গল্পঃ অভিশাপ,পর্বঃ ০৬,০৭
Writer:- (নষ্ট জীবন) Sohanur Rohoman Sohan
০৬
গলা ঝারিয়ে কাঁশি দিলো “এহেম এহেম”, কিন্তু কোন সারা শব্দ না পেয়ে সোহান ছেলেটা আচর্য হয়ে মনে মনে ভাবলো “অভদ্র পরিবারের মেয়ে নাকি সালামও করলো না! বিছানায় উঠে বসে কাঁধে হাত রেখে বলল “আপনার কি নার্ভাস লাগছে, প্রথম বার সবারি নার্ভাস লাগে।তবে আপনার আমার সবার মতো বাসর রাত হবে নাহ্”। বলার আগে হাত সরিয়ে দিয়ে কাপতে কাপতে বলল…
-আমাকে ধরবেন না, দূরে থাকুন আপনি (মাধবীলতা)
°
ফুলসজ্জার রাতে এমন কথা শোনার জন্য সোহান মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।মাধুু এমন একটা কথা বলবে স্বপ্নেও কল্পনা করেনি, প্রথম যেদিন বিয়ের কথা বলা হয়ে ছিলো মাধবীলতা নামটা শুনেই মনে মনে ভাবে “বাহ্! বেশ সুন্দর নাম তো, মাধবীলতা।যদি মাধু নামে ডাকি তাহলে আরও সুন্দর মানাবে”।
তখন মাধবীলতার আব্বু হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে….
-সোহান! তুমি কি কিছু ভাবছো?” (মাধবীলতারর আব্বু)
.
-(সোহান আমতা আমতা করে বলে)
না, অঙ্কেল।আমি বিয়েতে রাজি যদি কণে রাজি থাকে তো’.(সোহান)
.
-(আচর্য হয়ে বলল)
-ছবি না দেখেই পছন্দ করলে, তবে আর যাই বলো না কেন, মেয়ে আমার কিন্তু মাশাল্লাহ্ দেখতে।ছবির থেকেও সুন্দরী”
(চায়ে আয়েশ করে চুমুক দিয়ে মৃদু হেসে বলল)(মাধবীলতার আব্বু)
.
নিজের মেয়ের এরকম প্রসংশা শুনে প্রথম দিনেই খটকা লাগে।এত রূপবতী হওয়া সত্তেও কেন আমার মতো ডিভোর্সি ছেলেকে পছন্দ করলো বিয়ের জন্য।সোহান নিরবতা ভেঙ্গে বলল..
.
-ছবি দেখে বাহ! বাহ! দিতে চাইনা।এক সময় না হয় সরাসরি দেখা করব, আজ উঠি একটা আর্জেন্ট মিটিং আছে”
(হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল)
হঠাৎ করেই কাপা কাপা মেয়েলী কণ্ঠ সোহানের কানে আসলো।কল্পনাতে হীম হয়ে থাকা চোখ বাস্তবে ফিরে মাধবীলতার দিকে তাকালো।লাল বেনারসিতে পরীর মতো সুন্দর একটা মেয়ে তার কাছে বসে আছে, সোহানের বিশ্বাস হচ্ছে না ৩৪ বছর বয়সেও এমন একটা ফুলের মতো মেয়ে পেয়েছে বউ বিসাবে।
‘
হাত বারিয়ে ঘোমটা তুলে দিয়ে।অজান্তে ঠোঁটের নিচে একটা চুমু দিতে গিয়েও থেমে যায়।
মাধবীলতার ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে পিছনে সরিয়ে দেয় মুখ…
-এসব কি করছেন? আমি আপনার বউ কোনো পতিতা নয় যে আমাকে উপভোগ করবেন! (মাধবীলতা)
.
-কিন্তু কেন? (সোহান)
.
-আমি আপনাকে স্বামীর অধিকার দিতে পারব না।আর আপনার লজ্জা করে না, এই বয়সে এত কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করতে ছিঃ (মাধবীলতা)
.
