#সুখ_পাখি
#Ayrah_Rahman
# part:– 04
কলেজ ক্যাম্পাসে….
আহান, রাকিব আর রিয়া একসাথে বটতলায় বসে গল্প করছে,, হঠাৎ তাদের দৃ’ষ্টি যায় কলেজ গেট এ,,কারন দিশা আর আরু মাত্র কলেজে প্রবেশ করলো,,,
আহানঃ– ওই যে রানী ভি’ক্টো’রিয়া চলে এসেছে,,,
রাকিব ঃ– তাই তো দেখছি,,আজ ঠিক সময়ই আসছে দেখা যায়,,দেখা যাক উনার প্র’তিজ্ঞা কতদিন থাকে,
রিয়াঃ– তা যা বলেছিস,,বলেই রিয়া হা’সতে শু’রু করলো,,
আরু আর দিশা এসে রিয়া কে হা’সতে দেখে আরু জি’জ্ঞেস করে,, ওই ছে’মরি এমবে ভে*টাকি মাছের মতো ভে’ট’কা’ইতাছোচ ক্যা*,,?আরুর এই পাঁচ মেশালি ভাষা শুনে বাকি চার জন ই হেঁসে দেয়,,ওদের হাসি দেখে আরু নিজেই হেসে ফেলে,,
আরুঃ- আচ্ছা বাদ দে এসব,,এখন বল,ওই যে মেডিক্যাল এর স্টু’ডেন্ট রা এসে গেছে নাকি আসবে?
আহানঃ– আসে নাই,, তবে এসে পরবে,,ঘ’ন্টা তো দিয়ে দিবে,,চল ক্লাসে যায়
দিশাঃ- হ্যা সেটাই ভালো,,ওদের যখন ইচ্ছে তখন আসবে,আমরা ক্লাসে যায়,,
বলেই সবাই ক্লাসে চলে গেলো,,
ঘ’ন্টা পরার ৫ মিনিটের মধ্যে বাংলার প্রভাষক আইরিন মেম ক্লাসে চলে আসেন,,আইরিন মেম হলেন কলেজের সবচেয়ে সু’ন্দরী মে’ম,,অনেক ছাত্ররই ক্রাস আইরিন মেম,,অনেকে তো আবার মেম কে দেখার জন্য কলেজেই আসে,,তবে দুঃখের বিষয় মেম বিবাবিত,মেম এর একটা ৫ বছরের মেয়েও আছে।
ক্লাস শুরু হবার পর হ’ঠাৎ আহান আরু কে চুপিচুপি ডাক দেয়..
আহানঃ– এই আরু,,
আরুঃ- হুম বল,,,
আহানঃ– মেম কে আজ যা লাগছে না!!বইন সত্যি মেম এর উ’প্রে আমি এই নিয়ে ৩৫৯ বার ক্রা*স খাইছি,,
আরুঃ- চুপ,,চুপ কর বে*দ্দপ,,তোর কি খা’ইয়া আর কোন কাম নাই,,বি*য়াই*স্তা বেডির উ’প্রে ক্রা’স খাস,ছি ছি ছিহ,,,বে*ডি তোর মা এর বয়সের হইবো,,ছিহ,,
আহানঃ– ওই কি কস তুই!!
আরুঃ- ঠিকই তো কইছি,,,মেম আরেকটু আগে বিয়া করলে তো মেম এর মাইয়া তোর বয়সের হয়তো,,ছি আহু তোর চয়েস এতো খারাপ!!
আহানঃ– বইন মাফ কর,,তোর পায়ে পড়ি,,আমার ই ভুল হয়ছে তোরে ক’ওয়া,,আমি আর জীবনে কো’ন ক্রা’স খামু না তাও ই’তা কথা কইছ না!!
আরুঃ- হুম হুম বু’জ্জি,,এবার ক্লা’স কর,,
আরু আর আহান মনোযোগ সহকারে ক্লাস করে,,হ’ঠাৎ ক্লাস রুমের দরজায় কয়েক জন ছেলেমেয়ে নক করে এবং মেম এর কাছে আসা অনুমতি চাইলো,,
আকাশঃ– মে আই কাম ইন মেম?
