ভালোবাসি|রোমান্টিক ছোট গল্প
লামিয়া আক্তার রিয়া
: তুর?
তুর্না: হুম?
: ভালোবাসি।
তুর্না: জানিতো।
কিছুক্ষন সবটা চুপচাপ।
: এই তুর?
তুর্না: হুমম?
: ভালোবাসি।
তুর্নার কাছে ভালোবাসি কথাটা ভীষন দামি হলেও এখন প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে।রাত ২টা বাজে।তুর্না ভাবছে প্রতিদিনের মতো কালকেও সকাল ৯টায় অফিস।উঠতে হবে ৬টায়।উঠেই গতকালের জামাকাপড় ভিজিয়ে দুটো রুম,ডাইনিং,বারান্দা সব পরিস্কার করে ঝাড়ু দিয়ে একচুলোতে সকালের ভাজি আর অন্যচুলোয় দুপুরের রান্না বসাবে।রান্না বসিয়ে সম্পূর্ন ঘর মুছে রান্না শেষ করে তুর্য আর রিদ্ধকে ঘুম থেকে তুলে ওয়াসরুমে পাঠিয়ে খাবার রেডি করবে।কোনোরকমে ব্রেকফাস্ট করেই বাথরুমে যেয়ে সব জামাকাপড় ধুয়ে গোসল করে বের হয়ে কোনোরকমে রেডি হয়ে সারে আটটায় তুর্যকে নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যাবে।মাঝে তুর্যকে স্কুলে নামিয়ে দেবে।কত কাজ।যদিও রিদ্ধই তুর্যকে স্কুলের জন্য তৈরি করে দেয়।তুর্নার ভাবনার মাঝেই আবারো শোনা গেলো।
: তুর ভালোবাসি।তুমি আমাকে ভালোবাসোনা?
তুরের রাগ লাগছে।যতবারই ঘুমটা চোখে লেগে আসে ততবারই রিদ্ধ একই কথা বলছে।ইচ্ছে করছে প্রকান্ড এক ঝাড়ি দিতে।কিন্তু রাতে আর তাহলে ঘুম হবেনা।উল্টো পাশের রুমে তুর্যও জেগে যাবে।
রিদ্ধ: আমি তোমায় অনেক জ্বালাই তাইনা?কেন পরে আছো আমার কাছে?চলে যাও।সবাই ঠিকই বলে,আমি পাগল।তোমার বাবা সত্যিই বলে,আমি সত্যিই তোমার জীবনটা শেষ করে দিলাম।
সব রাগ যেন নিমিষে শেষ হয়ে গেলো।তার বদলে মনে ভীড় করলো প্রশ্নেরা।রিদ্ধ হঠাৎ এসব কেন বলছে?বাবা আবার ওকে কিছু বলেছে?রিদ্ধ বিছানা থেকে উঠে যেতে নিলেই তুর্না ওর হাত ধরে আবার বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজে রিদ্ধের বুকে মাথা রাখলো।
তুর্না: কি হয়েছে রিদ?এসব কেন বলছো?
রিদ্ধ: মিথ্যেতো বলিনি।দেখো সারাদিন কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরো অথচ তাও আমি তোমায় জ্বালাচ্ছি।তুমি চলে যাও তুর।নতুন করে জীবন শুরু করো।
তুর্না: তুর্য আর তোমার কি হবে?
রিদ্ধ: আমার তো কোনো পাগলাগারদই শেষ ঠিকানা।আর তুর্যকে হোস্টেলে দিও।তবে মাঝেমাঝে আমার সাথে দেখা করতে এসো।
তুর্না: তোমার বউকে অন্যকেউ ছুলে তোমার ভালোলাগবে?
রিদ্ধ আর নিজেকে সামলাতে পারলোনা।তুর্নাকে জড়িয়ে পাগলের মতোই কাঁদতে লাগলো।তুর্না রিদ্ধের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
তুর্না: আজকে বাবা কল করেছিলো?
রিদ্ধ: হুম(হেচকি তুলে)
তুর্না: কি বললো?
