হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-৭

হিংস্র ভ্যাম্পায়ার_২,পর্ব-৭
লেখিকাঃফারু ইসলাম(ফারহানা)

___”এরিক দাঁড়ানোর সাথে সাথে হেনা এসে বাদুড়ের মত গলা জুলে পড়লো। সে পরেছে আর্ধ-বুক খোলা অতি ক্ষুদ্র সবুজ পেন্সিল ড্রেস।”
___” এরিক হচকিয়ে ডানে বামে নূর কে দেখতে লাগলো।”
___” হেনা সেভাবেই ঝুলে থেকে লাস্যময় গলায় বললো ‘এরিক তুমি আমাকে নিতে কেন আসলে না? ইউ নো আমি তোমাকে কত মিস করেছিলাম?”
___”এরিক হেনাকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে গায়ে থেকে সরিয়ে বিরক্ত গলায় বললো ‘ তুমি তো বললে তোমার বোন যাতে এতো তাড়াতাড়ি আমাদের সম্পর্কে অবগত না হয়,তাহলে এমন সবাই সামনে গলায় কেন ঝুলে পড়ো?’
___” হেনা হিহি করে শব্দ করে হেঁসে বললো ‘ নূর নেই সেজন্য তো এলাম।”
___”এরিক চুপ করে সামনে তাকিয়ে রইলো তার দৃষ্টি নূরকে খুঁজছে আছে কই এই মেয়েটি!”
___” মিসেস রিমি ত্যাড়া গলায় বললো ‘ নূর নাম তোমার বাবা রেখেছে আমি না, আমি তোমার নাম জেসমিন রেখেছি তাই জেসমিন ডাকবো।”
___” নূর ফোন রাখার আগে প্রতিত্তোরে কাঠ গলায় বললো ‘ তুমি রেখেছো সেজন্য এই নাম কে আমি সবচাইতে বেশি ঘৃণা করি।”
___”মিসেস রিমি ফোন ছুঁড়ে পেলে দিলো এতো বেয়াদব হয়েছে এই মেয়ে।”
___”এরিক এক দৃষ্টিতে নূর কে দেখছে নূর রঙের গুঁড়ো দিয়ে রঙোলি নামক কি যেনো তৈরি করছে কিছু ইন্ডিয়ান মেয়ের সাথে। সাদা গাউন পুরো ছড়িয়ে আছে তার, মুখে লেগে আছে সব সময়ের মতো মিষ্টি হাসি কি যে অভাবনীয় দৃশ্য।”
___” এরিক সেদিকে মনোমুগ্ধকর ভাবে দৃষ্টি রেখে বললো ‘ আমার রাজহংসী।”
___” ড্রেক এসে হেনা কে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ হেই হেনা আমার তোমাকে কিছু বলার আছে।”
___” হেনা গালে হাসি ধরে রেখে এরিকের হাতের মধ্যে হাত ডুকিয়ে বললো ‘ বলো কি বলবে?”
___” ড্রেক লজ্জাকাতর চোখে বললো ‘ আমি কালকে নীর(নূর)কে প্রপোজ করতে চাই, কেমন হবে!”
___”এরিকে কেউ যেনো বৈদ্যুতিক শক দিলো সে তার হাত মুঠো করে দাঁত কিড়মিড় করে ড্রেকের দিকে তাকালো।”
___” হেনা হেঁসে বললো ‘ বাহ এতো কিছু হয়ে গেলো তোমাদের মধ্যে আর আমি জানলাম না! খুবই ভালো হবে আর নূর অনেক ভাগ্যবতী তোমাকে পাবে।”
___” ড্রেক খুশিতে তার মাথা চুলকালো।”
___”এরিক সামনে তাকিয়ে দেখলো নূর নেই, এরিকের কপাল কিঞ্চিৎ কুঁচকে গেলো! নূর! তার নূর কই!”
___”হেনা আমি একটু আসছি বলে এরিক ডানে বামে নূর কে খুঁজতে লাগলো। হেনা আর ড্রেক কথা বলতে লাগলো নিজেদের মতো করে। পূজা শুরু হয়ে গিয়েছে লাউড স্পিকার গান বাজছে।”
___” নূর চিৎকার দিয়ে বলতে লাগলো ‘ ছাড়ো আমাকে ছাড়ো তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে এন সহ তার তিনটি সাথী।”
