Crush Villain,পর্ব ১৬,১৭

Crush Villain,পর্ব ১৬,১৭
লাবিবা ওয়াহিদ
পর্ব ১৬

আয়াফকে দেখে আমি থ! এই ছেলেটা কি তার সৌন্দর্য দিয়ে খুন করতে নেমেছি নাকি ভাই? আয়াফও আজ সানিয়াকে দেখছে। দুজনের যেনো চোখে চোখে কথা হচ্ছে। জোহানের হাত দিয়ে ঠ্যালা দেয়ায় আমার ধ্যান ভাঙে এবং নিচে জোহানের দিকে তাকাই। জোহান বলে,”আপু এই ভাইয়াটা কে?”

আমি একবার আয়াফের দিকে তাকালাম। তারপর চোখ নামিয়ে বলি,”আজকে ওনার পার্টিতেই আমরা এটেন্ড করেছি।”

– ওওওওহ।

বলেই “ও” এর মতো মুখ করে আয়াফের দিকে তাকিয়ে থাকে। আয়াফ ভ্রু কুচকে জোহানের দিকে তাকিয়ে রয় তারপর হাটু গেড়ে বসে বলে,”তোমার নাম কি?”

– আমি জোহান সারফারাজ আর তুমি?

– আমি আয়াফ জুরাইজ।

– ওওওও আচ্ছা তোমাকে দেখে আমার একটা গান মনে পরলো বলবো?

আয়াফ হেসে বলে,”বলো আমিও শুনি!”

জোহান গলা পরিষ্কার করে বলে,”এহেম এহেম তাহলে শুরু করি আ…..উমমমমম উমমম”

বলেই জোহান হাত পা ছুড়াছুড়ি করছে আমার হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য। আমি চোখ গরম করে বলি,”তোরে তোর হিরো আলমের চাইনিজ ভার্সন গান শুনাইতে আনিনাই। আরেকবার উল্টা পাল্টা গান গাওয়ার কথা যদি উচ্চারণও করিস তাহলে তোরে আমি ভ্যানে করে বাসায় ফেলে আসবো বেদ্দপ পোলা!”

জোহান সাথে সাথে চুপ হয়ে যায়। আয়াফ চোখ বড় বড় করে জোহান আর সানিয়াকে দেখছে। আয়াফ উঠে দাঁড়িয়ে বলে,”তুমি ওর সাথে এমন ব্যবহার কেন করলে? ও তোমার কি হয়?”

আমি অন্যদিকে ফিরে বলি,”আমার ছোট ত্যাড়া ভাই!”

আয়াফ ভ্রু কুচকে আবার জোহানের দিকে তাকায়। জোহান এখন শান্ত বাচ্চাদের মতো চুপটি করে আছে যেনো সে কিছুই জানে না বুঝে না। আয়াফ হেসে আমার হাত থেকে জোহানের হাত নিয়ে জোহানকে নিয়ে যেতে যেতে বলে,”ওকে আমি আমার কাছে রাখলাম তুমি অন্যদিকে যাও।”

জোহান দাঁত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ গরম করে ইশারায় বললাম যেনো কোনোরকম গরবোর না করে। জোহান সেটা বুঝে চোখ দিয়ে আশ্বাস দেয়। আমি আর পারিনা মা যে কেন এই ঝামেলাটারে আমার ঘাড়ে চাপায় দিসে ধুর।

ভেবেই পাশে রুহিকে কিছু বলতে যাবো কিন্তু একি গায়েব। রুহি আগেই পার্টির ডান্স সাইডে গিয়ে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে। আমি এবার রোজা আর আলিজার দিকে তাকালাম। রোজা একা নিশি আপুর পাশে বসে গল্প করসে আর ড্রিংক করছে। আলিজাকে দেখলাম না কই গেলো?

– আলিজা একটা কথা বলি?

– হ্যাঁ বলো নীল এমন আমতা আমতা করছো কেন?

– একচুয়ালি হয়েছে কি..

– হুম?

– আ… আ…

– আরে কি আ আ করছো যা বলার ডাইরেক্টলি বলো।

– একচুয়ালি আই লাভ ইউ!(চোখ বুজে অন্যদিকে ফিরে)

আলিজা যেনো থম মেরে গেলো। সে যেনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না! আলিজা বিস্ময়ের সাথে বলে,”আ… আ… আর ইউ সিরিয়াস নীল?”

– ড্যাম…

– কতোটা ভালোবাসো?

নীল আলিজার এমন কথায় চমকে উঠলেও নিজেকে সামলে বলা শুরু করে,”যেদিন তোমায় প্রথম ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকতে দেখেছিলাম তখনই তোমার সেই মন কাড়া হাসির প্রেমে পরেছি। সেই থেকেই তোমার আশেপাশে থাকতে চেষ্টা করেছি তোমার বন্ধু হয়ে উঠলাম। তুমি আমি দুজন-দুজনার কথা শেয়ার করতাম। সত্যি বলি তখন নিজেকে একজন ভাগ্যবান মনে হতো যে আমারই ভালোবাসার মানুষটা আমারই পাশে আমার সাথেই প্রাণ খুলে কথা বলে। তোমাকে নিয়ে হুট করে ঘুরতে যাওয়া হুট করে দেখা করা যেনো অভ্যাসে পরিণত হয়। জানিনা আমি কিসব বলছি তবে তোমায় দেখলে মনে মাঝে এক সুখ খেলে যায়, তোমায় দেখলে নতুন দিনের আনন্দে ভরা একটা দিন খুঁজে পাই, তোমার মাঝে আছে আমার হাজারো সুখের স্মৃতি। ভালোবাসি আলিজা, বড্ড ভালোবাসি তোমায়। তুমি কি আমার হবে?”

