অনুভূতিরা শীর্ষে 💗,পর্ব_২২,২৩ শেষ

অনুভূতিরা শীর্ষে 💗,পর্ব_২২,২৩ শেষ
লেখনিতে_সুমাইয়া ইসলাম মিম
পর্ব_২২

বাসায় এসে দেখি বিয়ের তোড়জোড় ধুমচে চলছে। বাবা এদিক দৌড়াচ্ছে তো মা ওদিক! আপুও কাজ করছে। ভাইয়া সোফায় বসে ফোনে কথা বলছে আর ইশারায় কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছে। আমি ক্লান্ত হয়ে সোফায় ধপ করে বসে পড়লাম। ভাইয়া আমার দিকে একবার তাকিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আবার কাজ করা শুরু করলো। আমি চোখ ঘুরিয়ে এদিক সেদিক দেখছি! হঠাৎ ভাইয়ার ফোন বেজে উঠলো। আমি স্ক্রিনে চোখ দিতেই দেখি সাদিয়া লেখাটা ভেসে উঠছে। ভাইয়া একবার তাকিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। আমার ভ্রু কুঁচকে এলো। সাদিয়া আপু আবার কল দিলো কিন্তু এবারও ভাইয়া ফোনটা তুলল না। আবার ফোন বেজে উঠার আগেই ভাইয়া ফোনটা নিয়ে উঠে গেলো সোফা থেকে। আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি ভাইয়ার সাথে সাদিয়া আপুর সম্পর্ক এখনো ভাইয়া ঠিক করে নেয় নি। কি করি? আমার মতে সাদিয়া আপু তার পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করছে সম্পর্কটাকে নতুন করে গুছিয়ে শুরু করার কিন্তু ভাইয়ার অবহেলা তো ওদের সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটাবে এটা কি ভাইয়া বুঝছে না নাকি? নাহ! আমার ভাইয়ার সাথে কথা বলতে হবে। এভাবে তো চলতে পারে না।

.
আমিও ভাইয়ার পিছু পিছু এসে হাজির হয়েছি! বারান্দায় এক ধ্যানে দাঁড়িয়ে আছে সে। আমি ভাইয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বললাম,

–ছোটবোন হয়ে জিজ্ঞাসা করছি! সব ঠিক আছে তো ভাইয়া?

ভাইয়া চমকে আমার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করলো। আমাকে এখন এখানে মোটেই আশা করে নি ভাইয়া! তা তার রিয়েকশন দেখে বুঝা যাচ্ছে।

-হ্যাঁ! সবই ঠিক আছে! কি হবে আবার?

আমি হালকা হেসে বাইরে তাকিয়ে বললাম,

–সাদিয়া আপুকে ইগনোর করছো কেন?

ভাইয়া চমকে আমার দিকে তাকালেন!

-কি বলছিস এগুলো? কেউ কিছু বলেছে তোকে? সাদিয়া কিছু বলেছে তোকে?

আমি আবার হেসে বললাম,

–বললেই হয়তো ভালো হতো! কিন্তু কি বলতো! মেয়েটা বড্ড বেশিই ভালো! ছোট থেকেই কষ্ট করছে। কিন্তু বিনিময় চেয়েছে একটু ভালোবাসা! তাতেও এত্তোবড় একটা ধোঁকা খেলো! ওর মনের অবস্থাটা একটু বুঝার চেষ্টা করো ভাইয়া!

ভাইয়া বেশ ভালো করেই বুঝতে পেরেছে যে আমি সবটাই জানি। তাই সরাসরিই বলল,

-আমি চাই ওর সাথে নরমাল হতে কিন্তু যখনই চেষ্টা করি তখনই ওইদিনের কথা মনে পড়ে! কি হতো যদি আমি একটু দেড়ি করে পৌছাতাম তো?

–কিন্তু কিছু তো হয়নি! মেয়েটা এমনিই একটা ট্রমাতে আছে। এখন তুমিও যদি তাকে ইগনোর করো তাহলে কি করে হবে? সে তো তোমাকে আঁকড়ে ধরতে চাইছে! তুমি তাকে সময় দাও! তাকে এই মরণযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দাও!

