নীলাম্বরীর প্রেমে,পর্ব-২,৩
Tuhina pakira
পর্ব – ২
-” আয়ু , আরে এই আয়ু দাঁড়া না রে বাবা ।
একপ্রকার ছুটতে ছুটতে স্পর্শ আয়ুর কাছে এগিয়ে গেলো । আয়ু তখন স্পর্শের ডাকে ঘুরে ওর দিকে তাকালো । কিন্তু বেশিক্ষন তাকাতে পারলো না একবার চোখ বন্ধ করে পুনরায় স্পর্শের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ফেললো । স্পর্শ কোমরে হাত দিয়ে মাথা ঝুঁকে হাঁফাতে লাগলো । আয়ু অনেকটাই চলে এসেছিল ।
-” ওই তোকে কখন ধরে ডাকছি;সাড়া দিতে কষ্ট হয় ?”
– “কষ্ট কেনো হবে । আমি একা ছিলাম বলে তাড়াতাড়ি বাড়ি যাচ্ছিলাম । ”
-” তো চল দাঁড়িয়ে না থেকে । ”
-” তুমি ওদের সঙ্গে গেলে না যে ? ”
–” এমনি আমার অনেক কাজ আছে বুঝলি । ”
দুজনে একসঙ্গে হাঁটতে লাগলো । ক্লান্ত বিকেলের পরিবেশ বেশ ভালো লাগছে । ঢলে যাওয়া সূর্য্যি মামা পশ্চিম আকাশে আলোর এখনও আভা দিয়ে চলেছে । আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ছে । ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি গুলো একবার তারা বামদিক যাচ্ছে তো একবার ডানদিক । তারা যেনো খেলায় মেতে উঠেছে । সবাই মাঠ থেকে বাড়ির দিকে চলেছে । অনেকে আবার মাঠের আল গুলোতে বসে গল্প করছে । মিষ্টি বাতাস ভেসে চলেছে । সেই বাতাসের দাপটে আয়ুর শাড়ির আঁচল বাঁধন হারা হতে চাইছে বারবার । আয়ু এবার অসহ্য হয়ে আঁচলটা হাতে পাক খাইয়ে গুটিয়ে নিলো । স্পর্শ তা দেখে মিটিমিটি হেসে পায়ের কাছের পাথরটা পায়ে করে দূরে ছিটকে ফেললো ।
-” কী রে আয়ু আজ হঠাৎ ‘নীলাম্বরী ‘ কেনো হলি ?”
আয়ু দাঁড়িয়ে পড়লো । মনে মনে ভাবলো , “স্পর্শ দা কী বললো ‘ নীলাম্বরী ‘ ? নীলাম্বরী তো স্পর্শ দার প্রেমিকা । তাহলে ওকে কেনো নীলাম্বরী বললো ? ”
-” কী রে চুপ করে গেলি যে ? বললি না যে আজ হঠাৎ নীলাম্বরী হতে গেলি কেনো ? ”
স্পর্শের কথায় আয়ুর হুশ ফিরল ।
-” আমি কোথায় নীলাম্বরী ? আমি তো আয়ু , নীলাম্বরী না । নীলাম্বরী তো তোমার প্রেমিকা । ”
আয়ুর মাথায় স্পর্শ গাট্টা মেরে বললো , ” আমি জানি আমার প্রেমিকা নীলাম্বরী । আর এও জানি তুই আমার সামনে বাড়ির প্রতিবেশী । তোকে আমাকে কাউকে চেনাতে হবে না । কিন্তু ব্যাপার হলো তুই আজ নিজেকে নীলম্বরী রূপে সজ্জিত করেছিস । ”
আয়ু বোকার মতো নিজেই নিজেকে একবার দেখে নিল । মনে মনে ভাবলো , ওকে নীলাম্বরী কী করে লাগবে ?
