স্বামী, ০২
Ariyan Shaiquat
হঠাৎ করে আবার মনে পরে গেলো তাকে ধর্ষন করা হয়েছে। আমার মুখের হাসিটাও মলিন হয়ে গেলো।
আবার মনটা খারাপ হয়ে গেলো৷ আবার মনে হতে লাগলো, আমি কি দোষ করেছিলাম আমার সাথেই কেনো এমন হলো?
এক দিকে জাহানের মারাত্মক হাসি অপরদিকে এই দুশ্চিন্তা। সব মিলিয়ে কেমন যেনো জগা খিচুরি টাইপের হয়ে গেছে। কি বড় প্যারার মধ্যে আছি সেটা আমি নিজেই বুঝতে পারছি।
হাজার চেষ্টা করেও চোখের দুটি পাতা এক করে ঘুমাতে পারলাম না। সকাল ১০ টা পর্যন্ত সুধু এই ভাবনাই ঘুরছিলো মাথায়৷
— কি করেছি আমি? কেনো হলো আমার সাথে এমন? এখন আমি কি করবো? জাহানকে আপন করে নিবো? ভুলিয়ে দেবো গতকাল রাতে কি বলেছিলো জাহান? কি করবো??????
নিজের মাথার চুল নিজের ছিরতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। অত:পর একটা ভাবনায় এসে থামলাম,
— আগে জাহানের কাহিনী শুনি। যদি পারি তাজে সাহায্য করবো। আর চেষ্টা করবো তাকে আপন করে নেয়ার। সে হয়তো জানে আমি তাকে আপন করে নিবো না। আসলেইতো আমি তাকে আপন করে নিতে পারবো না।
এসব ফালতু চিন্তা করতে করতে সকাল হয়ে গেলো। ১০ টা বাজে আরকি। জাহান উঠলো, উঠে জামা পালটে নিলো। রুমের মধ্যেই। আমি কিন্তু ঘুমাই নি। জাহান সব জামা পাল্টালো। সব আমি দেখছিলাম৷ কিন্তু ঐ দিকে আমার একেবারেই খেয়াল ছিলো না।
যখন সে শারীর আচল খুলে ব্লাউজ খুলেছে৷ আমার চোখ পরে তার কাধের তিলকের উপরে। আমি সবটুকু সময় ধরে তিলটাকেই দেখছিলাম। চোখ সরাতেই পারছিলাম না। মনে হচ্ছিলো। তার তিলকটা একটা চৌম্বক আর আমার চোখের কর্নিয়ার গুলা ধাতব বস্তু। তাই তার প্রতি আকর্ষিত হচ্ছিলো।
জাহান নীল রঙের একটা শারী পরলো। পড়ে ঘুরে পিছন দিকে তাকাতেই দেখে আমি তার দিকে তাকায় আছি। তখন সে লজ্জা পেয়েছিলো হয়তো কিছুটা৷ মাথাটা নিচু করে নিয়েছিলো জাহান। আমিও কিছুটা লজ্জা পেয়েছিলাম।
জাহান কিছু না বলে চুপ করে চলে গেলো। আমি উঠে ফ্রেস হয়ে রুমে এসে ঘুমের ঔষধ খেতে যাবো তখনি জাহান আমার হাথ ধরে ফেললো,
— একি, এ আপনি কি করছেন? আপনি আত্মহত্যা কেনো করছেন? আমি আপনার জীবন থেকে অনেক অনেক অনেক দূরে চলে যাবো। কিন্তু প্লিজ এটা করবেন না।
বলতে বলতে কেদে দিলো। আর আমার হাথ ধরে ফ্লোরে বসে গেলো। তার মাথাটা আমার হাতের সাথে লেগে আছে।
আমি হাত টা ছারিয়ে নিয়ে বললাম,
— আজবতো আমি মরবো কেনো? আমি সারা রাত ঘুমাতে পারি নাই৷ তাই এখন ঔষধ খেয়ে ঘুমাবো। আর কি বলছেন এসব আপনি? আমি আমার ধর্মকে যথেষ্ট সম্মান করি। তাই আত্মহত্যা অসম্ভব৷
জাহান বোকার মতো আমার দিকে তাকায় আছে। তার গাল বেয়ে পানি পরছে। আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছিলো এটাই সঠিক সময় তার ইতিহাস জানার। তাই আমিও নিচে বসলাম।
