অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্বঃ ২৩+২৪
আইরিন সুলতানা
পর্বঃ ২৩
সব ক্লাস করে বাসায় যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে পড়লাম আমরা। কিছুদুর যেতেই আমার জুতা গেল ছিড়ে। মাঝ রাস্তার এরকমভাবে জুতা ছিড়ে গেলে কেমনডা লাগে। এখন আর কি করবো জুতা খুলে খালি পায়ে হাটা শুরু করলাম। একটু এগিয়ে যেতেই অনুভব করলাম আমি একাই হাটছি আর সব শয়তান গুলা পেছনে আছে। ঘার ঘুড়িয়ে পেছনে তাকাতেই তিথি বলল…
পায়ে ব্যাথা পাচ্ছিস না তুই।
একটু ব্যাথা তে কিছু হবে না চল বাসায় যাই -আমি।
ওকে চল। হিয়ার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো – নিলা।
আমি তো ভাবলাম….
কি ভাবছিস (আমাকে আটকে দিয়ে) ফিল্মের মতো আপনার সাথে খালি পায়ে হাটবো.. সেগুরে বালি পাশে একটা শপ আছে ওখান থেকে জুতা কিনে নিয়ে আসেন যান – নিলা।
লাগবেনা আমার জুতা আর না তোদের থাক তোরা (গাল ফুলিয়ে হাটা শুরু করলাম) – আমি।
আরে হিয়া (আমার কাছে এসে) রেগে যাচ্ছিস কেনো। নিলা তো মজা করেছে – শান্তা।
রেগে যাই নি আমি। রাস্তা ছাড় বাসায় যাই আমি – আমি।
শান্তা কেনো এরে আটকাইতেছিস যাইতে দে না। রাস্তার মঝ্যে ছেছড়ামি না করলেও পারিস ( হাসি কন্ট্রোল করার চেষ্টা) – নিলা।
কুত্তি (নিলা দৌড়) দৌড়াস কেন দারা এখন – আমি।
আমিও নিলার পিছনে দৌড়… অনেকক্ষণ ছুটাছুটি করে একসময় দুজনেই হাপিয়ে গেলাম।
ঐ শয়তানী আর দৌড়াতে পারবো না বলে দিলাম – নিলা।
এখন তাহলে মার খা ফ্রি তে ( মার দিলাম) – আমি।
উফ কুত্তি ব্যাথা পাইছি তো – নিলা।
আপনাদের ঢং শেষ হলে চলেন বাড়ি যাওয়া যাক – শান্তা।
কেনো আমাদের দেখে হিংসা হয় – নিলা।
তোদের হিংসে করতে যাবো কেনো,, তোরা তো আমাদেরি বজ্জাত বন্ধু – তিথি।
আচ্ছা চল। আর হা সবগুলা জুতা হাতে নিয়ে খালি পায়ে হাটবি নইলে যাইতে দিমু না – আমি।
আমি খুলবো না – নিলা।
তুরে জুতা খুলতে বলছি – আমি।
তারপর আর কি সবগুলারে খালি পায়ে হাটিয়ে বাড়িতে নিলাম। আমার বাসার কাছে আসতেই আমার পায়ে একটা কাচ ফুটে গেল। অনেক কষ্টে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাসায় আসলাম। কলিংবেল বাজানোর পর মামনি এসে দরজা খুলে দিলো। মামনির হাতে ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে আমি সোফায় গিয়ে বসলাম।
মামনি ব্যাগ হাতে নিয়ে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আৎকে উঠে। অস্থির হয়ে আমার পাশে এসে আমাকে প্রশ্ন করে..
