Mr_Innocent 🖤,প্রথম_পর্ব

Mr_Innocent 🖤,প্রথম_পর্ব
You_Are_My_Love_Addiction
writer_ আশফিয়া_নুর_আরুশি

-“এ বছরের সেরা বিজনেস টাইকুন এবং ফেশন ডিজাইনার হচ্ছেন মিস্টার.আদ্রিয়ান চৌধুরি ।প্লিজ আপনি আপনার এওয়ার্ডটি গ্রহণ করার জন্য স্টেজে আসুন।”

বলা শেষ হতে স্টেজে এ একজন সুদর্শন যুবক উঠে এসে এওয়ার্ডটি হাতে নিলো

-“থ্যাংক ইউ সো মাচ গাইস। থ্যাংক ইউ ফর সাপোর্টিং মি।থ্যাংক ইউ।

বলেই আদ্রিয়ান স্টেজ থেকে নেমে গেল। সে স্টেজ থেকে নামার সাথে সাথেই মিডিয়ার লোকের আদ্রিয়ানকে ঘিরে ধরলো আর নানা ধরনের প্রশ্ন করতে শুরু করলো কিন্তু আদ্রিয়ান কারো কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই সেখান থেকে বেরিয়ে গেল।

{ পরিচয়: আদ্রিয়ান চৌধুরী বাংলাদেশের টপ তিনজন বিজনেস টাইকুনের মধ্যে একজন। গায়ের রঙ উজ্জল ফর্সা, মায়াবী চোখের চাহনী ,চোখের মণি গুলো হালকা নীল রঙের,,,,উচ্চতা ৫ফুট ১১,, চুলগুলো কিচকিচে কালো রঙের & সিক্লি,, লন্ডন থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে,,,,আপনজন বলতে শুধুমাত্র তাটলর দাদু,, ছোটবোন আদ্রিজা,,,আর চাচা আছে৷, ছোটবেলেয়া নিজের মাকে হারিয়েছে} }

______________
In mension

আদ্রিয়ান বাড়িতে ঢুকতেই কেউ তাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরল আর আদ্রিয়ান পেছনের মানুষটির উপস্থিতি টের পাওয়ার সাথে সাথে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল,,,পিছনে উপস্থিত ব্যক্তিটি তাল সামলাতে না পেরে পরে গেলো

-” আদ্রিয়ান বেবি what happened?? তুমি আমাকে এভাবে ধাক্কা দিলে কেন,,, দেখলে আমি পরে গেলে?”

-” who care’s? তুমি পরে গিয়ে ব্যাথ্যা পেলে নাকি মরে গেলে তাতে আমার কিছুই যায় আসে না৷ i don’t care & how dare u to touch me।আমাকে ছোয়ার সাহস কোথা থেকে পেলে তুমি??আমাকে touch করার অধিকার একমাত্র একজনেরই আছে আর সে হচ্ছে আমার কাপকেক। ও ছাড়া আর কারো অধিকার নেই আমাকে ছোয়ার। তাই আমার থেকে দূরে থেকো।Understand ? I think u better understand.”

-” বেবি তুমি আমার সাথে এমন ব্যবহার করছো? তাও আবার তার জন্য যে নাকি এই পৃথিবীতেই নেই আর নামটাও শুনতে কেমন জানো ই…।”

রিংকি আর বলতে পারলো না তার আগেই আদ্রিয়ান তাকে কষে একটা থাপ্পর মারল আর রিংকি আবারো তাল সামলাতে না পেরে পরে গেল।

-” আমার কাপকেক-এর ব্যাপারে কোনো খারাপ কথা বলার আগে এই থাপ্পরটার কথা মনে করে নিয়ো।”

বলেই আদ্রিয়ান ওর রুমে যেতে নিলেই মিডিয়ার লোকের আদ্রিয়ানকে ঘিরে ধরলো আর প্রশ্ন করতে শুরু করল

-“Sir,আপনার এই সাকসেস এর পেছনে কার অবদান আছে?” (সাংবাদিক)