মেমঃ– ইয়েস কাম,,
মেম এর অনুমতি পাবার সাথে সাথে ৭ জন ছেলে মেয়ে ক্লাসে প্রবেশ করে,,
আকাশ ঃ– মেম, আমরা মেডিক্যাল থেকে এসেছি,,এখানের ছাত্রদের সাথে একটা প্র’জেক্ট করার জন্য কিছুক্ষণ এর মাঝে আমাদের টিম লিডার চলে আসবে,,
মেমঃ– ইট’স ওকে,,
আকাশ ঃ– মেম,, ভাই আসার আগে আমরা কিছু কথা বলবো,,যদি অনুমতি দেন,,
মেমঃ– হ্যা অবশ্যই বলতে পারো,,
আকাশ ঃ– মাই প্লেজার,,
বলেই আকাশ স্টুডেন্ট দের দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো,,
আসসালামু আলাইকুম ভাই ও আপুরা,,আশা করছি সবাই ভালো আছেন,আমরা মেডিক্যাল থেকে এই কলেজে আসার মু’ল উঃদ্দেশ্য হলো আপনাদের প্রে’ক’টিক্যা’লি কিছু দেখানো,,আমরা এখান থেকে ১ মাস ট্রেনিং করাবো এবং পরবর্তী তে ক্যাম্পিং ও করতে পারি,,যেহেতু আপনারা বি’জ্ঞান এর স্টুডেন্ট,, সেহেতু পরবর্তী ডা’ক্তার কিন্তু আপনারাই,,তাই আমাদের মে’ডিক্যাল গ্রুু’প থেকে এই সি’দ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,, আশা করি আপনারা আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন,,কিছুক্ষণের মাঝেই আমাদের টিম লিডার চলে আসবে,,আমি আর কথা বাড়াবো না ভাই এসে আপনাদের বাকি সব বুঝিয়ে দেবেন,,,,
আকাশের কথার মাঝেই ক্লা’স রুমে টিম লিডার এবং কলেজ প্রিন্সিপাল প্রবেশ করেন,,প্রিন্সিপাল প্রবেশের সাথে সাথে সকল স্টুডেন্ট দাড়িয়ে যায়,,প্রিন্সিপালের পাশের ছেলেটিকে দেখে তো আরুর হার্ট এটাক্ট এর অবস্থা,,,
প্রিন্সিপালঃ– গুড মর্নিং স্টুডেন্টস,,সিট ডাউন,,,,তোমরা এতক্ষণে হয়তো বুঝে গিয়েছো আমরা এখানে কেন এসেছি? তার আগে তোমাদের পরিচয় করয়ে দেয়ই,, আমার পাশে যে দাঁড়িয়ে আছে তার সাথে,, তোমরা হয়তো তাকে চেনো আবার অনেকে চেনো না,,ইনি হলেন শুভ্র খানঁ,, বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল এর ৪ র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী,, ওর আরেকটি পরিচয় আছে,, শুভ্র হলো ঢাকার বিশিষ্ট কোম্পানি খান গ্রুপের ওনার,, এখন শুভ্র তোমাদের সাথে একটা বিষয় নিয়ে কথা বলবে,আশা করি ,তোমরা সেটা মনোযোগ দিয়ে শুনবে,,শুভ্র তুমি শুরু করো,,
শুভ্র ঃ– আসসালামু আলাইকুম,, আশা করি আপনারা ভালো আছেন,,আমি যে বিষয় নিয়ে কথা বলব সেটা হলো আমাদের মেডিক্যাল গ্রুপ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমরা আপনাদের সাথে কাজ করবো,,এখানে মোট ৬ টা গ্রু’প করা হবে,,এবং আমরা ৬ জন লিডার থাকবো,,প্রতিটি গ্রুপে ৫ জন মেম্বার থাকবে,,আপনাদের কাজ গুলো পরে যার যার লিডার রা বুঝিয়ে দেবে,,এবং কাল কে জাজমেন্ট এর মাধ্যমে দল নির্বাচন করা হবে,,,আজ এই টুকুই,,কাল থেকে কাজ শুরু হবে,,
আজ আসি,,আল্লাহ হাফেজ
প্রিন্সিপালের থেকে বিদায় নিয়ে শুভ্ররা চলে গেলো,,এদিকে আরু তো চিন্তায় শেষ শুভ্র না জানি ওকে কি করে,,
আরুকে অন্য মনস্ক দেখে দিশা বার কয়েক আরুকে ডাক দিলো কিন্তু আরুর কোন হেলদোল না দেখে ঠাস করে মাথায় গা’ট্টা মারে,,হঠাৎ মাথায় আঘাত লাগার ফলে আরু চমকে উঠে,,
আরুঃ- ওই ছে’মরি,,কিলাকিলি করচ ক্যা??