পায়ে কি হয়েছে তুর.. এতো রক্ত কিভাবে দেখি আমাকে পা দেখা – মামনি।
নায়ায়া আমার পায়ে কাচ ফুটেছে ব্যাথা করছে ধরবে না তুমি আমাকে ব্যাথা দিবে না বলে দিচ্ছি – আমি।
হিয়া লক্ষি মা আমার। আমাকে একবার পা”টা দেখতে দে মা আমার। একটুও ব্যাথা দিবোনা – মামনি।
না আমি ব্যাথা পাবো এ্যা এ্যা এ্যা (মামনি পায়ে হাত দিতে নিলে) তুমি আমার পা ধরবে না। তাহলে কিন্তু আমি চলে যাবো। ভ্যায়ায়ায়া (ভয়ে কান্না করে দিলো) তুমি সর এখান থেকে – আমি।
বুঝেছি তুই এভাবে দিবি না। রায়হান জলদি নিয়ে আয় তো হিয়া পা কেটে বাসায় এসেছে এখন পা ড্রেসিং করতে দিচ্ছে না – মামনি।
তুমি তোমার দজ্জাল ছেলেকে ডাকলে মামনি এখন সে আমাকে ব্যাথা দিবে – আমি।
তখনি রায়হান সিরি দিয়ে ছুটে এসে হিয়ার পায়ের কাছে বসে। পা”টা দেখতে থাকে।
ইস কতোখানি রক্ত পড়েছে। তুরে ঠাটিয়ে একটা থাপ্পড় লাগানো উচিত এখন। আম্মু ফাস্টএইড বক্সটা দাও আমার হাতে – রায়হান।
এজন্যই বলেছি এনাকে ডেকো না। আয়ায়ায়া ধরবে না আমার পা। ভাইয়ু আমার পা ব্যাথা হচ্ছে – আমি।
আচ্ছা যা পা ছেড়ে দিলাম। আচ্ছা হিয়া তুর মনে আছে ছোট বেলায় আমি তুর পুতুলগুলো নিয়ে নিতাম – রায়হান।
হুম সব মনে আছে। তুমি আমার পুতুল বউ গুলো নিয়ে নিতে। তারপর তাদের সুন্দর করে সাজিয়ে আমার পুতুল বরদের সাথে বিয়ে দিতে। (তখনি রায়হান হিয়ার পা থেকে কাচটা বের করে নেয়) উফ আবার ব্যাথা শুরু হয়েছে আমার পা’য়ে আম্মু আমি মরে যাবো আজকে। আমার সব রক্ত চলে গেছে গো। তোমার মেয়েকে আর দেখতে পাবেনা গো আম্মু আমি আজকে শেষ। ( বিড়বিড় করে বলছে)
হিয়া যতক্ষণ এসব বকবক করছিল তখনি রায়হান অনেক যত্ন করে হিয়ার পায়ের রক্ত গুলো পরিষ্কার করে ভালো করে ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ করে দিল। তারপর হিয়াকে কোলে নিয়ে রুমে এসে বিছানায় শুয়িয়ে দিল।
এখন চুপটি করে শুয়ে থাক আমি বাহিরে যাচ্ছি কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো। আর আম্মু খাবার নিয়ে আসলে লক্ষি মেয়ে হয়ে খেয়ে নিবি কেমন – রায়হান।
আমি মাথা নাড়িয়ে হা বুঝালাম। তারপর ভাইয়ু চলে গেলো তার কাজে। ভাইয়ু যাওয়ার পর মামনি খাবার নিয়ে রুমে এলো আমিও চুপটি করে খেয়ে নিলাম নয়তো ভাইয়ু এসে রাগ দেখাবে। তখন আবার আমার পায়ে ব্যাথা দিবে।
রায়হান বাসা থেকে বেড়িয়ে ডক্টরের চেম্বারে যায়। তারপর ডক্টরকে হিয়ার পা’য়ের কন্ডিশন জানায়। তারপর ঔষধ নিয়ে বাসায় ফিরে আসে। বাসায় এসেই আগে হিয়ার রুমে যায়।
ভাইয়ু আমার রুমে আসে তারপর আমাকে কয়েকটা ঔষধ খায়িয়ে দেয়। পৃথিবীতে সবচেয়ে বাজে হচ্ছে এই ঔষধ আমার একদমি ভালো লাগেনা ঔষধ খেতে। তাও এখন চুপ করে খেয়ে নিলাম নয়তো আমাকে তুলি আছাড় দিবে এখন।
তারপর ভাইয়ু চলে গেলো তার কাজে। আমি একা একা বসে থেকে বোর না হয়ার থেকে ঘুমাই এটাই ভালো হবে। তাই আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লাম।
