মেঘকন্যা☁️
Part_01
Writer_NOVA
বান্ধবীর বিয়ের আসরে,,বউ সেজে এক হাত সমান ঘোমটা টেনে বসে আছি আমি।বান্ধবীকে তার ভালোবাসার মানুষের হাতে তুলে দিয়ে আমি পড়ে গেছি বিপদে।আশ্চর্যজনক আরেকটি ঘটনা হলো কিছু সময় ধরে আমার সারা শরীর মেঘের মতো সাদা বর্ণ ধারণ করছে।সাথে অসহ্যকর ব্যাথায় জান যায় যায় অবস্থা। হঠাৎ করে এমন কেন হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না।কিছু সময় পর পর সারা শরীর বিদ্যুতের মতো আলোর ঝলকানি দিচ্ছে।
আমি সাওদা বিনতে মেঘা।বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। আজ আমার বান্ধবী আফিয়ার বিয়ে ছিলো।আফিয়া একটা ছেলেকে ভীষণ ভালোবাসতো।কিন্তু ওর পরিবার মেনে নেয়নি।বরং জোর করে বিয়ে দিতে চাইছে।আমি সহ বাকি ফ্রেন্ড এসেছিলাম ওকে ভাগিয়ে নিয়ে যেতে।সবাই বের হয়ে গেলেও আমি আটকা পরে যাই।যেই কনের রুম থেকে বের হবো ওমনি ওর বাবা-ভাইকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।এখন যদি উনারা এসে মেয়েকে না দেখে তাহলে তো কেলেংকারী হয়ে যাবে।তাই চুপটি করে আমি বিছানায় থাকা কনের যাবতীয় জিনিসপত্র পরে নিজেকে বউয়ের সাজে সাজিয়ে নেই। এখন আল্লাহ, আল্লাহ করে কোন মতে বিয়ের আগে পালাতে পারলেই হয়।নয়তো আমাকেই বিয়ে করে নিতে হবে।
সারা রুম এদিক থেকে সেদিক পায়চারি করছি।শরীরের ব্যাথাটা থামার নামও নিচ্ছে না।বিয়েটা একেবারে ঘরোয়াভাবে হচ্ছে।যার কারণে মানুষ বেশি নেই।প্ল্যান মতো কনের রুমে কেউ নেই বলে রক্ষা।নয়তো এতক্ষণে আমি ধরা পড়ে যেতাম।আফিয়া অনেক কষ্ট করে আগের থেকে পুরো রুম ফাঁকা করে রেখেছে। আমার ভাবনার মাঝে ফট করে দরজা খুলে আফিয়ার ভাবী নিশি রুমে ঢুকলো।আমি লাফ দিয়ে খাটে উঠে বসলাম।
নিশিঃ আরে আফিয়া তুমি এরকম একহাত সমান ঘোমটা দিয়ে রেখেছো কেন? দিহান কে তো তুমি আগেও দেখেছো।এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে? আমার ভাই অনেক ভালো।তুমি ওর কাছে অনেক সুখী হবে।এ বাড়িতে দিহান কত এসেছে-গেছে।তুমি ওকে কত দেখেছো।আর আজ এত লজ্জা পেলে কি চলে?কিছু সময় পর তো সারাজীবনের জন্য ওর হয়ে যাবে। আসলে আমিই তোমার কথা ওর কাছে বলে ছিলাম।আর ও ফট করে রাজী হয়ে গেল।
