বর্ষার এক রাতে,পর্ব-১৬,১৭
সাদিয়া
১৬
সকালে আহফিন উঠার আগেই তূবা বের হয়ে গেল। ঘুম থেকে উঠে তূবা দেখতে না পেয়ে সে রেগে গেল। সাথে বেশ অবাক হচ্ছে তূবার ব্যবহারে। হঠাৎ এমন আচারন করছে কাল থেকে। কি এমন হলো কাল যে তূবা এমন এড়িয়ে যাচ্ছে তাকে? আহফিনের মেজাজ গরম হয়ে আছে। সে তূবা কে কল দিল। একটা রিং হওয়ার পর সে কল টা রিসিভ করতেই আহফিন গলা ছেড়ে বলে উঠল, “কল টা ধরতে এত সময় লাগে কেন তোমার? আর আমাকে না বলে চলে গেলে যে? কি হয়েছে কি তূবা?”
“আমি আপনাকে একটু পর কল দিচ্ছি।” শান্ত স্বরে তূবা এই কথা বলে কল টা কেটে দিল। আহফিন রাগে লাল হয়ে যাচ্ছে। সে আবার কল দিল তূবার নাম্বারে। কিন্তু আশ্চর্য তূবা ফোনটা বন্ধ করে দিয়েছে। আহফিন তূবার এমন কাজে হতভম্ব। চুপচাপ থম মেরে বসে অনেক কিছু চিন্তা করছে। কিন্তু তূবার এমন পরিবর্তনের কোনো কারণ সে খুঁজে না পেয়ে গাড়ির চাবি হাতে নিয়ে উঠে পরল।
তূবা ফোন টা বন্ধ করে ব্যাগের ভেতরে রেখে লম্বা নিশ্বাস ফেলল। সামনে থাকা মানুষ টা খানিক হেসে বলল “ফোন ডা বন্ধ কইরাল্লি যে? তোর হবু জামাই রাগ করত না?”
রনির কথায় তূবা কিছু বলল না। পাশ ফিরে তাকিয়ে আছে। এলোমেলো হাওয়া তূবার চুল গুলি কে দুলিয়ে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে। আর রনি অপলক তাকিয়ে আছে সেদিকে। কি সুন্দর প্রকৃতির খেলা।
বাড়ি ফিরার সময় রনি কে গলির সামনের ব্রিজে দেখতে পেয়ে তূবাই তাকে নিয়ে এসেছে। ব্রিজের খানিক নিচে দাঁড়িয়ে আছে দুজনে। সামনে মরা পুকুরটা থেকে গা গিনগিন করা গন্ধ আসছে। কাকেদের চেঁচামেচি শুনা যাচ্ছে। আর দুজনে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে।
রনি বলল “তূবা আমারে কেন ডাকলি এইখানে?”
“রনি তুমি কি করছো নিজের জীবন টা কে নিয়ে?”
“কেরে?”
“নিজের ভালো একটা জীবন তুমি নিজে নষ্ট করছো।”
“তাতে তোর তো কিছু না তূবা।”
“জানি আমার কিছু না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমার জন্যে তোমার জীবন টা এমন হয়ে গেছে।”
“এসব তোর ভুল ধারনা। আমার জীবনডা আমার ভাগ্যের দোষে এমন হইয়া গেছে। এইডা আমার কপালের দোষ। এতে তোর কিছুই না।”
“…..
“তুই তোর জীবন নিয়া ভাব। তোর নতুন জীবন নিয়া। কেমনে সাজাইবি এইসব ভাব। আর এইসব তো তুই ভাইবাই রাখছোস আমি হুদাহুদি চিল্লাইতাছি।” বলে রনি কষ্টভরা একটা হাসি হাসল। যা তূবার ভেতরটা কে জ্বালিয়ে দিয়েছে একদম। কষ্ট গুলি গলায় এসে ঠেকেছে।
“বাসায় যা তূবা।”
“….
“এসব ছেড়ে ভালো একটা মানুষ হওয়া যায় না?”
