Darkness,Part: 01
Writer: Abir Khan
তনু ওর ক্লাসমেইটদের সাথে সিলেটের একটা পাহাড়ি জায়গায় ক্যাম্পিং করতে এসেছে। ওরা সারা রাত এই পাহাড়ের চুড়ায় ক্যাম্পিং করবে৷ ওদের সাথে আরও দুটো দল এসেছে। তবে সবাই আলাদা আলাদা ভাবে ক্যাম্পিং করছে। তনুরা মোট পাঁচ জন ছিল। তনু, নীলা, রনি, শান্ত আর ইমন। ওরা সবাই একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। রাত এখন প্রায় ১২ নাগাদ বাজে। সবাই যখন অনেক ইঞ্জয় করছিল তখন তনু আকাশের দিয়ে তাকায়। দেখে বিশাল বড়ো একটা চাঁদ আকাশের বুকে। তবে গাছপালার জন্য ঠিক মতো দেখতে পারছে না ও। ওর বান্ধবী নীলা ওকে দেখে বলে উঠে,
~ কিরে চাঁদ দেখবি?
~ হ্যাঁ। (খুশি হয়ে)
~ এক কাজ কর, সামনে খালি জায়গা আছে ওখানে দাঁড়িয়ে দেখ। তবে খেয়াল রাখিস পড়ে যাস না যেন৷ কারণ রাস্তা কিন্তু ওখানেই শেষ। পড়ে গেলে একদম ৫০০ ফিট নিচে। মানে কেল্লাফতে।
~ আরে না না অতো পাশে যাবো না৷
~ আচ্ছা যা তবে।
নীলা জানে তনুর চাঁদ অনেক পছন্দ। তাই ও আরও সুযোগ করে দিল ওকে দেখার জন্য। তনু উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
~ তোরা সবাই বস, আমি একটু সামনে থেকে চাঁদ দেখে আসি।
~ আমরা আসবো তোর সাথে? (শান্ত)
~ আরে না না৷ সমস্যা নেই। আমি একটু দেখেই চলে আসবো।
~ আচ্ছা যা। (সবাই)
তনু জ্যোৎস্নার আলোতে সামনে এগোতে থাকে। আস্তে আস্তে সামনে আসতেই পাহাড়ের শেষ সীমানা। এখানে কোন গাছ পালা নেই। তাই খোলা আকাশের অপরূপ সুন্দর চাঁদটা বেশ ভালো ভাবে এখন দেখা যাচ্ছে। নীলা ঠিকই বলেছিল। তনু জ্বলজ্বল নয়নে আকাশের পানে তাকিয়ে চাঁদটাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে। চাঁদটাকে যেন আজ অনেক বেশি সুন্দর লাগছে৷ একদম ফুলমুন যাকে বলে। তবে আজকের চাঁদটা অন্যদিনের চেয়ে কেন জানি বেশি বড়ো লাগছে তনুর কাছে। যার জন্য আরও বেশি সুন্দর লাগছিল দেখতে। জায়গাটা পাহাড়ের চুড়ায় হওয়ায় ঠান্ডা হিমশীতল একটা বাতাস এসে তনুর গায়ে লাগছে। ওর খুব ভালো লাগছে। তনু মুচকি একটা হাসি দিয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ছিল। ওর দশ কদম সামনেই পাহাড়ি খাদ। একবার পড়লে বাঁচার আর কোন উপায় নেই৷ তাই ও দূরত্ব মেনেই দাঁড়িয়ে আছে৷ তনু যখন চাঁদের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিল হঠাৎই ওর অনুভব হয় ওর পিছন থেকে কেমন একটা গরম হাওয়া খুব দ্রুত গতিতে প্রবাহিত হয়ে চলে গেল। আর সাথে সাথে ওর পুরো শরীরে কাটা দিয়ে গেল। তনু দ্রুত পিছনে তাকিয়ে দেখে কিছুই নেই৷ ও আবার সামনে তাকাতেই আবার সেই গরম হাওয়া ওর পিছনে চলে আসে। তবে এবার সেটা আর যাচ্ছে না৷ মনে হচ্ছে ওর পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে। তনু সাহস করে আস্তে আস্তে পিছনে তাকাতেই দেখে একটা বিশাল কালো ছায়া। ও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছায়াটা খুব জোরে ওকে একটা ধাক্কা দেয়। আর বিভৎস ভাবে হাসতে থাকে। তনু নিজেকে সামলাতে না পেরে পাহাড় থেকে ৫০০ ফিট নিচে পড়ে যায়। ও যে চিৎকার দিবে সে শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছে। ওর চোখটা আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে আসে। ও অনুভব করছে ও নিচে পড়ে যাচ্ছে। তনু মনে মনে বলে,
~ তাহলে কি এটাই আমার জীবনের শেষ মুহূর্ত? আমি মরে যাচ্ছি? বাবা-মাকে শেষবারের মতো দেখতেও পারবো না?