-সরি নিজের অজান্তেই চুমুটা দিয়ে ছিলাম।আমি বিয়ে করে আমার পিচ্চি মেয়েটার জন্য, (সোহান)
(দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে)
.
-বিয়ের জন্য কেন? কিছু বুঝলাম না পরিষ্কার করে বলুন..(মাধবীলতা)
.
-এক দিন মাঝ রাতে মাতাল হয়ে বাড়িতে ফিরে দেখলাম দরজাটা এখনও খোলা… (সোহান)
(কথার মাঝ কানে প্রশ্ন করে উঠে)
.
-নেশা করেন কেন? (মাধবীলতা)
.
-সম্পূর্ণ ঘটনা তো আগে শুনুন তার প্রশ্ন…
ভয় হলো মনে, পিচ্চি মেয়েটার কিছু হলো নাতো আবার? ছিটকেরি লাগিয়ে দিতেই “হুঁহুঁ” করে কান্নার শব্দ ভেসে এলো কানে।পিচ্চি মেয়েটা ফ্লোরে বসে হাটুর সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে কান্না করছে।মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করে ছিলাম “মামুনী কাঁদছো কেন? কেউ কি মারছে তোমাকে?”
জোরিয়ে ধরে কেঁদে বলে “আব্বু তুমি পঁচা কি সব খাও, আমি ওসব পছন্দ করিনা”
কিভাবে বলি এইটুকু পিচ্চি মেয়েকে আমি ওর আম্মুর জন্য নেশা করি।আমাকে ছেড়ে অন্য জনের হাত ধরে পালিয়েছে।মুচঁকি হেসে বলেছিলাম “আর খাবনা”
হালকা একটু মাথা তুলে বলে “প্রমিস করো”
আবারও মুচঁকি হেসে বললাম “প্রমিস।
কিন্তু আবারও কান্না শুরু করে দিলো তখন বললাম “কাঁদছো কেন আবার বললাম তো খাব না।এই কান ধরছি”
কান ধরে বলি।কান্না জোরিত কণ্ঠে বলে “জানো আব্বু, সবারই আম্মু নিতে আসে স্কুলে শুধু আমার আম্মুই আসেনা।কই গেছে আমার আম্মু”।
সেদিন কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলিছিলাম।কিভাবে বুঝাবো তার আম্মু পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে অন্যজনের হাত ধরে পালিয়েছে!
(এক নিঃশ্বাসে সব গুলো কথা বলে সোহান)
.
-সমস্যা নেই আমি আপনার সন্তানের যত্ন নিব।কিন্তু বউয়ের অধিকার চাইবেন না প্লিজ.. (মাধবীলতা)
.
-হুম, ধন্যবাদ আমাকে হেল্প করার জন্য.. (সোহান)
.
-আমি ভার্জিন না।আমি একজন ইচ্ছাকৃত ধর্ষিতা মেয়ে।তবুও বিয়ে করছেন কেন? (মাধবীলতা)
(চোখে পানি টলটল করছে কথা গুলো বলে)
.
-আমি জানতাম না এই বিষয়টা!! (সোহান)
.
-না জানারই কথা।আব্বু কখনোই জানাতেন না কারণ জানলেই হয়তো না করে দিতেন বিয়ের প্রস্তাব (মাধবীলতা)
.
-ছিঃ ঘৃণা হয় আপনাদের মতো মেয়েদের নিয়ে।দেহ দিয়ে কি বুঝাতে চেয়ে ছিলেন আপনার বয়ফ্রেন্ডকে অনেক ভালোবাসেন তাই তো? (সোহান)
.
-(আচর্য হয়ে) আপনি কিভাবে জানলেন সে আমার বয়ফ্রেন্ড ছিলো? (মাধবীলতা)
.
-আগে যার সঙ্গে সংসার করতাম তারও একি কাহিনী।সেজন্যই তো অন্য সাথে পালিয়েছে।আমি আপনার কাছে অধিকার চাইনা শুধু আমার সন্তানের যত্ন নিলেই হবে (সোহান)
.