রিদ্ধ: ছেলে খুব ভালো ডাক্তার।ঢাকায় নিজেদের ৩টা বাড়িও আছে।খুব বড়লোক।সবচেয়ে বড়কথা ছেলে মানসিকভাবে সুস্থ,আমার মতো পাগল না।(কিছুক্ষন থেমে)তুর আমিতো ইচ্ছে করে পাগল হইনি বলো?সেদিনের এক্সিডেন্টটা না হলে আমি তো ঠিকই থাকতাম।তোমার আগের রিদ হয়েই তোমায় ভালোবাসতাম।আমার চাকরিটাও চলে গেলো।পঙ্গু হয়ে গেলাম চিরজীবনের জন্য।সব ভার তোমার উপরে।খুব কষ্ট হয় তাইনা?কিন্তু বিশ্বাস করো তুর,আমি তোমায় খুব ভালোবাসি।আমি চাইনা তুমি আমায় ছেড়ে যাও।কিন্তু সেটাতো স্বার্থপরতা হবে।তোমার বাবা ঠিকই বলছে।করে নাও বিয়ে।কিন্তু আমাকে ভুলোনা।(তুর্নাকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো)
তুর্না: ডাক্তারসাহেব?
রিদ্ধ: আমি আর ডাক্তার নেই তুর।
তুর্না: তোমায় সবাই পাগল বলে তাইনা?(রিদ্ধ তুর্নাকে জরিয়ে ধরেই মাথা নারলো।)তোমাকে আবারো কেউ পাগল বললে বলবে তুমি তুর্নার পাগল ডাক্তারসাহেব।আর বলবে পাগলরা মানুষকে কামড়ে দেয় যদি আরেকবারও পাগল বলেন তাহলে আপনাকেও কামড়ে দেবো।বুঝলে?
রিদ্ধ: ওমা!আমি কামড়াবো কেন?(মাথা তুলে)
তুর্না: তুমি জানোনা পাগলরা সবাইকে কামড়ায়?
রিদ্ধ: কিন্তু আমিতো কামড়াই না।
তুর্না: তাহলেই বোঝো,সবাই তোমাকে পাগল বললেই তুমি পাগল হয়ে যাবে?
রিদ্ধ প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তুর্নার দিকে তাকালো।ড্রিমলাইটের আবছা আলোতে তুর্নাকে কেমন রহস্যময়ী লাগছে।
তুর্না: বলো?
রিদ্ধ: সবাইতো বলে-
তুর্না: বলুক না।যদি বেশি ডিস্ট্রাব ফিল করো তাহলে যা শিখিয়ে দিলাম তাই বলবে।আর শোনো,কে কি বললো তা শুনে লাভ নেই।আমি তোমাকে ভালোবাসি মানে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।আর তুমি না আমার হিরো?(রিদ্ধ মাথা নাড়লো)তাহলে কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে কেরে নিতে চাইলেই তাকে ডিসুম ডিসুম করে দিবে।লাইক ওই ডিসুমা,এইই ডিসুমা।
তুর্না অভিনয় করে ঘুসি দেয়া দেখাচ্ছিলো।রিদ্ধ এবার বাচ্চাদের মতো খিলখিল করে হেসে উঠলো।ব্যস আর চিন্তা নেই তুর্নার।রিদ্ধ এবার একটু গল্প করেই চুপ করে ঘুমিয়ে পরবে।
রিদ্ধ: সত্যিই তুর তুমি কি মাইর দিলে।ডিসুমা ডিসুমা,হাহাহা।আমাকেও শিখিও।
তুর্না: আচ্ছা রিদ তোমার মনে আছে একবার এক ছেলে আমাকে লাভলেটার দিয়েছিলো।আমি রিজেক্ট করেছিলাম বলে আমার হাত ধরে জোর করছিলো।আর তুমিতো রেগে ক্যাম্পাসের সবার সামনেই কি উড়াধুড়া মারলে ছেলেটাকে।
রিদ্ধ: আমি?মনে নেইতো।তুর?আমার কি আর কোনোদিনও পুরোনো কথা মনে পরবেনা?
তুর্না: (দীর্ঘশ্বাস ফেলে)পরবে তবে সময় লাগবে।আসলে মাথায় আঘাতটা বেশি লেগেছে তাই।আচ্ছা বাদ দাও এসব।এখন ঘুমিয়ে পরোতো।রিদ?আজ আমি তোমার বুকেই ঘুমাই?
