❤#আশিকী❤
#Madness_Of_Love,01,02
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_1
In Studio… Radio Star….
আসসালামু আলায়কুম and hello dear listener’s আপনারা শুনছেন রেডিও স্টার চলছে আপনাদের প্রিয় শো ” ভালোবাসার রংধনু ” আর আমি RJ সানাহ আছি আপনাদের সাথে To enjoy the beautiful rainy morning…
আজকের সকালটা শুরু হয়েছে বৃষ্টি দিয়ে। বাইরে ঝিরঝির বৃষ্টি, ভেজা রাস্তা, ঠান্ডা পরিবেশ হাতে এক কাপ ধোঁয়া উঠানো কফি আর রেডিওতে নিজের প্রিয় এফ এম।
তাই আজকের এই সকালটাকে আরো রোমাঞ্চকর বানানোর জন্য চলেন শুনে আসি…….
এই বৃষ্টি ভেজা সকালে একটা বৃষ্টি ভেজা গান,,,
Let’s feel the song,,,
কথাটা বলেই সানাহ গান প্লে করে দিলো,,,,
” বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন দে রোদেলা কিছু গল্প দে….”
” বাসবো ভালো কাছে আয়…ও জানে জা…..”
” বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন দে রোদেলা কিছু গল্প দে….”
” বাসবো ভালো কাছে আয়…ও জানে জা…..”
“থাকবো পাশে রাত দিন তোকে ছাড়া খুব কঠিন”
“থাকবো পাশে রাত দিন তোকে ছাড়া খুব কঠিন”
“আজ ইস্কে তোর কাটে না যে ঘোর.. কেন বল
চেয়ার থেকে উঠে কফির মগটা হাতে নিয়ে জানালার পাশে চলে আসে সানাহ। বাইরে থেকে বৃষ্টির ফোঁটা এসে ওর চেহারায় লাগছে। চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির ফোঁটা গুলোর স্পর্শ অনুভব করছে ও। বাইরের ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগতেই কুকরিয়ে যাচ্ছে সানাহ। কফির মগটা রেলিং এ রেখে দু হাত দিয়ে নিজের বাহু জড়িয়ে ধরলো ও। ঠান্ডার কারনে গোলাপী ঠোঁট দুটো হালকা কাঁপছে,,, চোখের ঘন পাপড়ি গুলোকে বৃষ্টির ফোঁটা ছুঁয়ে দিচ্ছে। বাতাসে গায়ের সাদা ওরনা ও অবাদ্ধ খোলা চুল গুলো এলো মেলো ভাবে উড়ছে। কানের ঝুমকা গুলো দোলছে। চেহারায় একটা মায়াবী ভাব ফুটে উঠছে ওর,,, এই মায়াবী চেহারাটাকে আরো মায়াবী করে তুলছে নাকের সাদা পাথরের নোস পিনটি। হাত বাড়িয়ে পানির ফোঁটা গুলো ছুইয়ে দিচ্ছে ও। মনের জানালায় বারবার অতীতের কেউ উকি মারছে। কিন্তু নাহ সানাহ নিজের মনের সব জানালা বন্ধ করে ফেলেছে।
চোখের পানি গড়িয়ে পরার আগেই চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলল ও।
সানাহঃ নো সানাহ তুই উইক হতে পারিস না। ভূলে যা সব। ভুলে যা কখনো কেউ তোর হৃদয়ে বাস করতো। জাস্ট ফরগেট হিম।
এইদিকে,,,,
গাড়ী চলছে আপন গতিতে,,, বৃষ্টির পানি গাড়ির রুফটপ বেয়ে নিচে পরছে। ঠোঁটে বেবী স্মাইল নিয়ে রেডিও টা বন্ধ করে দিল আমাল খান।
আমালঃ একটু ওয়েইট করো মাই লাভ আমি আসছি তোমার কাছে। এতো দিনের অপেক্ষার প্রহর ফাইনালি শেষ হতে চলেছে। তোমাকে নিজের #আশিকী তে রাঙাতে তোমার আশিক আসছে। তুমি চাইলেও আমাকে ভুলতে পারবে না কারন এই আমাল তোমাকে তার #আশিকী ভূলতে দিবে না। তৈরী হয়ে নাও লাভ তোমার এই আশিকের লাভ টর্চার গুলো সহ্য করার জন্য। আ’ম কামিং ( বাকা হেসে গাড়ি ড্রাইভ করতে মন দিল আমাল।)
গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে গানের বাকি লাইন গুলো গাইতে শুরু করলো ও।
“রাখবো তোকে… যত্ন করে আর আদরে…”
“আর দেব দু চোখে ভরে…স্বপ্ন রঙ্গীন…”
“হো ওও ইচ্ছে হলে… কাউকে কিছু টি না বলে…”
“যাবো যে নিয়ে মেঘের কোলে…তোকে কোন দিন”
“থাকবো পাশে রাত দিন তোকে ছাড়া খুব কঠিন”
“থাকবো পাশে রাত দিন তোকে ছাড়া খুব কঠিন”
“আজ ইস্কে তোর কাটে না যে ঘোর.. কেন বল”
বৃষ্টি ভেজা স্বপ্ন দে রোদেলা কিছু গল্প দে….”