পাহাড়ের নিচে শক্ত শক্ত পাথর আছে৷ এগুলোর উপর পড়লে তনু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মারা যাবে৷ আর বেশি পথ বাকি নেই। তনু অনুভব করছে ও আর কিছুক্ষণ পর অস্ত্বিত্বহীন হয়ে যাবে৷ ওকে কেউ খুঁজেও পাবে না। হয়তো কোন জন্তু ওকে চিড়ে চিড়ে খাবে৷ তনুর দুচোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। ও ঠিক যখনই পাথরগুলোর উপর পড়বে তার আগেই খুব ঠান্ডা একটা স্পর্শ ওর পুরো শরীর জুড়ে ও অনুভব করে। মনে হচ্ছে কেউ ওকে ধরে আছে। তনুর চোখ কিন্তু এখনো বন্ধ। ও মনে মনে বলছে,
~ আমি কি তাহলে মরে গেছি? নাকি কারো কোলে আমি? কিন্তু এটা ত অসম্ভব। এত উপর থেকে পড়ে কেউ কখনো বাঁচবে না। কিন্তু আমি এই ঠান্ডা স্পর্শ কেন ফিল করছি?
তনু আর না পেরে আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায়। ও দেখে, দুটো লাল চোখ ওর দিয়ে তাকিয়ে আছে। তনু মুহূর্তেই ভয় পেয়ে যায়। অনেক ঘাবড়ে যায় ও। তবে চাঁদের আলোতে ও ভালো করে দেখে, একটা অসম্ভব সুন্দর ছেলে ওকে তার বাহুদ্বয়ে নিয়ে আছে৷ তনু স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে এই লাল চোখওয়ালা ছেলেটার দিকে। অনেকটা ফরসা মুখ, মাঝামাঝি আকারের ঘন কালো চুল, বড়ো বড়ো পাপড়ি আর ঠোঁটটা কেমন জানি, লাল লাল। এরকম ছেলে ও আগে কখনো দেখে নি। কে এই ছেলে? এখানে কিভাবে আসলো? আর ওকেই বা কিভাবে বাঁচালো? তনু কিছুই বুঝতে পারছে না। ছেলেটা ইশারায় ওকে চোখ বন্ধ করতে বলে। ও অজান্তেই নিজে নিজে চোখ বন্ধ করে ফেলে। তনু এবার ফিল করে ও খুব জোরে উপরের দিকে যাচ্ছে৷ যেন হাওয়ায় ভাসছে৷ কিছু মুহূর্ত পর ও পায়ের নিচে মাটি পায়৷ মানে ছেলেটা ওকে তার কোল থেকে স্থলে নামিয়ে দিয়েছে। এবার ও দ্রুত চোখ মেলে তাকিয়ে যা দেখে, তা দেখার জন্য ও মোটেও প্রস্তুত ছিল না। তনু তাকিয়ে দেখে ও সেই পাহাড়ের চুড়ায় দাঁড়িয়ে আছে৷ যেখান থেকে ও একটু আগে পড়ে গিয়েছিল। ঠিক পড়ে যায় নি ওকে কেউ ধাক্কা দিয়েছিল। তনু কিছুই বুঝতে পারছে না ঠিক কি হলো ওর সাথে। ও কিছু ভাবতে যাবে তার আগেই ওর বাকি বন্ধুরা ওর কাছে চলে আসে। তনুকে অস্থির দেখে নীলা ওর কাছে এসে ওর হাত ধরে চিন্তিত স্বরে বলে,
~ কিরে কি হয়েছে? এরকম পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছিস কেন? কিছু হয়েছে?
