গল্প: অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্ব:৩ +৪

গল্প: অপ্রকাশিত ভালোবাসা,পর্ব:৩ +৪
লেখা: আইরিন সুলতানা
পর্ব: ৩

বিকেলে মি. শরিফ আর রায়হান বাসায় আসে…..

রায়হান: হিয়া স্কুল কেমন কাটলো আজ।

হিয়া: অনেক ভালো মামু। তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে একবার রুমে যাও। 😁😁

মি. শরিফ: নিশ্চয় এই মেয়ে আবার কিছু বলেছে সেলিনা কে আল্লাহ আমাকে আজ রক্ষা করো ঐ রণচণ্ডী মহিলার থেকে। ( মনে মনে )

মি. শরিফ ধীর পায়ে রুমে গেলো তবে মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছে যাতে কোনো ঝড় না আসে

রায়হান: হিয়া কি করেছিস আবার জলদি বল নয়তো তুর আজকের চকলেট বাদ। ( এক হাতে চকলেট নিয়ে)

হিয়া: আরে ভাইয়ু আমি তো কিছুই করিনি শুধু বলেছি পাশের বাসার আন্টির সাথে আজ মামু রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। ( ভেবলা মার্কা হাসি দিয়ে ) আমার চকলেট দাও এবার প্লিজ ( Innocent face বানিয়ে )

রায়হান: আল্লাহ আমার বাপ কে রক্ষা করো। ( হালকা হেসে ) হিয়া চল ঝগড়া দেখে আসি।

হিয়া: ১ ২ ৩ দৌড়…………..

হিয়া আর রায়হান এক দৌড়ে মি. শরিফ এর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়…..

In room…..

সেলিনা: আমার ঘরে কি তোমার যাও বের হও আমার রুম থেকে এখনি বের হবে।

মি. শরিফ: সেলি শোননা আরে পাশের বাসার ভাবির ছেলে আমাদের স্কুলে পড়ে তাই দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম।

সেলিনা: কথা বলো আমি কি ধরে রেখেছি নাকি তোমাকে যাও এখনো গিয়ে কথা বলে এসো।

মি. শরিফ: লক্ষি বউ আমার রাগ করেনা। তুমি জানোনা তোমাকে আমি কতো ভালোবাসি। ( জরিয়ে ধরে)

সেলিনা: হইছে আর ঢং দেখাতে হবে না। ছাড়ো।

মি. শরিফ: হুম। আচ্ছা শোন রায়হান আর হিয়াকে একটু ডেকে দাও তো কথা আছে ওদের সাথে।

সেলিনা: আমি ডেকে দিচ্ছি।

রায়হান: আর ডাকতে হবে না আমরা এখানেই আছি।😁😁

মামনি: তোরা এখানে কি করছিস।😡😡

হিয়া: প্রেম করা দেখছিলাম।😃

মামনি: লুকিয়ে লুকিয়ে কথা শুনা হচ্ছিলো তাই তো। ( ভ্রু কুচকে বলল।)

রায়হান: না না আমরা তো একটু আগে আসলাম তাই না হিয়া😁😁।

হিয়া: হু হুম মামনি একটু আগেই আসছি।

মামু: হইছে আর নাটক করতে হবে না আমি ভালো করেই জানি কে কখন এসেছিস।

হিয়া: মামু তুমি কতো ভালো সব বুঝে যাও। ( জরিয়ে ধরে)

মামনি: হইছে আপনাদের ঢং করা। তুর মামু তোদের কি বলবে শুনে যা।

রায়হান: বলো আব্বু।

মি. শরিফ: রায়হান কাল তুমি হিয়া কে স্কুল পৌছে দিয়ে একটু কিন্ডারগার্টেন এ যেতে হবে কাল একজন শিক্ষক থাকবেনা তার হয়ে ক্লাস করতে হবে।

রায়হান: আচ্ছা ঠিক আছে। হিয়া ঘুমাতে চল।

তারপর সবাই নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে আযানের শব্দ শুনে হিয়ার ঘুম ভেঙে যায় তাই সে ঘুম থেকে উঠে ওজু করে নামায পরে আবার ঘুমিয়ে যায়।

সকাল ৭:৩০……

মামনি: রায়হান অনেক বেলা হয়ে গেছে তো হিয়া কে ডেকে ঘুম থেকে উঠা যা। ( রান্নাঘর থেকে চেচিয়ে)

রায়হান: যাচ্ছি মা।

রায়হান হিয়ার রুমের সামনে গিয়ে দেখে হিয়া টেডি জরিয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। ও গিয়ে হিয়ার পাশে বসে আর বলে……..