” বাসবো ভালো কাছে আয়…ও জানে জা…..”
এইদিকে,,,
ম্যাম আপনাকে ম্যানেজার স্যার ডাকছেন,,,( পিয়ন)
সানাহঃ আপনি যান আমি আসছি,,,
সব কিছু গুছিয়ে ব্যাগটা হাতে নিয়ে বের হয়ে গেল সানাহ।
সানাহঃ মে আই কাম ইন স্যার?? 😊
ম্যানেজারঃ হ্যাঁ সানাহ কাম,,
সানাহঃ আপনি ডেকেছিলেন?? ( কেবিনে ঢুকে)
ম্যানেজারঃ সানাহ তুমি জানো আজকে আমাদের রেডিও স্টেশনের ওউনার আসছেন। তাই আমি চাই তুমি ওনাকে ওয়েলকাম করো।
সানাহঃ কিন্তু স্যার আমি কেন??
ম্যানেজার কিছু বলল না শুধু হালকা হাসলো।
ম্যানেজারঃ এখন যাও গিয়ে দেখ সব কিছু ঠিক ঠাক আছে কিনা। আমি আগেও বলেছিলাম স্যার ভূল একদম পছন্দ করে না। উনি সব কিছু পারফেক্ট চান। এখন সব দায়িত্ব তোমার ভালো করে চেক করো যেন কোন খামি না থাকে। আর হ্যাঁ,, ফাস্ট স্যার যে কোন সময় পৌছে যেতে পারেন।
সানাহঃ জী,,,,
গাড়ি স্টুডিওর সামনে আসতেই দারোয়ান গেইট খুলে দিল। গাড়ি থামলো রেডিও স্টার স্টুডিওর সামনে। বৃষ্টি থেমে গেলেও বৃষ্টির পানি জমে আছে বিভিন্ন যায়গায়।
গাড়ির দরজা খুলে বের হয়ে আসলো আমাল খান। হোয়াইট শার্ট ব্লাক প্যান্ট চুলগুলো স্পাইক করা। হাতে ব্লাক ওয়াচ চোখে সানগ্লাস ব্লাক সুজ। সব মিলিয়ে ড্যাশিং লুক। সাইন বোর্ডটির দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলো আমাল। চোখের সানগ্লাস টা খুলে শার্টে গুজে নিল।
আমালঃ আমি এসে পরেছি লাভ,,, এখন আর তোমাকে দূরে থাকতে দিব না। তোমার সব অভিমান ভাঙিয়ে নিজের #আশিকী তে রাঙিয়ে দিব। যে ভুল করেছিলাম সেটা সুধরানোর সময় এসে গেছে। আ’ম ব্যাক টু ইউ লাভ। ভূল গুলো সুধরে আমাদের অসম্পূর্ণ ভালোবাসাটাকে সম্পুর্ন করতে এসে গিয়েছি আমি। কারন আমাল খান কখনো কোন কাজ অসম্পূর্ণ রাখে না।😎
আমাল স্টুডিও এর দিকে পা বাড়ালো।
ওউনার আসছে শুনে সব স্টাফরা হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অধীর আগ্রহে। সানাহ তার হাতে স্টারগেজার এর বুকি নিয়েছে। হঠাৎ করে যেন হার্টবিট টা বেড়ে গেছে সানাহর। নিঃশ্বাস ঘন ঘন উঠা নামা করছে। সানাহ এক হাত বুকে রেখে ভয়ে ভয়ে লিফ্টের দরজার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
আমাললল,,, ( স্থির কন্ঠে )
লিফ্ট এর দরজা খুলে যায়। ভেতরের মানুষটিকে দেখে কয়েক কদম পিছিয়ে যায় সানাহ,,
লিফ্ট থেকে নামতেই সবাই ঘিরে ধরে আমালকে। কিন্তু আমালের চোখ আটকে আছে সাদা কুর্তি খোলা চুলের পরীর দিকে। তার দিকেই ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে তার পরী। আমাল অপরাধীর মতো ফেস করে সানার দিকে তাকালো।
ম্যানেজারের ডাকে সানার ধ্যান ভাঙে।
