বিবশ_রজনী #পর্ব_ছয়

#বিবশ_রজনী
#পর্ব_ছয়
…..
নিজাম সাহেব জেরিনের ফোন নম্বরে ফোন করলেন, জেরিন ফোন ধরতেই তিনি বললেন,
“হ্যালো জেরিন বলছেন?”
–“জ্বী বলছি, কে বলছিলেন?”
–“আমি নিজাম আহমেদ বলছি। সৌমিত্রর কাছ থেকে আপনার ফোন নম্বর নিয়েছি।”
–“ও আচ্ছা, কি ব্যাপার বলুন।”
–“আপনার সাথে ঈশানের ব্যাপারে জরুরী কিছু কথা ছিল।”
–“জ্বী বলুন।”
–” সামনাসামনি বললে ভাল হতো।”
–“কি বিষয়ে বলুন তো।”
–“জেরিন, সৌমিত্র সম্ভবত আমার ব্যাপারে আপনাকে কিছু বলেনি। আমি একজন সাইক্রিয়াটিস্ট। ঈশান দীর্ঘদিন থেকে মানসিক কিছু সমস্যায় ভুগছে, আমি চেষ্টা করছি ওকে সমস্যাগুলো থেকে মুক্ত করার। ঈশানকে সমস্যাগুলো থেকে বের করবার জন্যে আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন।”
–“কেমন সমস্যা?”
–“আপনি কি আমার সাথে কাল একবার দেখা করতে পারবেন?”
–“জ্বী পারবো, কোথায় কয়টার সময় আসতে হবে?”
–“আপনি বলুন, আপনি যেখানে বলবেন আমি সেখানে চলে আসবো।”
–“আগামীকাল বিকেল চারটার দিকে সংসদ ভবনের সামনে আসতে পারবেন?”
–“অবশ্যই।”
–“আচ্ছা তাহলে আগামীকাল দেখা হচ্ছে।”

রাতের খাবার খেয়ে নিজাম সাহেব ল্যাবে বসে ঈশানের চিকিৎসার ব্যাপারে ভাবতে শুরু করলেন। জেরিন যদি সহযোগিতা করতে রাজী হয়ে যায় তাহলে ঈশানের ক্ষেত্রে তিনি কি পদ্ধতি অবলম্বন করবেন? নিজাম সাহেব পুনরায় ঈশানের ভিডিও দেখতে শুরু করলেন, ঈশান বিড়বিড় করে কথা বলার সময় কিছুক্ষণ পর পর থামে, ওর মুখের অবয়ব দেখে মনে হয় ও প্রতিত্তোরের জন্যে অপেক্ষা করছে। এর মানে কী? ওর অবচেতন মন কি ওকে কোন প্রতিত্তোর দেয়? যদি তা নাই ই হবে তবে ও ওরকম ভাবে কথা বলার মাঝে থামবে কেন? ঈশান যদি অবচেতন মনের কাছ থেকে কোন প্রতিত্তোর পেয়েই থাকে তবে প্রতিত্তোর গুলো ঠিক কেমন হতে পারে? নিজাম সাহেব ঈশানের কথোপকথন লিখে রাখা কাগজ বের করলেন, ঈশান ঘর থেকে বের হয়ে প্রথম কথাটি বলল, “ঘর থেকে বের হলাম, যাচ্ছি ছাদে।”
এর সম্ভাব্য প্রতিত্তোরে নিজাম সাহেব লিখলেন, “কেন ছাদে কেন? পাগলামি কোরো না তো, ঘরে যাও।”
ঈশান ছাদে গিয়ে বলল, “কষ্ট হয় বুঝলে, খুব কষ্ট হয়।”
নিজাম সাহেব লিখলেন, “কিসের কষ্ট! শোনো এরকম কোরো না।”
ছাদের রেলিংয়ের উপরে দাঁড়িয়ে ঈশান বলল, “আমি এখন কি করছি জানো?”
প্রতিত্তোরে নিজাম সাহেব লিখলেন, “কি করছো?”
ঈশান একমুহূর্তের জন্যে থেমে বলল, “ছাদের রেলিংয়ের উপর দিয়ে হাঁটছি, পরে গেলে মরে যাব। সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
নিজাম সাহেব লিখলেন, “কি যা তা পাগলামি করছো, ঘরে ফিরে যাও তো। অনেক রাত হলো, ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।”

