জ্বীন রহস্য(love story )❤,Part 1
Writer Maishara Jahan
সাত তলা বিল্ডিং এর উপর দাড়িয়ে আছি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করবো। শুধু আজ না এই নিয়ে আমি তিন বার চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিবার ব্যর্থ হয়েছি। এই জন্য না যে আমার সাহস হয়নি। প্রতিবার আমি ছাদ থেকে লাফ দেয় কিন্তু মাটিতে পড়ার আগে শূন্যে ভাসতে থাকি।
মনে হয় কেও যেনো আমাকে ধরে রেখেছে। কে বা কারা আমাকে বাঁচতে চাই তা দেখার জন্যই আমি আজ আবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করবো। আমি নিশ্চিত আজো আমি বেঁচে যাবো। আমাকে বাঁচাতে সে অথবা তারা অবশ্যই আসবে।
তার আগে আমি আমার সম্পর্কে আপনাদের কিছু বলতে চাই।
আমার নাম যীন্নাত। এবার আমি ভার্সিটির প্রথম বর্ষে উঠেছি। আমার জীবনে তেমন কোনো সমস্যা নেয়।শুধু একটা ছাড়া আর সেটা আমার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।সেটা হলো আমি ছোট্ট বেলা থেকে জ্বীনদের দেখতে পায়।
আমার আশেপাশে কোনো জ্বীনপরী থাকলে আমি তাদের দেখতে ও শুনতে পায়। আর তার থেকেও বড়ো সমস্যা হলো এই কথা আমি যদি কাওকে বলি আর তারা যদি বিশ্বাস করে তাহলে ওরা অদ্ভুত ভাবে মারা যায়।
সমস্যাটা শুরু হয় যখন আমার বয়স দশ বছর। এর আগেও আমি জ্বীনদের দেখতে পেতাম কিন্তু বুঝিনি,, তাদেরও আমাদের মতো মানুষ ভাবতাম।
আমার বয়স যখন দশ বছর তখন আমারা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যায়।এক বিকালে আমি বাগানে বসে বসে হাসছি,,, কারন বাগানে একটা গাব গাছ আছে। সেখানে কিছু মেয়ে বসে বসে কথা বলছে। তাদের কথা শুনে আমি হাসছি।
এমন সময় মা আসে,আমাকে হাসতে দেখে জিজ্ঞেস করে কেনো আসছি।
যীন্নাত,,,,,,, দেখো ঐ মেয়েরা কি সুন্দর,,, গাছে বসে আছে।
মা,,,,,,, কোন মেয়েরা
যীন্নাত,,,,,,, ঐ যে গাছে বসে আছে।
মা,,,,,,, বাবু ঐখানে কেও নেয়। গাছে কেনো মানুষ বসে থাকবে।
আমার অনেক অদ্ভুত লাগে। আমি তো দেখতে পাচ্ছি। আমি দৌড়ে গাছের কাছে গেলাম। মেয়ে গুলোকে ডেকে বললাম নিচে নামতে।মেয়ে গুলো অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে ছিলো।মা আমাকে জোর করে ঘরে নিয়ে আসে।
মা বাবা এই সবে বিশ্বাস করে না।তবে দাদি করেছিলো। আমাকে অনেক কিছু জিজ্ঞেস ও করেছিলো।কিন্তু সকালে উঠে দেখি দাদি মারা গেছে। নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।
এর পর থেকে আমি অনেক জায়গায় জ্বীন দেখেছি এবং কথাও বলেছি। অনেক জ্বীন আমাকে মারার জন্য এসতো।আর জানি না কারা ঐ জ্বীনদের মেরে ফেলতো।আমার সামনে লাস পড়ে থাকতো আমি চিৎকার করতাম। সবাই আসতো কিন্তু বিশ্বাস কেও করতো না।
