রাজনীতির_রংমহল #সিমরান_মিমি #পর্বসংখ্যা_০৩

#রাজনীতির_রংমহল
#সিমরান_মিমি
#পর্বসংখ্যা_০৩

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতেই পার্টির জরুরি কাজে ঢাকায় এসেছে পরশ শিকদার।বিলাসবহুল তিনটি মাইক্রোর মাঝখানে’র গাড়িটিতে বসে আছে সে।সামনের ড্রাইভিং সিটে বসে ড্রাইভ করতে থাকা বডিগার্ডের পাশের সিটে বসেছে পাভেল।তাদের গাড়ির সামনের এবং পিছনের গাড়িটিতে তিনজন করে মোট সাতজন বড়িগার্ড এবং দলীয় সদস্য রয়েছে।নবীনগরের এক নির্জন রাস্তায় আসতেই সংগত কিছু কারনে সামনের গাড়িটি সাময়িক সময়ের জন্য থামানো হয়েছে। ফলস্বরূপ, পরবর্তী গাড়ি দুটোই থামাতে হয়েছে।এরইমধ্যে পেছন থেকে পরিচিত মেয়েলি কন্ঠ শুনতেই নিজের দায়িত্ব কে ভুলে লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নামলো পাভেল।আশে-পাশে তাকাতেই দেখলো পেছনের গাড়ির পেছন থেকে কথাগুলো ভেসে আসছে।সেই কথা,তর্কাতর্কির রেশ ধরেই সেদিকে হাটা দিল পাভেল।বারকয়েক বারণ করলেও যখন পাভেল পরশের কথা শুনলো না তখন পরশ ও গাড়ি থেকে নেমে পাভেলের পিছু নিলো।

আমার কি দোষ? আমি কি ইচ্ছা কইরা গাড়ি থামাইছি নাকি।সামনেই তো কত্তগুলা গাড়ি খাড়াইয়া আছে।চোক্ষে দেহেন না। (বেশ রশিয়ে রশিয়ে কথাগুলো বললো চল্লিশোর্ধ্ব এক রিক্সাচালক)

তেতে উঠলো স্পর্শী।স্কুটি থেকে নেমে হেলমেট খুলে রিক্সাওয়ালার সামনে গিয়ে বললো-

একদম চোখ গেলে দিব।চোখ কি শুধু আপনার’ই আছে,আমার নেই।রাস্তার মাঝখানে বসে ঢং শুরু করছেন।মেয়েলোক দেখলেই সারা শরীর বেয়ে ঢং টপটপ করে ঝরতে থাকে।

অনন্দা স্পর্শীকে বারবার টেনে পিছনে নিয়ে যাচ্ছে এখান থেকে যাওয়ার জন্য।কিন্তু স্পর্শী এখনো রিক্সাওয়ালার সাথে তর্কে মেতে উঠেছে। আশেপাশে জনে জনে লোক জমে ঊঠেছে।পাভেল রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনা টা বোঝার চেষ্টা করছে।

অনন্দা-স্পর্শী চল এখান থেকে।ঝামেলা করার দরকার নেই।

তেতে উঠলো স্পর্শী। চেচিয়ে উঠে বললো-

আমি ঝামেলা করছি।আর ওই অসভ্য বুড়োটা যে আমায়…….

বলার আগেই ঠাস করে গালের উপর পুরুষালী এক থাপ্পড় পড়লো।অকস্মাৎ আক্রমণে নিজেকে সামলাতে না পেরে স্কুটির উপর উপুড় হয়ে পড়লো স্পর্শী।রাগে-যন্ত্রনায় দাতে দাত পিষে সামনের দিকে তাকাতেই দেখলো কালো রঙের পাঞ্জাবি এবং জিন্স পরিহিত এক যুবক চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে তার দিকে।অচেনা কোনো ছেলে আঘাত করেছে এটা যতটা না তার আত্নসম্মানে লেগেছে তার থেকেও এই মুহুর্তে আঘাতের যন্ত্রনাটা বেশী পোড়াচ্ছে।বলতে গেলে একদম কোনো শাসন -কটুবাক্য ছাড়া স্বাধীনভাবে বড় হওয়া মেয়েটা হঠাৎ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অচেনা কোনো যুবকের শাসনের শিকার হবে সেটা ভাবতেই অজ্ঞান হবার পালা স্পর্শীর।আশে-পাশে তাকিয়ে দেখলো ঠিক কতজন এই থাপ্পড় টা দেখেছে।তার এখন ঠিক কি করা উচিত।এই লোকটাকে আরেকটা থাপ্পড় মারা। তাহলে যদি পুনরায় এই লোকটা আবার তাকে থাপ্পড় মারে বা কিল-ঘুষি। তাহলে?তাহলে সে আবার মারবে এই লোকটাকে।একে একে সে মারবে,লোকটা মারবে, সে মারবে এভাবে তো রাস্তাটা রেস্লিং স্টেইজ হয়ে যাবে।না না, এটা করা যাবে না।তাহলে বাস্তবিক ভাবে ঠিক কি করা উচিত স্পর্শীর?