ম্যানেজারঃ হোয়াট হ্যাপেন্ড সানাহ,, যাও গিয়ে স্যারকে বুকিটা দাও।
সানাহ ধীর পায়ে এগোচ্ছে আমালের দিকে আর আমালও ধীর পায়ে এগোচ্ছে তার পরীর দিকে।
সানাহ নিজেকে স্ট্রং করে আমালের সামনে ফুলের তোড়াটা এগিয়ে ধরলো।
সানাহঃ ওয়েলকাম স্যার ( দাঁত খিঁচে)
আমাল সানার চোখের দিকে তাকিয়েই ফুলটা নিল। বুকিটা নেওয়ার সময় আমাল ইচ্ছে করে সানার হাত স্পর্শ করে সানাহ এক ঝটকায় দূরে সরে দাঁড়ায়। আমাল ফুল গুলোর ঘ্রান নিয়ে বাকা হেসে বলে,,,
আমালঃ থ্যাঙ্ক ইউ মিস??
ম্যানেজারঃ সানাহ,,, স্যার ওর নাম সানাহ,,,
আমানঃ সানাহ নাইস নেম,,,
সানার শরীর কাঁপছে রাগে। ও বুঝতে পারছে যে আমাল ইচ্ছে করে এমন করছে।
আমালঃ ম্যানেজার আমার কেবিন কোনটা??
ম্যানেজারঃ স্যার আপনি আসেন আমার সাথে।
আমাল যাওয়ার সময় ইচ্ছে করে সানার গা ঘেঁষে যায়। আর সবার আড়ালে নিজের হাত দিয়ে সানার হাত স্পর্শ করে।
সানাহ রাগী দৃষ্টিতে আমালের দিকে তাকালে আমাল ওকে চোখ মারে। আমাল চলে যেতেই সব লেডি স্টাফরা আমালকে নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। ওর লুক, ওর স্টাইল কথা গুলো শুনতে সানার অনেক বিরক্ত লাগছে।
মেয়ে গুলোর কথা শুনে সানাহ আরো রেগে যায়। সহ্য করতে না পেরে সানাহ নাক ফুলিয়ে নিজের কেবিনে চলে আসে।
এপাশ থেকে ওপাশ পায়চারি করছে সানাহ।
সানাহঃ কেন এসেছেন আমার জীবনে আবার। আর কি বাকি আছে বরবাদ করার। পুরোনো ঘা গুলো আবার তাজা করতে কেন এসেছে ও। আমি চাইনা তোমাকে আর আমার জীবনে আমাল খান। আই ডোন্ট নিড ইউ।
কথা গুলো বলতে সানার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
আমি এখানে জব করবো না। এখানে জব করলে ও সব সময় আমার আশেপাশে থাকবে। ওকে দেখলে পুরোনো ঘা গুলো আবার তাজা হয়ে উঠবে আমার। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি এখন আর পেছন ফিরে দেখবো না।
সানাহ ডেস্কে বসে ল্যাপটপে রেজিগ্নেশন লেটার রেডি করছে।
আমাল নিজের কেবিনে বসে সিসি ফুটেজে সানাকে দেখছে।
আমাল নিজের চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ভাবছে।
আমালঃ তুমি যতই আমার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করবে আমি ততই তোমাকে নিজের কাছে আসতে বাধ্য করবো মাই লাভ। এই আমালের কাছ থেকে তুমি কখনো দূরে যেতে পারবে না। কারন আমাল তার সানাহকে নিজের থেকে দূরে যেতে দিবে না। শুধু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত না আমার মৃত্যুর পরেও তুমি আমারই থাকবে।
কথা ভেবেই বাঁকা হাসলো আমাল।
সানাহ আমালের কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
সানাহঃ আমি এখানে জব করবো ন… কথা গুলো বলতে বলতে সাহস নিয়ে ভিতরে ঢুকতেই আমালের ধমকে থমকে যায় ও।