___” এভি এরিকের চিন্তিত মুখের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ এরিক তুমি কি কাউকে খুঁজছো?”
___” এরিক দিশেহারা হয়ে বললো ‘ এভি তুমি নূর কে দেখেছো?”
___”এভি স্বাভাবিক গলায় বললো ‘ হ্যাঁ আমি নূর কে এনের সাথে কথা বলতে দেখেছিলাম একটু আগে।”
___”সাথে সাথে এরিকের মাথায় ব্যাথা অনুভব হলো, সে আহঃ করে মাথা চেপে চোখ বন্ধ করে কপাল কুঁচকে ফেললো।”
হঠাৎ সে তার রক্ত লাল চোখ গুলো চট করে খুলে সিট বলে ছুটে এভি আর জেনের সামনে থেকে চলে গেলো। এভি আর জেন বোকার মত একজন আরেক জনের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো।”
___”এনরা নূর কে ক্যাম্পাসের মিউজিক ফ্যাকাল্টি ছাদে এনে ছুঁড়ে ফেললো। নূরের গায়ের ওরনা ওদের তিনজনের হাতে তাদের মুখে পৈশাচিক হাসি।”
___” নূর উঠে দাঁড়িয়ে আকুতিভরা গলায় চিৎকার করে বললো ‘ দয়া করে আমাকে যেতে দাও, আমি কি করলাম তোমাদের প্লীজ যেতে দাও।”
___”নিচে পূজা শুরু হয়েছে লাউডস্পিকারে গানের জন্য কিছু শুনা যাচ্ছে না।”
___” এন এসে টান মেরে নূরের জামা ছিঁড়ে ফেললো। নূর দু-হাত দ্বারা নিজেকে বাঁচানোর জন্য আচমকা এরিক বলে চিৎকার দিয়ে পিছনে ফিরার সাথে সাথে হঠাৎ কেউ একজনের বুকে গিয়ে পড়লো। নূর কাঁপছে থরথর করে সে লেপ্টে আছে কোণ ভরসা বুকে।”
___” ছেলে চারটি নূরকে বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে দেখে মূর্তি হয়ে গেলো,একি ভয়ংকর চেহেরা! এটাতে এরিক! তাহলে সে কি হিংস্র ভ্যাম্পায়ার! ওরা আহঃ বলে ছুটে চলে যেতে ধরলে এভি জেন চট করে ছেলে চারটির ঘাড় ধরে ফেললো।”
___”এরিক অবাক হয়ে তাকালো এভি আর জেনের দিকে। তারা আশ্বাস ভরা চোখে ইশারায় বললো ‘ আমরা আছি এরিক।”
___” নূর এইবার মাথা তুলে এরিকে দেখে যেনো তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলো। সে ছুটে সরে যাওয়ার আগে এরিক টান মেরে পূনরায় নূরকে বুকে চেপে ধরলো।”
___” নূর ছুটাছুটি করে ভয়াতুর,কান্নারত গলায় বললো ‘ ছাড়ো আমাকে, কে তুমি!ছাড়ো আমাকে।”
___” এরিক মুচকি হেঁসে নূরের কানে ফিসফিস করে বললো ‘ আই এ্ম পিউর ভ্যাম্পায়ার।”
___” নূর কিংকৃর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলো তার ছুটাছুটি বন্ধ হয়ে গেলো, সে বড় বড় অশ্রু মাখা চোখে এরিকে দেখতে লাগলো। ভ্যাম্পায়ার! এটা তো একটা রক্ত খাওয়া প্রাণী!”
___” এরিক হঠাৎ অধৈর্য গলায় নূরের তাজ্জব মুখের দিকে তাকিয়ে শাসিয়ে বললো ‘ তোমাকে আমি আগে নিষেধ করেছিলাম যখন-তখন কেউকে সাহায্য করতে যাবা না, কারণ এইসবের পাল্লায় পড়ে একদিন নিজে ডেট বডি হয়ে যাবে।”
___” নূরের যেনো চোখ কোটর থেকে বের হতে ধরলো এরিক! এরিক সে লোকটি! তাহলে তার ধারণা মিথ্যা ছিলনা!”
___” এরিক রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললো ‘ এভি তুমি নূর কে সামলাও আমি এদের দেখছি।”
___” এভি এসে নূরের হাত চেপে ধরলো।
___” নূর এইবার এভিকে আকুতি করে বললো ‘ প্লীজ এভি ছাড়ো আমাকে, কি তোমরা! আমাকে সত্যি বলো?”
__” এভি নূরের কথাতে কোন প্রতিত্তোরে দিলো না, সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো একি ভঙ্গিতে।”
___” নূরের চোখের সামনে এরিক আর জেন চট চট করে চারটির ঘাড়ে তাদের বিশাল বড় দাঁত বসিয়ে দিলো। কিছুক্ষণ চটপট করে সব গুলো নিস্তেজ হয়ে গেলো। এরিক মুহুর্তে সবগুলোর মাথা আর শরীর ছিঁড়ে দুই ভাগ করে ফেললো। নূর এটা দেখে চিৎকার দিয়ে সেখানে লুটিয়ে পরার আগে এরিক বাতাসের বেগে ছুটে এসে নূরকে তার বুকে নিয়ে নিলো।”
___” এরিক জেন আর এভিকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ আমি চাই ওরা জোনাসের খাদ্য হক।”
___” জেন আর এভি সে কথার প্রেক্ষিতে এক পেশে হেঁসে উঠলো। যার অর্থ কাজ হয়ে যাবে তাকে চিন্তা করতে হবেনা।”
___”এরিক অজ্ঞান নূর কে কাঁধে নিয়ে কোন দিকে ছুটে চলে গেলো। মৃদু মৃদু চোখ খুলে নিজেকে বিশাল বড় রুমে আবিষ্কার করলো নূর। কোথায় সে? নূর চারিদিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখলো এটা কার বেড রুম। চট করে নূরের সব মনে পরে গেলো, সে দিশেহারা হয়ে ছুটে বের হতে লাগলো রাজকীয় মহল থেকে, নূর যেনো হতবুদ্ধি হয়ে গেলো। সে শুকনো ঢোক গিলে চারিদিক দেখছে এটা তো কোনো মহল! কে আনলো ওকে এখানে! যে আনুক তাকে যেতে হবে ঐ তো সদর দরজা। নূর ছুটে দরজা দিয়ে বের হয়ে গেলো। এইবার যেনো নূর সবকিছু ধোঁয়াশা দেখতে লাগলো সে এক গাল হা করে বাইরে তাকিয়ে আছে তার শরীর থরথর করে কাঁপছে। সে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল একটা সমুদ্রের পাড়ে যার দূর দূরত্বে শুধু পানি আর পানি। নূরের মাথা যেনো আকাশ ভেঙে পরলো চারিদিকে পাগলের মত ছুটে আবারও একি জায়গা এসে হু হু করে কেঁদে দিলো। কেন হচ্ছে তার সাথে এই গুলো! কাঁপতে কাঁপতে নূর যখন পড়ে যেতে ধরলো তখনই একটি শক্ত হাত নূর কো পরম আদুরে আকড়ে ধরলো।
___” এরিক! হ্যাঁ এরিক নূরের কোমর চেপে ধরে আছে। নূর অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে এরিকের দিকে কি চমৎকার চেহেরা এখন, কিন্তু তখন! ঐ গুলো কি দেখেছিল সে! ভয়ে নূরের এই কনকনে হাড় কাঁপানো শীতে এরিকের হাতের মধ্যে ঘাম পড়তে শুরু করলো। এরিক কপালে সূক্ষ্ম বাঁজ করে নূরের দিকে তাকিয়ে এক টান মেরে তাকে বুকের সাথে লেপ্টে নিলো। নূর চোখ বন্ধ করে ইইই করে কাঁপছে আজ বুঝি তার শেষ দিন এই হিংস্র ভ্যাম্পায়ারের হাতে!”