ভাইয়া আমার কথায় আস্তে করে হুম বলল। আমি যেতে যেতে থেমে বললাম,

–খুব বেশি দেড়ি করে ফেলো না কিন্তু! প্রিয়মানুষ হাড়িয়ে গেলে আর কূল পাবে না।

পিছন ফিরে যেতে নিলেই ভাইয়া ডাক দিলো,

-সুবাহ?

আমি ভাইয়ার দিকে ফিরতেই ভাইয়া মুচকি হেসে বলল,

-বড় হয়ে গেছিস!

আমি হেসে চলে এলাম। খুব ভালো করেই জানি এখন ভাইয়া তার প্রিয়তমাকে সময় দিবে।

.
কাল গাঁয়ে হলুদ। সাদাদের বাড়ি থেকে এক গাদা জিনিস এসেছে। আর একটা বিশাল বড় পার্সেল এসেছে শুধুমাত্র আমার নামে। পার্সেলটা দেখে আমার ভ্রু কুঁচকে এসেছে। আমার কাছে মনে হলো আমার চেয়েও এই পার্সেলটা বড় হবে। আমার পুরো খাটটা জুড়ে পড়ে আছে। আপুকে এতো করে বললাম এটা খুলে দে কিন্তু নাহ! উনি কি বললেন?

-আমার ভাসুর তোর জন্য স্পেশাল ভাবে এটা পাঠিয়েছে! শুধুমাত্র তুইই এটা খুলবি!

হুহ! এটা কোন কথা? এই বদলোকটাকে আমি যমের মতো ভয় পাই! কেন যে এখনো ভয় পাই আল্লাহ জানে। পার্সেলটা না খুলেই দিলাম ফোন! দুইবার রিং বাজতেই উনি ফোন তুললেন।

–হ্যাঁ সুবাহ! বলো!

–আসসালামু আলাইকুম সাদাদ সাহেব!

উনি হালকা হেসে বললেন,

–ওয়ালাইকুম আসসালাম! খুব সিরিয়াস কিছু মনে হচ্ছে!

এবার আমার কথার বান ছুটলো।

–ওই মিয়া! আমারে কি মনে হয়?

উনি ঠিক কি রিয়েকশন দিলো আমার বোধগম্য হলো না। কিন্তু শান্ত গলায় বলল,

–কি আর মনে হবে? আমার হবু বউয়ের মতোই মনে হয়!

আমি একটা শ্বাস ছাড়লাম। এই লোকের সাথে কথায় আমি জীবনেও পারবো না। আমি বলি কি আর উনি বলে কি!

–হ্যাঁ হবু বউ! তা বাদে আর কিছু মনে হয়? লাইক রোবট?

উনি সন্দিহান গলায় বললেন,

–কেন বলো তো?

আমি এবার ব্যাঙ্গ করে বললাম,

–কেন বলো তো? আজব পাবলিক! এতো বড় কেউ পার্সেল পাঠায়? আবার কি বলছেন? আমি যেন কারো সাহায্য না নেই? তো এটা আমি খুলবো কি করে?

উনি এবার ফিক করে হেসে দিলেন। আজব! এখানে হাসার কি হলো? পাগল নাকি?

–আপনি হাসছেন কোন দুঃখে?

–ওমা! দুঃখে হাসবো কেন? আমি তো সুখে হাসি! এটা ভেবে যে আমার বউ কতটা ডাম্ব!

–এই! আপনি কি আমার ইনসাল্ট করছেন? সাহস তো অনেক বেশি!

–জ্বি! আমার সাহস বরাবরই বেশি! নয়তো রাজনীতি হতো না আমার দ্বারা!

–হ্যাঁ! ওই গুণ্ডামিই পারেন!

–গুণ্ডামি ছাড়া আরো অনেক কিছু পারি। বিয়েটা হোক! বুঝাচ্ছি!

–ধুর! কথা কই নিয়ে গেছেন? আগে বলেন এটার মধ্যে কি?

–আমি যদি বলেই দেই তাহলে এতো কষ্ট করে র‍্যাপিং এ মুড়ে দিলাম কেন? নিজে খুলে দেখো কি!

–ধুর! ভাল্লাগে না!

উনি গম্ভীর গলায় বললেন,

–সুবাহ!

এই শুরু! এখন এও আম্মুর মতো সুবাহ সুবাহ করবে! আমার জীবনটাই তেজপাতা!

