পরীর দেশের ডেভিল,পর্ব-১০

পরীর দেশের ডেভিল,পর্ব-১০
শাহরিয়ার আবিদ

-রাজকুমারী আবিদের মুখ চেপে ধরে রুমের ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল। রাজকুমারীর এমন আচরণ দেখে আবিদ ঘাবড়ে গেল। রাজকুমারী নিচু স্বরে আবিদ কে বলল। তুমি এখন আর কোনো কথা বলবেও না প্রশ্নও করবে না। শুধু আমি যা করতে বলব তাই করবে।
-কিন্তু কেন?(আবিদ)

-প্রশ্ন করতে নিষেধ করেছিলাম না। (রাজকুমারী)

আবিদ আর কিছু বলল না। চুপ করে খাটে বসে আছে।
-আমি জানি তুমি আমাদের সাহায্য করতে এসেছ। আজকে তোমাকে আমি এমন কিছু কথা বলব যা এর আগে আমি আর সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানে না। আর এখন তোমাকে বলছি, এর ফলে কাজটা করতে তোমার আরো সুবিধা হবে। আমরা পরীরা চাইলে ডেভিলকে মারতে পারব না। তারপরেও আমরা বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে করে কিছুটা সাহস হলেও সবার মধ্যে থাকে। আমরা এটা বুঝে গেছি আমাদের এই পরীর দেশের কাউকে দিয়ে ডেভিলদের মারতে পারব না। ডেভিলদের মারার জন্য কোনো মানবের প্রয়োজন। আমরা এমন একজন খুঁজছিলাম। দেখ আল্লাহ আমাদের জন্য তোমাকে মিলিয়ে দিয়েছে। সাথে তোমার দুই বন্ধুও। ….

আবিদ কিছু বলতে যাচ্ছিল। তখনি তাকে থামিয়ে দেয় রাজকুমারী।

আবার বলতে শুরু করে
-আমি জানি তুমি কি জানতে চাইতেছ, তোমার বন্ধুরা এখানে কেমনে? আমার রক্ষীরা তাদের ধরে নিয়ে আসে। ওরা এখানেই ঘোরা ফিরা করছিল। তাদের ধরে নিয়ে আসলে তখন ওরা তোমার কথা বলে তোমার খুঁজে এসেছে জানায়। তার প্রমাণ স্বরুপ ওরা ধোঁয়া মানবে আংটিটা আমাকে দেখায়। আর ওদের আমি দেখেছিলাম জঙ্গলে যখন তোমাকে অজ্ঞান অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছিল। তখন আংটিটা আমি ছুড়ে মারি এমন ভাবে যাতে ওরা দেখতে না পারে, ঠিক যেমনটা৷ চেয়েছিলাম তেমনটায় হয়েছিল। (রাজকুমারী)

তখনি রাজকুমারী তার হাতের আঙ্গুলের ইশারায় আলোর কিছু রশ্নি ছোড়ে মারে। আবিদ কিছু বোঝে ওটার আগেই। সে অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে পড়ে যায়।

-রাজকুমারী রুম থেকে বের হয়ে গেল। রুমের মধ্যে পড়ে আছে আবিদ । রাজকুমারী বের হয়ে দরজাটা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিল।

রাজকুমারী বের হয়ে নিচ তলায় চলে গেল। সেখানে একেবারে রাজপ্রাসাদের কোণার রুমটাতে চলে এসেছে । এসেই টুক করে রুমটাতে ঢুকে পড়ল। ওখানে প্রায় মরার মত পড়ে আছে রাফা আর সাইমন।

রাজকুমারী কিছু পানি নিয়ে তাদের মুখে ছিটিয়ে দিতেই। দুজনেই ধীরে ধীরে চোখ খুলল। প্রথমে বুঝতে পারল না তারা কোথায় আছে, শেষে মনে পড়ল তাদের। রাজকুমারী দুজনকে প্রশ্ন করল,
-তোমাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য কি? (রাজকুমারী)

-রাজকুমারী আমরা আমাদের বন্ধুকে ফিরিয়ে নিতে এসেছি। আর আপনাকে সাহায্য করতে এসেছি।
রাজকুমারী স্লান একটু হাসল। হাঁসি দিয়েই রুম থেকে বের হয়ে গেল ৷ বের হওয়ার পর…

-আমার কেমন জানি রাজকুমারীর উপর সন্দেহ হচ্ছে। (রাফা)

-ধুত্তুরি তোর শুধু সন্দেহ হয়। এদিকে আমি এভাবে আর কিছু খেতে না পারলে মরে যাবে। পেটের মধ্যে যে ইঁদুর ছানা দৌড়াচ্ছে। (সাইমন)

-আচ্ছা সাইমন তোকে আমি একটা জরুরি কথা বললাম। আর তুই বলতেছিস খাবার কথা। তুই তো সারাদিন খাস তারপরেও মোটাও হসনা। আর এত খাস খাবার যায় কোথায়। তোর সাথে নির্ঘাত জ্বীন আছে। (রাফা)