___” বাইরে ঘুরা শেষ? এরিক শান্ত মৃদুস্বরে বলে উঠলো নূরকে বুকে নিয়ে।”
___” নূর চোখ বন্ধ অবস্থা প্রথমে হ্যাঁ বোধক তারপর না বোধক জোরে মাথা দুলালো।
___” এরিক মুচকি হেঁসে উঠলো তারপর নরম কন্ঠে ফিসফিস গলায় বললো ‘ নূর চোখ খুলো? আমার দিকে একটি বার তাকাও?”
___” নূর চোখ বন্ধ রেখে পূনরায় না বোধক মাথা দুলালো। যার অর্থ, আমি চোখ খুলবো না কারণ তুমি আমাকে খেয়ে ফেলবে।
___” এরিক কিছুক্ষণ নূরের ভয়কাতুরে মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো মুগ্ধ দৃষ্টিতে তারপর দুষ্ট হেঁসে আলতো করে নূরের ঠোঁটে চুম্মু খেলো। নূর যেনো স্তম্ভিত হয়ে গেলো এরিকের এই স্পর্শ যেনো তাকে জানিয়ে দিচ্ছে আমি মানুষ রুপে ভ্যাম্পায়ার হতে পারি কিন্তু তোমাকে ক্ষতি করার সাধ্য আমার নেই। নূর আস্তে আস্তে চোখ খুললো। এরিক তাকিয়ে আছে তার দিকে এক শান্ত দৃষ্টিতে।”
___”এরিক তার এক হাত নূরের কোমরে রেখে আরেক হাত পরম আদুরে গালে রেখে ভারী স্বরে বললো ‘ নূর তুমি আমাকে ভয় কেন পাচ্ছো? আমি এরিক সে এরিক যে তোমাকে প্রতিবার বিপদের মুখে থেকে বাঁচিয়েছে।”
___”নূর জলজল চোখে এরিকের দিকে তাকিয়ে আছে। এরিক আস্তে করে নূরের ঠোঁটে আলতো করে চুম্মু খেলো। তারপর নূরের কপালের সাথে কপাল মিলিয়ে বলে উঠলো ‘ আই লাভ ইউ নূর।”
___” নূর কিংকৃর্তব্যবিমূঢ় হয়ে এরিকের মুখের দিকে তাকালো, আচ্ছা সে কি ভুল শুনছে নাকি তার কানে ভুল কথা বাজছে!”
___” এরিক নাতিশীতোষ্ণ গলায় বললো ‘ তুমি আমার প্রতি টা স্বপ্ন ছিলে নূর তুমি জানো আমাদের ঘুম নেই তাও আমি তোমাকে চোখ বন্ধ করলে দেখতে পেতাম। বিশ্বাস করো আজ থেকে না আরো ১৫০ বছর আগ থেকে আমি তোমাকে স্বপ্ন দেখি।”
___”নূরের মাথা যেনো বাঁজ পড়লো,সে চমকপ্রদ হয়ে এরিকের মুখের দিকে তাকালো তাকে দেখলে মনে হবে সে মারাত্মক কোন গুজব শুনেছে।”
___” এরিক তার দু’হাত নূরের দু’গালে রেখে বললো ‘ বিশ্বাস হচ্ছে না ওকে কাম উইথ মী।”
___”নূরের গলার স্বর যেনো বন্ধ ঘোষণা করেছে অনেক কথা তার বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কোনো কথা তার গলা দিয়ে বের হচ্ছেনা। আজকের মতো শকের পর শক সে তার ছোট্ট জীবনেও কখনোই পাইনি। এরিক নূরের হাত ধরে তাকে একটা বিশাল বড় রুমে নিয়ে গেলো নূর যন্ত্রের মত চলতে লাগলো।”
___” ঐ বিশাল বড় রুমে এসে নূর এইবার অদৃশ্য বৈদ্যুতিক শক খেলো এই বুঝি তার মাথা বর্ষাকালের বজ্রপাত সব ভেঙে পড়লো। পুরো রুম জুড়ে তার ছবি আর্ট করা আর তার নিচে নিখুঁত ভাবে তারিখ সাল লেখা। প্রতিটি ছবির মধ্যে নূর বেশির ভাগ নগ্ন অবস্থা আছে ঐ গুলো শত বছর পুরানো। নূরের যেনো দম বন্ধ হয়ে আসছে এই গুলো সে কি দেখছে! এটা! এটা কীভাবে সম্ভব!”