লজ্জা করে না,নিজের বাবার বয়সী একটা লোককে এভাবে অপমান করতে?পারিবারিক কোনো শিক্ষা নেই?হয়েছো তো মেয়ে অথচ আচরণ করছো ছেলেদের মতো।ছেলে হওয়ার খুব শখ তাই না?

থেমে,
এই চাচা,আপনি যান এখান থেকে(রিক্সাওয়ালাকে উদ্দেশ্য করে বললো পরশ।মাথায় আধপাকা চুল ওয়ালা রিক্সাওয়ালা নিজের পান খাওয়া লাল দাত গুলোকে বিশ্রীভাবে এলিয়ে স্পর্শীর দিকে তাকিয়ে লালসার দৃষ্টিতে হেসে দিল।তারপর রিক্সা নিয়ে ছূটে গেল নিজের গন্তব্যে যা স্পর্শী বাদে সবার অগোচরে রয়ে গেল।)

পরশ পুনরায় রাস্তায় দাঁড়ানো লোকদের উদ্দেশ্যে বলল-
আপনারা দাঁড়িয়ে কি সিনেমা দেখছেন?যান যে যার কাজে?পাভেল গাড়িতে ওঠ,এদের মতো মেয়েরা শহরে লেখাপড়া করতে এসে নিজেদের ভিত্তিটাকেই ভুলে যায়।বাবা-মা,বয়বৃদ্ধ দের সম্মান তো দূর।অভদ্র মেয়ে কোথাকার?

বলে পাভেলকে নিয়ে গাড়িতে উঠলো পরশ।

হেরে গেল স্পর্শী। আজ পুরাদমে হেরে গেল সে।রাস্তায় দাঁড়িয়ে একে তো বাবার বয়সী কারোর বাজে দৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছে,তার উপরে অচেনা উড়ে আসা কোনো ছেলের হাতে থাপ্পড় খেয়েছে,পারিবারিক শিক্ষার উপর আঙুল তুলেছে।তার উপর তাকে ছেলেদের মতো বলেছে।কষ্টে,গালের যন্ত্রনায় অপমানে ঠোট কামড়ে ধরলো স্পর্শী। চোখ দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে অশ্রু ঝরছে।পরশ দের গাড়ি চলতেই পেছনে ছুটলো স্পর্শী।দৌড়ে দৌড়ে দাত কিড়মিড় করে বললো-

অসভ্যের বাচ্চা তুই দাড়া।তোর সাহস কিভাবে হয় আমাকে থাপ্পড় মারার?আমি ছেলেদের মতো করি? ওই হারামি,কি করছি আমি? আমি কি তোর বোনের পেছনে লাগছি নাকি তোর পেছনে বখাটেগিরি করছি? কোন এংগেল থেকে আমি ছেলেদের মতো করছি?হ্যা,

গাড়ি চোখের আড়ালে চলে গেল।রাগে-দুঃখে রাস্তার মাঝখানে আসন দিয়ে বসে পড়লো স্পর্শী। সাথে রয়েছে যাবতীয় গালি-গালাজ।অনন্দা পাশেই স্পর্শীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।প্রায় তিন মিনিট পার হবার পরেও যখন স্পর্শীর থামার কোনো দিক দেখলো না তখন আস্তে করে তার পাশে এসে বসলো অনন্দা।ধীর স্বরে বললো-

এখন এসব বললে কি আর সে শুনবে?যখন মারলো তখন তো কিচ্ছু বলতে পারলি না।

ধাক্কা মেরে অনন্দাকে রাস্তায় ফেললো স্পর্শী। রেগে রেগে বলতে লাগলো-

তুই কি করছিলি তখন?তুই বলবি না?আমায় মারলো,আর তুই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলি। কোন বা’লের কাজ উদ্ধার করছিলি তুই?একদম ন্যাকামি করতে আসবি না আমার সাথে।ঢং না,আমাকে মেরেধরে চলে গেল আর এখন আসছে তেল মাখতে।যা সর!