আমালঃ বিনা নক করে বসের কেবিনে ঢুকছেন হাও ডেয়ার ইউ মিস সানাহ। (দাঁড়িয়ে ধমকের স্বরে) কেবিনে ঢোকার আগে নক করতে হয় এইটুকু ম্যানার্জ নেই আপনার।যান গিয়ে আবার নক করে ভিতরে আসবেন।
সানাহ হা হয়ে গেছে। আমাল এরকম বিহেভ করছে যেন ও সানাহকে চিনেই না। সানাহ আবার ব্যাক করে কেবিন থেকে বেরিয়ে যায়। যেতে যেতে বিরবির করে বলছে ও,
সানাহঃ পাগল ছাগল হয়ে গেছে নাকি। এরকম বিহেভ করছে যেন আমাকে চিনেই না। ব্রেইন শর্ট হয়ে গেছে আমাল খানের।
সানাহ যেতেই আমাল মুচকি হেসে চেয়ারে বসে পরে।
বাইরে দাঁড়িয়ে সানাহ রাগে গজগজ করতে করতে বলল,,,
সানাহঃ মে আই কাম ইননন বসসসস( দাঁত খিঁচে)
সানাহঃ সিউর মিস সানাহ,,,
সানাহ ঢুকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আগেই আমাল বলতে শুরু করে,,,
আমালঃ আই নো আপনি কি বলবেন। আপনি এখানে আমার সাথে কাজ করবেন না। আমাকে দেখলে আপনার নিজের ফিলিংস এর উপর কন্ট্রোল থাকবে না। ইট্স ওকে একচুয়ালি আমাল খান মানুষটাই এমন যাকে ভুলা ইম্পসিবল। আই কেন আন্ডারস্টেন্ড। ( নরমালি বলল)
সানাহ হা হয়ে শুধু শুনছে। আমাল বুঝলো কিভাবে ভেবে পাচ্ছে না ও। আমাদের কথা গুলো শুনে রাগটা আরো বেড়ে গেল ওর।
আমাল সানার হাতে লিফাফা টা দেখিয়ে বলল।
আমালঃ এটা নিশ্চই রেজিগ্নেশন লেটার রাইট?? দিন আমাকে কাল থেকে আর আপনার রেডিও স্টেশনে আসার প্রয়োজন নেই।
সানাহ লিফাফা টা নিজের মুঠোয় নিয়ে দাঁত খিঁচে বলল,,
সানাহঃ জি না আপনি যা ভাবছেন সানাহ এরকম কিছুই করবে না। আমি আপনার সাথেই কাজ করবো বসসস। আর হ্যাঁ আপনি কোন বিশিষ্ট কেউ না যাকে ভূলে যাওয়া ইম্পসিবল হবে। আমি সেই কবেই আপনাকে ভুলে গেছি আর এই মুহূর্তে যে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সে আমার বসস,, এর বেশি কিছুই না।
সানাহ কথা বলেই আমালের মুখের উপর দরজা ধরাম করে লাগিয়ে বেড়িয়ে গেল।
সানার কথা গুলো আমালের বুকে ছুরির আঘাতের মতো লাগছে তাও আমাল সানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল।
আমালঃ এটাতো জাস্ট শুরু মাই লাভ পিকচার তো আভি বাকি হ্যায়। 😎
সানাহ কেবিনে যেতেই ওর ফোন বেজে উঠলো।
সানাহঃ হ্যালো আম্মিজানন( দুষ্টুমি করে)
সানাহ কথা বলার মাঝেই খেয়াল করলো আমাল অফিস থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। সানাহ ব্যাপার টা গ্রাহ্য করলো না ও ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।
অফিসের সব কাজ শেষ করে আটটায় সানাহ বেরিয়ে পরলো অফিস থেকে। বাম চোখটা বারবার লাফাচ্ছে নিশ্চই কিছু আনএক্সপেক্টেড ওয়েইট করছে ওর জন্য।
To be continued….