রিদ্ধ: (মুচকি হেসে) কেন নয়?আমার সমস্যা নেই।এসো।
তুর্না চুপ করে রিদ্ধের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলো।রিদ্ধ কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলো।কিন্তু তুর্নার চোখের ঘুম পালিয়েছে।মিথ্যা বলতে ভালোলাগেনা।ডক্টর বলেছে ঠিক হওয়ার চান্স নেই বললেই চলে।বরং আস্তে আস্তে আরো খারাপ অবস্থা হবে।হতে পারে সব ভুলে সম্পূর্ন পাগল হয়ে যাবে।ডাক্তার মেন্টাল হসপিটালে দিতে বলেছে।কিন্তু রিদ্ধ ওসব হাসপাতাল দেখে আরো বেশি পাগলামো শুরু করেছিলো।ডাক্তার বলেছিলো পাগলরা এমন করবেই।সেদিন তুর্না ডাক্তারকে ধমকে রিদকে নিয়ে বাসায় চলে আসে।আস্তে আস্তে সবাই দূরে যেতে শুরু করলো।রিদ্ধের বাবা-মা অনেক আগেই মারা গেছেন।সৎ মায়ের অত্যাচার সহ্য করেও রিদ্ধ টিউশনি পার্টটাইম জব করে চাচার সাহায্যে ডাক্তার হতে পেরেছিলো।খুব খুশি ছিলো রিদ্ধ।
যেদিন রিদ্ধ জানলো ওর স্বপ্ন পূরন হয়েছে,ফাইনালি রিদ্ধ একজন হার্টের ডাক্তারের পরিচয় পেলো সেদিন তুর্নার বাসায় এসে তুর্নাকে কোলে নিয়ে ঘুড়িয়েছে রিদ্ধ। ডাক্তারি সার্টিফিকেট পাওয়ার ১ বছর পরেই তুর্নাকে রিদ্ধ সামাজিকভাবে নিজের করে নিলো।২বছর পরেই তাদের কোলে এলো তুর্য।খুশি যেন রিদ্ধের মুখে ধরছিলোনা।তুর্নাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর রিদ্ধ প্রচুর টেনশনে ছিলো।যখন দেখলো তুর্না সুস্থ আর পাশেই তাদের ভালোবাসার নিশান সেদিন রিদ্ধ খুশিতে ভাসতে লাগলো।পুরো হাসপাতালে মিস্টি বিতরন করলো।কথায় আছে টাকা থাকলে সবাই কদর দেয়।তেমনি রিদ্ধকে যারা সহ্য করতে পারতোনা তারাও রিদ্ধকে চোখে হারায়।সৎ-মা তো রিদ্ধ বলতে জ্ঞান হারায়।সবটাই সুখের ছিলো।এতকিছুর মধ্যেও তুর্নার পড়া বন্ধ করতে দেয়নি রিদ্ধ।তুর্যের যখন ১ বছর তখনি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে মাস্টার্স শেষ করলো তুর্না।কিন্তু রিদ্ধ বলার পরেও চাকরি করলোনা।রিদ্ধও জোর করেনি।
তুর্যর তখন ৪ বছর।প্রতিদিনের মতো আজও সকালের নাস্তা একসাথে করে রিদ্ধ তুর্নার কপালে চুমু দিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো।রিদ্ধের হাসপাতালে যেতে খুব বেশি হলে ১ঘন্টা লাগে।দেখতে দেখতে দের ঘন্টা,দুইঘন্টা পার হয়ে গেলো।তুর্না অস্থির হয়ে পরলো।মনটা খচখচ করছে।।রিদ্ধের মোবাইলটাও বন্ধ।হাসপাতালেও কল করে জানলো রিদ্ধ হাসপাতালে যায়নি।
কিছুক্ষন পরেই একটা আননোন নাম্বার দিয়ে কল এলো।
তুর্না: হ্যালো।
: হ্যালো আপনি তুর্না?
তুর্না: জ্বী।আপনি?
: আমাকে চিনবেন না।আপনি জলদি ***** হাসপাতালে চলে আসুন।
তুর্না: হ হাসপাতাল!কেন?
: আসলে রাস্তায় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে।লোকটার অবস্থা খুব খারাপ।মাথায় খুব বাজেভাবে আঘাত পেয়েছে।এতক্ষন এসব নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম।ওনার মোবাইলটাও বন্ধ হয়ে গুয়েছিলো।আমি অন করে কল লিস্টে প্রথমে আপনার নামটা পেলাম তাই কল দিলাম।প্লিজ জলদি আসুন।রাখছি।
খট করে কেটে গেলো কলটা।তুর্না একজায়গায় স্থির হয়ে বসা।কি বললো লোকটা?ওর ধ্যান ভাঙলো তুর্যর কান্নায়।তুর্যকে কোলে নিয়েই ও হাসপাতালে ছুটলো।এসে রিদ্ধকে দেখে আরেকদফা ধাক্কা খেলো।ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা করেছে কিন্তু টাকা না দিলে অপারেশন করবেনা।ধপ করে আগুন জ্বলে উঠলো তুর্নার মাথায়।ডাক্তারকে রিদ্ধর পরিচয় দিয়ে দ্রুত অপারেশনের ব্যবস্থা করলো।বাবা-মা,শাশুরী,দেওর সবাইকে কল করে জানালো।সবাই এলো।টাকাও জমা দেয়া হয়ে গিয়েছে।অপারেশন থিয়েটারের বাইরে বসে সবাই অপেক্ষা করছে।
৩ ঘন্টা পরে ডাক্তার বের হলো।সবাই ছুটে গেলো তার কাছে।
তুর্না: ডক্টর?রিদ কেমন আছে?ঠিক আছেতো ও?অপারেশন সাক্সেসফুল?