একটা কেঁচি নিয়ে র‍্যাপিংটা খুব কষ্টে খুললাম! তারপর কাটন খুলেই কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে ছিলাম। এরপরই দিলাম এক চিৎকার! ওপাশ থেকে সাদাদ তার কান থেকে ফোনটা কিছুটা দূরে সরিয়ে হাসলো।
হাসতে হাসতেই তার কন্ঠ,

–কি ম্যাডাম? কেমন লাগলো সারপ্রাইজ?

আমি সারা রুম ছুটছি আর ফোনে সাদাদকে ঝাড়ছি!

–আপনি এতো খারাপ কেন? আপনি জানেন না আমার ডগ ফোবিয়া আছে! এএএএএ…..কেউ এই কুত্তাটারে সরাও! ওই হুশ! হুশ!

ওপাশ থেকে সাদাদ জোরে জোরে হাসছে। আর বলছে,

–সুবাহ! কুল ডাউন! ওটা ট্রেইন্ড ডগ! ও কিছু করবে না তোমার!

আমি উত্তেজিত হয়ে বললাম,

–কিছু করবে না তো আমার পিছনে দৌড়াচ্ছে কেন…….????

উনি আবারও হাসছে।

–আরে আমি ওকে তোমার ছবি দেখিয়ে বলেছি তুমি ওর মা! আর আমি বাবা!

আমি রাগে ফুঁসছি!

–এক্ষুনি এটাকে সরান! নয়তো আপনার খবর আছে!

উনি হেসে বললেন,

–আচ্ছা ভিডিও কল রিসিভ করো!

আমি কল রিসিভ করতেই দেখতে পেলাম উনি উদাম গায়ে! ট্রাউজার পড়া আর গলায় টাওয়াল জড়ানো! হয়তো কিছুক্ষন আগেই গোসল করেছেন। আমার খুব লজ্জা লাগছে তাই তাড়াতাড়ি ফোনটা ঘুরিয়ে কুকুর ছানার সামনে ধরলাম। সাদাদকে দেখতেই একদম শান্ত হয়ে দাঁড়ালো সে। সাদাদ হেসে ফেলল। আদুরে গলায় বলল,

–কিটকেট! বেবি! ডোন্ট ডিস্টার্ব ইয়োর মাম্মা!

ছানাটাও কি সুন্দর কথার বাধ্য হয়ে তীক্ষ্ম স্বরে ভউ করে উঠলো। আমি অবাক হয়ে গেলাম! কুকুরের নাম আবার কিটকেট হয় কেম্নে? আমি ফোনটা আমার দিকে করে নিজের ভুলটা বুঝতে পারলাম। কারন উনার গায়ে টাওয়ালটাও নেই! তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিতেই হেসে ফেলল সে। মোহনীয় গলায় বলল,

–দূরে থেকেই এতো লজ্জা পাচ্ছো সুবাহ? মাত্র দুই দিন! কি করবে তুমি?

উনার কথাটা শুনে গায়ের লোম হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেলো! উফ! এই লোকটা পারেও বটে! পুরো এলার্ম ক্লক! রিমাইন্ডার হয়ে বাজতেই থাকে!

,
,
,
চলবে………….❤️

অনুভূতিরা শীর্ষে 💗
লেখনিতে_সুমাইয়া ইসলাম মিম
পর্ব_২৩ শেষ

সকাল সকাল সবাই ব্যস্ত। কারন আজ রুবায়েত ভাইয়ার বিয়ে! আর আমার….উহুম! নাম মাত্র বিয়ে, বলেই আমার মনে হয়। আবার অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায়, “যার বিয়ে তার হুশ নাই, পাড়াপড়শির ঘুম নাই!” আমার ক্ষেত্রে কথাটা খাটলেও আমার উনির ক্ষেত্রে খাটে না। সে সব কিছু নিয়েই সিরিয়াস। কাল রাতে এতো এতো নাচ গানের মধ্যমণিই ছিলাম আমি। আমাকে ঘিরেই ছিল যতশত কান্ড। ইভেন আমার শান্তশিষ্ট ভোলাভালা ভাইও কাল নাচ গান করেছে। আর আমার কথা বাদই দিলাম। তাই তো সকাল ৯ টা বাজে, এখনো আমি কুম্ভকর্ণের মতো পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছি। মা এসে অনেকক্ষন ডেকে গেছে কিন্তু মনে হয় না তাতে আমার কোন প্রকার নড়চড় হয়েছে। অতঃপর রুবাপু এসে আদুরে ভাবে ডেকে উঠিয়ে পুরো বসিয়ে দিলো। কিন্তু যেই আবারও ঘুমোতে যাবো অমনি আপুর কথায়” সাদাদ পাশের রুমে, দেখেছি এই রুমের দিকেই আসছে!” ব্যস! আমার সাধের ঘুম টাটা বাই করে চলে গেছে।

