান মনে করে পেছন জড়িয়ে ধরলো।
-“আপনার সাথে খুব দরকারি কথা আছে।”
-“কাপকেক।”
পেছন থেকে কারো আওয়াজ পেয়ে আরুশি পেছনে তাকালো সাথে ওই লোকটিও পেছনে ঘুরে তাকালো।পেছনে তাকিয়ে আরুশি অনেক অবাক হলো কারণ তার সামনে আদ্রিয়ান দাঁড়িয়ে আছে।
-” আদ্রিয়ান আপনি এখানে তাহলে ওই লোকটি কে? ”
বলে আরুশি পেছনে ঘুরে দেখলো এআর পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাড়িয়ে আছে।
-” আপনি!”
-“হ্যাঁ আমি।”
বাকা হেসে বললো এআর
আরুশি আদ্রিয়ানের কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে বললো,
-“আদ্রিয়ান আমি মনে করেছিলাম ওটা আপনি….”
-” আরে মিস.আরুশি আপনি মিথ্যে বলছো কেন?আমি তো আপনাকে বললামি আমি এআর তাও আপনি ছাড়লেন না।”
-“আপনি মিথ্যা বলছেন।”
-“আমি মিথ্যা বলবো কেন?”
-“আদ্রিয়ান আপনি তো আমায় বিশ্বাস করুন মি.এআর মিথ্যা বলছে।”
আদ্রিয়ান রেগে আরুশির হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিলো আর কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো
-” আপনি কাজটা ভালো করলেন না।”
বলেই আরুশিও আদ্রিয়ানের পেছনে দৌড়ে গেলো কিন্তু আদ্রিয়ানকে আটকাতে পারলো না
আদ্রিয়ান অনেক জোড়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে। এতো জোড়ে ড্রাইভ করায় আদ্রিয়ানের গাড়ি গাছের সাথে বারি খায় আর আদ্রিয়ান মাথায় ব্যাথা পায়।তাও আদ্রিয়ান গাড়ি চালিয়ে সেই বিলের পাড়ে যায়
______
অন্যদিকে আরুশি আদ্রিয়ানকে খুঁজে খুঁজে পাগল প্রায়।
-” আপনি কোথায় আদ্রিয়ান।”
পরক্ষণেই আরুশির সেই বিলের কথা মনে পড়ে যায়।
-” হ্যাঁ ওওই বিল ওখানে তো আমি দেখিই নি আমি নিশ্চিত আদ্রিয়ান ওখানেই আছে।ওহহহ মাই আল্লাহ তুমি প্লিজ দেখো যেন আদ্রিয়ান ওখানেই থাকে।”
আরুশি ওই বিলের পাড়ে গেলো আর গিয়ে দেখলো আদ্রিয়ান ওখানেই বসে আছে। আরুশি দৌড়ে গিয়ে আদ্রিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো।
-“আদ্রিয়ান আপনি কেন এভাবে চলে আসলেন? আমাকে একবার বলার সুযোগও দিলেন নাহহ।”
আদ্রিয়ানের আওয়াজ না পেয়ে আরুশি আদ্রিয়ানকে ছেড়ে দিলো আর ওর দিকে তাকালো।
আদ্রিয়ানের দিকে তাকাতেই আরুশি ঘাবড়ে গেলো কারণ আযানের কপাল কেটে রক্ত পরছে আর কাঁদতে কাঁদতে চোখের নিচে দাগ পড়ে গেছে তাও থামছে না অঝড়ে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
-“আপনি কাঁদছেন আদ্রিয়ান আর আপনার কপাল কেটে গেলো কিভাবে?”