❤#আশিকী❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Shabnam_Fahmida
#Part_2
সানার ফ্যামিলি বলতে শুধু ও আর ওর আম্মুই আছে। সানাহ ঢাকাতে একটা এ্যাপার্টমেন্টের ফোর্থ ফ্লোরে থাকে ওর আম্মুর সাথে।
এখন গল্পে ফিরা যাক….
সানাহ গাড়ি এপার্টমেন্টের গ্যারেজের পার্ক করে ভিতরে ঢুকে পরলো। সিঁড়ি দিয়ে সানাহ আসাযাওয়া করে কারন লিফ্টে ওর সাফোকেশন প্রবলেম হয়।
সানাহ ফোন স্ক্রল করতে করতে উপরে উঠছে। ফোর্থ ফ্লোরে আসতেই পায়ের নিচে কিছু পিছলে অনুভব করলো ও। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সানাহ পা পিছলে পরে যায়।
সানাহঃ আআহহ,,
সানাহ ভয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলল। সানাহ নিচে পরলো না,, এমন লাগছে যেন হাওয়ায় ভাসছে ও। ও অনুভব করছে কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ধরে আছে।
সানাহ মিটমিট করে চোখ খুলে তাকাতেই যাকে দেখলো তাকে এই মুহুর্তে ও মোটেও এখানে আশা করে নি।
আমাল বাঁকা হেসে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আমাল হেঁচকা টান দিয়ে সানাহকে দাঁড় করিয়ে দেয়। আমালের হাত এখনো সানার কোমর জড়িয়ে ধরে আছে। সানাহ আমালকে দেখে নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না। সকালের রাগটা এখন ওর মাথায় চেপে বসেছে। সানাহ আমালকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে নিল। তারপর ওর দিকে তাকিয়ে রেগে বলতে শুরু করল।
সানাহঃ হাও ডেয়ার ইউ মি আমাল,,, আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে টাচ করার। আর এখানে কেন এসেছেন আপনি?? হয়ত আপনি ভুলে যাচ্ছেন এটা আমার বাসা আপনার অফিস না।
আমাল সানার কথায় রেগে ওকে রেলিং এ চেপে ধরে তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলতে শুরু করলো।
আমালঃ ডেয়ার এর কি দেখেছো সান। তুমি যানো যে এই আমাল খান কি করতে পারে আর তার সাহস কতখানি।
আমাল সানাহকে ছেড়ে একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে পকেটে দু হাত গুঁজে নাক ছিটকে বলতে শুরু করল।
আমালঃ আর যেখানে তোমাকে টাচ করার কথা,, তোমাকে টাচ করার কোন ইন্টারেস্ট আমার নেই। 😒😏থ্যাংকস টু মি আমি যদি না থাকতাম তাহলে তুমি নাগিনের মতো গড়াতে গড়াতে নিচে পরতে। কোথায় আমাকে তুমি থ্যাঙ্ক ইউ বলবে তা না করে আমাকে ব্লেম করছো।
আমালের কথায় সানাহ বুঝতে পারলো সত্যিই তো ও নিচে পরতে নিচ্ছিল। আমাল না থাকলে আজকে হয়তো ওর ইন্না লিল্লাহ হয়ে যেত।
সানাহকে গভীর ভাবে কিছু ভাবতে দেখে আমাল বাঁকা হাসলো। তারপর ওর মুখের সামনে তুরী বাজিয়ে বলল,,,
