বিবশ_রজনী #পর্ব_আট

#বিবশ_রজনী
#পর্ব_আট
…..
তারিখ নিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজাম সাহেব বেশ বিভ্রান্তিতে পড়ে গেলেন। তাঁর মনে হচ্ছে তারিখটা কোনো বিশেষ তারিখ, যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে সালের জায়গায় বিশ লেখা কেন? বিশ দিয়ে এখানে দুটো সাল উল্লেখ করা যেতে পারে, দুই হাজার বিশ এবং উনিশশত বিশ কিন্তু সালটা যদি উল্টো করে লেখা হয়ে থাকে তাহলে সেটা দাঁড়াবে দুই হাজার দুই অথবা উনিশশত দুই। পুরো তারিখটাই যদি উল্টো করে দেওয়া হয় তাহলে হবে ২০. ১০. ১৩ অর্থাৎ ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসের বিশ তারিখ। তিনি বেশ লম্বা সময় তারিখ নিয়ে ভাবলেন কিন্তু বিশেষ কিছুই বুঝতে পারলেন না। সংখ্যার প্যাচে ফেলে মানুষের মস্তিষ্ককে খুব গভীরভাবে প্রভাবিত করা যায়। নিজাম সাহেব যতই চেষ্টা করছেন তারিখ নিয়ে না ভাবার ততই তাঁর চিন্তা বাড়ছে। একবার তাঁর মনে হচ্ছে এটা সাম্প্রতিক তারিখ, একবার মনে হচ্ছে উনিশ শতকের তারিখ, আবার মনে হচ্ছে ২০০২ অথবা ২০১৩ সাল। তারিখ নিয়ে ভাবতে ভাবতে তিনি বিরক্ত হয়ে ল্যাব থেকে বের হয়ে বাড়ির নিচে পায়চারি করতে শুরু করলেন। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন মস্তিষ্ককে তারিখের বিভ্রান্তি থেকে বের করার কিন্তু তিনি পারছেন না। একের পর এক তারিখ তাঁর মনে পড়ছে এবং তিনি স্মৃতিচারণ করার চেষ্টা করছেন সেসব তারিখে বিশেষ কিছু ঘটেছিল কি না।

ঘন্টাখানেক নিজাম সাহেব বাড়ির নিচে পায়চারি করলেন কিন্তু তারিখের বিভ্রান্তি থেকে বের হতে পারলেন না। তিনি বাড়ির দক্ষিণপাশ থেকে বাড়ির প্রধান ফটক পর্যন্ত হাঁটছেন এবং ভাবছেন হঠাৎ বিউটির গলা শুনে নিজাম সাহেবের ঘোর কাটলো। তিনি দেখলেন, বিউটি তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তার পেছনে রফিক একটা মাল বোঝাই ভ্যানগাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছে। বিউটি বলল, “ভাইজান আপনার কি হয়েছে? কিছু নিয়ে কি খুব চিন্তায় আছেন?”
নিজাম সাহেব বললেন, “না তেমন কিছু না।”
–“আপনাকে দেখে মনে হলো খুব গভীর ভাবে কিছু চিন্তা করছেন।”
–“চিন্তা করছিলাম, তবে বিশেষ কিছু নিয়ে না, ফালতু বিষয় নিয়ে। তোমরা চলে এসেছো ভালো হয়েছে। নিচতলার ঘরটা তো তালা মারা, তোমরা একটু দাঁড়াও আমি চাবি নিয়ে আসি।”

নিজাম সাহেব সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে নিজের উপর নিজেই বিরক্ত হয়ে গেলেন, সামান্য তারিখ নিয়ে ভেবে ভেবে তিনি এত সময় নষ্ট করলেন। মনে মনে তিনি বিউটিকে ধন্যবাদ দিলেন, বিউটি যদি তাকে না ডাকতো তাহলে হয়তো সহজে তাঁর ঘোর কাটতো না।