ডক্টর: অপারেশন ঠিকভাবেই হয়েছে।তবে ওনার স্মৃতি থাকবে কিনা বুঝতে পারছিনা।হয়তো বেঁচে যাবে তবে আচরন কেমন থাকবে জানিনা।বলতে পারেন পাগল হয়ে যেতে পারে।আমরা চেষ্টা করেছি বাকিটা উপরওয়ালার হাতে।
বাবা: দেখা করা যাবে কখন?
ডক্টর: ৪৮ ঘন্টা না গেলে কিছু বলা যাচ্ছেনা।আর সবচেয়ে খারাপ হচ্ছে-
তুর্না: কি খারাপ?
ডক্টর: আসলে ওনার এক পা কেটে ফেলতে হয়েছে।খুব বাজেভাবে থেতলে গিয়েছে।মাথার সাথে সাথে পায়ের অবস্থাও খারাপ ছিলো।দুঃখিত।
ডাক্তার চলে যেতেই তুর্না পাশের চেয়ারে থপ করে বসে পরলো।হাত দিয়ে মুখ চেপে রেখেছে।বাবা পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
বাবা: নিজেকে শক্ত কর মা।
তুর্না: ও উঠে যখন দেখবে ওর একটা পা নেই তখন আমি কি বলবো বাবা?ও মানতে পারবে না।ও ও সত্যিই পাগল হয়ে যাবে।ওর স্বপ্নগুলো কিভাবে পূরন হবে বাবা?জানো ও টাকা জমাচ্ছে গরিবদের জন্য হাসপাতাল করবে বলে।আগামি মাস না হলেও তার পরের মাসে কাজ ধরতো।এখন সবটা কে করবে বাবা?তুর্যকে কোলে নিয়ে কে ঘুম পারাবে?বাবা আমি পারছিনা মানতে-
তুর্না আর নিজেকে আটকাতে পারলোনা।বাবাকে জড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো।বাবাও যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।কি বলবে মেয়েটাকে?
দুইদিন পরে রিদ্ধের জ্ঞান ফিরলো।তবে সে চুপ করে থাকতো।কোনো কথা বলতোনা।অনুভূতিশূন্য বলা যায়।কিন্তু যখন দেখলো তার পা নেই তখন পাগলের মতো চিৎকার করে কাঁদলো।রিদ্ধের চাচা আগেই মারা গিয়েছে।বাকি যারা ছিলো তারাও মানেমানে কেটে পরলো।শুধু তুর্না আর ওর মা-বাবাই তখন রিদ্ধের পাশে ছিলো।প্রচন্ড আঘাতে রিদ্ধের মাথা খারাপ হয়ে গেলো।পাগলের মতো আচরন শুরু করলো।ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে রাখতে হতো ওকে।ডাক্তারের কাছে জানতে পারলো রিদ্ধের সুস্থ হওয়ার চেন্স নেই বললেই চলে।তবে যখন রিদ্ধকে পাগল বললো আর পাগলাগারদে পাঠানোর কথা বললো তখন তুর্না রিদ্ধকে বাসায় নিয়ে এলো।
রিদ্ধ ততোদিনে শারীরিকভাবে সুস্থ।তবে মানসিক দিক থেকে স্বাভাবিক করতে তুর্নাকে প্রচুর কষ্ট করতে হয়েছে।নতুন ডাক্তারের সাথে কথা বলে নতুনভাবে রিদ্ধকে ট্রিটমেন্ট করতে শুরু করলো তুর্না।৪ বছরে রিদ্ধ কিছুটা সুস্থ হলেও প্রায়ই পাগলের মতো আচরন করে।কিন্তু মানুষটাতো আছে পাশে।এটাই অনেক তুর্নার কাছে।
–
–
–
সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রত্যেকদিনের মতো কাজগুলো শেষ করে অফিসে গেলো তুর্না।ভাবলো বাবার সাথে কথা বলতে হবে।প্রথম প্রথম বাবা পাশে থাকলেও এখন চান রিদ্ধের সাথে ডিভোর্স নিয়ে তুর্না যেন নতুন করে জীবন শুরু করে।ওনারা তুর্যকে নিজেদের কাছে রাখবে।কিন্তু তুর্না কোনোভাবেই রাজি না।সারাদিন কাজ করে রাত ৮টায় বাড়ি ফিরলো তুর্না।রুমে ঢুকতেই চোখ বড় হয়ে গেলো।বাবা সোফায় বসে।মা বাবার মাথায় বরফ দিচ্ছে।পাশেই তুর্য গালে হাত রেখে বসে আছে।তুর্যও যেন বয়সের তুলনায় বড় হয়ে গিয়েছে।বাবাকে ছোট থেকে এমন দেখলে বাচ্চারা স্বাভাবিক থাকবে?