– ” কোথায় , আমাকে নীলাম্বরী তো মনে হচ্ছে না । ”
-” সাধে তোকে আয়ু গাধি বলি । নীলম্বরী মানে নীল রঙের বস্ত্র পরিহিতা কোনো নারী । বুঝলি ? ”
আয়ু মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললো । পরক্ষনেই মাথায় কিছু প্রশ্ন নাড়া দিয়ে উঠলো । প্রশ্নটা স্পর্শকে করবে না করবেনা করে অবশেষে করেই ফেললো ।
-” স্পর্শ দা বলছি যে , নীলাম্বরী তবে কারোর নাম না । তাইতো ,
-” হ্যাঁ রে পাগলি । ”
-“তাহলে তুমি কোন নীলাম্বরী প্রেমে পড়েছো ?
– ” সে এখন আমার হৃদয়ের অভ্যন্তরে খিল এঁটে রয়েছে । এযাত্রায় তার সাথে দেখা সাক্ষাতের কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না । এখন সে শুধু আমার হৃদয়ের একার । আমার নিজের কেউ না । শুধুই হৃদয়ের । ”
-” তবু নাম বলবেনা যতসব । ”
-” তো বললি নাতো , শাড়ি পড়লি কেনো ? ”
-“হঠাৎ ইচ্ছে হলো তাই । ”
-” যাহ , ঢপ মারিস না । বলনা যে , স্পর্শ দা তোমার জন্যে শাড়ি পড়ে এসেছিলাম । মাঝে মাঝে তুই এমন করিস যেনো আমি তোকে মারবো ? ”
-” এখানে মারামারির কি আছে । তুমি যে আস্তো একটা মারকুটে তা তো নতুন করে করে বলতে হবে না । ”
-” আমার মতো জাতির ক্রাশ কে তুই মারকুটে বলতে পরিস না । ক্রাশখোররা তোর উপর চটে যাবে । ”
-” আহা রে কি এমন ক্রাশ । ওইতো শেষে দেখা যাবে ক্রাশ দিয়েছে বাঁশ । ”
-” পাজি , শয়তান , শ্যাওড়া গাছের পেত্নী তুই চুপ কর । ভালোর মূল্য তুই বুঝবি না । ”
আয়ু ভেংচি কেটে দ্রুত পা চালালো । স্পর্শও ওর সঙ্গ দিলো । রাস্তাটা অনেকটাই এখনও । স্পর্শ আয়ুর শাড়ির আঁচলের পাড়ের ডিজাইনটা দেখতে দেখতে বললো ,
-” তোর মা জানে ?”
-” কী ?”
-” এই যে তার মেয়েটা নতুন একখানা শাড়ি লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে বেড়াতে এসেছে । তাও আবার কোথায় না মাঠের মাঝখানে ঝিল দেখতে । ”
আয়ু থমকে দাঁড়িয়ে গেলো । মনে মনে ভাবলো , আজ তার রক্ষে নেই । শাড়িটা ওর মা খুব পছন্দ করে কিনেছিল । ওর বাবাকে অবশ্য বলেনি । পড়ে ওর বাবার থেকে টাকা চাইবে শাড়ি কিনবে বলে । তাই একপ্রকার শাড়িটা আয়ুর ঘরের আলমারিতে রেখে দিয়েছিল । আয়ু কে পইপই করে বলা রয়েছে ভুলেও যেনো ও শাড়িতে হাত না দেয় । কিন্তু আয়ু তো স্পর্শের সাথে ঘুরতে আসার আনন্দে শাড়িটা পড়ে ফেলেছে । ওর মা যদি একবার দেখে নতুন শাড়িটা ও আগেই পড়ে ফেলেছে তবে তো …” আর ভাবতে পারলো না আয়ু । অতীব ভদ্রতার সহিত স্পর্শকে বললো ,
-” বলছি কী স্পর্শ দা তুমি না মা কে বলবে না ঠিক আছে । ”
-” বলতে পারছি না । তবে চেষ্টা করবো না বলার । তবে জানিসই তো আমি আবার তোকে ছাড়া সবার সামনে অতীব ভদ্র একজন ব্যাক্তি । তাই বলেই দেবো । হয়তো বাড়ি গিয়েই বলবোনা । ভুলে যেতে পারি বুঝলি । রাতের দিকে একবার হাঁক দিয়ে বলে দেবো , অ্যান্টি তোমার নতুন শাড়িটা আয়ু পাট ভেঙে পড়েছে ।”