“আমি তো ছোডু থেইকাই খারাপ ভালা হইয়াম কেমনে? আমারে নিয়া তুই ভাবিস না। আর আমার পিছনে তোর সময় নষ্ট করিস না রে। কিন্তু বিশ্বাস কর তূবা আমার লাইগা তোর এমন মায়া দেইখা আমার অন্তরডা জুড়াইয়া গেছে। এমন শান্তি আমি আমার জীবনে পাই নাই।”
তূবা কিছু বলতে যাবে তার আগে খেয়াল করল তাদের থেকে দুই তিন হাত দূরেই আহফিন দাঁড়িয়ে আছে। আহফিন কে দেখে তূবা থমকে গেলো। বুকের ভেতর কিছু একটা প্রবল ভাবে বারি খেয়েছে মনে হলো। হঠাৎ আহফিন কে দেখে সে বোকা হয়ে গেল। তূবা তাকাতেই আহফিন তার দিকে তাকাল। অচেনা দৃষ্টি, চোখ মুখ লাল তূবা তাকিয়েই রইল আহফিনের দিকে। এদিকে রনি দুজনের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। সে পরিস্থিতি কিছুই বুঝতে পারছে না। আহফিন মুখে চাওড়া একটা হাসি টেনে লম্বা পায়ে রাস্তায় রাখা গাড়ির দিকে যেতে লাগল। পিছন থেকে দুই পা এগিয়ে তূবা তাকে ডাকল। আহফিন ফিরেও তাকাল না। রনি ব্যস্ত হয়ে গেল।
“তূবা উনারে আটকা উনি তোরে ভুল বুইঝা চইলা যাইতাছে। তূবা ডাক দে।”
তূবা পাথরের মতো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।
রনি দৌড়ে আহফিনের কাছে যেতে চাইল। আর তূবা তাকে পিছন থেকে ডাকতে লাগল। ততক্ষণে আহফিন গাড়ি নিয়ে চলে গেছে। তূবা গলা ছেড়ে রনি কে ডাকল।রনি আবার দৌড়ে তূবার কাছে এসে হাঁপাতে লাগল।
“তুই আটকালি না কেরে?”
“….
“তূবা আমার লাইগা তোরার মাঝে ঝামেলা হোক আমি এখন চাই না। তোরা ভালা থাক আমি এইডাই চাই।”
তূবা কিছু না বলে রনি কে ফেলে চলে গেল। যাওয়ার আগে একবার পিছন ফিরে রনির দিকে তাকিয়ে বলল “এসব বাদ দিয়ে নিজের যত্ন নাও। জীবন টা কে সুন্দর করে সাজিয়ে নয় গুজিয়ে নাও।”
বাসায় এসে তূবা ব্যাগ বিছানার উপর ফেলে দিয়ে ক্লান্তির নিশ্বাস ফেলে দিল। শরীর টা নয় মন টা বড্ড ক্লান্ত। একবার আহফিনের বাসায় যেতে চেয়েও কেন যেন যেতে মন চাইল না। ব্যাগ থেকে ফোন টা নিল। সিম টা অন করে আহফিন করে কল দিতেই ওপাশ থেকে একজন মহিলা বলতে লাগল “আপনার ডাইলকৃত নম্বার টি এই সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনুগ্রহ করে কিছুক্ষণ পর আবার..” তূবা ফোন টা রেখে বিছানার উপর বসে পরল। তখন ঘরে তুসি ঢুকল “আপা আপা” করে।
“তুসি সোনা কি হয়েছে?”
“আপা ডাক্তার আমারে সত্যি ঠিক করে দিতে পারবে তো?”
“ডাক্তার নয় আল্লাহ ঠিক করতে পারবে। ডাক্তার তো চেষ্টা করবে। আর আমার তুসি এবার হাটতে পারবে। আমি আর তুসি এবার কিশোরগঞ্জ নিকলি হাওয়ারে নীরবে হাটব।”
চিকচিক করা চোখ নিয়ে তুসি বলল “সত্যি আপা?”