বলতে বলতেই নীল হাঁটু গেড়ে বসলো। এসব শুনে আলিজার অজান্তেই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরলো। এটা দুঃখের নয় সুখের জল। নীল নিজের হাত বাড়িয়ে বলে,”উইল ইউ বি মাই….”

আলিজা নীলের হাতে হাত রেখে মাথা নাড়ায়। নীল উঠে দাঁড়িয়ে আলিজাকে জড়িয়ে ধরে। আলিজাও সমান তালে তাল মেলায়।

– আচ্ছা জোহান একটা কথা বলো তো!

– হুম ভাইয়া বলো।

– তোমার আপু কেমন মানে ওর কি কোনো ছেলে ফ্রেন্ড অথবা বয়ফ্রেন্ড আছে?

– নাহ। আপু এসব পছন্দই করেনা। আর আলিজা আপুকে ছাড়া আপুর কোনো ফ্রেন্ড আছে বলে মনে হয়না।

– ওহ আচ্ছা। তা চিটাগং কি তোমার আপুর কেউ থাকে?

– আপুর কেউ থাকতে যাবে কেন চট্টগ্রাম তো আমাদের নানুরবাড়ি।

আয়াফ যেনো শকড। তাহলে এতোদিন ভুল ভেবেছিলো কিন্তু ওই ছেলেটা কে ছিলো যদি না সানিয়ার বয়ফ্রেন্ড অথবা ফ্রেন্ড না থাকে? আয়াফ ভ্রু কুচকে বলে,”তুমি শিওর তো তোমার আপুর নেগেটিভ কিছু নেই?”

– আমি ১০৯% শিওর। আমি তো লুকিয়ে লুকিয়ে ওর ফোন অনেক ধরি। যদি সেরকম কিছু হতো তাহলে এই জোহান ডিটেকটিভ কিছু না কিছু ক্লু পেতো।

আয়াফ হাসে। জোহান আবার বলে,”কিন্তু….”

– কিন্তু?(ভ্রু কুচকে)

– আপুর একটা ক্রাশ আছে।

– কে?(ভ্রু কুচকে)

– নামটা মনে নেই তবে হ্যাঁ “A” দিয়ে তার নাম আর চেহারা প্রায় তোমার মতোই!

আয়াফ যেনো থম মেরে গেলো। কি বলছে কি জোহান? রিয়েলি-ই কি সানিয়া তাকে ক্রাশ মনে করে? এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ তার তিনয়ের দিকে চোখ গেলো। তিনয় দূরে কার দিকে যেনো চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে। আয়াফ তিনয়ের দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিকে তাকায় এবং দেখে রুহি। তিনয় বলেছিলো যে রুহি সানিয়ার কাজিন। তাই সেই তাকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বলতে পারবে। আয়াফ জোহানকে যাহিরের কাছে বসিয়ে রেখে রুহির কাছে গেলো। রুহি তখন ওয়াইনের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলো সে খাবে নাকি খাবে না। এমন সময়ই পিছে থেকে কেউ বলে উঠে,”হাই!”

রুহি সাথে সাথে পিছে ফিরে তাকায় এবং আয়াফকে দেখে দাঁত কেলিয়ে বলে,”হ্যালো।”

– উমমম… তোমার থেকে কিছু জানতে চাই।

– ইয়াহ আফ কর্স বলুন।

– একচুয়ালি সানিয়ার ক্রাশ কে তা কি তুমি জানো?

রুহি কোনোরকম কিছু না ভেবেই বলে দিলো,”ওর ক্রাশ তো আপনি। আমি আপনার দিকে নজর দিয়েছিলাম বলে আজ আমায় অনেকক্ষণ শাসিয়েছে। বলে আপনি নাকি তার ক্রাশ ভিলেইন। আপনার সাথে নাকি ওর ঝগড়া করতে ভালো লাগে আবার আপনি-ই নাকি ওর সাথে সেধে ঝগড়া করতে আসেন!”

আয়াফ মৃদ্যু হাসে তারপর বলে,”এই ওয়াইন টা খেতে পারো এটা নেশা ধরাবে না!”