চলবে……….

গল্প: অপ্রকাশিত ভালোবাসা
লেখা: আইরিন সুলতানা
পর্ব: ৪

রায়হান রুমে গিয়ে দেখে হিয়া বাচ্চাদের মতো একটা টেডি জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। ও গিয়ে কিছুক্ষন হিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।…..

রায়হান: এই মেয়েকে ঘুমের মধ্যে এতো সুন্দর কেনো লাগে বুঝিনা আমি। রাতেও মেকআপ করে ঘুমায় নাকি। 😂😂

রায়হান: হিয়া ঐ হিয়া উঠ আর কতো ঘুমাবিরে বাবা উঠ না। স্কুল যেতে হবে তো নাকি। ( হিয়াকে হালকা ধাক্কা দিয়ে ডাকছে )

হিয়া: …………………………… ( No response )

রায়হান: ঐ মাইয়া উঠবি নাকি পানি আইনা ঢালবো আমি। ( বিরক্ত হয়ে )

হিয়া: …………………………..

রায়হান: উফ এ মেয়েকে ঘুম থেকে উঠানো মানে ৩য় বিশ্ব জয়ের সমান । ( মাথায় হাত দিয়ে কিছু ভেবে ) Idea……. তেলাপোকা হিয়া তেলাপোকা আসছে ইয়ায়ায়া বড় তেলাপোকা তুর দিকেই যাচ্ছে রে। ( হিয়ার কানের কাছে চিল্লিয়ে বলল।) 😂😂😂

হিয়া: আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া কই তেলাপোকা। আল্লাহ বাচাও আমি আর দুষ্টুমি করবো না লক্ষি মেয়ে থাকবো তেলাপোকা আমাকে খেয়ো না প্লিজ প্লিজ প্লিজ আমি তোমাকে চকলেট দিবো আমাকে না খেলে প্রমিস তাও আমাকে খেয়ো না প্লিজ। ( চোখ বন্ধ করে চিল্লাচ্ছে )

এদিকে হিয়ার অবস্থা দেখে রায়হান হাসতে হাসতে পেটে হাত দিয়ে বসে পড়েছে তাই হাসি থামছেনা। 😂😂😂😂😂

রায়হান: পুরাই বিনোদন থাম হিয়া আর বলিস না আমার পেট ব্যাথা হয়ে গেছে হাসতে হাসতে। আর পারছি না হাসতে চুপ কর তুই। 😂😂 ( এখনো হাসছে )

হিয়া: চোখ খুলে দেখে কোনো তেলাপোকা নেই আর রায়হান পেটে হাত দিয়ে হাসছে।
হিয়া: ভাইয়ু এটা তোমার কাজ জানো কতো ভয় পেয়েছি আমি কেউ আমাকে ভালোবাসে না সবাই ভয় দেখায় কারো সাথে কথাই বলবো না আর আমি। 😞😞 ( মুখ ফুলিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায় হিয়া )

রায়হান: আরে হিয়া শোন। যাহ চলেই গেলো । ফ্রেস হয়ে নিচে আয় আজকে নিলের সাথে দেখা করে তুই স্কুলে যাস কেমন। ( চিল্লিয়ে বলল যাতে হিয়া শুনে ) আমি নিচে গেলাম।

হিয়া ফ্রেস হয়ে স্কুলের জন্য তৈরি হয়ে নিচে যায়।

In breakfast table……………..

ব্রেকফাস্ট টেবিলে হিয়া কারো সাথে কথা না বলে খাবার খাচ্ছে তা দেখে মামনি বলে…..

