ঘৃণার মেরিন part : 14

ঘৃণার মেরিন
part : 14
Writer : Mohona

মেরিন জবটা পেয়ে খুশিই হলো। ওদিকে নীড়…..
নীড়: আমি তোমার সেই রাগ আবার ফিরিয়ে আনবো। তোমার চোখের সেই আগুন ফিরিয়ে আনবো। আড়ালকে মেরিন বানাবো। আর এরপর মেরিনকে মিষ্টি।

.

রাতে……
মেরিন কাপড় চোপর গোছাচ্ছে। নীড় ওদের ৩জনের জন্য খাবার ঘরে নিয়ে এলো। কারন মেরিন যতোই বলুক যে দুপুরে খেয়েছে কিন্তু নীড় জানে যে মেরিন আসলে খায়নি। তাই নীড়ও কিছু খায়নি।
নীড়: নির্বন….. খাবার নিয়ে এসেছি। মামনিকে নিয়ে আসো। আমরা ৩জন মিলে খাই।
নির্বন: মামনি চলো।
মেরিন: বাবাই…..
নির্বন: আজকেও কি বলবে ক্ষুধা লাগেনি?☹️☹️☹️।
মেরিন: না বলবোনা। তবে আসো আগে তোমাকে খাইয়ে দেই।
নির্বন: কিন্তু মামনি জানো বাবানা সকাল থেকে কিছু খায়নি।
মেরিন: হামম।
নির্বন: বাবা না বিকালবেলা খেলার সময় হাতে ব্যাথা পেয়েছে। এত্তোগুলা রক্ত বের হয়েছে।
মেরিন: হামম।
নির্বন: বলছিলাম কি মামনি….. বাবা কাটা হাত দিয়ে কিভাবে খাবে?
মেরিন:…..
নির্বন: মামনি বলছিলাম কি তুমি আমার সাথে বাবাকেও খাইয়ে দিবে???🙁🙁🙁।
মেরিন: what?
নির্বন: বাবাকেও খাইয়ে দাওনা…. please ….
মেরিন: না… দেখি হা করো।
নির্বন: তুমি না আমার মিষ্টি আম্মু। আমার সব কথা সবসময় রাখো। তাহলে বাবাকেও খাইয়ে দাওনা। please … 🥺🥺🥺…
মেরিন: না বাবা….
নির্বন:কেন? দাও না দাও না।
মেরিন: নির্বন…..
নির্বন: বাবাকে না খাইয়ে দিলে আমিও খাবোনা।
মেরিন: নির্বন তুমি কিন্তু জেদ করছো। good boy রা জেদ করেনা। দেখি হা করো।
নির্বন: আমি খাবোনা।
মেরিন: নি…. তুমি না খেলে কিন্তু মামনিও খাবোনা।

.

নির্বন পরে গেল বিপদে। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা। একদিকে মামনি আরেক দিকে বাবা। মহা confused হয়ে গেলো। আর confused হয়ে গেলে নির্বন কান্না করে দেয়। তাই এখনও কান্না করে দিলো। যা দেখে নীড়-মেরিন অস্থির হয়ে গেলো।
নীড়-মেরিন: কাদেনা বাবা…..
নির্বন ভ্যা ভ্যা করে কেদেই যাচ্ছে। মেরিন জানে নির্বন confused হয়েই কান্না করছে। মেরিন নির্বনকে কোলে নিয়ে
বলল: কাদেনা কলিজা.. মামনির লক্ষি বাচ্চানা তুমি। তুমি কান্না করলে কিন্তু মামনিও কেদে দিবে।

মেরিন অনেক কষ্টে নির্বনকে থামালো। সেই সাথে নীড়কেও খাইয়ে দিতে রাজী হলো। মেরিন আগে নির্বনের মুখে দিলো। এরপর নীড়ের মুখে দিতে গেলো। নীড়ও মুখে নিলো। মেরিন ২বাবা ছেলেকে দেখতে লাগলো। একই ভাবে ২জন হা করে। একইভাবে খায়।
২জন একই সাথে বলল: yummy….
মেরিন অজান্তেই হেসে দিলো। মেরিন ২জনকে খাইয়ে দিলো। কিন্তু নীড় খাবার কম মেরিনের হাত বেশি খাচ্ছিলো।
নির্বন: মামনি এখন তুমি খেয়ে নাও।
মেরিন: হামম।

.