-” মি.আদ্রিয়ান একসাথে দুটো award পেয়ে আপনার কেমন লাগছে?”(সাংবাদিক)

-” আপনি কি আমাদের আপনার এই সাকসেস এর বিষয়ে কিছু বলবেন?”(সাংবাদিক)

-“আমার এই success এর পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে আমার মম, দাদুর আর আমার কাপকেকের!!!আল্লাহ তায়ালা আমাকে এই এওয়ার্ড এর যোগ্য মনে করেছেন তাই আমি এই এওয়ার্ডটি পেয়েছি আর লাইফের সাকসেস এর জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম, জেদ,,, ইচ্ছাশক্তি।”

-” sir who is cupcake?? আপনি কি আমাদের তার সম্পর্কে কিছু বলবেন আমাদের?”(সাংবাদিক)

-” আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া শেষ।”

বলেই আদ্রিয়ান নিজের রুমে চলে গেল। রুমে এসে একটা বড় ছবি সামনে দাড়ালো,

-” দেখছো মম আমি আমার স্বপ্ন তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। তুমি দেখছোতো মম।।তুমি এখানে থাকলে অনেক খুশি হতে তাই না মম। কেন চলে গেলে আমায় ছেড়ে? একবারও তোমার আমার কথা মনে পড়লো না মম? কেন আমাকে একা করে দিয়ে চলে গেলে বল?? জানো মম আমার কাপকেকও আমাকে ভুলে গেছে?? তোমরা সবাই খুব পঁচা। আমি কাউকে ছাড়বো না যাদের জন্য তোমাকে কষ্ট পেয়ে মরতে হয়েছে তাদের কাউকে আমি ছাড়বো না যাদের জন্য আমাকে আমার কাপকেক এর থেকে দূরে থাকতে হয়েছে তাদের আমি তিলে তিলে মারব তাদের আমি এমন মৃত্যু দিব যে তারা মৃত্যুর পরও ভুলবে না,,,,, তোমার খুনি মি.রেজওয়ান কে আমি কঠোর শাস্তি দেব একবার শুধু তাকে হাতে নাগালে পাই।”

বলেই আদ্রিয়ান হাটু গেড়ে বসে নিরবে কাঁদতে লাগলো আর বলল,
-” কেন আপনি এমন করলেন Mr.rejwan কি দোষ করেছিল আমার মম কেন তাকে আপনি খুন করলে?? কেন কেন? বললেই হতো আপনি আমাদের আপনার লাইফে চান না আমরা অনেক দূরে চলে যেতাম কেন মারলেন আমার মমকে কেন আমার কাছ থেকে আমার কাপকেককে দূরে সরিয়ে দিলেন কেন?”

বলতে বলতে আদ্রিয়ান ওখানেই ঘুমিয়ে পরলো।

পরদিন সকাল বেলায়
আদ্রিয়ান ঘুম থেকে উঠে ফজর নামায পরে জগিং করতে চলে গেল। জগিং করে এসে ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে অফিসে চলে গেল সে।

_____________

In the Rejwan group of industry

আদ্রিয়ানঅফিসে ডুকতেই সবাই আদ্রিয়ানকে congratulate করল।আদ্রিয়ান সবাইকে থ্যাংক্স বলে নিজের কেবিনে চলে এলো। কেবিনে ডুকেই আদ্রিয়ান কাউকে ফোন দিয়ে বলল,

-“যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার কেবিনে আসো কুইক।”

-” ওকে। ”

বলেই আদ্রিয়ান ফোন কেটে দিয়ে ফাইল চেক করতে লাগলো।

-“আসবো কি?”

-” আয় রিসাদ।”

-“আমাকে ডেকেছিলি।”

-” আজকে কতজনের এপয়েন্টমেন্ট আছে?”