দিশাঃ- কি ভাবছিস বলতো? কখন থেকে ডাকছি শুনতেই পাচ্ছিস না!!
আরুঃ- আরে কিছু না তো,,ক্লাস কর,,মনোযোগ দিয়ে,,
দিশা আর কথা না বাড়িয়ে ক্লাসে মনোযোগ দিলো
,,ক্লাস শেষে
আহান,আরু,দিশা,রাকিব আর রিয়া কলেজ থেকে বের হয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে বর কোন একটা বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছে,,কথা বলা শেষে যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে গেলো,, আরু আর দিশার বাড়ি একই দিকে হওয়ায় তাড়াও একসাথে যাচ্ছে,, এমন সময় পিছন থেকে একটা বা’চ্চা ছেলে ডাকতে ডাকতে আরু দের সামনে এসে হা’টুতে ভর করে হাঁ’পাতে শুরু করলো,,
ছেলেটিঃ– ভাবি গো ভাবি,, আ’মনে কি কা’নে হু’নেন না? কো’ম’বা’লাত্তে ডা’কতাছি আমনে তো ফিরাও চা’ইন্না।
ছেলেটার কথা শুনে আরু আর দিশা তো পুরা টা*স্কি খাইছে,,ছেলেটার বয়স আর কত হবে ১০-১১ বছর,,
দিশাঃ- এইছেলে তোর কি মাথায় গ্যা’স্টিক হয়ছে,,তুই কারে ভাবি ডাকছিস?।
ছেলেটা ঃ– আফা( দিশাকে উদ্দেশ্য করে) মুর নাম ছেলে না মুর নাম নবাআআব( একটু টেনে)
দিশাঃ- ইসস নাম কিভাবে বলে দেখোনা,,মনে হচ্ছে নবাব সিরাজউদৌলার নাতি,,
নবাবঃ– আরে আফা আপনি কেমনে জানেন আমার দাদার নাম সিরাজ!!!
দিশাঃ- অ্যাএএ??
দিশা আর নবাবের কথা শুনে বেচারা আরু কোমায় যাওয়ার জোগার,,,বিরক্ত হয়ে আরু বলতে লাগলো,,
আরুঃ- ওই তোরা চুপ কর,,কি শুরু করছোচ,,আর এই নবাব তুই কে? আর আমাকে ভাবি ডাকছিলি কেন? আমি তোর কোন ভাইয়ের বউ?? হুম?
নবাব ঃ– আমি তো কিছু জানি না আফা,, ভাই কইলো আপনেরে ভাবি কইতে আর কইছে এই চিডিডা ( শার্ট এর পকেট থেকে একটা চিঠি বের করে)দিতে।
আরুঃ- চিঠি?? কে দিলো?
নবাব ঃ– ভাই দিসে এই নেন।
আরু চিঠিটা নিয়ে দেখতে লাগলো,,
চিঠিতে লেখা…………
______________________________
রাত প্রায় ১২ টা ৩৪ মিনিট……
..একটা অ’ন্ধকার রু’মে একজন মাঝ বয়সি লোককে চেয়ারের সাথে বেধে রাখা হয়েছে,, চারপাশে নি*স্ত”ব্ধতা,, মাঝে মাঝে ভেসে আসছে কুকুরের ডাক, সাথে ভেসে আসছে কারো তী’ব্র গোঙানির শব্দ,এই নিস্তব্ধ প্রহর কাটাতে হ’ঠাৎ বিকট শব্দে কা’ঠের দরজাটি খুলে গেলো,,ভিতরে প্রবেশ করলো এক যুবক,,আ’পাদ’মস্তক তার ঢাকা,কালো হুডি, আর কালো মা’স্ক পড়া সেই যুবক,,লোকটির দিকে তাকিয়ে মাস্কের ভিতর দিয়েই বাকা হাসলো,,
যুবকঃ– কি ব্যাপার মিস্টার মির্জা শাহেদ,,কেমন আছেন?( বলেই মির্জা শাহেদের সামনে রাখা চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসলো)
মির্জা ঃ– উমম উমমম……..