আমালঃ কোথায় হারিয়ে গেলেন মিস ড্রিম গার্ল।
আমালের কথায় সানার ধ্যান ভাঙলো।
আমালঃ এখন আপনি আমাকে স্যরি এন্ড থ্যাঙ্ক ইউ দুটোই বলবেন। থ্যাঙ্ক ইউ আপনাকে বাঁচানোর জন্য আর স্যরি এই মাত্র যে আমাকে ইনসাল্ট করলেন তার জন্য।
সানাহ মুখ গোমড়া করে বলল।
সানাহঃ স্যরি এন্ড থ্যা… হঠাৎ সানার খেয়াল হলো আমাল এখানে এই সময় কি করে,,,
সানাহঃ ওয়েট আগে আপনি এটা বলেন যে আপনি এখানে কি করছেন?? আপনি কি আমাকে ফলো করছেন,, ( সন্দেহের চোখে)
সানার কথা শুনে আমাল জোরে জোরে হেসে দেয়। সানাহ আমালকে হাসতে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। ও এমন কি বলল যে আমাল এভাবে হাসছে।
আমাল নিজের হাসি চাপিয়ে সানাহকে বলল।
আমালঃ সিরিয়াসলি সানাহ!! ইউ থিঙ্ক কি আমি তোমাকে ফলো করছি জোক অফ দ্যা ডে। বলে আবার হাসতে শুরু করল।
সানাহ চোখ ছোট ছোট করে আমালের দিকে তাকিয়ে বলল,,
সানাহঃ তাহলে আপনি এই সময় এখানে কি করছেন আমার বাসায়। 😠
আমাল সানার কথা শুনে এটিটিউট নিয়ে বলল,,,
আমালঃ এটা একটা এপার্টমেন্ট সানাহ। এটা শুধু তোমার একার বাসা না আরো অনেক মানুষ এখানে থাকে। এন্ড ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন আমিও এখানে একটা ফ্ল্যাট কিনেছি।
আমাল সানাহদের ফ্ল্যাটের বরাবর ফ্ল্যাটের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করল।
আমালঃ মাই ফ্ল্যাট 😎,,, সম্পর্কে এখন আমি তোমার নেইবার হই আই মিন প্রতিবেশী। 😉
হঠাৎ সানার চোখ গেল আমালের হাতের দিকে। শার্টের হাতায় সস লেগে আছে। সানার খেয়াল হলো যে ও কিছু একটায় পিছলে পড়ে যেতে নিয়েছিল। সানাহ সিঁড়ির দিকে তাকিতেই দেখতে পেলো সিঁড়িতে কেচাপ পরে আছে।
তার মানে আমাল জানতো যে সানাহ এখান দিয়ে আসবে আর ও ইচ্ছে করে এখানে সস ফেলেছে যেন সানাহ পরে যায় আর আমাল হিরো সেজে ওকে সেফ করে।
সানাহ এটাও বুঝতে পারছে যে আমাল ইচ্ছে করে ওদের বাসার সামনে ফ্ল্যাট নিয়েছে।আর অফিসের ব্যাপারটাও সব আমালের প্লান। সানাহ এবার রেগে আমালের কলার চেপে ধরে আমালকে বলল,,,
সানাহঃ তুমি কি ভেবেছো আমাল আমি বোকা। আই নো এসব কিছু তুমি ইচ্ছে করে করছো। তুমি ইচ্ছে করে রেডিও স্টেশনটা কিনেছো।
কারন দ্যা গ্ৰেট আমাল খান (আমালকে ছেড়ে হাত ছড়িয়ে বুঝালো) যার কিনা কোটি কোটি টাকার হোটেল বিজনেস সে কেন একটা সামান্য স্টুডিও এর মালিক হতে যাবে। যার নিজেরই হোটেলের অভাব নেই সে কিনা এই সামান্য ফ্ল্যাট কিনেছে তাও থাকার জন্য ইম্পসিবল।
কেন এসেছো আবার আমার জীবনে হ্হ?? আর কি বাকী আছে বরবাদ করার। আই হেইট ইউ আমাল আই জাস্ট হেইট ইউ।
চলে যাও আমার জীবন থেকে। আমি চাই না তোমাকে।( কান্না করতে করতে)
