জ্বীন রহস্য( love story )❤,Part 4,5
Writer Maishara Jahan
Part 4
কে তুমি অচিনা পুরুষ, আমার কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াও কেনো। কাল আমি তুমার মুখ দেখেই ছাড়বো।
সকালে………
ভার্সিটিতে পৌঁছেই শুধু কক্সবাজারের কথা শুনছি। কক্সবাজারে এটা করবো ঐটা করবো, মনে হচ্ছে এখনি চলে যাবে। আমি কি করবো বুঝতেছিনা। আমি কোনো কিছু নিয়ে প্লেন করি না কারন কোনো না কোনো গন্ডগোল হয়েই যায়।
এবার যা হবে দেখা যাবে। আজ তো কোনো ক্লাস হচ্ছেই না শুধু এসব নিয়ে কথা বার্তা হচ্ছে। আমার আর ভালো লাগছে না।আমি তো এটাও জানি না ঐখানে গিয়ে কোনো আনন্দ করতে পারবো কি না।
সবাই এসব নিয়ে কথা বার্তা বলছে, আমি চুপচাপ ক্লাস থেকে বের হয়ে আসি।এখন দুপুর তাই গাছ তলায় এসে বসি।বাসায় চলে যেতাম কিন্তু আজ আমি দেড়ি করে বাসায় ফিরবো, আচিনা পুরুষকে ধরতে হবে যে।
আমার ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়ে মুগ্ধ আমার পাশে এসে বসলো।
মুগ্ধ,,,,,,, এই যে মেম কার ভাবনায় ডুবে আছেন।
যীন্নাত,,,,,,, কারো না।
মুগ্ধ,,,,,,, নিশ্চয়ই কালকে কক্সবাজার গিয়ে কি কি করবে ভাবছো, আমি তো অনেক এক্সাইটেড।
যীন্নাত,,,,,,, তুমিও যাবে নাকি।
মুগ্ধ,,,,,,, of course ,,, আমি তুমার সিনিয়র আর জুনিয়র আর সিনিয়র মিলে যাবে জানো না।
যীন্নাত,,,,,, হুমমম
____ কি ভেবেছো ঐখানে গিয়ে কি কি করবে।
____ জানি না, কিছুই ভাবিনি যা হওয়ার তা কালকে গেলেই বুঝা যাবে।
____ অদ্ভুত তুমি।
আমি মুগ্ধের দিকে তাকায়।সত্যিই মুগ্ধ করার মতো, ফর্সা ত্বক রোদে লাল হয়ে গেছে, চুল গুলো বাতাসে উড়ছে।উজ্জ্বল নীল চোখের রং।ওর চোখে যেনো হারিয়ে যাচ্ছি।
আমি তাড়াতাড়ি আমার চোখ অন্যদিকে ঘুরালাম।
___ চোখে কি লেন্স লাগাইছো নাকি।
___ না কেনো
___ এমন উজ্জ্বল নীল চোখের মনি আমি আগে দেখি নি তাই বললাম।
___ আমার মার চোখ ও এমন,, মার কাছ থেকে পেয়েছি।
___ ওওও,,, তুমার মা মনে হয় অনেক সুন্দর।
___ হুমম তুমি কি করে জানলে।
___ তুমাকে দেখে বুঝা যায়।
___ সুন্দর কিন্তু তুমিও কম না। অন্য রকম তুমি।
___ ঠিক কেমন।
___ আমি বলা শুরু করলে নিজেই নিজের প্রেমে পড়ে যাবে কিন্তু।
___ থাক আর বলা লাগবে না।কিছু সময় চুপ করে বসে থাকো।ভালো লাগছে,,,
দুজনে চুপচাপ বসে আছি। বাতাস এসে মুখ ছুঁয়ে যাচ্ছে তার সাথে অদ্ভুত একটা গ্রান নিয়ে আসছে,মাতাল করা সে গ্রান মুগ্ধের শরীর থেকে আসছে।
কতো ক্ষন যে এই ভাবে চুপ করে বসে আছি যানি না। তবে অদ্ভুত একটা ভালো লাগা কাজ করছে।জানি না কি এই অনুভূতি তবে ভালো লাগছে।