দোতলায় গিয়ে নিজাম সাহেব হামিদুলকে দিয়ে নিচতলার ঘরের তালার চাবি পাঠিয়ে দিয়ে রান্নাঘরে ঢুকলেন, ক্ষুধায় তাঁর পেট চো-চো করছে কিন্তু রান্নাঘরে খাওয়ার মতো রান্না করা কিছু তিনি খুঁজে পেলেন না। আজ বিউটি সকালবেলা এসেছিল ঠিকি কিন্তু রান্না করেনি। হামিদুলও তাকে কিছু বলেনি, এর কারণ হচ্ছে হামিদুলের জন্যে তিনি নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের চকলেট, আইসক্রিম, বিস্কিট নিয়ে আসেন। রান্না না হলে হামিদুল বরং খুশি হয়, একটার পর একটা খেতে থাকে। নিজাম সাহেবের ইচ্ছা হলো রফিককে টাকা দিয়ে সবার জন্যে হোটেল খাবার কিনিয়ে আনতে, তাঁর ধারণা বিউটিরাও বাড়ি ফিরে কিছু খায়নি, তারা যত দ্রুত সম্ভব মালামাল গোছগাছ করে চলে এসেছে। রফিককে খাবার আনতে পাঠানোর কথা ভাবলেও তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেন, রফিকের পায়ে রিক কামড়ে দিয়েছে, সে হাঁটা-চলা করছে ল্যাংড়াতে ল্যাংড়াতে।

নিজাম সাহেব বাসা থেকে বের হয়ে হোটেলে ঢুকে ওয়েটারকে ডেকে দ্রুত খাবার দিতে বললেন।

হোটেলে খাওয়া-দাওয়া করে তিনি হামিদুল এবং বিউটিদের জন্যে খাবার কিনে নিয়ে আসলেন।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে, নিজাম সাহেব বাসা থেকে বের হয়ে মহল্লার পার্কে হাঁটতে হাঁটতে জেরিনকে ফোন করলেন। জেরিন ফোন ধরার সাথেই তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “মিস জেরিন ঈশানের ভিডিও দেখেছেন কী?”
জেরিন বলল, “বেশ কয়েকবার দেখেছি, রাতে আবার দেখবো।”
–“আচ্ছা আপনি আপনার মা-বাবার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন তো? আপনাকে কিন্তু বেশ কয়েক রাতে ঈশানদের বাসায় যেতে হতে পারে। যদি এখনো কথা না বলে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি তাদের সাথে কথা বলে নেবেন। দয়া করে মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না।”

জেরিনের সাথে কথা বলা শেষ করে নিজাম সাহেব ফোন রেখে পার্ক থেকে বের হয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করলেন। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তিনি দেখলেন কিছু বাচ্চা ছেলে-মেয়ে রাস্তার উপরে খেলছে। বাচ্চাগুলো লাফাচ্ছে, একজন আরেকজনের পেছন ছুটছে, তাদের পরনে ছেঁড়া-নোংরা কাপড়। বাচ্চাগুলোকে হৈচৈ করতে দেখে নিজাম সাহেবের মন খারাপ হয়ে গেল। পথই এদের খেলার মাঠ, পথই এদের উপার্জন স্থল, পথই তাদের শেষ আশ্রয়, পথ থেকে পথান্তরে তারা ছুটে বেড়ায়। নিজাম সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে হামিদুলের কথা ভাবলেন। পথের এই বাচ্চাগুলো যদি ভালো পরিবেশ পেত, একটু যত্ন, একটু ভালোবাসা পেত তাহলে হয়তো তারাও বড় হতো, প্রতিষ্ঠিত হতো। নিজাম সাহেব বাচ্চাগুলোর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। ওরা হৈচৈ থামিয়ে শান্ত হয়ে তাঁর দিকে তাকালো। নিজাম সাহেব বললেন, “এই তোরা আইসক্রিম খাবি?”
সবাই হাসিমুখে বলল, “খামু।”