বলে স্কুটিতে উঠে অনন্দাকে ফেলেই রেডিও কলানির দিকে চলে গেল স্পর্শী। অনন্দা হতাশ হয়ে সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলো।কিছুক্ষণ পর একটা বাস আসতেই সেটাতে উঠে পুনরায় জাহাঙ্গীর নগরের দিকে চলে আসলো।

রাত দশটা,বিপাশার কোলের উপর মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে আছে স্পর্শী।ভীষণ চিন্তায় পড়েছেন বিপাশা।মেয়েটা কখনো এমন শান্ত থাকার নয়।কিছু একটা ঘটেছেই যার কারনে আসার পর থেকে এমন নিরব।ইনিয়েবিনিয়ে পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন-

কি হইছে আম্মু,ও পাখি,মনির কাছে বল?

শান্তভাবেই স্পর্শী বলে উঠল-

খালামনি,আমি কি সত্যিই খুব খারাপ।মানে অভদ্র দের মতো,বেয়াদপ দের মতো,কারো সাথে ভালো ব্যাবহার করি না।মানে আমি বলতে চাইছি আমার কি সত্যিই শিক্ষার অভাব রয়েছে?

আতকে উঠলেন বিপাশা।মেয়েটা একটু দুষ্টু,স্বাধীনচেতা আর প্রতিবাদী প্রকৃতির।তাই বলে এসব কে বলল?
কে বলছে আম্মু এইসব?তোমাকে তো আমি বড় করেছি,মামুনি কি খারাপ শিক্ষা দিয়েছে তোমায়?বল?
থেমে,
যে যাই বলুক,তুই মন খারাপ করিস না একদম।

ধড়াস করে লাফ দিয়ে উঠে বসলো স্পর্শী।বিপাশার গাল দুটো টেনে দুটো চুমু খেয়ে বলল-

উফফফ খালামনি,তুমিও না।যার তার কথায় স্পর্শীর মন খারাপ হয় না।আর স্পর্শী জানে তো,যে এই কথাগুলো বলেছে সে হলো পৃথিবীর সেরা অভদ্র,তার শিক্ষার অভাব আছে।
ও মনি,চিংড়ি মাছ আছে না, আমি এখন আবার ভাত খাবো।

বিপাশা হেসে দিয়ে রান্নাঘরে চললেন খাবার আনার জন্য।

____________
কেটে গেছে প্রায় আরো পাচ দিন।এরমধ্যে ধীরে ধীরে ভীষণ রকম ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে পরশ,পাভেল।সারাদিন বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন,প্রেস-মিডিয়া,নানা অনুষ্ঠান,পার্টির কাজে প্রায়ই দু-দিন পর পর ঢাকায় যেতে হয়েছে তাদের।আজ ও তার ব্যাতিক্রম নয়।

বিকাল চারটা,পার্টির কাজে আজ ও ঢাকায় আসতে হয়েছে পরশকে।তবে নিত্যদিনের মতো পাভেল সাথে নেই।নবীনগরের ভেতর থেকে গাড়ি যেতেই চমকে তাকালো পরশ। আশ্চর্যজনক ঘটনাটি দেখার জন্য দ্রুতই ড্রাইভার রুপি বডিগার্ড কে আদেশ দিল গাড়ি থামাতে।জানালার কাচ ভালো ভাবে খুলে সামনের দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

দুরেই রাস্তার পাশে তিনজন পথশিশুকে বিরিয়ানির প্যাকেট তুলে দিচ্ছে স্পর্শী।অবাক হওয়ার রেশ ধরেই গাড়ি থেকে নামলো পরশ।নিজের ব্যাক্তিত্ব কে সাময়িকভাবে ছুটি দিয়ে বডিগার্ড দের আসতে বারন করে এগিয়ে গেল রাস্তার পাশে।স্পর্শী বিরিয়ানির প্যাকেট খুলে একজনের মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে।

