বর্ষার_এক_রাতে,পর্ব-১৮,১৯

বর্ষার_এক_রাতে,পর্ব-১৮,১৯
সাদিয়া
১৮

রান্নাবান্না শেষ করে তূবা যখন উপরে গেল তখন আহফিনের ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। তূবা দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে আহফিন কে ডাকতে লাগল রাতের খাবার খাওয়ার জন্যে।
“খেয়ে নিন। আমাকে আজকে বাসায় চলে যেতে হবে আমাকে। দরজা খুলে নিচে আসুন।”

তূবা কে আজ রাতে বাড়ি ফিরতে হবে শুনে আহফিনের রাগ বেড়ে গেল। দাঁত কিড়িমিড়ি করে সে দরজা খুলে বের হলো। লাল বড়বড় চোখ করে সে তূবা কে বলল
“এতদিন তো তোমার যেতে হয়নি রাতের বেলায়। এখন কেন যেতে হয়? নাকি রনি বাসায় পৌছে দিবে? ও তো আবার ভালো হয়ে গেছে।” বলে আহফিন অন্যদিকে মুখ ফিরাল।

“ছিঃ কি বলছেন আপনি এই গুলি আহফিন? আপনার চিন্তাভাবনা এমন কেন? কি হয়ে গেল আপনার?”

“আমার চিন্তা ভাবনা পাল্টাই নি তোমার টা পাল্টে গেছে তূবা। তাই রনি কে তোমার এখন মহৎ মনে হচ্ছে।”

“একটা মানুষ কি পরিবর্তন হয় না? ভালো হওয়া কি দোষের?”

আহফিন দ্বিগুণ রেগে গিয়ে বলল
“আরে দোষের কেন হবে? রনি তো এখন ধোয়া তুলসি হয়ে গেছে। তো যাও ভালো মহৎ মানুষের কাছেই যাও।”

আহফিনের মুখে এমন একটা কথা তূবা কখনো আশা করেনি। আহফিনের এমন নিকৃষ্ট রকমের কথাটা কি ইঙ্গিত করে তা জানে। বারবার তার কানে ভাসছে আর শরীর টা জ্বালিয়ে দিচ্ছে কথাটা। তূবা রেগে গিয়েছে খুব রকমের।

“আপনার মতো এমন নিচ মনমনোসিকতার মানুষ আমি আগে কোনো দিন দেখি নি। আপনার সাথে থাকা কোনো ভাবেই হবে না আমার। আমাকে নিয়ে এতটা বাজে মন্তব্য যে মনে পোষতে পারে তার সাথে আর যাই হোক সংসার হবে না।”
গড়গড় করে কথা গুলি বলে তূবা দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করেছে।

আহফিন রেগে গিয়ে বলতে লাগল “হ্যাঁ যাও যাও আমি তো ভালো না। এখন আমি খারাপ হয়ে গেছি না? এখন তো রনি ভালো হয়ে গেছে। ওর কাছেই তো যাবে। যাও।”

আহফিন কপাল ডলতে ডলতে পাশ ফিরে তাকাল। একটু পর যখন দেখল তূবা সত্যি সত্যি ব্যাগ নিয়ে চলে যাচ্ছে তখন আহফিন তাকে পিছন থেকে ডাকল। তূবা আর পিছু না ফিরে বেড়িয়ে গেল। তার ডাক যখন তূবা শুনেনি রেগে মেগে সে দেওয়ালে একনাগাড়ে তিনটা ঘুষি মেরে ঘরে ঢুকে পরল। রাগ টা সে কিছুতেই লাগামে আনতে পারে না। সাপের মতো ফুসফুস করে নিশ্বাস ফালছে আহফিন।

তূবা বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছে। নীরব রাস্তায় তার কান্না বারবার শুনা যাচ্ছে। অবুঝের মতো কেঁদেই যাচ্ছে তূবা।