আমিঃ তাহলে তুমি মেইন কালপ্রিট। ওরে ঘরের শত্রু বিভীষণ। তোমায় আমি পরে দেখে নিবো ভাবী।তোমার জন্য আজ এই বিপদে পরলাম।শরীরে অসহ্যকর ব্যাথা বেরেই যাচ্ছে। আল্লাহ তুমি আমায় কোন পরীক্ষায় ফেললে।(মনে মনে)
নিশিঃ যত্তসব আদিখ্যেতা। তুই যতক্ষণে এ বাড়ি থেকে বিদেয় হবি তাতেই আমি খুশি।তোকে আমার একটুও সহ্য হয় না।সারাক্ষণ একের পর এক হুকুম করে আমাকে খাটানোর চিন্তা। কত করে আমার স্বামীটাকে বললাম তোমার বাপ-মা, ভাই-বোন ছেড়ে আলাদা হয়ে যাও।তা নয় সে তার পরিবার নিয়ে থাকবে।অন্তত পক্ষে বোনের বিয়ের আগ পর্যন্ত সে আলাদা হবে না।তাই তো আমার গাঁজা খোর,মেয়েবাজ ভাইকে তোর জন্য নিয়ে এলাম।খুব তো আমার নামে সবাইকে বিষ দিতি।এবার পারলে বিয়ে ঠেকিয়ে দেখা। (মনে মনে)
আমিঃ হে আল্লাহ আমি এসব কি শুনছি।উনি এতটা নিচ মন-মানসিকতার মানুষ। মনে মনে কথা না বললে তো আমি জানতেই পারতাম না। আমাকে যত শীঘ্রই এখান থেকে পালাতে হবে।(মনে মনে)
ছোট বেলার থেকে আমার মাঝে অদ্ভুত কিছু গুণ আছে।আমি জানি না কেন এগুলো আমাকে আল্লাহ দিয়েছে। তবে এতটুকু জানি আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে।অদ্ভুত গুণের মধ্যে অন্যতম একটা গুণ হলো অন্যের মনের কথা আমি স্পষ্ট শুনতে পাই।
চাচীঃ আরে নিশি তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? তোমায় না আফিয়াকে নিতে পাঠালাম।ঐ দিকে কাজী সাহেব এসে পড়েছেন।গ্রামের বাড়ি, বেশি রাত হয়ে গেলে তো সমস্যা হয়ে যাবে।এই অজপাড়া গাঁয়ে কখন কারেন্ট চলে যায় তা কি কেউ বলতে পারে?
কথা বলতে বলতে আফিয়ার চাচী রুমে ঢুকলো।
নিশিঃ সরি চাচি।আমি এসে দেখি আফিয়া এখনো তৈরি হয়নি।মাত্র সব তৈরি আমি করে দিলাম।
আমিঃ আল্লাহ মাটি ফাঁক করো ঢুকে যাই। নয়তো উপর থেকে দড়ি ফেলো উঠে যাই।এমন ডাহা মিথ্যে কথা গায়ে সহ্য হয় না।(মনে মনে)
🌨️🌨️🌨️
আমি সারা শরীর যতটুকু পেরেছি ঢেকে বসেছি।শরীরের কোন অংশ দেখা গেলে সর্বনাশ।আফিয়ার চাচী আমার দিকে তাকিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিলেন।আমি তো ভয়ে শেষ।
চাচীঃ একি আফিয়া!!! তোর এই অবস্থা কেন?
(চোখ বড় বড় করে)
আমিঃ এই রে আমার শরীরের রংটা কি দেখে ফেললো।এবার আমি কোথায় যাবো?আফিয়ার বাপ-চাচা যা পাঁজি। আমাকে ধরতে পারলে জ্যন্ত কবর দিবে।(মনে মনে)
নিশিঃ কি হয়েছে চাচী?