___”নূর সবচাইতে হতবুদ্ধি তখন হলো যখন দেখলো নূরের এই কয়েকদিন আগের একটা ছবি আর্ট করা। সে হওয়াই মিঠাই খাচ্ছে মুখে তৃপ্তির হাসি কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী ড্রেক থাকার কথা সে নেই।”
___”পাশে রয়েছে এভির আংটি বদলের অনুষ্ঠানে নূরের সাদা শাড়ি পরা আরো একটি চিত্র। নূর ছবিটার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন বোধক দৃষ্টিতে এরিকের দিকে তাকালো।এরিকের মুখে মুচকি হাসি।”
___” হঠাৎ এরিক হাঁটু গেঁড়ে নূরের সামনে বসে পড়লো। নূর আশ্চর্য হয়ে মুখে হাত দিয়ে ফেললো।”
___” এরিক নূরের এক হাত তার হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো ‘ নূর আমি জানি আমি সাধারণ না,আমি কোন মানুষের তালিকায়ও পড়ি না। কিন্তু আমি তোমাকে খুবই ভালোবাসি তোমার প্রতিটা বিপদ প্রতিটা সুখ দুঃখে সাথী হতে চাই। আজ ১৫০ বছর তোমাকে স্বপ্ন দেখছি, কে তুমি! কেন আমার স্বপ্নে আসতে! তার উত্তর আমি হন্য হয়ে খুঁজতাম কিন্তু সবসময় শূন্য হতাম। ঐ দিন যখন রাতে অন্ধকারে তোমার ভয়াতুর মুখ দেখেছিলাম আমার সব উল্ট-পাল্ট হয়ে গিয়েছিলো। আমার বুঝা হয়ে গেছে আমার তোমাকে ছাড়া চলবে না তোমার সবকিছু তে আমার অধিকার বোধ আসে।
তোমাকে নিজের থেকে সরানোর জন্য তোমাকে অনেক কড়া কথা শুনিয়েছি কিন্তু কিছুই হলো না। নূর,নূর দিবে আমাকে সে অধিকার নূর উইল ইউ ম্যারি মী নূর?”
___” নূর যেনো চিনা মাটির মূর্তি হয়ে গেলো তার মনে হচ্ছে সে এখনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করবে বন্ধ তার পুরো দুনিয়ার ঝাপসা চোখে ঘুরতে লাগলো। চোখে অশ্রু এসে হানা দিতে লাগলো।
___” এরিক উঠে দাঁড়িয়ে নূরের দু’গাল দু’হাত রেখে বললো ‘ প্লীজ নূর কথা বলো?”
___” নূর যেনো এইবার নিজের পৃথিবীতে আসলে যে পৃথিবী রয়েছে তার এক ভয়ংকর অতীত নূর কাঁপা কাঁপা মৃদুস্বরে বললো ‘ ইটস নট পসিবল এরিক, এটা সম্ভব না। একদমই সম্ভব না।”
___” এরিক কিচ্ছু বলার আগে নূর এরিকের হাত পেলে ছুটে বের হয়ে গেলো। সমুদ্রের পাড়ে এসে নূর মুখে হাত দিয়ে বালুতে বসে হু হু করে কেঁদে দিলো সে যে এরিকে হ্যাঁ বলতে পারবে না। একদমই না।”
___” এরিক এক টান মেরে নূর কে তার বুকের সাথে লেপ্টে নিলো। নূর কাঁদছে তার চোখের পানিতে বন্যা হয়ে যাচ্ছে।”
___” এরিক নূরের দু’বাহু ধরে তা ঝাঁকিয়ে বললো ‘ কি হয়েছে নূর যখন এটা সম্ভব না তুমি কেন কাঁদছো?”
___” নূর চুম মেরে গেলো, কিন্তু তার চোখ থেকে টপটপ করে পরা অশ্রু থামলো না।”
___” এরিক পরম আদুরে নূরের চোখের পানি মুছে দিয়ে আহত স্বরে বললো ‘ আমি ভ্যাম্পায়ার এটাই তোমার আসল সমস্যা তাই না! ওকে ডোন্ট ওয়ারি ড্রেক কালকে তোমাকে প্রপোজ করবে ওকে হ্যাঁ বলে দিও। আমি তোমাকে এখন তোমার বাসায় দিয়ে আসবো।”
___” এরিক নূর কে চেড়ে দিয়ে সামনে হাঁটা শুরু করলো তার চোখ জ্বালা করছে কিন্তু তার চোখের রক্ত দেখলে নূর আরো বেশী ঘাবড়ে যাবে কারণ তারা কান্না করলে চোখের পানি বের হয়না হয় রক্ত।”