কিছুক্ষনপর…..
মেরিন বাসনপত্র রান্নাঘরে রেখে রুমে এসে দেখে বাবা ছেলে একসাথে খেলছে। আর হো হো করে হাসছে। মেরিন কিছুক্ষন ২জনকে দেখলো। মেরিন ওদেরকে একা ছেরে দিয়ে বাগানে চলে গেলো।
মেরিন মনে মনে: উপরওয়ালা যা করে হয়তো ভালোর জন্যেই করে। বাবা-মায়ের ভালোবাসার জন্য সারাটা জীবন চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করেছি কিন্তু পাইনি। আমি চাইনা আমার ছেলের সাথেও এমন কিছু হোক। আমি নির্বনকে অনেক ভালোবেসেছি। কিন্তু বাবার ভালোবাসা দেয়া সম্ভব ছিলোনা। বাবার হাহাকার ছিলো ওর মধ্যে। তাই আমি চাই আমার ছেলেটা তার মা-বাবা ২জনেরই ভালোবাসা পাক।
তখন কেউ ওর কাধে হাত রাখলো। তবে স্পর্শটা মেরিনের অচেনা মেরিন ঘুরে দেখে কবির। সাথে সাথে পিছিয়ে গেলো।
কবির: মামনি….
মেরিন আর দেরি না করে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।

.

মেরিন রুমে ঢুকতেই
নির্বন: ওই তো মামনি চলে এসেছে।
মেরিন: কি হয়েছে?
নির্বন: মামনি আসো আসো…. আমরা ৩জন আজকে একসাথে ঘুমাবো। কালকে তো আমি ভুল করে ঘুমিয়েই পরেছিলাম। তাই তো ৩জন একসঙ্গে শুয়ে ছবি তুলতে পারিনি। সেলফি নিতে পারিনি।
মেরিন: সেলফি?
নির্বন: হামম সেলফি।
মেরিন: সেলফি কেন?
নির্বন: বারে সেলফি তুলে আমার বন্ধুদের আর প্রাণকে দিবোনা?
মেরিন: বন্ধুরা তো ঠিক আছে। কিন্তু প্রাণ কে কেন?
নির্বন: ওকে তো সবার আগে দেখাবো। কারন ও রোজ আমায় শোনাতে যে ওর বাবার সাথে হেন করেছে ত্যান করেছে। রাতে বাবা এই গল্প বলেছে। আরো কতো কি। আর বলতো আমি নাকি এমন moment কখনো পাবোনা। কারন আমার বাবা নেই। তাই ওকে দেখাবোনা… ও এমন করতো বলেই তো আমি ওকে….
মেরিন: ওকে?!!
নির্বন মনে মনে : ওকে পিটিয়েছি। 😤😤😤।
নির্বন: আমি ওকে জবাব দিবো। আমাদের ছবি দেখিয়ে।😅😅😅
মেরিন: ছিঃ বাবা….. এমন করে বলতে নেই। প্রতিহিংসা ভীষন খারাপ জিনিস। এমনটা করলে আল্লাহ নারাজ হয়। কেউ খারাপ ব্যাবহার করলে তাকে ভালোবেসে বোঝাতে হয়। ও তোমার অপছন্দ ভালো কথা। সেটা মনের মধ্যে রাখো। সেটা প্রকাশ করে প্রতিহিংসা বারানো ঠিকনা। তুমি কিছু করবে এর প্রতিশোধে ও কিছু করবে পরে আবার তুমি কিছু করবে। এমনভাবে চলতে থাকলে তো তোমরা কখনো বন্ধু হবেনা। সবার সাথে ভালো ব্যাবহা করবে।
নীড়: no baby…. কেউ বিনা দোষে তোমাকে ১টা ঘুষি দিলে তুমি তাকে ১০টা দিবে।