নিজাম সাহেব বাচ্চাদেরকে সাথে নিয়ে সবাইকে আইসক্রিম কিনে দিয়ে বাসায় ফিরে আসলেন।

রাতে আব্দুল মালেক নিজাম সাহেবকে ফোন করে বললেন, “ছাদে নেট লাগানোর কাজ মোটামুটি শেষ, আশা করছি আগামীকাল পুরোপুরি কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
নিজাম সাহেব বললেন, “ঠিক আছে, তাহলে আমরা পরশু রাতে আসবো।”

নিজাম সাহেব বাসায় ফিরে ল্যাব ঘরে গিয়ে বসলেন। মুহুর্তের মধ্যে তাঁর মনে পড়লো চিঠির তারিখের কথা, তিনি তারিখ নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন।

রাত দশটার দিকে জেরিন নিজাম সাহেবকে ফোন করে বলল, “ভাইয়া মা আপনার সাথে কথা বলতে চেয়েছেন, আপনি কি একবার আমাদের বাসায় আসতে পারবেন?”
নিজাম সাহেব বললেন, “অবশ্যই আসতে পারবো কিন্তু আপনাদের বাড়ির ঠিকানা তো আমি জানি না।”
–“ফার্মগেট খামার বাড়ি, এখানে এসে আমাকে ফোন দিলেই আমি আপনাকে নিয়ে আসবো।”
–“আচ্ছা ঠিক আছে, কখন আসবো?”
–“আপনার যখন ইচ্ছা।”
–“এখন আসবো কী?”
–“আপনার যদি সমস্যা না হয় তাহলে আসতে পারেন। মা বেশ রাতে ঘুমান।”

নিজাম সাহেব ল্যাবঘর থেকে বের হয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলেন।

ফার্মগেটের রাস্তায় বর্তমানে সবসময় দীর্ঘ জ্যাম লেগে থাকে, বেশ রাত হওয়ায় নিজাম সাহেব রাস্তায় তেমন জ্যাম পেলেন না। তিনি আধাঘন্টার মধ্যে খামার বাড়ি পৌঁছে গেলেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে জেরিনকে ফোন করলেন।

জেরিন বাড়ির দারোয়ানকে সাথে করে নিজাম সাহেবকে বাসায় নিয়ে গেলেন।

নিজাম সাহেব জেরিনদের বসার ঘরে গিয়ে বসলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে জেরিনের মা সুলতানা বেগম বসার ঘরে প্রবেশ করে নিজাম সাহেবকে সালাম দিয়ে সোফায় বসলেন। নিজাম সাহেব সালামের উত্তর নিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “কেমন আছেন আপনি?”
–“আমি ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?”
–“আমিও বেশ ভালো আছি।”

সুলতানা বেগমকে চুপচাপ থাকতে দেখে নিজাম সাহেব বললেন, “জেরিন বলল, আপনি আমাকে আসতে বলেছেন।”
মিসেস সুলতানা বললেন, “আসলে জেরিন বলছিল ঈশানের ট্রিটমেন্টের জন্যে ওকে আপনার প্রয়োজন। আমি ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছি না। এতরাতে কিসের ট্রিটমেন্টের জন্যে ওকে প্রয়োজন? যদি দিনের বেলা হতো তাহলে একটা বিষয় ছিল কিন্তু এত রাতের ব্যাপার! মেয়ে মানুষ বুঝতেই তো পারছেন।”
নিজাম সাহেব বললেন, “ঈশান মূলত মানসিক কিছু সমস্যায় ভুগছে। প্রতি রাতে দুইটা থেকে সমস্যাটা শুরু হয়, রাত তিনটা পর্যন্ত থাকে। এই সময়টাতেই জেরিনকে আমার প্রয়োজন।”
–“ঈশানের সমস্যা টা কী?”

