#সুখ_পাখি #Ayrah_Rahman #part:-23

#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
#part:-23

–বাবা আমার তুই কি আমার সাথে রাগ করে আছিস?

রাত তখন প্রায় ১১ টা অভ্র খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এসে,, বিছানায় শুতে যাবে এমন সময় প্রচন্ড শব্দ যোগে ফোনটা বেজে উঠলো,,

এত রাতে ফোনের শব্দে অভ্রের চোখে মুখে ভর করলো একরাশ বিরক্তি,, ফোন তুলে দেখে আননোন নাম্বার,,
অভ্র প্রথমে ভাবে কলটা কেটে দিবে পর মুহুর্তে কি ভেবে কল রিসিভ করে কানে ধরে,,,

অভ্রের বাবার এমন কথা শুনে অভ্রের বিরক্তি টা তুমুল লেভেলে বেড়ে যায়,,

অভ্রের কোন সারা শব্দ না পেয়ে মিস্টার অনিল হায়দার পুনরায় অভ্রকে বলে…

— বাবা আমার এখনো রেগে আছো আমার উপর?

অভ্র খানিকটা গম্ভীর কন্ঠে বলে..

— আপনাকে আমি কতবার বলব,,আমাকে আপনি ফোন দিবেন না,,তাও কেন ফোন দেন,,আমি চাই না পুরনো কোন কথা মনে করতে চাই না আমি কোন বিষাক্ত স্মৃতি মনে করতে,,আপনি ভালো থাকুন আমাকেও ভালো থাকতে দেন,,,

— অভ্র শোনো আমার কথা,,প্লিজ তুমি ফিরে এসো,,,

— আপনি আমার কথা ভালো করে শুনে রাখুন মিস্টার অনিল হায়দার,, আমি কারো টাকাই থাকি না আর না খাই,,এসব আমার নিজের যোগ্যতাই পাওয়া সম্পদ,,আর হে আপনি আমার কেউ না আর না আমি আপনার কেউ,,পরবর্তী তে আমাকে ফোন দিবার আগে শত বার ভেবে দিবেন,,আল্লাহ হাফেজ,,

বলেই অভ্র ফোনটা কেটে দিলো,,রাগে তার শরীর গরম হয়ে গেছে,,

লোকটা চাই কি তার কাছে,,,

__________________________

পরদিন…

একটা কফি সপে তরু মুখে রাগি ভাব করে বসে আছে
সামনে অভ্র আর শুভ্র। শুভ্র ই তরুকে কফিশপে ডেকেছে,, কোন এক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে,,সাথে অভ্রকেও নিয়ে আসছে…

অনেকক্ষন হয়ে গেছে অথচ কারো মুখে কোন কথা নাই,,

হঠাৎ তরু টেবিলে থাবর দিয়ে বলে উঠলো,,

— কি ব্যপার কি? আমাকে কি এখানে সং সাজিয়ে বসিয়ে রাখার জন্য আনানো হয়েছে? কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলুন নয়তো আমার কাজ আছে,

শুভ্র এতক্ষণ কফি খেতে খেতে তরুকেই পর্যবেক্ষন করছিলো,,

শুভ্র বলে উঠলো..

—No Change…..
শুভ্রর এই কথার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারলো না তরু,,প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিতে শুভ্রের দিকে তাকাতেই শুভ্র মুচকি হাসলো….

— না বলছিলাম কি,তরু তুমি ঠিক আগের মতোই আছো,,কোন পরিবর্তন দেখছি না,,শুধু…..

— শুধু?

— না কিছু না,, যে কথা বলতে এসেছি সেটাই বলি..

শুভ্রের কথায় তরু আর অভ্র খানিকটা নড়েচড়ে বসলো,,

তরুঃ– হুম বলেন…

— দেখো তরু,, সেদিন যা হয়েছিল সম্পুর্ন ভুল বুঝা বুঝির জন্য,, তাই বলে এতদিন সেটা মনে রাখাটা তোমার ঠিক হবে না,,শুনো নিজের বাবা সম্পর্কে এসব নিকৃষ্ট কথা কেই বা শুনতে চাই বলো?তোমাকে বললে তুমি কখনো মেনে নিতে?