-হুম (মাধবীলতা)
(সাধারণ ভাবেই হুম শব্দটা বলল মাধবীলতা)
পাশের রুম থেকে এনে মাধবীলতার কাছে শুয়ে দিয়ে চলে গেলো অন্য রুমে।আর সবার মতো তাদের সেই রাতটি সুখের হয়নি ভাগ্যে ছিলো না হয়তো।
ঘুমের ঘোড়ে মাধবীলতা ছটফট করছে।কপাল বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে ঘাম টপটপ করে পরে বালিশ ভিজে যাচ্ছে।স্বপ্নে দেখছে! ”তার আব্বু কালো কোট পরে দাড়িয়ে আছে জিয়া-মেডিকেলে।ডাক্তারের সাথে কি নিয়ে যেন কথা কাটাকাটি হচ্ছে!
পকেট থেকে হাজার টাকার ৩ টা বান্ডিল বের করে দিয়ে ডাক্তারে হাতে ধরে দিলো।ডাক্তার মাথা ঝাকিয়ে না, না বলছে আর হাত ঠেলে দিচ্ছে।
আরও দুইটা বান্ডিল পকেটে পুরে দিলো, ডাক্তারের মুখে এবার মিষ্টি একটা হাসি ফুটে উঠলো।ডাক্তারের পিছন পিছন তার আব্বু যাচ্ছে, আচর্য মাধবীলতা ব্রেডে শুয়ে আছে জ্ঞান শূন্য হয়ে।
মাধবীলতার পাশের দোলনায় বেশ হাত-পা নরিয়ে খেলা করছে একটা শিশু।দেখতে অনেকটা ৮০ বছরের বুড়োর মতো।মুখে, হাত-পায়ে টেপ পেচিয়ে দিয়ে একটা থলিতে ভড়ে দিলো।তার আব্বু হেঁটে যাচ্ছে বস্তি এলাকাতে ডাস্টবিনে থলেটা ফেলে এদিক সেদিক তাকিয়ে চলে গেলো)
ঘুম থেকে ধরমরিয়ে উঠে বসলো বিছানায়।চোখে হাত রাখতেই বুঝলো জলে ভেজে গেছে দুচোখ।
.
পরিদিন সকালে রান্নার কাজ শেষ করে যখনি তার নতুন মেয়েকে ডাকতে যাবে তখন দরজার আড়াল থেকে ফিসফিসিয়ে কথা বলার আওয়াজ শোনে।দরজা হালকা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢোকে কোনো শব্দ ছাড়াই।
দেওয়ালের দিকে মুখ ঘুরিয়ে কথা বলছে তার পিচ্চি মেয়েটা।হঠাৎ পিছন ফিরে তাকিয়ে বলল “নতুন এই দেখো আমার বন্ধু” কিন্তু মাধবীলতা কিছুই দেখতে পারছেনা।আর এই বাসায় ৩ জন ছাড়া আর কেউ নেই বলেই মনে হয় কারণ সোহান বলছে তার মা-বাবা বলতে পৃথিবীতে কেউ নেয়।তাহলে কার সাথে কথা বলছে?
চলবে কি??
গল্পঃ অভিশাপ
(পর্বঃ ০৭)
Writer:- (নষ্ট জীবন) Sohanur Rohoman Sohan
.
হঠাৎ পিছন ফিরে তাকিয়ে বলল “আম্মু এই দেখো আমার নতুন বন্ধু” কিন্তু মাধবীলতা কিছুই দেখতে পারছেনা।আর এই বাসায় ৩ জন ছাড়া আর কেউ নেই বলেই মনে হয় কারণ সোহান বলছে তার মা-বাবা বলতে পৃথিবীতে কেউ নেয়।তাহলে কার সাথে কথা বলছে?