নিজাম সাহেব মিসেস সুলতানাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলার পর তিনি জেরিনকে যেতে দিতে রাজী হলেন তবে… একটা শর্ত জুড়ে দিলেন, জেরিনের কোনো ক্ষতি হলে সেই দায়-ভার নিজাম সাহেবের, শুধু তাই নয় নিজাম সাহেবের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবিও তিনি তুলে রাখলেন।

জেরিন বসার ঘরে প্রবেশ করে মিসেস সুলতানাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “তোমাদের কথা শেষ হয়েছে?”
মিসেস সুলতানা বললেন, “হ্যাঁ শেষ, টেবিলে খাবার দিয়েছো?”
–“হ্যাঁ।”
মিসেস সুলতানা সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিজাম সাহেবকে বললেন, “আসুন খেতে আসুন।”
নিজাম সাহেব লজ্জার মধ্যে পড়ে গেলেন। তিনি সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমি তো খেতে পারবো না, সন্ধ্যাবেলাতেই খেলাম।”
মিসেস সুলতানা বললেন, “আপনি মোটেও ভাবতে যাবেন না, আপনাকে না খেয়ে যেতে দেওয়া হবে। আসুন।”

নিজাম সাহেব সোফা থেকে উঠে মিসেস সুলতাকে অনুসরণ করলেন।

গভীর নিশুতি রাত, নিজাম সাহেব দ্রুত গতিতে গাড়ি ড্রাইভ করছেন। ফার্মগেট থেকে ওয়ারীর দূরত্ব খুব বেশি নয়, কিন্তু পুরোটা রাস্তায় একের পর এক সিগনালে পড়ে ৭-৮ মিনিটের পথ কখনো আধাঘন্টা কখনো এক ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যায়। রাত প্রায় একটা বাজে, রাস্তা-ঘাট ফাঁকা, নিজাম সাহেবের বাড়ি পৌঁছাতে দশ মিনিটের মতো সময় লাগলো।

হামিদুল ঘুমিয়ে গেছে, আজ থেকে ও আর ভয় পাবে না, কারণ এখন থেকে রফিক আর তাদের জানালা লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়ে মারবে না। জামা-কাপড় বদলে নিজাম সাহেব বিছানায় শুয়ে পড়লেন এবং মুহূর্তের মধ্যেই ঘুমিয়ে গেলেন।

নিজাম সাহেবের ঘুম ভাঙ্গলো বেশ বেলা করে। তিনি মুখ হাত ধুয়ে ডাইনিংয়ে যেতেই বিউটি এক কাপ চা নিয়ে এসে বলল, “ভাইজান আপনার চা। আপনি তো সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে চা খান। এখন থেকে প্রতিদিন সকালে আমি আপনাকে চা বানিয়ে দেবো।”
নিজাম সাহেব হেসে বললেন, “তোমরা আসাতে আমার খুব সুবিধা হয়েছে। রফিকের কি খবর?”
–“ও শুয়ে আছে, পায়ে ব্যাথা।”
–“হু, ব্যাথা সাড়তে কয়েকদিন সময় তো লাগবেই।”

আজ রাতে জেরিন সহ নিজাম সাহেবের ঈশানদের বাসায় যাবার কথা কিন্তু তিনি জেরিনকে জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গেছেন সে ঈশানদের বাড়ি চেনে কি না। জেরিনের পরেই আরেকটা বিষয় তাঁর মাথায় এলো ঈশানদের ছাদে কি আলোর ব্যবস্থা আছে, তিনি ছাদে এরকম কিছু লক্ষ্য করেননি। যদি ছাদে আলো না থাকে তাহলে জেরিন ঈশান কখন কথা বলছে বুঝবে কি করে? তিনি আব্দুল মালেক সাহেবকে ফোন করে বাড়ির ছাদে আলোর ব্যবস্থা করতে বলে ফোন করলেন জেরিনের নম্বরে কিন্তু জেরিন ফোন ধরলো না।