তনু নীলার দিকে তাকাতেই দূরে সেই লাল চোখ দুটোকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে। চোখ দুটোয় যেন আগুন জ্বলছে। তনু ভয় পেয়ে যায়। ও আস্তে করে বলে,
~ না কিছু হয় নি৷ এমনিই দাঁড়িয়ে ছিলাম।
বলেই আবার সেখানে তাকিয়ে দেখে চোখ দুটো আর নেই। যেন ওর কথাগুলো শোনার জন্যই সে দাঁড়িয়ে ছিল। নীলা বলে,
~ আচ্ছা আচ্ছা আয় এখন। অনেক চাঁদ দেখা হয়েছে।
— হ্যাঁ হ্যাঁ চল। অনেক রাত হয়েছে। (ইমন)
তনুকে নিয়ে ওর বন্ধু-বান্ধবীরা ক্যাম্পের কাছে চলে যায়। তনু বলে উঠে,
~ আচ্ছা তোরা আড্ডা দে৷ আমি শুয়ে পড়ি। শরীরটা একটু খারাপ লাগছে। ঘুমালেই ঠিক হয়ে যাবে।
~ আমিও আসবো দোস্ত? (নীলা)
~ না না। তুই ওদের সাথেই থাক।
~ ঠিক আছে যা। কোন সমস্যা হলে ডাক দিস।
~ আচ্ছা৷
তনু ওর টেন্টে ঢুকে শুয়ে পড়ে। এদিকে শান্ত বলে উঠে,
— ও কেমন জানি অদ্ভুত আচরণ করছিল তাই না?
~ হ্যাঁ। বুঝলাম না হঠাৎ ওর কি হলো। (নীলা)
— আরে চিন্তা করিস না। হয়তো প্রথম এসেছে তাই একটু অসুস্থবোধ করছে। আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে৷ (রনি)
— হুম ঠিক বলেছিস। আয় এখন একটা গান ধরি। (ইমন)
— আচ্ছা।(সবাই)
তনুর ফ্রেন্ডরা বাইরে আনন্দ করছে। কিন্তু তনু শুয়ে শুয়ে শুধু ভাবছে ওর সাথে এটা কি হলো। যতদূর ও বুঝতে পারছে এটা স্বাভাবিক কিছু ছিল না। তনু এবার হিসাব মিলাতে শুরু করে। প্রথমত, ওকে একটা কালো ছায়া ধাক্কা দিয়েছে৷ হয়তো সেটা কোন ভূত বা জ্বিন। কারণ এই পাহাড়ি এলাকায় এগুলো থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এরপর যা হলো সেটা ত অস্বাভাবিক আর অসম্ভব! ও ৫০০ ফিট নিচে পড়ে গিয়েও কিভাবে এখনো বেঁচে আছে? আর ওই ছেলেটাই বা ওকে কিভাবে বাঁচালো? তার চোখ কেন রক্তের মতো লাল? কে ছিল সে? কেন এত সুন্দর দেখে একটা ছেলে ওই পাহাড়ের নিচে ছিল? আর কিভাবেই বা ও আবার উপরে চলে আসলো? এত রহস্য আর এত প্রশ্ন তনুর মাথায় এমন চাপ দেয় যে ও আর নিতে পারে না। সবটা স্বপ্ন ভেবে ও ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আস্তে আস্তে গভীর হয়। তনু ঘুমের মধ্যে ফিল করে কিছু একটা ওর ঘাড়ে কামড় দিয়েছে। তবে সেটা খুব ঠান্ডা কিছু। তনু আবার অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে যায়।
পরদিন সকালে,
আজ ওরা সবাই ঢাকায় ফিরে যাবে। কাল থেকে ভার্সিটির ক্লাস শুরু। কোন ভাবেই মিস দেওয়া যাবে না। নীলা দেখে তনু এখনো ঘুমিয়ে আছে। ও তনুর টেন্টে ঢুকে আস্তে আস্তে ওকে ডাক দেয়।
~ এই তনু…তনু…উঠ সকাল হয়েছে। আমাদের রওনা দিতে হবে যে।
নীলার কয়েকটা ডাকে তনুর গভীর ঘুম ভাঙে। ও আস্তে আস্তে ঘুমাতুর অবস্থায় উঠে বসে। হঠাৎই নীলা তনুর ঘাড়ে হাত দিয়ে ভালো করে তাকিয়ে দেখে বলে,
~ একি! তোর ঘাড়ে এমন দুটো ফুটো হয়ে আছে কেন? কি হয়েছে?