তুর্না: বাবা?মা?তোমরা এখানে?রিদ কোথায়?তুর্য?
তুর্য: পাপা রুমে।রাস্তার মোরের ডক্টর আংকেল ঘুম পারিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
তুর্না: মানে?ও ঠিক আছে?বাবার কি হয়েছে?
মা: তোর বর তোর বাবার মাথায় ফুলদানি ছুড়ে মেরেছে।
তুর্না: কিহ্?ও এতটা হাইপার কেন হলো?কি বলেছো ওকে?
বাবা: তোর বিয়ের কথা।
তুর্না: তুর্য রুমে যা।আমি না বলা পর্যন্ত বের হবিনা।(তুর্য চলে গেলো) আমি আগেও বলেছি আমি বিয়ে করবোনা।তাছাড়া জানো রিদ আমার বিয়ের কথা মানতে পারবেনা।তাও এসব এখানে এসে না বললে হতোনা?
মা: তাহলে সারাজীবন ওই পাগলের সাথে-
তুর্না: মা(জোরে) ও আমার বর।আমার ভালোখারাপের সঙ্গি।ওর ভালোর সময় আমি ওর পাশে থাকবো আর খারাপের সময় ছুড়ে ফেলবো?আর খবরদার ওকে পাগল বলবেনা।তাহলে আমি খারাপ হতে বাদ্ধ হবো।
বাবা: তুর মা তোর মায়ের কথায় রাগ করিস না।কিন্তু তুর্যরও তো ভবিষ্যৎ আছে।
তুর্না: মা?এত ভালোবাসা লাগবেনা আমার।কে কত ভালোবাসে জানি।আর তুর্যের জন্য ওর মা একাই যথেষ্ট।যাকগে পরশু আমি রিদ আর তুর্যকে নিয়ে লন্ডন যাচ্ছি।ডক্টর সেন ওখানের একজন ডক্টরকে রেফার করেছে।সেখানে নিয়ে রিদের চিকিৎসা করাবো।আই হোপ ও সুস্থ হবে।
মা: পা তো আর-
তুর্না: কৃত্রিম পা লাগানো যায় তাই সেটা নিয়ে তোমার ভাবতে হবেনা।আমার কাছে রিদের সুস্থ হওয়া আগে।বসো।আমি ফ্রেশ হয়ে খেতে দিচ্ছি।
বাবা: খাবোনা মা।বাসায় যাবো।দেরি হয়ে যাবে নইলে।
তুর্না: খাবার প্যাক করে দিচ্ছি তাহলে।আর একটা কথা,কেউ রিদের সাথে কোনোভাবে কথা বলার চেষ্টা করবেনা।এটা আমার অনুরোধ।
তুর্না চলে যেতেই ওর বাবা-মা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
মা: এই ছেলে কি জাদু করেছে কি জানি।শেষমেষ আমার মেয়েটাকে এই পাগলের সাথে থাকতে হবে?
বাবা: চুপ করো তাহা।বারবার পাগল পাগল বলে মেয়েটাকে কষ্ট না দিলে তোমার হয়না তাইনা?আর তুমি যে কেন ওদের আলাদা করতে চাইছো তা আমি বুঝিনা ভেবেছো?ওই ছেলেপক্ষ তোমাকে টাকার লোভ দেখিয়েছে তা আমি জানি।এমনে তো তুরকে সহ্য করতে পারতেনা।এখন এত ভালোবাসা উথলে পরছে।কি বলোতো,সৎমা সৎমাই থাকে।আর একবার রিদ্ধকে পাগল বললে আমার বাড়িতে তোমার জায়গা আর হবেনা।এটা মাথায় ভালোকরে ঢুকিয়ে নাও।
–
–
–
তুর্না দরজা খুলে দেখলো রিদ্ধ ঘাটে ঘুমিয়ে আছে।তুর্না দরজা আটকে রিদ্ধের পাশে যেয়ে ওর গালটায় আলতো করে ঠোট ছোয়ালো।ঘুমন্ত রিদ্ধকে ভীষন মায়াবি লাগছে।তুর্না ফ্রেশ হয়ে বাবা-মাকে খাবার প্যাক করে দিলো।তারা চলর যেতেই তুর্যকে খেতে ডাকলো।তুর্য ভদ্র ছেলের মতো খেতে বসলো।
তুর্না: তুর্য?