“ইনশাল্লাহ। এবার খুশি?”
“হু। আপা কবে অপারেশন হবে?”
“এই মাসেই আর কয়দিন বাকি আছে।”
“আপা আমার জন্যে দোয়া করিস।”
“পাগলি আমার সব দোয়া তোর জন্যে। তুই আমার বোন নিজের মেয়ের মতো ছোটবেলা থেকে বড় করেছি। দেখবি আল্লাহ আমাদের আবার সুন্দর জীবন দিবে।”
“ইনশাল্লাহ আপা।”
দুই বোন জড়িয়ে আছে একে অপরের সাথে। তুসির মুখে হাসি মনে ভয়। তূবার চোখে পানি মনে চিন্তা ভয় সব এক সাথে। অথচ দুজনই নিখুঁত অভিনেত্রী।
আহফিন বেশ বেগে গাড়ি চালাচ্ছে। গাড়ির গতি একদম শেষ পর্যায়ে। না জানি কখন কি হয়ে যায়। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে তার। চোখে বিন্দু বিন্দু পানির দানার কারণে ঝাপসা দেখছে সে। রাগে শ্বাস নিতে পারছে না ঠিক মতো। তূবা তার সাথে এমন টা করতে পারে সে কল্পনাও করে নি। সব মেয়ে এক, বেইমান, স্বার্থপর, লোভী। আবারো মনে এমন ধারনা পুষতে লাগল সে। লুবনার বিরহের কাছে এই বিরহ কিছুই না। ওটা এক বিন্দু আর এটা এক সাগর। এত কষ্ট সে কি করে সহ্য করবে তাই বুঝতে পারছে না। ভেতরটা আগুনের মতো জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। এই টনটনে ব্যথা সে সহ্য করতে পারবে না। সব কিছু শেষ করে দিতে মন চাইছে তার। টপটপ করে চোখ দিয়ে পানি পরছে। তূবা কি রনির জন্যে কাল থেকে এমন করছে তার সাথে? তবে কি তূবার মন পরিবর্তন হয়ে গেলো? আহফিন এসব ভাবছে আর শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার শ্বাসের গতি আস্তেআস্তে কমে আসছে। গাড়ির গ্লাস টা তার কাছে ঝাপসা মনে হচ্ছে। হঠাৎ তার গাড়ির সামনে কোনো একটা বাচ্চা মেয়ে এসে পরাতে সে ব্রেক করে গাড়ি ঘুরিয়ে নিল। আর তখনি হলো এক দুর্ঘটনা..!
চলবে♥
#বর্ষার_এক_রাতে
#সাদিয়া
১৭
মেয়েটার কিছু হয়নি তবে আহফিনের কপাল অনেকটা ফেটে গেছে। হাতেও বেশ খানিক টা আঘাত পেয়েছে সে। বাচ্চা মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কান্না করছে। তখনি দৌড়ে তার মা এলো। কোলে তুলে গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল। আহফিন কে অনেক ডাকার পর চোখ খুলে তাকাল। বাচ্চা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে মন টা কোমল হয়ে উঠল। মুখে এক বিন্দু হাসি ফুটে উঠল। ভদ্র মহিলা বলল,
“আপনি ঠিক আছেন ভাইয়া?”
“জ্বি। আপনার বেবির কিছু হয়নি তো?”
“না ওর কিছু হয়নি। হঠাৎ দৌড় দেওয়া তে এমন টা হয়ে গেছে। আপনার তো মাথা থেকে রক্ত ঝরছে চলুন আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাই।”
“না না তার দরকার নেই।”
“দরকার নেই বললেই হবে? দেখুন তো কতটা কেটে গেছে।”
আহফিন কপালে হাত দিয়ে বুঝল বেশ খানিক রক্ত পড়ছে। হাতে রক্ত লেগে চিপচিপ হয়ে আছে।
“কি হলো? চলুন আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাই।”
“নো থ্যাংকস। কিন্তু আপনার বেবি কে সাবধানে রাখবেন। এমন বাচ্চা নিয়ে একা বের হওয়া ঠিক নয় সাথে তার বাবা কে নিয়ে বের হবেন। নয়তো আরো অনেক কিছুই হতে পারে।”
আহফিন খেয়াল করল ভদ্র মহিলার মুখ কালো হয়ে গেছে।
“এনি থিংক রং?”