নির্বন: কিন্তু মামনি যে বলে মারামারি করা ভালোনা।
নীড়: আরে শুধু শুধু মারবে নাকি? তোমাকে কেউ বিনা কারনে মারলে তাকে ছারবে কেনো? তাকে দে দানা দান মারতেই থাকবে। কেউ যদি কিছু বলে তো তুমিও বলে দেবে জানো আমি কে? আমি নির্বন আহমেদ খান চৌধুরী। আমার মামনি মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী । আমার বাবার নাম নীড় মেরিন আহমেদ খান চৌধুরী বর্ষন। দেখবে কেউ তোমার দিকে চোখ তুলে তাকাতেই সাহস পাবেনা।

.

মেরিন বেশ বুঝতে পারছে যে নীড় ওকে রাগানোর চেষ্টা করছে।
নির্বন: আচ্ছা বাবা মামনির নামে তোমার নাম নীড় আছে। আবার তোমার নামেও মামনির নাম মেরিন আছে। কেন???🤔🤔🤔।।
নীড় মুচকি ১টা হাসি দিয়ে
বলল: কারন আমরা এক মন এক প্রাণ। তাই।
মেরিন: নির্বন brush করেছো?
নির্বন: উইই ভুলে গেছি। আচ্ছা মামনি আগে সেলফিটা তুলে নেই তারপর করবো।
মেরিন: না বাবাই আগে brush করে আসো।
নির্বন: ok মামনি।
নির্বন washroom এ যেতেই মেরিন কোনো কথা না বলে bag থেকে ৩০হাজার টাকা দিয়ে
বলল: এটা আমার আর আমার ছেলের থাকা খাওয়ার খরচ। প্রতি মাসে আপনি শুরুতেই টাকাটা পেয়ে যাবেন। নির্বন যদি কিছু চায় তবে সেটা আমিই দেবো। আর এমনিতেও নির্বন তেমন আবদার করেনা।
নীড় অবাক চোখে দেখছে। নীড় টেনে মেরিনকে বারান্দায় নিয়ে গেলো।
নীড়: এসবের মানে কি?
মেরিন: কালই বলেছিলাম যে আমার ছেলের যাবতীয় খরচ আমিই দিবো।
নীড়: মেরিন…. অভিমানে এমন কিছু করোনা যার জন্য আমাকে তোমার ওপর রাগ করতে হয়। আমার ছেলেকে খাওয়ানোর খরচ নেবো আমি।
নীড়ের চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে। মেরিন নীড়ের চোখ দেখে ভয় পেলো।
মেরিন চোখ নামিয়ে
বলল: নননির্বন আমার ছছছেলে। তততাই ওর ভভভভরন পপপোষনের দায়িত্ব আমার।
বলেই মেরিন চলে যেতে নিলে নীড় মেরিনকে টেনে নিয়ে ওর ঠোট জোরা দখল করে নিলো। শেষে ১টা কামড় দিলো। মোটামোটি জোরেই।
নীড়: এটা তোমার শাস্তি। ধরো তোমার টাকা। আমাকে টাকা দেখাতে আসবেনা। আর কখনো আমার সাথে চোখ নামিয়ে কথা বলবেনা….. got it??? চোখ নামিয়ে কথা বলা তোমাকে মানায়না।
নির্বন : মামনি বাবা তোমরা কোথায়?
নীড়: এই তো। চলো সেলফি তুলি।
নীড় নির্বনকে বুকের ওপর শুইয়ে মেরিনের পাশে আধশোয়া হয়ে সেলফি তুলল।
নির্বন: মামনি…
মেরিন: হামম।
নির্বন: আজকে আমি বাবার বুকে ঘুমাই ?😌😌😌।
মেরিন:….. হামম।
নির্বন: yeappy….. বাবা তুমিও কিন্তু মামনির মতো গল্প শোনাবে।