°
একটা পিচ্চি মেয়ে দেখতে পাচ্ছে কিন্তু আমি কেন দেখতে পাচ্ছেনা, আচর্য করার মতো ঘটনা! আর বুঝলই বা কি করে তার পিছনে দাড়িয়ে আছি! এসব চিন্তা মাথার ভেতর ঘুরঘুর করছে, কথা গুলো মনে মনে বলতে বলতে নিচে নেমে এলো (রান্নার জন্য পেয়াজ কাটছে)
অবৈধ সন্তান পেট থাকতে যত-টুকু আবেগ প্রবণ হয়ে যায়।অথচ সৎ সন্তানের প্রতি একটু মায়া-সেন্হ তার ভেতরে জন্মায়নি।ফুলসজ্জার রাতে যখন সৎ মেয়েকে রেখে যায় তখন থেকেই হিংসা হতো।
‘
কেন হিংসা হতো মাধবীলতা সেটার মানেই খুঁজে পাচ্ছেনা!
মাঝখানে বালিশ রেখে ঘুমিয়ে পরে মাধবীলতা।আহহ্ বলে মৃদু গলায় ব্যাথায় কাকিয়ে উঠলো।পেয়াজ কাঁটতে কাঁটতে কখন যে নিজের আঙ্গুলটা কেটে বসেছে, নিজেই বুঝেনি।
মনে মনে গালি দিলো কি সব অলক্ষণে কান্ড ঘটছে এসব।কাল রাতের ভয়াবহ স্বপ্ন তার সকালে ঘটনা আবারও মাথায় চিন-চিন ব্যাথা অনুভব করলো মাধবীলতা।
‘
আজ আর রান্না করব না।বাহির থেকে খাবার অর্ডার দিলেই হবে, শরীরলটা কেমন যেন ম্যাজ ম্যাজ করছে মনে হয় একটু ঘুমের দরকার।
সৎ সন্তানের রুমে ঢুকে দেখলো কার সাথে যেন এখনও কথা বলছে আর মিটিমিটি হেসে টেডিবিয়ার নিয়ে খেলা করছে।দরজায় দাড়িয়ে বলল…
।
-কি করছে আমার পিচ্চি আম্মুটা হুম..? (মাধবীলতা)
.
-এই তো, আমার নতুন বন্ধুটার সাথে খেলা করছি।আম্মু আজ না আমার স্কুলে যেতে ইচ্ছা করছে না, আর একটু খেলি না প্লিজ..? (পিচ্চি)
.
-(কই নতুন বন্ধু, মেয়েটা মানসিক রোগি নাকি।কিসের শাস্তি দিচ্ছো আমাকে) তা বললে কি হবে, স্কুলে না গেলে স্যারেরা বকা দেয়।চলো খাবে… (মাধবীলতা)
.
-স্কুল থেকে এসে তোমার সাথে খেলা করব.. (পিচ্চি)
কথাটা বলে মাথা ঝুকিয়ে হেসে দিলো।টেডিবেয়ার বিছানার উপর আচরে ফেলে দিয়ে মাধবীলতার হাতটা ধরে মুচঁকি হাসি।
মাধবীলতা গাল টেনে বলল…
.
-তোমার না কি আম্মু? (মাধবীলতা)
পিচ্চিটা ভূরু বাঁকা করে তাকিয়ে রইলো।কি ক্যারেক্টার মাইরি তাই না, নিজের সন্তানের নামটাও জানে না।আবার নিজের সন্তান ভাবলেও ভুল হবে সৎ সন্তান।ভূরু টানটান করেই বলল….
-জেনিফা! (পিচ্চি /জেনিফা)
.
-অনেক মিষ্টি নাম রাখছে তো তোমার আব্বু.. (মাধবীলতা)
(আবারও গাল টেনে বলল)
.