তুর্য: জ্বী মা?
: তোর পাপাকে কি তোর ভালোলাগেনা?
: কেন ভালোলাগবেনা মা?পাপা আমার কাছে বেস্ট।
: এইযে তোর পাপাকে সবাই পাগল বলে?
: স্যরি মা তবে আজ তোমার মাকে আমি ধমকে কথা বলেছি।উনি খালি পাপাকে পাগল বলে।আর এসেই তোমার বিয়েবিয়ে শুরু করেছে।আমাকে বলে আমি নাকি তোমার বোঝা।মা?সত্যিই আমি তোমার বোঝা?
তুর্যের কথায় তুর্না তুর্যকে বুকে আগলে কেঁদে ফেললো।
তুর্য: কেঁদোনা মা।
তুর্না: স্যরি বাবা।তোকে আজ কষ্ট পেতে হয়েছে।তুই আমার বোঝা না বাবা।তুই আর তোর পাপাইতো আমার সব।প্লিজ তোর মাকে ভুল বুঝিসনা।
তুর্য নিজেকে ছাড়িয়ে মায়ের চোখ মুছে দিলো।
তুর্য: ধুর মা ভুল বুঝবো কেন?আমি জানি আমার মা বেস্ট মা।শুধু তোমার ওই কুচুটে বুড়ি মাকে আমার সহ্য হয়না।তুমিতো আমার লক্ষি মা।দেখি এবার কান্না থামাও।ইস্ মা কাঁদলে তোমায় একদম পঁচা লাগে।পাপাযে কি দেখে বিয়ে করলো।আহারে দেখি পাপাকে আবার বিয়ে দেয়া যায় কিনা।
তুর্না হেসে তুর্যর কান ধরলো।
তুর্না: তাই না?খুব শখ পাপার বিয়ে দেয়ার।আজ তোর কান ছিরে দিবো।
তুর্য: আহ্ মা ছাড়োগো।ব্যথা লাগছে।আআআ।
তুর্না: এত জোরেও ধরিনি।হুহ(কান ছেড়ে)।খেয়ে নে।
তুর্য: মা?
তুর্না: মা?আজকে একটু খাইয়ে দেবে?পারবোনা বাবা।তোমার নতুন মাকেই বলো।
তুর্য: হ্যা হ্যা পাপাকেই খাইয়ে দাও।ইস্ পাপাকে হিংসে হয় মাঝেমাঝে।
তুর্না: উহ্ পাপাকে হিংসে হয় মাঝেমাঝে।হিংসুটে একটা।
তুর্না ভাত মেখে তুর্যকে খাইয়ে দিচ্ছে।
তুর্না: লন্ডন যাবি?
তুর্য: নতুন মা খুজতে?
তুর্না: দিবো একটা থাপ্পর।পরশু আমরা সবাই যাবো।তোর পাপার চিকিৎসার জন্য।তোর ব্যাগ গুছিয়ে নিস।আমি কালকে তোর সাথে যেয়ে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে নিবো।
তুর্য: সত্যিই মা?তাহলে তুমি বরং যাওয়ার আগে আমার ব্যাগটা দেখে নিও।
তুর্না: হুম।নে খাওয়া শেষ।আজকের পড়া কমপ্লিট?
তুর্য: হুম শেষ।দুপুরে খেয়েই শেষ করে ফেলেছি।
তুর্না: আচ্ছা তাহলে মুখ ধুয়ে ঘুমিয়ে পর।আমি তোর পাপাকে উঠিয়ে খাইয়ে দেই।
তুর্য: ওকে,লাভ ইউ মা।
তুর্না: লাভ ইউ বাবা।
তুর্য চলে যাওয়ার পরে তুর্না রিদ্ধকে আস্তে আস্তে ঘুম থেকে তুললো।প্রথমে পাগলামি করলেও তুর্না সবটা সামলে নিলো।রিদ্ধকে রাতের খাবার আর ঔষধ খাইয়ে নিজেও খেয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
–
–
–
দেখতে দেখতে ফ্লাইটের সময় এগিয়ে এলো।এয়ারপোর্টে তুর্নার বাবা ছাড়া আর কেউ আসেনি।রিদ্ধের এক্সিডেন্টের পরে তুর্না খুব ভালোভাবে বুঝে গিয়েছে স্বার্থ ছাড়া কেউ কারো না।প্রথমে প্লেনে উঠতে রিদ্ধ ভয় পেলেও তুর্না আর তুর্য বুঝিয়ে রিদ্ধকে উঠালো।নিজের ছেলের জন্য গর্ব হয় তুর্নার।ছেলেটা তার ভীষন ভালো।
লন্ডনে এসে রিদ্ধকে হাসপাতালে এডমিট করা হলো।তুর্না আর তুর্যও রিদ্ধের কাছেই থাকে।কয়েকটা টেস্ট করে অপারেশন করানো হলো।প্রায় ৭ মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরে তুর্না সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরলো।আজও বাবাই দাড়িয়ে আছে।ওদের দেখে তুর্নার বাবার মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো।সবাই যেয়ে তাকে সালাম করলো।উনিও সবাইকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।
বাবা: তো ইয়াংম্যান?কেমন আছো বলো।
রিদ্ধ: আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আর যার সাথে তুর্না আছে সে খারাপ থাকে কি করে?আপনি কেমন আছেন বাবা?