—–
এই দুই দিনের মাঝে না তূবা একবার আহফিন কে কল দিয়েছে। আর না আহফিন তূবা কে দিয়েছে। ২ দিনের মাঝে ১ টা মিনিট কেউ কারো সাথে কথা বলে নি আর না ১ বার দেখা হয়েছে। আহফিন কল দেয় নি বলে তূবা কল দেয় নি। তূবা দোষ করেও কল দেয় নি তাকে তাই সেও তূবা কে কল করে নি। অনেকবার ডায়ালে নাম্বার টা নিয়েও আহফিন কেটে দিয়েছে। ভেতরে তার একটা রাগ এখনো রয়েই গেছে। তূবা তো রাগে আহফিনের সাথে থাকতে পারবে না সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছে। কিন্তু তবুও মন সায় দিচ্ছে না। দম আটকে আটকে আসছে।

—-
তুসির ঔষধ নিতে ৩ দিনে আজ তূবা ঘর থেকে বের হয়েছে। মুখটা চিন্তায় একদম শুকনো হয়ে গেছে। তূবা কে অসুস্থ মনে করে রনি এগিয়ে গেল তার দিকে।
“কিরে তূবা তোর কি শইল (শরীর) ভালা না?”

“….

“তূবা রে?”

“ভালো আছি।”

“তাইলে মুখডা এমন লাগদাছে কেরে?”

“জানি না।”

“তোর আর তোর হবু জামাইয়ের মধ্যে কোনো ঝগড়া হইছে?”

“….

“কিরে?”

“না।”

“আমারে নিয়ে কাইঝা করছোস?”

“না।”

“তাইলে তোর কি হইছে কইবি তো।”

হঠাৎ রনির জোরে কথা বলায় তূবা ভয় পেয়ে গেল।

“আমি ভালো আছি। তুমি সরো।”

“….

“কি হলো?”

“তূবা আমি তোরে সুখি দেইবার চাই। এর লাইগা আমি নিজের ভালোবাসা রে কোরবান দিছি। তোরে অসুখি দেখবার লাইগা না। কথাডা মাথায় রাহিছ।”

রনির চলে যাওয়ার দিকে তূবা অপলক তাকিয়ে রইল। এ কোন চক্রে আটকে গেল সে?

বাসায় ফিরার পর তূবার ফোনে কল এলো। স্কিনে যখন “আহফিন” নাম টা ভেসে উঠল তা চোখে পড়তেই তূবার বুক টা ধুক করে উঠল। নিশ্বাসের গতি বেড়ে গিয়েছে। প্রথম প্রথম যে অনুভূতি হতো ঠিক সেই অনুভূতি হতে শুরু করেছে বুকের ভেতর। কাঁপা হাতে তূবা কল টা রিসিভ করল। ওপাশ থেকে গম্ভীর গলায় শুনা গেল।
“বাসায় এসো।”
তূবার ভেতরের অনুভূতি টা কেমন নির্জীব হতে শুরু করল রাগে। যেন তার ভেতরের অনুভূতি টা কে রাগ টবকে যেতে চাইছে। তবুও পদে পদে বাঁধা খাচ্ছে।

তূবা কঠিন গলায় জানাল।
“আমি আসতে পারবো না।”

আহফিন চিৎকার করে বলল “তুমি আসবে কি না বলো।”

তূবা ৫ সেকেন্ড ভেবে বলল “আচ্ছা।” বাড়তি আর কিছু না বলে কল টা কেটে দিল। একটু পর তৈরি হয়ে সে বাসা থেকে বের হলো।

আহফিন আর তূবা সামনাসামনি বসে আছে সোফায়। কিন্তু দুজনই চুপ। আহফিন নীরবতা ভেঙ্গে জিজ্ঞেস করল
“তুমি এখনো রনির সাথে দেখা করো কিংবা কথা বলো?”

“….