“আই এম সিঙ্গেল মাদার।”
আহফিন থমকে গেল। কিছু বলার মতো কথা খুঁজে পাচ্ছে না সে। মানুষ কতটা নিকৃষ্টও হতে পারে। সামান্য সুখের জন্যে একটা মেয়ের সারাটাজীবন নষ্ট করে দিতে পারে কি করে। অপমান দুঃখে কষ্টে জর্জরিত করে দেয়। আহফিন যেন মেয়েটার জীবনের সকল কষ্ট মুখে দেখতে পাচ্ছিল। আর কথা না বাড়িয়ে সে তখনি গাড়ি নিয়ে ছুটল। ভদ্র মহিলা বোকার মতো তাকিয়ে রইল।
তূবা চিন্তায় ঘুমাতে পারেনি তবে দুপুরবেলা পর্যন্ত চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল। তুসি এসে অনেক বার ডেকে গেছে তূবা তাকে বড় গলায় না করে দিয়েছে আর আসতে। অন্ধকার রুমে চোখ বুজে আছে। মাথাটা এত ব্যথা করছে বলার বাহিরে। মাইগ্রেন টা আল্লাহ কেন তাকে দিল সে কিছুই বুঝতে পারে না। তার বিপদের তো আর শেষ নেই। ঘাড় থেকে ব্যথাটা মাথায় ধরছে। মাথার মস্তিষ্কের সব রগ যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে। ভেতর থেকে গুলাচ্ছে। তার উপর চিন্তা মাথার উপর শান্তিতে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। আর সহ্য হচ্ছে না তূবার। হঠাৎ করে উঠে গেল। বিছানার পাশ থেকে ফোন নিয়ে আহফিন কে কল দিল কিন্তু বন্ধ। তূবা ফোন টা রেখে চুল গুলি ঠিক করল। মাথা উপরে তুলে ফুস করে নিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বাথরুমে চলে গেল।
১ টা ঘন্টা শাওয়ারের নিচে বসে ছিল তূবা। শূন্যে তাকিয়ে আকাশপাতাল ভাবতে লাগল সে। পানি উপর থেকে পড়ে চোখ ঝাপসা করে দিচ্ছে বারবার তবুও চোখ বন্ধ আর করছে না। লাল টকটকে হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। শরীরের লোম যখন কাটা দিয়ে উঠছে তখন তূবা উঠে দাঁড়াল।
বাথরুম থেকে এসে তূবা আবার আহফিন কে কল দিল তখন ফোন টা বন্ধ পেয়ে তূবা ছুড়ে ফেলে দিয়ে চুল ঝাড়তে লাগল। তুসি তখন তাকে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকল।
“আপা তুই কি এখনো খাবি না?”
“না তুসি তোর ভাইয়ার এখানে যেতে হবে। ওখানে খেয়ে নিব চিন্তা করিস না।”
তুসি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল “আপা মাত্র ৩ টা ৪২ বাজে সকাল থেকে কিছু খাস নি অল্প খেয়ে যা?”
তূবার আর তুসি কে এভাবে মানা করতে ভালো লাগছিল না বলে সে তুসির কাছে গিয়ে বসল। গালে হাত দিয়ে কোমল স্বরে বলল “আমার সোনা টা এত চিন্তা করিস আমায় নিয়ে? আমার পাগলি টা এত চিন্তা করতে হবে না তোকে।”
“আপা।”
“বল।”
“আপা আজ রাতে বাসায় চলে আসবি?”
“….