আমাদের শান্তির বারোটা বাঝিয়ে ফারা, রোহান আর রিয়াদ চলে আসে।আমাদের ঘিরে বসে।
রোহান,,,,,,, কি কথা হচ্ছে এখানে বসে।
রিয়াদ,,,,,,, আরে এটা আবার জিজ্ঞেস করা লাগে বুঝো না।
ফারা,,,,,,, চুপি চুপি বলো কেও জেনে যাবে, যেনে যাবে।
যীন্নাত,,,,,,, তোরা থামবি, এসেই আজে বাজে বলা শুরু করে দিয়েছে।
ফারা,,,,,, আমারা যা দেখছি তাই বলছি।
মুগ্ধ,,,,,,, তুমরা ভুল ভাবছো,আমরা এমনি বসে ছিলাম।
ফারা,,,,,,,, আচ্ছা যাই হোক, কালকে কি কি নিয়ে যাবি।
যীন্নাত,,,,,,, কী আবার যা আছে তাই।
ফারা,,,,,,, আমি মার্কেটে যাবো, আমার তেমন কিছুই নেয়।
রিয়াদ,,,,,, তুই না কিছু দিন আগে শপিং করলি।
ফারা,,,,,, সব পুরানো হয়ে গেছে,,,,, যীন্নাত তুই যাবি কিনা বল।
যীন্নাত,,,,,,,, ( ফারার সাথে শপিং মলে গেলে এমনি রাত হয়ে যাবে, এই সুযোগ হাত ছাড়া করা যায় কি করে।) হুমম যাবো।
মুগ্ধ,,,,,,, তাহলে আমি আসি,, কাল দেখা হচ্ছে।
যীন্নাত,,,,,, হুমম।
,,,,,,,,,,,
ফারাকে ইচ্ছে করে দূরের শপিং মলে নিয়ে গিয়েছি।
শপিং করা কাকে বলে ফারার কাছ থেকে শিখা উচিত। আমার তো ওর ভবিষ্যতের স্বামী উপর মায়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে ও ঘুরতে না বিয়ে করছে।
রাত ৮:২০ বেঝে গেছে, আমি ফারা কে রোহানের সাথে পাঠিয়ে দিয়েছি।আমার বাসা তার উল্টো দিকে।আশপাশটা একটু জঙ্গলের মতো।
ইচ্ছে করে হেঁটে যাচ্ছি। কারন আমি কোনো বিপদে পড়লে ও অবশ্যই আসবে এটা আমার বিশ্বাস।
দুই সাইডে জঙ্গল মাঝখানে ফাঁকা রাস্তা, এই রাস্তায় বেশি মানুষ আসে না। পুরো অন্ধকার চাঁদের আলোই একটু একটু দেখা যাচ্ছে।
পুরো ভয়ংকর পরিবেশ, পোকামাকড়ের আওয়াজে পরিবেশটা আরো বেশি ভয়ংকর মনে হচ্ছে।
এখানে একটা না একটা জ্বীন পেয়েই যাবো। অনেক খন ধরে হাঁটছি কিন্তু কোনো জ্বীনের নাম গন্ধ ও নেয়।
অদ্ভুত যখন আমি চাই না তখন সবাই এসে হামলা করে।আর এখন চাই বিপদে পড়তে কিন্তু জ্বীনের জি ও পাচ্ছি না।
এই রাস্তা দেখেতো মনে হয় জ্বীনের আস্তানা কিন্তু কেও নেয়। রাগ হচ্ছে এখন। দুরর আজ মনে হয় না কিছু হবে।
মন খারাপ করে হাঁটছি, তখনি মনে হলো কেও আমার পিছনে ফলো করছে, খুশি হয়ে পিছনে তাকালাম দেখি কেও নেয়।
আবার হাটা শুরু করলাম, জোরে হাওয়া বয়ছে, গাছগুলো মনে হচ্ছে ভেঙে পরবে, কেমন আওয়াজ হচ্ছে, বার বার আশেপাশে দেখছি কিন্তু কাওকে দেখছি না।
এবার মনে হলো আওয়াজটা একটু বেশি হচ্ছে। ঠান্ডা হাওয়া গায়ে কাটা দেওয়ার মতো।এবার মনে হচ্ছে এখানে এসে কোনো ভুল করলাম না তো।