বাহ,এক থাপ্পড়েই এতো পরিবর্তন।তাহলে তো প্রতিদিন মারতে হয় তোমাকে ভালো করার জন্য।

পিছন থেকে পুরুষালী আওয়াজ পেতেই পিছু ঘুরলো স্পর্শী।প্রথমেই চোখে পড়লো কারো বুক।নীল রঙের পাঞ্জাবি তে টানটান হয়ে আছে প্রশস্ত বুকটা।মাথা তুলে উপরে তাকাতেই দেখলো সেদিনের সেই অভদ্র পুরুষ। চোয়াল শক্ত করে ফেললো স্পর্শী। কিন্তু তাও কিচ্ছু বললো না।আজ সে কাউকে কিচ্ছু বলবে না।

মাথা নিচু করে সামনের দিকে তাকিয়ে হেটে গেল দূরে দাঁড়ানো পাগল লোকটার দিকে।যে এখনো স্পর্শীর হাতের বিরিয়ানির দিকে লোভাতুর ভংগিতে তাকিয়ে আছে।পরশ হাতের ঘড়িটার দিকে চাইলো।সময় আছে বেশ।নির্মল এই পরিবেশে স্পর্শীর পায়ের সাথে দু-পা নিজেও চললো।পরশের দিকে একবার তাকিয়ে স্পর্শী শান্ত ভাবে বললো-

আমার খারাপ হওয়ার কোনো চান্সই নেই।কারন আমি নিতান্তই ভালো মেয়ে।যারা খারাপ,আমি শুধু তাদের সাথেই খারাপ ব্যাবহার করি।বুঝেছেন?

ওহহহ তাই নাকি?সে জন্যই তো অচেনা মানুষ কে মেসেজ দিয়ে সরাসরি বাচ্চার বাপ বানিয়ে দাও।জানো?সেদিন আমি কি ঝামেলায় পড়েছিলাম?(ব্যাঙ্গ করে বললো পরশ)

দুম করে পরশের দিকে তাকালো স্পর্শী।তাহলে এই সেই লোক।স্পর্শীর চমকিত মুখ দেখে নিশ্চিত হয় পরশ।কারো গলার আওয়াজ ধরেই নিশ্চিত হওয়া যায় না তাও সে কথাটা বলেছিলো।কিন্তু এবারে সে নিশ্চিত সেই মেয়েই এটা।স্পর্শী কয়েক পলক পরশের দিকে তাকিয়ে পাগল টার হাতে বিরিয়ানির প্যাকেট টা খুলে দিল।আনন্দে পরপর কয়েকটা লাফ দিলো মানষিক বিকারগস্ত বয়বৃদ্ধা টি।স্পর্শী তুলে খাওয়াতে যেতেই পাগল টি তার হাতকে ঝাড়ি মেরে দৌ ড় দিল দূরে।যেন, স্পর্শী তার খাবার টি আবার নিয়ে যাবে।হেসে দিল পরশ।স্পর্শী তার দিকে তাকালো।বললো-

এই আপনিও ভীষণ খারাপ মানুষ। আপনার সাথেও আমি খারাপ ব্যাবহার করবো।তবে আজ না,পরবর্তীতে দেখা হলেই বুঝবেন স্পর্শী কি জিনিস।আমাকে বেয়াদপ,অভদ্র বলেছেন আপনি।

পরশ-আজ নয় কেন?

স্পর্শী চুপ হয়ে গেল।আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল-

আজ একটা স্পেশাল প্লাস শোকের দিন আমার।তাই,

থেমে,
এই যে শুনুন,কারো ব্যাপারে না জেনে তার পারিবারিক শিক্ষার উপর আ ঙুল তুলবেন না।হতেও তো পারে সে পরিবার ছাড়াই বড় হয়েছে।

চমকে স্পর্শীর দিকে তাকালো পরশ।স্পর্শী পুনরায় বলল-

এই যে সেদিন আপনি আমায় বলেছিলেন না, বাবার বয়সী কারো সাথে খারাপ ব্যাবহার করা উচিত না।আচ্ছা আপনিই বলুন,বাবার বয়সী কেউ যদি বিছনায় নিতে চায় তখন তার সাথে কেমন ব্যাবহার করা উচিত?