নীড় জবাব দিবে কি? ও তো এটাই চেয়েছিলো। সেদিন রাতে নির্বন ঘুমানোর পর বুকে নিয়েছিলো। আর আজকে ওর বুকেই ঘুমাবে। নীড় নির্বনের কপালে চুমু দিলো। নীড় নির্বনকে বুকে জরিয়ে নিয়ে গল্প শোনাতে লাগলো। নির্বন ঘুমিয়ে পরলো। নীড়ের চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। নির্বন ঘুমিয়ে গেলে মেরিন খাট থেকে উঠতে নিলে নীড় টেনে নিজের কাছে নিয়ে নিলো।

নীড় মেরিনের কপালে কপাল ঠেকিয়ে
বলল: এতো সুন্দর ১টা উপহারের জন্য ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করবোনা তোমায়। বাবা হওয়ার মধ্যে যে এতো সুখ আছে তা জানতাম না।
মেরিন: দেখি ছছছারুন ঘুমাবো…..
নীড়: ঘুমাও। আমার বাহুতে।
মেরিন:ওটা আআমার জজজায়গা না।
মেরিন সরে যেতে নিলে নীড় মেরিনকে শক্ত করে ধরে রাখলো। বউ ছেলেকে জরিয়ে ধরে নীড় ঘুমিয়ে গেলো।

.

সকালে…..
আজকে মেরিনের আগে ঘুম ভাঙলো। দেখলো রাতে যেভাবে ঘুমিয়েছিলো এখনো নীড় ঠিক সেভাবেই জরিয়ে ধরে রেখেছে। রাতে মেরিন ভেবেছিলো নীড় ঘুমিয়ে গেলে ও উঠে যাবে। কিন্তু নীড়ের বাহুডোরে অতি সহজে মেরিনই আগে ঘুমিয়ে গেছে। অনেক কষ্টে মেরিন নিজেকে ছারালো। দেখলো নির্বন বাবার বুকে চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে। আর নীড়ও পরম যত্নে জরিয়ে রেখেছে।

মেরিন মনে মনে: আমার ছেলেটা বাবার জন্য হাহাকার আর থাকবেনা। এতোদিন তো কষ্ট করেই এসেছি। বাকীটা জীবন না হয় তোর জন্য কষ্ট করে এদের ভীরে বাস করবো। তবু তুই সুখে থাক সোনা।

.

মেরিন হসপিটালে গেলো। আর যেতেই ধিরিম করে ১জনের সাথে ধাক্কা লাগলো। পড়ে যেতে নিলে সে তাকে ধরে নিলো। চোখ মেলে দেখলো নীড়। মেরিন সরে দারাতে চাইলো। কিন্তু পারলোনা।
নীড় ওভাবে দারিয়েই
বলল: ভালোবাসি।
মেরিন: what??
নীড়: ভালোবাসি।
মেরিন: মানে?
নীড়: ভালোবাসি মানে ভালোবাসি।
মেরিন: পাগল হলেন নাকি?
নীড়: হামম তোমার প্রেমে।
মেরিন: দেখি ছারুন সবাই দেখছে।
নীড়: দেখুক তাতে আমার বাপের কি? তখন ১টা লোক এগিয়ে এলো।
বলল: আপনার সাহস তো খুব বেশি এতো গুলো মানুষের সামনে ১টা মেয়ের সাথে বেয়াদবি করছেন??🤬🤬🤬🤬।
নীড়: ডন… ডন…..
মেরিন: ডন?
নীড়: my new assistant ….
ডন: yes sir……
নীড়: handle that person …..
ডন: yes sir…..
মেরিন সেই দিনের কথা কল্পনা করলো যেদিন নীড়ের সাথে প্রথম ওর দেখা হয়েছিলো। সব এমনই হয়েছিলো। শুধু আজকে যেই ভালোবাসি নীড় বলছে সেদিন মেরিন বলেছিলো। মেরিন অনেক কষ্টে নিজেকে ছারিয়ে নিলো।

নীড়: hey jaan….. see you soon….

.