কি করবো এখন, আমার কাছে তো কোনো তালোয়ার ও নেয়, বাসায় রেখে এসেছি।যদি কোনো বড়ো বিপদ হয়ে যায়।
যীন্নাত,,,,,,, কে সাহস থাকলে কালকে আসো না মানে সামনে আসো।
আমার আশেপাশে অনেক গুলো লাল চোখ ভেসে উঠছে।ওরা আমার দিকেই এগিয়ে আসছে, পিছন থেকে কে যেনো এসে আমাকে জরিয়ে ধরে।একটু চমকে যায় সাথে সাথে পিছনে ফিরে ধাক্কা দিয়।
তাকিয়ে দেখি যীনহা, একটা সস্থীর নিশ্বাস নেয়।আশেপাশে তাকিয়ে দেখি কোনো জ্বীন নেয়।
যীন্নাত,,,,,,,, কোথায় গেলো সব।
যীনহা,,,,,,, এখানে কেও নেয়।
___ একটু আগেই ছিলো।
___ ওটা আমি তুমাকে ভয় দেখানোর জন্য করেছিলাম।
___ কিন্তু কেনো
___ তুমাকে এটা বুঝাতে যে ভয় কাকে বলে।
___ আপনার কি মনে হয় ভয় কাকে বলে আমি যানি না।
___ মনে তো হয় না।তুমাকে বলেছিলাম সাবধানে থাকতে, বিপদ আসতে পারে।কিন্তু এই তুমার সাবধানে থাকা।
___ আসলে আমি কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না তাই,,,
___ গাড়ি পাচ্ছিলে না তাই না, আমি সবটা দেখেছি, আমার নজর সব সময় তুমার উপর থাকে।
___ আমাকে কি ফলো করেন নাকি।
___ হ্যাঁ করি, কি ভাবো কি নিজেকে, যদি কিছু হয়ে যায় তখন।
___ আমি নিজেকে একটি সাধারণ মেয়ে ভাবি।
___ কোন সাধারণ মেয়ে এই ভাবে নির্জন রাস্তায় একা হাঁটে। কতো বার বুঝিয়ে বলেছি সাবধানে থাকতে কিন্তু না আপনাকে তো সাহস দেখাতে হবে। কোনো আইডিয়া আছে কতোটা ভয়ানক হতে পারে। ( রাগে চিল্লিয়ে )
___ এতো রাগ দেখাচ্ছেন কেনো আমার যা খুশি তা করবো তাতে আপনার কি।
___ আমার কি মানে 🤬😡 ( আমি যীন্নাতের সাথে এভাবে কথা বলতে পারি না এর অনুমতি নেই আমার ) নিজেকে শান্ত করে
___ আমার সাথে শুধু শুধু রাগ দেখাচ্ছে।
___ সরি আমি রাগের মাথায় একটু বেশিই বলে ফেলেছি। কিন্তু আমি তুমার ভালোর জন্য বলছি।তুমি এখনো পুরো পুরি ভাবে প্রস্তুত না।
___ কিসের জন্য
___ সেটা এখন আমি তুমাকে বলতে পারবো না।
___ ঠিক আছে তাহলে প্রস্তুত করেন। ভয়ে ভয়ে আমি আর থাকতে পারবো না।
___ এখন না পড়ে যাও,, আমার সাথে চলুন।একা একা হাটতে ভালো লাগে না।
___ কেনো তুমার তালোয়ার কোথায়।
___ সারা দিন কি ঐটা আমার সাথে নিয়ে ঘুরবো নাকি।
___ তুমি ডাক দিলেই চলে আসবে।
___ সত্যি
___ হুম।
___ ওকে চেষ্টা করি,,,,,, তালোয়ার,,,, তালোয়াররর,, ঐ তালোয়াররররর ( চিৎকার করে ) আসে না তো।
___ এমন করে ডাকলে জীবনেও আসবে না।
___ তো কিভাবে ডাকবো।
___ মন থেকে তালোয়ারের কথা মনে করে ডান হাত উপরে দিকে দাও।
যেমন বললো তাই করলাম,, তালোয়ার সোজা আকাশ থেকে আমার হাতে আসলো মনে হলো।