মা বাবা মানসিক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার আমাকে সব কিছু জিজ্ঞেস করে আমি বলি,, প্রথমে তারা আমাকে পাগল ভাবলেও পড়ে আমার রিপোর্ট দেখে অভাক হয়ে যায় আর কিছু বলার আগেই নাকে মুখে রক্ত উঠে মারা যায়।
এমন পরিস্থিতি এসেছিলো যে আমি যা দেখতাম তা নিজের কাছেই ভুল লাগতো।সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। নিজেকে পাগল পাগল লাগতো।
বয়স যখন ১৫ তখন প্রথম আত্মহত্যা করার চেষ্টা করি।কিন্তু পারি নি। বাসায় চলে আসি।রাতে ঘুমিয়ে আছি হঠাৎ আমার হাতে ব্যাথ্যা শুরু হলো। উঠে বসে হাতের দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ হাতে একটা কিতাব ভেসে উঠলো। একটুও ভয় পায়নি কারন এর থেকেও ভয়ংকর জিনিস আমি দেখেছি।
কিতাবের নাম #জ্বীন_রহস্য। সেখান থেকে আমি জানতে পারি আমি যাদের দেখি তারা হলো জ্বীন। এই কিতাবে জ্বীনদের সম্পর্কে অনেক কিছু দেওয়া আছে।তাদের সাথে লড়াই করার টেকনিক,, অনেক সূরা এগুলো ও আছে। কিন্তু আমি কেনো এগুলো দেখতে পায় তা জানতে পারিনি। এই কিতাবের লেখা আমি ছাড়া আর কেও পড়তে পারে না।
এখন আমি অনেকটা স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি।কাওকে কিছু বলতেও পারবো না।এই কিতাবের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পেরেছি। আর এখন কোনো জ্বীন আমাকে মারতে এলে তাদের সাথে আমি একাই লড়াই করতে পারি।এই সব দেখতে দেখতে এতোটাই অবস্থ হয়ে গেছি, যে এখন যদি আমার সামনে কাওকে খুন করে তার মাথা আমার হাতে ধরিয়ে দেয় তাও আমি ভয় পাবো না। কিন্তু আমার সাথে কেনো এই সব হচ্ছে।
এই সবের রহস্য আমাকেই বের করতে হবে।তাই দ্বিতীয় বার আত্মহত্যা করতে যায় এটা জানার জন্য যে কে বা কারা আমাকে বাঁচতে সাহায্য করে। হয়তো তাড়াই আমাকে সব বলতে পারবে।কিন্তু ছাদ থেকে লাফ দিলে চোখ বন্ধ হয়ে যায় তাই কিছুই দেখতে পারি নি।
এখন তৃতীয় বার চেষ্টা করতে যাচ্ছি। এবার আর চোখ বন্ধ করবো না। ছাদ থেকে লাফ দেয়। মাটিতে পড়ার আগে শূন্যে ভাসছি।কিন্তু কাওকে দেখতে পাচ্ছি না। মনে হলো কেউ যেনো নিচে নামিয়ে দিলো। এটা জ্বীন ছাড়া কেও হতে পারে না। কিন্তু কথা হলো আমি তো জ্বীনদের দেখতে পায় তবে এদের কেনো দেখতে পেলাম না।
আজও কোনো উওর ছাড়া বাড়ি ফিরে এলাম।
মা,,,,,,, এই তোর আসার সময় হলো। কাল থেকে ভার্সিটিতে যেতে হবে মনে আছে তো।
যীন্নাত,,,,,,,, হ্যা মা মনে আছে।
বাবা,,,,,,,, কোথায় গিয়েছিলে।