“কি হলো তূবা?” বেশ শান্ত গলায় বলল আহফিন।

তূবার ভেতরের রাগ টা আহফিন কে সামনাসামনি দেখে কেমন মিলিয়ে গিয়েছে। এই মানুষটার থেকে দূরে থাকা তার কিছুতেই সম্ভব না। যা এই লোকটার সংস্পর্শে এলেই বুঝা যায়। তূবা এত না ভেবেই বলে উঠল “না।”

“মিথ্যে কথা। তুমি মিথ্যে বলছো তূবা। তুমি আজ একটু আগেই রনির সাথে কথা বলছিলে। রনি চলে যাওয়ার পরও তুমি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলে। আমি নিজ চোখে দেখেছি সেটা তোমার বাসায় যাওয়ার সময়। তুমি কি চাও কি তূবা? কেন আমার সাথে মিথ্যে বলছো তুমি? উত্তর দাও।” গলা ফাটিয়ে আহফিন কথা গুলি বলল। তূবা অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বসে রইল। সে জানে না কেন এটা বলল। সত্যি টা বললেই বা কি হতো। চুপ করে বসে রইল সে। তূবা কে চুপ থাকতে দেখে আহফিন রাগে কাঁচের টিটেবিল টা উল্টে ফেলে দিয়ে চলে গেল। নিজেকে আর সংযত করতে পারছে না সে। তূবা ভাঙ্গা কাঁচের টুকরোর দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। এই কাঁচ তো আর জোড়া দেওয়া সম্ভব হবে না। সম্পর্কের বেলাতেও কি এমন টাই হয়? ভাবতে লাগল তূবা। গভীর ভাবে চিন্তা করছে।

আহফিন দরজা বন্ধ করে বিধ্বস্ত অবস্থায় মাথায় হাত দিয়ে বসল। কি করবে সে বুঝতে পারছে না। তূবার এমন পরিবর্তন হেলাফেলা ভাব আর নিতে পারছে না সে। ভেতর থেকে প্রতি নিয়ত আঘাত পাচ্ছে। রনির প্রতি তূবার এমন করার কারণ টা কিছুতেই মাথায় খেলছে না তার। কি এমন কারণ? কেন তার তূবা এমন হয়ে গেছে সে জানে না। আহফিন আজ ভীষণ অসহায়। ভীষণ! আহফিনের চোখ গুলি হঠাৎ ঘোলাটে হয়ে আসল..

চলবে♥

#বর্ষার_এক_রাতে
#সাদিয়া

১৯
দরজায় মৃদ একটা টোকার আওয়াজ হলো। আহফিন কপালের উপর হাত সরিয়ে দরজার দিকে তাকাল। চোখ বন্ধ করে কপালে হাত দিয়ে শুয়ে ছিল সে। হঠাৎ খেয়াল করল দরজার নিচ দিকে সাদা একটা কাগজ পড়ে আছে। কপাল কুঁচকে আহফিন এগিয়ে গেল দরজার দিকে। কাগজ টা কুড়িয়ে হাতে নিয়ে দরজা খুলল। কেউ নেই দরজার ওপাড়ে। আহফিন কাগজ টা খুলে পড়তে লাগল

“জানি আপনি আমার উপর রেগে আছেন আহফিন। হয়তো আপনার রাগ করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমি এখন একটা ধাঁধায় পড়ে গেছি। নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হয়। সত্যি রনি ভালো হয়ে গেছে। আপনি রাগ করলেও এটা সত্যি রনি আমাকে ভালোবাসে। আর আমি ভালোবাসি আপনাকে। কিন্তু তবুও রনির প্রতি আমার মায়া হয়। সবসময় মনে হয় আমার জন্যে রনির জীবন টা এমন হয়ে গেছে। আমিই বোধ হয় ওর নষ্ট একটা জীবনের জন্যে দায়ী। হয়তো ওর জীবটা স্বাভাবিক সুন্দর হতে পারত। আমাকে ভালোবেসেই হয়তো একটা ছেলে স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে আছে। এই জন্যেই হয়তো আমার মায়া হয় তার উপর। অপরাধ বোধ থেকেই হয়তো হয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন রনি ভালো হয়ে গিয়েছে। ও আমার বা আপনার কোনো ক্ষতির কারণ হবে না।