___ এখন আমি যায়।
____ আরে শুনো শুনো আমাকে কিছু যুদ্ধের নিয়ম শিখিয়ে দিয়ে যাও।
____ আজ না অন্য দিন।
____ না আজি দাও না হলে আমি এখানেই থাকবো।
____ আজব তো। ঠিক আছে দেখো আমি তালোয়ার দিয়ে যেভাবে করবো তাই করবে।
___ ঠিক আছে।
যীনহা কিছু টেকনিক দেখায়।
___ এবার তুমি করো।
___ আমি পারবো না কাছে এসে আমাকে ধরিয়ে দেখিয়ে দাও।
____ ( ওর মতলব তো ঠিক লাগছে না ) ঠিক আছে।
যীনহা যীন্নাতের কাছে যায়, পিছন দিক দিয়ে দাড়িয়ে যীন্নাতের হাত ধরে দেখিয়ে দিচ্ছে।
এই সুযোগ পেয়েছি মুখোশটা খুলার, হাত বেঁকিয়ে কাপড়টা মুখ থেকে সরাতে যাবো অমনি যীনহা আমার হাতটা ধরে ফেলে।
হাত ধরে পিছনে ঘুরিয়ে দেয়।আর তার মুখ পিছন থেকে আমার কানের সামনে এসে বলে,,
___ যুদ্ধের প্রথম নিয়ম নিজের চোখ কান খুলা রাখা।
বলে আমাকে ছেড়ে দেয় আমি পড়ে যেতে নিলে ধরে ফেলে।
চোখ বন্ধ করে আছি, এখন চোখ খুলে দেখি যীনহা দুই হাত দিয়ে আমাকে ধরে রেখেছে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি ওর চোখের দিকে তাকাই চোখ দুটো আমার অনেক চিনা মনে হলো।ওর গায়ে ঐ মাতাল করা গন্ধ পাচ্ছি।
আমরা দুজন ঠিক করে দাঁড়ায়।
যীন্নাত,,,,,,, আচ্ছা চোখে কি লেন্স লাগাইছেন 🤨😏
___ মানে,,, অনেক হয়ছে আমার এখন যাওয়া উচিত।
বলেই উদাও,,
,,,,,, সন্দেহ যখন হয়েছে পরীক্ষা তো অবশ্যই নিবো।
get ready for that……
আমি ও চলে গেলাম বাসায়।
চলবে,,,,,,,,
জ্বীন রহস্য ( love story ) ❤
Writer Maishara Jahan
Part 5
,,,, সন্দেহ যখন হয়েছে পরীক্ষা তো অবশ্যই নিবো।
get ready for that……
আমি ও চলে গেলাম বাসায়।
মা,,,,,,, কিরে এতো রাত হলো যে 🤨🤨
যীন্নাত,,,,,, মা আর বলো না ফারা শপিং করতে আমাকেও নিয়ে গেছে তাই দেড়ি হয়ে গেছে।
মা,,,,,, তুই কিছু কিনলি না,, একটা জায়গা যাবি তার জন্য নতুন কিছু ড্রেস কিনতি।
যীন্নাত,,,,,,, যা আছে তাই হবে এতো ড্রেস দিয়ে করবো কি।
মা,,,,,,, যা ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে আয়।
যীন্নাত,,,,,,,, হুম।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে বেগ গোছাচ্ছি আর ভাবছি।
…… মুগ্ধই যদি যীনহা হয় তাহলে আমার সামনে কেনো আসছে না। আর ও আমার এতো সাহায্য কেনো করছে।প্রথম যেদিন ওর সাথে দেখা হয়েছিল তখন জ্বীনদের দেখে অদ্ভুত ব্যবহার করেছিলাম, অন্য কেও হলে আমাকে অনেক প্রশ্ন করতো কিন্তু মুগ্ধ অনেক স্বাভাবিক ছিলো। আর দুজনে আমার জীবনে একি দিনে এন্ট্রি নিয়েছে।
সন্দেহ তো পাকা পাকি ভাবে হচ্ছে। আবার এটা ও হতে পারে আমি ভুল ভাবছি মিল তো থাকতেই পারে। একটা কিছু তো করতে হবে কিন্তু কি??