বাবা: খুব খুব ভালো।তোমাদের দেখে আরো ভালো হয়ে গিয়েছি।তুর মা?বাসায় চল।
তুর্না: আমাদের বাসায়তেই যাবো বাবা।লতাকে কল করে বলেছিলাম বাসা পরিস্কার করতে।ও করে রেখেছে।
বাবা: এখনো রেগে থাকবি?
তুর্না: রেগে নেই বাবা।যাবো পরে।এখন প্রচুর টায়ার্ড তাই বাসায়ই যাবো।এসব ব্যাগ নিয়ে টানাটানি ভালোলাগেনা।চলো গাড়িতে উঠি।
তুর্নার কথাই সবাই মেনে নিলো।৭ মাস পর আবারো সেই পরিচিত ঘর,বিছানা,বারান্দা।সবটাই তুর্নার আপন।সাথে তার ভালোবাসার মানুষ।আর কি চাই।লতা রান্নাও করে রেখেছে।তাই এসে ফ্রেশ হয়ে খেয়েই লম্বা ঘুম দিলো সবাই।
রাতে রিদ্ধের ডাকে ঘুম ভাঙলো তুর্নার।চোখ মেলেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো তুর্না।সামনে রিদ্ধ আর তুর্য কেক হাতে দাড়িয়ে।পাশেই বাবা বড় একটা গিটার নিয়ে দাড়িয়ে আছে।ঘটনার বিস্ময়তায় তুর্না হা হয়ে গেলো।
রিদ্ধ: কি ম্যাডাম?চমকে দিলাম তো?
তুর্য: হ্যাপি বার্থ ডে মা।
বাবা: তোর পছন্দের গিটারও এনেছি দেখ।
রিদ্ধ: আরে মুখটা বন্ধ করো।মশা ঢুকবেতো।
রিদ্ধ কেকটা টেবিলে রেখে তুর্নাকে খাট থেকে নামালো।
রিদ্ধ: নিন কেকটা কাটুন ম্যাম।
তুর্না: হ্যা?
তুর্য: ও মা?কেকটা কাটোতো আগে।ক্ষুধা লেগেছেতো।আচ্ছা মা প্রথম বাইটটা পাপাকে দিবে নাকি আমাকে?
তুর্না মুচকি হেসে কেকটা কেটে নিজের বাবার মুখে তুলে দিলো।
তুর্না: প্রথম বাইট আমার বাবা পাবে।
তুর্য: এটা ঠিক না।দাদুও এখন আমার আদরে ভাগ বসাচ্ছে।
তুর্যের মুখ ফুলানো দেখে সবাই হেসে দিলো।তুর্না একপিস কেক নিয়ে তুর্যকে খাইয়ে দিয়ে ওর নাকে ক্রিম মেখে দিলো।তারপর রিদ্ধকে খাইয়ে দিলো।কেকের পর্ব শেষ হতেই সবাই ডাইনিংয়ে এলো।তুর্নার নাকে সেই পরিচিত খাবারের গন্ধ ভেষে এলো যা ও ৫ বছর আগে পেতো।টেবিলে তাকাতেই সাদা পোলাও,মুরগির রোস্ট,খাসির রেজালা,মাংসের চপ আর বোরহানি দেখতে পেলো তুর্না।।ও অবাক হয়ে রিদ্ধের দিকে তাকালো।রিদ্ধ মুচকি হেসে তুর্নাকে চেয়ারে বসিয়ে খাবার পরিবেশন করতে শুরু করলো।
রিদ্ধ: সো মিসেস আরহান রিদ্ধ?টেস্ট করে বলুনতো ৫ বছরে পাল্টেছে কিনা।
তুর্নার চোখ থেকে পানি পরতে লাগলো।ও এসব কল্পনাও করতে পারেনি।রিদ্ধ তুর্নাকে কাঁদতে দেখে অস্থির হয়ে পরলো।
রিদ্ধ: কি হলো তুর?খারাপ লাগছে?কি সমস্যা বলো।
তুর্না উঠে রিদ্ধকে জড়িয়ে ধরলো।রিদ্ধ হকচকিয়ে গেলো।তুর্য আর বাবা মুচকি হাসছে।
তুর্না: আমি ভাবতেই পারিনি এসব তুমি করবে।আমার এতদিনের কষ্ট সার্থক হলো।অনেক ধন্যবাদ রিদ।আই লাভ ইউ সো মাচ।