বলেই আয়াফ চলে গেলো। রুহি থ মেরে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগে এটা কি হলো যাইহোক যেহেতু বলেছে এটা নেশা ধরাবে না খেয়েই দেখি না কেমন লাগে ইশশশ এতোদিনের ইচ্ছেটা পূরণ হতে চলেছে।

আমি দূর থেকে দেখলাম আয়াফ আর রুহি হেসে হেসে কথা বলছে। এহহ হাসি যেনো উতলায় পরে। রুহির সাথে এতো হেসে হেসে কথা বলার কারণ কি বুঝিনা। কই আমার সাথে তো কোনোদিন হেসে কথা বললো না। আমাকে দেখলেই যেনো তার রাগ আসমানে উঠে যায় হুহ! পার্টিতে যে কেন আসলাম ধুর সবাই তো সবার মতো বিজি।

আয়াফ মুখ টিপে হাসছে এই ভেবে যে সানিয়া তাকে # ক্রাশ ভিলেইন বলেছে। এরপর থেকে নাহয় তার ভিলেনি রূপ দেখাবে তখন ভিলেইন কাকে বলে তা প্রকারভেদ সহ বুঝিয়ে দেবে এখন শুধু জোহানের ক্লোজ হতে হবে। ভেবেই আবার আয়াফ জোহানের কাছেই চলে গেলো। এদিকে তিনয় সাহস করে রুহির সাথে কথা বললো,”হ্যালো মিস!”

রুহি পিছে ফিরে তাকায় কিমতু চিনতে পারেনা। স্বাভাবিক ভাবেই বলে,”ইয়েস?”

– ক্যান আই?(রুহির পাশের সিটে ইশারা করে)

– ই..ইয়াহ শিওর!

রুহির অনুমতি পেতেই তিনয় রুহির পাশে বসে। তিনয় বলে,”আমাকে চিনেছো?”

তিনয়ের মাথা থেকে পা অব্দি দেখে ভাবলো খারাপ না। তারপর মলিন কন্ঠে উত্তর দেয়,”জ্বী না!”

– আমি আয়াফের ফ্রেন্ড। আয়াফকে চিনেছো তো?

– ওওওহ হুম চিনলাম। আসলেই কেমন চেনা চেনা লাগছিলো আপনাকে কিন্তু কোথায় দেখেছি মনে পরছিলো না।(হেসে)

– ওহ যাক ভালো তাহলে।

– তা আমার কাছে কি মনে করে?

তিনয় আমতা আমতা করে বলে,”ইয়ে মানে আসলে আমি পরিচিত হতে আসলাম।”

– ওহ হাই আমি রুহি।

– আমি তিনয়।(বাকা হেসে)

– নামটা সুন্দর।

– তোমার টাও।

রুহি হেসে দেয় সাথে তিনয়ও তাল মেলায়। তিনয় হাসি থামিয়ে রুহির হারের ওয়াইনের গ্লাসটার দিকে তাকিয়ে বলে,”রেগুলার?”

রুহি তিনয়ের দৃষ্টি অনুসরণ করে হাতের দিকে তাকিয়ে বলে,”এই না না এই ফাস্ট টাইম ট্রাই করলাম!”

– ওহ তো ফাস্ট টাইম ট্রাই করে কেমন লাগলো?

– তিতা!(ইয়াক মার্কা ফেস করে)

তিনয় হেসে দেয়। এরপর আরও কিছুক্ষণ দুজন মনখুলে কথা বললো।

– যাহির মানিশা কইরে… সেই ভার্সিটিতে দেখেছিলাম এখনো খবর নেই।

– আমিও জানিনা ফোন দিলাম রিসিভ করে বললো আসছে জ্যামে নাকি আটকে আছে।

– ওহ তাই বলে এতো লেট?

আয়াফের কথার মাঝেই মানিশা হাজির হলো সাথে আবরার। যাহির সামনে তাকিয়ে বলে,”ওই দেখ চলে আসছে।”

যাহির আবরারকে খেয়াল করেনি। আয়াফ, যাহির মানিশার সামনে আসতেই আবরারকে পাশে খেয়াল করলো আর আবরারের এই নতুন রূপ দেখে আয়াফ, যাহির দুজনেই শকড! আবরার ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে আর শিস বাজাচ্ছে আস্তে ধীরে।

যাহির আয়াফের কানে ফিসফিসিয়ে বলে,”দোস্ত লম্বা ফতুয়াওয়ালা হিরো সাজে ভাবা যায় এগ্লা?”

– কিছুক্ষণের জন্য মুখটা অফ রাখ!

যাহির আর কিছু বললো না। আয়াফ বলে,”মানিশা কোথায় ছিলি তুই আর আবরার এতো কেন করলি?”

– সরি একটু লেট হয়ে গেলো।

– ওকে ওকে দেন… তোরা ওদিকে গিয়ে বস।

আবরার চলে গেলেও মানিশাকে যাহির আটকালো।

– মানিশা! আবরার তোর সাথে তাও এই লুকে হাউ?(অবাক হয়ে)

– পরে খুলে বলবো আগে আবরারের পিছনের রহস্যটা জানতে হবে।

– রহস্য মানে কি?

– তোর এই ছোট মাথায় ঢুকবে না নিজের চরকায় তেল দে।

বলেই যেতে নিলে নিশির সাথে দেখা হয়ে যায়। রোজা যায় সানিয়ার কাছে। সানিয়া তখন মুড অফ করে বসে ছিলো।

– কিরে এখানে একা বসে আছিস কেন?

– তো কি করতাম? তোরা তো সবাই নিজেদের কাজে বিজি তোদের কি আমায় চোখে পরে?