যুবক ঃ– ওমা৷ কি হলো,, কথা বলুন,,ওহহো সরি সরি কথা বলবেন কিভাবে মুখ তো বাঁ’ধা…
মির্জাঃ— উমম……
যুবক ঃ– আরে আরে এত উ’ত্তেজিত হচ্ছেন কেন?? সবুর করেন,,ওয়েট খুলে দিচ্ছি,, ( বলে মির্জা শাহেদের মুখের বাধন খুলে দিলো)
মির্জাঃ– কে তুমি? আর আমার সাথে তোমার কিসের শ’ত্রুতা?আমাকে কি করে চিনো? বলো?
যুবক ঃ– আরে আরে এতো উ’ত্তেজিত হচ্ছেন কেন,, রিলাক্স,,ধীরে ধীরে বলুন, এই বয়সে এতো তেজ ভালো না,, মিস্টার শাহেদ মির্জা,,
মির্জা ঃ— বলো কে তুমি আর আমাকে এখানে তুলে আনার মানে কি,? কি চাও তুমি?
যুবকঃ– বলবো বলবো,,আগে বলেন তো আপনাদের দলের লিডার কে? আর মেয়ে গুলোকে কোথায় রেখেছেন?
মির্জাঃ– মমমমানে ( তোতলাতে তোতলাতে)
যুবকঃ– মানে বোঝেননা?কত মায়ের বুক খালি করেছেন সেই হিসাব আছে আপনার কাছে?
মির্জাঃ– আআআমমি আমি কিছু জানি না কিছু দয়া করো আমাকে ছেড়ে দাও,,
যুবকঃ– আমার মাথা যথেষ্ট ঠান্ডা আছে,, গরম হলে কিন্তু আপনার উপর প্রভাব টা ভালো পড়বে না,,
মির্জাঃ– বললাম তো আমি কিছু জানিনা,,
যুবকঃ– লাস্ট বার বলছি,, যা জানেন বলে ফেলুন,
মির্জাঃ– জানিনা বললাম তো,,আর জানলেও বলবো না,,মরে গেলেও না,,
যুবকঃ– ঠিইইক আছে,,,তাহলে মরুন,,
বলেই যুবকটি উঠে গেলো চেয়ার থেকে,, হঠাৎ করেই যুবকটি কাউকে ভেতরে আসার জন্য বলল,বলেই সে ফের চেয়ারে বসে পড়লো,,
কাঠের দরজা ঠেলে একজন ছেলে ভেতরে ঢুকলো বয়স ২৫-২৬ হবে,,
সিয়ামঃ– স্যার? ডেকেছেন?
যুবকঃ– হ্যা,, ডেকেছি,,,তোমাকে বা কত বার বলেছি আমার ভাই বলে ডাকবে,,
সিয়াম ঃ– আচ্ছা ভাইয়া,, ডাকবো কিন্তু মনে থাকে না( বলেই একটা হাসি দিলো)
যুবক ঃ– আচ্ছা,, এই শাহেদ কে আমার স্পে’শাল জায়গায় ট্রা’ন্সফার করার ব্যবস্থা করো,,আর ভালো করে মেহমানদারি করো আমি রাতে আসছি,,বলেই যুবকটি বের হয়ে চলে গেলো,,
সিয়াম ঃ– আল্লাহ ই জানে এই মির্জা বেটার কপালে কি আছে,,(মনে মনে),
সিয়াম আরো কয়েকজন বডিগার্ড দের ডেকে মির্জা শাহেদকে তাদের গোপন জায়গায় নিয়ে যায়,,
রাতে…..
চলবে??.