বাবার কাশিতে তুর্নার খেয়াল হলো ও কি করছে।তৎক্ষনাত রিদকে ছেড়ে ছিটকে সরে গেলো।
তুর্না: ত তোমরা খাও আমি মুখ ধুয়ে আসছি।
তুর্না চলে যেতেই ছোটখাটো হাসির রোল পরলো।রিদ্ধ সবাইকে খাবার বেরে দিয়ে নিজেও বসে পরলো।তুর্না এলে সবাই একসাথে খেয়ে নিলো।
–
–
–
অনেকটা সময় ঘুমানোর ফলে এখন আর ঘুম আসছেনা তুর্নার।তবে হঠাৎই মাথা ব্যথা করছে।তাই আড্ডা থেকে উঠে বারান্দার দোলনায় বসে রইলো।কিছুক্ষন পরে নিজের পাশে কাউকে অনুভব করতেই দেখলো রিদ্ধ কফির মগ নিয়ে বসে আছে।একমগ কফি ও তুর্নার দিকে এগিয়ে দিলো।
রিদ্ধ: খেয়ে নাও মাথা ব্যথা ঠিক হয়ে যাবে।
তুর্না মগে চুমুক দিলো।
রিদ্ধ: তুমি খুশি হয়েছো?
তুর্না: অনেক খুশি হয়েছি।ধন্যবাদ এত সুন্দর সময় দেয়ার জন্য।
রিদ্ধ: আই লাভ ইউ টু।
তুর্না: হ্যা?
: তুমি তখন সবার সামনে জড়িয়ে ধরে বললে না?এখন রিপ্লাই দিলাম।
: ধুর।তখন যে কি হয়েছিলো।
: যাই হোক আমি কিন্তু মজা পেয়েছি।
: লুচুযে তুমি।
: আমি!!
: জ্বী আপনি।
: তাই নাকি?তাহলে একটু লুচুগিরি করি?
: এইএই একদম ফাজলামো করবেনা।
রিদ্ধ জোরে হেসে দিলো।
রিদ্ধ: ভালোবাসি তুর।ভীষন ভালোবাসি তোমায়।তুমি আমার জীবনে না থাকলে এতদিনে হয়তো আমি শেষ হয়ে যেতাম।ইউ আর দা বেস্ট।লাভ ইউ তুর।(একহাতে তুর্নাকে জড়িয়ে ধরে)
তুর্না: ভালোবাসি বলেই ছেড়ে যেতে পারিনি রিদ।তুমি যেমনি থাকো তুমি আমারই।
রিদ্ধ: হুম রিদ তার তুরেরই।
কফি শেষ করে মগ পাশে রেখেই রিদ্ধে বুকে মাথা রাখলো তুর্না।
রিদ্ধ: জানো আমি খুব লাকি তোমাকে পেয়ে।আল্লাহ্র কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া যে উনি তোমাকে আমার জীবনে এনেছেন।আমি জানি আমি এখনো সম্পূর্ন সুস্থ না তবে আমি তোমাকে আর কষ্ট পেতে দিবোনা তুর।নিজের সবটা দিয়ে তোমাকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো।
তুর্না: তোমার ভালোবাসাই আমাকে আটকে রেখেছে রিদ।তুমি অসুস্থ অবস্থায়ও তুর তুর করতে।প্রতিদিন ভালোবাসি বলতে ভুলতে না।আমার কষ্ট হবে ভেবে তুর্যকে নিজে রেডি করাতে।এমন একজন ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে কিভাবে থাকতাম আমি?
রিদ্ধ তুর্নার কপালে চুমু দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।তুর্নাও ওকে জড়িয়ে ধরলো।
রিদ্ধ: ভালোবাসি তুর।
তুর্না: আমিও ভালোবাসি আমার তুর পাগল ডাক্তার সাহেবকে
তুর্নায় কথায় রিদ্ধ হেসে ফেললো।তুর্নাও খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।চাঁদের আলোয় দুজন বসে চন্দ্রবিলাস করলো।
__________________সমাপ্ত__________________