– আরে কিযে বলিস না! আসলে নিশি আপুর সাথে কথা বলার সময় তোর কথা মনেই ছিলো না যাইহোক আলিজা কই?

– আমি কি জানি কোথায় হাওয়া হয়ে গেছে।

তখনই নীলের সাথে আলিজা চলে আসে। হঠাৎ কেউ আয়াফকে উদ্দেশ্য করে বলে,”পার্টিতে আয়াফের গান ছাড়া কিছু না কিছু মিসিং লাগে সো আয়াফ লেট’স স্টার্ট!”

আয়াফ আজ দ্বিমত করলো না কারণ আজ সে ভিষণ খুশি! সে আজ প্রাণখুলে গাইবে। আয়াফ গান গাইবে শুনে আমার মনে ঘন্টা বাজলো! তাড়াতাড়ি আয়াফের প্রায় সামনের একটা সিটে গিয়ে বসলাম। এতোক্ষণে সকলেই চলে এসেছে। আয়াফ গিটারে টোন দিতে দিতে সানিয়ার দিকে তাকায় তারপর একটা টেডি স্মাইল দিয়ে শুরু করে,

“টালমাটাল, মনটা কিছু তোমায় বলতে চায়
বেসামাল, ভাবনাগুলো তোমায় ছুঁতে চায়
টালমাটাল, মনটা কিছু তোমায় বলতে চায়

বেসামাল, ভাবনাগুলো তোমায় ছুঁতে চায়….
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়

না লেখা চিঠিগুলো মন পাহারায়,,,,

আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়
আমি শুধু চেয়েছি তোমায়!””

বলেই আয়াফ থামলো। সকলে জোরে চিল্লিয়ে উঠে আর কড়াতালিতে মেতে উঠে। সানিয়াও জোরে জোরে হাততালি দিচ্ছে। আরেকজন বলে উঠে যেনো একটা পার্টি সং গায়। আয়াফও তাই করলো। শুরু করলো,bada

Haan kar dena chhoti moti ghaltion ko maaf
Itna sa bas ehsaan kar de
Kar dena chhoti moti ghaltion ko maaf
Itna sa bas ehsaan kar de

Tu jo hai naraaz meri saansein na chalein
Maan ja tu jeena yeh aasan kar de

Tu khol mere dil ko aur lele talaashi
Koyi bhi milega na tere siwa tere siwa…”

আয়াফ সাথে সাথে থেমে গেলো এবং সকলের উদ্দেশ্যে বললো,”এই গানটাতে আমার সাথে আরেকজনকে গাইতে হবে আর সে হলো সানিয়া ইবনাথ!”

আমি যেনো শকড! আমি কেন গাইতে যাবো প্রশ্ন করলাম! তখন আয়াফ বলে,”কারণ তুমি সেকেন্ড হয়েছো সেই হিসেবে এটা সকলের ট্রিট হিসেবে প্রাপ্য। এম আই রাইট গাইস?(চিল্লিয়ে)”

সকলে “ইয়েস” বলে উঠে। তাই আমার আর কি করার আমি বাধ্য হয়ে রাজি হলাম। আয়াফ টেডি স্মাইল দিয়ে আবার শুরু করে,,

“Teri aankhon mein dikhta jo pyar mujhe
Meri aankhon mein bhi tujhe dikhta hai kyaa(2)”

আয়াফ গিটার বাজাচ্ছে আর আমি চোখ বুজে পরের লাইনগুলো মনে করার চেষ্টা করছি কারণ এই টোন শেষে আমার পালা।

“Bhar ke rakhti hoon jebein
Main main dil ki apni
Bol kitna tu maange udhaaar…

Jo main pyasa ke boondi tu maang to sahi
Bol kitna tu maangega pyaaar…

Baitha hai gussa teri naak pe aise
Thok diya tujhko maine chhod diya jaise
Mar ke bhi chhodun na tu manega kaise”

এবার আয়াফ তাল মিলিয়ে শুরু করে,,,

“Nikaal na zubaan se aise marne ki baat

Pyar aisa karunga
Ke tu degi shabashi
Misaal main dunga
Apne pyar ki badaa…”

এই পুরোটা লাইন আয়াফ গভীর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলেছে আর আমি যেনো বরফ হয়ে গেলাম।

“Teri aankhon mein dikhta jo pyar mujhe
Meri aankhon mein bhi tujhe dikhta hai kyaa..(2)

Ishq ko odh lein sab hadein tod de
Aaj donon mil ke ik naye rishte ko jod dein
Ishq ko odh lein sab hadein tod de
Aaj donon mil ke ik naye rishte ko jod dein”

সানিয়া আনমনে শুরু করে,,

“Tu bole na mujhe kuchh
Aur main sunti rahun
Aise pyar karte karte
Duniya ko chhod doon….”

তারপর দুইজন একসাথে গায়,,,

“Teri aankhon mein dikhta jo pyar mujhe
Meri aankhon mein bhi tujhe dikhta hai kyaaa(2)”

গান শেষ হতেই সবাই কড়াতালি দেয়। কড়তালির আওয়াজে সানিয়া আর আয়াফের ধ্যান ভাঙে।

অবশেষে পার্ট শেষ হতেই সকলে যে যার বাসায় ফিরে এবং তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও যায়। এতো ক্লান্তির কারণে শুতেই ঘুমিয়ে পরে।

চলবে!!!