বাকি রইল আপনার কথা? আপনি আমার প্রতিটা স্পন্দনে মিশে গেছেন। আপনার ছুঁয়া আমার প্রতিটা লোমকূপে আছে আহফিন। আমার অস্বস্তিত টা আমি আপনার মাঝে বিলীন করে দিয়েছি। আপনাকে ছাড়া নিশ্বাস নেওয়াও আমার জন্যে কষ্টকর। আমি আপনাকে হারাতে চাই না। তাই আনমনে মিথ্যে টা বলেছিলাম। আপনি আমায় দোষী ভাবলে ভুল করবেন। কিন্তু এটাও সত্যি আপনি আপনার কথার দ্বারা আমার নরম মন কে আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছেন আহফিন।”

লেখাটা শেষ করে আহফিন দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ফেলে দিল। সে নিজেও অনুধাবন করছে সে তূবার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে। ওভাবে কথা গুলি বলা ঠিক হয়নি হয়তো। আহফিন কাগজ টা রেখে রুম থেকে বের হলো।

ঠিকই ধরেছে। তূবা ছাদের এক কোণায় আকাশে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে। আহফিন পিছন থেকে তাকে জড়িয়ে ধরল। লম্বা চুলে মুখ গুঁজে দিয়েছে মনমরা হয়ে। তখনি বৃষ্টির কণার মতো টুপ করে পানি গাল বেয়ে পড়ল তূবার। দম টা কেন যেন বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে। আহফিন তাকে নিজের দিকে ফিরিয়ে চোখের পানিটা মুছে দিল। এক হাতে কান ধরে বিড়বিড় করে সরি বলতেই তূবা এক রাশ কেঁদে জড়িয়ে ধরল আহফিন কে। তূবার আড়ালে আহফিন চোখের দুইটা ফোটা আড়াল করে নিল রাতের আঁধারে। মেয়ে টা যে কিভাবে তার হৃদয়ে মিশে গেছে তা সে জানে না। তূবার কষ্ট সরাসরি যেন তার বুকে গিয়ে লাগে।

“তূবা আমার দিকে তাকাও। তোমায় ভালোবাসি আমি তূবা। কোনো সময় তোমার খারাপ আমি চাই না। চাইবও না। কিন্তু আমি এটা চাই যেন তুমি রনির সাথে আর কথা না বলো। আমি চাই না রনির কাছাকাছি তুমি থাকো। তোমার কিন্তু উচিৎ আমার কথা শুনার। হতে পারে সে ভালো হয়ে গিয়েছে। মানলাম ও আমার আর তোমার ক্ষতি করবে না। কিন্তু তুমি ওর সাথে কথা বললে দেখা করলে ওর প্রতি তোমার পরোক্ষ মায়া জন্মে যাবে। তোমার সবসময় মনে হবে তোমার কারণেই ওর এমন অবস্থা। যেটা তোমার এখন হচ্ছে। এটা দিন দিন বাড়তে থাকবে। ফলশ্রুতিতে কি হবে? আমাদের মাঝে ফাটল ধরতে শুরু করবে। সামান্য কয়দিনে কি হচ্ছে দেখতে পাচ্ছো না তুমি? এটা আরো বড় রূপ ধারণ করলে কি হবে একটু ভাবো তো।”

তূবা নির্বাক হয়ে আছে। আহফিনের কথাটাতে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। চুপচাপ সে ভাবছে এই গুলি।

“তূবা বুঝেছো আমার কথা গুলি? কেন আমি তোমার সাথে রাগ করেছি?”

তূবা মাথা নাড়াল।

“আমাকে কথা দাও তুমি আর রনির সাথে কথা বলবে না।”

“….