ভাবতে হবে ভাবতে হবে।
সকালে,,,,,,,
তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে যায় ভার্সিটিতে লেইট হলে আমার আর উপায় থাকবে না। বাস ৮ টাই ছাড়বে।
আমি ৮ বাঝার ঠিক ১ মিনিট আগে পৌঁছে যায়। গিয়ে দেখি দুটো বাস এসে গেছে, ফারা বসে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আমি আসতেই একটা সুন্দর করে হাসি দিলো যার মানে সে অনেক রেগে আছে।
আমিও একটা সুন্দর করে হাসি দিয়ে বললাম।
আমি ৮ বাঝার আগে পৌঁছে গেছি।😊😊
ফারা,,,,,,, আরে এতো তাড়াতাড়ি আসলেন কেনো বেশি না আর একটু পড়ে আসতেন তাহলে এখানে আমরা ছাড়া আর কেও থাকতো না।
যীন্নাত,,,,,,, আমি তো ঠিক সময়ে এসেছি।
ফারা,,,,,, ঠিক সময়,,, স্যার বলছিল ৭ আসতে ৮ টাই বাস ছাড়বে, মহা রানী ৮ বাঝে এসেছে।
যীন্নাত,,,,,,,, হয়ছে ভাই আর রাগ করা লাগবো না।চল বাসে উঠি। এটাই তো আমাদের বাস তাই না।
ফারা,,,,,, হহ তোর বাপে তোর নামে কিনছে।
যীন্নাত,,,,,, আরে মানে আমরা এই বাসে করে যাবো।
ফারা,,,,,, আগ্গে না আমরা চার জন সাথে আরো তিন জন সিনিয়রদের সাথে যাবো।
যীন্নাত,,,,,,, কেনো
,,,, কারন এই বাসে জায়গা নেয়,, আপনার জন্য আমরা তিনজন ও ঐখানে বাসে যাবো।
,,,,,, আরে জায়গা রাখতে পারলি না।
,,,,,, ঐ তুই কি এইটা স্কুলের বেঞ্চ মনে করছোস যে ঝগড়া কইরা জায়গা রাখমু।
,,,,,,, আচ্ছা রোহান আর রিয়াদ কোথায়।
,,,,, বাসের ভিতরে চলেন মেডাম আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
,,,,,, হুমম চল
বাসে উঠে দেখি রোহান আর রিয়াদ আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। থাকারি কথা আমি ঐদিকে বেশি নজর দিলাম না।
ফারা আগে আগে গিয়ে জালানার সাইডে বসে।
,,,, ঐ উঠ আমি জালানার সাইডে বসবো।জালানা ছাড়া আমার ভালো লাগে না।
,,,,,,, আমারো।
,,,,,,,, বন্ধুর জন্য বন্ধু জান ও দিয়া দেয় আর তুই একটা সিট দিতে পারবি না বল 🥺🥺
,,,,,,,, ঠিক বলছোস বন্ধুর জন্য বন্ধু জানও দিয়া দেয় আর একটা সিট কি আর জিনিস।
,,,,,, তাইলে উঠ
,,,,,,, আমিও তো তর প্রানের ফ্রেন্ড তো 😎😏😊
আমার আর বুঝার বাকি নায় যে নিজের জালে নিজেই ফাঁসছি। কি আর করার বসে পড়লাম।
এতো খন পর খেয়াল করলাম মুগ্ধ আমার সাথের সিটে বসেছে আর আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি একটা ব্রু উঠিয়ে মুগ্ধের দিকে তাকাচ্ছি। 🤨🤨
আমার তাকানো দেখে মুগ্ধ আমাকে কিছু জিজ্ঞেস না করে অন্য দিকে চোখ ঘুরায়,,,, ঢালমে কুছ কালা হে 🧐
বাস ছাড়ে আমাদের পাও রুটি কলা আর সিদ্ধ ডিম দিয়েছে খেতে, আমি বাসে কিছু খেতে পারি না তাই রোহান আর রিয়াদ কে দিয়ে দিলাম।
প্রতিদিন আমি কথা না বললেও মুগ্ধ জোর করে কথা বলতো এখন পাশাপাশি বসে আছি অথচ একটা কথাও বলছে না ব্যাপারটা সন্দেহজনক।