-“…..……”
আদ্রিয়ান কোনো কথা বললো না,,,,,
-” দাঁড়ান আমি আপনার মাথায় ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি। ”
বলেই আরুশি তার ব্যাগ থেকে ব্যান্ডেজ বের করে চটজলদি আদ্রিয়ানের কপালে ব্যান্ডেজ করে দেয়।আদ্রিয়ান অনেকবার বাধা দিতে চাইলেও কোনে লাভ হয় না।ব্যান্ডেজ করা শেষ হতে আদ্রিয়ান আরুশিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হাওমাও করে কেঁদে দিয়ে বলে,
-” প্লিজ কাপকেক আমাকে ছেড়ে যেয়ো না আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না প্লিজ আমার আজু আর তুমি ছাড়া কেউ নেই প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেয়ো না।”
আদ্রিয়ান এসব বলতে থাকে আর বাচ্চাদের মতো কাঁদতে থাকে। আরুশি আদ্রিয়ানকে চুপ করানোর চেষ্টা করছে।হঠাৎ আদ্রিয়ানের আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। আরুশি মনে করে আদ্রিয়ান কান্না বন্ধ করেছে। আদ্রিয়ানকে অনেকক্ষণ ডাকার পর সারা না পেয়ে দেখে অতিরিক্ত কান্না কাটির জন্য জ্বর এসেছে আদ্রিয়ানের আর আদ্রিয়ান সেন্সলেস হয়ে গেছে। আরুশি তাড়াতাড়ি রিসাদকে ফোন করে আসতে বলে।
তারপর রিসাদ আর আরুশি মিলে আদ্রিয়ানকে আরুশিদের আাসায় নিয়ে যায়,,,
_____
দরজায় আওয়াজ পেয়ে কাজের বুয়া দরজা খুলে দেখে আরুশি রিসাদ আদ্রিয়ানকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
-” ছোট আফা স্যারে কি হইছে? ”
-” মাসি তেমন কিছু না জ্বর আসায় সেন্সলেস হয়ে গেছে।”
বলেই রিসাদ আর আরুশি মিলে আদ্রিয়ানকে ওর রুমে শুয়িয়ে দিলো।
-” বারবিডল কি হয়েছিলো? আদ্রিয়ানকে দেখলাম অফিস থেকে রেগে বেরিয়ে যেতে।ফোন করলাম ফোনও ধরলো না।এখন এই অবস্থা।বুঝলাম না কিছু।”
আরুশি রিসাদকে সব বুঝিয়ে বললো।
-” আমার এই এআরকে আগে থেকেই ঠিক সুবিধার মনে হচ্ছে না।সব সময় মাস্ক পড়ে থাকে নিজের আসল পরিচয় না দিয়ে এআর পরিচয় দিলো।”
-” আসলে ভাইয়া আমি এআরকে আগে থেকেই চিনি।”
মাথা নিচু করে বললো আরুশি
-” আগে থেকে মানে কত দিন থেকে?”
-“দুবছর আগে আমাকে একটা এক্সিডেন্ট থেকে বাচান সেদিন পর থেকে প্রতি রাতে আমার জন্য কেউ কালো গোলাপ পাঠাতে শুরু করে বিভিন্ন গিফট পাঠায়।সাজেক ভ্যালি যাওয়ার আগে একদিন রাতে আমাকে একটা বাংলোতে তুলে নিয়ে যায়।
আরুশি রিসাদকে সব বলে দিলো।
-” তুমি এসব কথা আদ্রিয়ানকে বলেছো। ”
-“না।আজ বলবো ভেবে ওনাকে সকাল সকাল আসতে বলেছিলাম কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো।”
মাথা নিচু করে বললো আরুশি।
-“কাজটা ঠিক করো নি। আদ্রিয়ানকে শুরুতেই বলা উচিত ছিলো তোমার।”
-” ওনার সেন্স আসলে আমি ওনাকে সব বলবো।”
-” না এখন আর কিছু বলতে হবে না। আমি ব্যাপারটা দেখছি তুমি টেনশন করো না।”
-“ওকে ভাইয়া।”
-” আমি এখন যাই তাহলে।”
-” হুমম।”
রিসাদ চলে গেলো আর আরুশি আদ্রিয়ানের কাছে গেলো।
_______
দুই দিন পর
In the office
এই দুদিন আরুশি আদ্রিয়ানের অনেক সেবা করেছে কিন্তু আদ্রিয়ান আরুশির সাথে কোনো কথায় বলে নি।যার কারণে আরুশি অনেক কষ্ট পেয়েছে তাও সব মূখ বুঝে সহ্য করেছে।
-“আদ্রিয়ান আপনি আমার সাথে কেন কথা বলছেন না?”