নিজাম সাহেব এতটুকু লিখে উঠে দাঁড়ালেন, ঘুমে চোখ দুটো তাঁর বন্ধ হয়ে আসছে। তিনি এখনো জানেন না জেরিন সবকিছু শোনার পর সহযোগিতা করতে রাজী হবে কি না, যদি রাজী হয়ে যায় তবে ঈশান রাতে হাঁটার সময় তিনি জেরিনকে তার সামনে উপস্থিত করতে চান। জেরিনকে তিনি ঈশানের অবচেতন মনের ভূমিকায় রেখে দেখতে চান ঈশানের মাঝে কোনো পরিবর্তন আসে কি না।

ল্যাব থেকে উঠে নিজাম সাহেব ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন।

সকালবেলা হামিদুলের আগে নিজাম সাহেবের ঘুম ভেঙে গেল, তিনি বিছানা ছেড়ে মুখ হাত ধুয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলেন দরজার নিচে একটা খাম পড়ে আছে। খাম দেখে তিনি অবাক হলেন না, খাম না এলেই বরং তিনি অবাক হতেন। আগে থেকেই নিজাম সাহেব ধারণা করে রেখেছিলেন যে নাম-ঠিকানা বিহীন অদৃশ্য একটা চিঠি তাকে পাঠিয়েছে সে আবারও চিঠি পাঠাবে। তিনি দরজার সামনে গিয়ে খাম তুলে নিলেন, খাম খুলে চিঠি বের করে তিনি খানিকটা অবাক হলেন কারণ তিনি ভেবেছিলেন, এইবার হয়তো চিঠি লেখার ক্ষেত্রে অন্য কোনো পন্থা অবলম্বন করা হবে কিন্তু চিঠিটা কলমের কালিতে লেখা। নিজাম সাহেব চিঠি পকেটে রেখে রান্নাঘরে গিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে বেলকনিতে গিয়ে বসলেন। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে তিনি পকেট থেকে চিঠি বের করে পড়তে শুরু করলেন। চিঠিতে লেখা,

“আপনার কাছে অতীত এবং ভবিষ্যতের মূল্য কেমন? অতীতের স্মৃতি, ভবিষ্যতের স্বপ্ন-পরিকল্পনা আপনাকে কেমন প্রভাবিত করে? খুব বেশি নাকি আপনি বর্তমান নিয়েই বাঁচতে চান?”

বিঃদ্রঃ আপনার উত্তরের অপেক্ষায় থাকবো। উত্তর অবশ্যই হাতে লিখবেন। উত্তর পাঠাতে আপনাকে চলে আসতে হবে বাংলা বাজারে। সময় নিয়ে ‘দি বুক সেন্টার’ বইয়ের দোকান খুঁজে বের করতে হবে। আপনার কুকুরটা খুব লক্ষ্মী, একবার ইচ্ছা হচ্ছিলো ওকে নিয়ে আসি।