যীন্নাত,,,,,,,, বাবা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়েছিলাম।
বাবা,,,,,,,, ঠিক আছে যাও মা ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো।
যীন্নাত,,,,,, ঠিক আছে বাবা।
,,,,,,,
মা,,,,,, তুমি কিছু বললা না সকালে গেছে রাতে আসলো।
বাবা,,,,,,, থাকনা,, আগে তো কোনো বন্ধু ছিলো না ওর কলেজে উঠার পর বন্ধু বানাইছে। তিন বছর ওর কোনো পাগলামি দেখি নাই।এখন মনে হয় ও স্বাভাবিক হয়েগেছে।
মা,,,,,, হুম তুমার জায়গা পাল্টানোর বুদ্ধিটা ভালো ছিলো।কাজে দিয়েছে আগের মতো কোনো পাগলামো করেনা।
,,,,,,,,
মা,,,,,, যীন্নাত মা তাড়াতাড়ি খেতে আয় সব ঠান্ডা হয়ে গেলো।
_ এই তো এসেগেছি,,,তাড়াতাড়ি খেতে দাও অনেক খুদা লেগেছে।
_ এতো খুদা লাগছে কেনো বন্ধুদের সাথে খেয়ে আছিসনি।
_ না আসলে তুমার হাতে খাবো তো তাই ওদের সাথে খায়নি।
_ কথাটা বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করলো না, তাও করলাম।
_ যীন্নাত মা কাল তুমার ভার্সিটির প্রথম দিন, কিছু লাগবে তুমার।
_ না বাবা আমার কিছু লাগবে না।,৷৷৷,,,, ঠিক আছে আমার খাওয়া শেষ আমি রুমে গেলাম।
রুমে গিয়ে শুয়ে আছি ঘুম আসছেনা। হঠাৎ আমার হাত থেকে আলো বের হচ্ছে। এমন তখনি হয় যখন কোনো নতুন জাতের জ্বীন আমার ক্ষতি বা সাহায্য করার জন্য আসে বা এমনি সাক্ষাৎ হয়।
তখনি এই কিতাব আসে তার সম্পর্কে বলার জন্য।
আমি কিতাবকে আহবান করি,, কিতাব খুলতেই জ্বীনের সম্পর্কে বলে।
…….লেখা……..
রাজকীয় জ্বীন, অনেক সাহসী, শক্তি শালী, আজ পর্যন্ত কোনো যুদ্ধে হারে নি। রুপ পাল্টাতে সক্ষম এছাড়াও আরো অনেক শক্তি ওর মধ্যে আছে যা সে প্রবল কষ্ট করে অর্জন করেছে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কার্য সিদ্ধি করার জান্য।…………
যীন্নাত,,,,,,,, একি আর কিছু লেখা নেই কেনো। ওকে কিভাবে মারা যাবে তাতো লেখা নেয়। না থাক লেখা,, এমনিতেই আমার মধ্যে অনেক রাগ আছে আগে জিজ্ঞেস করবো কেনো আমাকে মারতে এসেছে যদি না বলে তাহলে ওর খবর আছে।আমার সব রাগ ওর উপর যারবো।
যাই হোক এখন ঘুমিয়ে পড়ি না হলে কাল উঠতে পারবো না।
সকালে,,,,,,,,,
যীন্নাত,,,,,,,,, মা আমি আসি,,
বাবা,,,,,,, চলো তুমাকে দিয়ে আসি।
যীন্নাত,,,,,,,, না বাবা আমি একাই যেতে পারবো।
বাবা,,,,,, ঠিক আছে সাবধানে যাও।
,,,,,,,,,,,,,
ভার্সিটির সামনে দাঁড়িয়ে আছি কতোই না ইচ্ছে ছিল এই খানে পড়ার। যায় আগে ভিতরে ডুকে একটু ঘুরে নিবো।
ভিতরে ডুকতেই,,,,,,,
,,,,,,,,,, এই দাঁড়াও, এদিকে আসো।
যীন্নাত,,,,,,,, জ্বী আমাকে ডাকছেন।
,,,,,,,, হুম তুমাকে কথা না ভারিয়ে এই দিকে তাড়াতাড়ি আসো।
চলবে,,,,,,,,,,,,,