পরশ স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো স্পর্শীর দিকে।স্পর্শী আবারো বলল-

শুনুন,আপনি আমায় সেদিন থাপ্পড় টা মেরে ভুল করেছেন।ওই থাপ্পড় টা ওই রিক্সাওয়ালাকে মারা উচিত ছিলো।উনি ইচ্ছে করে বারবার গাড়িটাকে আমার স্কুটির সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।বারন করার পর থেমেও ছিলেন কিন্তু ওনার দৃষ্টি আমার আর আমার বান্ধবির শরীরের দিকে ছিলো শকুনের মতো।
থেমে,
ওই যে আপনি বলেছিলেন না মেয়ে হয়েও কেন ছেলেদের মতো আচরণ করি?তাহলে শুনুন,
এই আচরণ টা না করলে আপনাদের মতো পুরুষের থেকে নিজেদের কে রক্ষা করা খুব কঠিন।এই যে কথায় কথায় ঝগড়া করি,তেজ নিয়ে প্রতিবাদ করি এটাতে আপনাদের মতো ছেলেরা ভয় পেয়ে ঝামেলায় জড়াতে চায় না।যদি চুপচাপ থাকতাম না তাহলে অবলা পেয়ে সেই প্রথম দিনেই ছিড়েখুঁড়ে খাওয়ার চেষ্টা করতো।
যাই হোক,আপনার পাওনা টা পরবর্তী দিন পাবেন। স্পর্শীকে অভদ্র বলে কেউ শুধু শুধু পার পায় না।

কথাগুলো বলে চলে গেল স্পর্শী।স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো পরশ।এখনো যেন স্পর্শীর কথার ঘোর কাটছে না।এরইমধ্যে আবার স্পর্শি দৌড়ে এল।হাতের থেকে দুটো জিলাপি এবং একটা মিষ্টি পরশের হাতে দিয়ে বললো-

এটা খান,তবারক।খেয়ে দোয়া করবেন কিন্তু।

অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো পরশ-

কিসের তবারক?

স্পর্শী-মাজার জিয়ারত করতে গেছিলাম।সেখানে মিলাদ ও পড়িয়েছি। ওই আজ আমার জন্মদিন আর আমার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকি কি না। তাই।

হতভম্ব হয়ে পরশ বলল-
জন্ম,মৃত্যু মানে?

হেসে দিল স্পর্শী।বলল-

ওই আমি জন্মানোর কয়েক মিনিট পরেই মা মারা যায়।এই জন্য পারিবারিক শিক্ষা টা পাই নি। দোয়া করবেন মায়ের জন্য।ওকে বাই বাই।

বলে চলে গেল স্পর্শী।পরশ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো সামনের শুভ্রপরির দিকে।সাদা ঢোলা স্যালোয়ার, কামিজ মাথায় ওড়না পড়া মেঘবালিকা যেন মেঘের সাথে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে হেটে যাচ্ছে।

স্যার আসুন,যাবেন না।(বডিগার্ডের ডাকে হুশ ফেরে পরশের। হাতের মিষ্টির দিকে তাকিয়ে কয়েকবার পিছু ফিরতে ফিরতে গাড়িতে ঢুকল।

চলবে?

পাঠকদের প্রশ্ন:আপনাদের মধ্যে একজন পাঠক বলেছেন, নায়িকার চরিত্রটা দৃষ্টিকটু লাগছে।

উত্তর :প্রিয় পাঠক,সব গল্পের প্রধান চরিত্র একরকম হলে একঘেয়েমি লেগে যায়। আমার গল্পের স্পর্শী চরিত্রটা না হয় এমনই থাক।একটু বিগড়ানো,অতিরিক্ত স্বাধীনচেতা,একটু প্রতিবাদী☺️।আর তাছাড়াও,সঠিক সময় এলে এমনিতেই চরিত্রের মধ্যে পরিবর্তন আনবো আমি।সে পর্যন্ত মানিয়ে নিয়ে পড়তে থাকুন।ধন্যবাদ।

আপনাদের ভালোলাগা -মন্দ লাগা প্রকাশ করুন।মনে রাখবেন,গল্পটা আপনাদের জন্য,তাই আপনাদের মন্তব্য আমার লেখার ক্ষেত্রে অতি জরুরি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here