রায়হান কাজ শেষে বাসায় ফিরে প্রথমেই হিয়ার রুমে যায় কারন ডক্টর বলেছিলেন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হিয়ার জর আসতে পারে। হিয়ার রুমে দেখে হিয়া গুটিসুটি হয়ে ঘুমিয়ে আছে। আর কাঁপছে। তাই রায়হান হিয়ার কাছে গিয়ে কপালে হাত দেয়। ‘আল্লাহ এ মেয়ের শরির জ্বরে পুরে যাচ্ছে ‘ রায়হান জলদি কাবার্ড থেকে একটা কম্বল নামিয়ে হিয়ার গায়ে দিয়ে দেয়। তারপর রান্নাঘরে এসে হালকা ঠান্ডা পানি একটা বাটিতে নিয়ে হিয়ার রুমে এসে জলপট্টি দিতে শুরু করে।
আমি ঘুম থেকে উঠেই আবিষ্কার করলাম আমার শরির প্রচুর পরিমাণে ব্যাথা করছে। আরে আমার উপর কম্বল দিলো কে। তখনি পাশে তাকিয়ে দেখি ভাইয়ু খাটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। এভাবে থাকলে ঘাড় ব্যাথা করবে তাই আমি ভাইয়ু কে ডাকলাম।
ভাইয়ু এভাবে ঘুমিয়ে আছো কেনো (হালকা ধাক্কা দিয়ে) – আমি
ওহ তুই উঠে পড়েছিয়া। দেখি জ্বর কেমন এখন (কপালে হাত দিয়ে) – রায়হান।
আমার আবার জ্বর আসলো কখন। আর শরির এতো ব্যাথা করছে কেনো উফ – আমি।
সারাবিকেল আপনার জ্বর ছিল এখন একটু কমেছে। আর জ্বর থেকেই শরির ব্যাথা হচ্ছে – রায়হান।
আচ্ছা দেখি সরো আমি পড়তে বসি,, ইংরাজি পড়া পড়িনি এখনো পড়া না দিতে পারলে স্যার বকবে আয়ায়ায়ায়া ( হাটতে নিলে পায়ে ব্যাথা পাই) উফ – আমি।
আবার ব্যাথা পেলি তো এক দন্ড শান্তিতে বসতে পারিস না তুই ( খাটে বসিয়ে দিলাম) এখান থেকে উঠবি না। কিছুদিন কলেজে যেতে হবে না আমি সোহাগ স্যারকে ফোন দিয়ে বলেছি তুই অসুস্থ কিছুদিন কলেজে যেতে পারবি না – রায়হান।
বইগুলো একটু এখানে এনে দাও না। এখানে বসেই কিছুক্ষণ পড়ি আমি – আমি।
আচ্ছা। এনে দিচ্ছি তবে বেশিক্ষণ পড়তে হবে না ( বই এনে দিয়ে) একটু পড়ে এসে নিচে নিয়ে যাবো আপনাকে – রায়হান।
To be continue……..
অপ্রকাশিত ভালোবাসা
আইরিন সুলতানা
পর্বঃ ২৪
শয়তানটা (রায়হান) চলে যাওয়ার পর আমি আড়ামসে পড়তে বসলাম। কিছুদিন পর আমার ইয়ার চেঞ্জ এর পরিক্ষা। আর আমার ক্রাশ এর বিষয়ে আমাকে ভালো রেজাল্ট করতেই হবে। ফালতু চিন্তা সব ঝেড়ে ফেলে দিয়ে মন দিয়ে পড়তে হবে। নয়তো পরিক্ষায় গোল্লা পাবো। কিছুক্ষণ পড়ার পড়ে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসলো। আমি আবার অচেনা কারো সাথে কথা বলিনা। অনেকবার কল আসছে দেখে কল টা রিসিভ করলাম,,,
আসসালামু আলাইকুম,,,, কে বলছেন – আমি।
ওয়ালাইকুম আসসালামু,,, মেহেরাজুল বলছি তোমার ইংরেজি শিক্ষক – স্যার।
সরি স্যার। আমি চিনতে পারি নি,,, কেমন আছেন স্যার – আমি।
আলহামদুলিল্লাহ,,, তুমি নাকি অসুস্থ কি বাধালে আবার – স্যার।
তেমন কিছু না স্যার। আসলে কলেজ থেকে ফিরার পথে পায়ে কাচ ফিটে গিয়েছিল। আর তাই সবাই আমাকে অসুস্থ রোগি বানিয়ে দিয়েছে – আমি।