-” আরুশি প্লিজ এসব মেলো ড্রামা বন্ধ করো।আই সেইড স্টপ দিস থিংক।
আরুশি আর কিছু বললো না চুপচাপ অফিস থেকে বেরিয়ে গেলো।
-” আমার কাজ প্রায় শেষ পথে কিন্তু আদ্রিয়ান তুমি জীবিত থাকলে তো চলবে না তোমাকে মরতে হবে মরতেই হবে আর আজই হবে তোমার শেষ দিন।”
বলেই এআর অট্টহাসিতে ভেঙে পড়লো।
আড়াল থেকে একজন লোক এআর এর সব কথা শুনে ফেললো।
-” ওয়াও আমার কাজ তুমি আরো সহ করে দিলে মাই ডেয়ার ভাইপো।এবার খেলা শেষ করবো আমি আর নাম হবে তোমার।হা হা হা।”
লোকটি একজন লোককে ফোন করে বললো,
-” রেডি থেকে দুজনকে মারতে হবে এবার যেনো কোনো ভুল না হয়।”
ফোনের ওপাশ থেকে
-” ওকে স্যার আমরা রেডি থাকবো।”
_________
আরুশি বিলের পাড়ে বসে কান্না করছে
-” কেনে আপনি আমায় বিশ্বাস করছেন না কেন। আজ আমি আপনাকে এআর এর ব্যাপারে সব বলব সব।”
বলেই আরুশি ফোন বের করার জন্য ব্যগে হাত দিলো কিন্তু পেলো না।
-” ওহহহ সিট আমি তো ফোন অফিসেই রেখে এসেছি।আদ্রিয়ানের সাথে তাহলে সামনাসামনি কথা বলবো।”
বলেই আরুশি ওখান থেকে চলে যায়।
অন্যদিকে
একটা ফোন হাতে নিয়ে এআর দাঁড়িয়ে আছে।
-” তুমি তো আমার কাজটা আরো সহজ করে দিলো মাই কুইক।”
বলেই ফোনটা দিয়ে কাউকে ম্যাসেজ পাঠালো
আদ্রিয়ান নিজের রুমে চুপচাপ বসে আছে হাত দিয়ে রক্ত পড়ে ফ্লোর ভেসে যাচ্ছে।পুরো রুম অগোছালো করা।হঠাৎ আদ্রিয়ানের ফোনে ম্যাসেজ আসার শব্দ হলো।আদ্রিয়ান ফোনটি হাতে নিয়ে দেখলো আরুশি ম্যাসেজ পাঠিয়েছে।ম্যাসেজটি অপেন করে দেখলো,
-” আদ্রিয়ান আমি এআরকে ভালোবাসি।তোমার টাকার জন্য আমি তোমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছি।আমি তোমাকে ভালো বাসি না।”
আদ্রিয়ান রিপলাই দিলো,
-” আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই।”
আরুশি রিপলাই দিলো,
-“ওকে মেঘনা সেতু চলে এসো।”( আমি ঢাকায় কোনো ব্রিজ আছে কিনা জানি নাহ তোমরা জানলে প্লিজ কমেন্টে বলে দিও)
আদ্রিয়ান ম্যাসেজটা দেখে মোবাইলটা জোড়ে আছার মারল আর মোবাইলটা ভেঙে গেলো।
-” তোমাকে এর শাস্তি পেতেই হবে।”
বলে আদ্রিয়ান ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো।
-” কোথায় যাচ্ছ ভাইয়া?”