চাচীঃ তুই এত বড় ঘোমটা দিয়েছিস কেন আফিয়া?পার্লারের লোক এসেছিলো তাদের বললি তুই একা সাজতে পারবি।এখন এরকম উদ্ভট করে শাড়ি পড়েছিস কেন? বিয়ের শাড়িটাতো সুন্দর করে পরবি।ঘোমটা খোল।আমার কাছে এসে দাঁড়া।আমি শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছি।
ঘোমটার ভেতরে আমি কুলকুল করে ঘামছি।শরীরের ব্যাথাটা অনেকটা কমে আসছে।সাথে সাদা রংটা মিইয়ে হয়ে স্বাভাবিক গায়ের রংয়ে ফিরে আসেছে। চাচী সামনে আসতে নিলে আমি পিছিয়ে যাই। কাঁপা কাঁপা গলায় বলি
আমিঃ আআআআমিইই ঠিক করে নিবো।আর গতকাল বাবার হাতে চড় খাওয়ার কারণে গালে লাল দাগ হয়ে গেছে। বরপক্ষের লোক দেখতে পেলে নানা কথা শুনাবে।তাই এত বড় ঘোমটা টেনে রেখেছি।তুমি প্লিজ সবাইকে বলে দিও আমার মুখে একটু সমস্যা আছে তাই আমি এভাবেই থাকবো।
চাচীঃ তোর কন্ঠ এমন শোনাচ্ছে কেন?মনে হচ্ছে গলাটা বড্ড অচেনা।আগে কখনও শুনিনি।
(চোখ মুখ কুঁচকে)
আমিঃ আসলে তোমাদের ছেড়ে চলে যাবো তো।তাই সারারাত কেঁদেছি। যার কারণে গলাটা ডেবে গিয়েছে।
চাচীঃ আচ্ছা তুই বরং নিশির সাথে চলে আয়।আমি ঐ দিকটা সামলাচ্ছি। নিশি সাবধানে নিয়ে এসো।
নিশিঃ আচ্ছা চাচী তুমি যাও।
আমি বড় করে নিশ্বাস ছারলাম।এতক্ষণ মনে হচ্ছিলো বুকের মধ্যে কেউ হাতুড়ি পেটা করছে। চাচী চলে যেতেই নিশি ভাবী আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। মিছরির মতো কন্ঠ করে বললো।
নিশিঃ ননদিনী দেও আমি শাড়ি ঠিক করে দিচ্ছি।আজকের দিনটা সরি শুধু রাতটা আছো।আমায় একটু তোমার সেবা করে ধন্য হতে দেও।
আমিঃ ইস,এখন এবার মধুর কন্ঠে কথা বলে আমার মন জয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তুমি কি রকম মেয়ে তা আমার চেনা হয়ে গেছে। শাঁকচুন্নিরে,একবার আমায় এখান থেকে বের হতে দে।তারপর তোর ব্যবস্থা যদি এই মেঘা না করে তাহলে বলিস।মিথ্যাবাদী।
বর্তমানে মনে মনে বকা ছাড়া আর কোন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না।নিশি ভাবী আমার শাড়ি ঠিক করে দিতে লাগলো।শাড়ি ঠিক করে আমায় বসার ঘরে নিয়ে যেতে লাগলো।কি হবে এবার?সত্যি কি আমার ঐ গাঁজাখোর,মেয়েবাজ ছেলেটার সাথে বিয়ে হয়ে যাবে।
🌨️🌨🌨️
গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে মেঘা।আজ তার শেষ রক্ষা হবে বলে মনে হচ্ছে না। ঘোমটার আড়ালে দোয়া, দরুদ পড়ছে সে।বসার রুমে বেশ মানুষ আছে। কাজী সাহেব বসে আছে। মেঘার ঘোমটার ভেতর থেকে সবাইকে আবছা দেখতে পাচ্ছে। বর কে দেখে আরো বেশি শক খেলো। বরের মুখটাও আটকানো।পাগরীর সামনে ফুলের মালা দিয়ে পুরো মুখ ঢেকে রেখেছে। কিন্তু কেন?মেঘাকে দেখেই বাচ্চারা গুঞ্জন তুললো বউ এসেছে, বউ এসেছে।
বরের ফুপুঃ মেয়ের মুখে এত বড় ঘোমটা টানা কেন?আমরা তো বউকে দেখতে চাই।
চাচীঃ আমাদের মেয়ে অনেক লাজুক। কারো সামনে খোলামেলা আসতে ভীষণ লজ্জা পায়।তাই এভাবে নিয়ে এলাম।
নিশিঃ আর বলেন না ফুপু।আফিয়াকে নিয়ে এই একটা সমস্যা। কারো সামনে খোলামেলা আসতে চায় না। ননদিনী আমার কাউকে মুখ দেখাতে চায় না।যা লজ্জা ওর।বিয়ের পরে ইচ্ছে মতো দেখে নিয়ো।কিন্তু আমার ভাই মুখটাকে এরকম ফুলের মালা দিয়ে ঢেকে রেখেছে কেন?