কি বাঁদরামি করতে গিয়ে পায়ে কাচ ফুটিয়েছ – স্যার।
কিছুই না স্যার আমার মতো ভালো লক্ষি মেয়ে কি কোনো বাঁদরামো করতে পারি নাকি বলুন। আমি তো ভদ্র মেয়ে – আমি।
বাব্বাহ নিজের গুনগান নিজেই করা হচ্ছে দেখছি ( হালকা হেসে) – স্যার।
এইতো স্যার আপনাকে না এভাবে হাসলেই সুন্দর দেখায়। সারাক্ষণ মুখটা পেচার মতো না রেখে মাঝে মধ্যে একটু হাসবেন ভালো লাগবে – আমি।
আচ্ছা তুমি সুস্থ হলে ক্লাসে এসো এখন আমি রাখছি। তোমার ক্লাস টিচার আমি তাই আমার কর্তব্য ছিল তোমাকে ফোন দিয়ে কি হয়েছে জানা। এখন রাখছি – স্যার।
ওকে,,,স্যার ভালো থাকবেন,,, আল্লাহ হাফেজ,,,- আমি।
যা বাবা ফোন কেটে দিল। খরুস স্যার একটা একটু ভালো করে কথাও বলতে পারে না। যাক গে আমি আমার পড়া পরি। ,,,,, তারপর নিজের পড়ায় মন দিলাম। ১০ টার দিকে ভাইয়ু এসে কোলে নিয়ে ডাইনিং টেবিলে নিয়ে গেল। এই মানুষটা বুঝেনা সে আমার কাছে আসলে আমার হার্টবিট মিস করে। আমি সহ্য করতে পারিনা তার কাছে আসাটা। মনে হয় সুখের সাগরে ভেসে যাচ্ছি। (রায়হানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছিল)
মামনি মামু তোমার ছেলে আমাকে রোগি বানিয়ে দিয়েছে। আমি একদম ঠিক আছি কিন্তু সে সেটা মানছে না। আমাকে ঠিক মতো পড়তে ও দিচ্ছে না। কিছুদিন পর আমার পরিক্ষা এখন না পড়লে পরিক্ষায় কি দিবো বলো তো – আমি।
হিয়ামনি তুমি একটু অসুস্থ এখন তাই অল্প করে পড়। একটু সুস্থ হলে তখন না হয় অনেক রাত পর্যন্ত পড়ে সবটা সামাল দিয়ে নেবে – মামু।
কিন্তু মামু আমাকে তো ভালো রেজাল্ট করতে হবে সোহাগ স্যারের প্রত্যেকটা কথার জবাব আমাকে আমার রেজাল্টের মাধ্যমে দিতে হবে। প্লিজ আমার পড়া নিয়ে তোমরা কিছু বলবে না – আমি।
আজ আর কাল এই দু’টা দিন কম পড় তারপর থেকে তুর ইচ্ছে মতো সবকিছু হবে। আর কোনো কথা বলবি না এটা নিয়ে তাহলে কিন্তু আমি তুর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিবো – মামনি।
ধুর তোমরা সবাই খুব খারাপ খুব পচা সামান্য একটু জ্বরের জন্য আমাকে পড়তে দিচ্ছে না কেউ বাজে লোক সবাই – আমি।
হয়েছে মুখ ফুলাতে হবে না। হা করো (খাবার মুখের সামনে এনে) বেশি পাকামো না করে আমরা যা বলছি সেটা শুনতে হবে তোমাকে বুঝেছ – মামনি।
আচ্ছা তোমরা সত্যি করে বলো তো আমাকে কি হসপিটাল থেকে কুড়িয়ে এনেছিলে। সবাই হিয়াকে আদর করো সবসময় আমাকে চোখেও দেখোনা – রায়হান।
দেখেছো তোমাদের ছেলে আমাকে কিভাবে হিংসে করে হিংসুটে কোথাকার – আমি।
এহ আর তুই যে একাই আমার আব্বু আম্মুর আদর খাচ্ছিস সেটার বেলা কিছু না তাই না। তুই তো ভারী দজ্জাল মেয়ে অন্যের আদরে এসে ভাগ বসিয়ে নিলি – রায়হান।
আমি দজ্জাল না তুমি দজ্জাল তুমি বজ্জাত তুমি তেলাপোকা তুমি তুমি পশু খেকো রাক্ষস সব সব তুমি – আমি।
রায়হান আর হিয়া দুজনে ঝগড়া করছে। মিঃ শরিফ এবং মিসেসঃ সেলিনা টেবিলে বসে এদের দুজনের ঝগড়া উপভোগ করছে। একসময় মিসেসঃ সেলিনা এদের থামায়,,,
