আমার রূপকথায় তুমিই ছিলে,পর-১
নুজহাত আদিবা
ভার্সিটি থেকে বাসায় আসতেই আম্মু বলল সাথী আজকে তোকে দেখতে আসবে একটু রেডি হয়ে থাকিস মা, আম্মুর কথা শুনে আমার রাগে মেজাজ গরম হয়ে গেলো আমি আম্মুকে বললাম আম্মু এখনো আমার বি.বি.এ ও কমপ্লিট হয়নি আর এখনি তোমরা বিয়ের কথা ভাবছো! আমি এখন বিয়ে করতে পারবোনা আম্মু পড়ালেখা আমার কাছে সবার আগে পড়ালেখা শেষ হোক তারপর এইসব বিয়ে সাদি করার জন্য সারাজীবন পড়ে আছে। আম্মু বলল দেখ সাথী দেখতে আসলেই তো আর বিয়ে হয় না। ওরা তো শুধু দেখতে আসবে। আমি আম্মুর সাথে আর তর্ক করলাম না কারন সত্যি তো দেখতে আসলেই তো আর বিয়ে হচ্ছে না।
ছেলেরা দেখে চলে গেলে আম্মু আব্বু বলল ছেলে নাকি ওদের অনেক পছন্দ হয়েছে। আমি তাও এতো গুরুত্ব দিচ্ছিলাম না কারন আমার সোজা কথা একটাই ছিলো আমি এখন বিয়ে করবোনা। ছেলেটার নাম আতিফ উনি নাকি উনার বাবার অফিসে আমার ছবি দেখে আমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে আর আব্বু আম্মু ও রাজি। আমি সেই জিদ ধরলাম যে আমি বিয়ে করবোনা। আমাকে আব্বু আম্মু, আমার খালাতো বোন,খালামনিরা আমাকে অনেক বুঝাতে শুরু করল।যদি ও আমি খুব একটা রাজি ছিলাম না তবে আব্বু আম্মুর খুশির জন্য রাজি হয়ে গেলাম। খুব ধুমধাম করে আমাদের বিয়ে টা হলো। আব্বু তো আমার বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকেই বাড়িতে লাইটিং করিয়ে রেখেছেন নাহলে নাকি বিয়ে বাড়ি বিয়ে বাড়ি লাগে না। বিয়ের পর আমি ও বেশ সংসারী হয়ে গেলাম।যদি ও আমার শাশুড়ী আমাকে দিয়ে বেশি কাজ করাতেন না কারন উনাদের বাড়িতে আগে থেকেই আলাদা কাজের লোক ছিলো।বলতে গেলে বেশ সুখেই ছিলাম আমি। আব্বু আম্মু ফোন করে খবর নিতো খুব খুশি হতো যখন শুনত আমি ভালো আছি। কিন্তু বিপত্তিটা তখন ঘটলো যখন আমি শুনলাম আতিফের নাকি এমন একটা মানসিক সমস্যা আছে যেটা থেকে কেউ কোনোদিন সুস্থ হতে পারে না। এই অসুখটা নাকি কোনোদিন ভালো হবে না। ও নিজের মুখেই এই কথাটা বললো। আমি ওকে সান্তনা দিয়ে বললাম এতো চিন্তা করোনা আমি আছি না! আমি আম্মুকেও কথাটা জানালাম না পড়ে টেনশন করবে ভেবে। তার কিছুদিন পরেই আমি জানলাম ওর নাকি কিছু শারীরিক সমস্যা আছে যার কারনে ও নাকি কোনোদিন বাবা হতে পারবেনা। আমি তাও ওকে কিছু বলিনি কারন এখন চাইলেই একটা বাচ্চা এডপ্ট করা যায় তাই কোনো সমস্যা নেই। তার কিছুদিন পরেই আমার শরীরটা একটু খারাপ হওয়াতে আমি একটু আমাদের বাসায় আসলাম কিছুদিনের জন্য কারন অনেকদিন আসা হয় না বাসায়। আমি কথায় কথায়…
চলবে..