মামনি: হিয়া কিছু হয়েছে তুর মন খারাপ করে নাস্তা করছিস কথা বলছিস না। 😰😰

হিয়া: না মামনি এমনিতেই। প্রতিদিন তো বকবক করি একদিন না হয় ঠিক ঠাক ভাবে নাস্তা করলাম ভালো করিনি বলো। 😊 ( হালকা হেসে )

রায়হান: যাক তাহলে স্বীকার করলি যে তুই প্রতিদিন বকবক করিস। 😉😉😉

হিয়া: মামু মামনি আমি এখন থেকে একা স্কুল যেতে চাই আশা করি তোমাদের এতে কিছু বলার থাকবেনা। ( রায়হানের কথা এড়িয়ে গেলো )

মি. শরিফ: সেকি এতোটা রাস্তা তুমি একা যাবে আমার যে চিন্তা হয়। রায়হান দিয়ে আসে এতে কি সমস্যা হচ্ছে তোমার??

হিয়া: ভাইয়ুর অনেক কাজ থাকে আর আমি তো বড় হয়েছি নাকি। তাছাড়া আমি আমার ফ্রেন্ডস দের সাথে যেতে চাই প্লিজ মামু তুমি না করোনা প্লিজ প্লিজ প্লিজ। ( কিউট ফেস বানিয়ে )

মি. শরিফ: আচ্ছা ঠিক আছে তবে সাবধানে যাবে কেমন।

হিয়া: আচ্ছা।

মি. শরিফ: আমার খাওয়া শেষ । রায় চলে আসিস।

হিয়া: মামু চলো আমিও তোমার সাথে যাবো। নিলের সাথে আজ দেখা করতে হবে।

মি. শরিফ: আচ্ছা চল।

রায়হান: বুঝলাম মহারাণী রাগ করেছে সকালের জন্য রায়হান তুই ও না একটু বেশি করে ফেলেছিস আজ। এখন ভাব কিভাবে মহারাণীর রাগ কমাবি। ( মনে মনে )

মি. শরিফ আর হিয়া চলে যায় আগেই। রায়হান নাস্তা শেষ করে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যায়।

কিছুক্ষন পর………

রায়হান: sorry… একটু দেড়ি হয়ে গেলো ।

আবির: তা ঠিক আছে কিন্তু তুই হাপাচ্ছিস কেনো।

নিলয়: হাদাড়াম দৌড়ে এসেছে দেখতে পাচ্ছিস না তুই। ( আবিরের মাথায় গাট্টা মেরে)

আবির: উফ মারার জন্য কি আমাকেই পেয়েছিলি নাকি।

সিহাব: হুম তুই জানিস না।

রায়হান: হইছে ঝগড়া না হলে তুরা ঝগড়া কর আমি গেলাম। 😡😡

সিহাব: আরে শালা কই যাস সত্যি করে বল তো প্রেম ট্রেম করিস নাকি এখন আমাদের সময় দেস ই না। 😞😞

রায়হান: হারামি আমার বোন নাই আর থাকলেও তোর কাছে জিবনেও দিতাম না। আর আব্বুর স্কুলে শিক্ষক নেই তাই ক্লাস করাতে হবে কিছুদিন।

নিলয়: কাল কি সেটা কি তোদের মনে আছে 😰😰

আবির: কেনো কাল আবার কি আছে। 😲😲

রায়হান: এই গাধারে কেউ ধরে দুইটা লাথি দে কাল রেজাল্ট আর সে আজকে জিজ্ঞাসা করতেছে কাল আবার কি আছে। 😡😡

নিলয়: কিরে আবির কই। ( আশে পাশে তাকিয়ে )

সিহাব: প্রতিবারের মতো এবারো গায়েব।

এরা হচ্ছে রায়হানের বন্ধু । আবির নিলয় সিহাব তবে রায়হানের আরও বন্ধু আছে তাদের সাথে পরে আলাপ করবেন এখন এদের সম্পর্কে একটু জেনে নেই…..

আবির হচ্ছে একটু সহজ সরল আর অনেক ভিতু অল্পতেই ভয় পেয়ে পালাবে।
নিলয় হলো অনেক দুষ্টু আর একরোখা যা বলে তাই করে।
সিহাব একটু রাগি তবে রসিকতা করে অনেক।

এবার হিয়ার কাছে আসা যাক কি বলেন………..

মি. শরিফ আর হিয়া স্কুলে যায়। হিয়া অফিসকক্ষের সব কাজ সেরে ক্লাসরুম এর দিকে পা বাড়ায় একটা ক্লাসের সামনে গিয়ে দেখে😱😱😱…………….

চলবে……..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here