___” নূর হঠাৎ চিৎকার দিয়ে এরিকে উদ্দেশ্য করে বললো ‘ আমি কখনোই মা হতে পারবো না এমন মেয়েকে তুমি নিজের জীবনে নিতে চাও?”
___” এরিক চট করে পিছনে ফিরে নূরের দিকে তাকালো।”
___” নূর নিঃশব্দে মাটিতে বসে গেলো তার ধীরে স্বরে বলতে লাগলো ‘ আমার বাবার যখন গাড়ি চাপা খেয়ে মারা যায় তার সাথে আমিও ছিলাম, আমি বেঁচে ছিলাম কিন্তু সারাজীবনের জন্য মা হওয়ার ক্ষমতা চলে গেছে। তুমি ভ্যাম্পায়ার তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই কিন্তু তোমার তো বংশ বড় করতে হবে কিন্তু এটা আমার পক্ষে সম্ভব না এরিক আমি যে অক্ষম।”
___” নূর আবারও মুখে হাত দিয়ে শব্দ করে কাঁদতে লাগলো এতো কেন কষ্ট হচ্ছে তার! সে কী এতোই ভালোবেসে ফেলেছে এরিকে! কিন্তু কখন!”
___” এরিক ছুটে এসে বালুতে বসে নূরকে তার বুকে নিয়ে নিলো, নূর আরো জোরে কেঁদে দিলো যেনো কান্নার জন্য এই আশ্রয় তার খুবই প্রয়োজন ছিলো।”
___”এরিক নূরের মাথা হাত বুলিয়ে দিলো, নূর নড়েচড়ে উঠে এরিকের বিধ্বস্ত মুখের দিকে তাকালো। এরিক শীতল স্বরে নূরের সামনের চুল গুলো সরিয়ে বললো ‘ নূর আমার কথা শুনো আমার কোনো সমস্যা নেই।শুনলে তুমি! আমার কোন সমস্যা নেই। আমি তোমাকে চাই, শুধু তোমাকে ১৫০ বছর থেকে তোমাকে স্বপ্ন দেখেছি বংশ কীভাবে বড় করতে হবে তা না। তাই কোন কথা না।”
___” নূর চূর্ণবিচূর্ণ চোহেরায় এরিকের দিকে তাকালো হতবুদ্ধি চোখে। এরিক মহনীয় ভাবে নূরের চোখের পানি ঠোঁট দিয়ে চুষে নিলো। নূর এরিকে বুকে চোখ বন্ধ অবস্থা অবশ হয়ে বসে রইলো।”
___” এরিক ফিসফিস করে বললো ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি, তুমি আমাকে ভালোবাসো আর কোনো কিছুই আমার চাইনা নূর।”
___” নূর এরিকের চোখের দিকে তাকিয়ে অশ্রুমাখা চোখে বললো ‘ তুমি কীভাবে জানলে আমি তোমাকে ভালোবাসি?”
___” এরিক মস্করা গলায় বললো ‘ ভালো না বাসলে এতো বার যে তোমাকে চুম্মু খেয়েছি তার জন্য একবার হলেও কিছু বলতে। কিন্তু আমি তোমার চোখে তখন লজ্জা দেখেছিলাম। আমার উষ্ণতা তোমাকে লজ্জা দিচ্ছিলো।”
___” নূর থতমত খেয়ে ছিঃ বলে এরিকের কাছ থেকে সরে যেতে চাইলো। কিন্তু ব্যর্থ হলো এরিক আরো বুকের সাথে চেপে ধরলো তাকে সে হাসছে শব্দ করে।”
___” এরিক নূরকে জড়িয়ে ধরলো বললো ‘ নূর ছুটাছুটি করে লাভ নেই,চুপচাপ আমার সঙ্গ উপভোগ করো।”
___” নূর গাল ফুলিয়ে বললো ‘ তুমি খুবই খারাপ এরিক।!
___” এরিক আবারও শব্দ করে হেঁসে বললো ‘ কথাটা কিন্তু মিথ্যা নই।”
___” নূর অভিমানে ঠোঁট বাঁকিয়ে অন্য দিকে তাকালো। এরিক চট করে নূরের ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নিলো নূর কতক্ষণ বিষ্ময় খেয়ে নিজেও তাল মিলানো শুরু করলো।”
___”সমুদ্রের নীল পানি গুলো শো শো করে ঢেউ খেলছে, বাতাসে নূরের লম্বা কোমর সমান চুল গুলো তাদের দু’জন কে ডেকে ফেলছে কি যে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
___” নূর এরিকের বুক খামছে ধরে আছে। দীর্ঘক্ষণ পর এরিক নূর কে ছাড়লো নূর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।”
___” এরিক নূরের দিকে তাকিয়ে এক পেশে হেসে চোখ মেরে বললো ‘ এটাতে এত ক্লান্ত! বিয়ের পর তাহলে কী করবে তখন তো আরো পরিশ্রম আছে।”
___” নূর সটাৎ চোখ খুলে এরিকের বুকে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করলো আর বলতে লাগলো, তুমি খুবই খারাপ একটা ছেলে খুবই।”
___”এরিক হো হো করে হেঁসে বললো ‘ একমত মাই বিউটিফুল। এমনে তে বুক শেষ করে দিলে খামচি দিয়ে তার উপরে আবার মারছো একটু তো দয়া করো!”