মেরিন রোগী দেখতে লাগলো। তখন অন্য ১টা doctor হাত বারিয়ে
বলল: hello i m doctor নোমান। আপনি তখন কিছু বললেন না কেন? এই সমস্ত লোককে সায় দিবেন না। আমাকে বলতে পারেন।
বলেই লোকটা মেরিনের ঘারে অন্য হাত রাখতে নিলো। আর তখনই নীড় দুম করে এসে নোমানের সাথে হাত মিলিয়ে
বলল: & i m নীড় মেরিন আহমেদ চৌধুরী বর্ষন। & she is my wife……
বলেই নোমানের হাতে এমন জোরে চাপ দিলো যে নোমানের জান যায়যায়। এরপর নোমানকে নিচে ফেলে ২হাত মোচর দিয়ে
বলল: আমার বউয়ের দিকে হাত…. আমি তোর এমন হাল করবো যে …..

নীড় নোমানকে মারতে মারতে নিচে সবার সামনে নিয়ে গেলো। এরপর মেরিনের হাত ধরে
বলল: যে যে উপস্থিত আছো সবাই শুনে রাখো যে মেরিন বন্যা নীড় খান চৌধুরী হলো নীড়ের বউ। কেউ চোখ তুলে তাকানোর আগেও ১০ ভেবে নিবে।
বলেই মেরিনের হাত ধরে নিজের কেবিনে নিয়ে গেলো।
মেরিন: ছারুন আমার হাত। অনেকে লাইনে দারিয়ে আছে। উনাদেরকে দেখতে হবে।
নীড়: ৮বছরে রাগ করতে যেমন করে ভুলে গেছো তেমন করে কি ঘড়ি দেখতেও ভুলে গেছো। look at the clock ….. its lunch time… lunch break চলছে। & we have 1 hour to romance ….. & to do lunch …. ভীষন ক্ষুধা লেগেছে। সকাল থেকে কিছু খাইনি।
মেরিন কোনো কথা না বলে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে নীড় ওকে কোলে নিয়ে বসলো।

নীড়: বললাম না ক্ষুধা লেগেছে। সকালবেলা না খেয়ে চলে এসেছো কেন? হামম? আর তার থেকেও বড় কথা আমার good morning kiss টা বাকি রেখে আসলে কেন? no problem …. এখনই নিয়ে নিচ্ছি।

তখনই দরজায় করা নরলো।
নীড়: হায়রে…. আমার রাজপুত্র চলে এসেছে। romance এর মাথায় বাড়ি।
মেরিন আগামাথা কিছুই বুঝলোনা। নীড় গিয়ে দরজা খুলল। আর নির্বন ঢুকে এলো। মেরিন অবাক হয়ে গেলো।
নির্বন: মামনি…..
নির্বন ঝাপিয়ে গিয়ে মেরিনের কোলে গেলো।
মেরিন: ওলে আমার কলিজাটা।
নির্বন: love you এত্তোগুলা মামনি…..
নীড়: নিয়ে এলো বাবা আর love you মামনি?? যাও কথা নেই।
নির্বন: আরে বাবা…. আমি তো তোমাকেও ভালোবাসি।
নীড়:ওলে আমার prince টারে……
মেরিন: তুমি এখানে?
নীড়: আমি আনিয়েছি। স্কুল তো এখনো start হয়নি পরশু থেকে হবে। আর আমি আমার champ কে promise করেছিলাম যে possible হলে দুপুরে রোজ আমি ওকে খাইয়ে দিবো। তাই আমি আমার champ কে নিয়ে এসেছি। ৩জন একসাথে খাবো বলে।

নির্বন: বাবা বাবা….
নীড়: হ্যা সোনা…. তুমি আমার সাথে সাথে মামনিকেও খাইয়ে দিবে। ok?
নীড়: of course …
মেরিন: না। আমি হাত দিয়েই খাবো।
নির্বন: কিন্তু মামনি….
মেরিন: নির্বন তুমি কিন্তু এখন অযথাই জেদ করো। মামনি কিন্তু ভীষন রাগ করবো।
নির্বন: sorry …..
৩জন খাওয়া দাওয়া করলো। বিকালবেলা ৩জন একসাথেই বাসায় গেলো।

.