কথাটা বলে স্পর্শ হাসতে হাসতে সামনে চলে গেলো । কিন্তু পাশে আয়ু কে না দেখতে পেয়ে পিছন ফিরে দেখলো আয়ু কোমরে শাড়ির আঁচল টা গুজে পাশের জমিতে বেড়া দেওয়া একটা লাথি খুলে নিয়ে স্পর্শের দিকে তাকালো । স্পর্শকে আর কে পায় সে তো ছুট । আয়ুও কম যায় না লাঠি নিয়ে স্পর্শের পিছনে ছুটতে ছুটতে বললো ,
-“ওই শয়তান দা দাঁড়াও বলছি । আজ তোমার একদিন কী আমার একদিন । উনি নাকি অতীব ভদ্র । এক নম্বরের আস্তো লেজবিশিষ্ট বান্দর । ”
-” ভদ্র ছেলেকে একদম বান্দর বলবিনা বলে দিচ্ছি । ”
পিছনে কাউকে আর দৌড়াতে অনুভব না করে স্পর্শ পিছনে ঘুরে দেখলো সামনে এক জায়গায় কাদা হয়ে ছিল আয়ু সেখানে পড়ে গেছে । স্পর্শ হু হি হা করে হেসে ফেললো । আয়ুর কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললো ,
-” কোনো কম্মেই তুই নেই দেখি । শেষে কাদা তে পড়ে গেলি । ”
আয়ু নিজের হাত ঝেড়ে স্পর্শকে বললো ,” আমাকে হেল্প করো । ”
-” উহু শখ কতো । আমি তোকে ধরে তুলবো আর তুই আমাকেই ফেলে দিবি । আমি কি বুঝিনা নাকি । নিজে নিজে ওঠ । ”
আয়ুর প্ল্যানে স্পর্শ কাদা জল ফেলে দিল । অবশেষে নিজেই আস্তে আস্তে উঠলো । শাড়িটা অর্ধেকই কাদায় মাখামাখি । কাঁদো কাঁদো চোখে স্পর্শের দিকে তাকাতেই স্পর্শ বললো ,
-” কান্না ছাড়ুন ম্যাম । চল তাড়াতাড়ি দেরি হচ্ছে । ”
দুজনেই এবার সিরিয়াস ভাবে বাড়ির দিকে পা বাড়ালো ।
-” ওই শোন খবরদার আমাকে স্পর্শ করবি না । এই অবেলায় আমি আর স্নান করতে পারবো না বলে দিলাম । ”
– ” তোমার নামই তো স্পর্শ ।”
-” একটু কম বক । আজ না তোর প্রেমহীন ব্রেকআপ হয়েছে । ”
(চলবে )
#নীলাম্বরীর_প্রেমে
#Tuhina pakira
পর্ব – ৩
সারা রাস্তা স্পর্শ হেসে গেছে । কথায় কথায় হাসির কারণ কাদা মেখে আয়ুকে বেশ মানিয়েছে । আর আয়ু প্রতিবারই কাঁদো কাঁদো চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিল । যদি স্পর্শের এই আয়ু বেচারিকে দেখে একটু কষ্ট হয় । বাড়ির সামনে আসতেই আয়ু কাউকে দেখে থেমে গেলো । স্পর্শ ওকে থেমে যেতে দেখে বললো ,
-” বাড়ির সামনে এসে কী পা ব্যথা করছে নাকি ?”
আয়ু কিছু না বলে স্পর্শকে সামনে দেখতে ইশারা করলো । স্পর্শ সেই দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলো আয়ুদের পাশের বাড়ির 4 বছরের বাচ্চা তিশা ওর ঠাম্মার সাথে নিজেদের বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে রয়েছে । সম্ভবত তিশার ঠাম্মা তিশাকে বাড়ির ভিতরে যাবার জন্যে ডাকছে । কিন্তু তিশা যাবে না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে । তিশা জানে বাড়ির ভিতর গেলেই ওর মা নীলিমা ওকে পড়তে বসাবে । আর ওর সবসময় পড়তে ভালো লাগে না ।
-” আরে ওটা তো তিশা বুড়ি । চল দেখি ও কী করছে ? ”
-” না যাওনি । ”
– স্পর্শ ভ্রু কুঁচকে বললো, ” কেনো যাবো না কেনো ?