Crush Villain
লাবিবা ওয়াহিদ
পর্ব ১৭

কলিংবেলের আওয়াজে মিসেস শেখর দরজা খুলে এবং দেখে আবরার এসেছে। তিনি মুহূর্তেই চরম রেগে যায় এবং একপ্রকার খেঁখিয়ে উঠে বলে,”নবাবপুত্র তাহলে আসছেন? তা রাত-বিরাত কোথায় মেলা করে বেড়ান?”

আবরার কিছু না বলে মিসেস শেখরের পাশ কেটে চলে যায়। মিসেস শেখর রেগে চিল্লিয়ে বলে,”আবরার! বড় বেয়াদব হচ্ছো তো তুমি! তোমার সাহস তো খুব বেড়েছে।(আবরারের পোশাক দেখে) বাব্বাহ ফতুয়া ছেড়ে দেখছি নতুন সাজগোছ শুরু করসেন! তা টাকা কি আপনার গাছে ধরে? যে এভাবে খরচ করছো!”

– আমি আমার মায়ের টাকা খরচ করছি তাতে আপনার কোনো সমস্যা মা?

মিসেস শেখর অবাক হলেন। আবরারের হঠাৎ বদলে যাওয়া সে হজম করতে পারছে না। যে ছেলের দিকে তার একবার চোখ রাঙিয়ে তাকালেই ভয়ে কাঁপতো আজ সেই ছেলে এভাবে কথা বলছে। ব্যাপারটা খুব হাস্যকর ব্যাপার। মিসেস শেখর চোখ রাঙিয়ে কিছু বলতে নিতেই আবরার থামিয়ে দিয়ে বলে,”আপনার ওই চোখ রাঙানো ভয় পাইনা আমি। আমি এতো বোকাও কখনো ছিলাম না যে আপনার কথায় সবসময় উঠবো বসবো!”

– আবরার!! তোমার এখন কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছো? আর এতো রাতে কোথা থেকে ফিরলে কোথায় গিয়েছিলে তুমি? আর এতো টাকা কই পেলে?

– আপনি যখন সারাক্ষণ নাইটক্লাব, ফ্রেন্ডস, শপিং নিয়ে পরে থাকেন তখন আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি? আপনার তো উচিত ছিলো সন্তান হিসেবে আমাকে সময় দেয়া কখনো দিয়েছিলেন? না দেননি উল্টো এর ওর সাথে ঘুরেছেন।আসলেই এটা জম্মগত সত্যি সৎ কোনোদিন আপন হয়না।

– মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ আবরার! ঠাটিয়ে এমন চড় দিবো না যে….

– ওহ কাম অন! আপনার কোনো প্রকার অধিকার নেই আমার উপর! এতোদিন সহজ সরল ছিলাম বলে অনেক অত্যাচার করেছেন কিছু বলিনি বাট এখন আমি আর আগের আবরার নেই। সো ভেবেচিন্তে কথা বলবেন নয়তো আপনার এবাড়িতে থাকতে দেয়া হবে না।

– থ্রেড দিচ্ছো আমাকে?

– যা ইচ্ছা ভেবে নিন। এনিওয়ে আপনি আপনার রুমে যান আপনার স্বামী তো আবার আপনার অপেক্ষায় মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে।

বলেই হনহন করে নিজের রুমে চলে গেলো আবরার। আর এদিকে মিসেস শেখর রেগে বেগুন ভাজা হয়ে গেছে। মিসেস শেখর হনহন করে নিজের ঘরে চলে গেছে যাতে করে তার স্বামীকে এই ঘটনা জানিয়ে আবরারকে উচিত শিক্ষা দিতে পারেন।

আবরার ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় বসে পূর্ব দিকের দেয়ালে একটা ফ্রেমে বাঁধা ছবিটি গভীর ভাবে দেখছে। ছবিটি আবরারের মায়ের। আবরার বামক হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখদুটো মুছে নাক টেনে ভাঙা গলা য় বলে,”মা আজ আমি তার সাথে উচু গলায় কথা বলেছি, তার অবাধ্য হয়েছি। কি করবো বলো এই দুনিয়া যে এতো সোজা নয়। সবাই সরলতার সুযোগ নেয়। এতোদিন সহজ ছিলাম আর অপেক্ষা করেছিলাম যেনো তারা শুধরে যায়। কিন্তু না মা তারা শোধরায়নি আর কোনোদিন শোধরাবেও না। অনেক অপেক্ষা করেছি না মা এদের উচিত শিক্ষা দিতেই যে হবে। দেখেছো মা তুমি সহজ-সরল ছিলে বলে আমার বাবা নামক পশুটা কিভাবে তোমায় মেরে ফেলেছে? আমি তার শোধ তুলবো। আমায় ক্ষমা করিও মা আমি পারবো না তোমার কথা রাখতে! আমি পারবো না এই অমানুষগুলোর সাথে ভালো ব্যবহার করতে। তোমার সাথে এবং আমার সাথে করা প্রত্যেকটা অন্যায়ের শাস্তি তাদের পেতেই হবে! পেতেই হবে।