-জ্বী না, এই নাম আমার দাদু-ভাই রেখেছে..!! (জেনিফা)
।
শান্তভাবেই সকালের নাস্তাটা শেষ করে স্কুলে রেখে আসে জেনিফাকে।ফিরে এসে জেনিফার রুমটা পরিষ্কার করতে যায়, বাচ্চা মেয়ে রুমটা হয়তো অগোছালো থাকে সেটা ভেবেই রুমে ঢুকে।
রুমে ঢুকেই ভয়ে বুক কেপে উঠে।জেনিফাকে স্কুলে রেখে আসার আগে টেডিবিয়ারটা তো এরকম ছিলো না।
।
টেডিবিয়ারটাকে দেখে মনে হচ্ছে কেউ জানোয়ারের মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়েছে।রাগ হলে যেন হয় তেমন দেখাচ্ছে।সব রাগ টেডিবিয়ারের উপর ঝারলো…?
ক্রিং ক্রিং শব্দে মাধবীলতা চমকে গেলো।সোহানের কল স্কিনে ভাসতেছে।নিজেকে শান্ত করে কলটা ধরলো…
।
-হ্যালো সোহান কিছু বলবা? (মাধবীলতা)
.
-(বিয়ের একদিনও হয়নি এখনি নাম ধরে ডাকতে শুরু করলো।আমাকে গুরুত্ব দেওয়ার মতো মনে হচ্ছেনা তার কথা বলার ঢং শুনে) (সোহান)
.
-আচর্য! কথা না বললে রেখে দাও, এভাবে বিরক্ত করো কেন? (মাধবীলতা)
.
-না মানে? (সোহান)
(মেয়েটা এখনও বলল না দুপুরে খেয়েছেন কিনা)
.
-কি না মানে, রাখি! (মাধবীলতা)
.
-আরে আরে থামুন, আমি মেয়ের প্রতি একটু নার্ভাস ফিল করি।আজ আসতে অনেক রাত হয়ে যেতে পারে..(সোহান)
.
-তো? (মাধবীলতা)
(কোনো আগ্রহই নেই)
.
-জেনিফাকে একটু কাছে কাছে রাখবেন, বিষেশ করে ছাঁদে একদমি যেতে দেবেন না… (সোহান)
টুট টুট কলটা ওপাশ থেকে কেঁটে দিলো।সোহান ছেলেটা এক রাশ লম্বা নিঃশ্বাস ছেড়ে কাজে মনযোগী হলো।
_______________________________________________________________
খুব শীঘ্র রাত হয়ে গেলো।অবস্য রাতে ডিনার করার সময় মাধবীলতা একটা বিষয় লক্ষ্য করলো।কার সাথে যেন -জেনিফা আবারও কথা বলছে তবে সাধারণ ভাবে নয় রাগি মেজাজ নিয়ে।ডিনার শেষ করে শুয়ে পরলো বিছানায়।জোরিয়ে ধরে দুটি ছোট হাত দিয়ে জেনিফা…
।
ঘুমের ভেতর থেকেই শরীলটা ঘামতে শুরু করলো।চিৎকার করছে কিন্তু কোনো শব্দ বের হচ্ছে না, একটুও নড়তে পারছেনা মাধবীলতা…
“ঘুটঘুটে অন্ধকার রাজ্যে মনের ভেতর অজানা এক ভয়ের আতংক।একটা বৃদ্ধা বাচ্চা জেনিফা সামনে দাড়িয়ে, পা একটা ছোট আরেকটা বড়।
ইয়া বড় বড় নক, চোখ দুটো সম্পূর্ণ কালো যা সাধারণ মানুষের হয় না।হঠাৎ ছোট ছোট হাত গুলো হয়ে ক্রমশ শরু আর লম্বা হচ্ছে, হাওয়াতে সাপের মতো এঁকে বেঁকে ভাসতেছে, কিছু বুঝে উঠার আগেই বৃদ্ধ বাচ্চাটা লম্বা হাত দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে ধরলো।
দম যেন আটকে যাচ্ছিলো হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু বৃদ্ধ বাচ্চার শক্তির সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না।চেহারায় সেই ভয়ংকর হাসি গলা শুকিয়ে কাঠ করে দিচ্ছে।অবাক ককরা বব্যাপার হলো, বৃদ্ধ বাচ্চাকে দেখতে কিছুটা ৮০ বছরের বুড়োদের মতো।