-দেখ জ্বীন টিন এসব মিথ্যা কথা আমি এসব বিশ্বাস করি না। (সাইমন)


-আগে তো পরীও বিশ্বাস করতি না। আচ্ছা বাদ দে কাজের কথায় আয়, আমার মনে হচ্ছে এখানে কোথাও সমস্যা হচ্ছে। রাজকুমারীর উপর কেমন যেন আমার সন্দেহ হচ্ছে৷

-কেন রে? (সাইমন)

– না এমনেই কেন জানি। আর আমরা তো ওদের সাহায্য করতে আসছি তাহলে আমাদের এখানে এভাবে ফেলে রাখল কেন? আর আবিদের সাথে কেন দেখা করতে দিচ্ছে না। কিছু একটাতো সমস্যা আছে এখানে। (রাফা)

-হু,, তাই তো বিষয়টা আমি একেবারেই ভেবে দেখিনি। (সাইমন)

– যে করেই হোক আমাদের এখান থেকে বের হয়ে আবিদের সাথে দেখা করতে হবে। (রাফা)

-কিন্তু কিভাবে? (সাইনন)

-উপায় তো একটা না একটা থাকবেই৷ (রাফা)

এভাবে কিছুটা সময় ভাবতে ভাবতে নিরবে কেটে গেল,,,,, তারপর একটা পরী এসে সাইমন আর রাফাকে খাবার দিয়ে গেল৷

– উঁহু এখানে তো বার্গার, স্যান্ডউইচ, স্টব্রেরির প্রোটিন শেক, কোল্ড ড্রিংকস কিছুই দিল না৷ সব তো দেখি ফল আর ফলের রস৷ (সাইমন)

-এটা কি পৃথিবী পাইছস৷ যে তোকে বার্গার, চিকেন দিবে। (রাফা)

এদিকে সাইমন স্বশক্তিতে খাবারের উপর আক্রমণ করেছে। খেতে খেতে সাইমন বলল,,,,
-আহ, খাবার সত্যি দারুণ অনেক মজা। (সাইমন)

রাফা সাইমনের খাওয়া দেখে আর কিছু বলল না।
দুজনে খেয়ে নিল খাবার গুলো। আবার আরেকটা পরী এসে তাদের খাবারের পাত্রগুলো নিয়ে গেল। তারপর মিনিট দশেকের ভিতর, সাইমন আর রাফা মাঠিতেই পড়ে গেল।

….

আবিদ এখনো অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে পড়ে আছে। তার দরজায় বাইরে থেকে বন্ধ করা। আবিদ এভাবে কতক্ষণ পড়ে ছিল তা জানা নেয়। তবে যখন তার জ্ঞান ফিরল তখন সে নিজেকে মেঝেতে, বন্ধ ঘরে আবিষ্কার করল।

আবিদ বেশ ক্লান্ত। শরীরের যেন বিন্দু মাত্র শক্তি অবশিষ্ট নেই। তারপরেও কোনো রকমে ওঠে দাঁড়াল । দূর্বল পায়ে টলতে টলতে দরজার কাছে পৌঁছায়। দরজা আর খুলতে পারে না। ভেতর থেকে আবিদ অনেক ডাকাডাকি করল কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নেই। এভাবে প্রায় অনেক্ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কোনো উত্তর পেল না। ওখানেই বসে পড়ল ক্লান্ত দেহটা নিয়ে। তার মাথায় নানা রকম চিন্তা এসে হানা দিয়েছে,,, চিন্তা হওয়ারি কথা,, এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। আবিদ শেষ মেষ কোনো উপায় না দেখে, নিজের শক্তি ব্যবহার করা কথা চিন্তা করল। আবিদ জানে সে অন্য সবার চেয়ে আলাদা, তার কাছে অদ্ভুত কিছু ক্ষমতা যা স্বাভাবিক কোনো মানুষের নেই। কিন্তু সে কখনে এ শক্তি ব্যবহার করেনি, এবার প্রথমবারের মত সেই শক্তি ব্যবহারের স্বিদ্ধান্ত নিল।

আবিদ তার চোখটা বন্ধ করল। এরিমধ্যে তার চোখে জ্বালা করতে শুরু করেছে এভাবে প্রায় মিনিট চারেক চোখ বন্ধ করে থাকার পর তার চোখ খোলার সাথে দরজার দিকে থাকাতেই দরজা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। আবিদের সম্পূর্ণ চোখ লাল হয়ে আছে৷

আবার চোখ বন্ধ করার কয়েকমিনিটের মধ্যেই চোখ আবার স্বাভাবিক বর্ণ ধারণ করল। এবার রুম থেকে বের হল। আগের মত দূর্বল আর লাগছে না।

রুমের বাইরে কাউকে দেখতে পেল না৷ পুরো রাজপ্রাসাদ ঘুরে দেখল, কেউ নেই রাজপ্রাসাধে ….

এই পর্বটা কেমন হয়েছে জানাবেন – নাইছ , নেক্সট ছাড়া গঠন মূলক কমেন্ট আশা করব৷

-চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here