নিজাম সাহেব বেশকিছুক্ষণ জেরিনের ফোনের অপেক্ষা করে গোসল করতে ঢুকলেন।

গোসল সেড়ে বের হয়ে প্রথমেই নিজাম সাহেব ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলেন জেরিন ফোন করেছে কি না, সে ফোন করেনি। তিনি ভাবলেন সে হয়তো ব্যস্ত আছে, দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ হবার আগে যদি জেরিন তাকে ফোন না করে তবে তিনি আবারও তাকে ফোন করবেন বলে ঠিক করলেন।

নিজাম সাহেব দুপুরের খাবার খেতে বসতেই জেরিন ফোন করলো। তিনি ফোন ধরে বললেন, “আপনি ঈশানদের বাড়ি চেনেন তো?”
জেরিন বলল, “আমি তো কখনো যাইনি, সৌমিত্র ভাইয়ার কাছ থেকে ওদের বাড়ির ঠিকানা নিয়েছি।”
–“আচ্ছা, আপনি এতরাতে আসবেন কি করে? আমি কি আপনাকে নিয়ে আসবো?”
–“না না, আমি আমাদের গাড়িতে করেই চলে যাব, সমস্যা হবে না।”
–“ঠিক আছে, সমস্যা হলে ফোন করবেন।”

সন্ধ্যাবেলা আব্দুল মালেক সাহেব নিজাম সাহেবকে ফোন করে জানালেন, ছাদের চতুর্দিকে বাতি লাগানো হয়েছে।

রাত একটার দিকে নিজাম সাহেব ঈশানদের বাড়ির উদ্দেশ্যে সেগুন বাগিচায় রওনা করলেন।

ঈশানদের বাড়িতে গিয়ে গাড়ি পার্ক করে তিনি গাড়ি থেকে নেমে জেরিনের নম্বরে ফোন করলেন। জেরিন ফোন ধরে বলল, “আমি সেগুন বাগিচাতে চলে এসেছি, বাড়িটা ঠিক খুঁজে পাচ্ছি না।”
নিজাম সাহেব বললেন, “সেগুনবাগিচা হাইস্কুলেই ঠিক উত্তর পাশের বাড়িটাই ঈশানদের।”
–“আচ্ছা, আমি আসছি, আপনি চলে এসেছেন?”
–“হ্যাঁ, আমি ঈশানদের বাড়ির নিচে আছি।”

কিছুক্ষণের মধ্যে একটা মেরুন রঙের এলিয়েন গাড়ি এসে নিজাম সাহেবের সামনে ব্রেক করল। গাড়ি থেকে জেরিন নেমে নিজাম সাহেবের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল, “খুব বেশি দেরি করে ফেললাম দুঃখিত।”
নিজাম সাহেব বললেন, “সমস্যা নেই, আপনি একদম ঠিক সময় এসেছেন। দুইটা বাজতে এখনো কিছুক্ষণ বাকি আছে।”

নিজাম সাহেব আব্দুল মালেক সাহেবকে ফোন করে বললেন, “রাত দুইটার কাছাকাছি বেজে গেছে, আমরা বাড়ির নিচে আছি। মনে হচ্ছে ছাদের বাতিগুলো নেভানো, যদি নেভানো থাকে তাহলে বাতিগুলো একটু জ্বেলে দেবেন।”
মালেক সাহেব বললেন, “আমি এখনই দেখছি।”
–“ঠিক আছে, আমরা সরাসরি ছাদে চলে যাব, আপনাদের আসার প্রয়োজন নেই।”
–“জ্বী আচ্ছা।”

নিজাম সাহেব জেরিনকে নিয়ে লিফটে করে সাত তলায় চলে গেলেন। দুইটা বাজতে এখনো তিন মিনিট সময় বাকি আছে।
…..
#চলবে

লেখা,
নাহিদ হাসান নিবিড়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here