বরের চাচাঃ আর বলিস না নিশি।তোর ভাইকে পুলিশ ভুল বুঝে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো।সেখানে একটু খাতির- যত্ন করে মুখের অবস্থা খারাপ করে দিয়েছে। দিহান তো আজ বিয়ে করতে আসতে চায়নি।বলে এমন মুখ নিয়ে বিয়ে করতে যাওয়া যায়।তাই আমরা এই পদ্ধতি করে নিয়ে এসেছি।
মেঘাকে নিয়ে বরের সাথে বসানো হলো।মেঘার মনে কিছুটা খোটকা লাগছে।কারণ সকলের মনের কথা শুনতে পারলেও বর বেশে থাকা ছেলেটার মনের কথা শুনতে পাচ্ছে না।তবে এতটুকু বুঝে গেছে ছেলেকে শুধু শুধু ধরে নেয়নি।নিশ্চয়ই কোন আকাম-কুকাম করেছে।যার কারণে ছেলেকে ধরে নিয়ে পুলিশ চেহারার আদল বদলে ফেলেছে।
আফতাব সর্দার খুশিতে ঘনঘন নিশ্বাস ফেলছেন। মেয়েকে তিনি তার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারছেন।এর থেকে খুশির খবর আর কি হতে পারে। তার ছেলে আফ্রিদি সর্দার তার সাথেই বসে আছে।তাকেও খুব খুশি খুশি লাগছে।আফতাব সর্দার গলা ঝাঝিয়ে কাজী সাহেবকে বললেন।
আফতাবঃ কাজী সাহেব বিয়ে পরানোটা শুরু করুন।
কাজীঃ সাক্ষী,বর, কনে সব হাজির তো।
আফ্রিদীঃ সবাই হাজির আছে।দয়া করে আপনি শুরু করেন।অনেক রাত হয়ে গেছে।
কাজীঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।ঢাকা গুলশান নির্বাসি মোহাম্মদ —-
কাজীর পুরো কথা শোনার আগেই আমার হাতের ওপর কারো হাতের ঠান্ডা স্পর্শ পেলাম।হুট করে আমার শরীরে ৪৪০ ভোল্টেজে শক লাগলো।আমার কি হলো আমি কিছুই জানি না।কারো কোন কথা আমার কানে ঢুকছিলো না।আমি পুরো তব্দা খেয়ে আছি।
কাজীঃ তুমি যদি এই বিয়েতে সম্মত থাকো তাহলো বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল।তিনবার বলো কবুল।
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ, কবুল কবুল কবুল।
🌨️🌨️🌨️
আমার কি হয়েছে আমি নিজেও জানি না।এক মুহুর্তে আমি সব ভুলে গেছি।ছেলেকে কাজী কবুল বলতে বললে এক নিশ্বাসে তিনবার কবুল বলে ফেললো।তারপর আমকে রেজিস্ট্রী পেপারে সাইন করতে বললো আমি চুপচাপ সাইন করে দিলাম।তাও নিজের নাম।আমার মনে হচ্ছে আমি একটা ঘোরে আছি।কেউ আমাকে তার অদৃশ্য শক্তি দিয়ে আটকে রেখেছে। যখন আমার সম্মতি ফিরলো তখন সবার মোনাজাত নেওয়া শেষ।
কাজীঃ আলহামদুলিল্লাহ বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। এখন থেকে আপনারা স্বামী-স্ত্রী।
কথাটা শুনে আমি পুরো টাসকি খেয়ে রইলাম।কি হচ্ছে টা কি আমার সাথে। আফতাব সর্দার খুশিতে গদগদ হয়ে আছেন।