এতক্ষন আমাল দাঁড়িয়ে শুধু সানার কথা গুলো শুনছিল। কতটা ঘৃণা করে ওর সান ওকে ভাবতেই বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করছে ও। একসময় এই সানাহ আমাল বলতে পাগল ছিল আর আজ সেই সানাহ ওকে ঘৃণা করছে।
আমালের চোখের পানিও এবার বাধ ভেঙ্গে দিল। সানার চোখের পানি আমালের ভিতরটা দুমরে মুচরে দিচ্ছে।
আমালঃ সান আমার কথাটা একবার শুন,,
আমাল সানার দিকে এগোতেই সানাহ পিছিয়ে যায়।
সানাহঃ ডোন্ট ইউ ডেয়ার আমাল। আমি তোমাকে কক্ষনো ক্ষমা করবো। কক্ষনো নাহ,,,
সানাহ কথাটা বলেই চাবি দিয়ে দরজা খুলে নিজের ফ্ল্যাটে ঢুকে পরলো।
আমাল ঠাই দাঁড়িয়ে আছে সানার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে।
আমালঃ তুমি আমাকে চাও না সান কিন্তু আমি যে তোমাকে পাগলের মতো চাই। এই একটা বছর তোমাকে ছাড়া কিভাবে বেঁচে ছিলাম এটা শুধু আমিই জানি। তিলে তিলে মরেছি আমি। হাজার খোঁজার পরেও যখন তোমাকে পাচ্ছিলাম না ইচ্ছে করছিল শেষ করে দেই নিজেকে। আমার একটা ভুলের জন্য তোমাকে সারাজীবনের জন্য হারাতে পারবো না আমি। জানি ভুলটা আমার ছিল আর এই ভুলটা সুধরানোর জন্যই তোমার কাছে এসেছি।
“তুমি আছো তো আমি আছি”
“তুমি নেই তো আমি নেই”
তোমার সব রাগ সব অভিমান দূর করে দেব। আবার নিজের #আশিকী তে রাঙিয়ে দিবো। কারন তুমিই তো আমার #আশিকী
সানাহ চোখ মুখ ভালো করে মুছে নিজেকে নরমাল করে নেয়। কারন ও চায় না ওর জন্য ওর আম্মু কষ্ট পাক।
সানাহ ওর আম্মুর রুমে উকি মেরে দেখে উনি বসে আছেন।
সানাহঃ আম্মিজান 😘😘
সানাহ ওর আম্মুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।
রাফিয়াঃ সেই কখন ফোন করেছিলাম সানু,,, এতো দেরি কেউ করে ( কিছুটা রেগে)
সানাহঃ স্যরি মা,,, আসলে আজকে একটু বেশি কাজ ছিল তাই ফিরতে দেরী হয়ে গেছে। এখন এসব বাদ দাও আমার অনেক ক্ষুধা লাগছে খেতে দাও। ( বাচ্চাদের মতো করে)
রাফিয়াঃ যো হুকুম মহারানী,,,
সানাহঃ আম্মু মহারানী তো তুমি আমিতো তোমার প্রিন্সেস,,,
রাফিয়াঃ হয়েছে আয় তোর জন্য আমিও না খেয়ে বসে আছি।
রাফিয়া সানাকে খাবার খাইয়ে দিতে দিতে বলে,,,
রাফিয়াঃ জানিস সানু আজকে আমাদের সামনের ফ্ল্যাটে একটা নতুন নেইবার আসছে। ছেলেটা একাই আসছে অনেক সভ্য আর ভদ্র।
সানাহঃ ওহ তো এ জন্যই আমাল খান তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেড়িয়ে এসেছেন।যেন এখানে এসে আমার আম্মুকে পটাতে পারে। ব্যাটা চালবাজ কোথাকার। 😠( মনে মনে)
সানার আম্মু আমালের প্রশংসা করতে করতে সানার কান পচিয়ে ফেলছেন। সানাহ কিছু বলতেও পারছে না আর সইতেও পারছে না।
বিরক্ত হয়ে শুধু শুনছে।
To be continued…..