.
দুইদিনে একটা জিনিস বেশ ভালো হয়েছে যে কিটকেট এর সাথে আমার বেশ ভাব হয়ে গেছে। ছানাটা অনেক কিউট! ওকে কিছুতেই ইগনোর করা যাবে না। আমার কোলে উঠে একদম বাচ্চাদের মতো সেটিয়ে থাকে। যেই আমি জীবনেও কুকুর পছন্দ করতাম না সে কি না একটা কুকুরকেই প্যাট হিসেবে রেখেছে। সাদাদ বরাবরই একজন পশুপাখি প্রেমী। রাস্তায় তার সাথে বের হলে বুঝা যায়।

আম্মু আর আপু জোর করে গোসল করতে পাঠিয়েছে! এই শীতের সকালে কি জন্য যে গোসল করতে হবে তাইই বুঝি না, আমি তো প্রতিদিন দুপুরে গোসল করি। তাও তাদের ঠেলাঠেলির জন্য গেলাম। বের হয়ে এসে দেখি আপু খাবার নিয়ে এসেছে। আমিও চুপচাপ খাওয়া শুরু করলাম। এই বিয়েতে সবচেয়ে বেশি খুশি আপু! সে আমাকে তার সাথে পাবে ভাবতেই নাকি খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করে তার। এখন আমাকে রেডি করে দিয়ে আপু আমার চলে যাবে তার শ্বশুরবাড়ি। বিকেলে ওখান থেকে বরযাত্রী হয়ে সেন্টারে যাবে। যতই হোক সে এখন ওই বাড়ির বউ।

.
প্রথমে কিছু মনে না হলেও এখন মনে হচ্ছে বুকের ভেতর তুমুল ঝড় শুরু হয়ে গেছে। যত বেলা যাচ্ছে তত মনে হচ্ছে আজ থেকেই আমার ভয়ের সাথে আমার থাকতে হবে। এখনো ভাবি আমি যে একটা সময় সাদাদকে দেখলেই পালাতাম সেই সবার প্রিয় সাদাদ ভাই আমার বর। একটু পর থেকে আমি তার হয়ে যাবো। আজ আমাকে রেড ভেলভেট কালারের একটা ভারী লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে। তার সাথে ম্যাচিং করে হিজাব। এটা আমার বর মশাইয়ের নির্দেশ। সে চায় না তার বউয়ের সাজ সে ব্যতিত অন্য কেউ দেখুক। কাজেই এই পদ্ধতি। আমার সাজ কম্পলিট হতেই বিছানায় বসে আছি। কিটকেট আমার পাশেই বসা। এর মধ্যেই ভাইয়া রুমে এসে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। আমিও হেসে ভাইয়ার হাত ধরলাম। ভাই বোন একসাথে এগিয়ে গেলাম।

.
সেন্টারে আমাদের গাড়ি থামতেই আমাকে নামতে বারণ করা হলো। কিছুক্ষন পর আমার বর মশাইকে দেখতে পেলাম। সে আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। আশেপাশে প্রেস মিডিয়ার অভাব নেই। যতই হোক রাজনীতিবিদ মোঃ সাদাদ রহমান সাদ এর বিয়ে বলে কথা! সাদাদ এগিয়ে এসে আমার হাত ধরে তার পাশাপাশি দাঁড় করালো। সবার সাথেই কুশলবিনিময় শেষ করে আমাকে নিয়ে ভিতরের দিকে চলল। তার পড়নে গোল্ডেন শেরওয়ানী। কিন্তু উনিই হয়তো প্রথম বর যার মাথায় পাগড়ী নেই। আপুর বিয়ে তে কথায় কথায় বলে ফেলেছিলাম বরদের পাগড়ীতে একদম মানায় না, বোকা বোকা লাগে। উনি যে কথাটা মাথায় গেঁথে নিবেন কে জানতো। তবে সত্যি তাকে অনেক বেশি হ্যান্ডসাম লাগছে। আমার বর তো হিহি!