মুহূর্তেই আবরার রেগে লাল হয়ে গেলো। তারপর মায়ের ছবিটির দিকে আবার তাকিয়ে ঘুমাতে চলে যায়। চোখ বুজতেই তার চোখের সামনে মানিশার মলিন চেহারা, আনন্দিত চেহারাটা চোখের সামনে ভেসে উঠে। আবরার সাথে সাথে চোখ খুলে একটা বাঁকা হাসি দেয়। হেসে মৃদ্যু সুরে আনমনেই বলে ফেলে,”থ্যাংক ইউ! তুমি আজ আমার চোখের সামনের খোসাটা খুলে দিয়েছো। তোমায় মৃত্যু পর্যন্ত পাশে চাই মানিশা। তুমি আমার নিসঙ্গে সঙ্গ দিয়েছো। আমার একাকিত্বের বন্ধু হয়েছো। থ্যাংকিউ আমার জীবনে আসার জন্য।”

বলেই মুচকি হাসে আবরার। তারপর নিষ্পাপ বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে পরে।

এদিকে মানিশা ভাবছে আবরারকে নিয়ে। তার মাথায় শুধু আবরার ভনভন করে ঘুরছে। এই আবরার কে? কি তার পরিচয়? কেন এতোদিন সে এভবে সহজ সাধারণভাবে ঘুরে বেড়াতো? আজ হঠাৎ তার কি হলো? নাহ তার সব প্রশ্নের উত্তর চাই সব! তার জানতেই হবে আবরারের আসল পরিচয়।

– মা প্লিজ আমি এই ভার্সিটিতেই এডমিশন নিতে চাই আমি চট্টগ্রাম পড়বো না।

– দেখ রুহি এটা হয়না আম…

– আরে ওকে পড়তে দে এখানে সমস্যা কোথায় সানিয়াও তো পড়ছে।(সানিয়ার মা)

– আমি রাজি হলেও ওর বাবা কিছুতেই দিবে না আর সবচেয়ে বড় কথা চট্টগ্রাম আর ঢাকা আসা যাওয়া সহজ নাকি?

– আরে ওকে চট্টগ্রাম থেকে আসতে বলেছে কে আমাদের এখানে থেকেই পড়বে!

– না আপা আমি ওরে ছাড়া কি করে থাকবো? একটামাত্র মেয়ে আমার।

– যখন বিয়ে দিবি তখনও তো একাই থাকতে হবে নাকি তার চেয়ে ভালো হয়না আগেভাগে অভ্যাস করে নিলি। আর এমন তো নয় যে আমরা রুহির বিয়ে দেয়ার কথা বলছি? রুহি এখানে পড়তে চাইছে পড়তে দে। সানিয়াও তো এখানে পড়তে চেয়েছে আমরা ওকে এখানেই এডমিশন করিয়েছি এখন দেখ কতো ভালো রেজাল্ট করেছে। ইচ্ছাটাই আসল বোন, জোর করে চাপিয়ে দেয়া ঠিক না!

– কিন্তু আপা…

– কোনো কিন্তু নয় রুহি এই ভার্সিটিতেই পড়বে ব্যাস! দুলাভাই রাজি না হলে সানিয়ার আব্বু আছে সে ঠিক রাজি করিয়ে দিবে।

খালামনি চুপ করে রইলো। কথায় আছে না নিরবতা সম্মতির লক্ষণ? রুহি সম্মতি ধরেই লাফিয়ে অত্যন্ত খুশি হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউ থ্যাংক ইউউউ সোওওওওও মাচ খালামনি উম্মাহ!!”

মা হেসে দেয়। দূর থেকে আমি সব দেখলাম তারপর রুমে চলে আসলাম। যাক রুহি থাকবে ভালোই হবে আর একা ফিল হবে না। ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলি। এমন সময়ই জোহান আসলো কানের সামনে ঘ্যানঘ্যান করতে। পার্টি থেকে ফেরার পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই আয়াফের প্রসংশা শুনতে শুনতে। আমার যেই কান ভালো ছিলো সেই কানেও ঠাডা পরসে এর বকরবকরে। কি জানি কোন মধু খাওয়াইসে এই জোহাইন্নারে! কানে হাত দিয়ে বলি,”মাফ চাই ভাই এবার তো থাম! এক কথা কয়বার বলোস তুই?”

– আরে আমি তো এখনো শুরুই করিনি। আপু জানিস আমাকে সেইরকম দামী চকলেট খাইয়েছে, দামী কল্ডড্রিংকসও খাইয়েছে। আবার প্রমিস করেছে যে আমার ফেভারিট রেস্টুরেন্টে নিয়েও খাওয়াবে। দেখছিস কতো কিউট আমার ভাইয়া। আর এদিকে তুই দেখ! খয়রাতি হিসেবে ১০ টাকা দামের ডেইরি মিল্ক ধরায় দেস!”

– আর কোনো খোচা মারানি কথা তোর বাকি আছে? বাকি থাকলে এখনই বাইর কর নইলে তোর পেটে গুল্লি মেরে সব বের করবো!