“কি হলো তূবা? তুমি আর রনির সাথে কথা বলবে না বা দেখা করবে না। কথা দাও।”

তূবা একটু ভেবে আহফিন কে বলল সে আর রনির সাথে কথা বলবে না ওর থেকে দূরেই থাকবে। আহফিন তূবা কে তার খারাপ ব্যবহারের জন্যে সরি বলে আবার জড়িয়ে ধরল তাকে।

—-
তূবা এই কদিনে না রনি কে নিয়ে তেমন ভেবেছে আর না তাকে সামনে পেয়েছে। সে এখন তুসি কে নিয়ে চিন্তায় আছে। বেশিদিন বাকি নেই অপারেশন করানোর। আহফিন কে জানিয়ে দিয়েছে তুসির অপারেশনের পরই তাদের বিয়ে হবে। আহফিন এতে অমত করে নি। সে এতেও রাজি। তূবা বাজার করতে যাওয়ার সময় রনির সাথে দেখা।
“তূবা তোর সাথে আমার একটু কথা আছিল।”

“….

“তূবা একটু সময় দিবি?”

“আমি এখন ব্যস্ত তুমি যাও।”

“তূবা তোরে কিছু জানানোর আছিল একটু শুন।”

“….

“অনুরোধ তূবা।”

তূবা কি করবে বুঝতে পারছে না। রনি কি বলতে চায় মন শুনতে চাইছে। আবার আহফিন কে দেওয়া কথা গুলিও মনে পড়ছে। পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে তূবা রাস্তার এক কিনারে।

“তূবা রে তোর দুইডা পায়ে পড়ি আমার কথাটা একটু শুন।”

তূবা চলে যেতে পা বাড়িয়েছিল তবে রনির এই কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল সে। না পা বাড়াতে পারছে আর না কিছু বলতে পারছে।

“শুনবি?”

“….

“তূবা আমার না একটা অনুরোধ আছে তোর কাছে। আল্লাহর দোহাই লাগে এইটা রাখিস?”

“ক কি অনু রোধ?”

“আমি..”

কথাটা শেষ করার আগে তূবার ফোন টা বেজে উঠল। আহফিন কল করেছে।
“তুমি কি বাসায় আছো তূবা?”

“কে কেন?”

“আমি তোমার বাসায় আসছি পাঁচ মিনিটের মাঝে তাই জিজ্ঞেস করলাম।”

“আ আচ্ছা।”

তূবা তাড়াতাড়ি করে ফোন টা কেটে দিয়ে ওখান থেকে চলে গেল। রনির জন্যে বুকটা কেঁদে উঠলেও কিছু করার নেই। আহফিনের বিশ্বাস সে ভাঙ্গতে পারে না। তবুও হৃদয় টা কষ্ট পাচ্ছে। এভাবে বলার পরও একটা মানুষের একটা অনুরোধের কথা শুনতেও সে পারেনি। এটা কতটা কষ্টের সে বুঝাতে পারবে না কাউকে। একটা মানুষ কে কষ্ট দিয়ে কাঁদিয়ে কিভাবে আরেকটা মানুষ ভালো সুখি থাকতে পারে?

রনির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। শেষ ইচ্ছাটার কথা শুনার মতোও তূবার কাছে সময় নেই।
“আমার লাইগা তোর সময় কেরে থাকব তূবা? আমি তোর কেউ না। আমিই বেক্কলের মতো তোর কাছে আশা করছিলাম। তূবা তো আরেকজনের। তূবা আমার না। তূবা আমার না।”
রনি রাস্তায় বসে হাউমাউ করে কান্না করছে। একটা কুকুর জিহ্বা বের করে পলক হীন তাকিয়ে আছে। হয়তো সে বুঝতে পারছে না কেন এভাবে কান্না করার কারণ। কি জীবন। দুনিয়া কত অদ্ভুত!

চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here