ফারাতো ননস্টপ বকবক করছেই। এতো কথা কোথায় থেকে যে পায় কে জানে।আমি শুধু হুম হ্যাঁ, না তে জবাব দিচ্ছি। কিছু খন পর আমিই জিজ্ঞেস করলাম।
যীন্নাত,,,,,,, কি ব্যাপার কোনো কথা বলছো না যে।
মুগ্ধ,,,,,,,, কেনো মিস করছিলে বুঝি
যীন্নাত,,,,, মিস কেনো করবো, হঠাৎ কথা বলা ছেড়ে দিলে তাই বললাম।
মুগ্ধ,,,,,,,, কি আর বলবো তুমরা যে কথা বলছো, তাই ভাবলাম ডিস্টার্ব হবে।
যীন্নাত,,,,,, ( কথা বার্তা তো স্বাভাবিক ভাবেই বলছে ) আমি না শুধু ফারা কথা বলছে।
ফারা,,,,,,,, কি বলতে চাস আমি বেশি কথা বলি 😒😒
যীন্নাত,,,,,,, একদমি না,,, তুই তো বোবা 😁😁
ফারা,,,,,, শয়তান 😑😑😐😐
শুরু হয়ে গেলো গান বাঝনা। ভাবছিলাম সিনিয়রদের সাথে মজা হবে না। কিন্তু না বেশ আনন্দ করছে সবাই। জোরে গান বাজাচ্ছে আর তার মধ্যে সবাই গানের তালে তালে গান গাইছে।
রোহান, রিয়াদ আর কিছু সিনিয়র ভাইয়ারা সিট থেকে বের হয়ে নাচছে।বেশ আনন্দ হচ্ছে।
মুগ্ধ ও বেশ স্বাভাবিক ভাবে সবার সাথে আনন্দ করছে।
দুপুর হয়ে গেছে আমাদের বাস একটা ধাবা মানে ছোটো হোটেল যেটাকে বলে সেখানে নিয়ে থামায় লাঞ্চ করার জন্য। জায়গাটা বেশ সুন্দর গ্রামের মতো।
আমরা সবাই সেখানে নামি, মাথাটা ঝিম ঝিম করছে এতো খন গান শুনার জন্য।মুখে পানি দিয়ে খেতে বসি,বেশি চেয়ার নেয় তাই অনেকে ঘাসে বসে খাচ্ছে।
আমি তাড়াতাড়ি খেয়ে নিলাম,,, দেখি মুগ্ধ ঐ দূরে একা দাঁড়িয়ে আছে, আমিও সেখানে গেলাম।
যীন্নাত,,,,,,, একা একা কি করো
মুগ্ধ,,,,,,, তুমি,,,,, কিছু না সুন্দর দৃশ্যটা দেখছি।
যীন্নাত,,,,,,,, ওওও,,,,আচ্ছা আপনি জ্বীনে বিশ্বাস করেন।
হঠাৎ এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করায় একটু অবাক হওয়ার কথা কিন্তু মনে হলো ভয় পেলো।
মুগ্ধ,,,,,,,,, হঠাৎ এই প্রশ্ন
যীন্নাত,,,,,,,, না এমনি মনে হলো তাই জিজ্ঞেস করলাম, বলেন না।
মুগ্ধ,,,,,, হুমম করি।
যীন্নাত,,,,,,,, কেনো আপনি কি দেখছেন।
মুগ্ধ,,,,,, দেখা লাগবে কেনো আমাদের কুরআনের আছে তাই বিশ্বাস করি।কেনো তুমি করো না।
যীন্নাত,,,,,,, হুম হুম ( জবাবটা তো অনেক সুন্দর ভাবে দিলো ) 🤔 আচ্ছা মনে করো তুমার সামনে একটা জ্বীন এসে দাঁড়ালো তখন কি করবে।
মুগ্ধ,,,,,,, আয়তুল কুরসি সূরা পড়বো আর কি করবো অদ্ভুত।
বলে এখান থেকে চলে যায়।
যীন্নাত,,,,,,, চালাক অনেক,,,, নাকি আমি ভুল ভাবছি।
আশেপাশে তাকিয়ে দেখি সবাই ছবি তুলা নিয়ে ব্যাস্ত। মনে হচ্ছে স্যার বলেছে কালকের মধ্যে তোমাদের সবার ছবি লাগবে না নিয়ে আসলে খবর আছে।
যাই হোক গাড়ি আবার স্টার দিলো,আবার সেই গান বাজনা। কক্সবাজারে পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ৬ঃ৩৫ বেজে যায়।এখানে আবার তাড়াতাড়ি অন্ধকার নেমে আসে।
বাস থেকে নেমে সোজা সবাই হোটেলের দিকে যায়, সবাই অনেক ক্লান্ত।হোটেলটা বেশ ভালো আর সুন্দর। আমরা যাওয়ার সাথে সাথে বেলি ফুলের মালা পড়ায়।