___” নূর ভেংচি কেটে বললো ‘ ইশ! কি মিথ্যা।”
___” এরিক কিছু বললো না কিন্তু হঠাৎ দুমদাম নিজের পরণে শার্ট খুলে ফেললো।
___” নূর যেনো বোবা হয়ে গেলো সে কোনো রকম মুখে দু’হাত দিয়ে ডেকে ছিঃ বলে উঠে দাঁড়িয়ে ছুটে সামনে চলে গেলো। এরিক দৌড়ে গিয়ে পিছনের থেকে নূরের পেটে হাত দিয়ে উপরে উঠিয়ে ফেললো। এরিক নূর কে ঘুরাচ্ছে আর নূর খিলখিল করে হেঁসে যাচ্ছে। সমুদ্রের পাড়ে তাদের হাসির প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসছে বার বার। আস্তে করে এরিক নূর কে ছেড়ে দিলো। নূর এরিকের দিকে তাকিয়ে দেখলো এরিকের মুখে চমৎকার হাসি সমুদ্রের পাড়ে এই অদ্ভুত সুন্দর চাঁদের আলো তে যেনো আরো ভয়ংকর সুন্দর লাগছে এরিকে।
___” নূর এরিকের ফর্সা খোলা বলিষ্ঠ শার্ট বিহীন বুকের দিকে তাকালো সত্যি দাগ বসে আছে তার নখের। নূর আলতো করে এরিকে বুকে আঁচড়ে জায়গায় হাত বুলালো। এরিক এক পেশে হেঁসে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে। নূরের যেনো কি হল সে চট করে এরিক ফর্সা বুকে চুম্মু খেলো। এরিক চোখ বড় বড় করে আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলো।”
___” নূর লজ্জা কাতর মুখে অন্য দিকে তাকিয়ে বললো ‘ এইবার থেকে একদমই আমার সামনে শার্ট বাদে আসবে না।”
___” এরিক হো হো করে হেঁসে ফেললো তার যেনো হাসি থামছে না।”
___” নূর অসহায় মত এরিকের দিকে তাকিয়ে বললো ‘ তুমি এতো হাসছো কেনো?”
___” এরিক নূরের কপালে আলতো চুম্মু খেয়ে বললো ‘ হেই নূর ইউ নো তোমরা এশিয়ান রা অনেক কিউট। জাস্ট বিকজ তোমরা অল্প তে খুবই লজ্জা পাও আর এটা আমার কাছে বেশি মোহনীয় লাগে।”
___” নূর নিচের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসলো।”
___” এরিক এক টান মেরে তার বুকে নিয়ে নিলো নূর কে আজ তার জীবনের সবচাইতে সুন্দরতম রাত লাগছে। নূর গুটিশুটি মেরে এরিকের বুকের সাথে মিশে আছে।
___” বেশ কিছুক্ষণ পর নূর এরিকের বুকে মুখ গুঁজে তাকে ডাকলো ‘ এরিক!”
___” এরিকের সহজ স্বাভাবিক প্রতিত্তোরে ‘ বলো?”
___” নূর শান্ত স্বরে বললো ‘ অনেক রাত হয়ে গিয়েছে আমাকে বাসায় যেতে হবে।”
___” এরিক উষ্ণ আর্দ্র গলায় বললো ‘ নো আজ তোমাকে আমার দুনিয়াতে থাকতে হবে।”
___” নূর চট করে মাথা তুলে বললো ‘ নো এরিক আজ না প্লীজ চলো এমনতে হঠাৎ এখানে নিয়ে এসেছো তুমি আমাকে।”
___” এরিক কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললো ‘ ওকে চলো।”
___” নূর দাঁড়িয়ে রইলো চুপ করে।”
___” এরিক সূক্ষ্ম কপাল কুঁচকে বললো ‘ কি হলো? চলো?”
___” নূর কাচুমাচু হয়ে নিজের ছিঁড়া জামা দেখিয়ে বললো ‘ আসলে আমি এই ভাবে কীভাবে যাবো?”
___” এরিক কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে নূীের থেকে সেকেন্ড সময় চেয়ে চোখের পলকে ভীতরে ডুকে গেলো। নূর কিছু বলার জন্য হা করার আগে এরিক জ্যাকেট হাতে ফিরে আসলো। নূর এক বড়সড় ঢোক গিললো। সর্বনাশ এটা কি দেখলো সে! কি অদ্ভুত শক্তিশালী হয়ে থাকে এই ভ্যাম্পায়ারা!”
___” এরিক নূর কে তার জ্যাকেট পড়িয়ে দিলো। এরিক নূরের চোখে আলতো করে সাইল্ড করে চোখ বন্ধ করিয়ে বললো ‘এই ভাবে চোখ বন্ধ রাখবে।”