– খোচা কথা কেন হবে যা সত্যি তা-ই বলেছি। আর ম্যাম বলেছে ভালো এবং চিরন্তন সত্য কথা মানুষের গায়ে কাটার মতো লাগে।

আমি রেগে বলি,”তুই কি বলতে চাস?”

– যা তুমি ভাবো না তাই!

– ফকিরা পোলা! বাইর হ ফকিন্নি! যা রুম থেকে বাইর হো!(চেঁচিয়ে)

জোহান মুখে ভেংচিয়ে বলে,”আয়াফ ভাই তোমার থেকেও হাজারগুণ ভালো!”

– তোর আয়াফ ভাইয়ের চোদ্দগুষ্টির গুল্লি মারি তুই যাবি নাকি তোর পাছায় লাথি মেরে বের করো?

জোহান ভয়ে দৌড় দেয়। আমিও রেগে ঠাসসস করে দরজা লাগিয়ে ফ্লোরে দরজার সাথে লেগে বসে থাকি। আয়াফের প্রসংশা শুনতে ভালো লাগে না তেমনটা নয় তবে ওইযে আয়াফের সাথে আমারেও খোচাবে তার সাথে কম্পেয়ার করবে এতেই মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমার সব ভালো লাগে কারো সাথে নিজেকে তুলনা করা পছন্দ না।

আবরার ঘুমিয়ে আছে হঠাৎ দরজা কেউ ধুরুম ধারুম করে বারি দিচ্ছে। আবরার কিঞ্চিৎ পরিমাণ ভ্রু কুচকালো আর পিটপিট করে তাকালো। এমন ভাবে দরজা বারি দিচ্ছে যেনো দরজা ভেঙ্গে ভেতরে চলে আসবে। আবরার উপায় না পেয়ে বিরক্ত হয়ে উঠে দরজা খুললো। খুলে দেখে তার মহামান্য পিতা রাগি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর অদূরে তার নটাংকিবাজ সৎমা চোখের পানি ফেলছে। আবরার ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আমার ভেতরে চলে আসে। তা দেখে মিস্টার শেখর আরও রেগে গেলেন। রুমে ভেতরে এসে হট্টগোল শুরু করে দিলেন। আবরার শান্ত কন্ঠে বলে,”আওয়াজ নিচে মিস্টার শেখর। এভাবে সাতসকালে কারো ঘরে এসে চেঁচামেচি করার প্রশ্নই উঠে না!”

– আবরার! আমি তোর বাপ হই.. তোর সাহস কি করে এভাবে কথা বলার? আর তা তো না তুই তোর মায়ের সাথে খারাপ বিহেভ করেছিস! এতো সাহস কই থেকে পেলি তুই? শীলা গরম খুন্তিটা নিয়ে আসো তো আজ এর ঠোঁট পিঠ পুড়ে ছাই করে দিবো!

মিসেস শেখর তৎক্ষনাৎ দৌড়ে চললো গরম খুন্তি আনতে। আজ সে আবরারের শেষ দেখে ছাড়বে! আবরার তাচ্ছিল্যের সুরে বলে,”আপনি কোনোকালেই আমার বাবা ছিলেন না আর ওই চরিত্রহীন মহিলা তো আমার বাড়ির কাজের মহিলারও যোগ্য না!”

– আবরার!!

বলেই মিস্টার শেখর আবরারের গালে চড় দেয়ার জন্য হাত তোলে তার আগেই আবরার হাত ধরে হাসতে হাসতে বলে,”আগের আবরার নই যে আপনাদের সকল অত্যাচার মাথা পেতে নিবো!”

– আমার খেয়ে, আমার বাড়িতে থেকে আমার সাথেই তর্ক করছো? এই তোমার শিক্ষা?

– ভুল বললেন এই বিশাল বাড়ি, গাড়ি আর সম্পত্তি আমার মায়ের করা। আপনি তো শুধু প্লান অনুযায়ী মাকে চিরজীবনের জন্য সরিয়ে ফেলেছেন! ভাগ্যিস আপনার প্রেমলীলা আমার মা জেনে গেছিলো তাইতো সকল সম্পত্তির হুইল আমার নামে করে গেছিলো।।!

মিস্টার শেখর অবাক চোখে আবরারের দিকে তাকায়। ততোক্ষণে শীলা গরম খুন্তি নিয়ে হাজির হয়। আবরার হেসে চট করে গরম খুন্তিটা কেড়ে নেয় এবং বলে,”এই খুন্তির ঘা টা যদি আপনাদের গায়ে পরে কেমন লাগবে?”

মিসেস শেখর অবাক হলেও মিস্টার শেখর একটা শুকনো ঢোক গিললো তারপর ঠান্ডা গলায় বলে,”বৃষ্টি সব আমার নামে লিখে গেছে এবং আমার কাছে প্রমাণও আছে!”

আবরার হাসলো তারপর বলে,”নকল হুইল দেখিয়ে আমাকে বোকা বানাবেন ভেবেছেন?”