হাত ধরে তাকে উঠালাম। সে আমার চোখের দিকে লজ্জা মাখা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি জাহানকে উঠিবেলকনিতে নিয়ে গেলাম। তার পরে বাইরে রাখা চেয়ারে তাকে বসালাম। তার বিপরীতে রাখা চেয়ারে আমি বসলাম। সে সম্মান জনিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম,
— জাহান, আমি হয়তো স্বামীর অধিকার টা তোমাকে দিতে পারবো না৷ কিন্তু তোমাকে চাইলেই ডিভোর্স দিতে পারবো না। আমার আম্মুর অনেক পছন্দের তুমি। আমি চাইনা তিনি কষ্ট পাক। তাই তোমাকে হয়তো ভালো থাকার অভিনয় করেই যেতে হবে। অন্তত আম্মুর শেষ ইচ্ছাটা পুরন হওয়ার আগে পর্যন্ত হলেও।
অনেক্ষন চুপ থাকার পরে জাহান বলতে লাগলো,
— আমি জানি আমি আপনার ভালোবাসার যোগ্য নই এখন। আমার যা কিছু ছিলো সব কিছু মানুষ রূপি জানোয়ার রা খুবলে খেয়েছে। আর আমি বেচে থাকতাম ও না হয়তো শুধু ধর্ম টাই আমাকে আটকায় দিয়েছে।
আরো কিছুক্ষন পরে বললো,
— আপনি চাইলেই আরো একটা বিয়ে করতে পারেন। আমি কখনো আপনার কাছে স্ত্রীর অধিকার চাইবো না। বরং আপনি খুশি হলে আমিও খুশি হবো। কিন্তু আমাকে তালাক দেবেন না দয়া করে। আমি আপনার মায়ের ভালোবাসা টুকু হারাতে চাই না। তিনি হয়তো আমাকে তার নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসেন। আমার আম্মু মারা যাওয়ার পরে আমি কখনো ভাবিনি যে আবারো মায়ের আদর পাবো।
আমি অবাক হিয়ে গেলাম। এই মেয়ে মা হারা? কি করে পারলো সৃষ্টিকরতা এতো নিষ্ঠুরতা করতে এর সাথে?
অনেক্ষন নিরবতার পরে আমি দেখলাম জাহানের মন খারাপ। তাই নিরবতা কমানোর জন্যে আবার বলা সুরু করলাম,
— আচ্ছা জাহান আমরা কি বন্ধু হতে পারি? আমার মনে হয় তোমার জীবনের সব চাইতে কাছের বন্ধু হতে পারবো আমি। দুঃখ গুলা ভাগ না করতে পারলেও একটু খুশি করতে পারবো তোমাকে।
জাহান সম্মানের দৃষ্টি নিয়ে তাকায় আছে। সে কিছু বলছে না। সুধু তাকায় আছে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম,
— হবে কি আমার বন্ধু?
— (মাথা নারিয়ে হ্যা সুচক ইঙ্গিত দিলো।)
— আচ্ছা আমাকে কি ফ্রেন্ড হিসেবে তুমি বলতে পারো কি হয়েছিলো আর কারা তোমার সাথে এমন করেছিলো। প্লিজ।
জাহানের চোখ লাল হয়ে গেলো। বুঝতে পারলাম তার মাথায় অনেক চাপ পরছে তাই এমন হয়েছে। সাথে সাথে জাহানকে বললাম,
— আরে মজা করছিলাম। কিন্তু একটা জিনিস জানো তোমার পিঠে কাধের পাসে যেই তিল আছে সেটা কিজে সুন্দর। আমিতো প্রায় ক্রাস খাইছি।
কথাটা বলা মাত্রো জাহান ফিক করে হেসে দিলো। পর মুহুর্তেই মাথা নিচু করে নিলো। হয়তো লজ্জা পেয়েছে আর নাহয় সে বুঝে গেছে আমি মজা করছিলাম না। আমি সত্যি সত্যি জানতে চাই কারা তার সাথে এটা করেছে।………………….
To be Continue……