“তোর বুকে মাথা রেখে ঘুমাতে চাই এই কয়টা রাত।”
তূবার বুকটা কেঁপে উঠল তুসির কথা শুনে। তুসি যে ভেতরে ভেতরে ভয় পাচ্ছে তূবার বুঝতে আর দেরি হলো না। সে তুসি কে নিজের বুকে শক্ত করে চেঁপে ধরল। চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলতে লাগল
“তুসি লক্ষ্মী টা আমার তুই এত ভয় পাচ্ছিস কেন? কিছু হবে না। কিছু হবে না তোর। লক্ষ্মী সোনা আমার দেখবি সব ভালো মতো হয়ে গেছে। সব ঠিক হয়ে যাবে।”
তূবার মন টা অশান্ত হয়ে আছে। ভেতরের স্বস্তি টা পাচ্ছে না সে। রিকশায় বসে থেকে বন্ধ ফোনেও হাজারটা কল দিয়েছে আহফিন কে। একটা চাঁপা কষ্ট ভেতরটা কে দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছে।
তূবা বাড়ি গিয়ে কলিংবেল চেঁপে দাঁড়িয়ে আছে। আহফিন তখনো দরজা না খুলে চুপচাপ নীরবতা পালন করছে। তূবা এখন দরজা ধাক্কাতে শুরু করেছে। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা খোলার নাম নেই। তূবা এবার গলা ছেড়ে চিৎকার করা শুরু করেছে।
“আহফিন, আহফিন দরজা খুলুন। আহফিন প্লিজ দরজা খুলুন। দরজা খুলুন আহফিন।”
এভাবে তূবা ডাকছেই। যখন তূবার কান্নার আওয়াজ আর নিতে পারছিল না আহফিন তখন সোফা থেকে উঠে দাঁড়াল। দরজা খুলে দিয়ে আবার ফিরে গেল সোফার কাছে। পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে রইল খাম্বার মতো। তূবা দৌড়ে গেল আহফিনের কাছে। মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে আৎকে উঠল তূবা। ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগল কি হয়েছে। কিন্তু আহফিন স্টিল বডি নিয়ে দাঁড়িয়েই রইল। তূবা কান্না করতে করতে বলল “কি হয়েছে কি আপনার? আমায় নিয়ে কি সমস্যা আপনার?”
আহফিন এবার সিংহের মতো গর্জে উঠল “সমস্যা আমার না সমস্যা তোমার। আর তোমার আমার মাঝে সমস্যা হলো রনি। রনির প্রতি তোমার এত মায়া উপচে পড়ছে কেন বুঝতে পারছি না। কি দেখলে রনির মাঝে? বলো তূবা বলো।”
আহফিনের এমন ব্যবহারে তূবা একদম ভয় পেয়ে গেল। দুই পা পিছনে নিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আহফিনের দিকে। এবার আহফিন সিংহের মতো থাবা বসাল তূবার দুই বাহুতে। নখ খামছে জিজ্ঞেস করতে লাগল “বলছো না কেন? রনির প্রতি এত মায়া হলো কি করে তোমার? তুমি জানো না রনি তোমার সাথে কি কি করতে পারে? তবুও কেন তার সাথে এত কথা? কিসের কথা?”
“….
“কি হলো বলো।”
আহফিনের চিৎকারে কেঁপে উঠেছে তূবা। কাঁপা গলায় বলল
“রনি আগের মতো নেই। ও পরিবর্তন হয়ে গেছে। ও আর আমাদের ক্ষ ক্ষতি করবে না।”
এই কথা শুনে আহফিন তাকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল অনেকটা দূরে। চোখ মুখে তার প্রচন্ড বিরক্তির ছাপ। হঠাৎ সে মিনি টেবিলে প্রচন্ড বেগে লাথি দিয়ে আবার উপরে চলে গেল। তূবা নির্বোধের মতো দাঁড়িয়ে শুধু দেখল। শরীর টা অসাড় লাগছে। মাথায় এখন কিছুই আসছে না। রক্তহীন দৃষ্টিহীন চোখ নিয়ে তূবা ধপ করে সোফার ধারে ফ্লোরে বসে পড়ল। তাকে একদম নির্জীব দেখাচ্ছে।
চলবে♥