– তোমার কাছে তো কোনো প্রমাণ নেই যে ওইগুলা নকল আর না তোমার নামে সকল সম্পত্তি হুইল করেছে ওইটারও প্রমাণ নেই।

আবরার বাকা হেসে বলে,”আছে!”

এবং আপনাদের পাপকাজেরও সকল প্রমাণ আছে। আজই আপনাদের খেলা শেষ!

বলেই ফোন হাতে নিয়ে কাকে যেনো কল করলো তারপর বলে,”আপনাদের একটা সিনেমা দেখাবো আগে নিচে চলুন!”

বলেই আবরার চলে গেলো নিচে। মিস্টার শেখর আর শীলা অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকায়।

– আকিল!

আয়াফ বিরক্তি নিয়ে তার মায়ের দিকে তাকায়। মা হেসে বলে,”কি এভাবে চেয়ে আছিস কেন?”

– তোমার এই আকিল নামের কারণে কবে জানি আমার সম্মান নর্দমায় যায়!

– হা হা তা কেন?

– তোমার এই আনকালচার নামের কারণে!(মুখ গোমড়া করে)

– তাহলে আকিকা নতুন ভাবে দিয়ে নাম বদলে নে।

– মজা নিচ্ছো?

– তাহলে আমাদের ভালোবাসার নামকে নিয়ে এমন বিহেভ করছিস কেন?

– তোমার এই আকিল আকিল শুনতে শুনতে কবে যেনো করে যাই! তখন খুশি হবা তো?

– আহা এমন করিস কেন!

– তো কেমন করবো? কতোভাবে তোমায় বুঝিয়েছি এই নামে ডেকো না। এখন শুধু তোমার পা ধরাই বাকি!

– পা কেন ধরবি?(চোখ বড় বড় করে)

– যাতে করে আমার উপর দয়া দেখিয়ে তোমার এই ডিসগাস্টিং নেইম টা বদলাও।

– তুই পা ধরলেও কোনো কাজ হবে না।

আয়াফ অসহায় দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকায়। মা তো হেসে কুটিকুটি। তারপর বলে,”আচ্ছা বাদ দে তা নবাবজাদা এতো হাসেন কেন আপনি?”

আয়াফ থতমত খেয়ে বলে,”মানে?”

– এইযে কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি কি নিয়ে আনমনে একটু পর পর হেসে চলেছেন? ব্যাপার কি হুম?(চোখ ছোট ছোট করে)

– আরে তেমন কিছু না!

– তেমন কিছু না বললেই হলো? আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট শিওর কোনো একটা ব্যাপার আছে। তুই কি আমাকে বলবি না আকিল?(মুখ গোমড়া করে)

– উফফ মা বললাম তো তেমন কিছু না। কিছু থাকলে তো তোমাকে জানাতাম-ই‌!

বলেই আয়াফ কেটে যেতে নিলো ওমনি মক বকে উঠে,”ওহ তাই তা সানিয়া টা কে শুনি?”

আয়াফ থম মেরে দাঁড়িয়ে গেলো। তারপর আয়াফ বিস্ময়ের চোখে বলে,”মা..মানে?”

– এহ এমন ভাব ধরছিস যেনো ভাজা মাছ টা উল্টে খেতে পারিস না! সত্যি করে বল ওই মেয়ে কে নইলে তোদের মাঝে ভিলেন হয়ে দাঁড়াবো বলে দিলাম হুম!

আয়াফ হেসে মাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,”উফফ মা! ওই মেয়েকে এগুলা বুঝিয়ে লাভ নেই। ওই আমাকে ভিলেইন বানিয়ে রেখেছে, তাও যেমন তেমন ভিলেন না একেবারে ক্রাশ ভিলেইন!”

মা হেসে দিলো আয়াফের কথা শুনে তারপর বলে,”তাই বুঝি? মেয়েটা তো তাহলে মনে হচ্ছে চঞ্চল প্রকৃতির! তবে যাইহোক তোকে ক্রাশ ভাবে এটাই অনেক। তার ব্যাপার কতোদূর এগোলো?”

আয়াফ মুখ গোমড়া করে বলে,”এই মেয়ে আমাকে বুঝলে তো সব এগোবে নাকি? এই মেয়ের মাথায় আমাকে কি করে টাইট দিবে সেই চিন্তা।”

– আচ্ছা ও কিছু হবে না, তুইও দিবি সমস্যা কি।

– হুম তবে তুমি একটা কথা বলো তো, তোমাকে সানিয়ার কথা কি যাহির বলেছে?(ভ্রু কুচকে)

– ও ছাড়া আর কে?

– হারামিটার পেটে কিছু আটকায় না সব গরগর করে বলে দিলো! এরে আমি মজা দেখাচ্ছি।

বলেই আয়াফ হনহন করে চলে গেলো। মা পেছন থেকে কয়েকবার ডাকলো কিন্তু তা আয়াফের কান পর্যন্ত গেলো না। মা হেসে নিজে নিজে বলছে,”যাক আমার এই নিরামিষ ছেলেটা কোনো এক চঞ্চল মেয়ের প্রেমে পরলো এখন শুধু বিয়ের ব্যবস্থা করার পালা!”(দাঁত কেলিয়ে)

চলবে!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here