তনু একদম অবাক হয়ে যায়। সাথে সাথে ওর ঘুমের রেশ কেটে যায়। ও হাত দিয়ে চাপাচাপি করে৷ কিন্তু কোন ব্যথা অনুভব করে না। নীলা দ্রুত ওর ফোনটা বের করে একটা ছবি তুলে তনুকে দেখায়।
~ দেখ।
তনু ভালো করে ক্ষত দুটো দেখে হঠাৎ করে ওর রাতের কথা মনে পড়ে। ও গভীর রাতে ওর ঘাড়ে কিছু একটা ফিল করেছিল। তাহলে কি এটাই সেটা? তনু কিছুক্ষণ ভেবে বলে,
~ আমার মনে হয় পাহাড়ি কোন পোকা কামড় দিয়েছে। তাই এমন দাগ হয়ে আছে।
নীলাও একটু ভালো করে দেখে বলে,
~ মন্দ বলিস নি। হতে পারে। চল ঔষধ দিয়ে দি।
~ আচ্ছা আগে হাত মুখ ধুয়ে রেডি হয়ে আসি, তারপর দিস। এখন তুই যা।
~ ওকে, তাড়াতাড়ি আসিস। আমরা একটু পর রওনা হবো। বাসে উঠে নাস্তা করবো সবাই।
~ ঠিক আছে।
নীলা চলে গেলে তনু আবার ওর ঘাড়ে হাত দিয়ে ভাবে, কি হচ্ছে ওর সাথে এসব! এরপর ও ওর সব কিছু গুছিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয়৷ ওর বন্ধুরা মিলে যাওয়ার প্রস্তুতিও সম্পূর্ণ করে৷ সকাল দশটায় ওরা রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশ্যে। তনুর সাথে এরপর আর কিছু হয় নি। ওর বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে ও কখন যেন সব ভুলে যায়৷ ওদের ঢাকা আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তনু বাস থেকে নামতেই দেখে ওর জন্য গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ও নীলা সহ সবাইকে বিদায় দিয়ে গাড়ির কাছে আসে। ওর পার্সোনাল কেয়ারটেকার মানে আজিম আঙ্কেলকে দেখে তনু জিজ্ঞেস করে,
~ পাপা এসেছে?
তিনি মাথা নিচু করে ইশারায় না বলেন৷ তনু গাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে বলে,
~ আচ্ছা আঙ্কেল তার কি মনে আছে যে তার একটা মেয়েও আছে? নাকি ভুলে গিয়েছে?
— মামনি, স্যার তো আসলে অনেক বিজি। আমি এটুকুই জানি৷
~ চলুন। আর কিছু শুনতে চাই না।
আজিম আঙ্কেল তনুকে নিয়ে ওর বাসায় চলে যান৷ উনার বয়স ষাটের কাছাকাছি। বেশ বিশ্বস্ত একজন লোক। তনুকে ছোট কাল থেকে তিনিই বড়ো করেছেন। ওর মা ওকে জন্ম দিয়েই মারা যান৷ তনুর বাবা অনেক ধনী ছিল। স্ত্রীকে হারিয়ে তনুকে আজিম আঙ্কেলের কাছে দিয়ে তিনি ব্যবসা নিয়ে নিজেকে আরও ব্যস্ত করে ফেলেন। তনু না পেয়েছে মায়ের আদর না বাবার৷ একাকিত্বই জুড়ে আছে ওর জীবনে শুধু। তনু বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। কেন জানি এই বাসাতে ওর আর ভালো লাগে না। দমটা বন্ধ হয়ে আসে। ও একসময় ঘুমিয়ে পড়ে। কারণ কালকে ওকে ভার্সিটিতে যেতে হবে। এতদিন সামার ব্রেক ছিল ওদের। কালকেই শেষ।
পরদিন সকালে,
তনু সকাল সকাল উঠে রেডি হয়ে ভার্সিটি রওনা হয়। সকাল ১০ টায় ওদের ক্লাস শুরু। ও ভার্সিটি এসে গাড়ি থেকে নেমে সোজা ক্যাম্পাসে ওর ফ্রেন্ডদের কাছেই যাচ্ছিল। একটু অন্যমনস্ক থাকায় ও হঠাৎই কারো সাথে ধাক্কা খায়৷ সেই ঠান্ডা শরীরের অনুভূতি। তনু নিজেকে সামলে তাকিয়ে দেখে সেই রাতের ছেলেটা। আজকেও তার বাহুদ্বয়ে ও৷ তনু ভয় পেয়ে আর অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তবে এখন ছেলেটার চোখ একদম নরমাল মানুষদের মতো। মানে কালো। তাহলে সেদিন কেন লাল হয়ে ছিল? ছেলেটা তনুকে আরও বেশি অবাক করে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,
— কেমন আছো তনু?
চলবে…?