দিন কাটতে লাগলো। নীড় মেরিনের সাথে তেমনটাই করে যেমনটা মেরিন আগে ওর সাথে করতো। মেরিনের মনে হচ্ছে ঘড়ির কাটা উল্টো ঘুরছে। নীড় মনে প্রানে চেষ্টা করছে মেরিনের রাগ ফিরিয়ে আনার। কিন্তু কোনোভাবেই কোন কাজ হচ্ছেনা। পরে ওর মাথায় ১টা plan এলো।

নীড়: আমি যদি নিজেকে বিপদে ফেলি তবে বুঝে যাবে যে নাটক করছি। কারন তুমি আমায় সবটা চেনো। কিন্তু …….

.

পরদিন…..
মেরিন নির্বনকে নিয়ে বাসায় ফিরছে। নীড় ২দিন ধরে ব্যাস্ত। তাই ২দিনধরে মেরিনই আসে। গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ break মারলো।
মেরিন: কি হলো driver ভাই?
driver : জানিনা ম্যাডাম কে যেন রাস্তার মাঝে পরে আছে। রক্তাত্ব অবস্থায়।
মেরিন: আল্লাহ বলে কি? চলুন তো দেখি…..
driver: না না। আমি যাবোনা। পরে গুন্ডা বদমাশ হলে।
মেরিন: আর যদি সত্যি আহত হয়ে থাকে।
মেরিন নির্বনকে গাড়িতে রেখেই বের হলো। কিন্তু সামনে যেতেই বুঝলো যে লোকটা নাটক করছে। ৮-১০জন লোক বেরিয়ে এলো। ওদের ঘিরে ফেলল। driver তো ভয়ে দৌড়। মেরিন তো ভয়ে কাপছে।
মেরিন: আআপনারা ককারা?? ককি চচচান?
১জন বলে উঠলো: চাইতো চৌধুরীর নাতিটা। সালা আমাদের বস কে ফাসির শাস্তি দিয়ে দিলো। এই তুলে নিয়ে আয় তো।
মেরিন: নননা এএমন করবেন না।
ওরা নির্বনকে নিয়ে যেতে নিলো।
মেরিন: নননা নননা এমন কককরবেন না। ও কককি কককরেছে?ও ততো ছোট মমমানুষ। ওর তততো দদোষ নেই। আর দাদুরও তো দদদোষ ননেই। সসসে তততো ১জন জজ। তততিনি তো নিজের কাজ কককরবেনই। গুন্ডারা মেরিনের কোনো কথা না শুনে নির্বনকে তুলে নিয়ে গেলো।
মেরিন ভুল করে আজকে mobile টাও আনেনি। আর রাস্তাটা এতোই নির্জন যে ধারে কাছে কেউ নেই। কি করবে মেরিন? এদিকে নির্বন কাদছে আর মামনি মামনি বলে ডাকছে।ওদের গাড়ি অনেকটা দুরে চলে গেছে। আবছা দেখা যাচ্ছে। না মেরিন কোনো মতেই নিজের ছেলেকে হারাতে পারবেনা। দৌড়ে গিয়ে গাড়ির driving sit এ বসলো। গাড়ি start দিলো। ভীষন speed এ গাড়ি ছুটালো। ৮বছর পর মেরিন গাড়ি চালাচ্ছে। তাও এতো জোরে। ওদের গাড়ি প্রায় ধরে ফেলেছে। ওদের গাড়ি ১টা গোডাউন type জায়গায় গিয়ে থামলো। ওরা নির্বনকে ভেতরে নিয়ে গেলো। মেরিনও দৌড়ে ভেতরে ঢুকলো।

.

মেরিনকে দেখেই লিডারটা বলল: এই মাইয়াটা এদিকে কেন?
মেরিন: আআআমার ছছেলেকে ছছছেরে দিন না। আমি হহহাত জজজোর করে বববলছি আআআমার নির্বনকে ছেরে দিন।

লিডার: 🤣🤣🤣। ছেরে দিবে? এখন তোর সামনে তোর ছেলেকে টুকরো টুকরো করবো। এই ওর হাত ২টো ধরে রাখ।
তখন ২টা মেয়ে ওকে আটকে রাখলো। লিডার ১টা ছুরি নিয়ে নির্বনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মেরিন অনেক আকুতি মিনতি করছে। কিন্তু লিডার দানবের মতো হাসতে হাসতে নির্বনের দিকে যাচ্ছে।