শুভ্রের কথা শুনে তরু চুপ হয়ে আছে.. কি ই বা বলবে সে? শুভ্র তো ঠিক ই বলেছে ,,, তার বাবার সম্পর্কে যদি এমন কথা যদি কেউ বলতো সে তো কখনোই মেনে নিতো না,,অভ্রের ক্ষেত্রে এমন রিয়েক্ট করা টা সাভাবিক,,

তরুর কোন উত্তর না পেয়ে শুভ্র বলে উঠলো,,,

— অভ্রের মা নেই,,কেন নেই সেটা.. I think.. তুমি জানো,,একা বড় হয়েছে ছেলেটা,, আপন বলতে শুধু তার বাবা ই,,আর কেউ নাই,,
আর সেই বাবা সম্পর্কে যদি কেউ কুৎসিত কথা বলে তাহলে কেমন লাগবে বলো,,যদিও কথা গুলো কুৎসিত হলেও সত্যি ছিলো,,

সবার শেষে আমি একটা কথাই বলব তরু,,তুমি আমার বোনের মতো তোমাকে সবসময় আমি বোনের চোখেই দেখি যদিও তুমি আমাকে পছন্দ করো না,, তার যথেষ্ট কারন ও আছে,,

তাও বলছি আমার এই অনাথ ভাইটাকে একবার ক্ষমা করা যায় না? বড্ড কষ্টে আছে বেচারা তোমাকে ছাড়া,,ঘুমালেও সে তোমার নাম জপে,,ক্ষমা করে দিও অভ্রকে,,

আজ আসি আমি,,বলেই শুভ্র উঠে চলে গেলো,,কি ই বা বলবে সে? কিই বা বলার আছে তার,,এখন যা করার অভ্রই করুক…

শুভ্র চলে আসার পর তরু আর অভ্র সেই টেবিলেই বসে আছে…

কারো মাঝে কোন কথা নেই,,নেই কোন অভিযোগ আক্ষেপ,,,

শুধুই শোনা যাচ্ছে কিছু দীর্ঘ শ্বাস,,

হঠাৎ অভ্র নিজের চেয়ার ছেড়ে তরুর সামনে গিয়ে আরুকে নিজের দিকে ফিরিয়ে হাটু ভেঙে তরুর সামনে বসে,,

তরুর হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোই নিয়ে বাী কয়েক চুমু খাই তরুর হাতে,,

নিরবতা ভেঙে অভ্র বলল..

— শালিক!! ক্ষমা করা যায় না এই অভাগা টাকে?

তরু মুখে কোন কথা নাই,

— বলো না শালিক,,তুমি কি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না?

তবুও তরু অন্যদিকে তাকিয়ে আছে…

— ঠিক আছে,,আমি চলে যাচ্ছি,, আর কখনো তোমাকে আমার মুখ দর্শন করতে হবে না,,কাল ফ্লাইটে একেবারে চলে যাবো আমেরিকা তে,,,

বলেই অভ্র দাড়িয়ে গেলো,,চোখের কোনায় থাকা জল টুকু মুছে নিয়ে চলে আসতে নিলে,,পিছন থেকে তরু হাত ধরে ফেলে,,,

অভ্র ফিরে তাকাতেই তার গালে স্বজোরে থাপ্পড় এসে পরে,,গালে হাত দিয়ে তরুর দিকে তাকাতেই তরু ঝাপিয়ে পড়ে তার প্রশস্থ বুকে,,হঠাৎ এমন হওয়ায় অভ্র খানিকটা পিছিয়ে যায়,, পরবর্তী তে ব্যপার টা বুঝতে পেরে অভ্র ও শক্ত করে জরিয়ে ধরে তার শালিক কে,,যেন কত দিন পর একজন মানুষ পিপাসাক্ত মানুষ পানি পেয়েছে,,

অভ্র কাধে তরল কিছু অনুভব করাই বুঝতে পারলো তরু কাদছে,,সেও আরও শক্ত করে জরিয়ে ধরলো তরুকে,,খানিকক্ষন পর তরুর হুস আসতেই সরে যেতে নিলে দেখে অভ্র তাকে ধরে আছে,,,

— কি করছেন কি ছাড়ুন সবাই দেখছে..

— না ছাড়বো না দেখুক সবাই,,,

— ছাড়ুন বলছি…

বলেই তরু ধাক্কা দিয়ে অভ্রকে দুরে সরাই,,,,

আজ তাদের মধ্যে না রয়েছে কোন অভিযোগ আর না কোন দুঃখ শুধু দুজনের মুখে ভেসে উঠেেছ মিষ্টি হাসি,,

[ আপনাদের কথাই রাখলাম,, মিল করে দিলাম ওদের,,এবার খুশি তো? আর হ্যা পরবর্তী পার্টে তরু আর অভ্রের অভিমানের কারণ টাও ক্লিয়ার করে দিবো,,ইনশাআল্লাহ,, আপনারা প্লিজ রিয়েক্ট করবেন,,এবং আপনাদের মতামত জানাবেন,,আপনাদের মত অনুসারেই আমি গল্পের প্লট গুলো সাজাবো]]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here