থামবে দুজন এতো বড় হয়েছে তাও সারাক্ষণ সাপে নেউলের মতো লেগে থাকে,, আর একটা সাউন্ড হলে দুজনকে মেরে রুমে পাঠাবো আমি – মামনি।
মামনির কথা শুনে আমরা দুজনেই চুপ করে খাবার শেষ করলাম। তারপর কিছুক্ষণ গল্প করে মামনি ভাইয়ু কে বলল আমাকে রুমে দিয়ে আসার জন্য। মামু সেই কখন রুমে চলে গিয়েছে। মামনি ও রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো। সেই সুযোগে ভাইয়ু আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আবার সেই অনুভূতি এই অনুভূতি আমাকে এভাবেই মেরে ফেলবে। আমি ভাইয়ুর বুকে কান পেতে তার হার্টবিটের শব্দ শুনলাম কিছুক্ষণ তারপর বুক থেকে কান সরিয়ে নিলাম। এভাবে কিছুক্ষণ থাকলে নিশ্চিত আমি হার্টফেল করবো। ভাইয়ুর ডাকে আমি নিজের কল্পনা থেকে বেড়িয়ে এলাম,,
কিরে কতোক্ষণ ধরে ডেকে চলেছি কোন রাজপুত্তুরের সপ্নে বিভোর ছিলি। দরজার লক টা খোল – রায়হান।
আছে আমার কতো রাজপুত্র। তোমার এতো কি হ্যা – আমি
এক থাপ্পড় লাগাবো এখন বড়দের সামনে কতোটুকু বলতে হয় সেটাও শিখিস নি দেখছি – রায়হান
ইস রে কি আমার বড় মানুষটা আসছেন। নামাও দেখি আমাকে আমি কি বাচ্চা যে এভাবে কোলে নিয়ে রেখেছো – আমি।
স্বীকার করছিস যে বড় হয়েছিস। ফুপা ফুপিমা কে বলতে হবে তাদের মেয়ে বড় হয়েছে বিয়ের ব্যবস্থা করতে হবে – রায়হান।
না আমি তো ছোট পিচ্ছি বাচ্চা,,, তাই না ( দাত বের করে হেসে) সারাক্ষণ কোলে নিয়ে রাখো কেমন
( খচ্চর বেটা,বিয়ের ভয় দেখাস আমাকে তোরে মন চাইতাসে কাইটা বিলাতি নদীতে ভাসায় দেই,,, তাহলে শান্তি আর শান্তি – মনে মনে) – আমি
ঐ তুই আবারো আমাকে মনে মনে বকা দিচ্ছিস তাই না – রায়হান।
কই না তো। তুমি কতো ভালো তোমাকে আমিমি বকা দিতে পারি বলোতো,, আমাকে কতো ভালোবাসো আমার কতো ভালো ভাইয়ু তুমি ( হুদাই তুরে পাম মারতেসি দেহি ফুলস নাকি) – আমি।
আমাকে বকা দেয়া শেষ হলে এবার চুপটি করে ঘুমান ( বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে ) ফোন টা হাতে নিলে কালকে চকলেট পাবেন না – রায়হান।
না আমার চকলেট লাগবে তো আমি ফোন হাতেই নিবোনা আমি কি ফোন চালাতে পারি বলো আমি তো পারি ই না আমি তো এখন ঘুমাবো তুমি যাও গিয়ে ঘুমিয়ে পড় – আমি।
ভাইয়ু চলে গেলো আমি উঠে বসে পা’টা কিছুক্ষণ দেখলাম,,, বাপ রে আমার শরির থেকে কতখানি রক্ত পড়েছে। ভাগ্যিস পায়ের দিকে তাকাই নি বাসায় আসার পথে। তাকালে ওখানেই জ্ঞান হারাতাম। এতো কিছু না ভেবে এখন আমি ঘুমাই। আপনারাও ঘুমিয়ে পরেন।
___________________________
আজকে সকালে আমার ঘুমটা একটু দেড়ি করে ভাঙল। রোদের আলো মুখে পড়ায় ঘুম চলে গেলো আমার। আমি আরমোরা ছেড়ে উঠে দেয়াল ধরে একপায়ে কোনোরকম ভাবে ওয়াশরুমে পৌছালাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে আবার বিছানায় এসে বসলাম। তারপর,,,,,
To be continue….