নিজাম সাহেব চিঠি রেখে একটা সিগারেট ধরিয়ে ভাবতে শুরু করলেন। অসংখ্য সুপ্রতিষ্ঠিত মানুষ অতীত এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে বারণ করে বলেছেন বর্তমানটাই সত্য, বর্তমান নিয়েই বাঁচতে হবে। কিন্তু তিনি মনে করেন, অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ভাবনার উপর মানুষের নিজস্ব কোনো কর্তৃত্ব নেই সুতরাং মানুষ অতীত-ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে না চাইলেও ভাবনাগুলো হরহামেশাই নিজে থেকে এসে মানুষের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে। যেহেতু অতীতের সকল অভিজ্ঞতাই মানুষের স্মৃতিকোষে জমা রয়েছে তাকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। অতীতের সুন্দর অভিজ্ঞতাগুলো মানুষকে যেমন সুখী করে তেমনি খারাপ অভিজ্ঞতা গুলো যেন পরবর্তীতে আবারও না হয় সেজন্যে মানুষ সচেতন থাকে। মানুষ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেই বর্তমানকে কাজে লাগায়।
নিজাম সাহেবকে অতীত এবং ভবিষ্যৎ উভয় কালই প্রভাবিত করে কিন্তু তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেন বর্তমানকে জোর দেবার।

বেলকনি থেকে উঠে নিজাম সাহেব ঘরে গিয়ে দ্রুত কাগজ কলম নিয়ে লিখলেন,
“অতীত এবং ভবিষ্যৎ আপনাকে যেমন প্রভাবিত করে আমাকেও তেমনি প্রভাবিত করে৷ মানুষ অতীত এবং ভবিষ্যৎ কালকে উপেক্ষা করতে পারে না, তবে তারা সর্বদাই বেঁচে রয়েছে বর্তমানে।”

হামিদুল ঘুম থেকে উঠে হাই তুলতে তুলতে নিজাম সাহেবের ঘরে এসে বলল, “আমার আগে উঠে গেছো।”
নিজাম সাহেব হেসে বললেন, “হ্যাঁ, তাড়াতাড়ি মুখ হাত ধুয়ে নে। বাইরে নাস্তা করে দুইটা জায়গায় যেতে হবে।”

হামিদুল দ্রুত মুখ-হাত ধুয়ে তার সবচেয়ে পছন্দের শার্ট-প্যান্ট, জুতো পরে নিজাম সাহেবের ঘরে ফিরে এলো। নিজাম সাহেব হামিদুলের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললেন। হামিদুল তার লাল শার্ট, কালো প্যান্ট পরেছে ইন করে, তার প্যান্টের চেন খোলা। ওর জুতো জোড়া নিজাম সাহেব পছন্দ করে কিনে এনেছিলেন কিন্তু বাসায় আসার পর দেখা গেল জুতো জোড়া হামিদুলের এক সাইজ বড় হয়েছে। তিনি জুতোজোড়া বদলে এনে দেবেন বলেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে তিনি বদলে আনার কথা ভুলে গেছেন। নিজাম সাহেবকে শব্দ করে হাসতে দেখে হামিদুল বেশ অপমান বোধ করছে। হাসতে হাসতেই নিজাম সাহেব বললেন, “কিরে তোর প্যান্টের পোস্ট অফিস খোলা কেন?”
হামিদুল প্যান্টের চেনবক্সের দিকে তাকিয়ে দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে গেল। নিজাম সাহেব হামিদুলের পেছন পেছন ওর ঘরে গিয়ে বললেন, “শার্ট-প্যান্ট ইন করে জুতোর সাথে পরেছিস, দেখে মনে হচ্ছে ঔষধ বেচার কাজ করিস নইলে কোম্পানির অর্ডার কাটতে দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়ানোর কাজ করিস। শার্ট-প্যান্ট খুলে একটা জিন্স পরে নে সাথে টি-শার্ট। আমি রেডি হয়ে আসছি।”

হামিদুলকে নিয়ে নিজাম সাহেব বাসা থেকে বের হয়ে হোটেলে সকালের নাস্তা করে চলে গেলেন বাংলা বাজারে। দি বুক সেন্টার খুঁজে বের করতে তাকে খুব বেশি বেগ পেতে হলনা। তিনি দি বুক সেন্টারের দোকানিকে চিঠি দিয়ে শাহবাগের উদ্দেশ্যে হামিদুলকে নিয়ে রওনা করলেন।