___” এরিক নূরকে তার পিঠে উঠানোর সাথে সাথে, নূর নো বলে চট করে পিঠ থেকে নেমে গেলো তার চোখ মুখ ফ্যাকাশে।”
___” এরিক অবাক হয়ে বললো ‘ হোয়াট?”
___” নূর ভয়াতুর মুখে কাঁপা গলায় বললো ‘ আ-আমি এই ভাবে যেতে পারবো না।”
___” এরিক হেঁসে বললো ‘ এইভাবে তো তোমাকে আনলাম নূর।”
___” নূর জোরে জোরে না বোধক মাথা নেড়ে বললো ” না না আমি এইভাবে যাবো না।”
___” এরিক চট করে বালুতে বসে একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো ‘ ঠিক আছে আমার আপত্তি নেই, তুমি এখানেই রয়ে যাও কারণ এই ভাবে ছাড়া যাওয়া ছাড়া পথ নেই।”
___” নূর কিছুক্ষণ আহত মুখে তাকিয়ে থেকে বললো ‘ ঠিক আছে তুমি যেভাবে বলবে ঐভাবে যাবো।”
___” এরিক মুচকি হেঁসে নূর কে আগের মত করে পিঠে উঠিয়ে নিলো। নূর চোখ বন্ধ করে আষ্টেপৃষ্ঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো এরিকে। কিছুক্ষণ পর নূরের মনে হলো সে বাতাসের বেগে যাচ্ছে।”
___” অনেক সময় পর এরিক নূরের বারান্দায় এসে দাঁড়ালো নূর এখনও একি ভাবে শকে অভিভূত হয়ে আছে। এরিক নূরকে পিঠ থেকে ঘুরিয়ে বুকে নিয়ে আসলো। নূর স্তব্ধ, সে ঠকঠক করে এরিকের বুকে কাঁপছে। এরিক আলতো করে নূর কে মাটিতে দাঁড়া করালো।”
___”নূর চোখ মিটমিট করে খুলে দেখলো এরিক হাসছে, সে অসাধারণ দৃশ্য।”
___” নূর কপাট রাগ দেখিয়ে বললো ‘তুমি আবারও হাসছো!”
___” এরিক কন্ট্রোল করে বললো ‘ ঠিক আছে ভুল হলো যাও অনেক রাত হয়ে গেছে আমিও গেলাম।”
___” নূর লাজুক হেঁসে মাথা দুলিয়ে ভিতরে চলে গেলো। সে একটি হট শাওয়ার নিলো ঐ নোংরা ছেলেগুলো তার গায়ে হাত দিয়েছে তার শরীর যেনো ঘিনঘিন করছে। নূরের মুহুর্তে তখনকার কথা গুলো মনে পরে গেলো সে ঝর্নার নিচে হু হু করে কেঁদে দিলো। কি হতো আজ! যদি এরিক না আসতো! ঐ! ঐ মানুষ রুপে পিশাচ গুলো ওকে খুবলে খেতো।”
___” নূরের চট করে ছেলেগুলোকে মারা দৃশ্য মনে উঠলো কি যে ভয়ংকর মর্মাতিক ছিলো!”
___” নূর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ভুত দেখার মত চমকে উঠলো এরিক! এরিক তার বেডে বসে আছে।”
___” নূর এরিকে দিকে এগিয়ে ফিসফিস গলায় বললো ‘ এরিক তুমি যাও নি?”
___” এরিক নিশ্চুপ। সে তাকিয়ে আছে নূরের ভেজা স্নিগ্ধ রুপের দিকে।”
___” নূর এরিকের বাহু ধরে মৃদু ঝাঁকিয়ে বললো ‘ এরিক কি বলছি কি আমি!”
___” এরিক যেনো নিজের জগতে আসলো সে মুহুর্তে আরাম করে বিছানাতে শুয়ে বললো ‘ নো আজ আমি এখানে থাকবো তোমাকে একা পেলে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না।”
___” নূর ভয়ে লজ্জায় ফ্যাকাশে হয়ে বললো ‘ কি! এরিক আমি তো একা না সবাই আছে বাসায়।”
___” এরিক আরাম করে শুয়ে বললো ‘ না কেউ নেই শুধু ভিন বাদে, হেনার পরিবার একটা পূজো তে গেছে আজ আর ফিরবে না আর হেনা ১০ টার ফ্লাইটে ইংল্যান্ড গিয়েছে।!
___” নূর বিষ্ময় হয়ে বললো ‘ মানে! কিন্তু কেনো! হেনা ইংল্যান্ড কেন গেলো?”
___” এরিক বললো ‘ ওর বন্ধু এভরনের গ্যান্ড পা নাকি অসুস্থ সে এভরিনের সাথে গিয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে চলে আসবে।”
___” নূর দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো ‘ কোন সমস্যা নেই এরিক আমি সত্যি থাকতে পারবো।”
___” এরিক আচমকা টান দিয়ে নূরকে বিছানাতে ফেলে তার ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে বললো ‘ হুস,কোন শব্দ না। আমি তোমাকে কখনোই একা থাকতে দিবো না।”
___” নূর চোখ যেনো কোটর থেকে বের হওয়ার জোগাড় সে কাচুমাচু হয়ে এরিকের হাত আলতো করে সরিয়ে বললো ‘ তুমি এইভাবে এন দের কেন মারলে ওদের এইভাবে কষ্টকর মৃত্যু দেওয়া উচিত ছিলনা।”
___” এরিক তার চোখ মুখ কঠিন করে উঠে বসে বললো ‘ ওদের আরো পৈশাচিক মৃত্যু দিলেও আমার মন শান্ত হতো না। যারা যারা তোমার দিকে নোংরা নজর দিবে সবাই এই ভাবে মরতে হবে।”