-” ৫০ জনের মতো আছে”

-” ওকে।সবাইকে ইন্টারভিউ এর জন্য আসতে বল।”

-“ওকে। ”

বলেই রিসাদ চলে গেল

{ পরিচয় :রিসাদ আহাম্মেদ অভ্র। রিসাদ আদ্রিয়ানের কম্পানির মেনেজার সাথে আদ্রিয়ানের খুব ভালো ফ্রেন্ড। রিসাদের গায়ের রঙ ফর্সা আদ্রিয়ানের মতোই,,,, উচ্চতা ৫’১১”। চোখের মণি দুটো বাদামি রঙের,,রিশাদ লন্ডন থেকে আদ্রিয়ানের সাথেই graduation complete করেছে}}

In 10 a.m.

আদ্রিয়ান এক এক করে সকলের ইন্টারভিউ নিচ্ছে কিন্তু কেউই কেবিন থেকে হাসিমুখে বের হচ্ছে না কেউ কান্নাকাটি করছে কেউ আপসেট। এর কারণ অফিসের কারো কাছেই অজানা না।

_________________
অন্যদিকে,

-“আরুশি এই আরুশি উঠ নারে মেরি মা লেট হয়ে যাচ্ছিস তো তোর না 10:30 এ ইন্টারভিউ আছে। উঠ বলছি উঠ। আমি ১-৫ র্পর্যন্ত কাউন্ট করব তার আগে যদি তুই না উঠিস আমি তোর মাথায় পানি ঢেলে দিব। আমি count down start করলাম 1……2……..3……..4……..5। ”

বলেই যেই আরুশির গায়ে পানি ঢালতে যাবে তখনই আরুশি লাফ দিয়ে উঠে পরলো আর বলতে শুরু করলো,

-“আরে আরে ইশু বেবি রুক যা মেরি বেহনা রুক যা। তুই কি এই নান্না মুন্না কিউট বাচ্চা টার জান নিয়ে নিবি নাকি। তাহলে তো আমার জামাইটা বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে যাবে। ”

বলেই বাচ্চাদের মতো ভ্যা ভ্যা করতে লাগলো আরুশি।

-” নাহ তোমার জান নিব না তোমাকে তো আমি কোলে নিয়ে আদর করব।এখন নেকা কান্না বন্ধ করে ফ্রেশ হয়ে নিচে আয় ইন্টারভিউ দিতে যেতে হবে না। ”

ইন্টারভিউ এর কথা শুনেই আরুশি জিহ্বায় কামড় দিলো এবং এক মুহূর্ত দেরি না করে ওয়াশরুম এ ডুকে পরলো
আর ইশিতা তা দেখেই হেসে নিচে চলে গেল।

{{পরিচয়: আশফিয়া নুর আরুশি। আরুশির গায়ের রঙ ফর্সা,, উচ্চতা 5ফুট ২ইঞ্চি,,,,, চোখগুলো গাঢ় বাদামি রঙের,,, কোমড় পর্যন্ত সিক্লি চুল,,দেখতে মাশাল্লাহ পুতুলের মতো}}

{{ পরিচয়: ইশিতা ইসলাম সায়ন্তিকা। ইশিতা আরুশির বেস্ট ফ্রেন্ড।ইশিতার গায়ের রঙ টুকটুকে ফর্সা,,,,উচ্চতা ৫ফুট ৪ইঞ্চি,,,,,,চোখোর মণি গুলো কিচকিচে কালো রঙের,,,,দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর৷ আরুশি ছোট থেকে ইশিতার সাথেই থাকে,,,,, ইশিতার বাবা লন্ডনে থাকেন আরুশিকে তিনি নিজের মেয়ের মতোই দেখেন,,, দেখেন বললে ভুল হবে আরুশি ওনার নিজের মেয়েই( ছোট থেকে ওদের সাথে থাকে কেন তা পরে বলব)}}

আরুশি ফ্রেশ হয়ে এসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে 10:30 বাজতে আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি তা আরুশি আর এক মুহূর্ত দেরি না করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে চলে যায়। নিচে এসে ইশিতাকে বলে বেরিয়ে যায়।