নির্বন: মামনি বাচাও মামনি। বাচাও মামনি। বাচাও আমাকে…….
লিডার নির্বনের কাছে চলে গেলো। আর মেরিন নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। নিজেকে ছারিয়ে একেক টাকে ডিটারজেন্ট ছারাই ধুয়ে দিতে লাগলো। সবার শেষে ধরলো লিডারটাকে। ছো মেরে ওর হাত থেকে ছুরি টা নিয়ে নিলো।
মেরিন: তুই আমার ছেলেকে কেটে টুকরো টুকরো করবি? আমার ছেলেকে? 😤😤😤। তুই জানিস আমি কে?? জানিস? মেরিন বন্যা খান। এখন তোর এই ছুরি দিয়ে তোকেই কেটে টুকরো টুকরো করবো।
মেরিন রাগে কুমাচ্ছে। হাতের ছুরি নিয়ে লিডারের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলে। লাথি মেরে লিডারকে নিচে ফেলে ওর পেটে পারা দিয়ে ধরলো। আজকে মেরিনের হাত থেকে লিডারকে কেউ বাচাতে পারবেনা। just ছুরি দিয়ে আঘাত করবে তখন নির্বন মামনি বলে মেরিনকে জরিয়ে ধরলো।
মেরিন ছুরিটা ফেলে নির্বনকে কোলে নিয়ে
বলল: বাবাই তুমি ঠিক আছো?
নির্বন:হামম।
মেরিন:তো…
তখনই কারো হাত তালির শব্দ পাওয়া গেলো। মেরিন সামনে তাকিয়ে দেখলো যে নীড়। মেরিন অবাক হলো। নীড় নির্বনের কাছে গিয়ে দারালে বাবা-ছেলে ২জন high five দিলো।
নীড়: ডন….ডন….
ডন: yes sir…..
নীড়: নির্বনকে বাসায় নিয়ে যাও। আর ওদেরকে হসপিটালে পাঠাও। এদেরকে বাকী payment করে দাও। যা কথা ছিলো তার ২গুন দিও। সবাই চলে গেলো।

.

মেরিনের কাছে সবটা স্পষ্ট। এসব নীড়ের plan ছিলো। মেরিন ঠাস করে নীড়কে থাপ্পর মারলো। থাপ্পর খেয়ে নীড় অন্য গাল বারিয়ে দিলো।
নীড়:মারো।
মেরিন নিচে পরে থাকা
ছুরিটা হাতে নিয়ে নীড়কে ঘুরিয়ে ওর চুল ধরে ওর গলায় ছুরি ঠেকালো।
মেরিন: কেন করলেন এমন নী..mr. chowdhuri? কেন?🤬🤬🤬।
নীড়: তোমাকে পাওয়ার জন্য। আসল তোমাকে পাওয়ার জন্য। রাগী , ভয়ংকারী মেরিনকে।
মেরিন: আপনার কোনো আন্দাজ নেই আমি কতোটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আপনি এমন কেন? যদি আমার ছেলের কিছু হয়ে যেতো?
নীড়: আমাদের ছেলে…… আর হ্যা নির্বনের গায়ে ফুলের টোকাও লাগেনি। আর ওরাও কেউ professional গুন্ডানা। Actor …ওরা আদর করেই এনেছিলো নির্বনকে।
মেরিন: খুব শখ ছিলোনা আপনার মেরিন বন্যাকে ফেরানোর? এখন দেখুন এই মেরিন কি কি করে…..
বলেই মেরিন হাতের ছুরি টা খুব জোরে আছার মেরে বেরিয়ে গেলো।

.

নীড়: আমার রাগী মেরিনতো ফিরে এলো….. বাকীটা সামলে নিবো। আর তোমার next step কি হবে সেটাও আমি জানি…. এবার জমবে মজা। যখন বাঘ-বাঘিনী no no…. সিংহ-সিংহী মুখোমুখি হবে। নীড়-মেরিন এবার প্রেম খেলায় মজবে।

.

চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here