কে চিঠি পাঠাচ্ছে নিজাম সাহেব যে তা ভাবছেন না বিষয়টা ঠিক তা নয়, তবে তিনি জানেন, যে চিঠিগুলো লিখছে সে নিজে থেকেই তার পরিচয় প্রকাশ করবে সুতরাং তাকে খুঁজে বের করবার বিশেষ প্রয়োজন নেই, খুঁজতে গেলেই দেখা যাবে সে নিজেকে লুকাবার চেষ্টা করছে।

জাদুঘরের সামনে এসে নিজাম সাহেব গাড়ি থামালেন। জেরিনের সাথে দেখা করবার কথা বিকেল চারটায়, কেবল বাজছে দুপুর একটা, হাতে যথেষ্ট সময়, তিনি হামিদুলকে নিয়ে টিকিট কেটে জাদুঘরে প্রবেশ করলেন।

ঘন্টাখানেক নিজাম সাহেবরা জাদুঘরে কাটালেন। জাদুঘরের বিশেষ কিছুই হামিদুলের পছন্দ হল না, কেবলমাত্র বিভিন্ন প্রজাতির পাখিগুলো তার ভালো লেগেছে। নিজাম সাহেব জাদুঘর থেকে হামিদুলকে নিয়ে আজিজ সুপার মার্কেটের একটা ফাস্টফুডে গিয়ে বসে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি খাবি?”
হামিদুল খাবারের দিকে তাকিয়ে বলল, “পিজ্জা।”
নিজাম সাহেব দোকানীকে দুইটা পিজ্জা দিতে বললেন।

দোকানি মুহূর্তের মধ্যে ওভেনে পিজ্জা গরম করে টেবিলে দিয়ে গেল। হামিদুল পিজ্জাতে কামড় দিয়ে বলল, “এটা এমন কেন?”
নিজাম সাহেব বললেন, “কেমন?”
–“খেয়ে দেখো।”
নিজাম সাহেব পিজ্জাতে কামড় দিয়ে বললেন, আসলেই তো। তিনি পিজ্জা পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন, পিজ্জাতে দেওয়া হয়েছে, মিষ্টি কুমড়া সাথে সুজি, আলু, পেঁয়াজ-মরিচ, এক টুকরো মুরগির মাংসও খুঁজে পাওয়া গেল না। তিনি বেশ ক্ষেপে গিয়ে দোকানীকে ডেকে বললেন, “পিজ্জাতে সুজি দেওয়া কেন? আর চিকেন পিজ্জায় চিকেনটা কোথায়?”
দোকানী বিরক্তমুখে বলল, “আমাদের এখানের পিজ্জা এমনই।”
–“পিজ্জাতে মুরগির মাংসের ছিটেফোঁটাও নেই সেটা মেনে নিলাম, কিন্তু সুজির ব্যাপারটা কী? লাভের জন্যে খরচ কমাতে কমাতে এত বেশি কমিয়েছেন যে এটা আর খাবার উপযোগী নেই।”
দোকানী বলল, “আমাদের এখানে অসংখ্য মানুষ পিজ্জা খেতে আসে কেউ তো কখনো কমপ্লেইন জানালো না, আপনিই কেবল জানালেন।”
মুহুর্তের মধ্যে এক বয়স্ক লোক দোকানীকে চেঁচিয়ে ডেকে তার সামনের পিজ্জা দেখিয়ে বললেন, “এই বেটা, এটা কি তোর বাপের মাথা বানায়ছিস।”
নিজাম সাহেব দোকানের বিল পরিশোধ করে হামিদুলকে নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসলেন।