-” ব্রেকফাস্ট তো করে যা আরু।”

কিন্তু কে শুনে কার কথা আরুশি ইশিতার কথায় পাত্তা না দিয়েই চলে যায়।

-” আরুশি তেরি নোকরি তো হনেছে পেহলেই ছুট যায়েগি। তাব তেরা কেয়া কেয়া হোগা আরু বেবি ( নিজে নিজেই বলতে লাগলো)

বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে আরুশি টেক্সি পেয়ে যায়।

-” বাহ আরুশি আজ তুই কার মুখ দেখে উঠলিরে যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে টেক্সিও পেয়ে গেলি!ও হ্যাঁ মনে পরেছে আমি তো আজ আমার ইশু বেবির মুখ দেখে উঠেছি।কিন্তু আমি তো রোজ সকালে ইশুর মুখ দেখে উঠি।”

আরুশি নিজে নিজেই বকবক করা শুরু করল।হঠাৎ করে আরুশি জ্যামে আটকে গেল,,, ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে মাত্র ৫ মিনিট আছে। তাই ও দেরি না করে টেক্সি থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে দৌড়াতে লাগলো।

-” ভাগ মিলখা থুক্কু ভাগ আরু ভাগ,,, তা না হলে এই চাকরিও তোর গেল।”

________________
In the cabin,,,
আদ্রিয়ান উল্টো মুখ করে চেয়ারে বসে ফাইল চেক করছে তখন কেউ একজন বলে উঠলো,

-” May I come in sir?”

-” ইয়েস কাম ইম মিস আশফিয়া নুর আরুশি।”

-” থ্যাংক ইউ স্যার।”

-” You Are 5minit late mrs.Ashfiya.”

-“সরি স্যার.”

-“পান্সিম্যান্ট হিসেবে আপনাকে দাড়িয়ে ইন্টারভিউ দিতে হবে।”

-” কিন্তু স্যার……”

আরুশি আর বলতে পারলো না তার আগেই আদ্রিয়ান বললো,

-” No more talk. পান্সিম্যান্ট পছন্দ না হলে আপনি আসতে পারেন মিস.আশফিয়া.”

বলেই আদ্রিয়ান আবার ফাইলের দিকে মনোযোগ দিলো। আসলে আদ্রিয়ান ফাইল দেখছে না ফাইল দেখর ভান করে আড়চোখে আরুশিকে দেখছে আর মিটিমিটি হাসছে আরুশির মুখের ভাব ভঙ্গি দেখে।

অন্যদিকে আরুশি আদ্রিয়ানের ২৫ গুষ্ঠি ঊদ্ধার করতে ব্যস্ত।

-“লেজবিহীন হনুমান,কান কাটা বিড়াল,চিড়িয়াখানার পেত্নি, শেওলা গাছের চুরেল,তোর বিয়ে তেতুল গাছের ডায়নির সাথে হবে,শালা লুচি পারাটা, শিং ছাড়া মহিষ{ মনে মনে}”

-” আমার ২৫ গুষ্ঠি উদ্ধার করা হলে আমরা ইন্টারভিউ স্টার্ট করতে পারি কি?.”
নিজের হাসি আটকিয়ে বললো আদ্রিয়ান।

-“আপনি কিভাবে শুনলেন আমি তো মনে মনে……”

বলা শেষ না হতেই আরুশি জিহ্বায় কামড় দিলো আর ভাবতে লাগলো ওই কি বলছিলো।আর আদ্রিয়ান আরুশির কান্ড দেখে মিটিমিটি হাসতে লাগলো।আদ্রিয়ান আরুশির ইন্টারভিউ নেওয়া শুরু করলো। আদ্রিয়ান আরুশির ইন্টারভিউ নিচ্ছিলো কম আরুশিকে দেখছিলো বেশি। ইন্টারভিউ শেষ হতেই আরুশি দৌড়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো।

“চলবে”