আমরা রুমে যায় এক রুমে চারজন করে দুইটা বিছানা। ফ্রেশ হয়ে আসি আসতেই বিছানায় গাঁ ছেড়ে দেয়।
মা ফোন দেয়, ভালো করে কথা বলতে নেটওয়ার্ক প্রবলেম। তাই আমি বাহিরে এলাম কথা বলার জন্য।
কখন ধরে হ্যালো হ্যালো করছি কিছু শুনতেই পারছি না।
কথা বলতে বলতে অনেক দূরে চলে এসেছি খেয়ালি নেয়।
ফোন রেখে খেয়াল করলাম হোটেল দেখতে পারছি না। কোন দিক দিয়ে এসেছি খেয়াল নেয়।পাশে একটা ছোট দোকান দেখতে পেলাম, সেখানে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কি বললো কোন ভাষায় বললো কে জানে কিছুই বুঝতে পারলাম না, শুধু হা করে শুনছিলাম।
কিছু না ভেবে সোজা হাটা শুরু করলাম। পিছন থেকে আওয়াজ এলো,,,
এই যে মেডাম হোটেলটা ঐদিকে না এই দিকে।
পিছনে তাকিয়ে দেখি মুগ্ধ।
যীন্নাত,,,,,,, তুমি
মুগ্ধ,,,,,, কেনো অন্য কারো আসার কথা ছিলো বুঝি।
যীন্নাত,,,,,,,, আরে দুররর,,,, তুমি এখানে কি করো।
মুগ্ধ,,,,,,, আমি দেখলাম তুমি একা একা বাহিরে যাচ্ছো তাই তুমার পিছু পিছু আসলাম।
যীন্নাত,,,,,,, আসলে মার সাথে কথা বলতে বলতে খেয়ালি ছিলো না।
মুগ্ধ,,,,,, ঠিক আছে চলো
যীন্নাত,,,,,,,, হুমম
অনেক ঠান্ডা হাওয়া বয়ছে। এখানে দিনে গরম থাকলেও রাতে বেশ ঠান্ডা পড়ে। সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ আসছে।মনে হয় এখান থেকে বেশি দূরে না।
অনেক ভালো লাগছে সাথে অনেক শীত ও। আমি ঠান্ডায় দুই হাত গর্সছি।
মুগ্ধ,,,,,,, কোর্ট পড়া থাকলে খুলে দিয়ে দিতাম,কিন্তু শুধু শার্ট পড়ে আছি তুমি চাইলে খুলে দিতে পারি।
যীন্নাত,,,,,,,, থাক লাগবে না। ( হেঁসে দিয়ে )
মুগ্ধ,,,,,,,, হাসলে কিন্তু তুমায় বেশ সুন্দর লাগে।
কিছু বলছি না চুপ করে আছি, যানি না কেনো লজ্জা লাগছে। হঠাৎ মুগ্ধ আমার হাত ধরে নিলো।বুকে কেমন যানি ধুক করে উঠলো।
মুগ্ধ,,,,,,,,, দেখে চলো পড়ে যাবে।কতো পাথর দেখো না।
আমি কিছু বলছি না। মুগ্ধের হাত বেশ গরম। কিন্তু জানিনা কেনো বেশ ভালো লাগছে। অন্য কোনো ছেলে এখন হাত ধরলে কবে এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিতাম।
কিন্তু এখন হাত ছাড়তে মন চাইছে না কেনো যানি না। মুগ্ধ কি যেনো ভেবে আমার হাতটা ছেড়ে দিলো।মনে হচ্ছে কিছু একটা মনে করে মন খারাপ হয়ে গেছে।
আমারা হোটেলে পৌঁছে যায়।
মুগ্ধ,,,,,,, যাও রুমে যাও।
যীন্নাত,,,,,, হুম।
রুমে গিয়ে দেখি ফারা নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। এখানে একটা মানুষ কতো ক্ষন ধরে ছিলো না। আর এর কোনো চিন্তা নেয়।
গিয়ে কয়েকটা কিল গুশি দিলাম মনে হলো বালিশে দিয়েছি।মরার মতো ঘুমায়তাছে। কি করবো আমিও আল্লাহ নাম নিয়ে শুয়ে পড়লাম, কাল সকাল সকাল উঠতে হবে।
চলবে,,,,,,,,