-” না যাবে না । ও আমি বলতে একেই পাগল । ও আমাকে দেখলেই ছুটে আসবে । আর আমার এই কাদা মাখা অবস্থা দেখে সবাইকে বলবে ‘ জানো আয়ু দি কাদা মেখে ভূত হয়ে গেছে । ‘ যা আমার একদম ভালো লাগবে না । ”
-” তো তুই কী চাস আমি বাড়ির সামনে এসে এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো । আর মশার কামড় খাবো । ”
-” আমার জন্যে এইটুকু সহ্য করতে পারবে না স্পর্শ দা । আচ্ছা তুমি যাও আমি পরে আসছি । ”
কথাটা বলে আয়ু চোখ সরিয়ে নিলো স্পর্শের চোখের থেকে । তিশার দিকে তাকিয়ে রইল । স্পর্শ আয়ুর দিকে বাঁকা হেসে তাকিয়ে রইল ।
-” আচ্ছা আমি দাঁড়াচ্ছি । তুই হলি পুচকি একটা ছোট্ট মেয়ে । তোকে কী আমি একা ছাড়তে পারি বল । ”
স্পর্শের নর্মাল কথাটা আয়ুর কাছে কেনো যেনো খুব কিউট লাগলো । এতো কিউট করে কে বলে ? ইশ আয়ুর তো লজ্জা লাগছে ।
-” ওই চল তিশা চলে গেছে ।”
স্পর্শের কথায় আয়ুর হুশ ফিরল । নিজের নিজের মাথায় টোকা মেরে মনে মনে বললো , ” কী সব ভাবিস । আয়ু পাগল হোস না । স্পর্শের নীলাম্বরী আছে । সে #নীলাম্বরীর_প্রেমে আবেশিত । তুই ওর ভালোবাসা না । তুই হলি আয়ু । স্পর্শের আয়ু না কেবলই আয়ু । আর স্পর্শের প্রতিবেশী । ”
নিজেদের বাড়ির সদর দরজার দিকে এগিয়ে গিয়ে আয়ু চারপাশটা দেখে নিল ভালোভাবে । কেউ নেই দেখে হাফ ছেড়ে বাঁচলো । আয়ু নিজের বাড়ির দরজার কাছে এগোতেই স্পর্শের ডাকে থেমে গেলো ।
-” আয়ু একবার শোন । ”
স্পর্শের কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ালো আয়ু ।
-” কিছু বলবে ?
– ” হ্যাঁ ।”
-” তাড়াতাড়ি বলো । কেউ আমাকে এই অবস্থায় দেখলে যে কী হবে ? ”
-” সে উপরওয়ালাই জানে । নে এখন চোখ বন্ধ করতো । যখন বলবো চোখ খুলবি । তোর জন্যে কিছু আছে । ”
স্পর্শের কথায় আয়ুর মুখ খুশিতে ভরে উঠলো । স্পর্শ নিশ্চয় চকলেট দেবে । আয়ুর খুশি দেখে কে । তাড়াতাড়ি ও চোখ বন্ধ করে ফেললো । এইদিকে স্পর্শ আয়ুর কাদা লাগা কপালের দিকে তাকিয়ে আয়ুর চোখের দিকে তাকিয়ে ভাবলো , ” আয়ুর মায়া ভরা চোখ অপরূপ । ঠিক ওর নীলাম্বরীর মতো । ”
-” চোখ খোল আয়ু । ”
আয়ু মুখে এক ঝিলির রেখা ফুটিয়ে চোখ খুলতেই স্পর্শ ফটাফট ওর কটা পিকচার ক্লিক করে নিলো । আর আয়ু হতবুদ্ধি হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললো ,
-” এটা কী হলো ?