-” দরকারি কাজ আছে।”
-” কোথায় যাচ্ছ সেটা তো বললো।”
-“মেঘনা সেতু।”
বলে আদ্রিয়ান সেখান থেকে চলে গেলো।
_________
In the Chowdhury Industry
-” আদ্রিয়ান তোমার সময় শেষ হওয়ার পথে।
বলেই মোবাইল থেকে ম্যাসেজগুলো ডিলিট করেল দিলো।ওইসময়ই আরুশি আদ্রিয়ানকে খুঁজতে খুঁজতে আদ্রিয়ানের কেবিনে এসে দেখলো এআর দাঁড়িয়ে আছে আর হাসছে।
-” আপনি এখানে।”
কারো আওয়াজ পেয়ে এআর পেছনে তাকায় আর দেখে আরুশি দাঁড়িয়ে আছে,
-” আপনি এখানে আর আমার ফোন আপনার হাতে কেন?
এআর কিছু বললো না। ঠোঁটে এখনো তা শয়তানি হাসি ফুঁটে আছে।
আরুশি এআর এর হাত থেকে ফোন নিয়ে বেরিয়ে গেলো। আরুশিকে চলে যেতে দেখে এআর জোরে জোরে হাসতে শুরু করলো।
_____
আরুশি বার বার আদ্রিয়ানকে ফোন করছে কিন্তু কেউ ফোন ধরছে না। তাই আজমিরাকে ফোন করে জানতে পারলো আদ্রিয়ান মেঘনা সেতু গিয়েছে।
________
আদ্রিয়ান এসে দেখে এআর দাঁড়িয়ে আছে।
-” মি.এআর আপনি এখানে!”
-” হুম আমি। ”
-” আরুশি কোথায়?”
-” ওই ওর আসল জায়গাতেই আছে।”
-” আপনি এখানে কেন এখানে তো আরুশির আসার কথা।”
-” আমি এখানে এসেছি আমার প্রতিশোধ নিতে।”
-” প্রতিশোধ।”
-” আরিয়ান চৌধুরী রাজ এর কথা মনে আছে?”
-“আরিয়ান!!!!!! আরিয়ান তো অনেক আগেই…..
-” না আরিয়ান মরে নি তোর সামনে দাড়িয়ে আছে। তোর ডেডের জন্য আমার পাপা মারা গেছে আমার মামুনি কোমায় পড়ে আছে।”
-” তুই আরিয়ান।সত্যি তুই আরিয়ান?আমার সেই ছোট্ট বেলার খেলার সঙ্গী আমার ভাই আরিয়ান। তুই বেঁচে আছিস।”
-” হ্যাঁ আমি বেঁচে আছি কিন্তু তুই আর বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারবি না।”
অট্টহেসে গান বের করে।
-” আরিয়ান তুই এটা কি বলছিস?”
-“তোর ডেডকে তো মারতে পারবো না তাই তোকে মেরেই প্রতিশোধ নিবো। ”
বলেই আদ্রিয়ানের দিকে গান তাক করলো
-” আদ্রিয়ানননননন….”
কারোর চিৎকারের আওয়াজ শুনে আদ্রিয়ান আর আরিয়ান পাশে তাকিয়ে দেখলো আরুশি দাঁড়িয়ে আছে
-” ওহহহ তুমিও এসেছো।”(আদ্রিয়ান)
-” আমিও এসেছি মানে আপনি এসব কি বলছেন আর এআর আপনার হাতে গান কেন?”(আরুশি)
-” এসব নাটক বন্ধ আহহহ…….”(আদ্রিয়ান)
-” আহহহ….”(আরিয়ান)
তখনি কোথা থেকে দুটো গুলি এসে আদ্রিয়ান আর আরিয়ানের বুকে লাগলো।আদ্রিয়ান বেলেন্স ঠিক রাখতে না পেরে ব্রিজ থেকে পড়ে গেলো।
আদ্রিয়ানকে পড়ে যেতে দেখে আরুশি “আদ্রিয়ান” বলে চিৎকার করলো……
To be continue