এখানে এসে আইসক্রিমের স্টল দেখে দৌড় দিতে নিয়েছিলাম কিন্তু ভাগ্য খারাপ সাদাদ হাতটা শক্ত করে রেখেছে। আমি ঠোঁট উলটে তাকাতেই মুচকি হেসে বলল,

–ওই স্টলটা তোমার জন্যই রেখেছি নয়তো কোন পাগলে এই শীতে আইসক্রিম রাখে? ইতিমধ্যে মাথা খারাপ উপাধি পেয়ে ফেলেছি। এখন চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকো। বিয়ে শেষে খাবে।

আমি অস্থির গলায় বললাম,

–যদি শেষ হয়ে যায়?

সাদাদ অবাক চোখে আমার দিকে তাকালো। আমিও বুঝতে পেরেছি বেশ বোকার মতো একটা কথা বলেছি। কিন্তু কি আর করার বলে তো ফেলেইছি। সাদাদ আমাকে নিয়ে স্টেজে চলে গেলো। পাশাপাশি বিপরীত মুখী বসার জায়গা। দুইটা পার্ট আলাদা করেছে একটা বিশাল পর্দার মাধ্যমে। পর্দাটা অস্বচ্ছ। আমাকে আর সাদিয়া আপুকে পাশাপাশি বসানো হলো। আর ওইপাশে ভাইয়া আর সাদাদ।

সকল নিয়ম কানুন মেনে রেজিস্টারে স্বাক্ষর করতে দেওয়া হলো। আমি কাবিননামাটা ভালো করে পড়ে তবেই স্বাক্ষর করেছি। আমাকে দেখে সাদাদ মুচকি হেসেছে। অতঃপর ধর্মীয় নীতিতেও আমাদের বিয়েটা সম্পন্ন হয়। সবার মুখে হাসি। আশ্চর্য ভাবে সেই আপুকে আমি আর কোন অকেশনে খুঁজে পাই নি। জানি না এতে আমার সাথে কোন যোগসূত্র আছে নাকি!

বিয়ে শেষে আমাকে সাদাদকে আর ভাইয়া ভাবিকে পাশাপাশি বসানো হলো। বিয়ের সময় আমার আর সাদিয়া আপুর মাথায় দোপাট্টা দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘোমটা এখনো আছে। প্রথমে ভাইয়াকে ভাবির মুখ দেখে কিছু বলতে বলা হলে সে বলে,

-আমি আমার ঘরের ক্যাপ্টেনকে দেখতে পাচ্ছি!

ভাইয়ার কথায় সবাই হেসে দেয়। সে একজন আর্মি মানুষ! তার জন্য ইহাই একটা রোমান্টিক কথা! আমার সাদাদকে যখন বলা হলো, সে এক দৃষ্টিতে আয়নায় আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। তারপর এক নেশা ধরানো কন্ঠে বলে,

–“আমি দেখি আমার রুপকথাকে,
যে লুকিয়ে আছে আমার হৃদদেশে!
দেখি আমার কবিতাকে,
যে আছে সেই ছদ্মবেশে!
দেখি আমার হুরকে
যার জন্য আমার অনুভূতিরা শীর্ষে!!”

আমি অবাক নয়নে তার দিকে তাকিয়ে। হ্যাঁ এই পুরুষটি আমার! একান্তই আমার!

_______________সমাপ্ত_______________

(অবশেষে শেষ হলো “অনুভূতিরা শীর্ষে” এর পথচলা। কিন্তু তবুও শেষ হয় নি। এর দ্বিতীয় ধাপ আসবে। আর আশা করবো এই উপন্যাসের ১ম ধাপ সম্পর্কে কিছু বলে যাবেন। শেষ হয়ে গেছে বলে মন খারাপ করবেন না। আমি এটাকে আপাতদর্শনে শেষ করেছি। এর দ্বিতীয় ধাপ আসবে। ততদিন সবাই ভালো থাকবেন। নিজের ও প্রিয়জনের খেয়াল রাখবেন।)

♥শুভ সমাপ্তি♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here