___” নূরের চোখ অশ্রু এসে হানা দিলো আচ্ছা এতো ভালোবাসা তার কপালে সহ্য হবে তো!”
___” এরিক আহত গলায় বললো ‘ নূর তুমি কাঁদছো কেনো?!
___” নূর গুটিশুটি মেরে বিড়াল ছানার মতো এরিকে জড়িয়ে ধরে বললো ‘ নিজের সৌভাগ্য জন্য কান্না পাচ্ছো।”
___”এরিক মুচকি হেঁসে নূরকে চেপে ধরলো। কিছুক্ষণ পর এরিক খেয়াল করলো তার বুকে নূরের ভারী নিঃশ্বাস পড়ছে। এরিক আলতো করে নূরে বালিশে মাথা রেখে শুয়ে দিলো আর কম্বল টেনে দিয়ে সেইও কম্বলের ভিতরে ডুকে নূর কে বুকে নিয়ে নিলো।”
___” অনেক রাতে কেউ একজন নূরের দরজা মৃদু ধাক্কা দিলো। বার কয়েক নূর ম্যাম নূর ম্যাম করে ডাকলো, নূরের কোন হেলদোল নেই সে বাচ্চাদের মত লেপ্টে এরিকের বুকে ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু এরিক! সে এক সূক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রইলো দরজার দিকে।”
___”এরিক বুঝে গেছে এটা আর কেউ না ভিন কারন এরিক যতবারই এখানে এসেছিলো ভিনের লোভাতুর দৃষ্টি দেখেছিলো নূরের উপর। এরিক এখন চাইলেও ভিন কে কিছু করতো পারবে না কারন ভিন হেনাদের সাথে অনেক বছর থেকে আছে আর সবার আদরের। আর বাসায় নূর একা ফলস্বরূপ ওকে মারলে পুলিশ নিয়ে বিশ্রী পরিস্থিতি হবে।”
___” এরিক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে নূরের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকালো।”
___” এরিক বিড়বিড় করে বললো ‘ হেনা থেকে পাওনা জিনিস নিয়ে তাদের পরিবার কে মেরে তোমাকে নিয়ে দূরে চলে যাবো আমি নূর। আমাকে আমার জিনিস পেতে দাও এমন ভয়ংকর মৃত্যু তাদের দিবো যা চিন্তার বাইরে।”
___” ভিনের রাগে যেন শরীর জ্বলে যাচ্ছে। কখন আসলো এই মেয়েটি, সেটাই তো দেখলো না কত বড় সুযোগ তার হাত ছাড়া হলো দরজাই খুলছে না মেয়েটি।”
___” ভোর রাতে মিসেস ফিউরা আসে। তারপর এরিক নূরের কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় বিড়বিড় করে বললো ‘ আমার আই লাভ ইউর উত্তর পাওয়া এখানো বাকী আছে মাই বিউটিফুল স্লিপিং কুইন।”
___” নূরের গায়ে কম্বল ভালে মত মুড়িয়ে দিয়ে বের হয়ে গেলো এরিক। নূর মুচকি হেঁসে কম্বল মুড়ে অন্য দিকে ফিরে গেলো।”
___” এরিক, এভি, জেন, রিন আর রেন দাঁড়িয়ে আছে।”
___” এভি উৎসাহ ভরা গলায় বললো ‘ এরিক তুমি কি কাল নির(নূর) কে প্রপোজ করেছিলে?”
___” এরিক মুচকি হেঁসে উঠলো। এভি আর জেন হো হো করে হেঁসে এরিকে অভিনন্দন দিলো। রিন রেন বোকার মত সবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো।”
___” এশিয়ারা রঙ মাখামাখি করছে সবাই চমৎকার সাদা হলুদ ড্রেস পরে এসেছে। শুধুমাত্র এরিক বাদে সে সব সময় মত অতি দামী চমৎকার ব্র্যান্ডের ব্লাক কালারে পোশাক পরে এসেছে।”
___” এভি চমৎকার সাদা কালারে একটা পেন্সিল ড্রেস পরে এসেছে আর তার সাথে মিলিয়ে জেনও সাদা পরেছে। রিন রেন তাদের মত করে ড্রেসআপ করে এসেছে।এখানে আমেরিকানরা বেশির ভাগ তাদের প্রতিদিনের মত ড্রেসআপ দিয়ে এসেছে শুধু মাত্র এশিয়ান রা বাদে তাদের মধ্যে নতুনত্ব আভা ছড়িয়ে আছে।”
___” হঠাৎ ওয়াও বলে গন হাততালি আওয়াজ আর মৃদু চিৎকারে এরিকরা গেটের দিকে তাকালো ঐখানে ভিড় জমে আছে। শুধু একটি শব্দ শুনা যাচ্ছে হ্যাঁ বলো হ্যাঁ বলো।”
___” এরিকরা সবাই ভীড় সরিয়ে গিয়ে দেখলো, রাফেলের হলুদ রঙয়ের চমৎকার শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে নূর।এরিক যেনো মূর্তি হয়ে গেলো তার চোখ মুখে মুগ্ধতা খেলছে। নূর তার শাড়ির সাথে হলুদ রঙয়ের পুল-হাতা ব্লাউজ পরেছে, চুল সুন্দর করে খোঁপা করে তাতে তাজা হলুদ গোলাপ দিয়েছে। ঠোঁটে পিচ কালারে মহনীয় লিপস্টিক দিয়েছে। গলায় সুন্দর মালা পরেছে কানে চকচক করা হলুদ পাথরের দুল দিয়েছে কি যে সুন্দর লাগছে।”
___” এরিকের মুগ্ধতা দীর্ঘক্ষণ ঠাঁই হলো না কারণ নূরের সামনে হাঁটু গেঁড়ে একটি ডিজাইনার দামি আংটির বক্স হাতে বসে আছে ড্রেক তার চোখ মুখে হাসির ঝলক। এরিক তার হাত মুষ্ঠি করে ছুটে গেলো সে দিকে আজ ড্রেক তার হাতে মরবে।”

চলবে

অনেকেই আমাকে মেসেজ দিয়ে বলছে নায়িকার নাম জেসমিন কেন দি নেই তাই আমাকে এই ভাবে মোড় ঘুরাতে হলো গল্পের

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here