অবাক করিয়ে দিয়ে বাচ্চাটা শরীল থেকে সম্পূর্ণ শক্তি শুশে-নিচ্ছে।কপালের ভাজ গুলো মিশে যাচ্ছে আর আমি একটু একটু করে বৃদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বৃদ্ধ বাচ্চা এক যুবকে রূপান্তরিত হয়ে আচর্য করে দিলো।উঠে দাড়ানোর শক্তি টুকুও হারিয়ে ফেলছে সে মাজা-কোমরে বাতের ব্যাথার মতো অনুভুতি বুঝতে পারলো।
ফ্রগ টেনে ছিড়ে বুকের উপর ধারালো খোঁচা খোঁচা নক ঢেবে দিচ্ছে চিৎকার করতে গিয়েও গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরচ্ছে না।আঙ্গুল কামরে ধরে কষ্ট সহ্য করছে”)
।
(“নাহহহহ্”) চিৎকার করে লাফ দিয়ে উঠে বসলো।ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো, জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে জাগ থেকে পানি ঢেলে সম্পূর্ণ পানি একবারেই খেয়ে নিলো।টেবিল ল্যাম্পে উপর রাখা ফোনটা ভাইব্রেসন হয়ে কেপে উঠছে।কাপা কাপা হাতে রুমাল দিয়ে মুখের ঘাম মুছতেছে মুছতেছে বলল…
।
-হ্যালো কে? (মাধবীলতা)
.
-আপা আমি আপনাদের প্রতিবেশী।তারাতারি গাড়ি পার্কিং করার জায়গায় চলে আসুন.. (প্রতিবেশী)
.
-কেন কি হয়েছে? (মাধবীলতা)
.
-আপনার মেয়ে এখানে মৃত অবস্তায় পরে আছে (প্রতিবেশী)
।
বিছানায় অন্যপাশ ফিরে লক্ষ্য করলো কোলবালিশ রেখে ছিলাম জেনিফার ঘুমানোর পর।কোলবালিশ আছে কিন্তু জেনিফা নেই কেন?
মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরলো।তরিঘরি করে নিচে নেমে এসে, কাঁদতে কাঁদতে বসে পরলো…
.
সোহান গাড়ি পার্কিং করার জন্য আসতেই দেখলো ভীড়! মাঝ রাতে এত লোক কেন?কি হয়েছেটা কি এখানে।ভীড় ঠেলে সামনে যেতেই আত্মা কেপে উঠলো।একটা পিচ্চি মেয়ে বয়স আনুমানিক ৬ থেকে ৭ বছরের মাঝামাঝি কিন্তু অবাক কান্ড হলো পিচ্চি মেয়েটাকে দেখতে ৮০ বছরের বুড়ির মতো লাগছে।
।
গলায় কেউ একজন শক্ত করে চেপে ধরেছিলো।পাঁচ আঙ্গুলের পষ্ট কালো দাঁগ দেখা যাচ্ছে।
৬/৭ বছরের পিচ্চি মেয়েটার চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছেনা এই মেয়েটা কে? কোকরানো চুল সাদা হয়ে গেছে, চেহারায় বৃদ্ধদের মতো বয়সের ভাজ পরে গেছে।বুকের উপরে ধারালো কিছু দিয়ে ভেতর থেকে হৃদপিন্ডটা ছিঁড়ে বের করে নেওয়া হয়ছে।
।
পাশে রক্তে ভেজা হাতের আচরের চিহ্ন জীবনের মায়া কার না থাকে, অনেক চেষ্টা করেও মেয়েটা নিজেকে বাঁচাতে পারেনি।হাউ মাউ করে কেঁদে দিলো এযে তার নিজেরই দুষ্টু মেয়ে জেনিফা…
চলবে কি??