সংসদ ভবনের সামনে গাড়ি পার্ক করে নিজাম সাহেব গাড়ি থেকে সংসদ ভবন দেখিয়ে হামিদুলকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বল তো ঐ ভবনটার নাম কী?”
হামিদুল সাথে সাথে বলল, “সংসদ ভবন।”
–“বাহ, তোর মনে আছে দেখছি। বল তো দেখি সংসদ ভবনের প্রধান স্থপতির নাম কী?”
হামিদুল মাথা চুলকাতে শুরু করলো অর্থাৎ তার মনে পড়ছে না। নিজাম সাহেব বললেন, “আগে তোকে দুইবার বলেছি, ভুলে গেছিস। এইবার মনে রাখবি, আবার যখন আসবো তখন জিজ্ঞাসা করবো। সংসদ ভবনের মূল স্থপতির নাম, লুই আই কান।”

জেরিন ঠিক চারটা বাজে নিজাম সাহেবকে সংসদ ভবনের সামনে এসে ফোন করলো। নিজাম সাহেব ফোন ধরে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন, বাইশ থেকে তেইশ বছরের এক তরুণী এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে খুঁজছে। তিনি বললেন, “আপনাকে সম্ভবত আমি দেখতে পেয়েছি, আপনি কি মেরুন রঙের জামা পরা?”
জেরিন বলল, “জ্বী, আপনি কোথায়?”
নিজাম সাহেব সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন, “জেরিন!”
জেরিন ফোন রেখে হাসিমুখে বলল, “কেমন আছেন?”
নিজাম সাহেব বললেন, “আমি বেশ ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?”
–“আমিও ভালো আছি।”

সংসদ ভবনের সামনে বসে নিজাম সাহেব ঈশানের ব্যাপারে সবকিছু জেরিনকে খুলে বলে জিজ্ঞাসা করলেন, “ঈশানের সমস্যাগুলো তো আপনি শুনলেন। এখন যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করি, আপনি কি ঈশানকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেবেন?”
জেরিন সাথে সাথে বলল, “ও কি কখনো এই সমস্যা থেকে বের হতে পারবে?”
–“হয়তো পারবে অথবা পারবে না। মনে করুন, ঈশান এই সমস্যা থেকে বের হতে পারল না, আপনি কি ওকে গ্রহণ করবেন? ভেবে বলুন, সময় নিন, ঝোকের বশে সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজন নেই, কারণ আমরা এখনো জানি না ঈশান আদৌ কখনো সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে কি না। আমি আজ উঠছি, আমার ফোন নম্বর তো আপনার কাছে আছেই, যদি মনে করেন ঈশানের মানসিক সমস্যাকে উপেক্ষা করে ওকে আপনি গ্রহণ করতে পারবেন তাহলে আমাকে ফোন করে জানাবেন। আপনি যদি ওকে গ্রহণ করতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে নিয়ে একটা প্রচেষ্টা চালাতে চাই ঈশানকে এই সমস্যা থেকে মুক্ত করার। আপনি যদি ওকে গ্রহণ করতে না চান, তবে অন্য কাউকে আমার খুঁজতে হবে।”
নিজাম সাহেব উঠে দাঁড়ালেন। জেরিন কান্নামিশ্রিত গলায় বলল, “পারবো।”
নিজাম সাহেব বললেন, “আপনি আরও ভাবুন, আপনার পরিবার-পরিজন আছে, তাছাড়া আমি কিন্তু আপনাকে কথা দিতে পারছি না যে ঈশান আপনাকে গ্রহণ করবে। আমি তাকে সমস্যা থেকে বের করতে চাইছি, আপনাকে সে গ্রহণ করবে কি করবে না সেই সিদ্ধান্তটা ওর নিজের, তাতে আমি হস্তক্ষেপ করতে পারবো না।”

জেরিনের চোখ দুটো ছলছল করছে। নিজাম সাহেবের মনে হলো যে কোন সময় জেরিনের চোখ থেকে জল পড়তে শুরু করবে, তিনি কারো চোখের জল দেখতে চান না। জেরিনের চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ার আগেই তিনি গাড়িতে গিয়ে বসলেন।
…..
#চলবে

লেখা-
নাহিদ হাসান নিবিড়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here