-” কী আবার হবে তোর ফটো শুট হলো । চল যা এবার বাড়ি যা । অ্যান্টি তোকে এই অবস্থায় দেখলে তার বিখ্যাত স্কেল থেরাপি দেবে । ”
স্পর্শের শেষের কথায় আয়ুর বেশ ভয় লাগলেও প্রথম কথার প্রেক্ষিতে বললো ,
-” আমি কী তোমাকে গলা জড়িয়ে ধরে বলেছি , আমার ফটোশুট করে আমাকে উদ্ধার করো । ”
-” ইশ কথার কী ছিরি । তুই কেনো আমার গলা জড়িয়ে ধরবি ? আমার গলা জড়িয়ে ধরবে নীলাম্বরী । অবশ্য সে না ধরলে অসুবিধে নেই আমিই না হয় তার গলা জড়িয়ে ধরবো । আর তাছাড়া তোকে বিশ্বাস নেই । দেখা গেলো গলা জড়িয়ে ধরতে গিয়ে গলা টিপে ধরবি । তখন আবার না আমি অক্কা পাই । ”
আয়ু কয়েক পলক ফেলে স্পর্শকে দেখে নিলো । ওর স্পর্শ দা হাসছে। বেশ লাগছে তাকে । ফর্সা মুখে টোল পড়া হাসি , তার উপর আবার পাঞ্জাবি স্টাইলে চাপ দাড়ি রাখার চেষ্টায় থাকায় গোঁফের কাছে হালকা হালকা দাড়ি শেফ করেছে । কপালে পড়ে থাকা ঘনও চুলগুলো বাতাসে উড়ছে । স্পর্শ মাঝে মাঝে থেমে থেমে হাসছে । আয়ুকে নিজের দিকে পলকহীন তাকিয়ে থাকতে দেখে স্পর্শ ওকে বললো ,
-” তোর পাশের বাড়ির তিশা হলো বুড়ি । আর তিশার পাশের বাড়ির আয়ু হলো কাদা বুড়ি । নামটা ভালো না ?”
আয়ু দুষ্টু হেসে বলল ,
-” খুব ভালো । ”
আয়ু নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো হাতের লাগা কাদা শুকিয়ে গিয়েছে । কিন্তু হাতটা বেশ জ্বালা করছে । মনে তো হয় কেটে গেছে । কাদা থাকায় ঠিক বুঝতে পারে নি । স্পর্শ দা কে তা বলা যাবে না । আগে বদলা নিতে হবে ওকে । আয়ু শাড়ির আঁচলটা হাতে ধরে স্পর্শের হাসিময় গালে লাগিয়ে দিয়ে বললো ,
-” আর আয়ুর সামনের বাড়ির স্পর্শ হলো কাদা মাখা বুড়ো । ভালো না ? ”
তাকে আর কে পায় । সে বাড়ির ভিতরে ছুটেছে । পাছে স্পর্শ ওকে হাতে পায় তো কী যে ওর অবস্থা করবে কে জানে ?
স্পর্শ আয়ুর কাণ্ডে কিছুক্ষণ ওর দিকে রেগে তাকালেও আয়ু কে ছুট চলে যেতে দেখে ওর দিকে তাকিয়ে রইল । তারপর নিজের কাদা মাখানো গালে পরম আবেশে হাত রেখে মুচকি হেসে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো ।
♣
আয়ু অতি সাবাধানতার সাথে বাড়িতে প্রবেশ করলো । আয়ুর বাবা এখন অফিসে , ভাই আর মাসতুতো বোন টিউশনে গেছে এটা আয়ু সিউর । কিন্তু মা ? নীচের তলায় কেউ নেই যেহেতু ওর মা নিশ্চিত স্পর্শদের বাড়ি গেছে মিমির সাথে আড্ডা দিতে । আয়ু প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিলো । এতক্ষণ মনে হচ্ছিল মরে যাবে । বড়ো জোর বাঁচলো ।
নিজের ঘরের ভিতর ঢুকেই থমকে দাঁড়ালো আয়ু । এবার ওকে স্কেল থেরাপি থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না । স্বয়ং ঈশ্বরও না..
(চলবে )