আফতাবঃ আরে আফ্রিদি তাকিয়ে কি দেখছিস।সবাইকে মিষ্টি মুখ করা।বড় হাটের থেকে যে ছানার মিষ্টি গুলো আনলাম সেগুলো সবাইকে বিলিয়ে দে।
আফ্রিদিঃ আমি দিচ্ছি আব্বাজান।
সবাই খুশিতে মিষ্টি মুখ করছে।মেঘার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।কি হলো আজ তার সাথে। এমনটাতো হওয়ার কথা ছিলো না। হঠাৎ তার কি হলো?সে তো ভেবেছিলো নিজের ঘোমটা উঠিয়ে বিয়েটা ভেস্তে দিবে।কিন্তু সেই শীতল স্পর্শে সবকিছু ভুলে কেন গেল।মাথা পুরো ঝিম ধরে আছে।
সবাই মিষ্টি মুখ করায় এতটাই ব্যস্ত যে কেউ রেজিস্ট্রী পেপারটার দিকে ভুলেও তাকালো না।তাহলে হয়তো দেখতে পেতো বর-কনে দুজনেই বদল হয়ে গেছে।যাতে তাদের মিষ্টিমুখ করা ছুটে যেতো। আরো দেখতে পেতো, কত কষ্ট করে নিজ দায়িত্ব তারা অন্যের ছেলেমেয়ের বিয়ে দিয়ে দিলো। দিহান ও আফিয়ার বিয়ে হয়নি।তাদের নাম রেজেস্ট্রী পেপারে নেই।বরং সেই জায়গায় মাঝারি করে সিগনেচার করা মেঘা ও আরেকজনের নাম।কে সে ব্যক্তিটা? যার সাথে মেঘার বিয়ে হলো।
হঠাৎ একটা কানে তালা লাগার মতো তীব্র শব্দ হলো।সবাই চমকে উঠলো। কিসের শব্দ তা দেখতে বর-কনে দুজনকে ফেলে সবাই সেদিকে ছুটলো।
পুরো রুম ফাঁকা হয়ে আছে। আমার সাথে থাকা ছেলেটি মানে আমার বরটাও উঠে কোথায় জানি গেল।আমার মাথায় চট করে একটা বুদ্ধি খেলে গেল।আমি এক মুহুর্ত দেরী না করে ঘোমটা উঠিয়ে সদর দরজা দিয়ে দৌড়ে পালালাম।দিকবিদিকশুন্য হয়ে আমি দৌড়াচ্ছি।তবে কিছু দূর যাওয়ার পর আমি দাঁড়িয়ে পরলাম। সর্দার বাড়িতে হট্টগোল শুনতে পেলাম।জোরে জোরে সবাই চেঁচিয়ে বলছে,কনে পালিয়েছে,কনে পালিয়েছে।বিয়ের পর কনে পালিয়েছে। আমি সেদিকে কান না দিয়ে আরো জোরে দৌড়াতে লাগলাম।
আমিঃ ধূর,কি হলো আমার সাথে? কার সাথে বিয়ে হলো আমার?আমি সিউর ছেলেটা দিহান নয়।তাহলে কে ছিলো?আর আমি তার মনের কথা শুনতে কেন পাচ্ছিলাম না।সে যেই হোক।মানি না আমি এই বিয়ে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে।কেউ তো বর বা কনে কিছুই দেখেনি।এবার ভালোয় ভালোয় বাসায় ফিরতে পারলেই হলো।
মেঘা প্রাণপণে ছুটছে।তবে সে বড্ড ভুল করে ফেললো।সে যদি আর কিছু সময় হট্টগোলে কান পেতে থাকতো তাহলে আরেকটা শব্দও শুনতে পেতো।আর সেটা হলো, বর পালিয়েছে।কনের সাথে সাথে বিয়ের বরও পালিয়ে গেছে । আশ্চর্য কথাতো।মেঘার কেন পালালো সেই ব্যাপারটা না হয় আমরা সবাই জানি।কিন্তু বর পালালো কেন?বরের পালাতেই যদি হতো তাহলে বিয়ের পর কেন পালাবে?আগে পালালে তো এত ভেজাল হতো না।
চলবে